banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

বুকার পুরস্কার পেলেন ব্রিটিশ লেখক সামান্থা হার্ভে

 

আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে নভোচারীদের কাটানো একটি দিন নিয়ে বিস্তারিতভাবে লেখা ‘অরবিটাল’ উপন্যাসের জন্য ব্রিটিশ লেখক সামান্থা হার্ভে ‘২০২৪ সালের বুকার পুরস্কার’ পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিচারক প্যানেলের চেয়ারপারসন এডমুন্ড ডে ওয়াল ঘোষণা করেন, বিচারকদের সর্বসম্মতিক্রমে হার্ভেকে বুকার পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

মহাকাশকেন্দ্রে ছয় নভোচারীর এক দিনের কাটানো জীবন নিয়ে লেখা ‘অরবিটাল’ উপন্যাসটিতে পৃথিবী থেকে মহাকাশকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়েছে।

উপন্যাসটি’র কাহিনি অনুসারে, ছয় নভোচারীর মধ্যে দুজন পুরুষ ও চারজন নারী। তারা মহাকাশে একত্রিত হয়ে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেন। এছাড়া আবহাওয়ার পরিবর্তন, সীমানা, টাইম জোনের জটিলতা এবং মহাকাশের সৌন্দর্য পর্যবেক্ষণ করেন।

বিচারক এডমুন্ড ডে ওয়াল উপন্যাসটি সম্পর্কে বলেন, অরবিটাল উপন্যাসটি একটি ক্ষতবিক্ষত পৃথিবীর গল্প। যেখানে মহাকাশচারীরা পৃথিবীর পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়। নিজেদের পৃথিবী থেকে অনেক দূরে, তাদের অস্তিত্বকে নতুনভাবে উপলব্ধি করেন। এডমুন্ড ডে ওয়াল বলেন, উপন্যাসে প্রত্যেকেই একটি বিষয়বস্তু আবার কেউই বিষয়বস্তু নয়।

পুরস্কার ঘোষণার পর লেখক হার্ভে বলেন, তিনি এই ৫০,০০০ পাউন্ড পুরস্কারের অর্থ সেই সব মানুষদের উৎসর্গ করছেন, যারা পৃথিবীর পক্ষে কথা বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন এবং মানবতার সেবা করেন।

অরবিটাল উপন্যাসটির পৃষ্ঠার সংখ্যা ১৩৬, যা ইতিহাসে বুকার পুরস্কার পাওয়া দ্বিতীয় সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বই। এ ছাড়া এটি প্রথম কোনো মহাকাশভিত্তিক উপন্যাস, যা এই পুরস্কার অর্জন করেছে।

হার্ভে, যিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় লকডাউনের মধ্যে অরবিটাল বইটি বেশিরভাগ অংশ লিখেছেন। তিনি বলেন, লকডাউনে যখন সবাই একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। তখন মহাকাশচারীদের একে অপরের সঙ্গে থাকা এবং মহাকাশের নির্জনতায় পৃথিবীকে দেখা, তা আমার কাছে অনেক বেশি সম্পর্কযুক্ত মনে হয়েছিল।

চলতি বছর বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত শর্টলিস্টে হার্ভে ছাড়া আরও চারজন লেখক ছিলেন। তাদের মধ্যে মার্কিন লেখক র‍্যাচেল কুশনার (‘ক্রিয়েশন লেক’ বইয়ের জন্য) এবং কানাডীয় লেখক অ্যান মাইকেলস (‘হেল্ড’ বইয়ের জন্য) ছিলেন।

 

আলোচনায় ট্রাম্পের নতুন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী

 

হাওয়াইয়ের সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান এবং কট্টর ট্রাম্প সমর্থক তুলসী গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরবর্তী প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্যাবার্ড একজন ইউএস আর্মি রিজার্ভ কর্মকর্তা। তার গোয়েন্দাবিষয়ক গভীর অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও, তিনি তার মস্কোর প্রতি সহানুভূতিশীল যুদ্ধবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত। তবে ট্রাম্পের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে তুলসীকে বেছে নেওয়া অস্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে তিনি ১৮টি গুপ্তচর সংস্থার নেতৃত্ব দেবেন এবং ৭৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট তদারকি করবেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বিতর্ক প্রস্তুতিতে ট্রাম্পকে সহায়তা করা তুলসী গ্যাবার্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর একটি পুরস্কার যে পাবেন, তা আগেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের মতো পদ যে পাবেন, তা বোধহয় কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। কারণ এ বিষয়ে তার কাজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। ট্রাম্প মূলত দেশের গোয়েন্দা সেবাগুলোর সংস্কার করতে চান, কারণ সেগুলো তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। এই ক্ষেত্রে, বিদেশি নীতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা গ্যাবার্ডের নিয়োগকে ট্রাম্পের পরিবর্তনের পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গ্যাবার্ডকে নির্বাচন করার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘দুই দশকের বেশি সময় ধরে তুলসী আমাদের দেশের এবং সব আমেরিকানের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। একজন সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তিনি উভয় দলেই ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন, এখন তিনি গর্বিত রিপাবলিকান।’

কে এই তুলসী গ্যাবার্ড?: আমেরিকান সামোয়ায় জন্মগ্রহণ করা ৪৩ বছর বয়সী তুলসী গ্যাবার্ড হাওয়াইয়ের চারবারের কংগ্রেস সদস্য, ডেমোক্র্যাটদের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এবং আর্মি রিজার্ভের লেফটেন্যান্ট কর্নেল। তিনি ইরাকে সামরিক সেবা দিয়েছেন। গ্যাবার্ডের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তবে তিনি ২১ বছর বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি তখন হাওয়াই হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪২তম জেলা থেকে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সিনেমাটোগ্রাফার আব্রাহাম উইলিয়ামসকে বিয়ে করেন। তার বাবা মাইক গ্যাবার্ড হাওয়াই স্টেট সিনেটর, যিনি রিপাবলিকান থেকে ডেমোক্র্যাটে যোগদান করেন।

প্রতিনিধি পরিষদে প্রথম হিন্দু: ২০১২ সালে ১১৩ তম কংগ্রেসে তুলসী গ্যাবার্ড ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে আসন জিতেন। তিনি রিপাবলিকান কাওভিকা ক্রাউলিকে পরাজিত করেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রথম হিন্দু হিসেবে কংগ্রেসে নির্বাচিত হন এবং প্রথম আমেরিকান সামোয়ান হিসেবে কংগ্রেসের সদস্য হন। নাম শুনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মনে হলেও তুলসীর সঙ্গে ভারতের কোনো যোগসূত্র নেই। তিনি আমেরিকাতেই জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন। আসলে তার মা হাওয়াই যাওয়ার পর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর নিজের সন্তানদের সবার নামকরণ করেছিলেন হিন্দু নামেই। তার প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গ্যাবার্ড ভগবৎ গীতার ওপর শপথ নেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করার ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী।’

তুলসী গ্যাবার্ড ২০২০ সালের ১১৭ তম কংগ্রেসে পুনঃনির্বাচনের প্রার্থী হননি। তবে ২০২২ সালে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টি ত্যাগ করেন এবং অভিযোগ করেন, পার্টি ‘একটি অভিজাত যুদ্ধে আগ্রহী গোষ্ঠী’। এরপর গ্যাবার্ড ২০২২ সালে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবিরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন জানান এবং রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন।

 

এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত ও নিরাপদ: ওজিএসবি

 

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর বলে জানিয়েছে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)।

সংগঠনটি বলছে, এই টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্ব, গর্ভধারণ ক্ষমতা নষ্ট বা প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি এই টিকা নেওয়ার ফলে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন কোনো জটিলতা হয় না বরং এই টিকা ক্যানসার থেকে জরায়ুমুখ সুরক্ষিত রাখে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) ওজিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. সালমা রউফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের উদ্যোগে দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন গত ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিভাগ ছাড়া অবশিষ্ট সাতটি বিভাগে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫ লক্ষাধিক এবং ঢাকা বিভাগ বহির্ভূত অবশিষ্ট সাতটি বিভাগে প্রায় ৪২ লাখ কিশোরীকে ১ ডোজ এইচপিভি টিকা সফলভাবে দেওয়া হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭০ শতাংশ।

টিকা প্রসঙ্গে বলা হয়, এই বাইভ্যালেন্ট এইচপিভি টিকা বেলজিয়ামে তৈরি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত। এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত নিরাপদ ও কার্যকর। মনে রাখবেন এই টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্ব, গর্ভধারণ ক্ষমতা নষ্ট বা প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই, এই টিকা নেওয়ার ফলে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন কোনো জটিলতা হয় না। এই টিকা ক্যানসার থেকে জরায়ুমুখ সুরক্ষিত রাখে। সারা বিশ্বে ১৪৩টি দেশ এই টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করছে ও তার মধ্যে ১৭টি দেশই মুসলিম দেশ।

এই অবস্থায় টিকাদান কার্যক্রম সম্পর্কিত ভুল ও অপপ্রচার রোধ এবং অভিভাবক কিশোরীদের উদ্বুদ্ধ করে সার্বিক কার্যক্রমকে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধও জানায় ওজিএসবি।

আরও বলা হয়, নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যানসার। নারীরা যেসব ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার বৈশ্বিকভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশি নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার জন নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে থাকেন, যার প্রায় ৯৪ শতাংশ মৃত্যুই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে ঘটে থাকে।

দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রকোপ ভয়াবহ আকারে বাড়ছে উল্লেখ করে ওজিএসবি জানায়, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যানসার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জরায়ুমুখ ক্যানসার এইচপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে। সাধারণত এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়া থেকে জরায়ুমুখ ক্যানসার লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৫-২০ বছর সময় লাগে। এজন্য এই রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়।

আরও বলা হয়, আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই প্রায় শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হন, যখন রোগ থেকে সেরে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। একমাত্র এইচপিভি টিকা এই ক্যানসার প্রতিরোধে প্রায় শতভাগ সফল। সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় কিশোরীদের নির্দিষ্ট বয়সে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ সুপারিশ অনুযায়ী একডোজ এইচপিভি টিকা দিলে এই ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 

পারিবারিক সম্পর্কঃ ভালো সম্পর্ক গড়ার ১০টি উপায়

 

পারিবারিক সম্পর্ক  আমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরিবারে ভালো সম্পর্ক, একে অপরের প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্থন একজন ব্যক্তির মানসিক শান্তি এবং সুখী জীবনের মূল চাবিকাঠি হতে পারে। তবে, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো রাখা সবসময় সহজ নয়। একে অপরের সঙ্গে সঠিকভাবে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সমস্যার সমাধান করা অনেক সময় জটিল হতে পারে।

আসুন জেনে নেই এমন কিছু সহজ এবং কার্যকর উপায় যার মাধ্যমে আপনি আপনার পরিবারে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী এবং ভালো রাখতে পারেন। এখানে এমন ১০টি উপায় তুলে ধরা হলো যা পরিবারে ভালো সম্পর্ক গড়তে সহায়ক হতে পারে-

১. যোগাযোগ রাখুন
পরিবারের সদস্যদের সাথে মন খুলে কথা বলা, নিজেদের অনুভূতি ও ভাবনা শেয়ার করা সম্পর্কের গুণগত মান উন্নত করে। যখন আপনি অন্যদের অনুভূতিগুলি শুনবেন এবং নিজের অনুভূতিও সৎভাবে প্রকাশ করবেন, তখন তা সম্পর্ককে আরও গভীর এবং মধুর করে তোলে।

টিপ: চেষ্টা করুন দিনশেষে পরিবারের সদস্যদের সাথে সেদিনের অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি শেয়ার করতে। এটি সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাস এবং একে অপরের প্রতি সম্মান বাড়াতে সাহায্য করবে।

২. একান্ত সময় কাটান
দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ধরে রাখতে, মাঝে মাঝে একে অপরের জন্য সময় বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দাম্পত্য জীবন, মা-বাবা এবং সন্তানের সম্পর্ক বা ভাই-বোনের সম্পর্ক—সবক্ষেত্রেই একে অপরের জন্য সময় বের করা প্রয়োজন। একে অপরের সঙ্গে বিনোদনমূলক বা আগ্রহের বিষয় নিয়ে সময় কাটানোর মাধ্যমে সম্পর্ক মধুর এবং শক্তিশালী হয়।

টিপ: সপ্তাহে অন্তত একদিন পরিবারের সকল সদস্যের সঙ্গে বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন, সেক্ষেত্রে ফোন বা অন্যান্য গ্যাজেট থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন।

৩. প্রত্যেক ব্যাপারে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুন 
ভালো সম্পর্ক গড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ছোট ছোট বিষয়েও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। পরিবারের সদস্যরা মাঝে মাঝে আপনার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন, তবে তাদের প্রতি আপনার সম্মান এবং শ্রদ্ধা অবশ্যই রাখতে হবে। কিছু ছোট বাক্য যেমন “ধন্যবাদ”, “দুঃখিত”, “দয়া করে” ইত্যাদি খুব বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

টিপ: পরিবারের সদস্যদের প্রতি আপনার আচরণে মমতা এবং সম্মান প্রদর্শন করুন, এটি সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।

৪. একসাথে সমস্যা সমাধান করুন
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যে কোনো বিরোধ বা সমস্যা আসতেই পারে। তবে, একটি ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে সমস্যা গুলি একসাথে সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একে অপরের প্রতি খোলামেলা মনোভাব এবং সহানুভূতি পোষণ করলে, তা সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।

টিপ: যদি কোনো সমস্যা বা বিতর্ক তৈরি হয়, তবে তা সমাধান করার জন্য শান্ত এবং সঠিকভাবে আলোচনা করুন। আক্রমণাত্মক বা রেগে গিয়ে কথা না বলাই ভালো।

৫. একাধিক দায়িত্ব ভাগ করুন
পরিবারের মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করা সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে। যদি ঘরের কাজ, সন্তান লালন-পালন, অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো দায়িত্ব ভাগ করা যায়, তবে তা পারিবারিক বন্ধন আরও শক্তিশালী করবে। একে অপরকে সাহায্য করা এবং সহযোগিতা প্রদর্শন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায়।

টিপ: পরিবারের সকল সদস্যকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন এবং সেটা তারা যেন সঠিকভাবে পালন করে, সেজন্য একটি সিস্টেম তৈরি করুন।

৬. আশাবাদী মনোভাব রাখুন
বিপদ বা দুশ্চিন্তার মুহূর্তে আশাবাদী মনোভাব ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশাবাদী মনোভাব রাখলে, আপনি পরিবারের সদস্যদেরও উৎসাহিত করতে পারবেন। এর মাধ্যমে তারা মনে করবে যে, কোনো সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ থাকলেও একে অপরকে সমর্থন করতে হবে এবং একটি সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব।

টিপ: সংকটময় সময়ে পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের উৎসাহিত করুন এবং একে অপরকে আশাবাদী হতে সাহায্য করুন।

৭. সহানুভূতির সাথে আচরণ করুন
সহানুভূতির মাধ্যমে আপনি অন্যদের অনুভূতিতে মনোযোগ দিতে পারেন এবং তাদের মনের অবস্থা বুঝতে পারবেন। যখন পরিবারের সদস্যরা খারাপ সময়ের মধ্যে থাকে, তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহানুভূতির সাথে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

টিপ: যখন কেউ আপনার কাছে দুঃখ, কষ্ট বা হতাশা শেয়ার করবে, তখন তার অনুভূতির প্রতি সহানুভূতি দেখান এবং তাকে ভালো লাগানোর চেষ্টা করুন।

৮. ঐক্য এবং সমর্থন প্রদান করুন
একটি পরিবারে একতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারে সবাই একে অপরকে সমর্থন করবে এবং একটি দল হিসেবে কাজ করবে—এটা পরিবারের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে। একে অপরকে সমর্থন দেওয়া এবং রক্ষা করা পারিবারিক বন্ধনকে মজবুত করে।

টিপ: যদি পরিবারের কোনো সদস্য সমস্যার মধ্যে থাকে, তবে তাকে সাহস দিন এবং তাকে মনে করিয়ে দিন যে সে একা নয়, পরিবারের সবাই তার পাশে আছেন।

৯. পরস্পরকে বুঝুন
অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক সদস্যের ব্যক্তিগত জায়গাও গুরুত্বপূর্ণ। কখনো কখনো একে অপরকে কিছু সময়ের জন্য একা থাকতে দেওয়াও প্রয়োজন। এটি সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।

টিপ: পরিবারে ব্যক্তিগত সময় কাটানোর সুযোগ দিন। এটা সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী এবং সুন্দর করবে।

১০. ধৈর্য্য রাখুন
অনেক সময় সম্পর্কের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে, তবে ধৈর্য্য এবং শান্ত থাকার মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করা সম্ভব। পরিবারের সদস্যদের প্রতি ধৈর্য্য এবং মমতা প্রদর্শন করলে সম্পর্ক শক্তিশালী হয়।

টিপ: প্রয়োজনে একটু বেশি সময়ের জন্য বিরতি নিয়ে শান্ত হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন এবং তারপর আবার আলোচনা করুন।

পরিবার হলো আমাদের জীবনের ভিত্তি, এবং ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের নিজেদের মধ্যে খোলামেলা, সহানুভূতি, এবং শ্রদ্ধাশীল আচরণ বজায় রাখতে হবে। নিজেকে ভালো রাখার জন্যই পরিবারের সঙ্গে আরও মজবুত এবং আনন্দদায়ক সম্পর্ক গড়ে তুলার জন্য সচেতন থাকতে হবে।

 

উদ্যোক্তার কাতারে গারো নারীরা

 

টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলের পার্বত্য এলাকা গারো নারীদের জীবনাচরণে এক অনন্য চিত্র তুলে ধরে। পাহাড় আর বনাঞ্চলের মধ্যে গারো সমাজের বিশেষত্ব শুধু তাদের ঐতিহ্যিক চাষাবাদে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের মাতৃতান্ত্রিক পরিবারব্যবস্থা, যা সম্পত্তি এবং বংশ পঞ্জি মা-পিতার বদলে শুধুমাত্র মায়ের দিক থেকেই অর্জিত হয়, সেই বিষয়টিও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গারো সমাজে নারীরা পরিবার ও সমাজে এক বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান লাভ করে থাকে, যা তাদের স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাসকে আরো দৃঢ় করে।

গারো নারীদের জীবনাচরণ একটি উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে পুরুষরা গৃহকর্তা হিসেবে নয়, বরং শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে এবং ঘরের কাজকর্ম ও সন্তানদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে। এই পরম্পরা, যা শতাব্দীকাল ধরে চলে আসছে, গারো সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে আধুনিক প্রযুক্তি এবং সমাজে পরিবর্তনের ধারায়, গারো নারীরা শুধু কৃষি কাজেই নয়, বরং ব্যবসাবাণিজ্যে নিজেদের সাফল্যের কৃতিত্ব তুলে ধরছে।

মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের মধ্যে নারীদের আর্থিক অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি সমাজে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করছে। চাষাবাদে অভ্যস্ত গারো নারীরা এখন নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে উঠছেন, যেখানে ব্যবসা ও বাণিজ্য তাদের নতুন জীবনের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে।

এই পরিবর্তন গারো সমাজের ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এখন গারো নারীরা আধুনিক সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়িক ও পেশাগত ক্ষেত্রে নিজেদের পরিচিতি তৈরি করছে। তাদের উদ্যোক্তা সত্ত্বা শুধু পরিবারের মধ্যে নয়, বৃহত্তর সমাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

তাদের জীবনযাত্রায় আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্যোগের মিশেলে গারো নারী সমাজ আরো শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। এই পরিবর্তনের ধারায়, প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কারের সঙ্গে নতুন সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে গারো নারীরা। তাদের আত্মবিশ্বাস, সংগ্রাম এবং কঠোর পরিশ্রম তাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এবং তারা আজ শুধুমাত্র নিজেদের পরিবারের নয়, বরং সমাজেরও শক্তিশালী চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে।

গারো সমাজে নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নতুন পেশায় নিয়োজিত নারীরা নিজেদের প্রতিভা এবং দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। সরকারের সহায়তায় এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে তারা আরো অধিক সাফল্য অর্জন করছে। তবে তাদের সামাজিক অবস্থান আজও সম্মানজনক ও শক্তিশালী, এবং তারা নিজেদের উদ্যোগে সমাজে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

এমন এক সময় যখন আধুনিকতার ছোঁয়া পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে, গারো নারী সমাজ তার পুরনো ঐতিহ্য ও সংস্কার ধরে রেখে, আধুনিকতার পথে পা বাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের এই অবিচল পথচলা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং তাদের অদম্য উদ্যোগ ভবিষ্যতে নতুন এক সম্ভাবনার সূচনা করবে।

 

জরিপে এগিয়ে গেলেন কমলা, ট্রাম্পের জন্য দুঃসংবাদ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত আইওয়া অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে গেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। আইওয়ার ডেজ মইনেস রেজিস্ট্রার/মিডিয়াকম আইওয়ার পোলের প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের থেকে ৩ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন কমলা। যদিও সেপ্টেম্বরের জরিপে এই রাজ্যেই ৪ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প।

গত ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পরিচালিত এই জরিপে মোট ৮০৮ জন ভোটার অংশ নেন।

গতকাল শনিবার জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে কমলা ৪৭ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৪ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। এর পেছনে সেখানকার নারী, বিশেষ করে বয়স্ক ও রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নারী ভোটাররা ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প ২০১৬ সালে আইওয়ায় ৯ শতাংশের বেশি পয়েন্ট ব্যবধানে এবং ২০২০ সালে ৮ পয়েন্ট ব্যবধানে জিতেছিলেন।

শেষ মুহূর্তে জরিপে এগিয়ে যাওয়া কমলার জন্য সুখবর হলেও তা নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছে। তবে ১ ও ২ নভেম্বর পরিচালিত অন্য একটি জরিপে উল্টো চিত্র পাওয়া গেছে। এমারসন কলেজ পোলিং/রিয়ালক্লিয়ারডিফেন্স এই জরিপ পরিচালনা করে। এই জরিপে ট্রাম্প কমলার চেয়ে ১০ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

আইওয়ায় ২০১৬ ও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সহজ জয় পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।