১৯৬৫ সাল, ইতালির সিসিলির ছোট শহর আলকামো। মাত্র ১৭ বছরের কিশোরী ফ্রাঙ্কা ভিওলাকে অপহরণ করে তার সাবেক প্রেমিক ফিলিপ্পো মেলোদিয়া। দিনের পর দিন আটকে রেখে চলে বর্বর যৌন নির্যাতন। উদ্দেশ্য একটাই—ফ্রাঙ্কাকে বিয়ে করে ধর্ষণের দায় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।
কারণ তখন ইতালির আইনে ধর্ষণকে ‘ব্যক্তিগত অপরাধ’ হিসেবে নয়, ‘নৈতিকতার লঙ্ঘন’ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ফলে ধর্ষক যদি ধর্ষিতাকে বিয়ে করত, তবে তার বিরুদ্ধে মামলা থাকত না, শাস্তিও হতো না।
কিন্তু ফ্রাঙ্কা ভিওলা সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা নত করেননি। সামাজিক রীতি, ভয় ও লজ্জার দেয়াল ভেঙে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়ে মামলা করেন মেলোদিয়ার বিরুদ্ধে। তার পাশে ছিলেন তার পরিবার। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর ফিলিপ্পো মেলোদিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং তার সহযোগীদের ৪ বছর করে শাস্তি দেওয়া হয়। মেলোদিয়া ১৯৭৬ সালে কারামুক্ত হলেও, ১৯৭৮ সালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।
ফ্রাঙ্কার এই সাহসী অবস্থান কেবল ইতালিকেই নাড়িয়ে দেয়নি, বদলে দিয়েছে আইনের ধারা। তবে পুরোপুরি বদল আসতে সময় লেগেছে। ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে করলে দায় মাফের আইন বাতিল হয় ১৯৮১ সালে। আর ১৯৯৬ সালে ধর্ষণকে ‘নৈতিকতা বিরোধী’ নয়, ‘ব্যক্তির প্রতি অপরাধ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইতালির আইন।
বর্তমানে ফ্রাঙ্কা ভিওলা ৭২ বছর বয়সী। ১৯৬৮ সালে তিনি জিউসেপ্পে রুইজি নামের একজনকে বিয়ে করেন। এখনো আলকামোতেই বসবাস করছেন, তিন সন্তান নিয়ে গড়ে তুলেছেন এক শান্ত, সম্মানিত জীবন।
সূত্র: BBC, The Guardian, Wikipedia