banner

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

একুশের সকালে সাইকেল শোভাযাত্রা

নারায়ণগঞ্জের নারী সাইকেল আরোহীদের দলটি শাড়ি পরে সাইকেল চালিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নিয়েছিলেন। ফাল্গুনের কুয়াশাভাঙা রোদেলা সকাল। নারায়ণগঞ্জ শহরের পথে পথে প্রভাতফেরির গান। ‘ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি…।’

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে একদল নারী যুক্ত হয়েছিলেন ভিন্নভাবে। শাড়ি পরে সাইকেল চালিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নিয়েছেন তাঁরা। সঙ্গে ছিল ভাষার স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড। এই নারীরা নারায়ণগঞ্জের নারী সাইকেল আরোহীদের দল নভেরার সদস্য।

রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ নগরের খানপুর থেকে যাত্রা শুরু করে মণ্ডলপাড়ায় গিয়ে শেষ হয় নভেরার সাইকেল শোভাযাত্রা। নিছক খেয়ালের বশে নয়, প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেই ভাষা দিবসে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন বলে জানান নভেরার প্রতিষ্ঠাতা ফারজানা মৌসুমী। দুই বছর ধরে নভেরা একুশে ফেব্রুয়ারি এমন সাইকেল শোভাযাত্রা করে আসছে।

 

৩ দশক পড়াশোনা করে ইসলাম গ্রহণ জবি অধ্যাপকের

ধর্মতত্ত্ব নিয়ে প্রায় ২৯ বছর পড়াশোনার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতু কুন্ডু। রিতু কুন্ডু ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন আদ্রিতা জাহান রিতু।

তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন আরো ৪ বছর আগে। তবে বিষয়টি এত দিন আড়ালেই ছিল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভাইরাল হওয়া ভিডিওতেই

শান্তির এ ধর্মে তিনি দিক্ষিত হয়েছিলেন বছর চারেক আগে। তবে বিষয়টি এত দিন ওইভাবে জানাজানি হয়নি। নিজের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার কথা বর্ণনা করেন রিতু।

ভিডিওটিতে ওই শিক্ষিকা বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছরের বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা ও জ্ঞান-বুদ্ধির আলোকে আমি ইসলামের বিষয়ে এক মাসব্যাপী পড়াশোনা শুরু করি। ১৬ দিনের মধ্যেই আমি সত্য উপলব্ধি করি এবং ২০১৭ সালের মার্চে ইসলাম গ্রহণ করি। এই দীর্ঘ ২৯ বছর পর্যন্ত আমি নিজের পরিবার, সমাজ ও মানুষের আচার-ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করি। এ দীর্ঘ সময় অন্যান্য প্রধান সব ধর্মের গ্রন্থাবলি পাঠ করেছি। জাপানেও এ বিষয়ে পড়াশোনা করি। ২০১২ সালে এসে বুঝতে পারি, এগুলো মানুষ রচিত বই।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছর পর আমি পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ নিয়ে পড়ালেখা করি। এর পাশাপাশি আমি হাদিসও পাঠ করি। সামনে কোরআনের যে সূরা আর হাদিস পেয়েছি তাই মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। মহান আল্লাহর নির্দেশনার কারণ ও বিধিনিষেধ নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। কখনও এ বিষয়ে স্বপ্নও দেখেছি। তা হয়তো অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে।

খুব ছোট থেকেই হয়তো আল্লাহ আমাকে ইসলাম কবুলের জন্য তৈরি করেছিলেন। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ঘটনা, শিক্ষা, প্রতিবন্ধকতা আর সমাজের অসংগতি আমাকে ধীরে ধীরে ইসলামের পথে পরিচালিত করেছে। আমি যখন বুঝতে পারলাম, আমাকে নামাজ পড়তে হবে সেদিন থেকে টানা ১৪ মাস আমার নামাজ কাজা হয়নি। এরপর চাকরির কারণে দু-একবার কাজা হয়ে যায়। আমি যখন অনুভব করলাম, আমাকে পর্দা করতে হবে সেদিন থেকে আমি হিজাব পরা শুরু করি।

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন বলেও জানান এ শিক্ষিকা।

নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন আদ্রিতা জাহান রিতু। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

২০১৩ সালে তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৭ সাল থেকে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে শিক্ষকতা করছেন।

 

বয়স ডিঙিয়ে এভারেস্টে

মাউন্ট এভারেস্ট—বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। ২৯ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতার এভারেস্টে ওঠা যেনতেন কথা নয়। বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে প্রবল যুঝতে পারলেই সর্বোচ্চ সেই স্থানে বিজয় পতাকা ওড়ানো যায়। আসুন, জেনে নেওয়া যাক, একই দেশের দুজন নারী পবর্তারোহীর কথা, যাঁরা কিনা ভিন্ন ভিন্ন বয়সে জয় করেছিলেন এভারেস্ট।

অভিনেতা রাহুল বোস পরিচালিতপূর্ণা সিনেমাটি কি দেখা হয়েছে? দেখা থাকলে পূর্ণা মালাভাথের জীবনের গল্পের সঙ্গে পরিচয় হয়ে যাওয়ার কথা। অজানা থাকলে বলছি শুনুন।

ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের একটি ছোট্ট গ্রামে ছিল পূর্ণার বাস। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ২০১৪ সালে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন তিনি। এভারেস্টজয়ী সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে সেই সময় রেকর্ড করেছিলেন পূর্ণা। এর আগে ১৪ বছর বয়সী এক মার্কিন কিশোরের দখলে ছিল সেই রেকর্ড।

এভারেস্টের পথে পূর্ণা প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন। কিছুদিন আগেই সেখানে হিমবাহ ধসের ঘটনা ঘটেছিল। তবে এত কিছুতেও দমে যাননি তখনকার ১৩ বছরের কিশোরী। এভারেস্টের চূড়ায় উড়িয়েছিলেন বিজয় পতাকা।

এভারেস্ট জয়ে কোন বিষয়টি পূর্ণাকে অনুপ্রাণিত করেছিল জানেন? তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, মেয়েরা যেকোনো কিছুই অর্জন করতে পারে। এভারেস্টের চূড়ায় উঠে সব প্রতিবন্ধকতাকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছিলেন পূর্ণা।

২০১১ সালে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় যখন ভারতের ঝাড়খন্ডের অধিবাসী প্রেমলতার পা পড়েছিল, তখন তাঁর বয়স ছিল ৪৮ বছর। তিনি ছিলেন দুই সন্তানের মা। এমন বয়সে সবাই চায় নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। কিন্তু প্রেমলতা গিয়েছিলেন হিমালয়ের ঝঞ্ঝামুখর পথে। সে সময় তিনি ছিলেন ভারতের এভারেস্টজয়ী সবচেয়ে বেশি বয়সী নারী। যদিও পরে সেই রেকর্ড ভেঙেছিলেন আরেকজন, তবে পথপ্রদর্শক হিসেবে তিনিই ছিলেন।

শুধু তা-ই নয়। বিশ্বের সাত মহাদেশের সাত সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়াতেও (সেভেন সামিট) পা রেখেছেন প্রেমলতা। প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে এই রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

পর্বতারোহণে অবদান রাখায় ভারত সরকারের দেওয়া সম্মানসূচক ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রেমলতা। আরও পেয়েছেন ‘তেনজিং নোরগে ন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড’। লিমকা বুক অব রেকর্ডসেও নাম লিখিয়েছেন প্রেমলতা।

তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, এনডিটিভি, দ্য হিন্দু ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কিশোরীর পেটে ছুরিকাঘাত

রাজধানীর ডেমরায় প্রেমের প্রস্তাব রাজি না হওয়ায় এক কিশোরীকে (১৫) পেটে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করেছে এক বখাটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মো. রেদুয়ানকে (২০) শনিবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ।

রোববার দুপুরে আদালতে পাঠানো হলে ওই দিন বিকালে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

রেদুয়ান শেরপুরের নালিতাবাড়ী থানার মো. মজিবুর রহমানের ছেলে। সে পরিবারের সঙ্গে বর্তমানে ডেমরার পশ্চিম বক্সনগর এলাকার মহসিন ভান্ডারির বাড়িতে ভাড়া থাকেন। হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করার এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা রাজমিস্ত্রি মো. আবদুল মান্নাফ রেদুয়ানের বিরুদ্ধে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামলা দায়ের করেন। ওই কিশোরী পেশায় একজন পোশাককর্মী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডেমরা থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গার্মেন্টে যাওয়া-আসার পথে ওই কিশোরীকে প্রতিনিয়ত প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করত একই বাড়ির ভাড়াটিয়া বখাটে রেদুয়ান। এ বিষয়ে ওই কিশোরীর বাবা ছেলেটিকে নিষেধ করলে থেমে যাওয়ার বদলে আরও ক্ষিপ্ত হয় সে। এদিকে গত শনিবার বিকালে রেদুয়ান ক্ষিপ্ত অবস্থায় মেয়েটির ঘরে গিয়ে তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে মেয়েটির পেটের ডান পাশে আঘাত করে। এ সময় ওই কিশোরী ডাক চিৎকার শুরু করলে তার মা ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে রেদুয়ান পালিয়ে যায়।

এসআই নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ঘটনার পরই গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে মেয়েটি সেখানে চিকিৎসাধীন। আদালতে মাদকাসক্ত রেদুয়ান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

 

নারীর নিরাপত্তায় প্রস্তুত পুলিশের কিউআরটি

স্বামীর নির্যাতন থেকে শুরু করে পথে–ঘাটে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় নারী নিজেকে অনিরাপদ মনে করলে পাশে পাবেন পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমকে (কিউআরটি)। দিন-রাত যেকোনো সময় এ দলকে পাশে পেতে ফোন করতে হবে ০১৩২০০৪২০৫৫ নম্বরে (হটলাইন)। তবে প্রচারের অভাবে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ ফোন পাচ্ছেন না তাঁরা।

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের পাশাপাশি আক্রান্ত বা ভিকটিমকে দ্রুত উদ্ধারসহ অন্যান্য সহায়তা দিতে কিউআরটির যাত্রা। গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাজধানীর তেজগাঁও থানা প্রাঙ্গণের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অধীনে এই টিমের উদ্বোধন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। ১২ জানুয়ারি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, কিউআরটির নারী পুলিশ সদস্যরা একটি ঘরে বসে আছেন। উদ্ধারজনিত কোনো ফোন পেলেই ছুট লাগাবেন তাঁরা। কিউআরটিতে নারী পুলিশ সদস্য সংখ্যা বেশি হলেও পুরুষেরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
বিজ্ঞাপন

উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হামিদা পারভীন প্রথম আলোকে বলেন, এ বিভাগের অধীনে তদন্ত ইউনিট, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পাশাপাশি কিউআরটিও পরিচালিত হচ্ছে। ২৮ জনবলের কিউআরটি পূর্ণাঙ্গ একটি দল হিসেবে কাজ করছে। ডিএমপির অধীনে কোনো স্থানে ঘটনা ঘটলে উদ্ধার পাওয়া যাবে এবং সারা বাংলাদেশের সবাই আইনি পরামর্শ পেতে এ নম্বরে ফোন করতে পারবে।

কিউআরটিতে আসা সব অভিযোগ নথিবদ্ধ হচ্ছে না, যেসব অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেগুলো নথিবদ্ধ করা হয়। সে হিসাবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত নথিবদ্ধ হয়েছে ৯৬টি অভিযোগ। কিউআরটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পারিবারিক সহিংসতার শিকার নারীরা বেশি ফোন করে সহায়তা চাচ্ছেন। কল বেশি আসে ঢাকার বাইরে থেকে। ৯৯৯-এর মাধ্যমে কল পেয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এই দল থেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতারণা, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক, খারাপ ব্যবহার, অনলাইনে প্রতারণাসহ বিভিন্ন বিষয়েও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

কিউআরটির সদস্যরা আইনি পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগে ভিকটিম এলে সমস্যা সমাধান করার ব্যবস্থা নেন। ভিকটিমকে প্রয়োজনে কোনো থানায় যোগাযোগ করিয়েও দিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। এ পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার কয়েক ভিকটিমকে উদ্ধার করে তাঁদের ইচ্ছানুযায়ী পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

হটলাইন নম্বরটি আসলেই কাজ করছে কি না, তা যাচাই করতে গত ২৩ জানুয়ারি ফোন করলে একজন নারী কনস্টেবল নাম, পরিচয় ও অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। কোন ধরনের ফোন বেশি পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বললেন, হটলাইন নম্বর তো, অনেক সময় ভুয়া ফোনও আসে, অনেকে ফোন করে কোনো অভিযোগের কথা বলতে পারেন না। অনেকে এ সেবা সম্পর্কে শুধু জানার জন্যই ফোন করেন।

কিউআরটির সদস্যরা ১২ ঘণ্টা করে দলে ভাগ হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। একজন সাব-ইন্সপেক্টর প্রতিটি দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুজন গাড়িচালকও প্রস্তুত থাকেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন টেলিফোনে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় কিউআরটি গঠন করা হয়েছে। কিউআরটি ও হটলাইন নম্বরের প্রচার বাড়ানো জরুরি। -প্রথম আলো

 

শিল্প ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, নারীকে তার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চাকরির পাশাপাশি শিল্প উদ্যোক্তা হতে হবে। শিল্প ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে নারী উদ্যোক্তাদের সামনে এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে কুসুমকলি সু ফ্যাক্টরির উদ্যোগে নতুন পণ্যের মোড়ক উন্মোচন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান এনডিসি এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মাওলা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুসুমকলি সু ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী নাজমা খাতুন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন জাতীয় শিল্পনীতি-২০২১ প্রণয়নের কাজ চলছে। নতুন এ শিল্পনীতিতে সরকার নারী শিল্প উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সর্বাধিক সুযোগ সুবিধা দেয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছে। বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর ভিড়ে দেশীয় চামড়া শিল্প ব্র্যান্ডগুলো নিজের চেষ্টায় জায়গা করে নিচ্ছে। কুসুমকলি সু ফ্যাক্টরির মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি চামড়া শিল্প উদ্যোক্তা নিজেরদের চেষ্টায় দেশে চামড়া শিল্প উন্নয়নে অবদান রেখে চলছে।’

‘বর্তমান সরকার দেশে শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি লক্ষ্যে উদ্যোক্তা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, ঋণ প্রদান, প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদানসহ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান কার্যক্রম চলমান রেখেছে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিসিক চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০৪১ সালে শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বিসিক একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করছে। যা বাস্তবায়িত হলে দেশে শিল্প বিল্পব ঘটবে এবং বাংলাদেশ একটি সুখী-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’

 

বাংলাদেশি গৃহকর্মী হত্যায় সৌদিতে গৃহকর্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড

সৌদি আরবে বাংলাদেশি গৃহকর্মী মোছা. আবিরন বেগম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সৌদি গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন দেশটির আদালত। রিয়াদের অপরাধ আদালত ১৪ ফেব্রুয়ারি এ রায় ঘোষণা করেন। দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধান আসামি গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার কারণে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।

এছাড়া রায়ে আলামত ধ্বংসের অভিযোগ, আবিরন বেগমকে নিজ বাসার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় কাজে পাঠানো ও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করার পৃথক অভিযোগে গৃহকর্তা বাসেম সালেমকে মোট ৩ বছর ২ মাস কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল (১১ লাখ ২৭ হাজার টাকা) জরিমানা করেছেন আদালত।

আদালত অপর আসামি সৌদি দম্পতির কিশোর পুত্র ওয়ালিদ বাসেম সালেমকে সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার প্রমাণ পায়নি বলে জানান। তবে আবিরন বেগমকে বিভিন্নভাবে অসহযোগিতা করায় তাকে সাত মাসের কিশোর সংশোধনাগারে থাকার আদেশ দিয়েছেন।

ইতোপূর্বে আবিরনের মৃত্যুতে আদালত দুঃখ প্রকাশ করেছেন। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে সৌদি শরিয়া আইন অনুযায়ী যথাযথভাবে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলেও আদালত উল্লেখ করেন।

২০১৯ সালের ২৪ মার্চ সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের আজিজিয়ায় সৌদি গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে নিহত হন বাংলাদেশি গৃহকর্মী আবিরন বেগম যা পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ড বলে হাসপাতালের ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায়।

গতকাল রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্টের ৬ নম্বর আদালতে আবিরন বেগমের মামলা পরিচালনার জন্য দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের প্রথম সচিব মো. সফিকুল ইসলাম ও আইন সহায়তাকারী সোহেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) আবিরন বেগম হত্যা মামালার রায় ঘোষণার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

 

মজাদার ‘চকলেট সন্দেশ’ তৈরি করুন ঘরেই

চলছে ভালোবাসার সপ্তাহ। ভ্যালেন্টাইন ডে পর্যন্ত প্রিয়জনকে নানা উপহার দিয়ে থাকেন সঙ্গীরা। এর মধ্যে চকলেট অন্যতম। যুগ যুগ ধরে উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে চকলেট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

ছোট থেকে বড় যে কাউকেই চকলেট উপহার দেওয়া যায়। অন্যদিকে চকলেট উপহার পেলেও খুশি হয়ে যায় প্রিয়জনরা। চকলেট খেতে কে না ভালবাসে!

বর্তমানে চকলেটের কেক, কুকিজ, আইসক্রিম, ক্যাডবেরি সবই পাওয়া যায়। চকলেট প্রেমীদের জন্য আরও এক মজাদার পদ হলো চকলেট সন্দেশ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রেসিপি-

উপকরণ

১. দুধ ১ লিটার
২. লেবুর রস ২ টেবিল চামচ
৩. চিনির পাউডার ৫ টেবিল চামচ
৪. কোকো পাউডার ২ টেবিল চামচ

পদ্ধতি:
প্রথমে দুধ ভালো করে জ্বাল দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর লেবুর রস মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। দেখবেন দুধ কেটে ছানা হয়ে এসেছে।

এবার ছানা পরিষ্কার কাপড়ে ঢেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে নাড়ুন। কাপড়ের চারপাশ ধরে চেপে চেপে ছানার পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর আধা ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখুন।

তারপর ছানা বের করে হাত দিয়ে মথে নিন। যখন দেখবেন একেবারে নরম হয়ে গেছে ছানা; তখন চিনির গুঁড়ো মিশিয়ে আবারও মাখুন। সবশেষে কোকো পাউডার দিয়ে ভালোভাবে মাখুন।

প্যানে এবার ছানার মিশ্রণটি কম আঁচে ৫ থেকে ৬ মিনিট নাড়ুন। তারপর প্লেটে নিয়ে ছড়িয়ে দিন। হালকা ঠান্ডা হলে অল্প করে হাতে নিয়ে সন্দেশের আকারে গড়ে নিন।

এরপর সন্দেশের উপরে গলানো চকলেট দিয়ে সাজান। তার উপরে চকলেটের গুঁড়ো দিন। এইতো তৈরি হয়ে গেল মজাদার চকলেট সন্দেশ। কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিলে সন্দেশের উপরের চকলেট একটু শক্ত হলে বের করে খেতে পারবেন।

কাউকে উপহার দিতে চাইলে সুন্দর চকলেট বক্সে রং-বেরংয়ের ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে নিন সন্দেশগুলো। এরপর চকলেট বক্সটি সুন্দর মোড়কে পেঁচিয়ে প্রিয়জনকে দিন। ছোট ছোট এ চকলেট সন্দেশ দেখতেও যেমন সুন্দর খেতেও অনন্য।

 

নারী ও পুরুষ হোক পরস্পরের সহযোগী

সাজেদা হোমায়রা

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার হয়ে খুব দ্রুত ডিভোর্স দিয়ে অথবা শারীরিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করে সাহসী হয়ে যেতে পারে কয়টা মেয়ে?

কিংবা অনেক আয় করে আত্নবিশ্বাসী হতে পারে কয়টা মেয়ে?

তাহলে যে মেয়েটা পারেনি, সে কী তার এই অসহায় জীবন ডিজার্ভ করে…?

জীবন ধারণের ন্যুনতম সুযোগটা পেতে অথবা হকের প্রয়োজনটা নিতে একজন নারীকে কেন প্রতিবাদী নারী হতে হবে?

বেশিরভাগ মেয়েরাই তো গতানুগতিক ও সাধারণ মানসিকতার পরিবারে জন্ম নেন। বেড়েও ওঠেন খুব সাধারণ চিন্তার মানুষ হিসেবেই। পড়াশোনাও অনেকের কম।

বিয়ের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির মানুষের অমানবিক কথা শোনা! খুব কষ্ট পেলেও তার কিছুই করার থাকে না। তাকে সয়ে যেতে হয় অথবা মনে করে নিতে হয় এটাই তার ভাগ্য!

একটা সাবান, একটা শ্যাম্পু কিংবা দুইটা জামার জন্য তাকে চেয়ে থাকতে হয় বাবার বাড়ির দিকে….

অনেক মেয়েই আছে, যারা সারাদিন নিরবিচ্ছিন্ন কাজের পর তাদের অল্প কিছু খাবার জোটে। অথচ আর্থিক দাঁড়িপাল্লায় তার কাজকে মাপা হলে তার মাসে অন্তত ১৫/২০ হাজার টাকা পাওয়া উচিত বা আরো বেশি। অথচ তাকে জরুরি চিকিৎসার খরচ পেতেও হিমশিম খেতে হয়!

একটু ব্যতিক্রম হলেই শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া, না খাইয়ে রাখা, দীর্ঘদিন বাবার বাড়িতে না যেতে দেয়া, মারধর করা… এগুলো অহরহ ঘটছেই!
নির্যাতনের মাত্রা সহ্য করতে না পেরে অনেক নারীই বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ!

এমনভাবে জীবন কাটাতে কাটাতে একদিন মেয়েটা হাসতে ভুলে যায়। দিনের পর দিন অপমান সইতে সইতে সে ভুলে যায় ‘হিউম্যান ডিগনিটি কি?’

আবার যে মেয়েটাকে আয় করে নিজের খরচ চালাতে হয়, সে মেয়েটারই বা কী অবস্থা! তার যে কোনো প্রয়োজনে বা আর্থিক নিরাপত্তার দায়িত্বটা কি তার পার্টনারের উপর বর্তায় না? কেন মেয়েটাকে এতোটা চ্যালেঞ্জ নিতে হবে?

সব মেয়েই সাহসী হবে বা প্রতিবাদী হবে এটা তো কখনোই সম্ভব না!

আমাদের চারপাশে বিশাল সংখ্যক নারী ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার।
নারীর প্রতি অবিচার, মারপিট, মানসিক টর্চার, প্রতিটি কাজে দোষ ধরা ইত্যাদিকে পরিবারের সদস্যরা ছোট করেই দেখে কিংবা কেউ কেউ কেউ দেখেই না! আর আমাদের অন্ধ সমাজ তো একে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই ধরে নেয়। অথচ এটি সামাজিক অবক্ষয়ের একটি ভয়ঙ্কর দিক!

সুশিক্ষা ও সচেতনতার ঘাটতি এসব অপরাধকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। সমাজ ও পরিবার নৈতিক অবস্থানে দৃঢ় থাকলে এমন অপরাধ অনেকাংশেই কমে যেতো।
পরিবারের প্রতিটি সদস্যের নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার মনোভাব গড়ে উঠলেই নারী শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো থাকতে পারবে। ভালো থাকতে পারবে পরিবারের প্রতিটি সদস্য।

নারী একজন মমতাময়ী স্ত্রী , একজন স্নেহময়ী মা, একজন সংসারের রক্ষক। নারী ছাড়া সমাজ চলবে না, সংসার চলবে না। তাদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পরিবার ও সমাজের কর্তব্য।

নারী-পুরুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সম্পর্ক একটি পরিবারকে মায়ার বন্ধনে বেঁধে রাখতে পারে…
পরিবর্তন শুরু করতে হবে ঘর থেকেই…

নারীর কাজের স্বীকৃতি আজ খুব প্রয়োজন… খুব প্রয়োজন নারীর সুযোগ সুবিধার প্রতি দৃষ্টিদান…
আরো প্রয়োজন নারী পুরুষ উভয়কেই উভয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া….

নারী-পুরুষের পারস্পরিক সহযোগিতায় গড়ে উঠুক একটি মানবিক সুন্দর পৃথিবী!

 

চিকেন ও ডিমের পুরে মজাদার রোল

ক্ষুধা লাগলেই রোল বা স্যান্ডউইচ খেয়ে থাকেন অনেকেই। বলতে গেলে, হালকা খিদের বড় সমাধান হলো রোল। ভেজিটেবল, বিফ কিংবা চিকেনের রোল সবারই পছন্দের।

চিকেন ও ডিমের পুর রুটি বা পাউরুটির মধ্যে দিয়ে পেঁচিয়ে তৈরি করা হয় রোল। এর স্বাদ যেমন; পুষ্টিও অনেক। তবে আপনি যদি একটু স্বাস্থ্যকর রোল খেতে চান, তাহলে বাড়িতে সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন।

রোল তৈরি করাও খুব সহজ। তবে কেউ চাইলে পরোটা দিয়েও রোল বানাতে পারেন। ময়দা, ডিম, চিনি, ঘি, লবণ আর সামান্য দুধ একসঙ্গে মেখে নিন।

এরপর ভেজা কাপড় দিয়ে খানিকক্ষণ ঢেকে রাখুন। খুব নরম পরোটা তৈরি হবে। জেনে নিন রোল তৈরির রেসিপি-

উপকরণ
১. টমেটো ২০ গ্রাম
২. পেঁয়াজ ২০ গ্রাম
৩. ডিম ১টি
৪. চিকেন ৫০ গ্রাম
৫. লবণ ১০ গ্রাম
৬. গোলমরিচ ১০ গ্রাম
৭. মাখন ২০ গ্রাম
৮. বড় পাউরুটি ১টি
৯. মেয়োনিজ ৫০ গ্রাম
১০. টমেটো সস ২০ গ্রাম

পদ্ধতি: পাউরুটির এক পিঠে মেয়োনিজ মাখিয়ে নিন ভালো করে। ডিম সেদ্ধ করে চারটি ফালিতে কেটে নিন। চিকেনের টুকরোগুলো গ্রিল করুন।

এরপর টমেটো, পেঁয়াজ কুচি করে নিন। লবণ, মরিচ, গ্রিলড চিকেন, ডিম, টমেটো, পেঁয়াজ, সস মিশিয়ে সালাদের মতো তৈরি করুন।

মেয়োনিজ মাখানো পাউরুটির পিঠে সেটা রোলের মতো সাজিয়ে গোল করে নিন। রোলের বাইরের দিকে গলানো মাখন ব্রাশ করে নিন।

ওভেনে দিয়ে গ্রিল করুন। তৈরি হয়ে গেল আপনার মজাদার রোল। তারপর অর্ধেক করে কেটে নিয়ে পরিবেশন করুন গরম গরম।

 

শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ

রাজধানীর শাহবাগে ‘দুর্নীতি ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে পূর্বঘোষিত ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, প্রীতিলতা ব্রিগেডসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে নৃত্য ও ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাবেশটি শুরু হয়। এর আগে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহর সঞ্চালনায় এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ আকাশ, সামিনা লুৎফা, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়সহ অন্যান্য নেতাকর্মী।

সমাবেশে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের যে পরিসংখ্যান আমরা দেখতে পাই, সেটার চেয়ে দ্বিগুণ ঘটনা আমাদের দেশে ঘটছে। ধর্ষণবিরোধী এই আন্দোলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক। এই আন্দোলন অন্যান্য আন্দোলনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেললে হবে না। সব রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সংগঠিত করে সারাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে। ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন হ্রাস করতে হলে সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও বাড়াতে হবে। সর্বোপরি নারীদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, এই আন্দোলন সামাজিক আন্দোলন, এই আন্দোলন সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক আন্দোলন। আল জাজিরার প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে যেভাবে সরকার আন্দোলন করছে, সেভাবে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলছে না, আন্দোলন করছে না। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরকার কথা বলবে না, যা করতে হবে আমাদেরই।

 

মুক্তি পেলেন সৌদির সেই প্রখ্যাত মানবাধিকার কর্মী হাতলুল

তিন বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন সৌদি আরবের সেই প্রখ্যাত মানবাধিকার কর্মী লুজাইন আল হাতলুল। বুধবার সৌদি কর্তৃপক্ষ কারাগার থেকে তাক মুক্তি দিয়েছে। তার বোনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে তুর্কি সংবাদ মাধ্যম ইয়েনি শাফাক।

ওই মানবাধিকার কর্মীর বোন লিনা এক টুইট বার্তায় বলেন, এক হাজার এক দিন পর ছাড়া পেয়ে লুজাইন আল-হাতুলুল বাড়িতে।

হাতলুলকে ছাড়ার বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু জানাননি। হাতলুলকে আটকের পর থেকে আন্তর্জাতিক অনেক সংগঠন সৌদি আরবের এমন কর্মকাণ্ডে নিন্দা জানিয়েছে।

সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়ার পক্ষে আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম লুজাইন আল হাতলুল।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বেশ কিছু শর্তের অধীনে মুক্তি পেয়েছেন লুজাইন আল হাতলুল। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে কারাগারে তার সঙ্গে আচরণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না এবং সৌদি আরব ছেড়ে যেতে পারবেন না। শর্ত ভঙ্গ করলে তার কারাদণ্ড পুনর্বহাল করা হতে পারে।

নিজের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন হাতলুল। এছাড়া অন্য নারী বন্দিদের সঙ্গে তিনিও বিচারকের কাছে দাবি করেন জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুখোশ পরিহিত পুরুষেরা তাদের ওপর নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। তবে গত মঙ্গলবার একটি আপিল আদালত নির্যাতনের অভিযোগ খারিজ করে দেয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

 

ভারতে হিজাব খুলতে বলায় স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর

ভারতে এখন রাষ্ট্রীয় মদদে পদে পদে নিগৃহের স্বীকার হচ্ছেন মুসলিমরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে বর্ণবৈষম্য।

পুদুচেরী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশনে স্নাতকোত্তরে সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী রাবিহা আব্দুরেহিমকে হিজাব পরায় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।

সমাবর্তনে যোগ দিতে হলে হিজাব খুলে আসতে হবে, এমন শর্ত দেয়ায় তিনি স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করে শুধু সার্টিফিকেট নিয়েই চলে আসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির জওহরলাল নেহরু অডিটরিয়ামে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

তার হাত থেকেই সাফল্যের পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন রাবিহা। কিন্তু সেই সময় অনুষ্ঠানে ঢুকতেই দেয়া হয়নি তাকে। কারণ সেই হিজাব।

২০১৮ সালের ব্যাচের ওই ছাত্রী জানান, রাষ্ট্রপতি আসার কিছুক্ষণ আগেই তিনি অডিটরিয়ামে প্রবেশ করতে যান। কিন্তু সেখানেই নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা দেয়।

তারা তাকে বলেন, হিজাব খুলে না এলে ভেতরে ঢুকতে দেয়া যাবে না। নিরাপত্তারক্ষীদের প্রস্তাবে রাজি হননি রাবিহা। রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তাকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

এর পর কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের পদক ও সার্টিফিকেট দিতে শুরু করে। কিন্তু গোটা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে, সোনার পদক নিতে অস্বীকার করেন রাবিহা। শুধু সার্টিফিকেট নিয়েই বেরিয়ে আসেন তিনি।

ক্ষুব্ধ রাবিহা বলেন, আমার সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে- তার প্রতিবাদেই আমি পদক নিতে অস্বীকার করি।

নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে বাধা দেয়। ওরা সন্দেহের চোখে দেখছিল আমাকে। যেন আমি কিছু একটা করার উদ্দেশ্যে ঢুকতে চাইছি। জানি না, ওরা কী ভাবছিল।

এর পরই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ উঠে আসে তার কথায়। বলেন, পুলিশ যেভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করছে তার বিরোধিতা করছেন তিনি।

গোটা ভারতের শিক্ষার্থীরা বর্তমান পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদস্বরূপ এই পদক নিতে অস্বীকার করেছেন তিনি।

রাবিহার সঙ্গে এমন আচরণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

 

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চীনে অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক গ্রেফতার

অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক চেং লেই চীনে কয়েক মাস আটক থাকার পর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগ এনে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসির।

আটকের আগে চেং চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল সিজিটিন এর উপস্থাপক ছিলেন। অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তারা জানান, গত আগস্টে তাকে আটক করা হয় এবং গত শুক্রবার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিস পেইন বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, বিচারে প্রাথমিক মানদণ্ড, প্রক্রিয়ার সততা ও মানবিক আচরণ মেনে চলা হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’ তিনি বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে আমরা চেং ও তার পরিবারের পাশে আছি।’

গত আগস্টে চেং হঠাৎ টেলিভিশন থেকে হারিয়ে যান এবং তার বন্ধু ও স্বজনদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে চীন ঘোষণা দেয় যে তিনি এক অজানা স্থানে ‘আবাসিক নজরদারিতে’ রয়েছেন।

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, গত ছয় মাসে অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা চেং এর সাথে ছয়বার দেখা করতে পেরেছেন। কূটনৈতিক ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে সাম্প্রতিক বছরে অস্ট্রেলিয়া ও চীনের সম্পর্ক অবনতি হয়েছে।

চীনে জন্ম হওয়া আরেক অস্ট্রেলীয় নাগরিক ও লেখক ইয়াং হেংজুন চীনে আটক রয়েছেন। তিনি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন। অস্ট্রেলিয়া বলেছে, ইয়াং এর বিরুদ্ধে চীনের আচরণ ‘অগ্রহণযোগ্য।’

 

ডিপ্লোম্যাসি অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাইদা মুনা তাসনীম

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম উইমেন্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডব্লিওআইসিসিআই) প্রদত্ত ‘উইমেন অব দ্য ডিকেড ইন পাবলিক লাইফ অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন।

বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল অব উইমেন্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিআইবিসি-ডব্লিওআইসিসিআই)-এর উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘উইমেন অন্ট্রাপ্রেনিওর সামিট-২০২১’র ভার্চুয়াল সমাপনী অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমকে এ পুরস্কার প্রদান করেন।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশন এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে এবছর ডব্লিওআইসিসিআই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

পুরস্কার গ্রহণের পর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তার এ পুরস্কার তিনি বাংলাদেশের তৃণমূলের নারী যারা প্রতিদিন কৃষি, পোশাক শিল্প, মৎস্য খামার, নির্মাণ শিল্প, গৃহকর্মী ও বিদেশে প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন তাদের উৎসর্গ করেন।

হাইকমিশনার প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিগত এক দশকে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীদের অভূতপূর্ব ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশকে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গেফ ইনডেস্কের’ শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত করার কথা উল্লেখ করেন।

বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান, নোবেল বিজয়ী ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ডব্লিওআইসিসিআই এ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মাল্টার প্রেসিডেন্ট ম্যারি লুই কোলেইরো প্রেসা, কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট লরা সিনসিলা মিরান্ডা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড।

ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক কো-অর্ডিনেটর মিস নিয়া শেফু, ডাব্লিওআইসিসিআই’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. হারবিন ওরোরা এবং বিআইবিসি-ডব্লিওআইসিসিআই’র সভাপতি মিস মানতাসা আহমেদ।

 

লা রিভে ফাল্গুন-ভ্যালেন্টাইনের নতুন কালেকশন

সাসটেইনেবল। মানানসই। উজ্জল কিন্তু রুচিশীল রঙ। স্প্রিং/সামারের ফ্যাশন-অভিধানে প্রকৃতির পাশাপাশি এই শব্দগুলো ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবার। এই প্রেক্ষাপটে দেশি স্টাইল ও আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডের মিশেলে ফাল্গুন-ভ্যালেন্টাইনের বাস্তবধর্মী বা সফিস্টিকেটেড ফ্যাশনের বিশেষ একটি কালেকশন নিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থনীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড লা রিভ। সেই সঙ্গে পাওয়া যাবে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতি মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন।

লা রিভ এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক মন্নুজান নার্গিস বলেন, ‘কোভিড-১৯ আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। পোশাকে ইউটিলিটি ও একাধিক উপলক্ষ্যে পরার উপযোগিতা, উজ্জল কিন্তু চোখে শান্তি দেবে এমন রঙের প্রতি আমাদের আগ্রহ বেড়েছে। তাই এবারের ফাল্গুন-ভ্যালেন্টাইন কালেকশনে বছরজুড়ে পরার মত মানানসই বা সাসটেইনেবল পোশাক তৈরির চেষ্টা করেছি আমরা। লা রিভের পোশাক মানেই আন্তর্জাতিক যা র‍্যাম্পের জনপ্রিয় প্রিন্টগুলোর বৈচিত্রময় উপস্থাপনা। নতুন কালেকশনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কালার প্যালেটে শ্যাওলা সবুজ, গেরুয়া, হলুদ, ছাই, গোলাপি, কমলা, মেরুন, কালো, এবং নীলের নানারকম শেড ব্যবহার করা হয়েছে। বসন্তের নানারকম উজ্জল ফুল যেমন সূর্যমুখি, টিউলিপ, চেরি, পপির পাশাপাশি ইস্টার্ন বোটানিক, ফ্লোরাল টাইডাই ফর্ম, ফোক ফ্লোরাল এবং সবুজ পাতার বিভিন্ন শেড নিয়ে কাজ করা হয়েছে। বসন্তের প্রকৃতি ছাড়াও অন্যতম আকর্ষন ট্রেন্ডি ইক্কাত প্রিন্ট। ভিসকোস, ফেইলি, মসলিন, কটন, হাফ সিল্ক, এবং নিটের এই পোশাকগুলি ফাল্গুন-ভ্যালেন্টাইন ও একুশের আয়োজন ছাড়াও বছরজুড়ে যেকোন আয়োজনে পরা যাবে।’

এই কালেকশনে নারী, পুরুষ ও শিশু, তিনটি বিভাগেই দারুণ সব নতুন স্টাইল আনা হয়েছে। নারীদের জন্য থাকছে এম্ব্রয়ডারি, ফ্রিল, প্যটার্ন ও লেয়ারে সাজানো সালোয়ার কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ, নিট ও উভেন টিউনিক, শার্ট ও টিশার্ট, ম্যাক্সি ড্রেস, গাউন ও শ্রাগ। কটন, হাফসিল্ক ও মসলিন শাড়ির অসাধারণ একটি কালেকশন রাখা হয়েছে এবার। পুরুষের জন্য থাকবে শর্ট ও ফুলহাতা শার্ট, ক্যাজুয়াল ও কমফোর্ট শার্ট, পোলো, টিশার্ট এবং সেমি ও ফিটেড পাঞ্জাবি। এছাড়াও থাকছে যেকোন অনুষ্ঠানে পরার উপযোগি আকর্ষনীয় কাবলি সেট।

লা রিভের নতুন এই কালেকশনে শিশুদের জন্য থাকছে বিশেষ আয়োজন। ছেলেশিশুদের জন্য পাঞ্জাবি, পোলো ও টিশার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট রাখা হয়েছে। মেয়েশিশুদের জন্য এবারের বিশেষ আকর্ষন উৎসবে পরার শাড়ি। ফ্রক, ঘাগরা-চোলি, সালোয়ার কামিজ, টিউনিক ও উভেন সেটের নতুন স্টাইলেও থাকবে ফাল্গুন ও একুশের ছোঁয়া। বাবা-মায়ের সাথে মিলিয়ে পরার জন্য মিনি-মি কালেকশনেও থাকছে নতুন সব স্টাইল।

বটমস কালেকশনে নারীদের প্যান্ট পাজামা, হারেম ও লেগিংস থাকছে। ছেলেদের জন্য ঘরে-বাইরে, পাঞ্জাবি ও শার্টের সাথে পরার মত পাজামা প্যান্টের বর্ণিল একটি কালেকশন নিয়ে আসা হয়েছে। আরামদায়ক কটন টুইল, টেনসেল, রেমি কটনে তৈরি এই পাজামাগুলোর আরাম ও বৈচিত্র ক্রেতাদের মুগ্ধ করবে। শিশুদের জন্য ম্যাচিং পালাজ্জো, পাজামা প্যান্টস, নিটেড, উভেন ও ক্যামোফ্লেজ বারমুডা ও ক্যামোফ্লেজ প্যান্টস সংযোজন করা হয়েছে।

লা রিভ লাইফস্টাইল সেগমেন্টে থাকছে গয়না, ম্যাচিং মাস্ক ও স্যান্ডেল এবং পুরুষের প্রয়োজনীয় ফ্যাশন অনুষঙ্গ।

নতুন কালেকশন পাওয়া যাবে লা রিভের ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, খুলনা, সিলেট দর্শন দেউরি ও নয়া সড়কসহ মোট ১৬টি আউটলেটে। এছাড়া দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধায় কেনা যাবে www.lerevecraze.com- এই সাইট থেকে। বিস্তারিত জানতে লগইন করুন।

 

ব্রিটেন সাময়িকী প্রসপেক্টাসের তালিকায় বিশ্বসেরা নারী চিন্তাবিদ

২০২০ আলের ১৪ জুলাই ৫০ সেরা চিন্তাবিদের তালিকা প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের সাময়িকী প্রসপেক্টাস। সেখান থেকে শীর্ষ ১০ জনকে বাছাই করতে ২০ হাজার ভোট গ্রহণ করা হয়। সেই বিশ্বসেরা নারী চিন্তাবিদদের কয়েকজন হলেন-

কে কে সাইলাজা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী, কেরালা, ভারত

বিশ্বের সেরা ১০ চিন্তাবিদের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছেন ভারতের কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে সাইলাজা। তিনি সাইলাজা টিচার হিসেবে বেশি পরিচিত। ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি আন্তর্জাতিকভাবেও ব্যাপক প্রশংসিত। করোনা মোকাবেলায় ভারতের কেরালা এখন বিশ্বে মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। জানুয়ারির শুরুতে কেরালায় তিন ছাত্রের করোনাভাইরাস সংক্রমণ চিহ্নিত হয়। ওই তিন ছাত্রই চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই চীন থেকে আগত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের আগেই সাইলাজার নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলায় সাফল্য অর্জন করেছে কেরালা রাজ্য।

জাসিন্ডা আরডার্ন
প্রধানমন্ত্রী, নিউজিল্যান্ড

বিশ্বের সেরা ১০ চিন্তাবিদের মধ্যে জাসিন্ডা আরডার্ন দ্বিতীয়। পুরো নাম জাসিন্ডা কেট লরেল আরডার্ন। নিউজিল্যান্ডের দু’-দু’বারের প্রধানমন্ত্রী থেকে তিনি এখন পরিণত হয়েছেন বিশ্বকে শান্তির পথে নেতৃত্ব দেয়ার দূত হিসেবে। মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। গোটা বিশ্বে শান্তির পথে নেতৃত্ব দেয়ার দূত হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন জাসিন্ডা অরডার্ন।

মেরিনা তাবাসসুম

স্থপতি

বিশ্বের সেরা ১০ চিন্তাবিদের মধ্যে মেরিনা তাবাসসুম তৃতীয়। তিনি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে ভবন নির্মাণ এবং পরিবেশের দ্বারা উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো গ্রহণ করে নকশা তৈরিতে অবদান রেখেছেন। তার নকশা করা স্থানীয় উপকরণের হালকা ওজনের বাড়িগুলো স্টিলের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে সক্ষম এবং পানির মাত্রা বেড়ে গেলে সেগুলো সরানো যায়। বিষয়গুলো আন্তর্জাতিকভাবে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ইলোনা জ্যাবো দে কার্ভালহো
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, ব্রাজিল

বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইলোনা জ্যাবো দে কার্ভালহো। তিনি একজন নাগরিক উদ্যোক্তা, ইগারাপা ইন্সটিটিউটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইন্সটিটিউটটি সুরক্ষা, জলবায়ু এবং উন্নয়নের ছেদগুলো নিয়ে অগ্রণী গবেষণা, নতুন প্রযুক্তি এবং নীতি তৈরি করেছে।

ওলিভেট ওটেলে
ইতিহাসবিদ

ব্রিটেনের ইতিহাসবিদ ওলিভেট ওটেলে বিশ্বের নারী চিন্তাবিদদের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন। তিনি কালো নারীদের মধ্যে প্রথম যিনি ব্রিসটল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক।

রুথ উইলসন গিলমোর
ভূগোলবিদ, মার্কিন

বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের মধ্যে মার্কিন ভূগোলবিদ রুথ উইলসন গিলমোর স্থান সপ্তম। তিনি সেন্ট্রার ফর প্লেসের পরিচালক, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ এবং নিউইয়র্কের সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের পৃথিবী এবং পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপক। এ বছর তিনি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব জিওগ্রাফারস আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড পান।

গ্রেটা সেলেস্ট গারউইগ
চলচ্চিত্র নির্মাতা

গ্রেটা সেলেস্ট গারউইগ। বিশ্বসেরা চিন্তাবিদদের তালিকায় রয়েছেন তিনিও। তিনি একজন মার্কিন অভিনেত্রী, লেখক, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। ২০১৭ সালে ‘লেডি বার্ড’ চলচ্চিত্র দিয়ে গ্রিটা গারউইগের একক পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয়। ছবিটি সমাদৃত হয়। ৭৫তম গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে সেরা সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার লাভ করে। ‘লেডি বার্ড’ ছবিতে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের জন্য তিনি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। অর্জন করেন একাডেমি অ্যাওয়ার্ডও। গারউইগ অস্কারের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে মনোনীত পঞ্চম নারী।

হিলারি ম্যানটেল
ঔপন্যাসিক

সাহিত্যিক হিলারি ম্যানটেলের লেখা বই ‘উল্ফ হল’ ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়। এ বইয়ের জন্য তিনি ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন। তার সাহিত্যকর্মগুলো ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক উপন্যাস পর্যন্ত বিস্তৃত। ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে তিনি বেশ কিছু পত্রিকা ম্যাগাজিনে সমালোচক হিসেবেও কাজ করছেন। সমাজের নানা বিষয় উঠে এসেছে তার লেখায়। বিশ্বসেরা চিন্তাবিদের তালিকায় এর আগেও ছিলেন তিনি। এবারও তিনি তালিকায় রয়েছেন।

সারাহ গিলবার্ট
বিজ্ঞানী

বিজ্ঞানী সারাহ গিলবার্ট। কোভিড-১৯ নিরসনের ভ্যাকসিনের খোঁজে পৃথিবী যখন তোলপাড় তখন সর্বপ্রথম ‘সুখবর’ দেন এই সারাহ গিলবার্টই। লন্ডনের জেনার ইন্সটিটিউট ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন। এ গবেষণার পুরোভাগে রয়েছেন সারাহ গিলবার্ট। বিশ্বসেরা চিন্তাবিদদের তালিকায় তিনি জায়গা করে নিয়েছেন।

এস্তের ডুফলো
অর্থনীতিবিদ

ফরাসি অর্থনীতিবিদ এস্তের ডুফলো ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন। নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে তিনি সর্বকনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। তার স্বামী ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। এ বছর তিনি বিশ্বসেরা চিন্তাবিদের তালিকায় রয়েছেন। তিনি ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন অর্থনীতির অধ্যাপক।

কোরনেল ওয়েস্ট
দার্শনিক আফ্রিকান-আমেরিকান

বিশ্বের সেরা ১০ চিন্তাবিদের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন কোরনেল রোনাল্ড ওয়েস্ট। তিনি একজন আমেরিকান দার্শনিক, রাজনৈতিক কর্মী, সামাজিক সমালোচক, লেখক এবং বুদ্ধিজীবী। পশ্চিম আমেরিকার বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে তিনি যুক্ত। তিনি বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টারিতে অভিনয় করেছেন।

ফিলিপ্পে ভ্যান প্যারিস
দার্শনিক, বেলজিয়াম

বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছেন ফিলিপ্পে ভ্যান প্যারিস। তিনি একজন বেলজিয়ামের রাজনৈতিক দার্শনিক এবং রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ। তিনি একটি মৌলিক আয়ের ধারণার এবং ভাষাগত ন্যায়বিচারের প্রথম পদ্ধতিগত চিকিৎসার জন্য অন্যতম প্রবক্তা। প্রধান প্রতিরক্ষাকারী হিসেবে পরিচিত।

 

একজীবনে সফলতার প্রধান শর্ত সুপরিকল্পনা

সারা বিশ্বের রাজনৈতিক আলোচনায় এখন বাইডেন সর্বাধিক আলোচিত। আর তার নব্য ঘরানার প্রশাসন নিয়েও জল্পনা-কল্পনা অন্তহীন। তারই ধারাবাহিকতায় জেনিফার গ্রানহাম নামটি এখন আলোচনার শীর্ষে।

শুধু গ্রানহাম নামেই সারা বিশ্বে আলোচিত। পুরো নাম জেনিফার গ্রানহাম। জন্ম ১৯৫৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। জন্ম ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যানকোভারে। বর্তমানে রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, লেখক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে সুখ্যাত। ২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল অবধি ছিলেন মিশিগানের গভর্নর। ২০১৭ সালে প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনে রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে যুক্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের মা।

মাত্র চার বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে কানাডা থেকে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রেও এসেছিলেন। আনাহিম, সান জোসে এবং সান কার্লোসে তিনি বেড়ে ওঠেন। ১৯৭৭ সালে সান কার্লোস হাইস্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার আগে ইদা প্রাইস জুনিয়র হাই এবং ডেল মার হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। মিস সান কার্লোস সুন্দরী প্রতিযোগিতায় তিনি জয়ী হয়েছেন।

শৈশব থেকেই হলিউডে অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তেমন সফল হতে না পেরে অভিনয় ছেড়ে দেন। ১৯৭৮ সালে ট্যুর গাইড হিসেবে চাকরি করেন। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে পরিসেবা এবং রেডউড সিটিতে মেরিন ওয়ার্ল্ড আফ্রিকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম নারী ট্যুর গাইড হিসেবেও কাজ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন মন্ত্রিসভার জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে জেনিফার গ্রানহামের নাম ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে বাইডেন নিজে গ্রানহামকে সবার সামনে উপস্থিত করে তার যোগ্যতা সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দেন। মূলত এরপর থেকেই গ্রানহাম নামটি আরও বেশি গুরুত্ব পায়।

সাবেক গভর্নর জেনিফার গ্রানহাম সম্পর্কে জো বাইডেন বলেন, আমার ভালো বন্ধু তিনি। জ্বালানি ও পরিবেশ বিভাগের সদস্যরা মেধাবী, যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছেন। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে প্রশাসনে গ্রানহাম ভবিষ্যতে সুদক্ষতার সঙ্গে কাজ করে নিজেকে আরও যোগ্য প্রমাণ করবেন।

সম্ভাব্য নতুন মন্ত্রিসভার পরিচিতি অনুষ্ঠানে জ্বালানিমন্ত্রী করায় ও তার প্রতি আস্থা রাখায় শুরুতেই জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান গ্রানহাম।

সামনের সময়ে সব দেশ ও গাড়ি কোম্পানিগুলো বৈদ্যুতিক গাড়ি ও ব্যাটারি তৈরিতে ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। সৃষ্টি হবে লাখ লাখ কর্মসংস্থান। সুতরাং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে অপার সম্ভাবনা সামাল দিতে পারা দেশগুলোই থাকবে করোনা অর্থনীতি জয়ী দেশগুলোর সামনের কাতারে। যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকবে না বলে জানান ৬১ বছর বয়সি গ্রানহাম।

বাইডেন প্রশাসন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নির্বাচনের আগে থেকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই জ্বালানির উৎস বিশেষ করে গ্যাস, কয়লা আর তেলের ব্যবহার কমিয়ে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে এমন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করবে বাইডেন প্রশাসন। এ ব্যাপারে গ্রানহাম এখন সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। অতীতে তিনি দেশের জ্বালানি শিল্পকে কীভাবে গ্যাস, তেল ও কয়লানির্ভরতা থেকে বায়ু ও সৌর জ্বালানিতে রূপান্তরিত করা যায় তার ওপর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড্যান কামম্যান জেনিফার গ্রানহাম সম্পর্কে বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তিনি অসাধারণ ও অভাবনীয়। কারণ তিনি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি বোঝেন এবং জানেন। কীভাবে বড় দায়িত্ব পরিকল্পনার সঙ্গে এগিয়ে নিতে হয় তাও তার অজানা নয়। ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামা নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়ার কথা আলোচনায় এসেছিল।

চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হবে। সফল হতে হলে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সুস্পষ্ট আর সম্যক ধারণা থাকাটা প্রথম শর্ত। সময় যেমনই আসুক ব্যবস্থাপনা আর সুপরিকল্পনা থাকলে তা থেকে উতরিয়ে যাওয়া কঠিন নয়। করোনা জয় করে জীবন একদিন স্বাভাবিক হবেই। বিশ্বাস নিয়ে একটু একটু করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। প্রতিদিনের কাজেও সফলতা আর না পারা থাকে। তাই জয়-পরাজয় নিয়ে থমকে না থেকে শুধু কাজ করে গেলে সফলতার পথ আপনা থেকেই অনুকূলে আসে। নিজের কথাগুলো এভাবেই জানিয়েছেন জেনিফার গ্রানহাম।

 

গরম ভাতে বেলে-টমেটোর টক

মাছে ভাতে বাঙালি। গরম ভাতের সঙ্গে মাছের বিভিন্ন পদ খিদে আরও বাড়িয়ে তোলে। মাছ খেতে সবাই কমবেশি পছন্দ করে থাকেন। মাছ দিয়ে বিভিন্ন পদ তৈরি করা যায়।

বেলে মাছ অনেকেরই পছন্দের। এ মাছের টক খেয়েছেন কখনো। রান্না করতেও কম সময় লাগে; আর স্বাদেও অনন্য বেলে-টমেটোর টক।

টমেটো ও মাছ দিয়ে দুর্দান্ত এই পদ চাইলেই দুপুরে রান্না করতে পারেন। উপকরণও লাগবে সামান্য। চলুন তবে জেনে নিন রেসিপি-

উপকরণ

১. বেলে মাছ ৪০০ গ্রাম
২. টমেটো কুচি ১টি
৩. পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ
৪. রসুন বাটা ১ চা-চামচ
৫. জিরা বাটা ১ চা-চামচ
৬. কাঁচা মরিচ ফালি ২-৩টি
৭. হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ
৮. মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ
৯. লবণ স্বাদমতো
১০. তেল প্রয়োজনমতো
১১. পানি আধা কাপ।

পদ্ধতি

প্রথমে মাছ কেটে ধুয়ে নিন ভালোভাবে। এর সঙ্গে লবণ, হলুদ ও রসুন বাটা মেখে ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে ভেজে তুলে রাখুন।

এবার প্যানে তেল গরম করে বাটা ও গুঁড়ো মশলাসহ লবণ দিয়ে কষিয়ে নিন। সামান্য পানি দিয়ে নিবেন।

মশলা কষানো হলে টমেটো কুচি দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে পানি দিন। পানি ফুটে উঠলে বেলে মাছগুলো ঢেলে দিন।

ঝোল ঘন হলে কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন। চাইলে ধনেপাতা কুচিও নামানোর আগে দিতে পারেন। গরম ভাতের সঙ্গে এই পদ খেতে খুবই মজাদার।

 

প্রয়োজন পারিবারিক সচেতনতা

সম্প্রতি রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে সদ্য কিশোর বয়স পার করা তার ১৮ বছরের এক বন্ধু।

চলতি বছরের শুরুর দিকেই রাজধানীর কামরাঙ্গী চরের কয়লাঘাট এলাকায় পায়ে পাড়া দেওয়ার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয়েছে সিফাত নামের ১২ বছর বয়সি এক শিশুকে।

এ ঘটনায় যে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়- তাদের সবার বয়সও ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়, প্রায়ই ধর্ষণ, ইভটিজিং, চুরি, আত্মহত্যা, মাদকসেবন, হত্যা থেকে শুরু করে এমন সব লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড আমরা আশপাশে দেখি কিংবা পত্রিকা বা সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি যেখানে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্ত দু’জনই অপ্রাপ্তবয়স্ক।

এ বিষয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের মনস্তত্ত্ববিদ তারানা আনিস বলেন, ‘কিশোর-কিশোরীরা অপরাধ প্রবণতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। শিশু বিকাশের কয়েকটি ধাপ রয়েছে এবং প্রতিটি ধাপের কিছু চাহিদা বা বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। কিশোর বয়সে মনের মাঝে নানারকম অ্যাডভেঞ্চার কাজ করে। এ বয়সে তারা নিজেকে প্রকাশ করতে চায়। আত্মপ্রকাশের চাহিদা তাদের কৌতূহলপ্রিয় করে তোলে। কৌতূহলের বশে তারা নতুন কিছু জানতে চায়, করতে চায়। তাদের একটা আলাদা জগৎ থাকে, মতামত থাকে। তারা চায় তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হোক। সামান্য প্রলোভন, কৌতূহল, আনন্দ ও ক্রোধ তাদের আলোড়িত করে। যা অনেক সময় কিশোর-কিশোরীদের বিপথগামী করে তোলে। তাদের বাধা দেওয়া হলে, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া না হলে তারা সেই কাজটি করার জন্য আক্রমণাত্মক ও অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে।’

করোনার কারণে অনেকদিন ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এখন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট থেকে শুরু করে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজ অনলাইনে করতে হচ্ছে। আবার বাইরে যাওয়ার সুযোগ কমে যাওয়ায়, ইনডোর-আউটডোর গেমের সুযোগ কমে যাওয়ায় বর্তমানে ইন্টারনেটেই শিশু-কিশোরদের বেশিরভাগ সময় কাটছে। এ সুযোগে তারা ইন্টারনেটে নানা ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক মুভি দেখছে, গেম খেলছে, সামাজিক মাধ্যমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ইন্টারনেটে মারামারি, ধ্বংসাত্মক গেম খেলে কিশোরীরা বাস্তবেও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। সিনেমা, অপরাধবিষয়ক বিভিন্ন সিরিয়াল দেখে তারা অপরাধ সংঘটনের বিভিন্ন কৌশল শিখছে। চাওয়া-পাওয়া বা মতের মিল না হলে, ধর্ষণে বাধা দিলে খুন করে ফেলছে বন্ধু বা সহপাঠীকেই।

মনস্তত্ত্ববিদ তারানা আনিস জানান, ‘বয়ঃসন্ধিক্ষণে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে হরমোনাল চেঞ্জ হয়। এ বয়সে তাদের সেক্সের প্রতি আগ্রহ, কৌতূহল তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের দেশে সেক্স রিলেটেড বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করি না। সচেতন করারও প্রয়োজন বোধ করি না। এতে করে তারা সেক্স রিলেটেড বিষয়গুলো বন্ধুবান্ধব, সহপাঠীদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করে। এতে অনেক ক্ষেত্রেই এ বিষয়ে তারা ভুল ইনফরমেশন পায়। যেটা তাদের ভুলের দিকেই প্রভাবিত করে। এমনও হচ্ছে কিশোর বা কিশোরীরা হয়তো শিক্ষামূলক কোনো কনটেন্ট গুগলে সার্চ করছে কিন্তু পাশে প্রাপ্তবয়স্ক বা নিষিদ্ধ কোনো কনটেন্ট চলে আসছে- এসব কনটেন্ট কিন্তু তাদের কৌতূহল প্রবণ করে তোলে। আবার ওই কনটেন্টটি সামনে চলে আসার মুহূর্তে অনেক সময় মা-বাবা তা দেখে ফেলছে এবং সন্তানকে এসব দেখার কারণে বকাঝকা করছে। এতে কিন্তু ওর মধ্যে মা-বাবা ওকে ভুল বুঝল এমন একটা ধারণা জšে§, সঙ্গে লুকোচুরি করে এ জিনিসগুলো দেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি করে।’

শুধু ইন্টারনেট বা বাবা-মায়ের অতিশাসন নয়, মাতা-পিতার অযত্ন-অবহেলা, উদাসীনতা, সন্তানকে প্রয়োজনীয় ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা না দেওয়া, পিতা-মাতার ঝগড়া বিবাদ, ভাঙন, দারিদ্র্য, আর্থিক প্রাচুর্যতা, সুষ্ঠু বিনোদনের সংকট, মাদকসেবন, খারাপ সঙ্গসহ আরও বিভিন্ন কারণ কিশোরদের অপরাধী করে তোলে।

‘কিশোর বয়সে সন্তানকে খারাপ সঙ্গ থেকে দূরে রাখতে সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। তাকে তার মতো করেই বুঝতে হবে, মিশতে হবে। মনে করুন আপনি আপনার মেয়ের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশলেন। সেই বন্ধুত্ব থেকে আপনার মেয়ে আপনাকে এসে বলল মা ওই ছেলেটা আমাকে প্রোপোজ করেছে। এটা শুনে আপনি তাকে বকাঝকা করলেন কিংবা এ জন্য তাকেই দোষারোপ করলেন- এটা কিন্তু সঠিক পদ্ধতি নয়। আপনার সন্তানের সঙ্গে বন্ধু হয়েই তাকে ধীরে ধীরে বিষয়টির নেগেটিভ দিকগুলো বুঝাতে হবে। সন্তানের সঙ্গে ইভেকটিভ কমিউনিকেশন বাড়াতে হবে। অর্থাৎ তাদের কথাগুলো মন দিয়ে শুনতে হবে। তারা কী বলতে চাচ্ছে সেটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে এবং জাজমেন্টাল না হয়ে অনেক বিষয় চিন্তা করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি তাকে সমান হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। বাসার কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার মতামতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে’- বলে তিনি মনে করেন ।

বাবা-মায়ের মধ্যে যদি সব সময় ঝগড়া বিবাদ লেখে থাকে, তাদের মধ্যে যদি সম্মানসূচক সম্পর্ক না থাকে তাহলে সন্তানরাও এ ধরনের নেতিবাচক আচরণ শিখে। কারণ তারা যত না শুনে শেখে তার চেয়ে অনেক বেশি দেখে শেখে। আপনি সন্তানকে বলছেন মোবাইল না চালাতে, টিভি না দেখতে কিন্তু আপনি নিজে সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে পড়ে আছেন, সিরিয়াল দেখছেন। এতে কিন্তু আপনার কথাগুলো আপনার সন্তান মান্য করবে না। কারণ বড়রা বা বাবা-মা যেটা করে না শিশুরা ধরেই নেয় যে, তারা সেটা না করলেও চলবে।

সন্তানকে রক্ষা করা বাবা-মায়ের দায়িত্ব। তবে সন্তানকে বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সর্বক্ষণ চোখে চোখে রাখা কোনো ভালো অভ্যাস নয়। সন্তান কার সঙ্গে মিশল, ইন্টারনেটে কী করছে এ বিষয়গুলো অবশ্যই মনিটরিং করতে হবে। কিন্তু এ মনিটরিং যেন টর্চারের মতো না হয়। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সেই সঙ্গে শুধু সন্তান ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা বা ঘুমাচ্ছে কিনা এ বিষয়গুলো চিন্তা না করে তার সঙ্গে কানেকশন বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। কারণ সন্তানকে কারেক্ট করার চেয়ে তার মনোজগতের সঙ্গে কানেকশন বাড়ানো বেশি জরুরি। এতে করে সে ভুল পথে পা বাড়ানোর আগেই আপনি তা বুঝতে পারবেন এবং সংশোধনের সুযোগ পাবেন।

হাজার ব্যস্ততার মাঝেও বাবা-মায়েদের সন্তানের সঙ্গে গুণগত সময় ব্যয় করতে হবে। তাদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। ছোটবেলা থেকে ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে মিশতে দিতে হবে। এতে বড় হলে কিশোরদের সহপাঠী বন্ধু বা মেয়েদের প্রতি অতি কৌতূহল তৈরি হবে না। স্কুলগুলোতে পাঠ্যসূচিতে সেক্স এডুকেশন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ক্লাসে আলোচনা করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।-যুগান্তর

 

গ্রেটার বিরুদ্ধে ভারতে মামলা

ভারতের নতুন কৃষি আইনের বিরোধিতা করে দেশটির কৃষকদের পক্ষে কথা বলায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দিল্লি পুলিশ।

এর আগে বুধবার রাতে সিএনএনের একটি নিউজ টুইটারে শেয়ার করে সেখানে কৃষকদের পক্ষে কথা বলে গ্রেটা। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও শত্রুতা ছড়ানোর অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে।

এর আগে একই লিংক শেয়ার করে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সংগীতশিল্পী পপস্টার রিহানা। তিনি কৃষক আন্দোলনের সংবাদ শেয়ার করে লেখেন, ‘কেন আমরা এই বিষয় নিয়ে কথা বলছি না?’

এদিকে সর্বেশেষ একটি টুইটে গ্রেটা লেখেন, আমি এখনো কৃষক এবং তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সমর্থন করছি। কোনো হুমকি, ঘৃণা অথবা মানবাধিকার লঙ্ঘন আমাকে সরাতে পারবে না।

সূত্র: এনডিটিভি

 

উইঘুর ‘নারী ধর্ষণ’: চীনকে ফল ভোগের হুশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের আটক রাখার বন্দিশিবিরগুলোতে নারীরা ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এমন খবরে ‘গভীরভাবে উদ্বেগের’ কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি চীনকে এর ফল ভোগ করতে হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে শিনজিয়াংয়ে সংঘটিত ‘বর্বরতার জন্য চীনের মারাত্মক পরিণতি ভোগ করা উচিত’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, উইঘুর নারীদের ওপর চলা অবিচার দেখে তারা বিচলিত হয়ে পড়েছে। চীনের আটককেন্দ্রের সাবেক ভুক্তভোগী ও প্রহরীর বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

একসময় বন্দি হিসেবে থাকা কয়েকজন ও একজন নিরাপত্তারক্ষী বিবিসিকে ক্যাম্পে সংগঠিতভাবে দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রমাণ দেখা কিংবা এ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।

গত বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিবেদনটি পুরোটাই মিথ্যা। তবে চীনে বন্দিশিবিরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনেও বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, চীনের জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর ও অন্য মুসলিমদের আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং নারীদের ওপর অত্যাচার চালানোর খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

তিনি আরো বলেছেন, এই নৃশংসতা বিবেককে নাড়া দেয় এবং এর গুরুতর ফল অবশ্যই তাদের ভোগ করতে হবে।

 

শিক্ষিকা এখন মুদি-দোকানি

চন্দনা সাহা, দুই সন্তানের জননী। ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। চাকরি করতেন স্থানীয় গোবিন্দাসী ক্যাডেট স্কুলে। বিগত আট বছর ধরে স্কুলে চাকরি করে আসছিলেন।

স্বামী বিপ্লব সাহা দুই বছর আগে ব্রেইন স্ট্রোক করে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। কিন্তু তাতেও অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। এরই মাঝে শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় চন্দনা-বিপ্লবের সুখের সংসার। সন্তানদের মুখের আহার ও অসুস্থ স্বামীর ওষুধের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেয়ে যান চন্দনা।

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত ৩৫টি কিন্ডারগার্টেনের কর্মজীবী ৫০০ শিক্ষক-কর্মচারী বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। চন্দনা সাহা (৩৫) তাদেরই একজন সংগ্রামী নারী।

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশের মতো এ উপজেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছেন চন্দনা সাহার মত অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা। অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী ঋণ করে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় অনেকে বিভিন্ন পেশার কাজ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

করোনা ভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। সর্বশেষ ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলে চরম হতাশায় পড়েছেন চন্দনার মতো অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

চন্দনা সাহা জানান, আমি আট বছর ধরে গোবিন্দাসী ক্যাডেট স্কুলে চাকরি করি এবং স্বামী বিপ্লব সাহা একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান চালিয়ে যা রোজগার হতো তা দিয়ে আমাদের চার সদস্যের সংসার ভালোই চলতো। কিন্তু বিগত দুই বছর আগে হঠাৎ আমার স্বামীর ব্রেইন স্ট্রোক হয়। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। কিন্তু তাতে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এছাড়া তিনি কাজ কর্মও করতে পারেন না। বর্তমানে আমার সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই কোনো উপায় না দেখে ধারদেনা করে নিজ বাড়িতেই একটি মুদি দোকান দিয়েছি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দোকানে বিক্রি করে কোন রকম সংসার চালাচ্ছি।

গোবিন্দাসী ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, সরকারি যাবতীয় কার্যক্রমের সঙ্গে কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা জড়িত। বৈশ্বিক এ মহামারির কবলে পড়ে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন উপজেলার কয়েকশ শিক্ষক-কর্মচারী। বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা বেতন পরিশোধ না করায় স্কুল মালিকরা শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। যার ফলে এমন নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক কিন্ডার গার্টেনের বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করতে না পাড়ায় আসবাব পত্র বিক্রি করে দিয়ে দায় দেনা পরিশোধ করা হয়েছে। এমন দুর্দিনে কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

 

ঈশ্বরদীর রত্নগর্ভা আমেনা খাতুনের ইন্তেকাল

ঈশ্বরদীর মহিয়সী নারী, রত্নগর্ভা মাতা এবং বিশিষ্ট ঠিকাদার মরহুম মোজাহার আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুন (৯০) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ঈশ্বরদীর চরসাহাপুর নতুন হাট মোড়ে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারনে তিনি মারা যান।

সম্প্রতি ঈশ্বরদীর খ্যাতিমান এই নারী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে পাবনা জেলার সফল নারী জননী হিসেবে ‘জয়ীতা’ পদকে ভূষিত হন। জীবদ্দশায় তিনি ৭ ছেলে এবং ১ মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন। যারা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

রত্নগর্ভা মা আমেনা খাতুনের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশের সাবেক ডিআইজি মাহফুজুল ইসলাম, মেজ ছেলে সড়ক ও জনপথের বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম (মরহুম), তৃতীয় ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলাম, চতুর্থ ছেলে অতিরিক্ত সচিব মনোয়ারুল ইসলাম, পঞ্চম ছেলে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নাজমুল হাসান, ষষ্ঠ ছেলে পুলিশের এসপি সাইফুল ইসলাম এবং ছোট ছেলে ঠিকাদার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাহিদুল ইসলাম। একমাত্র মেয়ে মাহফুজা ইসলাম মিনু মাস্টার্স পাশ ও সমাজ সেবক।

সফল ও গুণী এই নারীর নামাজে জানাজা শুক্রবার বাদ মাগরিব চরসাহাপুর কেন্দ্রীয় গোরস্থানে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি ছেলে-মেয়ে, নাতি নাতনী, আত্নীয় স্বজন ও প্রচুর গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।