banner

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: April 2025

 

ঈদ স্পেশাল চিকেন রোস্ট

 

ঈদ মানেই আনন্দ, আর আনন্দের পরিপূর্ণতা আসে সুস্বাদু খাবারের মাধ্যমে। উৎসবের টেবিলে রোস্টের সুগন্ধ না থাকলে যেন জমেই না! তাই আপনাদের জন্য রইলো এক বিশেষ স্বাদের ঈদ স্পেশাল চিকেন রোস্টের রেসিপি, যা আপনার উৎসবের আমেজকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

উপকরণ:
১টি আস্ত মুরগি (১ কেজি, মাঝারি টুকরা করে নেওয়া যাবে)
৩ টেবিল চামচ টক দই
২ টেবিল চামচ তেল বা ঘি
১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
১ চা চামচ লাল মরিচ গুঁড়া
১ চা চামচ জিরা গুঁড়া
১ চা চামচ ধনে গুঁড়া
১/২ চা চামচ দারচিনি গুঁড়া
১/২ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়া
১ চা চামচ আদা-রসুন বাটা
১/২ কাপ পেঁয়াজ কুচি
১/২ কাপ টমেটো কুচি
১/৪ কাপ কাঁচামরিচ কুচি
২ টেবিল চামচ মধু বা চিনি
১/২ কাপ তরল দুধ (ক্রিমি স্বাদ আনতে)
২ টেবিল চামচ সয়া সস (ঐচ্ছিক)
লবণ স্বাদমতো
কাজু ও কিশমিশ (গার্নিশের জন্য)

প্রণালী:
প্রথমে মুরগিটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
একটি বাটিতে দই, হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনে, দারচিনি, গরম মশলা, আদা-রসুন বাটা, মধু/চিনি, সয়া সস ও লবণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
সবকিছু মুরগির সাথে ভালোভাবে মেখে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা রেখে দিন (যদি সম্ভব হয়, রাতভর রাখলে স্বাদ আরও বাড়বে)।

একটি প্যানে তেল বা ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি করে দিন। পেঁয়াজ সোনালি হলে টমেটো ও কাঁচামরিচ দিয়ে নরম হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।

ম্যারিনেট করা মুরগি দিয়ে মাঝারি আঁচে কষিয়ে নিন, যতক্ষণ না মশলা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করে।

এবার অল্প আঁচে ঢেকে ১৫-২০ মিনিট রান্না করুন, মাঝে মাঝে নেড়ে দেবেন যাতে নিচে লেগে না যায়।
এরপর ১/২ কাপ গরম পানি দিন এবং ঢেকে দিন। আরও ২০ মিনিট রান্না করুন, যতক্ষণ না মুরগি পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে যায়।
শেষে দুধ দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করে নিন, এতে রোস্ট হবে আরও মখমল স্বাদের।
মুরগির রোস্ট হয়ে গেলে পাত্র থেকে নামিয়ে নিন। উপরে ভাজা কাজু ও কিশমিশ ছড়িয়ে দিন।
গরম গরম পরিবেশন করুন পরোটা, নান, কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে।

ঈদের স্পেশাল চিকেন রোস্ট শুধু স্বাদেই নয়, উৎসবের আনন্দেও এনে দেবে নতুন মাত্রা। এই সহজ চুলার রেসিপিতে আপনিও তৈরি করতে পারবেন পারফেক্ট রোস্ট, যা অতিথিদের মন জয় করবে! তাহলে আর দেরি কেন? এবার ঈদে বানিয়ে ফেলুন এই সুস্বাদু রেসিপি!

 

আইওসি’র ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি নির্বাচিত হলেন ক্রিস্টি কভেন্ট্রি

 

ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) এর ১৩০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো নারী সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ক্রিস্টি কভেন্ট্রি। একই সঙ্গে, তিনি আইওসি’র প্রথম আফ্রিকান সভাপতি হওয়ারও ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।

জিম্বাবুয়ের সাবেক সাঁতারু কভেন্ট্রি, যিনি ২০১৮ সাল থেকে জিম্বাবুয়ের ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি তার নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন এক অধ্যায় শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) গ্রিসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪১ বছর বয়সী কভেন্ট্রি ৯৭ ভোটের মধ্যে ৪৯ ভোট পেয়ে প্রথম রাউন্ডে জয় লাভ করেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্পেনের হুয়ান আন্তোনিও সামারা পেয়েছেন ২৮ ভোট।
নবনির্বাচিত আইওসি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর কভেন্ট্রি বলেন, “এটা শক্তিশালী সংকেত। এটি নির্দেশ করে যে আমরা সত্যিকার অর্থে বৈশ্বিক হতে পেরেছি এবং আমাদের সংগঠন বৈচিত্র্যময়, এবং আমরা এই পথ অনুসরণ করতে চাই।”

আইওসি’র দশম সভাপতি হিসেবে কভেন্ট্রি আগামী ৮ বছর এই দায়িত্বে বহাল থাকবেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন চলতি বছরের জুনে।

খেলোয়াড়ী জীবনে অত্যন্ত সফল কভেন্ট্রি অলিম্পিকে জিম্বাবুয়ের হয়ে সাঁতারে দুটি স্বর্ণপদকসহ মোট সাতটি পদক জয় করেন। এছাড়া, তিনি কমনওয়েলথ গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং অল-আফ্রিকা গেমসেও একাধিক শিরোপা জয় করেছেন।

 

ঈদে ঘর সাজানোর দারুণ টিপস

 

ঈদ মানেই আনন্দের এক অনন্য উৎসব, যেখানে ঘরভর্তি হাসি-খুশি, প্রিয়জনদের সান্নিধ্য, আর আত্মার প্রশান্তি মেলে। এই বিশেষ দিনটিকে আরো উজ্জ্বল করে তুলতে ঘরের সাজসজ্জা হতে পারে আনন্দের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেমন নতুন পোশাক আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি নান্দনিকভাবে সাজানো ঘর আমাদের মনে উৎসবের আবেশ ছড়িয়ে দেয়। তাই আসুন, ঈদের খুশিকে দ্বিগুণ করতে ঘর সাজিয়ে তুলি একদম নতুন রঙে, নতুন আয়োজনে—

১. থিম অনুযায়ী ঘর সাজান
আপনার পছন্দের বা ট্রেন্ডি কোনো থিম বেছে নিন—যেমন ঐতিহ্যবাহী, মিনিমালিস্ট, রঙিন বা আরবি স্টাইল। এরপর সেই অনুযায়ী কুশন কভার, পর্দা, টেবিল ম্যাট, আর্টওয়ার্ক বা লাইটিং সাজিয়ে তুলুন।

২. নতুন পর্দা ও কুশন কভার ব্যবহার করুন
পর্দা ও কুশন কভারের পরিবর্তন পুরো ঘরের লুক বদলে দিতে পারে। ঈদের আমেজ আনতে উজ্জ্বল রঙ বা হালকা সোনালি ও সাদা রঙের কভার ব্যবহার করতে পারেন।

৩. দেয়ালে ঈদ স্পেশাল ডেকর যুক্ত করুন

চাঁদ-তারার ওয়াল হ্যাঙ্গিং

ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি বা পোস্টার

ফ্যাব্রিক বা কাঠের আর্টপিস

৪. আলো দিয়ে জাদু করুন
ঈদের রাতে নরম, উষ্ণ আলো পরিবেশকে আরও উৎসবমুখর করে তোলে।

LED ফেয়ারি লাইট

মোমবাতি বা অ্যারোমা ক্যান্ডেল

ল্যান্টার্ন বা আরবি স্টাইলের লাইটিং

৫. অতিথি আপ্যায়নের জন্য টেবিল সাজানো
ডাইনিং টেবিলে সুন্দর রানার, ম্যাচিং প্লেট-মগ, ফ্রেশ ফুলের ছোট তোড়া বা সুগন্ধি মোমবাতি রাখতে পারেন।

৬. সুগন্ধি ও পরিপাটি ঘর
ঘরে একটি ফ্রেশ ও মিষ্টি সুবাস ছড়ানোর জন্য অ্যারোমা ডিফিউজার, ধূপ বা আতর ব্যবহার করতে পারেন।

৭. হাতের তৈরি কিছু সংযোজন করুন
ডিআইওয়াই ক্যান্ডেল হোল্ডার, ফুলদানিতে রঙিন পানি দিয়ে ফুল সাজানো, অথবা কাগজের চাঁদ-তারা তৈরি করে দেয়ালে লাগানো যেতে পারে।

৮. দরজার সামনে ওয়েলকাম ডেকর
প্রবেশদ্বারে ফ্লাওয়ার রেথ, আরবি ক্যালিগ্রাফির ওয়েলকাম বোর্ড বা লাইটিং ব্যানার রাখলে অতিথিরা প্রথম দেখাতেই উৎসবের আমেজ পাবেন।

আপনার ভালোবাসা ও সৃজনশীলতার স্পর্শে ঘর হয়ে উঠুক ঈদের আনন্দের প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ুক উষ্ণতা, অতিথিদের মনে জাগুক প্রশান্তি, আর আপনার হৃদয়ে ফুটে উঠুক এক গভীর তৃপ্তির অনুভূতি।

 

রোজায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয়

ডায়াবেটিস এখন বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে বাংলাদেশে এটি দ্রুত বাড়ছে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, কম শারীরিক পরিশ্রম ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের রোজার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কিছু কিছু ভুল ধারণার কারণে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়েন। তাই সুস্থভাবে রোজা পালনের জন্য নিচের বিষয়গুলো মেনে চলুন।

১. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
রোজা রাখা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ কিনা, তা জানতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে ওষুধের সময়সূচি ও ইনসুলিন ডোজ পরিবর্তন করতে হতে পারে।

২. রক্তের শর্করা নিয়মিত পরীক্ষা করুন
রোজার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখা জরুরি। শর্করা খুব বেশি কমে গেলে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা বেড়ে গেলে (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. সঠিকভাবে সেহরি খান
কখনোই সেহরি বাদ দেবেন না, কারণ এটি শরীরে শক্তি জোগায় এবং রক্তে শর্করা লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে।

লাল চালের ভাত, ওটস, ডাল, শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খান, যা ধীরে হজম হয়।

প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, দই, বাদাম ইত্যাদি যোগ করুন।

৪. স্বাস্থ্যকর ইফতার করুন
অতিরিক্ত চিনি ও তেলে ভাজা খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন।

বেশি চর্বি, চিনি ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙতে পারেন, এটি প্রাকৃতিকভাবে শক্তি জোগায়।

৫. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

পানি সমৃদ্ধ ফল যেমন শসা, তরমুজ ইত্যাদি খেতে পারেন।

চিনিযুক্ত পানীয় ও কার্বোনেটেড ড্রিংকস পরিহার করুন।

৬. ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি ঠিক রাখুন
যারা ইনসুলিন নেন বা নিয়মিত ওষুধ খান, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সময়সূচি ঠিক করুন।

সেহরি ও ইফতারের সময় ওষুধ গ্রহণের সঠিক নিয়ম জানতে হবে।

৭. অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন
রোজার সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলে রক্তের শর্করা হঠাৎ কমে যেতে পারে।

গরমে দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকলে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বাড়তে পারে, তাই ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।

ভারী ব্যায়ামের পরিবর্তে ইফতারের পর হালকা হাঁটাহাঁটি করুন।

৮. বিপজ্জনক লক্ষণ দেখা দিলে রোজা ভাঙুন

যদি মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, অতিরিক্ত ঘাম, ঝাপসা দেখা বা কাঁপুনি অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত রক্তের শর্করা পরীক্ষা করুন।

যদি রক্তের শর্করা ৩.৯ mmol/L-এর নিচে নেমে যায় বা ১৬.৭ mmol/L-এর বেশি হয়, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

৯. মানসিক চাপ কমান ও পর্যাপ্ত ঘুমান

মানসিক চাপ রক্তের শর্করার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই নিজেকে শান্ত রাখুন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন।

ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানে রোজা রাখতে চাইলে সচেতনতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম মেনে চললে সুস্থভাবে রোজা রাখা সম্ভব।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)

 

এটিজেএফবি সম্মাননা প্রদান করল এভিয়েশন ও পর্যটন খাতে অবদান রাখা ১০ নারীকে

বাংলাদেশের এভিয়েশন ও পর্যটন খাতে বিশেষ অবদান রাখা ১০ নারীকে সম্মাননা প্রদান করেছে এভিয়েশন ও ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি)। ২০ মার্চ বৃহস্পতিবার, ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে সম্মাননা তুলে দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছেন বিভিন্ন খ্যাতনামা নারী:

পাইলট ক্যাটাগরিতে: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট অফিসার ফারিহা তাবাসসুম

এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাটাগরিতে: বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসার তাহমিনা আক্তার

এভিয়েশন গ্রাউন্ড সার্ভিস ক্যাটাগরিতে: বিমানের ম্যানেজার-গ্রাউন্ড সার্ভিস নিলুফা ইয়াসমিন

ক্যাবিন ক্রু ক্যাটাগরিতে: বিমানের ফ্লাইট স্টুয়ার্ড জিনিয়া ইসলাম

ট্যুরিজম সিকিউরিটি ক্যাটাগরিতে: ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা

হোটেল উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে: হোটেল সারিনার চেয়রপারসন সাবেরা সারওয়ার নীনা

ট্যুরিজম উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে: ওয়ান্ডার উইম্যানের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সাবিরা মেহরিন সাবা

প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে: গ্যালাক্সি বাংলাদেশের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান ওয়ামিয়া ওয়ালিদ

সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে: বৈশাখী টিভির যুগ্ম সম্পাদক রিতা নাহার

ভ্রমণ ক্যাটাগরিতে: বিশ্বের ১৭৮টি দেশে বাংলাদেশের পতাকা বহনকারী প্রথম বাংলাদেশি নাজমুন নাহার

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, “এটিজেএফবি’র এই আয়োজন নারীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আজকের ১০ জন নারী তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হয়ে সমাজের অন্যান্য নারীদের অনুপ্রাণিত করবেন।”
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান বলেন, “এটিজেএফবি’র আয়োজন প্রশংসার দাবিদার এবং এই ধরনের উদ্যোগ নারীদের ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে।”
এছাড়া, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতি বছর এই ধরনের উদ্যোগ আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এটিজেএফবি’র সভাপতি তানজিম আনোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লবও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

 

ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সন্তানের মা: Valentina Vassilyeva

 

ইতিহাসে এমন কিছু ঘটনা রয়েছে, যা শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। তেমনই এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছিল ১৮শ শতকের রাশিয়ায়। Valentina Vassilyeva নামের এক রুশ নারী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দেওয়া মা হিসেবে পরিচিত। তার জীবন ও সন্তান জন্মদানের গল্প আজও মানুষকে বিস্মিত করে।

Valentina Vassilyeva ১৭০৭ সালে রাশিয়ার Shuya অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন এক সাধারণ কৃষকের স্ত্রী। সে সময় সন্তান জন্ম দেওয়া নারীদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত হতো, বিশেষ করে কৃষক পরিবারে, যেখানে বেশি সন্তান মানে বাড়তি কর্মশক্তি। Valentina-র ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও অবিশ্বাস্য হয়ে ওঠে, কারণ তিনি ২৭ বার গর্ভধারণ করেছিলেন এবং মোট ৬৯টি সন্তানের জন্ম দেন।

Valentina ১৬ বার যমজ, ৭ বার ট্রিপলেট এবং ৪ বার কোয়াড্রুপলেট সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, তার ৬৯টি সন্তানের মধ্যে ৬৭ জন বেঁচে ছিলেন এবং মাত্র ২ জন শৈশবে মারা যান। এটি এমন এক রেকর্ড, যা আজ পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেননি।

এই তথ্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিলে পাওয়া যায়। ১৭৮২ সালে মস্কোর সরকারের কাছে জমা দেওয়া নথিতে Feodor Vassilyev-এর ৬৯ জন সন্তান থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া, এটি Guinness World Records-এও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, যেহেতু ১৮শ শতকের রাশিয়ায় জন্ম নিবন্ধন ব্যবস্থা তেমন উন্নত ছিল না, তাই কিছু বিতর্কও রয়েছে।

অসংখ্য সন্তান জন্ম দেওয়ার পরও Valentina দীর্ঘ সময় বেঁচে ছিলেন এবং ১৭৮২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার এই জীবনগাঁথা ইতিহাসে বিরলতম ঘটনার মধ্যে একটি, যা আজও গবেষকদের বিস্মিত করে।

 

ইফতারিতে ডাবের পুডিং

 

গরম আবহাওয়ার মধ্যে ইফতারি যেন এক স্বস্তির আশ্রয়, যেখানে প্রত্যেকটি খাবার আমাদের শরীর ও মনকে প্রশান্তি দেয়। এমনই এক স্নিগ্ধ ও স্বস্তিদায়ক উপাদান হলো ডাবের পুডিং। মিষ্টি, ঠান্ডা এবং সুস্বাদু এই পুডিং ইফতারির টেবিলে এনে দেয় একধাপ বিশেষত্ব। কেবল মুখের স্বাদ নয়,শারীরিক তৃপ্তি প্রদানকারী খাবারও বটে।

ডাবের পুডিং তৈরি করতে কিছু সহজ উপকরণ প্রয়োজন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:
১. একটি বা দুটি শাঁসযুক্ত ডাবের পানি
২. ২৫ বা ৫০ গ্রাম চায়না গ্রাস (পানির পরিমাণ অনুযায়ী পরিমাণ বাড়ানো যাবে)
৩. পরিমাণমতো চিনি

প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমে, গরম পানিতে ১০-১৫ মিনিট চায়না গ্রাস ভিজিয়ে রাখুন। তারপর একটি ডাবের পানি পুরোটা একটি পাত্রে ঢেলে নিন। এরপর, পাত্রটি চুলায় দিয়ে ফুটতে দিন। পানি ফুটতে শুরু করলে, এতে পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে ভালভাবে নাড়তে হবে যেন চিনি গলে পানির সাথে মিশে যায়।
এরপর, ভেজানো চায়না গ্রাস ডাবের পানিতে মিশিয়ে পুরো মিশ্রণ টা থিক না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
এবারমিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে এলে একটি বাটিতে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন ২-৩ ঘণ্টা। ফ্রিজে সেট হয়ে গেলে, উপরের অংশে ডাবের শাঁস বা বাদাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ইফতারে পরিপূর্ণতার জন্য অনবদ্য একটু আইটেম!

 

রমজানে নারীর ব্যস্ততা কমিয়ে সহজ জীবন গড়ার উপায়

 

রমজান, আত্মশুদ্ধির মাস, ধৈর্য ও সংযমের পরীক্ষার মাস। এই মাসে ইবাদতের পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বও বেড়ে যায় বহুগুণ। বিশেষ করে নারীদের জন্য রমজান যেন এক অনন্ত ব্যস্ততার গল্প হয়ে ওঠে। সেহরি থেকে ইফতার, ইবাদত থেকে পরিবারের দেখভাল—সবকিছু সামলাতে গিয়ে যেন ক্লান্তির শেষ থাকেনা । অথচ একটু কৌশলী পরিকল্পনা ও পারিবারিক সহযোগিতা পেলে এই সময়টাকে আরও সহজ করে তোলা সম্ভব।

পরিকল্পনাই সাফল্যের চাবিকাঠি
যেকোনো কাজকে সহজ করতে দরকার সুপরিকল্পনা। রমজানের প্রতিদিনের কাজ আগেভাগে সাজিয়ে নিলে অযথা ব্যস্ততা কমে যাবে। কোন কাজ কখন করা হবে, কী কী প্রস্তুতি প্রয়োজন, কোন কাজ আগে সম্পন্ন করা উচিত—এসব লিখে রাখলে সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে। এতে ক্লান্তি যেমন কমবে, তেমনি ইবাদতের জন্যও বাড়তি সময় বের করা যাবে।

বাহুল্য পরিহার, সহজতাই সৌন্দর্য
আমাদের সমাজে ইফতার মানেই যেন বাহারি আয়োজন। প্রতিদিন নানা পদ না থাকলে চলে না, অথচ এত আয়োজন করতে গিয়ে নারীদের বেশ বেগ পোহাতে হয়। অথচ রমজানের মূল উদ্দেশ্যই হলো সংযম ও আত্মশুদ্ধি। তাই প্রতিদিন বাহুল্য এড়িয়ে পুষ্টিকর ও সহজ কিছু খাবার তৈরি করলেই কাজ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

সম্ভব হলে আগেভাগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া
সময় ও পরিশ্রম বাঁচাতে কিছু কাজ আগেই সেরে রাখা যায়। যেমন—সপ্তাহের জন্য মাছ-মাংস কেটে সংরক্ষণ করা, মসলা গুঁড়ো করে রাখা, পেঁয়াজ-রসুন কেটে রাখা বা শরবত তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া। এতে কাজের চাপ অনেকটাই কমে আসবে এবং ইফতারের সময় অস্থিরতা দূর হবে।

পরিবারের সবাই মিলে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া
শেয়ারিং এন্ড কেয়ারিং এর মাধ্যমে রমজানের সৌন্দর্য আরো বহুগুনে বাড়িয়ে তোলে। তাই পরিবারের পুরুষ সদস্য ও শিশুদেরও ঘরের কাজে অংশগ্রহণ করা উচিত। পেঁয়াজ-রসুন কাটা, শরবত তৈরি, টেবিল সাজানো—এই ছোট ছোট কাজে সাহায্য করলে নারীর ওপর চাপ অনেকটাই কমবে।

নিজেকে ভুলে গেলে চলবে না
দিনভর রোজা রেখে বিরামহীনভাবে কাজ করলে শারীরিক ও মানসিক অবসাদ নেমে আসতে পারে। তাই কাজের ফাঁকে একটু বিশ্রাম নেওয়া দরকার। পানিশূন্যতা দূর করতে ইফতারের পর প্রচুর পানি পান করতে হবে, পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শরীর সুস্থ থাকলে ইবাদতেও মনোযোগ বাড়বে, কাজে ক্লান্তিও কমে আসবে।

রমজান মাস নারীর জন্য যেন বোঝা হয়ে না উঠে, বরং এটি আত্মার প্রশান্তি ও পরিবারে সৌহার্দ্য তৈরির মাস হবে। যদি সবাই মিলে একে অপরের পাশে দাঁড়ায়, দায়িত্ব ভাগ করে নেয়, তাহলে নারীর জন্য রমজানও হবে প্রশান্তিময়। সংযমের এই পথচলা হোক সুস্থ, সুন্দর ও পরিপূর্ণ।

 

কেরানীগঞ্জে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যা: তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রাজধানীর কেরানীগঞ্জে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—সজিব, রাকিব ও শাওন। এছাড়া লাশ গুমের ঘটনায় তাদের প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এরশাদ আলম জর্জ জানান, ট্রাইব্যুনাল ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন আসামিদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আলী আকবর (২২) ও মো. রিয়াজ (২২) অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন।

২০২২ সালের ১১ জুন কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আঁটিবাজার এলাকায় টহলরত পুলিশ ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে পুকুর থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, নিহত নারীর নাম মারিয়া। তার বান্ধবী বৃষ্টি আক্তার আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে পুলিশ আসামি শাওনকে গ্রেফতার করে।
শাওন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে জানায়, সে নিজে,রাকিব, সজিব, আলী আকবর মিলে মারিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মরদেহ পুকুরে ফেলে দেয়। পরে রাকিব ও সজিবকেও গ্রেফতার করা হলে তারাও আদালতে একই স্বীকারোক্তি দেয়।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অলক কুমার দে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর বিচারকাজ শুরু হলে ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা আসামি রাকিব ও শাওনকে আদালতে হাজির করা হয় এবং রায় শেষে তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত সজিব পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

 

ফিলিস্তিনে নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদে ইসরায়েলের জাতিসংঘ সদস্য পদ বাতিলের দাবি

 

ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি যুক্তি লঙ্ঘন করে নারী ও শিশুদের উপর নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ। তারা ইসরায়েলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করে জাতিসংঘের সদস্য পদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

শনিবার (২২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান বলেন, “ইসরায়েল যে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিরীহ নারী ও শিশু। শিশুদের হত্যা, মায়েদের বিধবা করা—এ কোন সভ্যতার নমুনা?”
তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনের নিষ্পাপ শিশুরা আজ প্রাণ হারাচ্ছে ইসরায়েলের বর্বরতার শিকার হয়ে। অসহায় নারীরা স্বজন হারিয়ে পথে বসেছে। মানবতার নামে যারা কথা বলে, তারা আজ নির্বিকার। জাতিসংঘ যদি এই হত্যাকাণ্ড বন্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে মুসলিম বিশ্ব ধরে নেবে, তারা এ গণহত্যার নীরব সহযোগী।”

বক্তারা উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যুদ্ধের নামে শিশুদের হত্যা করছে, নারীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি জান্নাতুল কারীম সুইটি বলেন, “কোনো সভ্য জাতি নারী ও শিশুর ওপর হামলা চালাতে পারে না। ইসরায়েল আজ প্রমাণ করেছে, তারা মানবতার শত্রু, এক নিষ্ঠুর সন্ত্রাসী রাষ্ট্র।”
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য মাহবুবা খাতুন শরীফা বলেন, “ইসরায়েলের হামলায় সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারাচ্ছে শিশুরা। তারা কি যুদ্ধ করছে? তাদের অপরাধ কী? এটি মূলত ফিলিস্তিনি জনগণকে নিশ্চিহ্ন করার একটি পরিকল্পিত গণহত্যা।”

মানববন্ধনে বক্তারা ফিলিস্তিনে অবিলম্বে হামলা বন্ধের দাবি জানান এবং ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের আহ্বান জানান।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলিম দেশকে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে এবং ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে হবে।
“শিশু হত্যাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া যায় না। অবিলম্বে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে,”—বলেন এক নারী নেতা।

বক্তারা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ইসরায়েলের সব পণ্য বয়কট করার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

 

বিশ্ব পানি দিবস: শুধু পানি কেন? পানিকে উপকারী করে তোলার ১০টি উপায়

 

পানি আমাদের জীবনের অপরিহার্য উপাদান। এটি শুধু তৃষ্ণা মেটানোর জন্য নয়, বরং শরীরের প্রতিটি কোষের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু একঘেয়ে স্বাদের কারনে অনেকেই প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি পান করতে চান না। তবে, যদি পানিকে কিছু উপকারী উপাদানের সংমিশ্রণে আরও স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু করা যায়, তবে তা শরীরকে সতেজ রাখার পাশাপাশি নানা উপকারও বয়ে আনবে।

আজ ২২মার্চ, বিশ্ব পানি দিবস। প্রতি বছর ২২ মার্চ এই দিবস পালিত হয়, যা মিঠা পানির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার প্রচারের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত একটি বিশেষ দিন। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনে (ইউএনসিইডি) প্রথম এই দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়, এবং ১৯৯৩ সাল থেকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়ে আসছে।

প্রতি বছর বিশ্ব পানি দিবসে একটি নির্দিষ্ট থিম নির্ধারিত হয়। ২০২৫ সালের থিম হলো ‘গ্লেসিয়ার সংরক্ষণ’, যা হিমবাহের গলনের ফলে সৃষ্ট পানি প্রবাহের অনিশ্চয়তা এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে।

বিশ্ব পানি দিবসে আসুন জেনে নিই, কীভাবে আমাদের প্রতিদিনের পানিকে আরও কার্যকরী ও উপকারী করা যায়—

১. লেবু
লেবুর রসে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন C, যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজমশক্তি উন্নত করে। সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন, যা বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করবে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

২. আদা
আদার জিঞ্জেরল যৌগ হজমশক্তি বাড়ায়, পেট ফাঁপা কমায় এবং প্রদাহ হ্রাস করতে সাহায্য করে। গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা ভিজিয়ে রেখে চায়ের মতো পান করলে এটি শরীরকে উষ্ণ ও সতেজ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।

৩. দারুচিনি

প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ দারুচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। এক গ্লাস গরম পানিতে দারুচিনির কাঠি ভিজিয়ে রেখে পান করলে এটি বিপাক বাড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

৪. পুদিনা
পুদিনার পাতা শুধু পানিকে সুগন্ধি ও সতেজ করে না,এটি চর্বি ভাঙতেও সাহায্য করে, যা ওজন কমানোর রুটিনে একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে। এক গ্লাস পানিতে এক মুঠো তাজা পুদিনা পাতা যোগ করুন। এটি কয়েক ঘণ্টা বা পুরো রাত ডিটক্স পানীয়তে ভিজিয়ে রেখে সকালে পান করুন।

৫. হলুদ

হলুদে বিদ্যমান কারকিউমিন প্রদাহ কমায়, লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখে। এক গ্লাস উষ্ণ পানিতে এক চিমটি হলুদ ও সামান্য গোলমরিচ মিশিয়ে পান করলে এটি দেহের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।

৬. আপেল সাইডার ভিনেগার
অ্যাসিটিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ আপেল সাইডার ভিনেগার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে সকালে খালি পেটে পান করুন, যা শরীরের চর্বি কমানোর পাশাপাশি বিপাকক্রিয়া দ্রুততর করবে।

৭. গ্রিন টি
গ্রিন টিতে রয়েছে ক্যাটেচিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে। ঠান্ডা পানিতে গ্রিন টি মিশিয়ে লেবুর রস দিয়ে পান করলে এটি আরও উপকারী হয়ে ওঠে।

৮. শসা
শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জলীয় অংশ, যা শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে। এক গ্লাস পানিতে শসার টুকরো দিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পান করলে এটি শরীরের টক্সিন দূর করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখবে।

৯. মৌরি
মৌরি শুধু মুখশুদ্ধি হিসেবেই নয়, বরং পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়েও দারুণ কার্যকর। এটি হজমশক্তি উন্নত করে, গ্যাসের সমস্যা কমায় এবং শরীরকে প্রশান্তি দেয়। গরম পানিতে এক চামচ মৌরি ভিজিয়ে রেখে ঠান্ডা হলে পান করুন।

১০. তালমাখনা
তালমাখনা বা বেসিল সিডস (সাবজা) শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং হজমে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ তালমাখনা ভিজিয়ে রেখে পান করুন, এটি শরীরের অতিরিক্ত গরম কমাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

পানি শুধু জীবন রক্ষাকারী উপাদান নয়, এটি সুস্থ থাকার চাবিকাঠিও। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এবং এতে উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান যোগ করে আরও কার্যকর ও পুষ্টিকর করে তুলুন।
বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে আসুন প্রতিজ্ঞা করি— নিজেকে হাইড্রেটেড রাখব, পানি অপচয় রোধ করব এবং সুস্থ থাকার জন্য সঠিকভাবে পানি পান করব।

বিশ্ব পানি দিবসে সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন!

#বিশ্বপানীদিবস #সুস্থজীবন #পানিকেপ্রিয়করুন #ডিটক্সড্রিঙ্ক #স্বাস্থ্যকরঅভ্যাস

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বড় পরিবর্তন

১৮ মার্চ ২০২৫: ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০” সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা, বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি যৌথভাবে এই ঘোষণা দেন।
সরকারের এই উদ্যোগের পেছনে সাম্প্রতিক ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। গত ৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসিয়ার ধর্ষণের বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামে। সেখান থেকে “ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ” গঠিত হয়, যা পরদিন মশাল মিছিলের মাধ্যমে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করে। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি ও আইন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সারাদেশে শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের আন্দোলনের ফলস্বরূপ সরকার অবশেষে এই সংশোধনীর উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আইনের সংশোধনীতে যেসব পরিবর্তন আসছে

১. বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন:
১৬ বছরের কম বয়সী শিশু ধর্ষণের বিচারে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।

এতে তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুততর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২. তদন্ত ও বিচার দ্রুততর করা:
ধর্ষণ মামলার তদন্ত ১৫ দিনের মধ্যে এবং বিচার ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

আগে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ না হলে জামিনের সুযোগ ছিল, সেটি বাতিল করা হয়েছে।

৩. ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন:
বর্তমানে শুধু ঢাকায় CID Forensic Lab থাকায় প্রমাণ পরীক্ষায় বিলম্ব হয়।

নতুন করে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ২টি ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা হবে।

৪.DNA রিপোর্ট ছাড়াই বিচার:
ধর্ষণের মামলায় DNA রিপোর্ট দেরিতে এলে মেডিকেল সার্টিফিকেট ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচার করা যাবে।

তবে, এতে মিথ্যা মামলার আশঙ্কা থাকায় বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।

৫. ধর্ষণের সংজ্ঞায়ন স্পষ্টকরণ:
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও সম্মতি ব্যতিরেকে ধর্ষণকে আলাদা অপরাধ হিসেবে আইনে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

সম্মতি ব্যতিরেকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত দ্রুততর করা হবে।

৬. ভিকটিম প্রোটেকশন:
ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীর জন্য ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়েছে।

ধর্ষণের উদ্দেশ্যে আঘাত বা জখম করলে কঠোর শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

৭. মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান:
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা করলে বিচারক স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

৮.দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ বিচারক নিয়োগ:
বিশেষ Judicial Service Commission গঠন করে নতুন বিচারক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা জানান, আগামী বৃহস্পতিবার এই সংশোধনী চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সংশোধনীতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আইনের অপব্যবহার রোধে আরও স্পষ্টতা প্রয়োজন বলে বিভিন্ন পক্ষ মত প্রকাশ করেছে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, আইন চূড়ান্ত গেজেট আকারে প্রকাশের আগে স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ করা উচিত। সংশোধনীর ফলে যেন নতুন কোনো আইনি জটিলতা সৃষ্টি না হয় এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়, সেটিই এখন মূল বিষয়।

 

সহকারী জজ পরীক্ষায় দেশসেরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হালিমাতুস সাদিয়া

 

১৭তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে সহকারী জজ হিসেবে দেশসেরা হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারাবাহিক ৩বারের সাফল্যকে পেছনে ফেলে এবার শীর্ষস্থান অর্জন করলেন তিনি।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া মূলত বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় সারাদেশ থেকে মোট ১০২ জন সহকারী জজ হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই শিক্ষার্থী, সুব্রত পোদ্দার (৪৭তম) ও নূর-ই-নিশাত (৫২তম), চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

এই অসাধারণ সাফল্যে উচ্ছ্বসিত হালিমাতুস সাদিয়া বলেন “এই অর্জন শুধুমাত্র আমার একার নয়, এটি আমার মা-বাবা, শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করতে পেরে আমি গর্বিত। দেশবাসীর দোয়া চাই, যেন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনও এই সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন “আমাদের শিক্ষার্থীরা যে কোনো প্রতিযোগিতায় নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে সক্ষম। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সংকটের মধ্যেও শিক্ষার্থীরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।”

উল্লেখ্য, এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরপর তিনবার বিজেএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিল। এবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রথম স্থান অর্জন করায় নতুন এক ইতিহাস রচিত হলো।

 

জলবায়ু বিপর্যয়ে নারীর স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় গুরুতর প্রভাব

 

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নারীদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জলবায়ুজনিত দুর্যোগ যেমন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে নারীরা নানা সংকটে পড়ছেন। বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি, শিক্ষাজীবন ব্যাহত হওয়া এবং দারিদ্র্যের কারণে বাল্যবিয়ে ও নারী নির্যাতনের হার বাড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ঢাকার আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে “জলবায়ু বিপর্যয়ে নারীর উপর অভিঘাত মোকাবেলায় করণীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সভায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সংগঠকরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নারীদের বাস্তব সংকট ও তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নারী ও কিশোরীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক মেয়েশিশুর শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দারিদ্র্যের শিকার হওয়ায় মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, যা বাল্যবিয়ের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়া দুর্যোগকবলিত এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদ ব্যবস্থা না থাকায় নারী ও কিশোরীরা যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত পানি অধ্যুষিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

সভায় বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, নারীদের জন্য দুর্যোগকালীন নিরাপদ আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ এবং সচেতনতা কার্যক্রম বাড়াতে হবে। পাশাপাশি, সরকার ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে একযোগে কাজ করে নারীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পারভীন ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগমসহ ৩১টি জেলা থেকে আগত সংগঠকবৃন্দ। বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নারীদের রক্ষা করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে এবং নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় নারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে মতবিনিময় সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

 

ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াই: নারীদের জন্য প্রয়োজন বিশেষ পদক্ষেপ

 

আলেয়া বেগম, একজন গৃহকর্মী, প্রতিদিনের কঠোর পরিশ্রমে অভ্যস্ত ছিলেন। ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া—এই সব কাজের পর শরীরে ব্যথা হওয়াটা তার কাছে স্বাভাবিকই মনে হতো। কিন্তু একদিন প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর, তিনি বুঝতে পারেন এটি সাধারণ ক্লান্তি নয়। হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর পর ধরা পড়ে—তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।
চিকিৎসা চলাকালীন তিনি বেশ কিছুদিন কাজে যেতে পারেননি। এই সুযোগে তার কর্মস্থলে অন্য গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে অসুস্থতার কারণে শুধু যে তার শারীরিক দুর্বলতা বেড়েছে তা-ই নয়, জীবিকাও হারিয়েছেন তিনি। সুস্থ হওয়ার পর নতুন কাজ খুঁজতে গিয়েও নানা সমস্যার সম্মুখীন হন।

আলেয়ার গল্পটি দেশের হাজারও নিম্নআয়ের নারীর চিত্র ফুটিয়ে তোলে, যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর কর্মসংস্থান হারানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতার শিকার হন।

ডেঙ্গুতে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে কেন?
২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ৫৭৫ জনের মধ্যে ২৯৫ জনই ছিলেন নারী। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নারীদের শারীরিক ও সামাজিক অবস্থান তাদের ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
১. জৈবিক কারণ: নারীদের শরীরে রক্তস্বল্পতা, উচ্চ রক্তচাপ ও হরমোনজনিত জটিলতা বেশি থাকে, যা ডেঙ্গুর প্রভাবকে তীব্র করে তোলে।

২. সময়মতো চিকিৎসার অভাব: নিম্নআয়ের নারীরা চিকিৎসা নিতে দেরি করেন, ফলে ডেঙ্গু গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

3. সামাজিক কারণ: পরিবারের দেখভালের দায়িত্ব নারীদের ওপর বেশি থাকে। তারা নিজের অসুস্থতা এড়িয়ে যান, যা পরে গুরুতর সমস্যা তৈরি করে।

অর্থনীতিতে প্রভাব
দেশের মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০% নারী, যারা প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু ডেঙ্গুর মতো রোগে আক্রান্ত হলে, তারা শুধু নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন না, বরং দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আলেয়ার মতো গৃহকর্মীরা অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ হারান, চিকিৎসার জন্য খরচ বহন করতে হয় এবং সুস্থ হওয়ার পর নতুন কাজ পেতে বাধার সম্মুখীন হন। তাদের জন্য কোনো সামাজিক সুরক্ষা না থাকায়, একবার অসুস্থ হলে তারা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘ সময় নেন।

নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় দরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ
ডেঙ্গু মোকাবিলায় নারীদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সময়মতো চিকিৎসা ও সচেতনতার অভাব অনেক নারীর জীবন সংকটে ফেলে দেয়।
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: ডেঙ্গুর লক্ষণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে নারীদের মধ্যে বিশেষ প্রচারাভিযান চালানো প্রয়োজন।

২. ওয়ান-স্টপ সার্ভিস বুথ: নারীদের চিকিৎসা সহজ করতে এক জায়গায় পরীক্ষা, চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

৩. ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প: নিম্নআয়ের নারীদের জন্য বিনামূল্যে প্লাটিলেট কাউন্ট ও অন্যান্য পরীক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করা দরকার।

ডেঙ্গু শুধু একটি রোগ নয়, এটি নারীদের জীবিকা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর বড় ধাক্কা সৃষ্টি করে। আলেয়ার মতো হাজারো নারী এই সমস্যার শিকার হচ্ছেন, অথচ তাদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। নারীদের স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা গেলে, এই ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার ও সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে নারীদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে।
তথ্য সুত্র ঃ দ্য ডেইলি স্টার

 

সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য রাসুল (সা.)-এর সুন্নত

 

প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তিনি যেমন একজন আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক, শাসক ও দাঈ ছিলেন, তেমনই দাম্পত্য জীবনে ছিলেন স্নেহশীল, দায়িত্বশীল ও শ্রেষ্ঠ স্বামী। তাঁর জীবনের অনুসরণীয় দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির শিক্ষা।

নবিজি (সা.) তাঁর স্ত্রীদের প্রতি সর্বদা সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করতেন এবং সাহাবিদেরও তাঁদের স্ত্রীদের প্রতি উত্তম ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন। তিনি বলেছেন—
“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রীর প্রতি সর্বোত্তম আচরণ করে। আর আমি আমার স্ত্রীর প্রতি তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।” (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

নিচে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুন্নত উল্লেখ করা হলো, যা পালন করলে দাম্পত্য জীবন আরও সুন্দর ও সুখময় হয়ে উঠবে—

১. স্ত্রীর কাছ থেকে চুল আঁচড়ে নেওয়া
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন—
“আমি হায়েজ অবস্থায় আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর মাথা আঁচড়ে দিতাম।” (বুখারি ২৯৫)

২. স্ত্রীর কোলে মাথা রেখে ঘুমানো
আয়েশা (রা.) বলেন—
“রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার উরুতে মাথা রেখে ঘুমাতেন।” (বুখারি ৪৬০৭)

৩. স্ত্রীর সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করা

তিনি আরও বলেন—
“আমি নবিজির (সা.) সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছিলাম এবং জয়ী হয়েছিলাম। পরে আমি মোটা হলে তিনি দৌড়ে আমাকে পরাজিত করেন এবং বলেন, ‘এ বিজয় সেই পরাজয়ের বদলা।’” (আবু দাউদ ২৫৭৮)

৪. স্ত্রীর সঙ্গে একসঙ্গে গোসল করা

“আমি ও নবিজি (সা.) একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করতাম।” (বুখারি ২৫০)

৫. স্ত্রীর কোলে হেলান দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করা

“নবিজি (সা.) আমার কোলে হেলান দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করতেন, তখন আমি হায়েজ অবস্থায় ছিলাম।” (বুখারি ২৯৭)

৬. স্ত্রীর প্রশংসা করা
রাসুল (সা.) বলেছেন—
“নারীদের মধ্যে আয়েশার মর্যাদা অন্য সকল নারীর তুলনায় এমন, যেমন সারীদের মর্যাদা অন্যান্য খাদ্যের তুলনায়।” (বুখারি ৩৪১১)

৭. স্ত্রীর কাজে সহায়তা করা

হজরত আসওয়াদ (রা.) বলেন—
“আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবিজি (সা.) ঘরে কী করতেন? তিনি বললেন, তিনি পরিবারকে সাহায্য করতেন এবং নামাজের সময় হলে বেরিয়ে যেতেন।” (বুখারি ৬৭৬)

প্রিয় নবী (সা.)-এর দাম্পত্য জীবনের সুন্নতগুলো আমাদের জন্য উত্তম দৃষ্টান্ত। যদি প্রতিটি স্বামী পরিবারে এই সুন্নতগুলো পালন করেন, তাহলে সংসার হবে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও প্রশান্তির এক সুন্দর আশ্রয়স্থল।

 

শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম

শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের সময় মস্তিষ্ক নতুন শেখা বিষয় সংরক্ষণ ও পুনঃপ্রস্তুত করে, যা শিশুর স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে। বিশেষত, গভীর রাতের ঘুম শিশুর শেখার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং তার মস্তিষ্ককে সুসংগঠিত রাখে।

ঘুমের একটি বিশেষ ধাপ হলো REM (Rapid Eye Movement), যেখানে শিশুর মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে এবং নতুন শেখা তথ্য সংরক্ষণ ও পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করে। এই ধাপে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে এবং স্মৃতি শক্তিশালী হয়।

অন্যদিকে, NREM (Non-Rapid Eye Movement) ধাপে শিশুর শরীর ও মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেয় এবং শেখা বিষয়গুলোর দীর্ঘস্থায়ী সংরক্ষণ ঘটে। তাই গভীর ঘুম শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

শিশুর বয়স অনুযায়ী ঘুমের প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হতে পারে। নবজাতক শিশুদের দিনে ১৪-১৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন, কারণ এই সময় তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ সবচেয়ে বেশি হয়। ৩-১২ মাস বয়সী শিশুদের ১২-১৫ ঘণ্টা এবং ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের ১০-১৪ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। পর্যাপ্ত ঘুম শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি, মনোযোগ বৃদ্ধি এবং শেখার দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা যখন রাতে পর্যাপ্ত ঘুমায়, তখন তারা সারা দিনে শেখা বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে মনে রাখতে পারে। রাতের ঘুমের সময় মস্তিষ্ক শেখা তথ্যকে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত করে। দিনের ঘুমও কিছুটা সহায়ক, তবে রাতের গভীর ঘুম সবচেয়ে কার্যকর। নতুন কিছু শেখার পর পর্যাপ্ত ঘুম শিশুর স্মৃতি মজবুত করতে সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত ও গভীর ঘুম শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য, শেখার দক্ষতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই শিশুর সঠিক ঘুম নিশ্চিত করা তার সার্বিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

 

নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন: জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত

 

নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বর্তমানে একটি জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, জানিয়েছে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি। সম্প্রতি সেগুনবাগিচায় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা জানান, নারীর প্রতি যে ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, তা শুধুমাত্র নারীর সমস্যা নয়, বরং এটি একটি সামাজিক সমস্যা।

‘ঢাকাতে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ বিষয়ে আলোচনা করতে আয়োজিত এই সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনায়। বক্তারা জানান, এ ধরনের সহিংসতা রোধে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, বর্তমানে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে এ সহিংসতার মাত্রা আরো বেড়ে যায়। নারীর প্রতি ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রবণতা এবং দুর্বলতার কারণে সহিংসতা বেড়েছে। এজন্য নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

তথ্যসুত্র :আজকের পত্রিকা

 

কেশবপুরের প্রিয়া খাতুন: সাইক্লিং ও হকিতে দেশসেরা হওয়া কিশোরী

 

গড়ভাঙ্গা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়া খাতুন বর্তমানে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক তারকা। কেশবপুর উপজেলা শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ের প্রিয়া সাইক্লিংয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দেশসেরা হয়েছে এবং হকি দলের অধিনায়ক হিসেবে দলকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ৫৩তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রিয়া সাইক্লিংয়ে স্বর্ণপদক জয় করে এবং তার নেতৃত্বে গড়ভাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের মেয়েরা হকিতে চ্যাম্পিয়ন হয়।

প্রিয়া খাতুন রাজনগর বাকাবর্শী গ্রামের কৃষক শাহজাহান মোড়ল ও লাকি বেগমের মেয়ে। দারিদ্র্য ও সামাজিক সংকট মোকাবিলা করে প্রিয়া ছোটবেলা থেকে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ শুরু করে। সাইক্লিং ও হকি খেলার প্রতি তার আগ্রহ বাড়ে এবং গত বছর সাইক্লিংয়ে রাজশাহী থেকে প্রথম হওয়ার পর মনোবল বৃদ্ধি পায়। কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন তাকে একটি রেসিং সাইকেল উপহার দেন।

প্রিয়া তার সাফল্যের জন্য পরিবার ও শিক্ষকদের সহযোগিতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। মেয়ের এই সাফল্যে তার মা গর্বিত, এবং এলাকার বাসিন্দারা তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুপ্রভাত কুমার বসু বলেন, গ্রামের মেয়েরা এই জাতীয় সাফল্য অর্জন করে সত্যিই গর্বের বিষয়। কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 

টোকিওর প্রযুক্তি উন্নয়নে নারী নেতৃত্ব

 

টোকিওকে আরও আধুনিক, স্মার্ট ও নিরাপদ নগরীতে রূপান্তর করতে বৈচিত্র্য ও উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে টোকিও মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্ট (টিএমজি)। ২০১৬ সাল থেকে গভর্নর ইউরিকো কোইকের নেতৃত্বে নারীরা এই রূপান্তরের মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছেন।

টোকিও মেট্রোপলিটন অ্যাসেম্বলির ১২৭ সদস্যের মধ্যে ৪১ জন নারী, যারা শহরের উন্নয়ন, প্রযুক্তি, ব্যবসা ও সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তাদের মধ্যে নোবুকো ইরি উল্লেখযোগ্য, যিনি শহরের বিনোদন ও রাতের জীবন পুনরুজ্জীবিত করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। তার মতে, টোকিওর আকর্ষণ ধরে রাখতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাংস্কৃতিক ও বিনোদন খাতের বিকাশ অপরিহার্য।

“সুশি টেক টোকিও” নামের বিশ্বব্যাপী সম্মেলনে উদ্ভাবনী স্টার্টআপ ও বিনিয়োগকারীরা একত্র হন, যেখানে স্মার্ট সিটি ও টেকসই উন্নয়নের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। নতুনভাবে চালু হওয়া “পাবলিক ডে” অনুষ্ঠানে শিশু ও পরিবারদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি, রোবট পরিচালনা ও ইন্টারঅ্যাকটিভ ভিআর গেমের সুযোগ থাকছে।

নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ টোকিওর উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। নোবুকো ইরি মনে করেন, নারীদের উপস্থিতি শিশুবিকাশ, শিক্ষা ও নার্সিংয়ের মতো বাস্তব সমস্যা সমাধানে সহায়ক। টিএমজি বৈচিত্র্য, নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে টোকিওকে ভবিষ্যতের সেরা শহর হিসেবে গড়ে তুলতে নারীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

 

মেরি এলিজাবেথ গ্যারেট: নারী শিক্ষার অগ্রদূত

 

সমাজের পরিবর্তন আনতে কিছু মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করেন। মেরি এলিজাবেথ গ্যারেট তেমনই একজন সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ ছিলেন, যিনি নারী শিক্ষার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নারীরা উচ্চশিক্ষা ও চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রবেশের সুযোগ পান।

মেরি এলিজাবেথ গ্যারেট জন্মগ্রহণ করেন ৫ মার্চ ১৮৫৪ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে। তার বাবা জন ওয়ার্ক গ্যারেট ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও বাল্টিমোর অ্যান্ড ওহাইও রেলওয়ের প্রেসিডেন্ট। ফলে ছোটবেলা থেকেই তিনি শিক্ষা ও নেতৃত্বের মূল্যবোধ শিখেছিলেন।
তবে তার মায়ের অকালমৃত্যু এবং সমাজে নারীদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য তাকে ব্যথিত করে। তিনি উপলব্ধি করেন, নারীদের যদি শিক্ষার সুযোগ না দেওয়া হয়, তবে তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নিতে পারবে না। এই উপলব্ধিই তাকে নারী শিক্ষার জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।

মেরি গ্যারেট তার সম্পদ ও প্রতিভা কাজে লাগিয়ে নারীদের জন্য উচ্চশিক্ষার দরজা উন্মুক্ত করতে চেষ্টা করেন। তার উল্লেখযোগ্য কিছু উদ্যোগ হলো—

Johns Hopkins School of Medicine-এ নারীদের সুযোগ

১৮৯০-এর দশকে, Johns Hopkins School of Medicine আর্থিক সংকটে পড়ে। তখন মেরি গ্যারেট ৩,৫০,০০০ ডলার অনুদান দেন, কিন্তু শর্ত দেন যে এই মেডিকেল স্কুলে নারীদেরও সমানভাবে ভর্তি ও শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। তার এই পদক্ষেপের ফলে প্রথমবারের মতো নারীরা Johns Hopkins-এ চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়নের সুযোগ পান। এটি নারীদের চিকিৎসা শিক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দেয়।

Bryn Mawr School প্রতিষ্ঠা

১৮৮৫ সালে, তিনি Bryn Mawr School for Girls প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন। এটি ছিল উচ্চমানের একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে গণিত, বিজ্ঞান, সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া হতো।

শিক্ষার পাশাপাশি তিনি নারীদের অধিকার ও সমতার জন্য বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তিনি National American Woman Suffrage Association-এরও একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং নারীদের ভোটাধিকার আদায়ের প্রচারণায় অর্থ সহায়তা দেন।

মেরি গ্যারেট বিয়ে করেননি এবং তার জীবনের বেশিরভাগ সময়ই সমাজসেবা ও নারী শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করেন। তার বন্ধুমহলে ছিলেন অনেক প্রভাবশালী নারীবাদী চিন্তাবিদ ও সমাজ সংস্কারক, যাদের সঙ্গে মিলে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রকল্পে কাজ করেছেন।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী, আত্মবিশ্বাসী এবং নেতৃত্বগুণসম্পন্ন। তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও সংগঠক হিসেবে দক্ষতা তাকে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

মেরি এলিজাবেথ গ্যারেট ৩ এপ্রিল ১৯১৫ সালে, ৬১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার রেখে যাওয়া শিক্ষানীতি ও দান-অনুদানের ফলে অসংখ্য নারী উচ্চশিক্ষা ও চিকিৎসাশাস্ত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।
আজকের দিনে নারীদের শিক্ষায় যে অগ্রগতি দেখা যায়, তার পেছনে গ্যারেটের মতো দানশীল ও দূরদর্শী মানুষের অবদান অপরিসীম। নারী শিক্ষার উন্নয়নে তিনি যে পথ দেখিয়ে গেছেন, তা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

 

শিশু যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপের দাবি ২৬ এনজিওর

 

বাংলাদেশে শিশু ও নারীদের প্রতি যৌন সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ২৬টি এনজিওর সমন্বয়ে গঠিত ‘শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ নেটওয়ার্ক’। সংগঠনটি সরকারকে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

নেটওয়ার্কের সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এক বিবৃতিতে জানায়, শিশুদের প্রতি যৌন নির্যাতন ও সহিংসতা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে, যা দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে। মাগুরায় নির্যাতনের শিকার শিশুটির ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার ক্রমবর্ধমান হার দেশের জন্য গুরুতর সংকেত। এটি রোধ করতে সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সাধারণ জনগণের সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। এ বিষয়ে তারা বিচার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, শিশু কল্যাণ পরিষেবার সমন্বয় এবং একটি শিশু সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে।

‘শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ নেটওয়ার্ক’ জোটের সদস্য সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), ইনসিডিন বাংলাদেশ, জাগো নারী, কাঠপেন্সিল, মানব কল্যাণ পরিষদ (এমকেপি), মৌমাছি, পরিবর্তন-খুলনা, সুসমাজ ফাউন্ডেশন, সলিডারিটি, শিশুরাই সব সহ আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন।

এই জোট যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার ও সমাজের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করে এবং শিশুদের সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায়।

তথ্যসূত্র -আজকের পত্রিকা

 

সংগ্রামী বিলকিস বেগম পেলেন ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৪’

 

জীবনের চরম সংকটময় মুহূর্তে ভেঙে না পড়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন রাজশাহীর বিলকিস বেগম। সংসার ও স্বামীকে বাঁচানোর সংগ্রামে তিনি হয়েছেন স্বাবলম্বী, তৈরি করেছেন নতুন পথ। তাঁর এই অদম্য সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে ‘সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান’ ক্যাটাগরিতে তিনি পেয়েছেন ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৪’।

রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি কারিগরপাড়া গ্রামের এই নারীর জীবন ছিল এক কঠিন পরীক্ষার মতো। স্বামী রশিদ খাঁ অসুস্থ হয়ে পড়েন, পা ভেঙে শয্যাশায়ী হন। সংসারের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে ধীরে ধীরে পাহাড়সম ঋণের বোঝা চেপে বসে তাঁদের পরিবারে। ১৭টি এনজিওর কাছে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ লাখ টাকা। টানাপোড়েনের মধ্যে একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে নিজেদের আবাদি জমি বন্ধক রাখতে হয়।
কিন্তু এত প্রতিকূলতার মধ্যেও বিলকিস বেগম হার মানেননি। ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরির কৌশল শিখে নতুন জীবনের সূচনা করেন তিনি। ধীরে ধীরে এই কাজে দক্ষতা অর্জন করে নিজের আয়ের পথ গড়ে তোলেন। নিজের উপার্জনে স্বামীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, ধীরে ধীরে ঋণ পরিশোধ করেন এবং শেষ পর্যন্ত হারানো জমিও ফিরে পান। এখন তাঁর মাসিক আয় ১৫-২০ হাজার টাকা।

নারীর ক্ষমতায়নের এই অসাধারণ দৃষ্টান্তকে স্বীকৃতি জানিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ পাঁচ অদম্য নারীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। গত ১১ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

এই বছর রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলা থেকে ৩৯ জন নারীকে মনোনীত করা হয়েছিল, যাঁদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বিলকিস বেগম ছাড়াও পুরস্কার পেয়েছেন আরও চারজন সংগ্রামী নারী। অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য নওগাঁর সাপাহারের সেফালী খাতুন, শিক্ষা ও চাকরিতে সাফল্যের জন্য সিরাজগঞ্জের চৌহালীর আয়শা সিদ্দিকা, সফল জননী হিসেবে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের লাইলী বেগম এবং নির্যাতনের বিভীষিকা কাটিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করার জন্য নওগাঁ সদরের শাবানা বানু এই সম্মাননা অর্জন করেছেন।

এই সম্মাননা শুধু ব্যক্তিগত সাফল্যের স্বীকৃতি নয়, বরং সমাজের সকল নারীর জন্য এক অনুপ্রেরণা। কঠিন পরিস্থিতিতেও নারীরা যদি সাহস করে এগিয়ে যান, তবে তারা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেন-এই বার্তাই ছড়িয়ে দিলেন বিলকিস বেগম ও তাঁর মতো আরও অদম্য নারীরা।

 

স্বাস্থ্যকর ও হালকা ইফতার রেসিপি

 

ইফতার মানেই সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে প্রশান্তি আনার মুহূর্ত। স্বাস্থ্যকর ও হালকা খাবার ইফতারে গ্রহণ করলে শরীর ভালো থাকে এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়।
নিচে তিনটি সহজ ও পুষ্টিকর ইফতার রেসিপি দেওয়া হলো, যা সুস্বাদু ও উপকারী। এগুলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং হজমে সহায়ক হবে।

দই-চিড়া
দই-চিড়া একটি হালকা ও সহজপাচ্য খাবার, যা দ্রুত শক্তি জোগায়। এটি প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ হওয়ায় হজমে সহায়ক।
উপকরণ:
১ কাপ চিড়া
½ কাপ মিষ্টি দই
১ টেবিল চামচ মধু বা চিনি
১টি কলা (ঐচ্ছিক)
প্রস্তুত প্রণালী:
১. চিড়া ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন।
২. একটি বাটিতে দই, চিনি/মধু ও চিড়া মিশিয়ে নিন।
৩.চাইলে এর সাথে টুকরো করে কাটা কলা মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

ছোলার সালাদ
ছোলা প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যা শরীরকে শক্তি দেয় এবং সহজে হজম হয়। এটি একটি স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু ইফতার আইটেম।
উপকরণ:
১ কাপ সিদ্ধ ছোলা
১টি ছোট টমেটো (কুচি করা)
১টি শসা (কুচি করা)
১টি পেঁয়াজ (কুচি করা)
১ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি
১ চা চামচ লেবুর রস
½ চা চামচ চাট মসলা
পরিমাণমতো লবণ

প্রস্তুত প্রণালী:
সব উপকরণ একটি বাটিতে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।মিশ্রণটি ৫-১০ মিনিট রেখে দিন, যাতে স্বাদ ভালোভাবে মিশে যায়।ঠান্ডা বা সাধারণ তাপমাত্রায় পরিবেশন করুন।

ঠান্ডা শরবত
ইফতারে ঠান্ডা শরবত শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং প্রশান্তি এনে দেয়। এটি সহজেই তৈরি করা যায় এবং তৃষ্ণা নিবারণে দারুণ কার্যকর।
উপকরণ: (তরমুজের শরবত)

১ কাপ তরমুজের রস বা ২ টেবিল চামচ
১ গ্লাস ঠান্ডা পানি
১ টেবিল চামচ মধু
১ চিমটি বিট লবণ (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালী:
তরমুজ ব্লেন্ড করে ছেঁকে রস বের করুন, এর সাথে ঠান্ডা পানি, মধু ও বিট লবণ মিশিয়ে নিন।
ভালোভাবে নেড়ে আইস কিউব দিয়ে পরিবেশন করুন তরমুজের শরবত।

স্বাস্থ্যকর ইফতার আপনাকে সারাদিনের ক্লান্তি কাটিয়ে উজ্জীবিত রাখবে। এসব সহজ ও পুষ্টিকর খাবার ইফতারে যুক্ত করে সুস্থ থাকুন!

 

সৈয়দা তাহিয়া হোসেন:কর্মজীবনে নারীর সফলতা ও আত্মনির্ভরতার গল্প

 

কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে দক্ষতা অর্জন ও কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এই বিশ্বাসকে সামনে রেখে এগিয়ে গেছেন সৈয়দা তাহিয়া হোসেন, যিনি বর্তমানে গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার (CHRO)। তাঁর পেশাগত যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে, তখনও তাঁর স্নাতক শেষ হয়নি। ব্যবসায়ী বাবার প্রতিষ্ঠানে কাজ করার ইচ্ছে থাকলেও বাবা তাঁকে আগে অন্য কোথাও কাজ শেখার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি চাকরির খোঁজ শুরু করেন এবং প্রথম কাজ পান একটি ডাচ চকলেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর দীর্ঘ এইচআর ক্যারিয়ারের পথচলা।

মানুষের সঙ্গে কাজ করার প্রবল আগ্রহ থেকেই তাহিয়া মানবসম্পদ বিভাগে ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম ইন্টারভিউ বোর্ডে তিনি বলেছিলেন, “আমি মানুষের জন্য, মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই।” এই কথার প্রতিফলন তাঁর পুরো ক্যারিয়ারে দেখা গেছে। চাকরির শুরুতেই ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পরামর্শে তিনি এইচআর বিভাগে কাজ শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তাহিয়া বিশ্বাস করেন, ব্যবসার পাশাপাশি কার্যকর এইচআর প্র্যাকটিস সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মতে, শেখার প্রক্রিয়া থেমে গেলে ক্যারিয়ারে উন্নতি করা সম্ভব নয়।

একজন দক্ষ নেতা হিসেবে তাহিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহমর্মিতা ও ভারসাম্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি মনে করেন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে হলে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স ও সমতা রক্ষা করা জরুরি। অনেক সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, আবার কিছু ক্ষেত্রে কর্মীদের পক্ষে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

ডিজিটাল যুগে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। তাহিয়া মনে করেন, শুধুমাত্র টেলিকম খাতের চিন্তাধারা দিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়; বরং টেকনোলজির সাথে একীভূত হয়ে কাজ করতে হবে। নতুন স্কিল অর্জনের পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। তাহিয়ার মতে, এটি একটি বিশাল পরিবর্তন, যেখানে নতুন ট্যালেন্টের সাথে কাজ করার পাশাপাশি পুরোনো কর্মীদেরও দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ দিতে হবে।

নারীদের কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরিতে গ্রামীণফোন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তাহিয়া বলেন, গ্রামীণফোনে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয় না; যোগ্যতার ভিত্তিতেই সবাই সম্মান পান। একসময় ম্যানেজমেন্ট টিমে একমাত্র নারী সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বিশ্বাস করেন, নারীদের চিন্তাভাবনায় স্বতন্ত্রতা থাকে, যা ব্যবসায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করতে পারে। তাই কর্মক্ষেত্রে নারীদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

নারীদের অগ্রগতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মানসিকতা। তাহিয়া মনে করেন, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নারীদের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে যে, তারা কী চান এবং কীভাবে তা অর্জন করা সম্ভব। অফিসে একজন নারীর নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করে জায়গা তৈরি করতে হয়, যা কখনো কখনো কঠিন হলেও, সেটাই তাদের দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করে। তাহিয়া বিশ্বাস করেন, “কাজের ওনারশিপ না দিলে নারীরা পিছিয়ে পড়বেন।”

তাহিয়া হোসেনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা তাঁর বাবা। তাঁর বাবা সবসময় তাঁকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে শিখিয়েছেন। বাবার ব্যবসায় কাজ করার ইচ্ছা থাকলেও তিনি প্রথমে চাকরির মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। চার বছর পর যখন বাবা তাঁকে নিজ প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেন, তাহিয়া তখন জানান, তিনি নিজের ক্যারিয়ার এখানে গড়তে চান। এই সিদ্ধান্তই তাঁকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

সৈয়দা তাহিয়া হোসেনের জীবনগল্প প্রমাণ করে যে, কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস ও নিরলস পরিশ্রম অপরিহার্য। নারীদের জন্য কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগ তৈরি করতে হলে তাদের নিজেদের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মানসিকতা রাখতে হবে। তাহিয়ার মতো নারীরা যখন নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হন, তখন এটি অন্যদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।

 

অক্ষমতা নয়, অদম্য ইচ্ছাই শক্তি: জেসিকা কক্সের গল্প

 

পাইলট মানেই ককপিটে তীক্ষ্ণ নজর, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং ধৈর্যের পরীক্ষা। সাধারণত দুই হাতের সহায়তায় এই কাজ সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু জেসিকা কক্স প্রমাণ করেছেন, শুধু পায়ের ব্যবহার করেও একজন দক্ষ পাইলট হওয়া সম্ভব।

দুই হাত ছাড়া জন্ম নেওয়া জেসিকা শুধু উড়োজাহাজই চালান না, তিনি একজন সার্টিফায়েড স্কুবা ডাইভার এবং মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্টধারীও। অক্ষমতাকে কখনোই প্রতিবন্ধকতা মনে করেননি তিনি। ১৪ বছর বয়সের পর থেকে কৃত্রিম হাত ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং পায়ের মাধ্যমেই সব কাজ দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে থাকেন।

জেসিকার পাইলট হওয়ার যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের রোটারি ক্লাবের এক আলোচনা সভায় রবিন স্টোড্ডার্ড তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি প্লেন চালাতে চান?’ পাশে থাকা জেসিকার বাবা সেদিন সোজা উত্তর দিয়েছিলেন, ‘হ্যাঁ’। এরপর অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক করা জেসিকা শুরু করেন পাইলট হওয়ার প্রস্তুতি।

জেসিকা কক্স ৩৫ বছর বয়সের মধ্যেই দক্ষ যুদ্ধবিমানের চালক হয়ে ওঠেন। তাঁর জীবনদর্শন স্পষ্ট:“আমি কখনো বলি না, আমি এটা করতে পারব না। শুধু বলি, আমি এখনো এ বিষয়ে কাজ করছি।”
এই মানসিকতার জোরেই তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসধারী বিশ্বের প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাহুবিহীন পাইলট হয়েছেন।

২০১২ সালে তিনি প্যাট্রিককে বিয়ে করেন। বিয়েতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানান তিনজন হাতবিহীন ব্যক্তিকে। কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন, “হাত না থাকলে জীবন অর্থহীন হবে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। হাতবিহীন ব্যক্তিরাও ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য।”

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার নিয়ে কাজ করতে থাকা জেসিকা কক্স এর অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রকল্প ছিল ‘লাইফ উইদ ফিট’ নামক ইউটিউব চ্যানেল। এটি প্রথম দুই বছরে এক মিলিয়ন ফলোয়ার অর্জন করে।
এরপরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘রাইটফুটেড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল’, যা পরবর্তী সময়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে। তাঁর জীবনীভিত্তিক বই ‘Disarm Your Limits’ এবং তাঁকে নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি ১৪টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করে।

জেসিকা কক্স কেবল একজন সফল পাইলটই নন, তিনি দুনিয়াজুড়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছেন। তাঁর গল্প আমাদের শিখিয়ে দেয় শারীরিক সীমাবদ্ধতা নয়, মানুষের মানসিকতা ও ইচ্ছাশক্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

 

নারী অধিকার আন্দোলনের বিক্ষোভ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচারহীনতা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবে অপরাধীরা এসব জঘন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন নারী অধিকারকর্মীরা। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১৩মার্চ(বৃহস্পতিবার) মানববন্ধন করে নারী অধিকার আন্দোলন।

মানববন্ধনে নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেত্রী মমতাজ মান্নান বলেন, আজ নারীরা নিরাপদ নয়। ধর্ষণের ঘটনায় দেশবাসী ক্ষুব্ধ, আমরাও মর্মাহত। বিচার দ্রুত কার্যকর না হওয়ায় অপরাধের হার বেড়ে চলেছে। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত ও কঠোর শাস্তি কার্যকরের দাবি জানাই।

নারী অধিকার নেত্রী নাজমুন্নাহার বলেন, গত ১৭ বছরে স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র ও গণপরিবহনে বহু নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, কিন্তু বেশিরভাগ ঘটনার বিচার হয়নি। জনসম্মুখে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে এ ধরনের অপরাধ বন্ধ হবে না।

বিশিষ্ট লেখিকা নুরুন্নাহার খানম বলেন, আগে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা বেশি ঘটত, কিন্তু কঠোর শাস্তির কারণে তা কমে গেছে। ধর্ষকদেরও একইভাবে কঠোর ও প্রকাশ্যে শাস্তি দিলে অপরাধের হার হ্রাস পাবে।

লালমাটিয়া মহিলা কলেজের অধ্যাপক আফিফা মুশতারী বলেন, এই অপরাধের বিচার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আমরা চাই দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হোক।

সম্প্রতি ঝিনাইদহে হিজাব পরিহিত নারীদের ওপর হামলা এবং শিশু আছিয়ার ধর্ষণের ঘটনায় মানববন্ধনে তীব্র নিন্দা জানানো হয়। নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রীরা ৯০ দিনের মধ্যে এসব ঘটনার বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।

মানববন্ধনে প্রস্তাবিত দাবিসমূহ
১. নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
২. দোষী ব্যক্তিদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে যথা সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে সরকার পদক্ষেপ নেবেন। সেক্ষেত্রে শরীয়াহ আইনে বিচার করা যেতে পারে। কঠোর দণ্ডবিধি প্রয়োগ করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. শামসুন্নাহার লাকি, বিশিষ্ট লেখিকা নুরুন্নাহার খানম নীরু, শিক্ষিকা ফারহানা সুমাইয়া মিতু, সৈয়দা শাহীন আকতার, আসিফা সিদ্দিকা, কোহিনূর ইয়াসমিন লিপি, বিশিষ্ট সমাজসেবী মর্জিনা খাতুন, বিশিষ্ট শ্রমিক নেত্রী কামরুন্নাহার প্রমুখ।

নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মানববন্ধন শেষ হয়।
তথ্যসূত্র ঃকালবেলা

 

১৫ মার্চ সারাদেশে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন

 

দেশের শিশুদের অপুষ্টি দূর করে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আগামী ১৫ মার্চ (শনিবার) সারাদেশে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৬-৫৯ মাস বয়সী প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে, যার ফলে বর্তমানে এ রোগ প্রায় বিলুপ্ত। ভিটামিন ‘এ’ শুধু অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে না, বরং ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার প্রায় এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে আনতে সহায়ক। তবে অনেক শিশু মায়ের দুধ বা প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার থেকে যথেষ্ট ভিটামিন ‘এ’ পায় না, যা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

বছরে দুইবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর ফলে দেশে ৯৮% শিশু এ সেবা পাচ্ছে, ফলে ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতিজনিত অন্ধত্ব প্রায় নির্মূল হয়েছে। এই সফলতা ধরে রাখতে এবারও এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

মন্ত্রণালয় থেকে সব অভিভাবকদের আহ্বান জানানো হয়েছে যে,৬মাস থেকে ৫বছর বয়সী শিশুদের নিকটস্থ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য।

আসুন সরকারের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপুষ্টি দূর করে সুস্থ ও সবল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে এই উদ্যোগে সবাই সহযোগী হই।

 

পরীক্ষার সময় নিকাব পরিহিত ছাত্রীদের জন্য থাকবে নারী শিক্ষক

 

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাস্ট) পরীক্ষার সময় নিকাব পরিহিত ছাত্রীদের চেহারা শনাক্তের জন্য আলাদা নারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।

এ উদ্যোগের ফলে পর্দানশীন শিক্ষার্থীরা নিশ্চিন্তে ও স্বস্তির সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। অনেক সময় নিকাব পরিহিত শিক্ষার্থীদের চেহারা শনাক্তের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়, যা তাদের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আলাদা নারী শিক্ষকের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন হলে শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বজায় থাকবে।

এই ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করবে। এছাড়া, এটি ইসলামী মূল্যবোধ ও সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি উদ্যোগ, যা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যও অনুসরণযোগ্য হতে পারে।

এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং তাদের পরীক্ষার সময় কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
তথ্যসুত্রঃsomc

 

দেশজুড়ে নারী ও শিশু ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ, শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

 

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ নারী ও শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমবেত হয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়, যেখানে তারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
এ সময় সমাজকর্মী মুঈদ হাসান তড়িৎ, শিক্ষার্থী তাওহীদা ইসলাম স্বপ্নীল ও প্রেমা সরকারসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যা উদ্বেগজনক।”
তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগেরও দাবি জানান।

এদিন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদও ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তাদের মতে, সম্প্রতি দেশে ধর্ষণ ও নৃশংস সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

একই দিনে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ-মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ এবং ইউল্যাবের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানায়।

ইডেন মহিলা কলেজে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, “এভাবে ধর্ষণ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটলে নারীরা কোথাও নিরাপদ নন।”

এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া চালুর দাবি জানান।
দেশজুড়ে এমন প্রতিবাদ কর্মসূচি, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

 

নারী খামারিদের সংখ্যা বাড়াতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

 

নারীদের আরও বেশি করে খামার ব্যবস্থাপনায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, পোলট্রি শিল্প শুরু থেকেই কৃষকের সঙ্গে যুক্ত, আর কৃষকের বাড়িতে মুরগি পালনের মূল দায়িত্ব ছিল নারীদের। তাই এ খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে হলে নারী খামারিদের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে তিন দিনব্যাপী ‘১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো ও সেমিনার-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফরিদা আখতার বলেন, “ক্ষুদ্র খামারিদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তাদের সংখ্যা বাড়লে পোলট্রি শিল্প আরও বিকশিত হবে, যা সরাসরি তাদের জীবন-জীবিকার সঙ্গে যুক্ত।” ফিডের উচ্চমূল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সব পক্ষ একত্রে কাজ করলে ফিডের দাম কমানো সম্ভব। কারণ, পোলট্রি শিল্পই আমাদের প্রোটিনের চাহিদা মেটাচ্ছে।”

শিশুদের নিরাপদ খাদ্য সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “পোলট্রিকে যদি অস্বাস্থ্যকর কিছু খাওয়ানো হয়, তাহলে তা মানুষের খাদ্যের সঙ্গে মিশে যায়। এ কারণেই বিশ্বজুড়ে অর্গানিক ফুড নিয়ে নতুন ভাবনা তৈরি হয়েছে। আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক হতে হলে আমাদের অর্গানিক চাষের দিকে যেতে হবে।”

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখা ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই মেলা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় পোলট্রি মেলা বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন—মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন,প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক।

এ ধরনের উদ্যোগ পোলট্রি শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

প্রথমবারেই সহকারী জজ চবির তানিয়া সুলতানা

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের ১৭তম নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তানিয়া সুলতানা। প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই তিনি বিজেএস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন।

তানিয়া সুলতানার শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামের রাউজানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বিচার বিভাগে যোগ দেওয়ার। অনার্স ও মাস্টার্স জীবনে একাডেমিক পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন, যা তার বিজেএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ভিত্তি গড়ে তোলে।

তবে তিনি পুরোপুরি নিয়োজিত হন মাস্টার্স শেষ করার পর। প্রথমেই তিনি বিজেএস পরীক্ষার সিলেবাস বিশ্লেষণ করেন এবং বিগত বছরের প্রশ্ন ঘেঁটে বুঝতে চেষ্টা করেন কোন কোন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এরপর নির্দিষ্ট বই ও রিসোর্স ঠিক করে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নিবিড় পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেন।

তানিয়া কখনো সময় ধরে পড়াশোনা করেননি; বরং প্রতিদিন নির্দিষ্ট টপিক শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করতেন। লিখিত পরীক্ষায় সফলতার জন্য তিনি বিষয়ভিত্তিক গভীর প্রস্তুতি নিয়েছেন, কারণ এই পরীক্ষাটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। মৌখিক পরীক্ষার জন্য তিনি মূলত রিভিশনের ওপর জোর দেন।

প্রস্তুতির সময় মানসিক চাপ থাকলেও তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। পরিবারের স্বপ্ন এবং নিজের লক্ষ্য তাকে বারবার সামনে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছে। ১০ দিনের লিখিত পরীক্ষার সময় সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও, স্বপ্ন পূরণের অদম্য ইচ্ছাই তাকে ধরে রেখেছে।

তানিয়া সুলতানা বিশ্বাস করেন, যারা ভবিষ্যতে সহকারী জজ হতে চান, তাদের অনার্স জীবন থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে। আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধরে রাখতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। একাগ্রতা ও সঠিক প্রস্তুতিই বিজেএস পরীক্ষায় সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

তানিয়া সুলতানার এই অর্জন প্রমাণ করে, লক্ষ্য ঠিক থাকলে এবং পরিশ্রমি হলে সাফল্য ধরা দিতেই বাধ্য!

 

নারী জাতির প্রতি সম্মানের এক অবিস্মরনীয় ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল যে জাতি!

🔘নারী জাতির প্রতি সম্মানের এক অবিস্মরনীয় ইতিহাস রচনা করেছিল যে জাতি , তার  গৌরবময় পরিচয় আজ কোথায়? কোথায় হারিয়ে গেছে সে সোনালী অতীত, সে স্বর্নালী-বর্নালী মর্যাদাবান মানুষগুলো!
🔘আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা -ইসলামের ইতিহাসে একজন নারীর সম্ভ্রম রক্ষায় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
নারী অনাত্মীয় হলেও তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা ও সৌন্দর্য। তার নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকা সকলের দায়িত্ব। ইসলাম নারীদের অধিকারকে এতটাই গুরুত্ব দেয় যে ইসলামের ইতিহাসে নারীর সম্ভ্রম রক্ষায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘঠিত হওয়ার ইতিহাস দেখতে পাওয়া যায়। যে যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল ‘বনু কাইনুকা’ নামের একটি গোত্রের সঙ্গে।
একজন সাহাবি তার মুসলিম বোনের সম্ভ্রম রক্ষায় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন।
🔘মদীনায় বনু কাইনুকা ছিল ইহুদিদের তিনটি গোত্রের মধ্যে সবচেয়ে দুষ্টপ্রকৃতির একটি গোত্র। পেশার দিকে থেকে তারা ছিল স্বর্ণকার, কর্মকার ও পাত্র নির্মাতা।
আবু আওন থেকে ইবনে হিশাম ঘটনাটি যেভাবে বর্ণনা করেছেন-
একদিন জনৈকা মুসলিম নারী বনু কাইনুকা গোত্রের বাজারে দুধ বিক্রি করে বিশেষ কোনো প্রয়োজনে এক ইহুদি স্বর্ণকারের দোকানে গিয়েছিলেন।
সেখানে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ইহুদি তাঁর মুখের নেকাব খোলানোর অপচেষ্টা করে, ওই নারী এতে অস্বীকৃতি জানান। ওই স্বর্ণকার গোপনে মুসলিম নারীটির (অগোচরে) পরিহিত বস্ত্রের পেছন দিক থেকে এক প্রান্তে পিঠের ওপরে গিঁট দিয়ে দেয়, এতে করে তিনি বসা থেকে উঠতে গিয়ে বিবস্ত্র হয়ে পড়েন।ভদ্র মহিলাকে বিবস্ত্র করে নরপিশাচের দল আনন্দে করতালি দিচ্ছিল। মহিলাটি ক্ষোভ ও লজ্জায় আর্তনাদ করতে থাকেন। সেটা শুনে জনৈক (প্রতিবাদী) মুসলিম ওই স্বর্ণকারকে আক্রমণ করে হত্যা করেন। প্রত্যুত্তরে ইহুদিরা মুসলিম লোকটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে হত্যা করে।
এরপর নিহত মুসলিম ব্যক্তির পরিবার ইহুদিদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের কাছে বিচার চাইলে এর ফলে মুসলিম ও বনু কাইনুকার ইহুদিদের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ সংগঠিত হয়।
🔘 রাসূল সাঃ এর আগে এ গোত্রের অনেক অপরাধ ক্ষমা করেছিলেন কিন্তু এ ঘটনার পর রাসুল (সা.)-এর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় তিনি মদিনার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আবু লুবাবাহ ইবনে আবদুল মুনজির (রা.)-এর ওপর অর্পণ করে হযরত হামজাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রা.)-এর হাতে মুসলিমদের পতাকা প্রদান করে সৈন্য বাহিনী নিয়ে বনু কাইনুকা গোত্রকে শায়েস্তা করতে এগিয়ে যান।ইহুদিরা মুসলিমদের ভয়ে দূর্গের ভেতর আশ্রয় গ্রহণ করে দূর্গের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) কঠিনভাবে তাদের দুর্গ অবরোধ করেন।
প্রায় ১৫ দিন সে গোত্রের দূর্গ অবরোধ করে রাখার পর তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে অবশেষে আত্মসমর্পন করলে তাদের সকলকে বন্দি করা হয়। (সূত্রঃসিরাত ইবনে হিশাম )
এ হচ্ছে যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।
🔘রাসূল সাঃ এর জীবদ্দশায় এ ঘটনা প্রমান করে যে ইসলাম নারীদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার প্রতি কতটা গুরুত্ব দিয়েছে।যার কারনে নিজেদের মধ্যেতো নয়ই কোন কাফের বেঈমানরা পর্যন্ত নারীদের উপর ফুলের টোকাটা দেবারও সাহস পায়নি কখনো!
দুঃখ জনক বিষয় ! আজ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ,পবিত্র রমাদান মাসে আমাদের নারী ও শিশুরা তাদের ঘরেও নিরাপদ নয়। কোন্ পশুত্বের সমাজে আমাদের বসবাস!
জাহেলিয়াতকেও হার মেনে গেছে! ২০২৩ সালের এক জরিপে দেখা গিয়েছে শিশু পর্নোগ্রাফি (CSAM) সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ২য় অবস্থানে আছে ,অর্থাৎ আমাদের দেশ থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি সার্চ করা হয় অনেক বেশী , আবার এসবের ভিডিও পাঠানো হয় । আমাদের রুচিবোধ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে ! এ অস্লীলতার সয়লাবে এ সমাজে এখন ৮০ বছরের বৃদ্ধা থেকে ২ বছরের শিশুরাও মোটেই নিরাপদ নয় ।
🔘শুধু আইন করে নয় , আইনের কঠোর ও তড়িৎ বাস্তবায়ন যেমন জরুরী তেমনি সমস্যার সাময়িক সমাধান নয় এর কার্য-কারণ সম্পর্কের দিকে গভীরে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন! আমরা দেখেছি ২০২০ সালে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করেও ধর্ষণ কমানো সম্ভব হয়নি।
আসলে দীর্ঘ সময় ধরে সমাজটা পঁচে গিয়ে এখন দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চতুর্দিকো।
🔘প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে নৈতিক শিক্ষা সম্পর্কীয় কারিকুলামের ঘাটতির সাথে সাথে সমাজে পারিবারির শিক্ষা , সচেতনতা, নীতি- নৈতিকতার শিক্ষা, আদর্শ ও মূল্যবোধের চর্চা, দ্বীনি পরিবেশ মেইন্টেন করা-
সমাজের উপর মহল থেকে শুরু করে নীচের মহল সর্বত্র এর দারুন অভাব বোধ হচ্ছে।
আমরা আমাদের সমাজে আর একটি আছিয়াকেও নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার দেখতে চাই না। আসামীদের বিচারের মাধ্যমে দ্রুত মৃত্যুদন্ড কার্যকর দেখতে চাই।

-সাবিকুন্নাহার_মু্ন্নী
১০ মার্চ , ২০২৫ইং.

 

এস্টার হোবার্থ মোরিস: নারী অধিকারের পথিকৃৎ

 

নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এস্টার হোবার্থ মোরিস (Esther Hobart Morris) একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। উনিশ শতকের যুক্তরাষ্ট্রে যখন নারীরা ভোটাধিকারসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করছিলেন, তখন মোরিস এক অগ্রদূত হিসেবে সামনে আসেন। তিনি ছিলেন প্রথম নারী পিস জাস্টিস (Justice of the Peace), যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বিশ্বব্যাপী নারী নেতৃত্বের জন্য এক মাইলফলক।

১৮১৪ সালের ৮ আগস্ট নিউইয়র্কের স্প্রিংফিল্ডে জন্মগ্রহণ করেন এস্টার হোবার্থ মোরিস। খুব অল্প বয়সেই তিনি বাবা-মাকে হারান, ফলে তার বেড়ে ওঠা ছিল চ্যালেঞ্জিং।তবুও তিনি আত্মনির্ভরশীল হিসেবে বেড়ে ওঠেন এবং নারীদের অধিকার নিয়ে ভাবতে শুরু করেন।

১৮৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইওমিং টেরিটরি (Wyoming Territory) নারীদের পূর্ণ ভোটাধিকার প্রদান করে, যা ছিল একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এটি সম্ভব হয়েছিল নারী অধিকার কর্মীদের প্রচেষ্টার কারণে, যার মধ্যে এস্টার হোবার্থ মোরিস ছিলেন অন্যতম।

১৮৭০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এস্টার মোরিসকে ওয়াইওমিংয়ের সাউথ পাস সিটিতে পিস জাস্টিস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী বিচারিক কর্মকর্তা হিসেবে ইতিহাস গড়েন।
তার বিচারিক কার্যক্রম ছিল সুশৃঙ্খল ও নিরপেক্ষ। এক বছরে ২৬টি মামলা পরিচালনা করেন তিনি, যার মধ্যে বেশিরভাগই ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। সেই সময় নারীদের বিচার বিভাগে অংশগ্রহণ ছিল অকল্পনীয়, তাই তার এই ভূমিকা নারীদের পেশাগত স্বাধীনতার পথে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

নারীদের ভোটাধিকারের প্রশ্নে মোরিস ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয়। ওয়াইওমিং যখন ১৮৬৯ সালে প্রথমবারের মতো নারীদের ভোটাধিকারের স্বীকৃতি দেয়, তখন তিনি এই আইনের একজন প্রবল সমর্থক ছিলেন। তার প্রচেষ্টা এবং রাজনৈতিক প্রভাব নারী ভোটাধিকার আন্দোলনকে আরও বেগবান করে।
১৮৭১ সালে ইউটা (Utah) যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় অঙ্গরাজ্য হিসেবে নারী ভোটাধিকার আইন পাস করে। ওয়াইওমিংয়ের সফলতার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছিল, যেখানে মোরিসের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।

১৮৭৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাদারফোর্ড বি. হেইজ একটি ঐতিহাসিক বিলে স্বাক্ষর করেন, যা নারীদের সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার অনুমতি দেয়। এই আইনের ফলে নারীরা প্রথমবারের মতো উচ্চ আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান।
এটি নারীদের পেশাগত স্বাধীনতার একটি বড় পদক্ষেপ ছিল এবং এই আন্দোলনের পেছনে এস্টার হোবার্থ মোরিসসহ অন্যান্য নারী অধিকার কর্মীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এস্টার হোবার্থ মোরিস শুধু একজন বিচারকই নন, তিনি ছিলেন নারী অধিকারের এক সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। তার প্রচেষ্টা নারীদের ভোটাধিকার, বিচার বিভাগে নারীদের অংশগ্রহণ এবং আইন পেশায় নারীদের প্রবেশের পথ সুগম করে।
আজ নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার যে অগ্রগতি, তার ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন মোরিসের মতো নেত্রীরা।

 

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তবু কেন থামছেনা অপরাধ?

 

 রাফসান গালিব: দেশে ধর্ষণের দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডই। এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ধর্ষককে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহ আগেও। ঘটনাটি ঘটেছিল কখন? ছয় বছর আগে।

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হবার পরেও কেন ধর্ষণ রোধ করা যাইতেছে না? এর অন্যতম কারণ হইল, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা।

বগুড়ার তুফান সরকারের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই অনেকের। এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর মা-মেয়ের চুল কেটে দিছিল তুফান৷ গোটা দেশে ঝড় উঠে এই ঘটনায়৷ তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়৷

হাইকোর্ট এই ঘটনার বিচার করতে ছয় মাস সময় বেধে দেয়। কিন্তু ৩ বছরেও বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয় না। পরে ঠিকই তুফান সরকার জামিনে বের হয়ে মা-মেয়েকে হুমকি দেয়া শুরু করে। সেই তুফানের আজও বিচার হয় নাই।

একের পর ধর্ষণের ঘটনায় ঘটতে থাকায় এবং ধর্ষণের বিচার যথাযথভাবে করতে না পেরে পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে সংসদে ধর্ষককে ক্রসফায়ার দেয়ার মতো ভয়ংকর দাবি উঠেছিল। বিচারবহির্ভূতভাবে র‍্যাব দিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত কয়েকজন হত্যাও করা হয়। মানুষ ক্রসফায়ারকে সেলিব্রেট করে৷ কী দুর্ভাগ্য আমাদের!

ধর্ষণের বিচার কেন দ্রুত হবে না? কেন বছরের পর বছর আটকে থাকবে? এমন সময় বিচারের রায় হয়, তখন মানুষ ঘটনার কথাই ভুলে যায়। ফলে মৃত্যুদণ্ড দিয়েও সেই রায় আর সমাজে দৃষ্টান্তমূলক হয় না। ধর্ষণের ঘটনার ২০ বছর পর রায় হয়েছে, এমনও ঘটেছে। এটা তো বিচারের নামে তামাশা ছাড়া কিছু নয়।

ধর্ষণের ক্ষেত্রে আরেক ভয়াবহ ও বাজে দৃষ্টান্ত আছে, তা হলো ধর্ষকের সঙ্গেই ভুক্তভোগীর বিয়ে দেয়া। আদালতের সম্মতিতেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাও এখানে ঘটেছে৷ যথাযথ আইন প্রয়োগ ও বিচারে দীর্ঘসূত্রতার কারণেই ধর্ষণের পর ধর্ষকের সাথে বিয়ার মাধ্যমে নারীর প্রতি আরেক চরম জুলুম চাপিয়ে দেয়া হয়।

ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে ৯০-১২০ দিনের মধ্যে কেন করা হবে না? একেবারে বিশেষ বা জটিল কোনো কেস ছাড়া ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার অবশ্যই সম্ভব। শুধু তাই নয়, এ দেশে ঘটনা ঘটার এক সপ্তাহের ভেতরে বিচারের রায় দেয়ার দৃষ্টান্তও আছে৷

নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে এ ব্যাপারে আওয়াজ তুলতে হবে। সরকারকে এইখানে অবশ্যই বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে৷ একটা ধর্ষণের বিচার চলতে চলতে আরও কয়েক ডজন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যাবে, তা কোনোভাবেই মানা যায় না।

শুধু আইন বানাইলেই হবে না, শাস্তি বাড়াইলেই হবে না; বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে৷ এইটার ফলাফল নিকট অতীতেই আছে। নারীদের উপর এসিড সন্ত্রাস কিন্তু আমরা এভাবেই বন্ধ করতে পেরেছি৷

দ্রুত আইন প্রয়োগ ও বিচার প্রক্রিয়ার কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে মানুষ ক্রসফায়ারের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকেই আবার আহবান করবে। পারলে নিজেরাই ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে বা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারবে৷ এইটা তখন আরও খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে আমাদের সমাজকে। সরকারকে বলব, এমন ঘটনা ঘটার আগেই ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থাকে দ্রুত কার্যকর করুন।

*
ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে যে ধরনের ফেসবুক পোস্ট ভিক্টিমের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ও পোটেনশিয়াল রেপিস্টকে সত্যিকারের রেপিস্ট হইতে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে পারে- এইটা নিয়ে বিশ্লেষণ পড়ুন এই লিংকে:
https://www.facebook.com/share/p/1NpGnsHhHo/

 

রমদ্বানে স্তন্যদানকারী মায়েদের করণীয়

 

রমদ্বানের রোজা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। তবে ইসলামে মা ও শিশুর সুস্থতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য রোজার ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় রয়েছে।

স্তন্যদানকারী মায়ের রোজার বিধান
যদি কোনো মা রোজা রাখার কারণে নিজের বা সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পরিস্থিতিতে পড়েন, তাহলে তার জন্য রোজা না রাখা বৈধ। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
“আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, কঠিন করতে চান না।” (সূরা বাকারা: ১৮৫)
এই আয়াতের ভিত্তিতে ইসলাম বিশেষ পরিস্থিতিতে রোজার বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে।
হাদিসেও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত,রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“আল্লাহ তাআলা মুসাফিরের জন্য অর্ধেক নামাজ ও রোজা মাফ করে দিয়েছেন এবং অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারীদের জন্যও রোজা মাফ করে দিয়েছেন।” (তিরমিজি: ৭১৫, ইবনে মাজাহ: ১৬৬৭)

রোজা না রাখলে করণীয়
যদি কোনো মা রোজা রাখতে অক্ষম হন, তাহলে পরে সেই রোজাগুলোর কাজা আদায় করতে হবে। তবে কিছু আলেমের মতে, কাজার পরিবর্তে দরিদ্রদের খাওয়ানোও গ্রহণযোগ্য হতে পারে, বিশেষত যদি দীর্ঘ মেয়াদে কাজা রাখা কঠিন হয়।

রমদ্বানে স্তন্যদানকারী মায়ের করণীয়
১.পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার: সেহরি ও ইফতারে প্রোটিন, শাকসবজি, ফলমূল ও পানীয় গ্রহণ করুন।

২.শরীরের অবস্থা বোঝা: যদি রোজার কারণে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভূত হয় বা দুধের পরিমাণ কমে যায়, তাহলে আল্লাহর দেওয়া সুবিধা গ্রহণ করুন।

৩.বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: ডাক্তার বা ইসলামি আলেমের পরামর্শ নিন।

ইসলাম সহজ দ্বীন। তাই মা ও শিশুর সুস্থতা রক্ষায় ইসলাম প্রদত্ত সুবিধা গ্রহণ করা উচিত।

 

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্র: হোমাইরা জাহান সনম

 

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় এক অনন্য নাম হোমাইরা জাহান সনম। প্রতিকূল পরিবেশ, সামাজিক বাধা ও নানা চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে তিনি আজ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের কৃষি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে তিনি হয়েছেন গর্বিত এক বাংলাদেশি। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউশনসে (এপিএএআরআই) টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন।

সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার প্রত্যন্ত এক হাওরবেষ্টিত গ্রাম বড়ই-এ জন্ম হোমাইরা জাহান সনমের। গ্রামের সাধারণ মেয়েদের মতো তিনিও নানা সামাজিক ও পারিবারিক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছেন। প্রতিদিন তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হতো তাঁকে। কিন্তু এসব বাধা তাঁকে থামিয়ে রাখতে পারেনি।
শৈশবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন হোমাইরা, কিন্তু সামাজিক বাস্তবতা তাঁকে সেই পথ থেকে সরে আসতে বাধ্য করে। তবে তিনি স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেননি। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পরে কীটতত্ত্ব (এনটোমোলজি) বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

স্নাতকোত্তর শেষ করার পর হোমাইরা কিছুদিন পারিবারিক দায়িত্ব পালন করেন। এরপর কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড বায়োসায়েন্সেস ইন্টারন্যাশনাল (CABI)-এ প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে যোগ দেন। মাত্র এক বছরের মধ্যেই তাঁর কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা ও গবেষণার প্রতি একাগ্রতার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে সুনাম অর্জন করেন।
২০২৪ সালে তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউশনসে (এপিএএআরআই) টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে যোগ দেন, যা ছিল বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।

বর্তমানে এপিএএআরআই-তে হোমাইরা জাহান সনম কৃষি গবেষণায় বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। তাঁর গবেষণার মূল বিষয়গুলো হলো-
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা,প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা,কৃষি বাণিজ্যে স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি মান নিশ্চিতকরণ।

কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে তাঁর গবেষণা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

হোমাইরা চান, বাংলাদেশের কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে। প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে তিনি কাজ করছেন। তার স্বপ্ন, দেশের কৃষকদের জন্য সহজ ও কার্যকর কৃষি প্রযুক্তি নিশ্চিত করা, যাতে কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন এবং উৎপাদন বাড়াতে পারেন।

হোমাইরা জাহান সনমের জীবনগল্প প্রমাণ করে, দৃঢ় সংকল্প ও কঠোর পরিশ্রম মানুষকে যেকোনো সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে নিয়ে যেতে পারে। তাঁর পথচলা বাংলাদেশের তরুণদের, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের কৃষি গবেষণার এক উজ্জ্বল মুখ, হোমাইরা জাহান সনম—যিনি স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান, আর এগিয়ে চলেন নতুন সম্ভাবনার পথে।

তথ্যসুত্র – the daily star

 

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫: সমতা, অধিকার ও ক্ষমতায়নের প্রতীক

 

নারী–পুরুষের সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day) একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রতি বছর ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি পালিত হয়, যার মূল উদ্দেশ্য নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং সমাজে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য দূর করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা। নারীরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখলেও, আজও তারা নানা বাধা ও বৈষম্যের সম্মুখীন হন। তাই, এই দিনটি শুধুমাত্র উদযাপনের জন্য নয়, বরং এটি একটি আন্দোলন, যা নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস
১৯০৮: নিউইয়র্কে প্রায় ১৫,০০০ নারী ভোটাধিকার, কর্মক্ষেত্রে ন্যায্য সুযোগ এবং লিঙ্গবৈষম্যের অবসানের দাবিতে আন্দোলন করেন।

১৯০৯: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় নারী দিবস’ (National Women’s Day) পালিত হয়।

১৯১০: ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী সম্মেলনে (International Socialist Women’s Conference) জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন (Clara Zetkin) আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

১৯১১: প্রথমবারের মতো অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ডেনমার্ক এবং সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়।

১৯১৩-১৪: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, রাশিয়ার নারীরা ২৩ ফেব্রুয়ারি (বর্তমানে ৮ মার্চ) প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেন।

১৯৭৫: জাতিসংঘ (United Nations) আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় এবং এটি ‘নারীর অধিকার ও আন্তর্জাতিক শান্তির দিন’ (Day for Women’s Rights and International Peace) হিসেবে ঘোষণা করে।

১৯৯৬: জাতিসংঘ প্রথমবারের মতো নারী দিবসের জন্য একটি বার্ষিক প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে— “Celebrating the Past, Planning for the Future” (অতীতকে উদযাপন, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা)।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য
নারীরা সমাজের অন্যতম চালিকাশক্তি হলেও, এখনও তারা শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নেতৃত্ব এবং আইনগত অধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের মূল কারণগুলো হলো—

লিঙ্গসমতা (Gender Equality)
★কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।

★নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অধিকতর সম্পৃক্ত করা।

নারীর ক্ষমতায়ন (Women’s Empowerment)
★শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রযুক্তিতে নারীদের সম্পৃক্ত করা।

★অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

নারী সহিংসতা প্রতিরোধ (Ending Violence Against Women)

★পারিবারিক ও সামাজিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।

★নারীদের প্রতি সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ (Leadership & Participation)
★নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ তৈরি করা।

★নারীদের মতামত ও কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দেওয়া।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫-এর প্রতিপাদ্য
প্রতি বছর জাতিসংঘ নারী দিবসের জন্য একটি বিশেষ থিম নির্ধারণ করে। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য হলো—

“For ALL women and girls: Rights. Equality. Empowerment.”
(সমস্ত নারীদের জন্য: অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন।)
এই প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে বিশ্বের সব নারী ও কন্যার জন্য সমান অধিকার, ন্যায়বিচার এবং ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

নারী দিবস উদযাপন কিভাবে করা হয়?
প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়—

★ নারীর অর্জন ও সাফল্যের স্বীকৃতি প্রদান।
★ নারী অধিকার বিষয়ে কর্মশালা, সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন।
★ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে প্রচারণা।
★নারীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি।
★কর্মক্ষেত্রে নারীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য নীতি প্রণয়ন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুধুমাত্র উদযাপনের জন্য নয়, এটি একটি সচেতনতা ও সামাজিক পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন।
নারীদের প্রতি সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির প্রতিটি ক্ষেত্রে সমান সুযোগ তৈরি করা সময়ের দাবি। শুধুমাত্র নারীদের ক্ষমতায়ন নয়, বরং নারীদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমেই সত্যিকার অর্থে উন্নত ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

 

গাজীপুরে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

গাজীপুরে যৌন হয়রানি ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয় বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলতি মাসের ১৮তারিখ মঙ্গলবার গাজীপুর শহরের আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) কনফারেন্স রুমে এ সভার আয়োজন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় পরিচালিত ব্র্যাকের “অগ্নি প্রকল্প”-এর আওতায় যৌথভাবে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।

সভায় প্রকল্পের সমন্বয়কারী আসমা খানম রুবা স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন জেলা ব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামান। আলোচনায় বক্তারা নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তারা জানান, “অগ্নি প্রকল্প”-এর মাধ্যমে পরিবহন, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যৌন হয়রানি ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ১৪টি সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

সভায় উপস্থাপিত পরিসংখ্যানে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গাজীপুর জেলায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৩ জন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৪ জন, অনলাইনে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩১ জন, বাল্যবিবাহ হয়েছে ৫৫টি এবং অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১২টি। আলোচকরা এসব তথ্য তুলে ধরে বলেন, সমাজে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে শুধুমাত্র আইনের কঠোর প্রয়োগ যথেষ্ট নয়, বরং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৭৮ জন ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৪২ জনকে প্রাথমিক কাউন্সেলিং সেবা দেওয়া হয়েছে, ৭৯ জনকে আইনি সহায়তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং ৮ জন চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন।

বক্তারা উল্লেখ করেন, নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন ও কার্যকর প্রয়োগ জরুরি।

সভায় প্রকল্প সমন্বয়কারী আসমা খানম রুবা বলেন “নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে গণমাধ্যম কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রাসঙ্গিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।”

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নৈতিকতার গুরুত্বারোপ করেন এবং এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। বক্তারা সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান, যাতে সমাজে নারীরা নিরাপদ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।

 

বই রিভিউ: Revive Your Heart – Nouman Ali Khan

 

এটি একটি ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক বই, যেখানে লেখক আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখে একজন মুসলিম কীভাবে কোরআনের শিক্ষা থেকে শক্তি ও দিকনির্দেশনা নিতে পারে, তা ব্যাখ্যা করেছেন।
যারা মানসিক প্রশান্তি খুঁজছেন, আত্মউন্নয়ন চান, অথবা ইসলামের গভীর দর্শনকে সহজভাবে বুঝতে চান, তাদের জন্য এটি দারুণ একটি বই। উস্তাদ নোমান আলী খান খুবই সহজ ভাষায় গভীর বিষয় ব্যাখ্যা করেন, যা নতুনদের জন্যও সহজবোধ্য।

বইটি মোট পাঁচটি অধ্যায়ে বিভক্ত, এবং প্রতিটি অধ্যায়েই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রথম অধ্যায়ে দুআ বা আল্লাহর সাথে যোগাযোগের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলা হয়েছে। লেখক বলছেন, আমরা শুধু বিপদে পড়লেই আল্লাহর কাছে দোয়া করি, কিন্তু তখন যদি দোয়া কবুল না হয়, তখন অনেকেই মনে করেন যে আল্লাহ তাদের দোয়া শোনেন না। তবে, এই অধ্যায়ে শেখানো হয়েছে কিভাবে আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করেন এবং দোয়ার বিপরীতে কিছু হলেও সেটা যে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরিক্ষা, তাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

দ্বিতীয় অধ্যায় একটি সক্রিয় মুসলিম কমিউনিটি গড়ে তোলার বিষয়ে। লেখক মুসলিম সমাজের বিভক্তির দিকে নজর দিয়েছেন এবং দেখিয়েছেন কিভাবে আমাদের মধ্যে অন্যের প্রতি অতিরিক্ত ধারণা ও বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়, যা আমাদের ঐক্যের শক্তি ও একতা কমিয়ে দেয়। এটি সমাজের জন্য একটি বড় ক্ষতি, যা আমাদের ঈমানের পরিপূর্ণতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

তৃতীয় অধ্যায় আর্থিক লেনদেন নিয়ে। এখানে লেখক আমাদেরকে সতর্ক করেছেন, কিভাবে ছোটখাটো আর্থিক লেনদেনের কারণে আমাদের চরিত্র ও শান্তি বিপর্যস্ত হতে পারে। অর্থের প্রতি আমাদের মনোভাব কেমন হতে পারে এবং অর্থের প্রভাবে কিভাবে জীবন বদলে যেতে পারে, তা তিনি তুলে ধরেছেন।

এছাড়া, বইটির প্রচ্ছদ ও অনুবাদ বেশ ভালো, সহজ এবং সাবলীল ভাষায় লেখা, যা পাঠককে বইটির প্রতিটি অধ্যায়ের সাথে সহজে সম্পর্ক স্থাপন করতে সাহায্য করে।

সার্বিকভাবে, Revive Your Heart একটি দারুণ অনুপ্রেরণামূলক বই, যা প্রতিটি মুসলিমের জীবনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও সম্পর্ক আরও মজবুত করতে সাহায্য করবে।যাপিত জীবনে শান্তি, ঈমান এবং দৃঢ় বিশ্বাস অর্জন করতে চাইলে এই বইটি একবার হলেও পড়া উচিত।

 

রমদ্বানের প্রস্তুতি: মহানবী (সা.)-এর নীতি ও শিক্ষা

 

রমদ্বান মাস ইসলামের পবিত্রতম মাস, আর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ মাসের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতি নিতেন। তিনি শুধু রমদ্বান শুরু হলে আমল বাড়াতেন না, বরং রজব ও শাবান মাস থেকেই রমদ্বানের জন্য শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। এখানে আমরা মহানবী (সা.)-এর রমদ্বানের প্রস্তুতি গ্রহণের পদ্ধতি তুলে ধরছি।

১. রজব মাস থেকেই প্রস্তুতি শুরু
ছয় মাস আগেই মহানবী (সা.) রমদ্বানের বরকত লাভের দোয়া করতে শুরু করতেন। বিশেষত, রজব মাস এলেই তিনি বলতেন—
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبَ وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবা ওয়া শা‘বানা, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দাও এবং আমাদের রমদ্বান পর্যন্ত পৌঁছে দাও। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৪৬৮)

২. শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা
মহানবী (সা.) শাবান মাসে অন্যান্য মাসের তুলনায় সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখতেন।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, “আমি রাসূল (সা.)-কে শাবান মাসের চেয়ে বেশি কোনো মাসে রোজা রাখতে দেখিনি।” (বুখারি, হাদিস: ১৯৬৯)
তবে যারা শাবান মাসের শুরু থেকে নফল রোজা রাখতেন না, তাদের জন্য শেষের দিকে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন, যেন তারা রমদ্বানের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নিতে পারে।

৩. শাবানের শেষে চাঁদ দেখা
প্রতি আরবি মাস শুরুর আগে রাসূল (সা.) চাঁদ দেখার প্রতি গুরুত্ব দিতেন। তিনি সাহাবিদের চাঁদ দেখে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপনের নির্দেশ দিতেন।
নতুন চাঁদ দেখলে তিনি এই দোয়াটি পড়তেন—
اللّهُّمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلاَمَةِ وَالْإِسْلاَمِ رَبِّيْ وِرَبُّكَ الله
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল য়ুমনি ওয়াল ঈমান, ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম; রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।
অর্থ: হে আল্লাহ! এ চাঁদকে ঈমান, নিরাপত্তা, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদিত করুন। আমার ও তোমাদের রব আল্লাহ। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫২৬)

৪. রমদ্বানের ফজিলত ও গুরুত্ব আলোচনা
শাবান মাসে মহানবী (সা.) সাহাবাদের রমদ্বানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতেন। তিনি বলতেন, “তোমাদের কাছে বরকতময় রমদ্বান এসেছে। আল্লাহ তায়ালা তার সিয়ামকে তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন। এ মাসে আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, শয়তানকে আবদ্ধ করা হয়, আর এতে রয়েছে এমন একটি রাত, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। যে এ মাসের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে প্রকৃতার্থেই বঞ্চিত হলো।” (সুনানে নাসায়ি)

৫. আত্মিক ও শারীরিক প্রস্তুতি নেওয়া
রমদ্বানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মহানবী (সা.) ইবাদতের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতেন। তিনি তাহাজ্জুদ নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও অধিক পরিমাণ দু’আ এবং যিকিরের মাধ্যমে আত্মিক শক্তি অর্জন করতেন।
শারীরিকভাবে প্রস্তুতির জন্য শাবান মাসে রোজার অভ্যাস গড়ে তুলতেন, যাতে রমদ্বানে পূর্ণ উদ্যমে ইবাদত করা সম্ভব হয়।

৬. পরিবার ও সমাজকে প্রস্তুত করা

রাসূল (সা.) তার পরিবার ও সাহাবিদের রমদ্বানের জন্য প্রস্তুত করতেন। তিনি তাদেরকে কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, সদকা ও অন্যান্য ইবাদতের প্রতি উৎসাহিত করতেন।
তিনি বিশেষত শিশুদের রোজা রাখার প্রতি আগ্রহী করতেন এবং ছোটদের ধীরে ধীরে রোজার প্রতি অভ্যস্ত করার উপদেশ দিতেন।

মহানবী (সা.) আমাদের জন্য রমজানের প্রস্তুতির অনন্য আদর্শ রেখে গেছেন। তিনি রজব থেকে প্রস্তুতি শুরু করতেন, শাবানে নফল রোজার মাধ্যমে অভ্যাস গড়ে তুলতেন, রমজানের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করতেন এবং তার পরিবার ও সাহাবিদের আত্মিকভাবে তৈরি করতেন।
আমাদেরও উচিত মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী আগে থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নেওয়া, যেন আমরা এই পবিত্র মাসের সর্বোচ্চ বরকত লাভ করতে পারি।

 

বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা: ২০২৪ সালের জরিপে উদ্বেগজনক চিত্র

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) যৌথভাবে পরিচালিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’–এর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়, যেখানে নারীর প্রতি সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।

জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৭০ শতাংশ নারী তাঁদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার হলেও শারীরিক, যৌন, মানসিক বা অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই এই হার ছিল ৪৯ শতাংশ। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, নারীরা সবচেয়ে বেশি সহিংসতার শিকার হন নিজের স্বামী বা জীবনসঙ্গীর মাধ্যমে। নন-পার্টনার সহিংসতার তুলনায় স্বামীর মাধ্যমে সহিংসতার হার অনেক বেশি, যা নারীদের নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা আরও গভীরভাবে প্রকাশ করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের ওপর সহিংসতার হার বিগত বছরগুলোর তুলনায় খুব একটা কমেনি। ২০১৫ সালের জরিপে জীবদ্দশায় সহিংসতার হার ছিল ৭৩ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে সামান্য কমে ৭০ শতাংশ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক ১২ মাসের হিসেবে এই হার ৪১ শতাংশ, যা এখনো যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বিশেষ করে শারীরিক সহিংসতার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, নারীরা স্বামীর কাছ থেকে তিনগুণ বেশি নির্যাতনের শিকার হন, আর যৌন সহিংসতার ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা ১৪ গুণ বেশি।

এছাড়া, দুর্যোগপ্রবণ এলাকার নারীরা তুলনামূলকভাবে বেশি সহিংসতার শিকার হন। গবেষণায় উঠে এসেছে, এইসব এলাকার নারীরা তাঁদের জীবদ্দশায় এবং সাম্প্রতিক ১২ মাসে অদুর্যোগপ্রবণ এলাকার নারীদের তুলনায় বেশি মাত্রায় সহিংসতার সম্মুখীন হন। অর্থাৎ, পরিবেশগত ও আর্থসামাজিক কারণ নারীদের প্রতি সহিংসতার মাত্রাকে আরও তীব্র করে তোলে।

এই জরিপে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, তা হলো—নারীদের ৬৪ শতাংশ তাঁদের ওপর হওয়া সহিংসতার কথা কাউকে বলেন না। পারিবারিক সুনাম রক্ষা করা, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ এবং সমাজে সহিংসতাকে ‘স্বাভাবিক’ বলে মেনে নেওয়ার সংস্কৃতি এর মূল কারণ। অনেক নারী মনে করেন, সহিংসতার শিকার হওয়ার পরও চুপ থাকা তাঁদের জন্য নিরাপদ, কারণ বিচারপ্রক্রিয়ায় জটিলতা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া তাঁদের পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তোলে।

জরিপের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব আলেয়া আক্তার। এছাড়া ইউএনএফপিএর ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবে এবং অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিনটন পবকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এই জরিপ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৭,৪৭৬ জন নারীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। এতে শহর, গ্রাম, দুর্যোগপ্রবণ এলাকা এবং বস্তির নারীদের অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পুরো দেশের পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে।
জরিপের ফলাফল স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে, নারীর প্রতি সহিংসতা এখনো বাংলাদেশে একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা। এটি মোকাবিলার জন্য আইন ও নীতির কার্যকর বাস্তবায়ন, নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে। তা না হলে, নারীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে জীবনযাপন করতে বাধ্য হবেন, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকেও ব্যাহত করবে।

তথ্যসুত্রঃপ্রথম আলো