banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

রাজধানীতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ৫০ শতাংশ শিশু গৃহকর্মী

 

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশকৃত অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) পরিচালিত ‘সিচুয়েশন অব চাইল্ড ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স ইন ঢাকা সিটি’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের প্রায় ৫০ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। আর ৩১ দশমিক ৪৫ শতাংশ গৃহকর্মী অত্যধিক কাজের চাপে থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২টি থানা এলাকায় এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। ৩৫২ জন গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু এই জরিপে অংশ নেয়।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন এএসডির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা। নির্যাতনের শিকার শিশুদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ শারীরিক আঘাতের শিকার। মারধরের শিকার ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, বকাঝকার শিকার ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ।

এএসডির নির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. তরিকুল আলম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ–পরিচালক ও শিশু অধিকার কমিটির সদস্য সচিব এম. রবিউল ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (স্বাস্থ্য) ডা. বিশ্বজিৎ রায়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোছা. সালমা আক্তার, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক এস এম এনামুল হক, এএসডির নির্বাহী পরিচালক এম এ করিম, স্ক্যান এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম বলেন, গৃহকর্মী শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। অনেক আগে থেকে শিশু শ্রমিক নির্যাতন চলে আসছে। তবে এটা সত্য, আগের তুলনায় শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন অনেকাংশে কমে আসছে। আমরা চাই, এটা শতভাগ বন্ধ হোক।

শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যে ৪৩টি কাজ চিহ্নিত করা আছে, তার সঙ্গে গৃহকর্মকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

মানবাধিকার কমিশনের এম. রবিউল ইসলাম বলেন, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় মানবাধিকার সব সময় সক্রিয় আছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনা বন্ধে সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চলছে। নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি আইন প্রণয়নে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আইনের খসড়া প্রণয়ন হয়েছে। দ্রুতই তা চূড়ান্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় আইন ও নীতিমালা সংশোধনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। গৃহকাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিদ্যমান নীতিমালা ও আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির করতে হবে। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার শিশুদের স্বাস্থ্য ও আইনি সেবা প্রদান কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচকেরা বলেন, বিগত সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করলেও সেই নীতিমালা গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের (গৃহকর্মী) সুরক্ষা দিতে পারছে না। তাঁরা দ্রুত গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন পাসের তাগিদ দেন। একই সঙ্গে গৃহকর্মকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

 

কোনো কাজই সময়মতো গুছিয়ে করতে না পারলে কী করবেন

প্রোক্রাস্টিনেশন বা কার্য সম্পাদনে দেরি করা আমাদের জীবনে একটি সাধারণ সমস্যা। অনেকেই লক্ষ্য করেন যে তারা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পরে রাখেন, যার ফলে চাপ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়। এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় নিচে আলোচনা করা হলো।

১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

প্রথমে আপনি যে কাজটি করতে চান, তার একটি স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। লক্ষ্য যত সুনির্দিষ্ট হবে, তত সহজে আপনি কাজটি শুরু করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, “আমি একটি রিপোর্ট লিখব” বলার পরিবর্তে “আমি আগামী বুধবারের মধ্যে রিপোর্টের প্রথম খসড়া শেষ করব” বলুন।

২. কাজগুলো ভাগ করুন

বৃহৎ কাজগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন। প্রতিটি ছোট কাজ সম্পন্ন করা অনেক সহজ হয় এবং এর ফলে আপনি কাজের প্রতি উৎসাহিত হবেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি গবেষণা প্রবন্ধ লেখার জন্য তা অধ্যায় অনুযায়ী ভাগ করুন।

৩. সময় নির্ধারণ করুন

আপনার কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন। এটি হতে পারে একটি সময়সীমা বা একটি টাইম ব্লক। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করলে আপনার মনোযোগ বাড়বে।

৪. পরিবেশ সাজান

আপনার কাজের পরিবেশটি পরিচ্ছন্ন এবং সুগঠিত রাখুন। এলোমেলো পরিবেশ আপনার মনোযোগকে বিঘ্নিত করতে পারে। একটি শান্ত ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে কাজ করলে আপনার ফোকাস বাড়বে।

৫. বিরতি নিন

কাজ করতে করতে মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার মনকে সতেজ করবে এবং নতুন উদ্যমে কাজ করার সুযোগ দেবে। ২৫-৩০ মিনিট কাজ করার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন।

৬. প্রযুক্তি ব্যবহার করুন

প্রযুক্তি আপনার প্রোক্রাস্টিনেশন কাটাতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন অ্যাপস যেমন ‘টম্যাটো টিমার’ বা ‘টাস্ক ম্যানেজার’ ব্যবহার করে আপনার কাজের তালিকা তৈরি করুন এবং সময় নির্ধারণ করুন।

৭. স্বয়ংক্রিয় প্রেরণা

নিজেকে উৎসাহিত রাখতে কিছু স্বয়ংক্রিয় প্রেরণা ব্যবহার করুন। একটি চেকলিস্ট তৈরি করুন এবং প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার পর সেটি চেক করুন। এটি আপনাকে সাফল্যের অনুভূতি দেবে।

৮. ইতিবাচক চিন্তা করুন

নিজেকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিন যে কাজটি শেষ হলে আপনার কাছে কতটা আনন্দ ও সাফল্য আসবে। ইতিবাচক চিন্তা আপনাকে কাজের প্রতি আগ্রহী করবে।

উপসংহার

প্রোক্রাস্টিনেশন কাটানো একটি অভ্যাস যা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। উপরোক্ত উপায়গুলো চেষ্টা করে দেখুন এবং ধীরে ধীরে আপনার কার্যসম্পাদনে পরিবর্তন আনুন। মনে রাখবেন, শুরু করা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সফলতা আপনার হাতের মুঠোয়!

 

কোনো উদযাপন করতে চান না সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী হান কাং

 

দক্ষিণ কোরিয়ার নোবেল বিজয়ী লেখক হান কাং জানান, তিনি তাঁর পুরস্কার উদযাপন বা সংবাদ সম্মেলন করতে আগ্রহী নন। এই সিদ্ধান্তের পেছনে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মতো দুঃখজনক বিশ্ব পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন।

কোরিয়া টাইমসে হান কাং বলেন,

“যখন বিশ্বে যুদ্ধ বাড়ছে এবং অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন নোবেল পুরস্কার উদযাপনের এটা সঠিক সময় নয়।”

৫৩ বছর বয়সী এই লেখক বৃহস্পতিবার জানতে পারেন, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম লেখক হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন, এবং তিনি তাঁর বাবা হান সিউংয়ের মাধ্যমে জানান যে, এই মুহূর্তে উদযাপনের কোনো ইচ্ছা নেই।

৮৫ বছর বয়সী হান সিউং-ওন শুক্রবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাঁর মেয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে চান না। তিনি আরও জানান, তিনি তাঁর মেয়ের জন্য একটি উদযাপনের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হান কাং সেই উদযাপন থেকেও বিরত থাকার অনুরোধ করেন।

হান কাং কোরিয়া টাইমসে বলেন,

“আমরা যখন পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া এই দুঃখজনক ঘটনাগুলো দেখছি, তখন দয়া করে কোনো উদযাপন করবেন না। সুইডিশ একাডেমি আমাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য এই পুরস্কার দেয়নি।”

তবে, তিনি জানিয়েছেন যে, পরবর্তীতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য তাঁকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে তিনি স্টকহোমে পুরস্কার গ্রহণ করতে যাবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।

হান কাং তাঁর ‘সাক্ষী-সাহিত্য’ রচনার জন্য পরিচিত, যেখানে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসের দুঃখজনক ও হিংসাত্মক ঘটনাবলী নিয়ে কাজ করেন। তাঁর বাবা কোরিয়া টাইমসে বলেন, “তাঁর মেয়ে কোরিয়ায় লেখক হিসেবে বিশ্বব্যাপী সচেতনতার দিকে ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছে।”

হান কাং জানান, তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়ে বিস্মিত ও সম্মানিত। নোবেল ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছেন, কোরিয়ার সময় সন্ধ্যায় তিনি পুরস্কারের খবর পান এবং তারপর এক কাপ চা নিয়ে তার ছেলে সাথে কিছুটা উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।