banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

যেকারণে ভাঙলো শবনম ফারিয়ার সংসার

দুই বছরও টিকল না অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার সংসার। মাত্র এক বছর নয় মাসের মাথায় সংসার জীবন থেকে ছুটি নিলেন শবনম ফারিয়া ও হারুন অর রশীদ অপু। গতকাল শুক্রবার তাদের বিচ্ছেদ হয়। দু’জনই তালাকনামায় সই করেছেন। বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গণমাধ্যমকে ফারিয়া বলেন, ‘‘আমার মা সব সময় একটা কথা বলে, ‘আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি!’ ঠিক সেভাবেই আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসাথে থাকতে! কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়! ‘মানুষ কি বলবে’ ভেবে নিজেদের উপর একটু বেশিই টর্চার করে ফেলছিলাম আমরা! ‘জীবনটা অনেক ছোট, এতো কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকার কি দরকার’? এইটা ভেবে আমরা এ বছরের শুরু থেকেই সিদ্ধান্তে আসি আমরা আর একসাথে থেকে কষ্টে থাকতে চাই না!’’

গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপু। বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই সম্পর্ক শিথিল হতে শুরু করে তাদের। অনেক দিন আলাদা থাকতেন দুজন। অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা হলেন তারা।

 

পাঞ্জাবি পরা বর, প্যান্ট-স্যুট পরা কনে

বিয়েতে সাধারণত সিল্কের শাড়ি অথবা লেহেঙ্গা পরেন ভারতীয় নারীরা। অনেকে লাল রঙের শাড়ি-লেহেঙ্গা পরতে পছন্দ করেন। অনেকে আবার সোনা বা রুপার সুতা দিয়ে এমব্রয়ডারি করা লেহেঙ্গা পরেন। এবার সাঞ্জানা রিশি নামের এক নারী বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন প্যান্ট-স্যুট পরে।

চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লির ব্যবসায়ী ধ্রুব মহাজনের সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে হয় ২৯ বছর বয়সী ভারতীয়-আমেরিকান উদ্যোক্তা সাঞ্জানা রিশির। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন। গত বছর দেশে ফেরেন রিশি।

বিয়েতে সাঞ্জানা রিশি হালকা নীল রঙের প্যান্ট-স্যুট পরেন। ধ্রুব মহাজন পরেন পাঞ্জাবি। তার প্যান্ট-স্যুট পরার বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ফ্যাশন ডিজাইনার ও ফ্যাশন সচেতন ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন। ভারতীয় নারীরা বিয়েতে ঐতিহ্যবাহী পোশাক ছেড়ে প্যান্ট-স্যুট পরা ধরে কি-না, সাঞ্জানা রিশির এ ঘটনার পর সেটা নিয়েও ভাবছেন অনেকে।

বিয়ের পোশাক নিয়ে সাঞ্জানা রিশি বলেন, প্যান্ট-স্যুট তার খুব পছন্দের। এ কারণে বিয়েতে হালকা নীল রঙের প্যান্ট-স্যুট পরেছিলেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক বছর ধরে পশ্চিমা কনেদের প্যান্ট-স্যুট পরতে দেখা যাচ্ছে। ডিজাইনাররা বিয়ের পোশাক হিসেবে ট্রাউজার ও প্যান্ট-স্যুট প্রমোট করছেন। এ ব্যাপারে তারকাদের সমর্থনও পাচ্ছেন তারা।

গত বছর লাস ভেগাসে ‘গেম অব থ্রোনস’র নায়িকা সোফি টার্নারের বিয়ে হয়। তিনি সংগীতশিল্পী জো জোনোসকে বিয়ে করেন। বিয়েতে সাদা ট্রাউজার পরেন সোফি টার্নার। সম্প্রতি বিয়েতে অনেক তারকায় এ ধরনের পোশাক পরছেন। তবে রাঞ্জানা রিশি যে পোশাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, তা সচরাচর ভারতীয়দের নারীদের বিয়ের পোশাক হিসেবে পরতে দেখা যায় না।

রিশির বিয়ের পোশাক নিয়ে ভারতের বিবাহবিষয়ক এক ম্যাগাজিনের সাবেক সম্পাদক নুপুর মেহতা পুরি বলেন, ‘আমি কখনো বিয়েতে ভারতীয় নারীদের এ ধরনের পোশাক পরতে দেখিনি। তারা বিয়েতে সাধারণত ভারতের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন। সেই সঙ্গে মা-দাদির কাছ থেকে পাওয়া গয়না পরেন। বিয়েতে রিশির প্যান্ট-স্যুট পরার বিষয়টি এখানে একেবারে নতুন।’

গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের কাজ সম্পন্নের পরিকল্পনা করেছিলেন সাঞ্জানা রিশি। সেখানে তার ভাই ও অধিকাংশ আত্মীয়-স্বজন থাকেন। চলতি মাসে ভারতীয় রীতিতে দ্বিতীয় দফা বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসে কারণে এসব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

রিশি ও ধ্রুবর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ভারতে প্রেমের সম্পর্কগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো স্বাভাবিকভাবে দেখা হয় না। এ ব্যাপারে রিশি বলেন, যদিও তার বাবা-মা প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ, তারপরও তার বন্ধু ও প্রতিবেশীদের দিক থেকে বিয়ে নিয়ে একটু চাপ ছিল।

রিশি আরও বলেন, ‘গত আগস্টের এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই সিদ্ধান্ত নিলাম, বিয়েটা সেরে ফেলব। তবে যখনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম তখন একটা বিষয় মাথায় আসল, বিয়েতে আমি কোন পোশাক পরবো। আমি জানি আমার প্যান্ট-স্যুট পছন্দ। তাই সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললাম।’

রিশির স্বামী ধ্রুব মহাজন বলেন, ‘বিয়ের দিন তাকে দেখার আগে আমি ভাবিনি যে আসলে সে কোন ধরনের পোশাক পরবে। আমার কাছে এটা কোনো ব্যাপার ছিল না। কারণ আমি জানি সাঞ্জানা রিশি যাই-ই পরুক না কেন, সে একটা সাড়া জাগাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম যখন আমি তাকে দেখলাম, সে যে ট্রাউজার পরেছে তা লক্ষ্য করিনি। পরে ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম, তাকে খুব সুন্দর লাগছে, একেবারে পরীর মতো।’

 

শখের বশে শুরু করে এখন লাখ টাকার মালিক

মেঘলা ভৌমিক থাকেন ধানমন্ডির জিগাতলায়। বর্তমানে এমবিএ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাশাপাশি একটি আইটি কোম্পানিতে বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। বাবা-মা ও দুই বোন নিয়ে মেঘলার পরিবার।

ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকির প্রতি ছিল প্রবল ঝোঁক। শৈশবে ২ বছর একটি স্কুলে ড্রইং শিখেছিলেন। তারপর থেকেই নিজের ইচ্ছায় ছবি আঁকা অব্যাহত রাখেন।

রংতুলির সাথে একটি অন্যরকম গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেঘলার। কারণ রঙিন সব কিছুই তার অনেক ভালো লাগে। নিজের ঘর থেকে শুরু করে আসবাবপত্র- সব কিছুই রঙিন রাখতে চান।

১০ বছর ধরে ছবি আঁকছেন মেঘলা। ২০১৬ সাল থেকে তার আঁকা ছবিগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি শুরু করেন। এ ছাড়াও মেঘলার কিছু নির্দিষ্ট কাস্টমার আছেন; যারা তার কাছ থেকে নিয়মিত আঁকা ছবিগুলো কিনে নেন।

মেঘলা ভৌমিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনা মহামারীতে চাকরি নিয়ে একটু আতঙ্কে ছিলাম। যেকোনো কারণে যদি চাকরি চলে যায়, তখন আমি কী করব? কখনো হ্যান্ড পেইন্টিং নিয়ে কাজ শুরু করব ভাবিনি। এ ভাবনা মূলত লকডাউনে মাথায় আসে।’

তিনি বলেন, ‘তখন মনে হলো যে, এটাকে আমি এখন আমার কাজে লাগাতে পারি। এসব কিছুর পেছনে আমার বড় বোনের অনুপ্রেরণা অনেক বেশি। বড় বোন আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন এবং এখনো দিয়ে যাচ্ছেন।’

মেঘলা আরও বলেন, ‘প্রথমে আমি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কাপড় কিনে তাতে হ্যান্ড পেইন্ট করে বিক্রি শুরু করি। আমার হ্যান্ড পেইন্ট পণ্য বিক্রি হয় মোট ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৯০ টাকা।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে- এটাকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়া এবং চারুকুটির নামে একটি শো-রুম দেওয়া। আমি চাই, আমার পণ্য যেন দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করে।’

তিনি মনে করেন, মানুষ যেন ভবিষ্যতে এখান থেকে এসে নিজে দেখে ঘুরে জিনিস কিনে নিয়ে যেতে পারেন। এ ছাড়াও চারুকুটিরের মাধ্যমে যেন আরও ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়। জাগো নিউজ

 

শীতের রেসিপি: সবজি পনির কারি

বাজারে এখন হাত বাড়ালেই পাবেন শীতের সবজি। সবজি দিয়ে ঘরেই তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু সবজি পনিরের কারি।

আসুন জেনে কীভাবে তৈরি করবেন-

উপকরণ

মটরশুটি এক কাপ, গাজর কিউব করে কাটা এক কাপ, ক্যাপসিকাম কিউব করে কাটা এক কাপ, পনির কিউব করে কাটা এক কাপ, ফুলকপি এক কাপ, মটর ডাল এক কাপ, টমেটো কিউব করে কাটা দুটি, কেসোনাট ১০টি, কাঁচামরিচ চার থেকে পাঁচটি, গরম মসলা এক চা চামচ, হলুদ গুঁড়া এক চা চামচ, মরিচের গুঁড়া এক চা চামচ, তেজপাতা একটি, জিরা আধা চা চামচ, আদা বাটা আধা চা চামচ, ধনেপাতা কুচি সামান্য, মাখন এক টেবিল চামচ, তেল পরিমাণমতো ও লবণ স্বাদমতো।

প্রস্তুত প্রণালি

প্রথমে একটি প্যানে তেল দিয়ে ফুলকপি ও পনির ভেজে নিন। এর পর একই প্যানে মটরশুটি, গাজর, মটর ডাল ও ক্যাপসিকাম ভেজে নিন। ভাজা সব সবজি অলাদা করে প্লেটে তুলে রাখুন।

এবার টমেটো ও কাজুবাদাম আলাদা করে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। আর অন্য একটি প্যানে তেল দিয়ে তাতে জিরা, তেজপাতা, হলুদ গুঁড়া, আদা বাটা ও কাঁচামরিচ দিয়ে কষিয়ে নিন।

এর পর এতে গরম মসলা, মরিচের গুঁড়া ও পানি দিয়ে নেড়ে দিন। পাঁচ মিনিট পর এতে ব্লেন্ড করা টমেটো ও বাদাম বাটা দিয়ে নাড়তে থাকুন।

এখন এতে একে একে সব সবজি ও পনির দিয়ে দিন। এবার এতে লবণ ও মাখন দিয়ে সবজির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। চাইলে সামান্য পানি দিতে পারেন। ঘন হয়ে এলে এর ওপরে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে চুলা থেকে নামিয়ে প্লেটে ঢেলে গরম গরম পরিবেশন করুন দারুণ সুস্বাদু সবজি পনির কারি।

লেখক: গৃহিণী

 

সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর কন্টেন্ট থেকে শিশুদের বাঁচাবেন যেভাবে

সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে নানা ধরনের রেকমেনডেশন পাঠানোর জন্য যেসব প্রোগ্রাম দেয়া থাকে, তা শিশুদের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। মানসিক অবসাদ কিংবা আত্মহত্যার জন্য তথ্য খুঁজছে যে টিনএজার তার কাছে এসব রেকমেনডেশন ইঞ্জিনগুলো আরও বেশি করে তথ্য পাঠায়।

অনেক শিশু অনলাইনে ভিডিও দেখে সেগুলো থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা পেতে পারে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর কন্টেন্ট ও ভিডিও থেকে শিশুদের দূরে রাখতে বাবা-মায়ের সচেতনতাটাই সবচেয়ে জরুরি।

ব্রিটেনের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অফকমের হিসাব অনুযায়ী, ১২-১৫ বছর বয়সীদের ৯০ শতাংশের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে। এদের মধ্যে প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনের এখন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, জনপ্রিয় অ্যাপগুলোতে ১৩ বছর বয়সের নিচে কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলতে দেয়ার কথা না। কিন্তু তা সত্ত্বেও শিশুরা এসব অ্যাকাউন্ট তৈরি করছে এবং তাদের ঠেকাতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো কিছুই করছে না।

ব্রিটেনের শিশু রক্ষা চ্যারিটি ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েল্টি টু চিলড্রেন্স (এনএসপিসিসি) শিশুরক্ষা নীতি বিভাগের প্রধান এন্ডি বারোস জানান, শিশুরা এসব কন্টেন্ট দেখে যে ঝুঁকির মুখে পড়ছে তা বিবেচনা করার জন্য আইন তৈরি করে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করা উচিত।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে ফেসবুক ঘোষণা করেছে, আত্মহত্যা ও ক্ষতিকর কন্টেন্ট খুঁজে বের করতে এবং দূর করতে তারা ইনস্টাগ্রামে তাদের অটোমেটেড টুলের পরিধি আরও বাড়িয়ে দেবে।

কিন্তু ফেসবুক বলছে, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার ওপর ইউরোপের আইন এতই কঠোর যে এ ক্ষেত্রে তাদের খুব বেশি কিছু করার থাকে না।

শিশুদের প্রযুক্তির ভালো ও খারাপ বিষয়গুলো বোঝাতে হবে। নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য অন্যান্য বিষয়ে যেভাবে শিশুদের শিক্ষা দেয়া হয়, তেমনি অনলাইনে নিরাপদ থাকার দক্ষতাও শিশুদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

 

যে কারণে শিশুরা করোনায় কম আক্রান্ত হয়

সফলভাবে সংক্রমণ ঘটানোর জন্য করোনাভাইরাসকে ফুসফুসের ‘এপিথেলিয়াল সেল’ ভেদ করতে হয়। আর যে ‘এনজাইম’ বা ‘কো-রিসেপ্টর’য়ের মাধ্যমে ভাইরাসটি এই কাজ করে সেটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধদের তুলনায় শিশুদের থাকে কম।

গবেষণায় বলা হয়, ওই ‘এনজাইম’কে দমন করতে পারলে প্রাপ্তবয়স্কদের ‘কোভিড-১৯’ থেকে সুরক্ষা দেয়া এবং রোগ সারিয়ে তোলাও সম্ভব হবে।

করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমাদের এখনও অনেকটা জানা বাকি। তবে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তা হল ‘ভাইরাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করার পর এর প্রোটিনের তৈরি ‘স্পাইক’ বা অভিক্ষেপগুলো ‘এসিই টু’ নামক ‘রিসেপ্টর’য়ের সঙ্গে আটকে যায়। এই ‘রিসেপ্টর’গুলো ফুসফুসের নির্দিষ্ট কিছু কোষের উপরিভাগে থাকে।

পরে কোষের ‘টিএমপিআরএসএস ‍টু’ নামক এনজাইম ওই প্রোটিনের অভিক্ষেপগুলো কেটে ধ্বংস করে। এতে ভাইরাস কোষের ‘মেমব্রেন’ বা ঝিল্লির সঙ্গে মিশে যায় এবং একপর্যায়ে কোষের ভেতরে প্রবেশ করে।

একবার কোষের ভেতরে প্রবেশ করতে পারলে ভাইরাস কোষের অভ্যন্তরীণ জিনগত নিয়ন্ত্রণ নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয় এবং নিজের ‘আরএনএ’য়ের ‘কপি’ তৈরি করা শুরু করে।

এই গবেষণার নেতৃত্তে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভ্যানডারবেল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকাল সেন্টার’য়ের ‘পিডিয়াট্রিকস’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেনিফার সুক্রে। তার সঙ্গে আরও ছিলেন এই সংস্থার ‘মেডিসিন’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাথন ক্রপস্কি।

তারা মনে করেন, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ‘কোভিড-১৯’য়ের তীব্রতা বেশি আর শিশুদের ক্ষেত্রে তা কম হওয়ার পেছনে ‘টিএমপিআরএসএস ‍টু’ এনজাইমের ভূমিকা আছে।

ভ্যান্ডারবেল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকাল সেন্টার’য়ের প্যাথলজিস্টদের সাহায্য নিয়ে গবেষকরা বিভিন্ন বয়সের মানুষের ফুসফুস কোষের নমুনা সংগ্রহ করেন।

‘সিঙ্গেল সেল আরএনএ’ সিকোয়েন্সিং’য়ের মাধ্যমে বয়সের সঙ্গে ফুসফুসের বিকাশবিষয়ক তথ্য বের করা হয়।

দেখা যায়, বয়স যত বাড়ে, ততই বাড়ে ‘টিএমপিআরএসএস ‍টু’ সক্রিয়তা।

‘জিন ও প্রোটিন দুই ক্ষেত্রেই ওই এনজাইমের প্রভাব বিদ্যমান’, বলেন সুক্রে।

 

শীতে গরম গরম মাশরুম মাসালা

মাশরুম হলো খাবার উপযোগী ছত্রাকের ফলন্ত অঙ্গ, যা অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধি গুণসম্পন্ন। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ মুখরোচক খাবার হিসেবে মাশরুম খেয়ে আসছেন। এ ছাড়া বর্তমান বিশ্বে সব দেশের মানুষই মাশরুম খেয়ে থাকেন।

মাশরুম দিয়ে মজাদার অনেক খাবার তৈরি করা যায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো মাশরুম মাসালা।

আসুন জেনে নিই কীভাবে তৈরি করবেন মাশরুম মাসালা-

উপকরণ

মাশরুম ২০০ গ্রাম, পেঁয়াজ ২টি (স্লাইস), টমেটো ১টি (কুচি), কাঁচামরিচ ১টি (কুচি), রসুন ৬ কোয়া (কুচি), আদা ১ ইঞ্চি (কুচি), কারি পাতা কয়েকটি, তেল দেড় টেবিল চামচ, জিরা আধা চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া আধা চা চামচ, জিরার গুঁড়া আধা চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি ১/৪ চা চামচ, টকদই ১/৩ কাপ, পানি ১/৪ কাপ, ধনিয়া পাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, ক্যাশুনাট ১ টেবিল চামচ ও গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা চামচ।

যেভাবে তৈরি করবেন

প্যানে তেল গরম করে আস্ত জিরা দিন। এর পর ফুটতে শুরু করলে কাঁচামরিচ কুচি, আদা ও রসুন কুচি দিয়ে নাড়ুন। কাচা গন্ধ চলে গেলে কারি পাতা, পেঁয়াজ কুচি ও হলুদ দিয়ে দিন। পেঁয়াজ বাদামি রঙ ধারণ করলে টমেটো কুচি দিয়ে কয়েক মিনিট নাড়ুন।

টমেটো নরম হয়ে গেলে গুঁড়া মসলা দিয়ে দিন। ভালো করে কষিয়ে মাশরুম দিয়ে দিন। চিনি ও লবণ দিয়ে নেড়ে নিন।

কয়েক মিনিট নেড়ে ঢেকে দিন প্যান। ৫ থেকে ৬ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না করুন। ঢাকনা তুলে জ্বাল কমিয়ে টকদই দিয়ে মিশিয়ে নিন। কয়েক মিনিট নেড়ে ১/৪ কাপ পানি দিয়ে রান্না করুন।

আরেকটি প্যানে ঘি গরম করে ক্যাশুনাট ভেজে নিন। বাদামি রঙ হয়ে গেলে গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মাশরুমের প্যানে ঢেলে নেড়ে নিন। ধনিয়া পাতা কুচি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

খুসখুসে কাশি সারানোর ঘরোয়া উপায়

শীতে বহু রোগব্যাধি দেখা দেয়। ঋতু পরিবর্তনের কারণে হঠাৎ গরম থেকে ঠাণ্ডা অনেকের শরীর নিতে চায় না। ফলে একটু এদিক-ওদিক হলেই সর্দি ও খুসখুসে কাশি হয়ে থাকে।

এমনও হয় যে, খুসখুসে কাশির কারণে সারারাত ঘুমাতে পারেন না। এই সময়ে কাশির সঙ্গে গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টও হতে পারে।

ঘরোয়া উপায়েও এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নিই খুসখুসে কাশি সারানোর ঘরোয় উপায়-

১. সর্দি, কাশি ও ঋতু পরিবর্তনের জ্বর থেকে মুক্তি দিতে পারে এলাচ। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরা এলাচ জীবাণুনাশকও৷ গলাব্যথা এবং শুকনো কাশি হলে নিরাময়ে এলাচ খেতে পারেন। এ জন্য এক কাপ পরিমাণে পানি নিন। পানি হালকা গরম হলে তাতে মধু এবং বেশ কয়েকটি ছোট এলাচ দিন৷ ফুটে গেলে এলাচ ছেঁকে ওই পানি পান করুন৷

২. ঠাণ্ডা ও শুকনো কাশি সমস্যায় মধু খেতে পারেন। ছোট থেকে বড় সবার জন্যই মধু উপকারী। এক টেবিল চামচ মধু সারা দিনে তিন থেকে চারবার খেতে পারেন। শুধু মধু খেতে পারেন, আবার কখনও হালকা গরম পানি কিংবা চায়ের সঙ্গে।

৩. সর্দি, কাশি দূর করতে তুলসি পাতার রস খুবই উপকারী। শিশুদের জন্য কয়েকটি তাজা তুলসি পাতার রসের সঙ্গে একটু আদার রস ও মধু দিয়ে খেলে খুব উপকার পাবেন।

তুলসি পাতা শুকনো কাশির জন্য খুবই কার্যকরী। সকালে খালি পেটে তিন থেকে চারটি তুলসি পাতা খেতে পারেন। তা ছাড়া তুলসি পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন।

৪. নিয়মিত দিনে তিন থেকে চার বার আদা দিয়ে পানি ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে নিন। এর পর লবণ মিশিয়ে কুলিকুচি করুন। গলায় খুসখুসে ভাব দূর করতে আদা চাও খেতে পারেন।

 

ফাইজারের করোনা টিকা উদ্ভাবনে নেপথ্যে যে দম্পতি

ফাইজার দাবি করেছে, তাদের তৈরি টিকা ৯০ শতাংশ কার্যকরী। জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের সঙ্গে এই টিকা তৈরির কাজ করছে ফাইজার। এই টিকা তৈরিতে যারা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন, তারা হলেন উগুর শাহিন ও ওজলেম তুরেসি দম্পতি।

জার্মানির মেন্জ-এ বায়োএনটেক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা উগুর ও ওজলেম। ২০০৮-এ অস্ট্রিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফ হুবেরের সঙ্গে বায়োএনটেক সংস্থা তৈরি করেন তারা।

জন্মসূত্রে উগুর ও তুরেসি দুজনেই তুর্কি। শৈশব থেকেই মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখতেন উগুর। কোলঙের একটি হাসপাতালে কাজ করার সময় তুরেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার।

দুজনেরই স্বপ্ন ছিল ক্যান্সার চিকিত্সা নিয়ে গবেষণা করা। ক্যান্সারের চিকিত্সায় ইমিউনোথেরাপি নিয়ে তাদের সংস্থা গবেষণা এখনও চালাচ্ছে।

সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিজ্ঞানী উগুর শাহিন ও তুরেসিকে বিশ্ব দীর্ঘদিন মনে রাখবে। সংক্রামক রোগ ও টিউমারের চিকিৎসাক্ষেত্রে জীবন উৎসর্গ করেছেন এ জুটি। জীবনের দীর্ঘ সময় ক্যান্সার চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনে কাজ করেছেন দুজন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে এ দুই বিজ্ঞানীর পরিবর্তিত জেনেটিক কোডের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উদ্ভাবন মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বিশ্বের প্রথম কার্যকর করোনার টিকা হিসেবে যে ফাইজারের টিকাকে দাবি করা হচ্ছে, তার পেছনে রয়েছেন এ দুই বিজ্ঞানী।

২০০৮ সালে জার্মানির মেইঞ্জ শহরে শাহিন ও তুরেসি জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা করেন। গত সোমবার প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার করোনার টিকা নিয়ে সুখবর দিয়েছে। নতুন টিকা দিয়ে কোভিড-১৯ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষার দাবি করেছে উৎপাদনকারী দুটি প্রতিষ্ঠান।

করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই ফাইজার ও বায়োএনটেক নামের দুটি প্রতিষ্ঠান টিকা তৈরির চেষ্টা করে আসছিল। এবার প্রতিষ্ঠান দুটি জানিয়েছে, তাদের তৈরি টিকা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।

 

গর্ভাবস্থায় প্রথম সপ্তাহে যেসব লক্ষণ দেখা দেয়

প্রত্যেকটি নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা মুহূর্ত। গর্ভধারণের প্রথম সময়টায় নারীদের শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। গর্ভধারণের লক্ষণ সবার ক্ষেত্রে সমান হয় না।

গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় প্রথম সপ্তাহে কিছু লক্ষণ কমবেশি সব নারীর ক্ষেত্রে দেখা যায়।

আসুন জেনে নিই কী সেই লক্ষণগুলো-

১. রক্তক্ষরণ ঋতুচক্রের মতোই ৬ থেকে ১২ দিন হালকা রক্তপাত হতে পারে। এই লক্ষণ দেখলে প্রেগন্যান্সি পরীক্ষা অবশ্যই করে নিন।

২. প্রথম সপ্তাহে মুখে অন্য রকম স্বাদ বুঝতে পারবেন। অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধও হতে পারে। আসলে গর্ভাবস্থার জেরে শরীরে হরমোনের মাত্রার তারতম্যের কারণেই এই তফাৎ হতে পারে।

৩. গর্ভে সন্তান এলে নারীরা অতিরিক্ত পরিমাণে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। তিনি গর্ভবতী হয়েছেন এমন স্বপ্নই দেখেন তারা।

৪. অনেক সময় মুখে বা হাত-পায়ে কালো কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা য়ায়। গর্ভধারণের সময় ত্বকের সংবেদনশীনতা বেড়ে যায়। এর ফলে চেহারায় এই কালো দাগ-ছোপ দেখা যায়।

৫. ক্লান্তি প্রেগন্যান্সির একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। যেহেতু শরীর এই সময় বাড়ন্ত শিশুকে পুষ্টি দেয়ার জন্য অতিরিক্ত রক্ত উৎপন্ন করে তার জেরে খুব অল্পতেই ক্লান্তি এসে যায়।

৬. প্রেগন্যান্সির সময় শরীর অতিরিক্ত পরিমাণ তরল উৎপাদন করে। আর তার জেরে কিডনি দ্বিগুণ পরিমাণে কাজ করে। আর সে কারণেই অতি ঘন ঘন শৌচাগারে যাওয়া প্রয়োজনীয় হয়।

৭. গর্ভাবস্থায় মাথার যন্ত্রণা হতে পারে। গর্ভধারণ করার প্রথম সপ্তাহের শুরুতেই মাথাব্যথা শুরু হতে থাকে। হরমোনের মাত্রা শরীরে বেড়ে যাওয়ার কারণেই এ সমস্যা হয়।

তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই

 

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কী করবেন

ডা. মানিক কুমার তালুকদার

বড়দের মতো শিশুদেরও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। শিশুর বয়স দুই থেকে তিন বছরের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। শৌচাগার ব্যবহারের অভ্যাস করানোর সময়ও এ সমস্যা হয়ে থাকে।

শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কী কারণে শিশুদের এ রোগ হয়?

এ বিষয়ে বাবা-মায়ের জানাটা খুবই জরুরি। শৌচাগার ব্যবহার করা শিখতে যে শিশুদের কষ্ট হয়, তাদেরই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। শিশু শৌচাগার ব্যবহারে সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তাড়াহুড়ো না করে।

মলত্যাগের বেগ চেপে রাখা এবং পানি পানের ঘাটতির কারণে এই রোগ হতে পারে। তাই শিশুর মলত্যাগের অভ্যাসে বাবা-মায়ের নজরদারি প্রয়োজন। বাবা-মাকে অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

কী করবেন

১. মলের পরিমাণ, রঙ, ধরন, মলত্যাগের সময় শিশু কোনো অস্বস্তি বোধ করে কিনা, কীভাবে শিশু বসে, বেগ চেপে রাখে কিনা– এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তাই শিশুদের শৌচাগার ব্যবহার শেখানো উচিত।

২. শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে দিনের যে কোনো সময় দুই থেকে তিনবার ভারী খাবার খাওয়ানোর আধা ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ‘পট’ কিংবা শৌচাগারে বসাতে হবে। ‘অ্যানাল ফিশার’ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। যেন মলত্যাগ হয় ব্যথামুক্ত।

৩. শিশুদের শৌচাগার ‘লো-কমোড’ হলে হাঁটু ভাঁজ করে বসার অভ্যাস করাতে হবে। ‘হাই-কমোড’ হলে পায়ের নিচে পিঁড়ি দিলে ভালো হবে।

৪. শারীরিক কসরতের অনুশীলন শৈশব থেকে রপ্ত করানো উচিত। এতে হজমশক্তি জোরদার হবে ও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

শিশুকে কেমন খাবার খাওয়াবেন

শিশুকে ফল, সবজি ও ভোজ্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া শস্যজাতীয় খাবার, ডাল, যব ও সালাদ খাওয়াতে পারেন। আর শরীরের চাহিদামাফিক পানি পান করাতে হবে। এ ছাড়া দুধ অতিরিক্ত খাওয়ানো ঠিক নয়। আর ‘জাঙ্ক ফুড’ এড়িয়ে যেতে হবে।

লেখক: শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

 

রাতারগুল ভ্রমণে দিতে হবে ‘ফি’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় বনটির বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকায় প্রবেশ, পার্কিং, ভিডিও ধারণ এবং নৌকা ভ্রমণের ফি নির্ধারণ করে গত ২৯ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করেছে।

ফলে এখন থেকে রাতারগুলের বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকায় প্রবেশ করতে প্রাপ্তবয়স্কদের ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক (১২ বছরের নিচে) ও পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থীদের ২৫ টাকা করে ফি দিতে হবে। আর বিদেশি নাগরিকদের জন্য প্রবেশ ফি ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা।

এ ছাড়া একদিন একটি ক্যামেরা দিয়ে রাতারগুলের বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকায় শুটিং করতে চাইলে ‘ফিল্মিং ফি’ দিতে হবে ১০ হাজার টাকা।

দেশি দর্শনার্থীদের প্রতিবার ইঞ্জিনবিহীন নৌকা ভ্রমণের ফি ১০০ টাকা। বিদেশিদের জন্য এই ফি ধরা হয়েছে এক হাজার টাকা।

এ ছাড়া বাস বা ট্রাকের প্রতিবারের পার্কিং ফি ২০০ টাকা। পিকআপ, জিপ, কার ও মাইক্রোবাসের পার্কিং ফি ১০০ টাকা এবং অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের পার্কিং ফি ধরা হয়েছে ২৫ টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বন অধিশাখা-১ থেকে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত ২৬ মার্চ থেকে রাতারগুলে দর্শনার্থীদের প্রবেশে কড়াকড়ি থাকলেও ১ নভেম্বর থেকে তা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুল, বাগবাড়ি ও পূর্ব মহেশখেড় এলাকার ৫০৪ দশমিক ৫০ একর নিয়ে মিঠাপানির এই জলাবন। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এই বনে হিজল, করচসহ ৭৩ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২০ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৭৫ প্রজাতির পাখি ও ৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে।

 

কোয়ারেন্টিনে অলস সময় কীভাবে কাজে লাগাবেন?

মো. ইকরাম

হোম কোয়ারেন্টিন অবস্থাতে কঠিন মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সবাই। এ চাপ বেড়ে যায় তখনই, যখন সব কাজ বন্ধ করে আগত বিপদের অপেক্ষা করতে থাকেন। যত কাজ মুক্ত থাকবেন, ততই মানসিক চাপ বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে শরীর বিপদের সঙ্গে যুদ্ধ করার শক্তি হারিয়ে ফেলবে।

এই সময়টাতে সবার জন্য দৈনন্দিন কাজের একটা গাইডলাইন এ লেখাতে দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করি লেখাটি পড়া শেষ করলে আপনার এ মুহূর্তের একটি বড় সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন। সমস্যাটি হচ্ছে, অনেকেই বলেন, সময় কাটে শুধু ঘুমে। ঘুম থেকে উঠে একবার ভাবি, কী কাজ করবো এখন? এটা ভেবে বের করার আগেই আবার ঘুমিয়ে পড়ি।

এ লেখাটি পড়ার পর ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। পুরো ২৪ ঘণ্টার একটা রুটিনও পেয়ে যাবেন পুরো লেখাটি পড়া শেষ করলে। এ দুর্যোগে আমাদের মূলত ৩টি চ্যালেঞ্জ। সেই ৩টা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাতে ৩টি কাজ রুটিনে থাকতে হবে।

চ্যালেঞ্জ-১: বিপদ থেকে মুক্তি পেতে সৃষ্টিকর্তার করুণা পাওয়া।
চ্যালেঞ্জ জয়ে কর্তব্য: নিজ ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার চেষ্টা করা। (সকল ধর্মের লোকেরা তাদের নিয়মেই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করবেন)।

চ্যালেঞ্জ-২: করোনা আক্রান্ত না হওয়া।
চ্যালেঞ্জ জয়ে কর্তব্য: স্বাস্থ্য বিষয়ক গাইডলাইনগুলো অনুসরণ করা।

চ্যালেঞ্জ-৩ : সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দাতে নিজেকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল রাখা।
চ্যালেঞ্জ জয়ে কর্তব্য: দক্ষতা অর্জনে বিশেষ সময় দেওয়া।

এটুকু পড়েই উঠে গেলে অনেক কিছু মিস করবেন। কারণ এখন এই ৩টি মূল কাজগুলো কিভাবে করবেন, সেটির পরিপূর্ণ গাইডলাইন দিবো।

চ্যালেঞ্জ-১: বিপদ থেকে মুক্তি পেতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা

(এখানে মুসলিমদের জন্য গাইডলাইন দেওয়া হলো, অন্য ধর্মের লোকেরা নিজেদের মত করে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন।) বিশ্বের সকল উন্নত রাষ্ট্র করোনাকে ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোনভাবেই তারা মৃত্যুর সংখ্যা ঠেকাতে পারছে না। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর করুণা ছাড়া কোন উপায় নাই। তাই নিজের, পরিবারের, সমাজের ও দেশের মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহর সাহায্য পেতে তার সন্তুষ্টি অর্জনে তার নির্দেশগুলো পালন করতে হবে।

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে আমাদের কর্তব্যগুলোকে ৩টি ভাগে ভাগ করি-

১) আল্লাহর ইবাদত করা:

৫ ওয়াক্ত নামাজ, তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য নফল ইবাদত, রোজা রাখা, কোরআন তেলাওয়াত করা।

২) দান করা:

দান মানুষের বিপদকে কমিয়ে দেয়। বর্তমান পরিস্থিতি দান করার সর্বোত্তম সময়। বাইরে লাইন ধরে দান করার পাশাপাশি, সবচেয়ে প্রথম দান পাওয়ার অধিকার নিজের গরীব আত্মীয়-স্বজন, গরীব প্রতিবেশী, বাসার কর্মচারী (বুয়া, দারোয়ান ইত্যাদি)। সেইসঙ্গে এই সময়ে বাজারে গেলে দাম কমানোর চেষ্টা না করে লস মনে হলেও সেই টাকা দিয়ে আসুন, রিকশাতে কিংবা কোন যানবাহনে চড়ে কোথাও যাওয়ার সময় দামাদামি না করে, উল্টো কিছু বাড়তি টাকা তাদের ধরিয়ে দিন। এটাতেও দান করার সওয়াব পাবেন।

৩) ইসলামিক জ্ঞান অর্জন:

ইসলামিক সঠিক জ্ঞান অর্জনের জন্য কোরআনে তাফসির পড়ার পাশাপাশি ইসলামিক সাহিত্য পড়ুন। এটাও আল্লাহর পছন্দনীয় অন্যতম কাজ। কুরআন হাদিসের বাইরেও ইসলামিক যেসব বই রয়েছে, সেগুলো বেশি বেশি পড়ে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যাবে, সময়টা ভালই কাটবে। এগুলো অনলাইনে সার্চ দিলেও প্রচুর বইয়ের পিডিএফ হয়তো খুঁজে পেতে পারেন।

চ্যালেঞ্জ-২: করোনা আক্রান্ত না হওয়া

করোনাভাইরাস নিজের শরীরে কিংবা ঘরে কারও শরীরে কিংবা এক বিল্ডিং এমনকি এক এলাকাতে একবার ঢুকে পড়লে সেই ভাইরাস সবার জন্য বিপদ ডেকে আনার সম্ভাবনা থাকে। তাই করোনাভাইরাসকে এলাকার কাছে ধারেও আসতে না দেওয়ার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিতে বলছে সারা বিশ্বের বিশেষজ্ঞরা। তাই আপনার ২৪ ঘণ্টার রুটিনের কাজের লিস্টে অন্যতম প্রধান কাজ করোনা প্রতিরোধের জন্য নিম্নে বর্ণিত কিছু রুটিন কর্মকাণ্ড।

নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখা:

মুখ, নাক এবং চোখ দিয়ে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। বাতাসের মাধ্যমে নয়। এই মুখ, নাক এবং চোখে হাতের সংস্পর্শের মাধ্যমে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। তাই হাত ১ ঘণ্টা পরপর সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে এলে কোথাও না বসে কাপড়চোপড় ধুয়ে ফেলব বা একটা ঢাকনাওয়ালা বালতিতে ঢেকে রাখব এবং সময় মতো ধুয়ে নেব। কোনো কাপড় ধোয়া সম্ভব না হলে উজ্জ্বল রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে নেব। সম্ভব হলে ঘরে এসে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নেব অথবা হাত-মুখ পরিষ্কার করব।

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো:

সুযোগ মতো লবণযুক্ত গরম পানি দিয়ে গলা পরিষ্কার (গড়গড়) করব। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খাব। সবুজ শাকসবজি, সুষম খাবার, মাছ, মাংস, ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে খাব (ডিমের পোঁচ খাওয়া যাবে না) যাতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনোভাবেই ঠাণ্ডা কোনো খাবার খাওয়া যাবে না। কিছু সময় পরপর গরম কফি, চা, গরম পানি বা স্যুপ খেলে ভালো হয়। এগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত শরীর চর্চা চালাতে হবে।

চ্যালেঞ্জ-৩: সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দাতে নিজেকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল রাখা

মহামারী করোনাভাইরাস নাড়া দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে স্থবিরতা নেমে এসেছে, তাতে ৩৩০ কোটি কর্মক্ষম মানুষের আংশিক বা পুরোপুরি বেকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। এই পরিস্থিতির কথা ভুলে গেলে হবে না।

সেই পরিস্থিতি সামলাতে প্রস্তুতি নিতে এখনকার এই ফ্রি সময়টাকেই কাজে লাগাতে হবে। না হলে করোনা থেকে বাঁচলেও চাকরি হারিয়ে আরেক বড় ধরনের বিপদের মুখোমুখি হতে হবে। সেই বিপদকে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি হিসেবে এই অবসর সময়টাতে নিজের দক্ষতাকে অনেক গুন বাড়িয়ে নিতে হবে।

প্রশ্ন হতে পারে, আমার যোগ্যতা বা দক্ষতা না থাকলে কি আমার চাকরি হয়েছে? হুম, কথা সত্য। যোগ্যতার কারণেই আপনার চাকরি করতে পারছেন। কিন্তু কিছুদিন আগে প্রকাশিত বিবিসির একটা সংবাদের শিরোনাম শেয়ার করে আপনাকে সতর্ক করছি।

‘ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের পাইলট চাকরি হারিয়ে ডেলিভারি ভ্যানের ড্রাইভার হিসেবে চাকরি নিয়েছেন’। আপনার বর্তমান চাকরিটি কোন কারণে চলে গেলে অন্য কোন যোগ্যতা দিয়ে হলেও অন্য ক্যাটাগরিতে হলেও একটি চাকরি যোগাড় করার মত দক্ষতা এখনই অর্জন করে নিতে হবে। আবার এমন হতে পারে আপনার অনেকগুলো যোগ্যতা থাকার কারণে হয়তো প্রতিষ্ঠানের ৮০% এর চাকরি চলে গেলেও আপনার চাকরি যাতে অন্তত টিকে যায়।

আর যদি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়, তাহলেও যাতে অন্য কোন চাকরি যোগাড় করতে আপনার হাতে যাতে অনেকগুলো অপশন থাকে। কীভাবে কাজে লাগাবেন, তার একটি সংক্ষিপ্ত গাইডলাইন দিচ্ছি এবার।

৬টি বিশেষ গাইডলাইন

১. স্কিল বাড়ানোর চেষ্টা করেন। মাল্টি স্কিল হওয়ার চেষ্টা করেন। আপনাকে দিয়ে ২-৩ ধরনের কাজ করানো গেলে আপনাকে কোম্পানি বাদ দেওয়ার চিন্তা কম করবে। কিংবা চাকরি চলে গেলেও আপনার অনেকগুলো স্কিলের কোন একটা নতুন চাকরি পেতে সহায়ক হবে।

২. কমিউনিকেশন দক্ষতা বর্তমান যুগে খুব বড় একটা যোগ্যতা। যে কোন চাকরিতে ভাল অবস্থানে যেতে ভাল পারফরমেন্স করতে হয়। আর ভাল পারফরমেন্সের জন্য প্রয়োজন কমিউনিকেশন দক্ষতা। কমিউনিকেশন দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন বই কিংবা গুগল সার্চ করে কিংবা ইউটিউব থেকে শিখতে পারেন।

৩. প্রযুক্তি বিষয়ক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে গুরুত্ব দিন। কারণ পরবর্তী বিশ্বে সকল কিছুই প্রযুক্তি নির্ভর চলার সম্ভাবনাই বেশি দেখছে সবাই। এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট অবশ্যই জানা থাকতে হবে। গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিংটাও শিখে রাখতে পারেন। এ দক্ষতাগুলো থাকলে আপনার প্রতিষ্ঠানে ভাল একটা ভ্যালু থাকবে। আবার চাইলে অনলাইনেও বহির্বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠানেরও কাজ করার সুযোগ পাবেন। এগুলো শিখার জন্য ইউটিউবে বাংলাতেই ভালো ভালো অনেক রিসোর্স খুঁজে পাবেন।

৪. উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করুন। নিজে উদ্যোক্তা হতে পারবেন। উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা না থাকলে আপনি যেখানে চাকরি করেন, সেই বিজনেসেও নিজের উদ্যোক্তা বিষয়ক জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সেই বিজনেসের সাফল্য নিয়ে আসতে পারবেন।

৫. যেকোন বিজনেসে ইনকাম বাড়াতে প্রয়োজন মার্কেটিং এবং ব্রান্ডিং। ভাবুনতো একবার, আপনার মাধ্যমেই যদি কোন প্রতিষ্ঠান অনেক ক্লায়েন্ট পায় এবং ব্যবসাতে ইনকাম বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানে আপনার ভ্যালু কী পরিমাণ বাড়বে? তাই বিজনেস বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে ডিজিটাল মার্কেটিং বা ব্রান্ডিং সম্পর্কে এ ছুটিতে শিখে নিতে পারেন।

৬. ইংরেজিতে যাদের জ্ঞান কম আছে, তারা এই ফ্রি সময়টাতে ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়িয়ে নিতে পারেন। ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়াতে কয়েক বন্ধু মিলে চ্যাটিং গ্রুপ করে নিতে পারেন। সেই গ্রুপে ইংরেজিতে আড্ডা দিন। সময় কাটবে আড্ডা দিয়ে। সঙ্গে ইংরেজি ভয় দূর হবে, ইংরেজি জ্ঞানও বাড়বে।

আর কিছু লিখে বড় করবো না। সময় কাটানোর একটা গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কতটুকু কাজে লাগাবেন, সেটি আপনার বিষয়। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ রুটিন অনুযায়ী প্রতিদিন সময় কাটালে সময়টা ভাল কাটবে, সেইসঙ্গে নিজের জন্য ভাল কিছু অর্জন করতে পারবেন। লেখাটি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণ থেকে সংগ্রহীত

 

রেসিপি: জিভে জল আনা খেজুর গুঁড়ের পায়েশ

শীতে খেজুর গুড়ের পায়েশের কথা শুনলে জিভে জল এসে যায়। এ সময়ে পোলাও চালের মম গন্ধের সঙ্গে গুড়ের মিষ্টি সুঘ্রাণযুক্ত এক বাটি পায়েশ খেলে মন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। শীতের সময়ে প্রিয়জনদের জন্য ঘরেই তৈরি করতে পারেন খেজুর গুড়ের পায়েশ।

আসুন জেনে নিই কীভাবে তৈরি করবেন খেজুর গুড়ের পায়েশ–

উপকরণ

এক কাপ পোলাও চাল, তিন কাপ ঘন দুধ, দুই কাপ হেভি ক্রিম, চারটি সবুজ এলাচ, একটি তেজপাতা, এক মুঠো কিশমিশ, এক মুঠো কাজু বাদাম ও ৭-৮ টেবিল চামচ খেজুর গুড়।

যেভাবে তৈরি করবেন

পোলাও চাল পানিতে ধুয়ে ৩০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। বড় কড়াইতে দুধ ও ক্রিম জ্বাল দিয়ে এতে তেজপাতা দিয়ে বলক আনুন ও নাড়ুন। নাড়ার মাঝে জ্বাল কমিয়ে দিয়ে দুধ ঘন করে আনতে হবে।

চাল থেকে পানি ছেঁকে চালগুলো দুধে দিয়ে দিতে হবে এবং জ্বাল আরও কিছুটা কমিয়ে নাড়তে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কড়াইতে যেন লেগে না যায়।

এভাবে ১০ মিনিট নাড়ার পর এতে খেজুর গুড় ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে আরও ১৫ মিনিট নাড়তে হবে। চাল সিদ্ধ হয়ে দুধ টেনে এলে এতে কাজুবাদাম ও কিশমিশ দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। কিছুক্ষণ পর সুন্দর করে পরিবেশন করতে হবে।

 

শীতের রেসিপি: মজাদার নকশি হাঁড়ি পিঠা

শীতে গরম গরম পিঠা কার না খেতে ভালো লাগে। গ্রাম-বাংলা থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলেও শীতে রকমারি পিঠার চল বহুদিনের। এ সময়ে প্রিয়জনদের জন্য ঘরেই তৈরি করতে পারেন বাহারি পিঠা। হরেকরকম পিঠার মধ্যে নকশি হাঁড়ি পিঠা অন্যতম।

ঘরে খুব সহজেই তৈরি করতে পারেন নকশি হাঁড়ি পিঠা।

আসুন জেনে নিই এই পিঠা কীভাবে তৈরি করবেন-

যা যা লাগবে

পুরের জন্য: কোরানো নারিকেল ব্লেন্ড করে নেয়া ১ কাপ, গুড়/চিনি ১/২ কাপ, গুঁড়াদুধ ১/২ কাপ, সুজি ১ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া ১ চিমটি।

ডোয়ের জন্য: আতপ চালের গুঁড়া ২ কাপ, তরল দুধ ২১/২ কাপ, লবণ ১ চা চামচ।

যেভাবে করবেন

পুর তৈরি: মৃদু আঁচে ননস্টিক প্যানে ব্লেন্ড করা নারিকেল, সুজি ও গুঁড়াদুধ দিয়ে নেড়েচেড়ে জ্বাল দিন। সুজি সিদ্ধ হয়ে স্টিকি হয়ে গেলে খেজুর গুড়/চিনি মেশান। ঘন ঘন নাড়ুন। গায়ের পানি টানলে এলাচ গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন।

ডো ও পিঠা তৈরি: দুধে লবণ মিশিয়ে জ্বালে বসান। টগবগ করে ফুটলে চালের গুঁড়া দিয়ে পাত্রের মুখ ঢাকনা দিয়ে মৃদু আঁচে রেখে দিন ১০ মিনিট।

১০ মিনিট পর পাত্রের মুখ খুলে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন। কিছুটা ঠাণ্ডা হলে ভালো করে মথে ডো তৈরি করুন। ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন।

এক একটি ভাগ হাঁড়ির মতো তৈরি করে ভেতরে পুর ভরে দিন। আর একটি ভাগ দিয়ে ছবির মতো করে হাঁড়ির মুখ বানান। এবার একটু পানি মাখিয়ে হাঁড়ি এবং মুখ আটকে কাটা চামচ দিয়ে নকশা করে নিন।

স্টিমারে পানি ফুটিয়ে পিঠাগুলো ভাপে দিন ২০-৩০ মিনিটের জন্য। গরম গরম পরিবেশন করুন।

লেখক: মনিরা মাজিদ, গৃহিণী।

 

প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে যা বললেন দীঘি

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি আর শিশুশিল্পী নন। রূপালি জগতে তিনি এখন চিত্রনায়িকা। ‘বাবা জানো আমাদের ময়না পাখিটা’ বুলি আওড়ানো দিঘীর মুখে এখন শোনা যাবে রোমান্টিক সব ডায়ালগ।

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সিনেমায় চিত্রনায়িকা হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছেন দীঘি। এর মধ্যে একটি সিনেমার শুটিং প্রায় শেষও করে ফেলেছেন।

আর এরইমধ্যে প্রেমবিষয়ক গুঞ্জনের মুখোমুখি হলেন দীঘি। তবে এতে মোটেই বিব্রত বা বিরক্ত হননি দীঘি।

এসব গুঞ্জনকে গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন তিনি। উল্টো তিনি নিজেই সাংবাদিকদের জানালেন, এসব গুজব তাকে যেন আগে জানায়।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে দীঘি বলেন, ‘নায়িকাদের প্রেমের গুঞ্জন ওঠাই স্বাভাবিক। কিন্তু মাত্র ছবিতে অভিনয় শুরু করেছি। সেপ্টেম্বরে শুটিং শুরু করেছি, সব মিলিয়ে দুই মাস হলো নায়িকা হলাম। প্রেমের গুঞ্জনটা আসতে তো বছরখানেক লেগে যায়। আর এরই মধ্যে এমন গুঞ্জন শুনতে হচ্ছে! ভেবেছিলাম, এসব গুজব উঠতে আরও এক বছর লাগবে। অবশ্য এসব গুজবে আমি কান দিই না। যখন প্রেম হবে, তখন এমনিই সবাই জানবে। ’

তবে প্রেমের গুঞ্জন এখনও তার কানে যায়নি বলে জানান এক সময়ের সুপরিচিত শিশুশিল্পী।

তিনি বলেন, ‘আমার নামে এমন কিছু নিজে শুনিনি। তো আমার মনে হয়, আমি শোনার আগে আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা, আমাদের আগে ভালো শুনতে পারেন। আপনাদের কাছে চলে যায় বা আপনাদের কাছে এমন গসিপ চলে যায়। আপনারা জানলে আমাকে আগে জানাবেন, তাহলে আমি বেশি খুশি হব।’

সম্প্রতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘তুমি আছ তুমি নেই’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন দীঘি। এই সিনেমায় শুরুতে বাপ্পি চৌধুরীকে নায়ক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। পরে চুল বড় নেই বলে তাকে বাদ দিয়ে সাইমনকে নেয়া হয়। এরপর জানা যায়, সাইমন নয়, দীঘির নায়ক হতে চলেছেন আসিফ ইমরোজ। আমাগী ১৫ নভেম্বর থেকে গাজীপুরে শুরু হবে ‘তুমি আছো, তুমি নেই’-এর শুটিং।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এফডিসিতে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিঞা ভাই’ নামে একটি ছবির শুটিং শুরু করেছেন দীঘি। এ ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন নবাগত শান্ত খান। এটি ছাড়াও আরও পাঁচটি ছবিতে অভিনয়ের কথা রয়েছে দীঘির। এরই মধ্যে ‘ধামাকা’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করবেন মালেক আফসারী। ‘যোগ্য সন্তান’ নামে আরেকটি ছবি নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছেন কাজী হায়াৎ।

 

শীতে নবজাতকের গায়ে কোন তেল মাখাবেন

ডা. বেদৌরা শারমিন

শীতের ঋতুতে আবহাওয়া বেশি শুষ্ক থাকে। এ সময় মায়েরা সদ্য নবজাতকের ত্বক সুন্দর রাখতে বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজ লোশন ও তেল ব্যবহার করে থাকেন।

অনেক মা জানেন না, কোন তেল শিশুর জন্য ভালো। বেশ কয়েকটি তেল রয়েছে, যা নবজাতকের ত্বকের জন্য উপকারী।

আসুন জেনে নিই কোন তেল নবজাতকের ত্বকের জন্য ভালো–

১. শীতে শিশুর জন্য সরিষার তেল খুবই উপকারী। কারণ এটি শরীর উষ্ণ রাখে এবং সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে দূরে রাখে।

২. শিশুর গায়ে অলিভ অয়েলও মাখতে পারেন। অলিভ অয়েল তেল শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। তবে শিশুর চর্মরোগ থাকলে অলিভ অয়েল ব্যবহার না করাই ভালো।

৩. অনেকে মনে করেন নারিকেল তেল শুধু চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়, এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। শিশুর ত্বক সহজেই এই তেল শুষে নিতে পারে। শীতে মালিশের জন্য এতে চমৎকার উপাদান রয়েছে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল গুণ শিশুর ত্বকের জন্য উপকারী।

৪. সূর্যমুখী তেল ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ। এতে যথেষ্ট পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শীতকালে শিশুর ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষভাবে কাজ করে।

৫. আয়ুর্বেদিক তেল সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। এই তেলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপাদান পাবেন। আয়ুর্বেদিক তেল শীতে শিশুর রুক্ষতা ও রোগ প্রতিরোধ করে রাখবে উষ্ণ।

ডা. বেদৌরা শারমিন, গাইনি কনসালট্যান্ট, সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড।

লেখাটি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণ থেকে সংগৃহীত

 

যমজ সন্তানের যত্ন আত্তি

ধারণা করা হয়, পুরো পৃথিবীর ৩ শতাংশ মানুষ যমজ। এ ৩ শতাংশ নিয়ে মানুষের আগ্রহের কোনো শেষ নেই। চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, দুটি শুক্রাণু একসঙ্গে দুটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে ভ্রাতৃসুলভ যমজ সন্তানের জন্ম হয়।

এরা ফ্যাটার্ন্যাল টুইন নামেও পরিচিত। সাধারণভাবে দেখা যায়, যমজের ক্ষেত্রে চেহারা হুবহু এক হয়। স্বভাব বা বৈশিষ্ট্যগতভাবেও তারা কিছুটা ভিন্ন হয়; কিন্তু দুটি শুক্রাণু একসঙ্গে একই ডিম্বাণুর সঙ্গে নিষিক্ত হয়ে সমান দু’ভাবে বিভক্ত হয়ে যে যমজ সন্তানের জন্ম হয় তারা আইডেন্টিক্যাল টুইন নামে পরিচিত। এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হুবহু একইরকম দেখতে। তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও অনেকটা একইরকম।

আজকাল বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা আগের চেয়ে অনেক বেশি। প্রতি ৬৫ জনে একজন মায়ের সাধারণ প্রক্রিয়াতেই দুটি যমজ সন্তান হতে পারে। মায়ের পরিবারের কেউ যমজ থেকে থাকলে এর সম্ভাবনা বেশি।

আবার মায়ের বয়স বেশি বা ৩০-৩৫-এর মধ্যে হলেও যমজ বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বর্তমানে চিকিৎসার অগ্রগতির কারণে বন্ধ্যত্ব চিকিৎসার জন্য যে পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা হয় যেমন- আইভিএফ; এ ধরনের চিকিৎসার মাধ্যমেও এখন যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে গেছে।

এজন্য শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই যমজ সন্তান জন্মানোর হার আগের চেয়ে বেশি। তবে যমজ সন্তান গর্ভে ধারণ করলে মা ও সন্তানের কিছু কিছু সমস্যা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন- গর্ভবতী মায়ের শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়া, প্রেসার বেড়ে যাওয়া, রক্তক্ষরণ, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, অপরিণত ও কম ওজনের শিশু, বাচ্চার জন্মগত ত্রুটিসহ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ, গর্ভকালীন সঠিক পরিচর্যা এবং সতর্কতার মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

সাবরিনা আহমেদ রিমি এবং সাকিব রহমান দম্পতির ঘর আলো করে এসেছে যমজ কন্যা। তাদের নাম রুহাইমা রহমান সিদরাহ এবং সারিজা রহমান সেহের। সিদরাহ এবং সেহেরের বয়স এখন ৪ মাস।

একদিকে দীর্ঘ ৭ বছর পর সংসারে সন্তানের আগমন, সেইসঙ্গে যমজ সন্তান হওয়ায় পরিবারে খুশির বন্যা নেমে এসেছে। সাবরিনা আহমেদ বলেন, ‘এত বছর পর একসঙ্গে দুই সন্তানের মা হওয়ার এ আনন্দ-অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ওদের দিকে তাকিয়ে সব কষ্ট ভুলে যেতে পারি। ওদের কিছু কাজে আমি খুব মজা পাই। যেমন খাবার দিতে একটু দেরি হলে বড়টার দিকে তাকালে খুব জিদ দেখায়। কিন্তু ছোটটার দিকে তাকালে ও হেসে দেয়। আমি ওদের ছড়া শোনালে ওরা দু’জনই তা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনে।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ গর্ভবতী মায়েদের তুলনায় গর্ভে যমজ সন্তান থাকলে খাবার-দাবারের ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো যেমন পর্যাপ্ত খেতে হবে, তেমনি পর্যাপ্ত ডায়েটও মেনে চলতে হবে। গর্ভবতী মাকে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। গর্ভকালীন জটিলতাগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পাশাপাশি নেটে সার্চ দিয়েও তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন; যেটি আমি করতাম। এখনও বাচ্চাদের পরিচর্যার ক্ষেত্রে নেটে সার্চ দিয়ে জেনে নেই। গর্ভবতী মাকে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে এবং নিয়মিত চেকআপ করতে হবে।’

সন্তান লালন-পালন করা অভিভাবকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। দুটি সন্তান একসঙ্গে লালন-পালনের ক্ষেত্রে স্বভাবতই চ্যালেঞ্জটা দ্বিগুণ। তাই যমজ শিশুর পরিচর্যার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন:

  • বুকের দুধ পান করানো

মা বা পরিবারের ধারণা, যমজ দুই সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় বুকের দুধ মা দিতে পারবে না, এটি ভুল। মা যদি সবার সহযোগিতা পান, একসঙ্গে তিন নবজাতক সন্তানকে পূর্ণ ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধে পুষ্টি বজায় রাখতে সক্ষম থাকেন।

  • শিশুর খাবার

ছয় মাস বয়সের পর যখন শিশুকে বুকের দুধের বাইরে অন্য খাবার দেয়া শুরু করবেন তখন দু-তিন ঘণ্টা পরপর খাবার দিন। দু’জনই সমপরিমাণে খাবার খাবে না এটাই স্বাভাবিক; বকাঝকা করবেন না। প্রয়োজনে খাবারের মেন্যু বদলে দিন।

  • ঘুমের সময়

যমজ বাচ্চা হলেই যে দু’জনে একসঙ্গে সবকিছু করবে- এমন ভাবার কারণ নেই। হয়তো একজন ঘুমাল, অন্য শিশুটি হাত-পা মেলে খেলা করতে পারে। ঘুম পাড়ানোর জন্য জোর না করে তাকে সময় দিন, প্রয়োজনে কোলে করে একটু হাঁটুন।

  • আলাদা বিছানা

এক শিশুর কোনো কারণে অসুখ হলে অন্যজনের মধ্যেও তা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই একজন কোনো রোগে আক্রান্ত হলে অপরজনকে আলাদা বিছানায় রাখুন।

  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা

যেহেতু শিশুরা খুব অল্পতেই নানা রোগে আক্রান্ত হয়, তাই শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে বাইরে থেকে কেউ ঘরে ফিরলে বা বাড়িতে অতিথি এলে তিনি যেন হাত ভালোমতো না ধুয়ে, পোশাক না বদলে শিশুকে স্পর্শ না করে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখুন।

  • যেসব বিষয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন

যমজ সন্তানদের কখনও যমজভাবে চিন্তা না করে, তাদের দুজনকে আলাদা ব্যক্তিত্বের মর্যাদা দিয়ে বড় করে তুলুন। যেমন প্রত্যেকের জন্য আলাদাভাবে জন্মদিনের উপহার বা পার্টির ব্যবস্থা করা। যমজ সন্তানের রেষারেষি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সামাল দিন।

  • চাই পরিবারের সহযোগিতা

যমজের যত্ন নিতে স্বভাবতই প্রত্যেক বাবা-মাকে হিমশিম খেতে হয়। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। যমজ সন্তানের মা সাবরিনা আহমেদ রিমি তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া যমজ সন্তান লালন-পালন করা কষ্টসাধ্য। আমি সৌভাগ্যবান, আমি যৌথ পরিবারে থাকি এবং আমার স্বামী, শ্বশুর, ননাস এমনকি ননাসের বাচ্চারাও আমার বাচ্চাদের দেখাশোনা করে। এতে আমি অনেকটা সময় বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ পাই।

রাতে ওদের ঘুম ভেঙে গেলে আমার স্বামী এবং আমি ভাগাভাগি করে ওদের সময় দেই। এতে আমার ঘুমের খুব বেশি ব্যাঘাত ঘটে না। আমি একজন কর্মজীবী নারী এবং ছুটি শেষে আমাকে আবার কর্মস্থলে ছুটতে হবে; কিন্তু আমি এ নিয়ে চিন্তিত নই।

কারণ আমার সন্তানদের দেখভালের জন্য আমার পরিবারের সদস্য রয়েছেন। আসলে এ সুযোগটা প্রতিটি নতুন মায়ের জন্য দরকার; বিশেষ করে যমজ সন্তানের মায়ের জন্যই অপরিহার্য। কারণ এ সময় শিশুর সুস্থতার জন্য মা-বাবা দু’জনেরই সুস্থ থাকা দরকার। মা-বাবার পর্যাপ্ত খাওয়া ও বিশ্রামের প্রয়োজন। একা সন্তান মানুষ করলে তা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। তাই যমজ সন্তান লালন-পালন করতে অবশ্যই পরিবারের সদস্যদের পূর্ণ সহযোগিতা প্রয়োজন। যাদের সেই সুযোগ নেই, তাদের প্রথম থেকেই অন্য কারও সহযোগিতা কীভাবে নেয়া যায় সেটি ভেবে দেখতে হবে।

 

শীতে সুস্থ থাকতে কী খাবেন

শীত এলেই বাড়ে অসুখ-বিসুখ। এ সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, এ সময় শরীরকে হাইড্রেট রাখাটা জরুরি। শরীরকে হাইড্রেট না রাখলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দেহের তাপমাত্রার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

কিছু সবজি রয়েছে যা শীতের সময় খুব সহজে বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এসব খেলে শরীর সতেজ থাকে।

আসুন জেনে নিই কী খাবেন-

১. শীতের সময়ে খেতে পারেন পুষ্টিকর পালংশাক। পালংশাক ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। অতিরিক্ত ওজনও কমায়। এই সবজি শীতে আমাদের শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে।

২. খেতে পারেন টমেটো। এতে প্রায় ৯০ শতাংশ পানি থাকে, যা শরীরকে ভেতর থেকে পুষ্ট রাখতে সহায়তা করে। টমেটো ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৩. হলুদ ও সবুজ ক্যাপসিকামে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে। ক্যাপসিকামে ৯৩.৯ শতাংশ পানি রয়েছে। এ ছাড়া এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, বিটা ক্যারোটিন, থায়ামিন ও ফলিক অ্যাসিড রয়েছে।

৪. শীতের ফুলকপি দিয়ে স্যালাড, স্যুপ ও বিভিন্ন তরকারি তৈরি করে খেতে পারেন।

৫. অলিভ অয়েল ভিটামিন-ই, ভালো ফ্যাটজাতীয় পুষ্টিতে সমৃদ্ধ, যা শরীরকে ভেতর থেকে ময়েশ্চারাইজ রাখে। ত্বক ভালো রাখতে অলিভ অয়েল দিয়ে শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন। এটি শরীর ঠিক রাখতে বেশ কার্যকর।

তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই

হারিয়ে যাচ্ছে শীতের খেজুর রস

মাগুরা জেলায় এক দশক আগেও শীতের মৌসুমে সকালে রসের হাড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ গাছির ব্যস্ততার দৃশ্য চোখে পড়ত। শীতের মৌসুম শুরু হতেই বাড়ি বাড়ি চলত খেজুরের রস কিংবা রসের পাটালি গুড় দিয়ে মজাদার পিঠা-পুলির আয়োজন।

পাশাপাশি খেজুরের রস দিয়ে তৈরি ঝোলা গুড়ের সুনাম তো ছিলই। তবে গ্রামবাংলার সেই দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব অনুষঙ্গ। নানাবিধ কারণেই গ্রামের মানুষ যেন ভুলতে বসেছে এসব ঐতিহ্যবাহী উপাদান।

মাগুরা সদর উপজেলার ইছাখাদা গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা রহিমা বেগম জানান, তিনি প্রতিবছর শীতের সময় বাবার বাড়িতে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসেন শুধু খেজুর রস ও রসের তৈরি পিঠা-পুলি খেতে। কিন্তু কয়েক বছর হলো এখন তিনি আর রস খেতে পান না।

তিনি জানান, তার চার ছেলে-মেয়ে বড় হয়ে গেছে। কিন্তু তিনি এবছরও তার ছেলে-মেয়েদের এখন পর্যন্ত খেজুরের রসের তৈরি পিঠা-পুলি খাওয়াতে পারেননি।

মাগুরার শালিখা উপজেলার বুনাগাতি গ্রামের গাছি ওয়ালিয়ার জানান, ইটের ভাটায় ব্যাপকভাবে খেজুর গাছের খড়ি ব্যবহারের কারণে এ গাছ কমে যাচ্ছে। খেজুর গাছের খড়ি তুলনামূলকভাবে সস্তা হওয়ায় ইটের ভাটায় এ গাছের চাহিদা প্রচুর।

তিনি জানান, খেজুর গাছের ব্যাপক নিধনের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো মাগুরায়ও কমছে খেজুর গাছ। দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে খেজুরের রস। আসলে গাছ বাঁচাতে পারলেই রস পাওয়া সম্ভব।

এ বিষয়ে মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বলেন, ‘মাগুরায় কিছু খেজুর গাছ থাকলেও গাছির সংকটে এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক গ্রামের ব্যবধানে দু’একজন গাছি পাওয়া গেলেও গাছ তুলনামূলকভাবে কম থাকায় রস সংগ্রহের কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে কারণে খেজুরের রসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। একসময়ের ঐতিহ্যবাহী শীতের নবান্ন উৎসবের খেজুর রসের ক্ষির, পুলিপিঠা, রসের মন্ডা মিঠাইসহ নানা মুখরোচক খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। এ ঐতিহ্য বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’ জাগোনিউজ

কফি পান করলে কমবে চর্বি

বাড়তি চর্বি নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তার কারণ। এই চর্বির কারণে হতে পারে নানা অসুখ। তাই শরীর থেকে বাড়তি চর্বি ঝরিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন প্রত্যেক সচেতন মানুষ। চর্বি কমাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কফি। তবে এই কফি দুধ-চিনি মেশানো নয়, হতে হবে ব্ল্যাক কফি।

এককাপ ব্ল্যাক কফিতে ক্যালোরির পরিমাণ ২। ডিক্যাফেইনেটেড বীজ থেকে বানান হলে তাতে আবার একেবারেই ক্যালোরি থাকে না। এছাড়াও ব্ল্যাক কফিতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। রাতের খাবার খাওয়ার পরে এককাপ ব্ল্যাক কফি খেলে শরীরে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড গ্লুকোজ উৎপাদনে বাধা দেয়। ফলে নতুন ফ্যাট কোষ তৈরি হয় না।

শুধুমাত্র ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডই যে ওজন কমানোর জন্য কালো কফিকে আদর্শ করে তুলেছে তা নয়। ব্ল্যাক কফিতে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস আছে যা দ্রুত ওজন কমানোর সহায়ক।

ব্ল্যাক কফিতে থাকে ক্যাফিন যা খুব দ্রুত বিপাকের ক্রিয়াকলাপ বাড়ায় এবং আমাদের শরীরের শক্তির জোগান দেয়। ফলে ক্ষুধা কম পায়। তবে চিনি বা অন্যান্য মিষ্টি যুক্ত করে একে লো-ক্যালোরি পানীয় বানাবেন না।

ব্ল্যাক কফির সঙ্গে যদি সামান্য মধু আর লেবু যোগ করে খেতে পারেন, তাহলে যেমন স্বাদ বাড়ে তেমনই তা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এমনিতেই লেবু আর মধু ওজন কমানোর সহায়ক। আর তার সঙ্গে যদি যুক্ত হল ব্ল্যাক কফি তাহলে ওজন কমবেই।

দুধ দিয়ে কফি পান করার খুব ইচ্ছা হলে আমন্ড কিংবা সয়া মিল্ক দিয়ে খান। তাতে শরীরও ভালো থাকবে। ওজনও কমবে।

ব্ল্যাক কফি সকালে খালি পেটে না খাওয়াই ভালো। লেবু-মধু মিশিয়ে এই কফি খাওয়ার আদর্শ সময় হলো সন্ধ্যাবেলা। এতে অতিরিক্ত ফ্যাট জমবে না। অনেকেই বলেন রাতে ব্ল্যাক কফি খেলে ঘুম আসে না। কিন্তু এক্ষেত্রে সমস্যা হয় না। কফির সঙ্গে মধু আর লেবুর রস মেশালে হজম ভালো হয়।

যেভাবে তৈরি করবেন
প্রথমে এককাপ পানি গরম করুন। তাতে কফি মিশিয়ে কিছুটা সময় ফুটিয়ে নিন। এবার কাপে সামান্য গোলমরিচের গুঁড়া আর লেবু-মধুর মিশ্রণ বানিয়ে নিন। কফি ছেঁকে নিন। ৫ মিনিট রেখে একটু ঠান্ডা করে খান। মধুর বদলে ব্রাউন সুগারও ব্যবহার করতে পারেন।

 

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও কন্যা হত্যা: কাশিমপুর কারাগারে একজনের ফাঁসি কার্যকর

লক্ষীপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও দুই বছরের এক কন্যাকে হত্যার দায়ে গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২- এ বন্দি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। রোববার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২- এ ফাঁসি কার্যকর হয়।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ব্যক্তি হলেন, লক্ষীপুরের রামগতি থানার দক্ষিণ চরলরেন্স এলাকার মৃত শামসুল হক বাঘার ছেলে আব্দুল গফুর (৪৭)।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২- এর জেলার মো. আবু সায়েম জানান, ২০০৬ সালে লক্ষীপুরের রামগতি থানার দক্ষিণ চর লরেন্স এলাকায় ৫ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী ও দুই বছরের এক কন্যা শিশুকে হত্যা করে আব্দুল গফুর। পরে এ ঘটনায় রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় ২০০৮ সালে আদালত আব্দুল গফুরকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এরপর আসামি পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করলেও তার মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করলেও তা খারিজ করে দেন।

অবশেষে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে রোববার (১ নভেম্বর) রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে আব্দুল গফুরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে জল্লাদ ছিলেন শাহজাহান ভুইয়া। এসময় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ও জেলারসহ ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসির পর মরদেহ নিহতের বড় ভাই মো. আব্দুল ও মো. হানিফের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাচ্চাদের কৃমির সংক্রমণ – কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কৃমি এক ধরনের অন্ত্রের পরজীবী যা শিশুদের অন্ত্রে বসবাস করে এবং বাচ্চাদের খাদ্য থেকে তাদের পুষ্টি অর্জন করে, যার ফলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। কৃমির সংক্রমণ, হেলমিন্থ সংক্রমণ নামেও পরিচিত, এটি শিশুদের মধ্যে পেটে ব্যথার প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি। এই সংক্রমণ খুব সাধারণ এবং সহজেই এর চিকিৎসা করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের কৃমি, তাদের কারণ, উপসর্গ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া সবসময় ভাল, যাতে আপনার বাচ্চার যদি কৃমির সংক্রামণ হয়ে থাকে তবে আপনি তাকে সময়মত চিকিৎসা পেতে সহায়তা করতে পারেন।

  • কৃমির সংক্রমণ কত রকমের হয়:
    মানুষের দেহের বিভিন্ন অংশে সংক্রামিত ও প্রজননকারী বিভিন্ন প্রকারের কৃমি আছে। সেগুলো বিভিন্ন সাইজের এবং প্রকারের হয়। ছোট বা বড়, চ্যাপ্টা না গোল হতে পারে এবং চোষক বা তিনটে ঠোঁট যুক্ত হয় এবং কোনো পা থাকে না। শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের সংক্রামিত সবচেয়ে সাধারণ কৃমিগুলি হল:
  •  ফিতাকৃমি

ফিতাকৃমি যাদের চ্যাপ্টাকৃমিও বলা হয়, তারা তাদের ত্বকের মাধ্যমে শ্বাস নিয়ে অক্সিজেন ও পুষ্টি গ্রহণ করে তাদের হুক এবং চোষক আছে যা অন্ত্রের সাথে যুক্ত হয় এবং তারা আশ্রয়দাতার শরীরের আংশিক হজম হওয়া খাদ্যের উপর প্রজনন সম্পন্ন করে। একটি ফিতাকৃমির দৈর্ঘ্য কয়েক ইঞ্চি থেকে ৪০ ফুট বা তার বেশি হতে পারে। সাধারণত দূষিত খাবারের মাধ্যমে তাদের ডিম বা লার্ভা শিশুদের পাকস্থলীতে প্রবেশ করে।

  • গোলকৃমি

গোলকৃমির সংক্রমণ, যা “অ্যাস্কারিয়াসিস” নামেও পরিচিত, তা অ্যাস্কারিস লাম্ব্রিকয়েডস্ কৃমি দ্বারা সৃষ্ট। এগুলো ফাঁপা, কেঁচোর মতো একই রকম দেখতে এবং দৈর্ঘ্যে ৩০ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে। গোলকৃমি নোনাজল, মাটি বা পরিস্কার জলের মধ্যে বাস করে এবং এই কৃমিগুলি গৃহপালিত পশুদের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় যেখান থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। গোলকৃমির লার্ভা প্রায়ই অন্ত্র থেকে রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে এবং ফুসফুস পর্যন্ত বাহিত হয়।

  • কুঁচোকৃমি বা সুতাকৃমি

কুঁচোকৃমিকে সুতাকৃমিও বলা হয়, কারণ তারা ক্ষুদ্র, পাতলা, সাদা এবং সর্বদা নড়াচড়া করে এমন কৃমি যা মলদ্বারে বসবাস করে। স্ত্রী কৃমি মলদ্বারের আশেপাশে ডিম পাড়ে। এই ডিম কাপড়, বিছানা এবং অন্যান্য উপকরণের উপর বেঁচে থাকতে পারে এবং স্পর্শ বা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। সুতাকৃমির সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

  •  হুকওয়ার্ম

হুকওয়ার্ম সাধারণত খারাপ নিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত স্থানে পাওয়া যায়। হুকওয়ার্মগুলি ক্ষুদ্র পরজীবি কৃমি, তাদের মুখে কাটিং প্লেট থাকে, যার মাধ্যমে তারা অন্ত্রের প্রাচীরের সাথে সংযুক্ত হয়। দূষিত মাটির সংস্পর্শে শিশুটি সংক্রমিত হয়। হুকওয়ার্ম লার্ভা মানুষের পায়ের ত্বকের মাধ্যমে প্রবেশ করে রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে।

  • কিভাবে জানা যাবে আমার বাচ্চা কৃমি দ্বারা সংক্রামিত কিনা?

প্রায়ই, শিশুর কৃমি সংক্রমণের কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। সংক্রমণ খুব হালকা হতে পারে সুতরাং উপেক্ষা করা হয়। আপনি যদি নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘বাচ্চাদের কি কৃমি হতে পারে?’ উত্তরটি হল হ্যাঁ; এমনকি শিশুরাও কৃমি দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে। উপদ্রবের ধরণ এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে, আপনার নিম্নলিখিত সতর্কতা লক্ষণগুলি অনুসন্ধান করা উচিত:

  • থুথু ফেলা: শিশুটি বিনা কারণে প্রায়ই থুতু ফেলতে শুরু করে কারণ কৃমি মুখের মধ্যে লালা বাড়িয়ে দেয়।
    মারাত্মক দুর্গন্ধযুক্ত মল: শিশুর মারাত্মক দুর্গন্ধযুক্ত মলের অর্থ হল কৃমির কারণে পেটে সংক্রমণ।
    মলদ্বারের কাছাকাছি চুলকানি: স্ত্রী কৃমি সাধারণত ডিম দেওয়ার জন্য মলদ্বারে চলে যায়, যা মলদ্বারের চারপাশে জ্বালা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে।
    পেট ব্যথা: এটি অন্ত্রে কৃমি থাকার সবচেয়ে সাধারণ চিহ্ন।
    ঘুম ব্যাহত হওয়াঃ চুলকানি, পেট ব্যথা এবং অস্থিরতা যৌথভাবে শিশুর ঘুমকে ব্যাহত করে।
  • বাচ্চাদের কৃমি সংক্রমণের অন্যান্য লক্ষণ ও উপসর্গ:
    শিশুরা কদাচিৎ সংক্রামিত হওয়ার লক্ষণগুলি প্রদর্শন করে, এবং যদি তাই হয়, তবে ক্ষতিকারকতা সর্বনিম্ন হতে পারে। এটা, তাই, নাও লক্ষণীয় হতে পারে। যাইহোক, লক্ষণগুলির বিষয়ে সচেতন হওয়ার সুপারিশ করা হয় এবং সন্দেহ থাকলে শিশুকে পরীক্ষা করা উচিত। বাচ্চাদের মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরণের কৃমি সংক্রমণগুলি কমবেশি একই রকম উপসর্গ সৃষ্টি করে। সেগুলি নিম্নলিখিত:
  • পেট ব্যথা
  • অবসাদ
  • ডায়রিয়া
    ওজন হ্রাস পাওয়া
  • বমি
    ক্ষুধামান্দ্য
  • ঘুমের অভাব
    জন্ডিস
  • খিটখিটেভাব
    পেটে অস্বস্তি
  • পেট খারাপ
  • ফুসকুড়ি, আমবাত, কালশিটে এবং অন্যান্য এলার্জির মত ত্বকের অবস্থা
  • পরজীবী বিপাকীয় বর্জ্য দ্বারা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের জ্বালার কারণে সৃষ্ট অস্থিরতা এবং উদ্বেগ
  • ক্লান্তি এবং শক্তির অস্বাভাবিক পরিবর্তন
  • ঘন ঘন গ্যাস এবং পেট ফাঁপা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • আচরণগত পরিবর্তন
  • শিশুদের কৃমি সংক্রমণের কারণ কী কী?

শিশুদের এবং অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের ক্রমাগত হামাগুড়ি দেওয়া এবং বাইরে খেলার কারণে কৃমি সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবারের জীবনধারার উপর নির্ভর করে, শিশুদের কৃমি হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কৃমি সংক্রমণ হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলি নীচে তালিকাভুক্ত করা হল:

  • একটি সংক্রামিত পৃষ্ঠতলের সংস্পর্শে আসা
  • সংক্রামিত খাদ্য বা জল খাওয়া
    অনুপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি বা পরিচ্ছন্নতার অভাব
  • কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না না করা খাদ্য গ্রহণ
  • অপর্যাপ্তভাবে হাত ধোওয়া
  • সংক্রামিত ব্যক্তির সান্নিধ্যে আসা

 

একটি কৃমি সংক্রমণ নির্ধারণ করার পরীক্ষা:

নিম্নলিখিত সহজ পরীক্ষাগুলি করে শিশুদের মধ্যে কৃমি সংক্রমণের সম্ভাবনা ডাক্তাররা নির্ধারণ করতে পারে:

  • মল পরীক্ষা
  • কৃমি বা কৃমির ডিমের উপস্থিতি নির্ধারণের জন্য মলের নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়।
    নখ পরীক্ষা করা
  • ডাক্তার শিশুদের নখের নিচে কৃমির বা মলের উপস্থিতি দেখতে বাচ্চাদের নখ পরীক্ষা করে দেখেন।
  • একটি আঠালো টেপ পরীক্ষা

এই পরীক্ষা বিশেষভাবে সুতাকৃমি সনাক্ত করার জন্য করা হয়। যদি কৃমির ডিম উপস্থিত থাকে, তবে তা সংগ্রহের জন্য বাচ্চাদের নীচে একটি টেপ রাখা হয়।
তুলোর ফালি দিয়ে মোছা

কৃমির ডিমের উপস্থিতি পরীক্ষা করার জন্য বাচ্চার শরীরের নিচের অংশ একটি তুলোর ফালি দিয়ে মোছা হয়।
আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট

গুরুতর কোনও সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা করা হয়, ডাক্তার আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে জীবাণুর অবস্থান শনাক্ত করেন।
শিশুদের কৃমির চিকিৎসা

কৃমি সংক্রমণ নির্মূল করা এমন কিছু বিশেষ সমস্যা নয়, চিকিৎসকের পরামর্শে কৃমির ওষুধ খাইয়ে তা সহজেই সম্ভব। শিশুদের কৃমিনাশক হিসেবে সবচেয়ে নিরাপদ হল কম মাত্রার অ্যালবেন্ডাজোল অথবা মেবেন্ডাজোল।

  • মূলধারার ঔষধ ব্যবহার করার পাশাপাশি, বাবা–মায়েরা শিশুদের কৃমির জন্য ঘরোয়া প্রতিকারগুলি বিবেচনা করতে পারেন, নিম্নলিখিত উপাদানগুলি শিশুর খাদ্যে মন্ড আকারে মিশিয়ে দিয়ে:
  • কাঁচা পেঁপে: এটির একটি এনজাইম আছে, পাপাইন, যেটি একটি কৃমিনাশক হিসাবে কাজ করে এবং অন্ত্রের মধ্যে কৃমিকে ধ্বংস করে।
  • রসুন: এটি একটি প্রাকৃতিক কৃমিনাশক এজেন্ট এবং পরজীবী কৃমিনাশ করতে অত্যন্ত কার্যকর।
  • ক্যারম বীজ: এই বীজ থাইমল সমৃদ্ধ, যা অন্ত্রের পরজীবী বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এগুলিকে গুড়ের সঙ্গে মিশ্রিত করে একটি শিশুকে দেওয়া হয়।
  • কুমড়ো বীজ: এই বীজে কিউকারবিটাসিন আছে যেটি কৃমিদেরকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে তোলে এবং শরীরের মধ্যে তাদের বেঁচে থাকা প্রতিরোধ করতে পারে।
  • কড়লা: এটি পেটের কৃমির সাথে যুদ্ধ করতে সহায়তা করে। জল এবং মধু দিয়ে মেশালে তিক্ত স্বাদ থাকে না।
  • নিম: এটির একটি পরজীবী–বিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে এবং বিভিন্ন অন্ত্রের কৃমি ধ্বংস করতে উপকারী।
  • গাজর: গাজরে ভিটামিন এ থাকে যা শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অন্ত্রের পরজীবীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে। খালি পেটে গাজর খাওয়া কৃমি পরিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারে।
  • হলুদ: এটি একটি অভ্যন্তরীণ অ্যান্টিসেপটিক এবং এটি সমস্ত ধরনের কৃমি নির্মূল করার জন্য পরিচিত।
  • নারকেল: এটির একটি শক্তিশালী পরজীবী বিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে, এটি কৃমি চিকিত্সার জন্য উপকারী। এটিকে তেল হিসাবে সরাসরি খাওয়া যেতে পারে।
  • লবঙ্গ: লবঙ্গ বিদ্যমান কৃমি এবং তাদের ডিম ধ্বংস করতে পারে এবং ভবিষ্যতে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে।

 

শিশুর বৃদ্ধির উপর কৃমির প্রভাব:
কৃমিগুলি পরজীবী এবং তাদের পালনকারীর শরীর থেকে পুষ্টি অর্জন করে। তারা নিম্নলিখিত উপায়ে সংক্রামিত হয়ে, শিশুদের পুষ্টির অবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে:
কৃমিগুলি ধারক কোষকলাতে বাস করে এবং সেগুলোকেই খায় এবং এমনকি রক্তেও থাকে এবং এভাবে লোহা ও প্রোটিন হ্রাস পায়, যা প্রায়শই রক্তাল্পতার দিকে নিয়ে যায়।
কিছু কৃমি যেমন গোলকৃমি অন্ত্রে কিছু ভিটামিনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, যার ফলে পুষ্টির শোষণ বিঘ্নিত হয়।
কৃমির কারণে ক্ষুধা হ্রাস, পুষ্টির অভাব এবং দুর্বলতা হয়।
ফলাফলস্বরূপ কৃমিগুলি ডায়রিয়ার সৃষ্টি করে এবং আমাশয় ঘটায় এইভাবে শরীর দুর্বল করে দেয়।
শিশুটির শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপর তাদের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে, যার ফলে শিশুটির ওজন হ্রাস পায় বা বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

শিশুদের কৃমি সংক্রমণ প্রতিরোধ

স্বাস্থ্যবিধি একাই ভবিষ্যতে সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে যে কৃমি সংক্রমণের কারণে শিশুদের পেট ব্যথা হয়। বাচ্চারা হামাগুড়ি দিতে এবং হাঁটতে শুরু করলে তাদের কৃমি সংক্রমণের ঝুঁকি সবথেকে বেশী। সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ:

নিয়মিত বাচ্চাদের ন্যাপিগুলি পরিবর্তন করুন এবং সাথে সাথে আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন।
ঘর এবং আশপাশ পরিষ্কার রাখুন।
বাচ্চা যেন পা ঢাকা জুতো পরিধান করে বাইরে খেলতে যায় এবং বাড়ীতে ফিরে যেন হাত এবং পা ধুয়ে ফেলে তা নিশ্চিত করুন।
বাচ্চাদের জল জমা এলাকার কাছাকাছি খেলতে দেবেন না।
ঘন ঘন আপনার শিশুর নখ কেটে দিন।
আপনার শিশুকে ফোটানো এবং পরিশ্রুত জল পান করান।
বাচ্চাদের পাকস্থলীতে কৃমি প্রতিরোধের জন্য খাবার ভালভাবে রান্না করা উচিত এবং কাঁচা খাবার দেওয়া উচিত নয়।
ফল এবং সবজি পরিষ্কার জলে ভাল করে ধোওয়া উচিত।
গরম জল দিয়ে জামাকাপড় এবং বিছানার লিনেন কেচে দিন।

স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখলে কৃমি থেকে সংক্রমণ– যা শিশুদের মধ্যে সাধারণ– প্রতিরোধে দীর্ঘ পথে কাজে আসতে পারে। কিছু ডাক্তার সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং শিশুদের মধ্যে সর্বোত্তম বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতি ৬ মাসে একবার করে কৃমিনাশক ওষুধ প্রদান করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। যদি আপনি কোনও উপসর্গ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হন তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।