banner

বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: December 17, 2024

 

কুড়িগ্রামের রিক্তা আক্তার বানু বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায়

 

কুড়িগ্রামের চিলমারীর নারী উদ্যোক্তা ও সমাজসেবী রিক্তা আক্তার বানু স্থান পেয়েছেন বিবিসির ২০২৪ সালের অনুপ্রেরণাদায়ী ১০০ নারীর তালিকায়। তার সংগ্রামী জীবনের গল্প এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ তাকে এই স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা

রিক্তা আক্তার বানু একজন জ্যেষ্ঠ নার্স হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও তার প্রকৃত পরিচিতি এসেছে একজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। তার মেয়ে তানভীন দৃষ্টি মনি সেরিব্রাল পালসি ও অটিজমে আক্রান্ত। মেয়েকে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে গিয়ে যখন তিনি সমাজের নেতিবাচক মনোভাবের মুখোমুখি হন, তখনই তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন।

২০০৯ সালে তিনি নিজের জমি বিক্রি করে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রিক্তা আক্তার বানু (লুৎফা) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’। বর্তমানে বিদ্যালয়টি প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষাদান ও মানসিক বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছে।

বিশ্বের স্বীকৃতি

বিবিসি প্রতি বছর তাদের তালিকায় এমন নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে যারা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন। রিক্তা আক্তার বানু এই তালিকায় বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিভাগে স্থান পেয়েছেন। তিনি তার কাজের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ববাসীর কাছেও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।

এই তালিকায় তার পাশাপাশি রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী নাদিয়া মুরাদ, নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং হলিউড অভিনেত্রী শ্যারন স্টোনসহ বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবশালী নারী।

সমাজে পরিবর্তনের পথিকৃৎ

রিক্তার বিদ্যালয় শুধু শিক্ষাদানেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি সমাজে প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বদলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তার এই উদ্যোগ কুড়িগ্রামের মতো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়নে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের জন্য গর্ব

রিক্তা আক্তার বানুর অর্জন বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবময় অধ্যায়। তিনি প্রমাণ করেছেন, সঠিক উদ্যোগ এবং আত্মবিশ্বাস দিয়ে সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব।

উল্লেখযোগ্য কাজ:

২০০৯ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।

প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার সুযোগ।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথ তৈরি।

উপসংহার

বিশ্বের মঞ্চে রিক্তা আক্তার বানুর এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে, মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তি কিভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তার এই অর্জন দেশের অন্য নারীদেরও অনুপ্রেরণা যোগাবে।

সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

 

ড. লামিয়া মাওলার নেতৃত্বে আবিষ্কৃত “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সি: জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের যুগান্তকারী সাফল্য

 

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. লামিয়া মাওলা এবং তার নেতৃত্বাধীন ২১ জন গবেষকের একটি দল নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) থেকে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে প্রাথমিক মহাবিশ্বের একটি নতুন গ্যালাক্সি আবিষ্কার করেছেন। গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ১১ ডিসেম্বর বিশ্বখ্যাত Nature জার্নালে প্রকাশিত হয়।

গবেষণার শিরোনাম ছিল:
“Formation of a low-mass galaxy from star clusters in a 600-million-year-old Universe”।

এই গ্যালাক্সির নাম দেওয়া হয়েছে “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল”, যা বিগ ব্যাংয়ের মাত্র ৬০০ মিলিয়ন বছর পরে গঠিত হয়েছিল। এটি মহাবিশ্বের প্রথমদিকের গ্যালাক্সিগুলোর গঠন ও বিকাশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নতুন তথ্য দিয়েছে।

“ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সির বৈশিষ্ট্য

গবেষণা অনুযায়ী, “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সিটি গঠিত ১০টি কম্প্যাক্ট স্টার ক্লাস্টার এবং দুটি ছোট গ্যালাক্সি নিয়ে। দুটি ছোট গ্যালাক্সির নাম রাখা হয়েছে:

ফায়ারফ্লাই নিউ বেস্ট ফ্রেন্ডগ্যালাক্সিটি থেকে যে আলো পৃথিবীতে পৌঁছেছে, তা এখানে আসতে সময় নিয়েছে প্রায় ১৩.২ বিলিয়ন বছর। তবে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের কারণে এটি এখন আমাদের থেকে আরও অনেক দূরে রয়েছে।

গবেষণার গুরুত্ব:
ড. লামিয়া মাওলার মতে, “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সির গঠন অনেকটাই আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির প্রথমদিককার গঠনের মতো। এটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারলে আমাদের গ্যালাক্সির জন্ম এবং বিকাশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাওয়া যাবে।

ড. লামিয়া মাওলা: বাংলাদেশের গর্ব

ড. লামিয়া মাওলা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের ওয়েলেসলি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (IUB)-এর সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি, স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (CASSA)-এর সহযোগী সদস্য।

CASSA বাংলাদেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা ও শিক্ষা প্রচারের একমাত্র প্ল্যাটফর্ম। ড. লামিয়ার এই অবদান বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও মহাকাশ গবেষণার জন্য এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।

বাংলাদেশের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস

ড. লামিয়া মাওলার নেতৃত্বে এই গবেষণা বাংলাদেশের জন্য গর্বের একটি মুহূর্ত। এটি প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক গবেষণায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:

গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে: Nature জার্নাল

গ্যালাক্সির নাম: ফায়ারফ্লাই স্পার্কল

আলো আসতে সময় নিয়েছে: ১৩.২ বিলিয়ন বছর

নেতৃত্বে: ড. লামিয়া মাওলা

আপনার মতামত:

এই আবিষ্কার সম্পর্কে আপনার কী মতামত? নিচের কমেন্ট সেকশনে জানান!

 

নারীর জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা: সুস্থ ও সুখী জীবনের চাবিকাঠি

নারীর সুস্বাস্থ্য শুধু তার ব্যক্তিগত কল্যাণের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং একটি পরিবার ও সমাজের মেরুদণ্ড শক্তিশালী রাখার জন্য অপরিহার্য। দৈনন্দিন জীবনের চাপে অনেক নারী নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিতে পারেন না। তবে, সুস্থ থাকা মানে শুধু শারীরিক সুস্থতা নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াও সমানভাবে জরুরি।

স্বাস্থ্য সচেতন নারীদের জন্য কার্যকর টিপস

১. সুষম খাদ্যাভ্যাস

সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত হলো সঠিক পুষ্টি। আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার যুক্ত করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চেষ্টা করুন বেশি করে শাক-সবজি, ফল, বাদাম এবং দুধজাত পণ্য খেতে।

২. নিয়মিত ব্যায়াম

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। হাঁটাহাঁটি অথবা সহজ কিছু ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম যেমন স্কোয়াট করতে পারেন। এটি আপনার শরীরকে ফিট রাখার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করবে।

৩. পর্যাপ্ত ঘুম

ঘুমের ঘাটতি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর জন্য প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৪. মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিন

আপনার মনের যত্ন নিন। প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন। বই পড়া, অথবা নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন। কোনো সমস্যা বা মানসিক চাপ থাকলে বন্ধু বা পরিবারের সাথে আলোচনা করুন অথবা একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

প্রতি বছর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। বিশেষত, যেসব নারীর পরিবারে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা ক্যানসারের ইতিহাস আছে, তাদের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য প্রেরণা-
সুস্থ থাকা মানে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসী থাকা। আপনি সুস্থ থাকলে আপনার পরিবার এবং কাছের মানুষগুলোর আরও ভালোভাবে যত্ন নিতে পারবেন।

নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা কেবল তার নিজের নয়, তার পরিবার ও সমাজের ভবিষ্যতের ওপরও প্রভাব ফেলে। সুতরাং, আসুন আমরা নিজেদের স্বাস্থ্যের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিই এবং একসঙ্গে একটি শক্তিশালী ও সুস্থ সমাজ গড়ে তুলি।