banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

পাঞ্জাবি পরা বর, প্যান্ট-স্যুট পরা কনে

বিয়েতে সাধারণত সিল্কের শাড়ি অথবা লেহেঙ্গা পরেন ভারতীয় নারীরা। অনেকে লাল রঙের শাড়ি-লেহেঙ্গা পরতে পছন্দ করেন। অনেকে আবার সোনা বা রুপার সুতা দিয়ে এমব্রয়ডারি করা লেহেঙ্গা পরেন। এবার সাঞ্জানা রিশি নামের এক নারী বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন প্যান্ট-স্যুট পরে।

চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লির ব্যবসায়ী ধ্রুব মহাজনের সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে হয় ২৯ বছর বয়সী ভারতীয়-আমেরিকান উদ্যোক্তা সাঞ্জানা রিশির। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন। গত বছর দেশে ফেরেন রিশি।

বিয়েতে সাঞ্জানা রিশি হালকা নীল রঙের প্যান্ট-স্যুট পরেন। ধ্রুব মহাজন পরেন পাঞ্জাবি। তার প্যান্ট-স্যুট পরার বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ফ্যাশন ডিজাইনার ও ফ্যাশন সচেতন ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন। ভারতীয় নারীরা বিয়েতে ঐতিহ্যবাহী পোশাক ছেড়ে প্যান্ট-স্যুট পরা ধরে কি-না, সাঞ্জানা রিশির এ ঘটনার পর সেটা নিয়েও ভাবছেন অনেকে।

বিয়ের পোশাক নিয়ে সাঞ্জানা রিশি বলেন, প্যান্ট-স্যুট তার খুব পছন্দের। এ কারণে বিয়েতে হালকা নীল রঙের প্যান্ট-স্যুট পরেছিলেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক বছর ধরে পশ্চিমা কনেদের প্যান্ট-স্যুট পরতে দেখা যাচ্ছে। ডিজাইনাররা বিয়ের পোশাক হিসেবে ট্রাউজার ও প্যান্ট-স্যুট প্রমোট করছেন। এ ব্যাপারে তারকাদের সমর্থনও পাচ্ছেন তারা।

গত বছর লাস ভেগাসে ‘গেম অব থ্রোনস’র নায়িকা সোফি টার্নারের বিয়ে হয়। তিনি সংগীতশিল্পী জো জোনোসকে বিয়ে করেন। বিয়েতে সাদা ট্রাউজার পরেন সোফি টার্নার। সম্প্রতি বিয়েতে অনেক তারকায় এ ধরনের পোশাক পরছেন। তবে রাঞ্জানা রিশি যে পোশাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, তা সচরাচর ভারতীয়দের নারীদের বিয়ের পোশাক হিসেবে পরতে দেখা যায় না।

রিশির বিয়ের পোশাক নিয়ে ভারতের বিবাহবিষয়ক এক ম্যাগাজিনের সাবেক সম্পাদক নুপুর মেহতা পুরি বলেন, ‘আমি কখনো বিয়েতে ভারতীয় নারীদের এ ধরনের পোশাক পরতে দেখিনি। তারা বিয়েতে সাধারণত ভারতের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন। সেই সঙ্গে মা-দাদির কাছ থেকে পাওয়া গয়না পরেন। বিয়েতে রিশির প্যান্ট-স্যুট পরার বিষয়টি এখানে একেবারে নতুন।’

গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের কাজ সম্পন্নের পরিকল্পনা করেছিলেন সাঞ্জানা রিশি। সেখানে তার ভাই ও অধিকাংশ আত্মীয়-স্বজন থাকেন। চলতি মাসে ভারতীয় রীতিতে দ্বিতীয় দফা বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসে কারণে এসব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

রিশি ও ধ্রুবর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ভারতে প্রেমের সম্পর্কগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো স্বাভাবিকভাবে দেখা হয় না। এ ব্যাপারে রিশি বলেন, যদিও তার বাবা-মা প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ, তারপরও তার বন্ধু ও প্রতিবেশীদের দিক থেকে বিয়ে নিয়ে একটু চাপ ছিল।

রিশি আরও বলেন, ‘গত আগস্টের এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই সিদ্ধান্ত নিলাম, বিয়েটা সেরে ফেলব। তবে যখনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম তখন একটা বিষয় মাথায় আসল, বিয়েতে আমি কোন পোশাক পরবো। আমি জানি আমার প্যান্ট-স্যুট পছন্দ। তাই সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললাম।’

রিশির স্বামী ধ্রুব মহাজন বলেন, ‘বিয়ের দিন তাকে দেখার আগে আমি ভাবিনি যে আসলে সে কোন ধরনের পোশাক পরবে। আমার কাছে এটা কোনো ব্যাপার ছিল না। কারণ আমি জানি সাঞ্জানা রিশি যাই-ই পরুক না কেন, সে একটা সাড়া জাগাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম যখন আমি তাকে দেখলাম, সে যে ট্রাউজার পরেছে তা লক্ষ্য করিনি। পরে ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম, তাকে খুব সুন্দর লাগছে, একেবারে পরীর মতো।’

 

শখের বশে শুরু করে এখন লাখ টাকার মালিক

মেঘলা ভৌমিক থাকেন ধানমন্ডির জিগাতলায়। বর্তমানে এমবিএ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাশাপাশি একটি আইটি কোম্পানিতে বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। বাবা-মা ও দুই বোন নিয়ে মেঘলার পরিবার।

ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকির প্রতি ছিল প্রবল ঝোঁক। শৈশবে ২ বছর একটি স্কুলে ড্রইং শিখেছিলেন। তারপর থেকেই নিজের ইচ্ছায় ছবি আঁকা অব্যাহত রাখেন।

রংতুলির সাথে একটি অন্যরকম গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেঘলার। কারণ রঙিন সব কিছুই তার অনেক ভালো লাগে। নিজের ঘর থেকে শুরু করে আসবাবপত্র- সব কিছুই রঙিন রাখতে চান।

১০ বছর ধরে ছবি আঁকছেন মেঘলা। ২০১৬ সাল থেকে তার আঁকা ছবিগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি শুরু করেন। এ ছাড়াও মেঘলার কিছু নির্দিষ্ট কাস্টমার আছেন; যারা তার কাছ থেকে নিয়মিত আঁকা ছবিগুলো কিনে নেন।

মেঘলা ভৌমিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনা মহামারীতে চাকরি নিয়ে একটু আতঙ্কে ছিলাম। যেকোনো কারণে যদি চাকরি চলে যায়, তখন আমি কী করব? কখনো হ্যান্ড পেইন্টিং নিয়ে কাজ শুরু করব ভাবিনি। এ ভাবনা মূলত লকডাউনে মাথায় আসে।’

তিনি বলেন, ‘তখন মনে হলো যে, এটাকে আমি এখন আমার কাজে লাগাতে পারি। এসব কিছুর পেছনে আমার বড় বোনের অনুপ্রেরণা অনেক বেশি। বড় বোন আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন এবং এখনো দিয়ে যাচ্ছেন।’

মেঘলা আরও বলেন, ‘প্রথমে আমি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কাপড় কিনে তাতে হ্যান্ড পেইন্ট করে বিক্রি শুরু করি। আমার হ্যান্ড পেইন্ট পণ্য বিক্রি হয় মোট ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৯০ টাকা।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে- এটাকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়া এবং চারুকুটির নামে একটি শো-রুম দেওয়া। আমি চাই, আমার পণ্য যেন দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করে।’

তিনি মনে করেন, মানুষ যেন ভবিষ্যতে এখান থেকে এসে নিজে দেখে ঘুরে জিনিস কিনে নিয়ে যেতে পারেন। এ ছাড়াও চারুকুটিরের মাধ্যমে যেন আরও ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়। জাগো নিউজ