banner

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

প্রথম নারী উপাচার্য পেল ভারতের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়

ভারতের উত্তর প্রদেশে অবস্থিত প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে (এএমইউ) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক নাইমা খাতুন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে এই প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ভারতের রাষ্ট্রপতি মুর্মু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য অধ্যাপক নাইমা খাতুনকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তার আগে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাইমা খাতুনকে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নাইমা খাতুনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে। অধ্যাপক নাইমা খাতুন আগামী পাঁচ বছর এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

ভারতের ইতিহাসে অন্যতম প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নাইমা। অবশ্য তাঁর আগে ১৯২০ সালে বেগম সুলতান জাহান বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর বা আচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক নাইমা খাতুন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। এখান থেকে মনোবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে একই বিভাগেই প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬ সালে অধ্যাপক হন। পরে ২০১৪ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ওমেনস কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। মাঝে এক বছর আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১৮৭৫ সালে মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯২০ সালে সেটিকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তৎকালীন উপাচার্য ও বিজেপি সহসভাপতি তারিক মনসুরের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কোনো পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য ছিলেন না। অবশেষে নিয়োগ পেলেন নাইমা।

 

সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন যেসব নারী

১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার।  নোবেলপ্রাইজ. অর্গ এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১২০ জন লেখককে সাহিত্যে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।  এদের মধ্যে মাত্র ১৭ জন নারী লেখক মর্যাদাবান এই পুরস্কারটি পেয়েছেন।

১. অ্যানি এরনো

নিজের বইয়ে স্বাক্ষর করছেন আনি এরনো

ফরাসি কথাসাহিত্যিক অ্যানি এরনো ২০২২ সালের সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ জিতেছেন। ফ্রান্সের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী যিনি মর্যাদাবান এই পুরস্কারটি পেলেন। ৮৩ বছর বয়সী এই লেখক ৫ দশকের বেশি সময় ধরে লেখালেখি করে ২০টির বেশি বই প্রকাশ করেছেন। এই বইগুলোতে তিনি নির্ভীকভাবে যৌনমিলন, অসুস্থতা, বার্ধক্য এবং মৃত্যুর মত জীবনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মুহুর্তগুলো গভীরভাবে অনুসন্ধান করেছেন।

 

২. লুইস গ্লিক 

২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান মার্কিন কবি এবং প্রাবন্ধিক লুইস গ্লিক। তিনি পুলিৎজার, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য বই হলো, দ্য ওয়াইল্ড আইরিশ, ভিটা নোভা, অ্যাভের্নো।

 

৩. ওলগা তোকারচুক

নোবেল জয়ী ওলগা তোকারচুক ...

পোল্যান্ডের লেখক, সমাজকর্মী, নারীবাদী এবং বুদ্ধিজীবী ওলগা তোকারচুক ২০১৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ৬২ বছর বয়সী এই লেখক ২০১৮ সালে তার ফ্লাইট উপন্যাসের জন্য ইন্টারন্যাশনাল বুকার প্রাইজ পান। দ্য বুকস অব জ্যাকব উপন্যাসকে তোকারচুকের শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে অভিহিত করা হয়। নোবেল কমিটি এটিকে তার ম্যাগনাম ওপাস বা মহৎ কর্ম বলে উল্লেখ করেছে। তার উল্লেখযোগ্য বই হলো, দ্য বুকস অব জ্যাকব, ড্রাইভ ইয়োর প্লো ওভার দ্য বোনস অব দ্য ডেড, দ্য লস্ট সোল।

৪. সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ

বেলারুশের অনুসন্ধানী সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ ২০১৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তার লেখাকে দুর্ভোগের স্মারক এবং সময়ের সাহসী লেখনী বলে উল্লেখ করেছে নোবেল কমিটি। তিনিই বেলারুশের প্রথম লেখক যিনি সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন। ভয়েস ফ্রম চেরনোবিল তার সাড়া জাগানো একটি বই। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া কয়েকশ নারীর সাক্ষাতকারের উপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন, ‘দ্য আনউইমেনলি ফেস অব ওয়ার: অ্যান ওরাল হিস্ট্রি অব উইমেন ইন ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু’।

 

৫. অ্যালিস মুনরো

On “Dear Life”: An Interview with Alice Munro | The New Yorker

২০১৩ সালে কানাডিয়ান অ্যালিস মুনরো সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। মূলত ছোটগল্প লেখেন মুনরো। নোবেল কমিটি তাঁর কাজকে বলেছে, ‘সমসাময়িক ছোটগল্পের গুরু।’ কিশোর বয়স থেকেই লেখালেখি শুরু করেন মুনরো। তাঁর প্রথম ছোটগল্পের সংকলন ‘দ্য ডাইমেনশন্স অব শ্যাডো’ প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালে। সে সময়ে ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওতে ইংরেজি ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আরেকটি ছোটগল্প সংকলন ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’।

৬. হার্টা মুলার

Herta Müller wird 70: Ein kalter, klarer Blick auf die Welt২০০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পান জার্মান-রোমানিয়ান লেখিকা হার্টা মুলার। ভাষার কাব্যিকতার জন্য তাঁর লেখনী বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছে। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় মুলারের প্রথম ছোটগল্পের বই ‘নিয়েদেরুনজেন’ (নাদিরস)। এ গল্পগ্রন্থকে অনেকটাই মুলারের রোমানিয়ান জীবনের আত্মকথা বলে মনে করা হয়। মুলারের বিখ্যাত কাজের মধ্যে রয়েছে ২০০৯ সালে প্রকাশিত ‘দ্য হাঙ্গার অ্যাঞ্জেল’ উপন্যাসটি।

৭. ডরিস লেসিং

Doris Lessing obituary | Doris Lessing | The Guardian

২০০৭ সালে সাহিত্যে নোবেল পান ডরিস। সাহিত্যে নোবেলজয়ীদের মধ্যেই তিনি সবচেয়ে বয়স্ক। রাজনৈতিক এবং নারীবাদ তাঁর লেখনীর মূল শক্তি। ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য গ্রাস ইজ সিংগিং’। জিম্বাবুয়ের মানুষের মধ্যে জাতি ও বর্ণবাদের যে বিরোধ, তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে উপন্যাসটিতে। এ ছাড়া ব্রিটিশ এই লেখিকার বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ১৯৬২ সালে প্রকাশিত ‘দ্য গোল্ডেন নোটবুক’।

৮. এলফ্রিদে জেলিনেক

2004 সালে জেলেনেক

২০০৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পান তিনি। অস্ট্রিয়ান এই ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার প্রথম জীবনে ছিলেন একজন মিউজিশিয়ান। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘লিসা’স শ্যাডো’। নারীর যৌন স্বাধীনতা তাঁর লেখার মূল উপজীব্য। তাঁর বিভিন্ন বক্তব্য অনেক সময় বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘দ্য পিয়ানো টিচার’ তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস।

৯. ভিসলাভা সিমবরস্কা

Preminula Vislava Šimborska | SEEcult.org

১৯৯৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পান উইসলাওয়া। পুরস্কৃত করার সময় নোবেল কমিটি তাঁকে ‘কবিতার মোজার্ট’ বলে সম্বোধন করে। যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদ উইসলাওয়ার লেখার মূল বিষয়। ১৯৪৫ সালে এই পোলিশ কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আই অ্যাম লুকিং ফর এ ওয়ার্ড’ প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ ‘ডুয়েকরোপেক’।

১০. টনি মরিসন

টনি মরিসন

১৯৯৩ সালে সাহিত্যে পুরস্কার পান মার্কিন লেখিকা টনি মরিসন। আফ্রিকান-আমেরিকান চরিত্রগুলো তাঁর লেখায় মুখ্য হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’। এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণীর কাহিনী এই উপন্যাসে বর্ণনা করা হয়েছে, যে কি না খুব করে চায় তার চোখটা যেন নীল হয়ে যায়। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয় টনির আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘বিলাভেড’। এ উপন্যাসের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পান তিনি। উপন্যাস অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, যাতে অভিনয় করে অপেরাহ উইনফ্রে।

 

১১. নাদিন গর্ডামার

https://www.nobelprize.org/images/gordimer-13432-portrait-medium.jpg

১৯৯১ সালে সাহিত্যে নোবেল পান দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এই লেখিকা। নোবেল কমিটি তাঁর কাজের বর্ণনায় বলে, ‘মানবতার জন্য অত্যন্ত সুখকর।’ বর্ণবাদ নিয়ে বেশি লেখালেখি করেছেন নাদিন। বিশেষ করে জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদের ভয়াবহ চিত্র তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে। ১৯৫১ সালে দ্য নিউইয়র্কার পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গল্প ‘দ্য ওয়াচার অব দ্য ডেড’। এই লেখার মাধ্যমে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য কনজারভেশনিস্ট’। এই উপন্যাসের জন্য ফিকশন ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে ম্যান বুকার পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি।

 

১২. নেলি স্যাচস

Central Press/Getty Images

১৯৬৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান নেলি। জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি বেড়ে ওঠেন সুইডেনে। কবি ও নাট্যকার নেলির লেখার মূল উপজীব্য বিষয় নাৎসি বাহিনীর ক্ষমতায় আরোহণের পর ইহুদিদের বিষাদময় জীবনের কথা। গীতিকাব্যধর্মী ধরনের লেখা তাঁর মূল শক্তি। ১৯৪৩ সালে তিনি লেখেন তাঁর নাটক ‘এলি : আ মিস্ট্রি প্লে অব দ্য সাফারিংস অব ইসরায়েল’। গণহত্যা নিয়ে লেখা এটাই পৃথিবীর প্রথম নাটক।

 

১৩. গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল

Gabriela Mistral: First Latina to Win the Nobel Prize in ...

১৯৪৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পান গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল। চিলির এই কবি হচ্ছেন লাতিন আমেরিকান অঞ্চলের একমাত্র নারী, যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। গ্যাব্রিয়েলার কবিতায় মূলত লাতিন আমেরিকার আলাদা সত্তার পরিচয় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে। ১৯২২ সালে প্রকাশিত তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘ডিসপেয়ার’ সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল।

 

১৪. পার্ল বাক

পার্ল এস. বাক - উইকিপিডিয়া

১৯৩৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন পার্ল বাক। আমেরিকায় জন্ম নিলেও চীনে বড় হন এই লেখিকা। ৩০টির বেশি উপন্যাস লিখেছেন পার্ল বাক। এর বাইরেও রয়েছে তাঁর আত্মজীবনী, নন-ফিকশন ও ছোটগল্প। ১৯৩১ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘দ্য গুড আর্থ’ উপন্যাসটি রচিত হয়েছিল চীনের গ্রামীণ জীবন নিয়ে। এ উপন্যাসের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

 

১৫. সিগরিড আন্ডসেট

Sigrid Undset - Wikipedia

১৯২৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পান সিগরিড আন্ডসেট। নরওয়ের এই লেখিকা তাঁর কাজ নিয়ে নানা রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ইতিহাসভিত্তিক বেশ কিছু উপন্যাস লিখেছেন তিনি। ‘ক্রিস্টিন ল্যাভর‍্যান্সডেটার’ তাঁর বিখ্যাত ট্রিলজি, যা ১৯২০ সাল থেকে প্রকাশিত হয়। ১৫০০ শতকের এক নারীর জীবনী নিয়ে সিগরিড দীর্ঘ এই উপন্যাস লিখেছিলেন।

 

১৬. গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা

Grazia Deledda - Wikipedia

১৯২৬ সালে নোবেল পান গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা। সার্দিনিয়ায় জন্মগ্রহণ করা এই ইতালিয়ান লেখিকার লেখায় ঘুরেফিরে এসেছে তাঁর জন্মস্থানের মানুষের ভালোবাসা ও পাপের গল্প। এসেছে তাঁর নিজের পরিবারের গল্প। প্রথম ইতালিয়ান নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন গ্রাজিয়া। ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর উপন্যাস ‘লা মাদরে’। যেখানে এক সার্দিনিয়ান মায়ের গল্প বলা হয়েছে, যার একমাত্র ছেলে প্রেমে পড়ে এক বিধবার।

 

১৭. সেলমা লাগেরলফ

সেলমা লাগেরলফ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার

১৯০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পান সেলমা। সুইডেনে জন্ম নেওয়া সেলমা হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম নারী, যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। শিশুসাহিত্যিক হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন। ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বই ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল অ্যাডভেঞ্চার্স অব নিলস’।

 

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজ করতে হবে: স্পিকার

 

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ, আর্থিক সহায়তা ও প্রণোদনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, `আমাদের দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীরা একটি বড় অংশ। তাদের সহজ ঋণপ্রাপ্তি, আর্থিক সহায়তা এবং প্রণোদনা দিয়ে এগিয়ে নেওয়া হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের মতো এগিয়ে যাবে।’

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খান ফাউন্ডেশন, ডেমোক্রেসিওয়াচ, প্রিপ ট্রাস্ট ও রূপান্তর যৌথভাবে এর এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, নারীরা তাদের সংগ্রাম ও যোগ্যতার জন্য বিভিন্ন স্তরে অবস্থান করলেও এখনো নারীরা কিছু ক্ষেত্রে অবহেলিত।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, এমপি অ্যারোমা দত্ত, এমপি নাসিমা জামান ববি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি।

সম্মেলনে দেশের ছয় বিভাগ থেকে আসা ৩০০ ‘অপরাজিতা’ নারী নেত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং প্রকল্পের দাতা সংস্থা ও বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

গরমে খাবারের তালিকায় রাখুন প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার

 

 

প্রোবায়োটিক হলো কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করে আমাদের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে ।  গরমে প্রোবায়োটিক রয়েছে এমন খাবার খাওয়া ভালো। এগুলি খেলে মনও ভালো হয়, কারণ এ খাবারগুলোর মাধ্যমে শরীরে কিছু হরমোন নিঃসৃত হয় যা আপনাকে ভালো বা খুশি বোধ করতে সাহায্য করে।

চলুন জেনে নেই কোন খাবারগুলোতে প্রোবায়োটিক রয়েছে:

 

দই

Got Leftover Dahi? Here Are 3 Ways You Can Use It | HerZindagi

প্রোবায়োটিকের উন্নত উৎস টকদই। এটি অন্ত্রের ও হাড়ের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে।
দইয়ে প্রচুর একটিভ ব্যাকটেরিয়া থাকে যেগুলো আমাদের অন্ত্রের জন্য উপকারী। শরীরে দরকারি ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে পাচক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। দই দুধ থেকে তৈরি হলেও এতে দুধের চেয়ে বেশী প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম এবং প্রোবায়োটিক থাকে। বেশি উপকারিতা পেতে আপনি ঘরেই দই বানিয়ে খেতে পারেন।

পনির

Probiotic Foods — 30 Foods for Gut Health

দেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের পনির পাওয়া যায়। কটেজ চিজ বা পনিরে প্রোবায়োটিক সবচেয়ে বেশী থাকে। এই পনির সাধারণত নানারকম রান্নায় ব্যবহৃত হয় এবং এতে প্রোটিনও অনেক বেশী মাত্রায় থাকে। এতে অ্যাসিডের পরিমাণ কম থাকায় ভালো ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে সাহায্য করে। ফার্মেন্টেশনের পরেও পনিরে আসল দুধের প্রায় ৯০% ফ্যাট এবং প্রোটিন, ৫০% মিনারেল, এবং ১০% ল্যাক্টোজ বর্তমান থাকে।

 

বাটার মিল্ক

Health Benefits Of Buttermilk

মাঠা, বাটার মিল্ক অনেক জনপ্রিয় ও সুপরিচিত পানীয়। অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের মতো, এতেও প্রচুর পরিমানে প্রোবায়োটিক রয়েছে। দই এর মতই এর স্বাদও কিছুটা টক। খাবারের পরে এক গ্লাস বাটার মিল্ক পান করলে আপনার হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। শুধু তাই নয়, এটি আপনার অভ্যন্তরীণ সিস্টেম যে ভালো অবস্থায় আছে তা নিশ্চিত করে। বাটার মিল্ক বা ঘোল বয়স্ক লোকদের জন্য বেশ উপকারী পানীয়।

 

উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. ইয়াসমীন আরা লেখার ডি-লিট ডিগ্রি অর্জন

ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি অর্জন করেছেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখা।

৪ এপ্রিল অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখাকে এই ডিগ্রি প্রদান করে রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখার থিসিসের টপিক ছিল ‘বাংলাদেশের প্রবাদ প্রবচন: ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ’। তার থিসিসের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. এসকে পাল।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে উত্তরা ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন এই শিক্ষাবিদ। ড. লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে ১৯৯২ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। গবেষক হিসেবে অর্জনের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

 

 ১৭৩ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করলেন বাংলাদেশি পরিব্রাজক 

বাংলাদেশি বিশ্ব পরিব্রাজক নাজমুন নাহার ১৭৩ দেশ ভ্রমণের ব্যক্তিগত মাইলফলকটি স্পর্শ করেছেন। আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কার ভ্রমণের মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই অনন্য রেকর্ডটি গড়েছেন তিনি।
রোববার মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভো ছাড়া আগে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাজমুন নাহার নিজেই। তিনি জানান, ‘এবারের ভ্রমণটি ছিল বেশ দুর্ধর্ষ ও কষ্টসাধ্য অভিজ্ঞতার। মঙ্গোলিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সী শেল ও মাদাগাস্কার—প্রতিটি দেশের অভিজ্ঞতাই ছিল একেকটার চেয়ে ভিন্ন।’
নাজমুন এ বছরের শুরুতেই এবারের অভিযাত্রা শুরু করেন মঙ্গোলিয়া থেকে। ১৬৮ তম দেশ হিসাবে মঙ্গোলিয়া ও দুর্গম সাইবেরিয়া অঞ্চল অভিযাত্রা করেন ডব্লিউপিসি- ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউডের পৃষ্ঠপোষকতায়। মঙ্গোলিয়ার জনপ্রিয় পত্রিকা ‘জুনিমেডে (সেঞ্চুরি)’ এবং গো পো গণমাধ্যম নাজমুনকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
রমজানের প্রথমেই নাজমুন অভিযাত্রা শুরু করেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং দেশগুলো ভ্রমণের মাধ্যমে। এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল মানব কল্যাণে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা। তাই আরএফসি- রামাদান ফ্যামিলি কমিটমেন্টের অ্যাম্বাসেডর হয়ে ‘সাফার ফর পিস’-এর এই অভিযাত্রায় শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে নাজমুন যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, আফ্রিকান কন্টিনেন্টের দেশ সী শেল এবং পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ মাদাগাস্কার ভ্রমণ করেন।
এই ৫টি দেশে নাজমুন ভ্রমণ করেন ৫৬ হাজার ৭৭ কিলোমিটার পথ। যা ছিল অত্যন্ত দুর্গম এবং কঠিনতম দেশ ভ্রমণের অংশ। এই সফরে বাংলাদেশের পতাকা বাহনের পাশাপাশি ইউকে বেসড টিভি চ্যানেল, চ্যানেলে এস এর  উদ্যোগে ২৬টি চ্যারিটিকে সহযোগিতার জন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করেছেন নাজমুন।
বাংলাদেশি এই পরিব্রাজক জিম্বাবুয়ে ভ্রমণের মাধ্যমে শততম দেশ পূর্ণ করেছিলেন ২০১৮ সালের ১ জুন। এরপর ২০২১ সালের অক্টোবরে তিনি ১৫০টি দেশ ভ্রমণ সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি থেকে নেই। লাল-সবুজের পতাকা হাতে তার জয়যাত্রা চলছেই।

 

প্রথম পেশাদার নারী সাহিত্যিক আফরা বেন

 

বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম পেশাদার নারী সাহিত্যিক আফরা বেন (Aphra Behn) বিখ্যাত হয়েছিলেন তাঁর রচিত নাটক, গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও অনুবাদ সাহিত্যের কারণে। ইংল্যান্ডের ক্যান্টাবেরির কাছে ১৬৪০ সালের ১৪ ডিসেম্বরে জন্মেছিলেন তিনি। এখনকার সময়ের চেয়েও পিছিয়ে থাকা সময়ে নারী হয়ে তিনি লিখেছিলেন তৎকালীন সমাজের রূঢ় বাস্তবতাগুলো নিয়ে। জীবিত অবস্থায় তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। তাঁর লেখায় সমাজ সচেতনতা, লিঙ্গসমতা ও বর্ণবাদ বিরোধিতা তাঁকে সাহিত্যজগতে করে তুলেছে অনন্য। নিজেকে একজন পেশাদার লেখক হিসেবে তিনি দাবি করতেন। শুধু লেখালেখি করেই তিনি স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন ওই সময়ে। সে হিসেবে পৃথিবীর প্রথম পেশাদার নারী লেখক হিসেবে তাঁকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

আফরা বেনের জনপ্রিয় একটি উপন্যাস ‘অরুনোকো’ (Oroonoko), যেটিকে আজও ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়। তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে ১৬৮৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল উপন্যাসটি।
আফ্রিকার সুরিনাম দেশের রাজপুত্র অরুনোকোর দাস মালিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কাহিনী নিয়েই এই উপন্যাস। অরুনোকোর কাহিনী ছিল অনেকটা এমন :
অরুনোকোর পিতামহ (দাদা) ছিল আফ্রিকার একটি সম্প্রদায়ের রাজা। প্রচণ্ড লোভী ও বর্বর এই রাজার ছিল অনেক পত্নী-উপপত্নী ও সেবা দাসী। অরুনোকো ভালোবেসেছিল ইমোইন্ডাকে, গোপনে বিয়েও করেছিল তারা। কিন্তু অরুনোকোর দুশ্চরিত্র দাদা ইমোইন্ডাকে বিয়ে করতে চায়। তাতে রাজি না হওয়ায় জোর করে ইমোইন্ডাকে বানায় তার সেবাদাসী।
তবুও অরুনোকো আর ইমোইন্ডার প্রেম বাধা মানে না। একদিন ধরা পড়ে যায় ওরা। রাজা ইমোইন্ডাকে ক্রীতদাসী হিসেবে বেঁচে দেয় জঙ্গলে আর অরুনোকোকেও ক্রীতদাস বানিয়ে বিক্রি করে দেয়। অনেক জায়গায় হাতবদল হয়ে অরুনোকো একদিন সেই জঙ্গলেই নির্বাসিত হয়ে ফিরে আসে, যেখানে তার প্রেমিকা ইমোইন্ডা আছে।

আবার মিলন ঘটে অরুনোকো আর ইমোইন্ডার। সেখানে তারা নিয়মিত মিলিত হতে থাকে। ফলে ইমোইন্ডা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। নিরাপদ প্রসবের জন্য অরুনোকো ইমোইন্ডাকে দেশে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু এই আবেদন নাকচ করে দেয় ব্রিটিশ দাস মালিক ট্রেফরি ও ডেপুটি গভর্নর বিয়াম। প্রতিবাদী হয়ে ওঠে অরুনোকো। অন্যান্য ক্রীতদাসকে সঙ্গে নিয়ে মালিকের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করে। সেই যুদ্ধে ক্রীতদাসরা পরাস্ত হয়। ইংরেজ ডেপুটি গভর্নর বিয়াম অরুনোকোর ওপর বর্বরতম নির্যাতন চালায়। তারপর শর্ত চাপিয়ে তাকে মুক্তি দেয়।

মুক্তি পেয়ে বিদ্রোহী অরুনোকো বিয়ামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নেয়। সেই যুদ্ধে তার মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তার মৃত্যুতে স্ত্রী ইমোইন্ডার জীবনে যে অপমান নেমে আসবে, তা থেকে মুক্তি দিতে স্ত্রীর সম্মতিতে যুদ্ধের আগেই অরুনোকো ইমোইন্ডাকে হত্যা করে। কিন্তু বিয়ামকে মারতে পারে না অরুনোকো। বন্দি অরুনোকোকে মেরে রক্তাক্ত করে তার সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে সর্দারদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়।

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে যোদ্ধা অরুনোকো যেন রোমের দাস বিদ্রোহের কিংবদন্তি নেতা স্পার্টাকাসেরই উত্তরসূরি। একই সঙ্গে অরুনোকো আমাদের সামনে একজন প্রেমিক ও স্বামীর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে, যে তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষার জন্য যুদ্ধ করে।

আফরা বেনের জীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। তথ্য খুবই কম, নির্ভরযোগ্য তথ্য আরো কম। পৈতৃক নাম আফরা জনসন। তাঁর শৈশব-কৈশোরের সময়টা ছিল ইংল্যান্ডের রাজতন্ত্রের সংকটকাল, যাকে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের কাল হিসেবে ধরা হয়।

ধারণা করা হয়, তিনি ১৬৬৩-৬৪ সালের দিকে আফ্রিকার সুরিনামে ছিলেন। আর সেখানেই তিনি অরুনোকোর কাহিনী বর্ণনাকারীর দেখা পান। ১৬৬৪ সালে লন্ডনে ফিরে তিনি মিস্টার বেন নামের এক বণিককে বিয়ে করেন। মিস্টার বেন ১৬৬৫ সালে মারা যান। তবে অনেকে মনে করেন, লেখিকা আত্মরক্ষার স্বার্থে নিজেকে বিবাহিত বলে দাবি করতেন, বাস্তবে তিনি বিয়েই করেননি।

ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের সুনজরে থাকায় কিছুদিন তিনি ব্রিটিশ সরকারের গুপ্তচর হিসেবেও কাজ করেছেন। বিনা বেতনের চর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে অনেক দেনা করে ফেলেন লেখিকা, ফলে ঋণের দায়ে তাকে জেলখানায় কাজ করতে হয়েছিল। এর পর তিনি গুপ্তচরবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে নাটকে মনোনিবেশ করেন।

তাঁর প্রথম নাটক ছিল ‘দ্য ফোর্সড ম্যারেজ’ (১৬৭০), যা তাঁকে খ্যাতি ও অর্থ, দুই-ই এনে দেয়। ১৬৭১ সালে করেন ‘দি আমোরাস প্রিন্স’। এরপর একে একে ‘দ্য ডাচ লাভার’ (১৬৭৩), ‘আবদেলাজার’ (১৬৭৬), ‘দ্য টাউন ফপ’ (১৬৭৬), ‘দ্য ডেবাউচে’ (১৬৭৭), ‘দ্য কাউন্টার ফিট ব্রাইডগ্রুম’সহ (১৬৭৭) বেশ কয়েকটি সফল নাটক রচনা করেন।

ইংল্যান্ডের সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে (১৬৭৯-৮১) সেই সংকট নিয়ে মন্তব্য করার কারণে আফরা বেনকে আইনি হাঙ্গামা পোহাতে হয়।

আফরা বেনের সবচেয়ে সফল নাটক ছিল ১৬৭৭ সালে মঞ্চস্থ করা ‘দ্য রোভার’। ‘দ্য রোভার’-এর দ্বিতীয় অংশ মঞ্চস্থ করা হয় ১৬৮১ সালে। তাঁর অনেক নাটকেই যৌন বিষয় উপস্থাপনের কারণে সমসাময়িক সময়ে তিনি প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

তাঁর কবিতার বইয়ের মধ্যে ‘পোয়েমস আপন সেভারেল অকেশনস’ (১৬৮৪), ‘লাভ লেটারস বিটউইন এ নোবেল ম্যান অ্যান্ড হিজ সিস্টার’, ‘দি আমোরস অব ফিল্যান্ডার অ্যান্ড সিলভিয়া’ (১৬৮৭) উল্লেখযোগ্য।

মৃত্যুর আগে তিনি রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগেছিলেন। ১৬৮৯ সালের ১৬ এপ্রিলে লেখিকা মারা যান। তাঁকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে সমাহিত করা হয়।

 

কঙ্গোর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী জুডিথ সুমিনওয়া

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেডি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দিয়েছেন।পরিকল্পনামন্ত্রী জুডিথ সুমিনওয়াকে কঙ্গোর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জিন-মিশেল সামা লুকোন্ডের কাছ থেকে অর্থনীতিবিদ জুডিথ সুমিনওয়া প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত জানুয়ারিতে শিসেকেদির দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী এবং সরকার গঠন নিয়ে কয়েক সপ্তাহের অনিশ্চয়তার অবসান ঘটল।জাতীয় টেলিভিশনে নতুন প্রধানমন্ত্রী সুমিনওয়া বলেন, ‘আমি মহান দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন… আমরা শান্তি ও দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করব।’ কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট সিসেকেডি আনুষ্ঠানিকভাবে ডিসেম্বরে ৭৩.৪৭ শতাংশ ভোট নিয়ে বিজয়ী হন। দীর্ঘ সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতায় বিধ্বস্ত দেশটিতে নির্বাচন অনেকটা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

সোনা এবং মূলবান খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ কঙ্গো।

গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে শতাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করে আসছে দেশটির সরকার। এই সংঘাতে গত এক দশকে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ফলে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।
সূত্র : রয়টার্স

 

যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে যে নারীর উদ্ভাবন

বিভিন্ন প্রয়োজনে এবং প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ইন্টারনেটে অডিও এবং ভিডিও কলের প্রযুক্তি উদ্ভাবন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দিয়েছে। এক্ষেত্রে এককভাবে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি তাঁর নাম মারিয়ান রজার্স ক্রোক। তিনি বেলের হিউম্যান ফ্যাক্টরস বিভাগে শুরু করেছিলেন, মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে তা অধ্যয়নের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে।

১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিকে দুই হাজারের বেশি প্রকৌশলীর একটি দল নিয়ে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেন ক্রোক। ভিওআইপি পরবর্তীতে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগের দুয়ার খুলে দিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভিওআইপির হাত ধরে পরবর্তীতে জুম, ফেসটাইম, স্কাইপির মতো অ্যাপ্লিকেশন বিকাশ লাভ করে।

মার্কিন টেলিযোগাযোগ কোম্পানি এটিঅ্যান্ডটিতে ক্রোকের নেতৃত্বে ১৯৯৫ সালে ভিওআইপির কাজ শেষ হয়। ভয়েসের ডেটা ডিজিটালাইজ করে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রান্সমিট করার মধ্য দিয়ে কাজ করে ভিওআইপি। এই প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগ বিকাশ লাভ করার পর প্রচলিত টেলিফোন ব্যবস্থা বলতে গেলে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

করোনা মহামারির সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসে জুম বা অন্য মাধ্যমে ভিডিও কল ক্রোকের উদ্ভাবনের প্রভাবের কথা সবাইকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়। ভিওআইপিকে ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য বলে ধরা হয়।

ক্রোকের নামে প্যাটেন্ট করা উদ্ভাবনের সংখ্যা ২০০ এর বেশি। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ‘টেক্সট ডোনেশন’ প্রযুক্তি। মোবাইল ব্যবহারকারীরা টেক্সট ডোনেশন অ্যাপ ব্যবহার করে দুর্যোগকবলিত অঞ্চলের সার্বিক তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। রিয়েল-টাইমে এটি করা যায়। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে এই প্রযুক্তি।

ক্রোক ২০১৪ সালে গুগলে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে নানা উদ্ভাবন চালিয়ে যাচ্ছেন। গুগলের প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে ডিজিটাল ব্যবধান কমিয়ে আনতে, প্রযুক্তি খাতে বর্ণ ও লিঙ্গ সমতা তৈরি করতে কাজ করছেন ৬৯ বয়সী ক্রোক।

প্রসঙ্গত, যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবদানের স্বীকৃতি হসেবে ২০২২ সালে ক্রোককের নাম আমেরিকার ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেমে স্থান করে নেয়। এর আগে প্যাট্রিসিয়া বাথ নামে আরেকজন কৃঞ্চাঙ্গ নারী এ বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।

 

তিন মাসে ধর্ষণের শিকার ১১৪ নারী: আসক

 

চলতি বছর প্রথম তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৪ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তিন জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন একজন নারী। ৩১ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৩৭ জন নারী। এর মধ্যে ৬৫ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৪৯ জন নারী। এছাড়া শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৩ জন।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৬ জন। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন দুই জন নারী। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আট জন। সাত জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা, চলতি বছর প্রথম তিন মাসে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৭৯ জন নারী-পুরুষ। তাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৫৫ জন নারী ও ২৪ জন পুরুষ। বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন ৪৫ জন। বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ২৬ জন।

এতে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে গত তিন মাসে ৩২৫ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ১৩৯ শিশু এবং একজন ছেলে শিশুকে বলাৎকারের পর হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ২৭ শিশু। বিভিন্ন সময়ে ৩২ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বলাৎকারের শিকার হয়েছে ১৪ ছেলে শিশু এবং বলাৎকারের চেষ্টা করা হয়েছে একজন শিশুকে।

আসক বলছে, হেফাজতে মৃত্যু, সীমান্তে হত্যা, সাংবাদিক নিপীড়নসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা জরুরি। অন্যথায়, বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়তে থাকে। রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সঙ্গে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাসহ বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২৬৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৩৬৮ জন।

দেশের গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক ও নির্যাতন করে কারাগারে পাঠানোর পর ঢাকা ও চট্টগ্রামে ২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিগত তিন মাসে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৩৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ১৪ জন এবং হাজতি ২১ জন। গত তিন মাসে ২০টি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৩টি বাড়িসহ ২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

গত তিন মাসে ৮১ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ এর গুলি ও নির্যাতনে নিহত হয়েছেন ছয় বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও চার জন। অপর দিকে মিয়ানমার সীমান্তে মর্টার শেলের আঘাতে একজন বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন নিহত হয়েছেন।

তিন মাসে গণপিটুনীর ঘটনায় নিহত হন ১৭ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে একজন, খুলনা বিভাগে একজন এবং সিলেট বিভাগে একজন নিহত হয়েছেন।

সূত্রঃ আজকের পত্রিকaা