banner

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: January 2025

 

ভিক্টর ফ্র্যাঙ্কল এর ম্যানস সার্চ ফর মিনিং

 

“ম্যানস সার্চ ফর মিনিং” বইটি বিশিষ্ট মনস্তত্ত্ববিদ ভিক্টর ফ্র্যাঙ্কলের রচিত এক অনবদ্য সৃষ্টি। ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত এই বইটি তার নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে থাকার অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে লেখা।
ফ্র্যাঙ্কল কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় শারীরিক, মানসিক এবং আত্মিক নির্যাতন সহ্য করেছিলেন, কিন্তু এই অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি জীবনের গভীর অর্থ এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে মূল্যবান শিক্ষা লাভ করেন।

ফ্র্যাঙ্কল এই বইতে বলেছেন, “মানুষ যেকোনো পরিস্থিতিতে তার জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে সক্ষম।” এই বইয়ে তিনি তার “লোগোথেরাপি” নামক থেরাপিউটিক পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। ফ্র্যাঙ্কল বিশ্বাস করতেন, মানুষের আসল শক্তি তার মনোভাব এবং নিজের জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে নিহিত। জীবন সংগ্রামে, এমনকি সর্বোচ্চ কষ্টের মধ্যেও একটি অর্থপূর্ণ লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

বইটির প্রথম ভাগে, ফ্র্যাঙ্কল তার নিজস্ব কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে বন্দীদের শারীরিক নির্যাতন, ক্ষুধা, দুর্ভোগ এবং মৃত্যুর মুখোমুখি করে তোলা হয়েছিল। তবে তিনি এটিও বলেছেন, যে ব্যক্তি মানসিকভাবে তার জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য খুঁজে পায়, সে চরম শাস্তির মধ্যেও নিজেকে সংরক্ষণ করতে পারে। এই অভিজ্ঞতাগুলি তার থেরাপির ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করে।

বইটির দ্বিতীয় ভাগে, ফ্র্যাঙ্কল তার “লোগোথেরাপি” পদ্ধতির মাধ্যমে জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার উপায় ব্যাখ্যা করেন। লোগোথেরাপি মানে হলো, জীবনের উদ্দেশ্য এবং অর্থ খোঁজা। ফ্র্যাঙ্কল বলেন, জীবনের তিনটি প্রধান পথ হতে পারে:
১. সৃজনশীল কাজ বা অর্জন – যা মানুষের কাজের মাধ্যমে তার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে।
২. ভালোবাসা এবং সম্পর্ক – অন্যদের প্রতি যত্ন এবং ভালোবাসা অনুভব করাও জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে।
৩. দুর্দশা এবং কষ্ট সহ্য করা– যখন কোনো পরিস্থিতি পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন সেই পরিস্থিতিতেও মানসিক শক্তি খুঁজে বের করার ক্ষমতা।

“ম্যানস সার্চ ফর মিনিং” বইটি শুধু মনস্তত্ত্ববিদ বা চিকিৎসকদের জন্য নয়, বরং সকল সাধারণ মানুষের জন্যই একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গ্রন্থ। ফ্র্যাঙ্কল জানান, আমাদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো কেবল শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে না, বরং আমাদের মানসিক দৃঢ়তা, কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা এবং জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছা এর মূল ভিত্তি। এই বইটি পাঠকদের উদ্বুদ্ধ করে তাদের জীবনে কঠিন মুহূর্তে সত্যিকার অর্থ খুঁজে পেতে এবং তাদের জীবনের লক্ষ্য স্পষ্ট করতে।

 

সমাজে নারীর অবস্থান:আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তনের ধারা

 

নারী আন্দোলন নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। এটি কেবল নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক নয়, বরং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাপূর্ণ সমাজ গড়ার আন্দোলন।

নারী আন্দোলনের শিকড় বহু প্রাচীন, তবে উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে এটি সুসংগঠিত রূপ পায়। বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং সুফিয়া কামাল নারীর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকারের জন্য কাজ করেন।
ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধেও নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী আন্দোলনের মাধ্যমেই নারীর স্বাধিকার, সমান অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়।

সেই ধারাবাহিকতায় আজ নারীরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করে যাচ্ছে। NASA International Space Apps Challenge 2023-এ বাংলাদেশি নারীদের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া নারীসাফল্যের একটি দৃষ্টান্ত। এছাড়া, উদ্যোক্তা নারীরা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করছেন। রাজনীতি, বিজ্ঞান, শিক্ষা, এবং সংস্কৃতিতে নারীর দৃঢ় পদচারণা আমাদের সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দেয়।

নারীর সাফল্যের গল্প যতই অনুপ্রেরণাদায়ক হোক, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ এখনও নারীর অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সামাজিক কুসংস্কার, লিঙ্গ বৈষম্য, এবং সহিংসতা নারীর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘SHE’ কর্মশালার মতো প্রকল্পগুলো নারীদের ক্ষমতায়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তবুও, নারীর প্রকৃত সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

নারী আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে চাই সমন্বিত প্রচেষ্টা। নারীর জন্য মানসম্মত শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানো অপরিহার্য। আইনি সহায়তা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি নারীর উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। তাছাড়া, নারীর প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে পরিবার,ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা এবং গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

নারী আন্দোলন শুধু নারীদের নয়, সমগ্র সমাজের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। অতীতের সংগ্রাম এবং বর্তমানের সাফল্য আমাদের আশাবাদী করে যে, নারীর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ আরও সমৃদ্ধ হবে।

 

পারিবারিক ভাঙনে বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রম

 

সালেহ(কাল্পনিক চরিত্র) এক সময় ছিলেন একটি সুখী পরিবারের প্রধান।
তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করছিলেন।
কিন্তু কয়েক বছর আগে ছেলেরা চাকরি সুবাদে শহরে চলে যায়, মেয়েও তার পরিবার নিয়ে পাড়ি জমায় দূর শহরে।বছরে একবারো আসার সময় করতে পারেনা তার আদরের সন্তানেরা। স্ত্রীর মৃত্যু পর একদমই একা হয়ে পড়েন সালেহ, একাকীত্বের চাপ থেকে মুক্তি পেতে তিনি শেষ আশ্রয় হিসেবে বেচে নেন বৃদ্ধাশ্রমকে

এটা আজকের বাস্তবতা। পারিবারিক ভাঙনের কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাচ্ছে।
সাধারণত; গ্রামীণ সমাজে পারিবারিক সম্পর্ক অনেক দৃঢ় ছিল, কিন্তু আধুনিকতার প্রভাবে ছোট পরিবারের কাঠামো, উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের শহরে চলে যাওয়া, এবং পরিবারের সদস্যদের কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধাশ্রমে প্রবেশকারী বৃদ্ধদের সংখ্যা দিনদিন বাড়িয়েছে।

বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশে দ্রুত সামাজিক পরিবর্তন ঘটেছে। আধুনিকতা, বিশ্বায়ন এবং আর্থিক চাপের কারণে অনেক পরিবারে মুলতঃ একটাই সঙ্কট- পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি। শহরাঞ্চলে, অনেক তরুণ-তরুণী বাবা-মায়ের সাথে সময় কাটানোর চেয়ে তাঁদের কর্মজীবনে বেশি মনোযোগী।এর ফলে বৃদ্ধরা একাকী জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে, বয়সজনিত অসুস্থতার জন্য তারা তাদের সন্তানদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাননা। ফলে বৃদ্ধাশ্রমকে শেষ অবলম্বন করে নিতে হচ্ছে অনেককে।

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বৃদ্ধাশ্রম

বাংলাদেশের সমাজে পরিবার এবং সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই মূল্যবোধে হ্রাস দেখা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি শহরেই বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক। শহরকেন্দ্রিক জীবনযাত্রার পরিবর্তন, অতিরিক্ত আবাসন খরচ এবং চাকরি নিয়ন্ত্রণের কারণে শহরে বৃদ্ধদের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। শহরগুলির মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্কও কমে গেছে, এবং এখানকার পরিবারগুলোর মধ্যে আন্তঃসম্পর্কও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হলো পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি। সরকার এবং সমাজের উচিত, পরিবারগুলির মাঝে ভালোবাসা এবং যত্নের বন্ধন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।নৈতিক এবং ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যাতে ছেলে-মেয়েরা তাদের বাবা-মার প্রতি দায়িত্বশীল হয়।
পাশাপাশি, বৃদ্ধাশ্রমের মান উন্নয়ন এবং সেখানে বসবাসরতদের জন্য মানসিক সহায়তা দেওয়া দরকার। শুধুমাত্র বৃদ্ধাশ্রমই নয়, বরং পরিবার ও সমাজকে আরও সহানুভূতিশীল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হতে হবে, যাতে বৃদ্ধরা সুখী এবং শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারেন।

 

আসন্ন বিশ্ব নারী দিবসে স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা’২৫

 

আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা-২০২৫’ এর দ্বিতীয় আসর। এ আয়োজনে দেশ ও প্রবাসের বিভিন্ন অঙ্গনের সফল ও প্রতিষ্ঠিত ২০ জন নারীকে সম্মানিত করা হবে।

বিজনেস এশিয়া ম্যাগাজিনের উদ্যোগে এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে থাকছে বিশেষ চমক। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত দুটি বিশেষ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হবে।

এছাড়াও, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন দেশ-বিদেশের প্রায় সহস্রাধিক অতিথি। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠানটি হবে আরও প্রাণবন্ত।

এ আয়োজনের আরেকটি পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৬ মার্চ ২০২৫, ঢাকার শেরাটন হোটেলে। এখানেও ২০ জন সফল নারীকে সম্মানিত করা হবে।

উল্লেখ্য, ‘স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা’ প্রথমবার আয়োজিত হয় ২০২৪ সালে, যেখানে ৩০ জন উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী নারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল।

 

২০বছরের বন্দীদশা থেকে মুক্তির পথে ড. আফিয়া সিদ্দিকী

 

মার্কিন কারাগারে বন্দি পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে শিগগিরই মুক্তি দেওয়া হতে পারে। তার মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তদবিরকারী প্রতিনিধি দলের সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইকবাল জাইদি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. জাইদি জানান, ড. আফিয়া গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। তবে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়ার আগে তার সাজা কমিয়ে দিতে পারেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ড. জাইদি আরও জানান, তিন সদস্যের একটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এই বিষয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিল। যদিও তাদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা, কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এর পরিবর্তে তারা মার্কিন সিনেটর এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মানবিক কারণে ড. আফিয়ার মুক্তির আহ্বান জানিয়ে বাইডেনকে একটি চিঠি দিয়েছেন। যদি বাইডেন ব্যবস্থা না নেন, তাহলে পাকিস্তান সরকার নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করবেন।
২০০৩ সালে করাচি থেকে তিন সন্তানসহ আটক হওয়ার পর ড. আফিয়ার জীবন এক অবিশ্বাস্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এটি এমন একটি অপরাধ যার জন্য মার্কিন আইনে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর।
ড. জাইদি বলেন, ড. আফিয়া ২০ বছর ধরে তার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
তার এই মুক্তি ২৫ কোটি পাকিস্তানি এবং বিশ্বের ২ বিলিয়ন মুসলমানের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি উন্নত করবে।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর এই মুক্তির বিষয়ে পাকিস্তানসহ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আগ্রহ ও প্রতীক্ষা তৈরি হয়েছে।

 

নিকাব পরে টকশো করতে নিষেধাজ্ঞা;বিতর্কে চ্যানেল আই

সম্প্রতি চ্যানেল আই-এ একটি টকশোতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক নাফিসা ইসলাম সাকাফি। তবে নিকাব পরে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত জানালে প্রথমে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ তাকে টকশোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়নি। পরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে চ্যানেল আই নিকাব পরে অংশগ্রহণের অনুমতি দিলেও, নাফিসা অফিশিয়ালি ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানান।

নাফিসা জানান, এটি তার জন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং দেশে ইসলামবিদ্বেষের একটি উদাহরণ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অতীতে রমজানে টিএসসিতে নামাজের ব্যবস্থা করায় ছাত্রলীগের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তখন নিকাব না করার কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন, আর এখন নিকাব পরার কারণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নাফিসা ইসলাম সাকাফিসহ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ চিন্তকরা ইসলামবিদ্বেষ নিয়ে ”ইসলামোফোবিয়া: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ” শিরোনামে আলোচনার জন্য ২০জানুয়ারি রাত ৯টায় লাইভে আসবেন।

 

ছবি সূত্রঃ রিপাবলিক টেলিভিশন

 

ড. রাইসা খান তারেক: বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও অনুপ্রেরণার নাম

 

জন্ম বাংলাদেশে হলেও ড. রাইসা খান তারেকের শৈশব কেটেছে সুইডেনে। ছোটবেলা থেকেই রসায়নের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা থাকলেও তার নানির ক্যান্সারে মৃত্যুর ঘটনাই তাকে মেডিক্যাল কেমিস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়ার প্রেরণা দেয়।

২০১৪ সালে রাইসা নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রিতে অনার্স সম্পন্ন করেন এবং ২০১৮ সালে সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ভিত্তিক কোম্পানি Evonetix-এ সিন্থেটিক কেমিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।

রাইসা এবং তার দল একটি “ডিএনএ প্রিন্টার” তৈরি নিয়ে কাজ করছেন, যা দ্রুত ও নির্ভুলতার সাথে ডিএনএ সিকোয়েন্স তৈরি করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ শিল্প এবং ডেটা স্টোরেজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এই উদ্ভাবন গবেষণার সময় ও খরচ কমিয়ে বিশ্বব্যাপী ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এবং গবেষণাগারের কাজকে সহজ করবে।

পেশাগত সাফল্যের পাশাপাশি ড. রাইসা একজন জনপ্রিয় ভ্লগার। তার ইউটিউব ও ফেসবুক চ্যানেল Dr Raysa’s-এ তিনি বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সচেতনতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কন্টেন্ট আপলোড করেন। এতে তাকে সহায়তা করেন তার স্বামী নাজমুস সাকিব তারেক, যিনি আইন ও স্টার্টআপ বিষয়ে কাজ করছেন।

ড. রাইসা STEM (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন আউটরিচ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে ভূমিকা রাখছেন।

ড. রাইসার মতে, নারীদের বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে সামাজিক বাধা দূর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার কাজ ও জীবনসংগ্রাম বাংলাদেশের STEM ক্ষেত্রে নারীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

 

আপনার সন্তানকে নিয়মিত খেলতে দিন

 

খেলা একটি শিশুর শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপায়। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে পড়াশোনা, কোচিং, এবং প্রযুক্তি আসক্তির কারণে শিশুরা প্রকৃত খেলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে খেলার গুরুত্ব অনুধাবন করে শিশুদের নিয়মিত খেলতে দেওয়া প্রত্যেক অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

খেলা শিশুর শারীরিক বিকাশে সহায়ক। নিয়মিত খেলার মাধ্যমে শরীর মজবুত হয়, মাংসপেশি শক্তিশালী হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি, খেলাধুলা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বদানের গুণাবলী এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করে।

খেলা শিশুদের সামাজিক সম্পর্ক গড়তেও সাহায্য করে। দলগত খেলাগুলোর মাধ্যমে শিশুরা পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতা এবং শ্রদ্ধাবোধ শেখে। এ ছাড়া, খেলার সময় শিশুরা নিয়ম মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল হওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে।

অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত অল্প সময় খেলার জন্য উৎসাহ দেওয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশে খেলাধুলার সুযোগ দিলে তারা আরও বেশি উপকৃত হবে।

আপনার সন্তানকে নিয়মিত খেলতে দিন

 

খেলা একটি শিশুর শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপায়। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে পড়াশোনা, কোচিং, এবং প্রযুক্তি আসক্তির কারণে শিশুরা প্রকৃত খেলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে খেলার গুরুত্ব অনুধাবন করে শিশুদের নিয়মিত খেলতে দেওয়া প্রত্যেক অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

খেলা শিশুর শারীরিক বিকাশে সহায়ক। নিয়মিত খেলার মাধ্যমে শরীর মজবুত হয়, মাংসপেশি শক্তিশালী হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি, খেলাধুলা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বদানের গুণাবলী এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করে।

খেলা শিশুদের সামাজিক সম্পর্ক গড়তেও সাহায্য করে। দলগত খেলাগুলোর মাধ্যমে শিশুরা পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতা এবং শ্রদ্ধাবোধ শেখে। এ ছাড়া, খেলার সময় শিশুরা নিয়ম মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল হওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে।

অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত অল্প সময় খেলার জন্য উৎসাহ দেওয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশে খেলাধুলার সুযোগ দিলে তারা আরও বেশি উপকৃত হবে।

 

স্তন ক্যানসার সারাতে ভাইরোথেরাপি সফল ড. বিটা হালাসি

ক্রোয়েশিয়ার খ্যাতনামা ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. বিটা হালাসি দীর্ঘদিন ধরে স্তন ক্যানসারে ভুগছিলেন। বাম স্তনে টিউমার শনাক্ত হওয়ার পর তিনবার অস্ত্রোপচার ও কেমোথেরাপি করেও তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বারবার টিউমার ফিরে আসায় চিকিৎসার প্রচলিত পদ্ধতিতে আশাহত হয়ে তিনি নতুন পথ খোঁজেন।

শেষমেশ নিজের ওপরই পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করেন অনলোলাইটিক ভাইরোথেরাপি (ওভিটি)। এই পদ্ধতিতে ভাইরাসের ডিএনএ পরিবর্তন করে তা রোগীর দেহে প্রবেশ করানো হয়। এটি ক্যানসারের নির্দিষ্ট কোষগুলোকে টার্গেট করে ধ্বংস করে, অন্য কোনো সুস্থ কোষের ক্ষতি না করে। ড. বিটা নিজেই ভাইরাসটি জৈবিকভাবে পরিবর্তন করে নিজের দেহে প্রয়োগ করেন। অবিশ্বাস্যভাবে তিনি পুরোপুরি সেরে ওঠেন।

তবে এই চিকিৎসাপদ্ধতি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং প্রচলিত চিকিৎসার অংশ নয়। ড. বিটার এই পদক্ষেপে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলেও বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ম মেনে ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পন্ন না করে নিজেই নিজের ওপর এই থেরাপি প্রয়োগ করায় তাঁর গবেষণাপত্র বহু আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রত্যাখ্যাত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ড. বিটার অভিজ্ঞতা অনলোলাইটিক ভাইরোথেরাপি নিয়ে আরও গবেষণার পথ সুগম করতে পারে। তবে নিয়মিত ব্যবহারের আগে এটি যথাযথ প্রমাণ এবং অনুমোদনের প্রয়োজন।

ড. বিটার এই সাহসী পদক্ষেপ ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করলেও তা নিয়ে বিতর্ক এখনো অব্যাহত।

 

ধনেপাতার সস,বছরজুড়ে সংরক্ষণের জন্য

উপকরণ:
ধনেপাতা: ২৫০ গ্রাম
জলপাই: ২টি
আদা-রসুন বাটা: ২ টেবিল চামচ
কাঁচা মরিচ: ৩-৪টি(যারা ঝাল পছন্দ করেননা বাদ দিতে পারেন)
সরিষার তেল: ৪ টেবিল চামচ
লেবু: ১টি (রস)
ভিনেগার: ৩ টেবিল চামচ
লবণ: স্বাদ অনুযায়ী

প্রস্তুত প্রণালী:
ধনেপাতা, জলপাই, আদা-রসুন বাটা, লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, লবণ এবং সরিষার তেল একসাথে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করুন।

পানি একেবারেই ব্যবহার করা যাবেনা,ব্লেন্ড করা সস একটি পরিষ্কার কাচের জারে রেখে উপরে ভিনেগার দিয়ে মুখ ভালমতো বন্ধ করে দিন।

দীর্ঘদিন সংরক্ষনের জন্য জারটি টানা ৭দিন রোদে দিন।

এই সস ভাত বা যেকোন স্ন্যাকস এর সাথে খেতে দারুণ।ট্রাই করবেন নাকি!?

 

নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে ‘SHE’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

 

৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘Students Heed to Entrepreneurship (SHE)’ শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা তৈরি।

কর্মশালায় ২০০ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মেন্টর এবং অতিথি অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় তিনজন সফল নারী উদ্যোক্তা তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তাঁরা হলেন:
জনাবা নিলুফার ইয়াসমিন নীলা, স্বত্বাধিকারী, এস এন ফ্যাশন।
জনাবা নিশাত মাসফিকা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক- রেইনড্রপস টেক এবং ফাউন্ডার- দেশজ ক্রাফটস।
জনাবা হানিয়ম মারিয়া চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও-তাহুর।

তাঁরা তাঁদের ব্যবসায়িক যাত্রা, চ্যালেঞ্জ এবং সাফল্যের গল্প তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করেন।
এছাড়া NASA International Space Apps Challenge 2023-এর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিম তাঁদের উদ্যোগ এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথপরিক্রমা নিয়ে আলোচনা করেন।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. খোরশেদ আলম। প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক জনাবা ফারজানা খান।
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন -রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের উপাধ্যক্ষ,শিক্ষক সহ বিভিন্ন অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তা প্রতিনিধিগণ।

উল্লেখ্য, এসএমই ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে দেশব্যাপী এ ধরনের কর্মশালা আয়োজন করে আসছে। এই ধরনের কর্মশালা শিক্ষার্থীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

দেশে প্রথমবারের মত নারীর দেহে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত

 

রাজধানীর এক ৩০ বছর বয়সী নারীর শরীরে প্রথমবারের মতো হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্ত হয়েছে। কিশোরগঞ্জের ওই নারী নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং বর্তমানে আইইডিসিআর এ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এইচএমপিভি সাধারণত শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সময়মতো চিকিৎসা পেলে এ ভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে ভাইরাসটির সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক পরা এবং অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

নুসাইবা বিনতে কা’ব (রা.):রাসুল (সা.) এর প্রতিরক্ষায় সাহসী নারী

 

হযরত নুসাইবা বিনতে কা’ব (রা.), যিনি উম্মে আম্মারা নামে পরিচিত,ইসলামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নারী সাহাবী।
তিনি মদিনার বনু খাযরাজ গোত্রে জন্মগ্রহ করেন।
এমন এক সাহসী নারী, যিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতিরক্ষার জন্য নিজের জীবন বাজি রাখতে দ্বিধা করেননি।

উহুদ যুদ্ধে নুসাইবা (রা.) আহতদের পানি সরবরাহ এবং তাদের সেবা করার দায়িত্ব পালন করছিলেন। যখন তিনি দেখতে পেলেন যুদ্ধের ময়দানে বিশৃঙ্খলা তৈরী হওয়াতে শত্রুরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে, তখন তিনি আর পিছিয়ে থাকেননি।
সঙ্গে থাকা তলোয়ার ও ঢাল হাতে তুলে নেন এবং শত্রুদের মোকাবিলা করতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পাশে দাঁড়ান। নিজেকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করর একের পর এক শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সুরক্ষিত রাখেন। তাঁর এই বীরত্বের ঘটনা স্মরণ করে রাসুল (সা.) বলেন
“আজ আমি যেদিকেই তাকাই, দেখি নুসাইবা আমার প্রতিরক্ষায় লড়ছেন।”

যুদ্ধের পর নুসাইবা (রা.)-এর শরীরে অন্তত ১২টি গভীর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এক আঘাত এত গুরুতর ছিল যে সেরে উঠতে অনেক দিন সময় লাগে। তিনি নিজের জীবনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাসুল (সা.)-কে শত্রুর তীর ও অস্ত্র থেকে রক্ষা করেন।

হযরত নুসাইবা (রা.) শুধু যোদ্ধা ছিলেন না; তিনি ইসলামের দাওয়াত ছড়িয়ে দেওয়ার কাজেও ছিলেন সক্রিয় ।
উহুদ যুদ্ধ ছাড়াও তিনি হুনাইন যুদ্ধ এবং হুদাইবিয়ার সন্ধিতে উপস্থিত ছিলেন।
তাঁর স্বামী এবং সন্তানরাও ছিলেন ইসলামের জন্য নিবেদিত।

হযরত নুসাইবা বিনতে কা’ব (রা.) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সাহসিকতা, আত্মত্যাগ এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তিনি দেখিয়েছেন, ঈমান ও সাহস যদি মজবুত হয়, তবে যে কেউ ইসলামের জন্য এক বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।

 

আফিয়া সিদ্দিকী :ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় এক নিরপরাধ নারী

 

এটি শুধুমাত্র একটি নীরব কষ্টের গল্প নয়। এটি মানবাধিকারের এক গ্লানিময় অধ্যায়, যেখানে একজন নিরপরাধ মুসলিম নারীকে শুধুমাত্র তার বিশ্বাস, পরিচয় এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অত্যাচারিত ও বন্দী করা হয়েছে। তার নাম—ড. আফিয়া সিদ্দিকী। একজন মেধাবী নিউরো-সায়েন্টিস্ট, একজন মা, এবং একজন মুসলিম নাগরিক—যিনি আজ বছরের পর বছর ধরে একটি শত্রু রাষ্ট্রের কারাগারে নিঃসঙ্গ বন্ধী অবস্থায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এতটাই বিতর্কিত এবং ভিত্তিহীন যে, এটি কোনভাবেই ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর কাহিনি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিষ্ঠুরতা এবং অবিচারের একটি জলন্ত উদাহরণ। ২০০৩ সালে, পাকিস্তানের করাচি থেকে তাকে তার তিন সন্তানসহ অপহরণ করা হয়। এরপর, ২০০৮ সালে আফগানিস্তানে গ্রেপ্তার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বন্দী হন। তাকে নিয়ে যে মামলা চলছে, তা বিশ্বব্যাপী মানুষের মনে এক গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তাকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এবং সবশেষে, ২০১০ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে, কিন্তু সেই বিচারের পেছনে কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ নেই।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে যে এক ভয়াবহ চক্রান্তের শিকার হতে হয়েছে, তা স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এবং তাদের সহযোগী শক্তিরা, তাকে একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। ২০০৩ সালে যখন আফিয়া সিদ্দিকী ও তার তিন সন্তানকে অপহরণ করা হয়, তখন তারা কেবল একটি সাধারণ পরিবার , কিন্তু তাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাকে “আল-কায়দার সহযোগী” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর, আফিয়া সিদ্দিকীকে যে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, তা সত্যি হৃদয়বিদারক। ২০০৮ সালে তাকে আফগানিস্তানের বাগরাম কারাগারে বন্দী রাখে। সেখানে তাকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়, অমানবিকভাবে মারধর করা হয় এবং তার মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তাকে কয়েক মাস ধরে অন্ধকার সেলে রাখা হয়েছিল, খাবার ও পানি দেওয়া হত না, এবং পরপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো।

বিশ্ব মানবাধিকারের মূল্যবোধ যখন নিঃশেষিত, তখন একটি আদর্শ রাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ন্যায়বিচার। এই ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের আওয়াজ উঠাতে হবে। আমরা যদি আমাদের কর্তব্য হিসেবে মানবাধিকার ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে না পারি, তাহলে আমাদের মৌলিক বিশ্বাসগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আফিয়া সিদ্দিকীকে অন্যায়ভাবে বন্দী করা হয়েছে , শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয়,সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য এটা এক গুরুতর পরীক্ষা। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে তার মুক্তির জন্য আওয়াজ তোলা এখন সময়ের দাবি।

এটি শুধুমাত্র একজন নারীর মুক্তি নয়, এটি আমাদের সম্মানের, আমাদের বিশ্বাসের, এবং আমাদের নৈতিকতার লড়াই।
আমরা কি এই অবিচারের বিরুদ্ধে চুপ করে থাকতে পারি? আফিয়া সিদ্দিকী এবং তার মতো অন্যান্য নিরপরাধ বন্দীদের জন্য কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে আমরা কিভাবে একটি ন্যায়বিচারহীন পৃথিবীতে বাস করব? এটাই আমাদের দায়, আমাদের কর্তব্য।
আমরা যদি এই মুহূর্তে এক হয়ে দাঁড়াতে না পারি, তাহলে আফিয়া সিদ্দিকী এমন একটি ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের জন্য লজ্জাজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে।

 

আল কোরআনে নারীর অধিকার

 

ইসলাম নারীকে মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করেছে, যা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নারীর মর্যাদা ও অধিকারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন।

ইসলামের আগমনের পূর্বে সমাজে নারী অবহেলিত ও নিগৃহীত ছিল।
পরবর্তীতে কোরআনের নির্দেশনা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ নারীদের জীবনে আশীর্বাদ রূপে আসে।

কোরআনে নারীর মর্যাদা
পবিত্র কোরআনে নারী -পুরুষকে সম মর্যাদা দান করে-
“আর আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি, একজন নারী ও একজন পুরুষ থেকে। আর তাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তারা পরস্পর পরিচিত হতে পারে। তবে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাবান সে, যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়াবান।”
— (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, নারীর মর্যাদা আল্লাহর কাছে পুরুষের সমান। ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করেনি; বরং তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পৃথকভাবে নির্ধারণ করেছে।

নারীর অধিকার
১. জীবনের অধিকার:

ইসলাম পূর্বে নারী শিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। আল্লাহ এ বর্বর প্রথাকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন:
“যখন জীবিত কবর দেওয়া কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, ‘তোমাকে কেন হত্যা করা হয়েছিল?’”
— (সূরা আত-তাকওয়ির: ৮-৯)

২. শিক্ষার অধিকার:

ইসলামে জ্ঞান অর্জন নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন:
“তোমরা কি জানো না? যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে?”
— (সূরা আয-যুমার: ৯)
এ আয়াত নারীসহ সকল মানুষের জন্য শিক্ষার গুরুত্বকে নির্দেশ করে।

৩. অর্থনৈতিক অধিকার:

ইসলাম নারীদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করেছে। উত্তরাধিকার ও ব্যবসায় তাদের নিজস্ব সম্পত্তি রাখার স্বাধীনতা রয়েছে। আল্লাহ বলেন:
“পুরুষের জন্য রয়েছে তার উপার্জনের ভাগ এবং নারীর জন্য রয়েছে তার উপার্জনের ভাগ।”
— (সূরা আন-নিসা: ৩২)

৪. বিবাহের ক্ষেত্রে অধিকার:

ইসলাম বিয়ের ক্ষেত্রে নারীর সম্মতিকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“সাবালিকা মেয়েকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দেওয়া যাবে না, তারা বলল: হে আল্লাহর রাসূল (সা.), তার অনুমতির পদ্ধতি কী? তিনি বলেন: তার চুপ থাকা”।
— (সহিহ বুখারি, ৪৮৪৩)

৫. মাতৃত্বের মর্যাদা:

মা হিসেবে নারীর মর্যাদা ইসলামে সর্বোচ্চ। কোরআনে আল্লাহ বলেন:
“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্টের মধ্যে গর্ভে ধারণ করেছে।”
— (সূরা লুকমান: ১৪)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন:
“তোমার মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার করো, তারপর তোমার পিতার প্রতি।”
— (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৭১)

পৃথিবীর যাবতীয় মতবাদ একত্রিত হয়েও নারীর সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে যেখানে ব্যর্থ,
পবিত্র কোরআন সেখানেই বিজয়ী। ইসলাম নারীদের আত্মমর্যাদার স্বীকৃতি ও জীবনাযাপনের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে তাদের জীবনে নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করেছে।

 

শীতের মুখরোচক স্ন্যাক্স ফুলকপি পাকোড়া

উপকরণ:
ফুলকপি – ১টা মাঝারি (ছোট টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিন)

বেসন – ১ কাপ
চালের গুঁড়া – ২ টেবিল চামচ (খাস্তা করার জন্য)
লবণ – স্বাদমতো
হলুদ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ মরিচ গুঁড়া – ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
ধনিয়া পাতা কুচি – ২ টেবিল চামচ

প্রস্তুত প্রণালি:
ফুলকপির ছোট ছোট টুকরোগুলো সামান্য লবণ দেওয়া ফুটন্ত পানিতে ২-৩ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। তারপর পানি ঝরিয়ে ঠান্ডা করে নিন।

একটি বাটিতে বেসন, চালের গুঁড়া, লবণ, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া মিশিয়ে নিন। এতে অল্প অল্প করে পানি যোগ করে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট যেন বেশি পাতলা না হয়।
ফুলকপি ডুবিয়ে নিন
সেদ্ধ করা ফুলকপির টুকরোগুলো মিশ্রণে ডুবিয়ে ভালো করে কোট করে নিন।

এবার কড়াইতে তেল গরম করে মাঝারি আঁচে কোট করা ফুলকপির টুকরোগুলো সোনালি বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।

অতিরিক্ত তেল শুষে নেওয়ার জন্য টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন।

এবার উপভোগ করুন গরম গরম ফুলকপি পাকোড়া টমেটো সস বা ধনিয়া চাটনির সাথে।

 

সায়েন্স ফিকশন: তৃতীয় মাধ্যাকর্ষণ

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে বসে ছিল তরুন বিজ্ঞানী ও গবেষক ড.সিনান। মাথার মধ্যে এক দারুণ চিন্তা ঘুরছিল। পৃথিবী, গ্রহ, তারা—এসব সবসময় তাকে আকর্ষণ করেছে। কিন্তু তার গবেষণার বিষয় ছিল নতুন কিছু। সে এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করতে চেয়েছিল, যা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পরিবর্তন ঘটাতে পারবে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তি কমানো যাবে, ফলে মহাকাশযান বা উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য কম শক্তির প্রয়োজন হবে।

যদিও এটা ছিল এক অসম্ভব স্বপ্ন তবুও ড. সিনান এবং তার দল কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন।
২০৩৫ সাল, যখন পৃথিবী ক্রমশ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছিল, তখন এই প্রযুক্তি অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মহাকাশ গবেষণায় বড় ধরনের অগ্রগতি না হলে মানুষ ভবিষ্যতে মহাকাশের রিসোর্স কাজে লাগাতে পারবে না।

ড.সিনানের চিন্তা ছিল পৃথিবীকে টেকসই, শক্তিশালী ও শক্তির দিক থেকে আরো স্বাধীন করা।
একদিন তার পরীক্ষামূলক যন্ত্রটির কাজ শেষ হয়ে যায়। এটি “নিউট্রো-এন” নামক একটি ডিভাইস, যা পৃথিবীর আকর্ষণ শক্তিকে স্থানিকভাবে সামান্য কমিয়ে দিতে সক্ষম। এটি পুরো পৃথিবীতে প্রয়োগের জন্য তৈরি হয়নি, কিন্তু একটি ছোট অঞ্চলে পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারবে।

তারা প্রথমে যন্ত্রটি শহরের ছোট্ট অঞ্চলে দিয়ে পরীক্ষা শুরু করে। যন্ত্রটি চালু করতেই ড.সিনান অনুভব করেন, পৃথিবীর আকর্ষণ কমে যাচ্ছে, আর কিছু সময় পর পুরো অঞ্চলটি হালকা হয়ে উঠছে। নীচের থেকে উপরের দিকে পাখির মতো ছোটো জিনিসগুলো ভেসে উঠতে শুরু করে, এটা ছিল এক অভূতপূর্ব দৃশ্য!

কিন্তু সমস্যা শুরু হয় কিছুদিন পর। যখন যন্ত্রটি কাজ করতে থাকে, তখন কিছু অদ্ভুত ফলাফল দেখা দেয়। অনেক কিছু হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করে। যন্ত্রের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কিছু অঞ্চলে গাছপালা ও পশু-পাখির চলাফেরা অসম্ভব হয়ে পড়ছিল,পৃথিবীর মৌলিক শর্তগুলো বদলে যাচ্ছিল।

এরপরে পৃথিবী ফের যখন তার সাধারণ নিয়মে ফিরছিল, তখন ড. সিনান বুঝতে পারছিল যে তিনি যা চেয়েছিলেন, তা সম্ভব হলেও
মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক নিয়মে অনেক জটিলতা নিয়ে আসবে।

এবার তাকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা—যন্ত্রটি পৃথিবীর অন্যান্য অংশে পরীক্ষা করবে কি না, অথবা তাকে ফের নতুন কোনো পথ খুঁজে বের করতে হবে।তার এই পরীক্ষামূলক গবেষণার কারনে পৃথিবী ছিল তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিয়ন্ত্রণের এক বিপজ্জনক যাত্রায়।

শেষমেশ; বিজ্ঞানী সিনান এবং তার দল সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা আরো উন্নত গবেষণা করবে এবং যন্ত্রটির ত্রুটি ঠিক করতে চেষ্টা করবে।
কিন্তু একথা পরিষ্কার, পৃথিবীর সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ অনেক বড়।

– আরওয়া আনাম

 

এডব্লিউই প্রোগ্রামে পুরষ্কার পেলো ৬ নারী উদ্যোক্তা

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত একাডেমি ফর উইমেন অন্ট্রোপ্রেনরস (এডব্লিউই) বিজনেস পিচ প্রতিযোগিতায় ছয়জন নারী উদ্যোক্তাকে তাদের সৃজনশীল ব্যবসায়িক ধারণার জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। বিজয়ীরা প্রত্যেকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার পেয়েছেন।

গত সপ্তাহে ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কালচারাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার এলিনা শেনসি। তিনি বলেন, “নারীরা যখন নেতৃত্বে আসে, তখন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। এডব্লিউই প্রোগ্রাম নারীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে বিকশিত করতে সহায়ক।”

এডব্লিউই প্রোগ্রামটি ২০২২ সালে বাংলাদেশে শুরু হয়। এটি বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। এ বছর প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে ২৫ জন নারী উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করেন। তাদের মধ্য থেকে সেরা ছয়জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ীরা সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, খাগড়াছড়ি, যশোর, এবং ঢাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের ব্যবসাগুলো পরিবেশবান্ধব পণ্য, নারীদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা প্রযুক্তি এবং কৃষি উদ্ভাবনের মতো খাতে অবদান রাখছে।

এডব্লিউই প্রোগ্রাম নারীদের জন্য ৩ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং মেন্টরশিপ সেশন পরিচালনা করে। এতে অংশগ্রহণকারীরা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরির পাশাপাশি মার্কেটিং ও অর্থায়নের কৌশল শেখেন।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা জানান, এই উদ্যোগ নারীদের ব্যবসায়িক দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখছে। বিজয়ীরা তাদের পুরস্কারের অর্থ ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যবহার করবেন।

 

হযরত জুবাইদা (রহ.) :ইসলামী সভ্যতার মহান নারী উদ্যোক্তা

 

ইসলামের ইতিহাসে রাণী জুবাইদা (রহ.) একজন বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী এবং নবী কারিম (সা.)-এর বংশধর। তার প্রকৃত নাম আমাতুল আজিজ হলেও দাদা খলিফা আবু জাফর মানসুরের দেওয়া আদুরে ডাকনাম ‘জুবাইদা’ নামেই তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

জুবাইদার জন্ম ১৪৯ হিজরিতে ইরাকের মসুলে। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রাসাদে শিক্ষা লাভ করেন এবং কোরআন, হাদিস, ধর্মতত্ত্ব, ইতিহাস, ভূগোল, ও জ্যামিতিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি বিদ্বান, পরোপকারী এবং বুদ্ধিমতী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার দানশীলতা ও কর্মধারার জন্য তিনি সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে ওঠেন।

রাণী জুবাইদার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হলো “নহরে জুবাইদা”। ১৯৩ হিজরিতে খলিফা হারুনুর রশিদের মৃত্যুর পর তিনি হজপালনে যান। সেখানে হাজীদের পানির কষ্ট দেখে তিনি ব্যথিত হন এবং পানির সংকট সমাধানে একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন। ওয়াদি নোমান থেকে আরাফাত ময়দান এবং হুনাইন থেকে মক্কা পর্যন্ত খালটি খনন করা হয়। এতে প্রায় ১৭ লাখ দিনার খরচ হয়, যা সে সময়ের এক বিশাল অঙ্ক।

খালটি আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়াই পাথর কেটে এবং ভূগর্ভস্থ টানেল নির্মাণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। খালের পাশেই পানির স্টেশন স্থাপন করা হয়, যাতে স্থানীয় জনগণ সহজে পানি সংগ্রহ করতে পারে। এই নহর শুধু হাজীদের পানির সমস্যা দূর করেনি; বরং মক্কা ও আশপাশের কৃষকদেরও পানির অভাব মেটায়।

রাণী জুবাইদার দানশীলতার উদাহরণ এখানেই শেষ নয়। তিনি কুফা থেকে মক্কা ও মদিনা পর্যন্ত ১৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেন। এছাড়াও মক্কায় আরও ৫টি জলাধার ও অনেক অজুখানা নির্মাণ করেন। তার প্রাসাদে ১০০ নারী হাফেজা কোরআন তেলাওয়াত করতেন, যা ২৪ ঘণ্টা চলত।

রাণী জুবাইদার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় মানবতার জন্য উৎসর্গীকৃত। ২১৬ হিজরির ২৬ জমাদিউল উলা মোতাবেক ১০ জুলাই ৮৩১ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। এই মহীয়সী নারীর কর্ম ও অবদান আজও বিশ্ব মুসলিমকে অনুপ্রাণিত করে।

 

পাওলো কোয়েলহোর ‘দি আলকেমিস্ট’: আত্ম-উপলব্ধি ও স্বপ্নপূরণের গল্প

দি আলকেমিস্ট (The Alchemist) হলো পাওলো কোয়েলহোর একটি অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস, যা স্বপ্নপূরণ এবং আত্ম-উপলব্ধির গুরুত্ব নিয়ে লেখা। এর কেন্দ্রীয় চরিত্র সান্তিয়াগো নামের এক আন্দালুসীয় রাখাল, যে তার জীবনকে বদলে দিতে একটি স্বপ্নকে অনুসরণ করে।

গল্পটি শুরু হয় সান্তিয়াগোর এক রহস্যময় স্বপ্ন দিয়ে, যেখানে সে দেখে মিশরের পিরামিডের কাছে একটি গুপ্তধন লুকানো রয়েছে। এই স্বপ্ন তাকে ভাবনায় ফেলে দেয়। এক জিপসি ভবিষ্যদ্বক্তা এবং এক রহস্যময় বৃদ্ধ (মেলসিজেদেক, যিনি নিজেকে সালেমের রাজা হিসেবে পরিচয় দেন) তাকে তার স্বপ্ন অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়। তারা তাকে শেখায় যে প্রত্যেকের জীবনে একটি “ব্যক্তিগত কিংবদন্তি” (Personal Legend) রয়েছে, যা পূরণ করাই জীবনের মূল লক্ষ্য।

সান্তিয়াগো নিজের গৃহ ত্যাগ করে এবং গুপ্তধনের সন্ধানে আফ্রিকার মরক্কো পৌঁছে। সেখানে তার প্রথম ধাক্কা আসে, যখন সে প্রতারিত হয় এবং তার সব অর্থ হারায়। তবে এই প্রতিকূলতা তাকে ভেঙে ফেলে না। সে একটি স্ফটিক দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। দোকানের মালিকের জীবনদর্শন থেকে সান্তিয়াগো শিখে যে স্বপ্ন পূরণে ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন।

মরুভূমি অতিক্রম করতে গিয়ে সান্তিয়াগোর দেখা হয় একজন ইংরেজের সঙ্গে, যে বেড়িয়েছে আলকেমির (তাত্ত্বিক সোনা তৈরির বিজ্ঞান) সন্ধানে। তারা মরুভূমি পেরিয়ে এক মরূদ্যানে পৌঁছায়। এখানে সান্তিয়াগোর পরিচয় হয় ফাতিমার সঙ্গে । ফাতিমা তাকে তার স্বপ্ন পূরণের জন্য উৎসাহ দেয়, যদিও সান্তিয়াগো তাকে ছেড়ে যেতে দ্বিধান্বিত থাকে।

মরূদ্যানেই সান্তিয়াগোর সঙ্গে পরিচয় হয় এক প্রকৃত আলকেমিস্টের। আলকেমিস্ট তাকে শেখায় জীবনের গভীর অর্থ এবং প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের পদ্ধতি। সে সান্তিয়াগোকে বোঝায় যে মানুষ যতক্ষণ স্বপ্ন অনুসরণ করে, ততক্ষণ প্রকৃতি তার পক্ষে কাজ করে।

আলকেমিস্টের সহায়তায় সান্তিয়াগো শেষ পর্যন্ত মিশরের পিরামিডে পৌঁছায়। তবে সেখানে সে বুঝতে পারে যে আসল গুপ্তধন পিরামিডে নয়, বরং তার যাত্রার শুরুতে ছিল। এই উপলব্ধি তাকে শেখায় যে যাত্রার অভিজ্ঞতাই আসল গুপ্তধন।

সান্তিয়াগোর এই যাত্রা আমাদের শেখায় যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত এবং বাধা আমাদের ব্যক্তিগত লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখে। এটি এমন একটি কাহিনি, যা আত্ম-উপলব্ধি, প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ, এবং জীবনের গভীর অর্থ অনুসন্ধানকে তুলে ধরে।

 

চাইল্ড সাইকোলজি: শিশুর মানসিক বিকাশে সেরা অভিভাবকত্ব কৌশল

শিশুর মানসিক বিকাশ তার ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি তৈরি করে। শৈশবকালীন অভিজ্ঞতা, পারিবারিক পরিবেশ এবং অভিভাবকের দিকনির্দেশনা শিশুদের আবেগ, চিন্তাধারা এবং আচরণে গভীর প্রভাব ফেলে। চাইল্ড সাইকোলজি বা শিশুর মনস্তত্ত্ব এই বিকাশকে বুঝতে এবং শিশুর অনুভূতি, সমস্যা ও প্রয়োজন বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

শিশুরা তাদের অনুভূতি ও চাহিদা সরাসরি প্রকাশ করতে পারে না। তাদের আচরণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের মনস্তত্ত্ব বোঝা যায়। জিন পিয়াজে বলেন, “Play is the work of childhood.” তার এই উক্তি ইঙ্গিত করে যে শিশুরা খেলার মাধ্যমে শেখে এবং তাদের কল্পনা, চিন্তা ও আবেগ বিকশিত করে। এই শেখার প্রক্রিয়ায় অভিভাবকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর মানসিক বিকাশ ধাপে ধাপে এগিয়ে চলে। শূন্য থেকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা তাদের চারপাশের পরিবেশ এবং পরিচর্যাকারীর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকে। তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সে তারা কল্পনাশক্তি এবং শেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এ সময় তারা প্রশ্ন করতে শুরু করে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে আগ্রহী হয়। ছয় থেকে বারো বছর বয়সে তাদের সামাজিক দক্ষতা এবং আত্মপরিচয় গঠিত হয়। এই বয়সে শিশুরা তাদের আশপাশ থেকে মূল্যবোধ এবং নিয়ম-কানুন শিখে।

শিশুর মানসিক বিকাশে অভিভাবকের সঠিক দিকনির্দেশনা ও সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে কথা বলা এবং তাদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। তাদের ছোট ছোট সাফল্যকে স্বীকৃতি দিয়ে উৎসাহ প্রদান করা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। শিশুরা বড়দের আচরণ থেকে শিক্ষা নেয়, তাই অভিভাবকদের ধৈর্যশীল ও নম্র হতে হবে। তাদের সঙ্গে সময় কাটানোও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শিশুদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং সম্পর্ক দৃঢ় করে।

এরিক এরিকসন উল্লেখ করেছেন, “Children love and want to be loved, and they very much prefer the joy of accomplishment over the triumph of hateful failure.” এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে শিশুরা ভালোবাসার পরিবেশে বেড়ে উঠতে চায় এবং তাদের অর্জনের জন্য স্বীকৃতি পেলে তারা আত্মবিশ্বাসী ও সুখী হয়।

বর্তমান যুগে প্রযুক্তি শিশুর মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করা এবং তাদের প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করা।

সামগ্রিকভাবে, শিশুর মানসিক বিকাশে অভিভাবকের ভূমিকা অপরিসীম। শিশুরা তাদের সাথে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতা এবং ভালোবাসার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে। সচেতন অভিভাবকত্ব, ইতিবাচক পরিবেশ এবং সঠিক দিকনির্দেশনা শিশুদের জীবনকে গঠনমূলক ও অর্থবহ করে তুলতে পারে।