banner

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

নারী ও পুরুষ হোক পরস্পরের সহযোগী

সাজেদা হোমায়রা

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার হয়ে খুব দ্রুত ডিভোর্স দিয়ে অথবা শারীরিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করে সাহসী হয়ে যেতে পারে কয়টা মেয়ে?

কিংবা অনেক আয় করে আত্নবিশ্বাসী হতে পারে কয়টা মেয়ে?

তাহলে যে মেয়েটা পারেনি, সে কী তার এই অসহায় জীবন ডিজার্ভ করে…?

জীবন ধারণের ন্যুনতম সুযোগটা পেতে অথবা হকের প্রয়োজনটা নিতে একজন নারীকে কেন প্রতিবাদী নারী হতে হবে?

বেশিরভাগ মেয়েরাই তো গতানুগতিক ও সাধারণ মানসিকতার পরিবারে জন্ম নেন। বেড়েও ওঠেন খুব সাধারণ চিন্তার মানুষ হিসেবেই। পড়াশোনাও অনেকের কম।

বিয়ের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির মানুষের অমানবিক কথা শোনা! খুব কষ্ট পেলেও তার কিছুই করার থাকে না। তাকে সয়ে যেতে হয় অথবা মনে করে নিতে হয় এটাই তার ভাগ্য!

একটা সাবান, একটা শ্যাম্পু কিংবা দুইটা জামার জন্য তাকে চেয়ে থাকতে হয় বাবার বাড়ির দিকে….

অনেক মেয়েই আছে, যারা সারাদিন নিরবিচ্ছিন্ন কাজের পর তাদের অল্প কিছু খাবার জোটে। অথচ আর্থিক দাঁড়িপাল্লায় তার কাজকে মাপা হলে তার মাসে অন্তত ১৫/২০ হাজার টাকা পাওয়া উচিত বা আরো বেশি। অথচ তাকে জরুরি চিকিৎসার খরচ পেতেও হিমশিম খেতে হয়!

একটু ব্যতিক্রম হলেই শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া, না খাইয়ে রাখা, দীর্ঘদিন বাবার বাড়িতে না যেতে দেয়া, মারধর করা… এগুলো অহরহ ঘটছেই!
নির্যাতনের মাত্রা সহ্য করতে না পেরে অনেক নারীই বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ!

এমনভাবে জীবন কাটাতে কাটাতে একদিন মেয়েটা হাসতে ভুলে যায়। দিনের পর দিন অপমান সইতে সইতে সে ভুলে যায় ‘হিউম্যান ডিগনিটি কি?’

আবার যে মেয়েটাকে আয় করে নিজের খরচ চালাতে হয়, সে মেয়েটারই বা কী অবস্থা! তার যে কোনো প্রয়োজনে বা আর্থিক নিরাপত্তার দায়িত্বটা কি তার পার্টনারের উপর বর্তায় না? কেন মেয়েটাকে এতোটা চ্যালেঞ্জ নিতে হবে?

সব মেয়েই সাহসী হবে বা প্রতিবাদী হবে এটা তো কখনোই সম্ভব না!

আমাদের চারপাশে বিশাল সংখ্যক নারী ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার।
নারীর প্রতি অবিচার, মারপিট, মানসিক টর্চার, প্রতিটি কাজে দোষ ধরা ইত্যাদিকে পরিবারের সদস্যরা ছোট করেই দেখে কিংবা কেউ কেউ কেউ দেখেই না! আর আমাদের অন্ধ সমাজ তো একে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই ধরে নেয়। অথচ এটি সামাজিক অবক্ষয়ের একটি ভয়ঙ্কর দিক!

সুশিক্ষা ও সচেতনতার ঘাটতি এসব অপরাধকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। সমাজ ও পরিবার নৈতিক অবস্থানে দৃঢ় থাকলে এমন অপরাধ অনেকাংশেই কমে যেতো।
পরিবারের প্রতিটি সদস্যের নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার মনোভাব গড়ে উঠলেই নারী শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো থাকতে পারবে। ভালো থাকতে পারবে পরিবারের প্রতিটি সদস্য।

নারী একজন মমতাময়ী স্ত্রী , একজন স্নেহময়ী মা, একজন সংসারের রক্ষক। নারী ছাড়া সমাজ চলবে না, সংসার চলবে না। তাদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পরিবার ও সমাজের কর্তব্য।

নারী-পুরুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সম্পর্ক একটি পরিবারকে মায়ার বন্ধনে বেঁধে রাখতে পারে…
পরিবর্তন শুরু করতে হবে ঘর থেকেই…

নারীর কাজের স্বীকৃতি আজ খুব প্রয়োজন… খুব প্রয়োজন নারীর সুযোগ সুবিধার প্রতি দৃষ্টিদান…
আরো প্রয়োজন নারী পুরুষ উভয়কেই উভয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া….

নারী-পুরুষের পারস্পরিক সহযোগিতায় গড়ে উঠুক একটি মানবিক সুন্দর পৃথিবী!

 

চিকেন ও ডিমের পুরে মজাদার রোল

ক্ষুধা লাগলেই রোল বা স্যান্ডউইচ খেয়ে থাকেন অনেকেই। বলতে গেলে, হালকা খিদের বড় সমাধান হলো রোল। ভেজিটেবল, বিফ কিংবা চিকেনের রোল সবারই পছন্দের।

চিকেন ও ডিমের পুর রুটি বা পাউরুটির মধ্যে দিয়ে পেঁচিয়ে তৈরি করা হয় রোল। এর স্বাদ যেমন; পুষ্টিও অনেক। তবে আপনি যদি একটু স্বাস্থ্যকর রোল খেতে চান, তাহলে বাড়িতে সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন।

রোল তৈরি করাও খুব সহজ। তবে কেউ চাইলে পরোটা দিয়েও রোল বানাতে পারেন। ময়দা, ডিম, চিনি, ঘি, লবণ আর সামান্য দুধ একসঙ্গে মেখে নিন।

এরপর ভেজা কাপড় দিয়ে খানিকক্ষণ ঢেকে রাখুন। খুব নরম পরোটা তৈরি হবে। জেনে নিন রোল তৈরির রেসিপি-

উপকরণ
১. টমেটো ২০ গ্রাম
২. পেঁয়াজ ২০ গ্রাম
৩. ডিম ১টি
৪. চিকেন ৫০ গ্রাম
৫. লবণ ১০ গ্রাম
৬. গোলমরিচ ১০ গ্রাম
৭. মাখন ২০ গ্রাম
৮. বড় পাউরুটি ১টি
৯. মেয়োনিজ ৫০ গ্রাম
১০. টমেটো সস ২০ গ্রাম

পদ্ধতি: পাউরুটির এক পিঠে মেয়োনিজ মাখিয়ে নিন ভালো করে। ডিম সেদ্ধ করে চারটি ফালিতে কেটে নিন। চিকেনের টুকরোগুলো গ্রিল করুন।

এরপর টমেটো, পেঁয়াজ কুচি করে নিন। লবণ, মরিচ, গ্রিলড চিকেন, ডিম, টমেটো, পেঁয়াজ, সস মিশিয়ে সালাদের মতো তৈরি করুন।

মেয়োনিজ মাখানো পাউরুটির পিঠে সেটা রোলের মতো সাজিয়ে গোল করে নিন। রোলের বাইরের দিকে গলানো মাখন ব্রাশ করে নিন।

ওভেনে দিয়ে গ্রিল করুন। তৈরি হয়ে গেল আপনার মজাদার রোল। তারপর অর্ধেক করে কেটে নিয়ে পরিবেশন করুন গরম গরম।

 

শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ

রাজধানীর শাহবাগে ‘দুর্নীতি ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে পূর্বঘোষিত ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, প্রীতিলতা ব্রিগেডসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে নৃত্য ও ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাবেশটি শুরু হয়। এর আগে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহর সঞ্চালনায় এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ আকাশ, সামিনা লুৎফা, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়সহ অন্যান্য নেতাকর্মী।

সমাবেশে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের যে পরিসংখ্যান আমরা দেখতে পাই, সেটার চেয়ে দ্বিগুণ ঘটনা আমাদের দেশে ঘটছে। ধর্ষণবিরোধী এই আন্দোলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক। এই আন্দোলন অন্যান্য আন্দোলনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেললে হবে না। সব রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সংগঠিত করে সারাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে। ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন হ্রাস করতে হলে সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও বাড়াতে হবে। সর্বোপরি নারীদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, এই আন্দোলন সামাজিক আন্দোলন, এই আন্দোলন সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক আন্দোলন। আল জাজিরার প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে যেভাবে সরকার আন্দোলন করছে, সেভাবে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলছে না, আন্দোলন করছে না। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরকার কথা বলবে না, যা করতে হবে আমাদেরই।