ডা. মানিক কুমার তালুকদার
বড়দের মতো শিশুদেরও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। শিশুর বয়স দুই থেকে তিন বছরের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। শৌচাগার ব্যবহারের অভ্যাস করানোর সময়ও এ সমস্যা হয়ে থাকে।
শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কী কারণে শিশুদের এ রোগ হয়?
এ বিষয়ে বাবা-মায়ের জানাটা খুবই জরুরি। শৌচাগার ব্যবহার করা শিখতে যে শিশুদের কষ্ট হয়, তাদেরই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। শিশু শৌচাগার ব্যবহারে সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তাড়াহুড়ো না করে।
মলত্যাগের বেগ চেপে রাখা এবং পানি পানের ঘাটতির কারণে এই রোগ হতে পারে। তাই শিশুর মলত্যাগের অভ্যাসে বাবা-মায়ের নজরদারি প্রয়োজন। বাবা-মাকে অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
কী করবেন
১. মলের পরিমাণ, রঙ, ধরন, মলত্যাগের সময় শিশু কোনো অস্বস্তি বোধ করে কিনা, কীভাবে শিশু বসে, বেগ চেপে রাখে কিনা– এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তাই শিশুদের শৌচাগার ব্যবহার শেখানো উচিত।
২. শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে দিনের যে কোনো সময় দুই থেকে তিনবার ভারী খাবার খাওয়ানোর আধা ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ‘পট’ কিংবা শৌচাগারে বসাতে হবে। ‘অ্যানাল ফিশার’ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। যেন মলত্যাগ হয় ব্যথামুক্ত।
৩. শিশুদের শৌচাগার ‘লো-কমোড’ হলে হাঁটু ভাঁজ করে বসার অভ্যাস করাতে হবে। ‘হাই-কমোড’ হলে পায়ের নিচে পিঁড়ি দিলে ভালো হবে।
৪. শারীরিক কসরতের অনুশীলন শৈশব থেকে রপ্ত করানো উচিত। এতে হজমশক্তি জোরদার হবে ও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
শিশুকে কেমন খাবার খাওয়াবেন
শিশুকে ফল, সবজি ও ভোজ্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া শস্যজাতীয় খাবার, ডাল, যব ও সালাদ খাওয়াতে পারেন। আর শরীরের চাহিদামাফিক পানি পান করাতে হবে। এ ছাড়া দুধ অতিরিক্ত খাওয়ানো ঠিক নয়। আর ‘জাঙ্ক ফুড’ এড়িয়ে যেতে হবে।
লেখক: শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।