banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

লুনার কোমরতাঁতের পণ্য যাচ্ছে ভারতে

টিলার ওপরে নিভৃত ত্রিপুরা গ্রাম সুধীর মেম্বারপাড়া। এই গ্রামেই লুনা ত্রিপুরার (২৫) বাড়ি। গ্রামে এমনিতেই সবাই সবাইকে চেনেন। তার ওপর কোমরতাঁতে লুনার সাফল্য বাড়তি পরিচিতিও এনে দিয়েছে। বাড়ি খুঁজে পেতে সমস্যা হলো না। মাটির দেয়াল আর টিনের চালাঘর। উঠানে আম-কাঁঠালগাছের ছায়ায় বসে কোমরতাঁতে কাজ করছিলেন লুনা ত্রিপুরা। অতিথির আগমনে পাশের একজনকে কোমরতাঁতটি বুঝিয়ে দিয়ে কথা বলতে এলেন তিনি।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার সুধীর মেম্বারপাড়ার বাসিন্দা লুনা ত্রিপুরা নিজের তৈরি ত্রিপুরা নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই ও রিসা অনলাইনে বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছেন। ফেসবুকে লুনার রিনাই-রিসার বিক্রির পাতাটি আগেই দেখা হয়েছিল। যে খবরের জন্য তাঁর বাড়িতে যাওয়া তা হলো, লুনা সম্প্রতি ভারত থেকেও রিনাই-রিসা তৈরির ফরমাশ পাচ্ছেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে একজন অনলাইন দেখে ইতিমধ্যে সাতটি রিনাই-রিসার ফরমাশ দিয়েছেন। রিসা হলো ওড়নার মতো পোশাক। আর রিনাই হলো নিচের অংশ, যা শাড়ির মতো পেঁচিয়ে পরতে হয়।
বিজ্ঞাপন

লুনা ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামের শিবমন্দিরে মন্দিরভিত্তিক প্রকল্পে সাড়ে চার হাজার টাকা বেতনে শিক্ষকতা করছিলেন। স্বামী ইরিন ত্রিপুরা বেকার। এ টাকায় সংসার চলছিল না। ছোটকাল থেকে কোমরতাঁতের ওপর আমার অন্য রকম দক্ষতা ছিল। একদিন ছোট ভাই দিগন্ত ত্রিপুরা পরামর্শ দিলেন, বাড়িতে বসে না থেকে রিনাই-রিসা তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করলে ভালো হবে।’ যেই ভাবা, সেই শুরু। মার্চের শেষ সপ্তাহে রিনাই-রিসা ফেসবুক পেজ খুলে অনলাইনে পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। সাড়াও পান ভালো। এখন খরচ বাদে প্রতি মাসেই লুনার ১০-১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে, যাতে সংসারটা মোটামুটি চলে যাচ্ছে। এ জন্য অবশ্য সংসারের কাজ সামলে গভীর রাত পর্যন্ত তাঁত চালাতে হয়।

লুনা জানান, সম্প্রতি কোমরতাঁতে তৈরি করা রিনাই-রিসার কারুকাজ দেখে ভারতের আগরতলা থেকে একজন ১০ হাজার টাকায় দুটি রিনাই-রিসা কেনেন। সেটি তাঁদের ভালো লাগায় আরও সাতটির ফরমাশ দিয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও ফরমাশ বাড়বে বলে তিনি মনে করছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও চাহিদা আসছে। বর্তমানে ১০ জন নারীকে দিয়ে কমিশনে কোমরতাঁতে রিনাই তৈরি করাচ্ছেন। আর তিনি নিজে মাসে চারটি রিসা তৈরি করছেন।

লুনার কাজে সাহায্য করছেন ছোট ভাই দিগন্ত ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ভারত থেকে ভবিষ্যতে আরও অর্ডার পাবেন বলে সেখানকার ক্রেতারা তাঁদের জানিয়েছেন।

টতবে তাঁরা জানান, কেবল কোনো আত্মীয় ভারতে বেড়াতে গেলে তাঁদের মাধ্যমে তাঁরা রিনাই-রিসা পাঠাতে পারেন। এর বাইরে তাঁদের লেনদেনের অন্য কোনো মাধ্যম নেই।

লুনার কাছ থেকে অনলাইনে রিনাই-রিসা কিনেছিলেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার মধুপুর এলাকার কোয়েলি ত্রিপুরা (২২)। তিনি বলেন, অনলাইনে কেনাকাটা নিয়ে একটা ভয় বা সন্দেহ কাজ করে। কারুকাজে মুগ্ধ হয়ে সন্দেহ নিয়েই তিনি অর্ডার করেছিলেন। পণ্য হাতে পেয়ে মনে হয়েছে ঠকেননি। লুনার কারুকাজ খুবই চমৎকার।

লুনার সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন নারীও। তাঁদের একজন চরণ দেবী ত্রিপুরা (২৪) বলেন, তিনি নয়টি রিনাই-রিসা তৈরি করে চারটি নিজে বিক্রি করেন। বাকি পাঁচটি অনলাইনে বিক্রির জন্য লুনাকে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকœহাশীষ ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, ত্রিপুরা নারীরা এমনিতেই অনেক পরিশ্রমী। সাধারণ পরিবারের অধিকাংশ নারী নিজেদের পোশাক (রিনাই-রিসা) নিজেরাই তৈরি করেন। লুনা ত্রিপুরা সংসারের কাজকর্ম সামলে কোমরতাঁতে রিনাই-রিসা তৈরি করে তা অনলাইনে বিক্রি করে এখানকার সবার কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন। আর পুঁজি গঠনে সরকারিভাবে সহায়তা পেলে তা এখানকার নারীদের খুবই উপকার হয়।

 

করোনাকালেও লাভের মুখ

আপা, কাজ কেমন চলছে?
হেসে জবাব দিলেন, ‘আপনাদের দোয়ায় ভালো চলছে। শিপমেন্ট শুরু করেছি।’
বেশির ভাগই নাকি প্রচণ্ড লোকসানে আছেন? অনেকের ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গেছে?
‘এটা খুবই সত্যি। তবে ভাগ্যক্রমে আমি এই সময়ে অনেক অর্ডার পেয়েছি। কর্মীদের মুখেওহাসি ফুটেছে।’
কথা হচ্ছিল নারী উদ্যোক্তা কোহিনুর ইয়াসমিনের সঙ্গে। তাঁর প্রতিষ্ঠান তরঙ্গ পাট, কচুরিপানা, হোগলাপাতা, শণ আর সিমেন্টের বস্তা থেকে ব্যাগ, ঝুড়িসহ বিভিন্ন শৌখিন পণ্য তৈরি করে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের এক সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, করোনাকালে ৬৭ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার আয় কমেছে। তবে এই হাহাকারের মধ্যেও কেউ কেউ আলোর দিশা পেয়েছেন। সুড়ঙ্গের শেষ মাথায় আলোর রেখা লক্ষ্য করে নিজেরা এগোচ্ছেন। অন্যদের অনুপ্রাণিত করছেন। এমন চারজন হস্তশিল্পজাত পণ্য উৎপাদনকারী নারী উদ্যোক্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁদের কারখানার চাকা আবার ঘুরছে। বিদেশ থেকে রপ্তানির চাহিদা আসা শুরু করেছে। কেউ দেশে কাজের আদেশ বা অর্ডার পেয়েছেন। কেউবা বিক্রি আর অর্ডার ধরতে ভিনদেশি অনলাইন মেলায় যোগ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাক্র্যাফটে সমবেত ৪৫০ জন উদ্যোক্তা। তাঁদের ৯৫ জন অর্থাৎ এক-পঞ্চমাংশ নারী। উদ্যোক্তাদের সব প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে বাংলাক্র্যাফট ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ৪০৭ কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের হিসাব দিচ্ছে। গত অর্থবছরে করোনার প্রভাবে রপ্তানি কমেছে। এই অর্থবছরে ৭০টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করেছে ২৬৬ কোটি টাকার বেশি।

করোনাকালের শুরুতে প্রায় বন্ধ থাকার পরে সম্প্রতি কিছু কিছু করে বিক্রি বেড়েছে। গত জুলাই থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা।

বাংলাক্র্যাফটে সমবেত ৪৫০ জন উদ্যোক্তা। তাঁদের ৯৫ জন অর্থাৎ এক-পঞ্চমাংশ নারী। উদ্যোক্তাদের সব প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে বাংলাক্র্যাফট ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ৪০৭ কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের হিসাব দিচ্ছে। গত অর্থবছরে করোনার প্রভাবে রপ্তানি কমেছে। এই অর্থবছরে ৭০টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করেছে ২৬৬ কোটি টাকার বেশি।

ভাগ্যের চাকা ঘুরছে
তরঙ্গের কোহিনুর ইয়াসমিনের উৎপাদনকেন্দ্রগুলো আবার সচল হয়েছে গত ৫ জুন। সেই সঙ্গে ২ হাজার ৮০০ নারীর ভাগ্যের চাকাও ঘুরতে শুরু করেছে। তাঁর এই নারী কর্মীরা ঢাকাসহ ৯ জেলায় কাজ করছেন।

কোহিনুর বলছেন, করোনাকালে অনেক ক্ষতি হয়েছে, এখন অর্ডার আসতে থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগও তৈরি হয়েছে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অন্য সময়ের চেয়ে এবার আমি দেড় গুণ বেশি কাজ পেয়েছি। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব পাটের পণ্যের চাহিদা অনেক।’

নাজমা আহসানের প্রতিষ্ঠান সানট্রেড মাত্রই মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় একটি চালানের ঝুড়ি ও ব্যাগ তৈরি করেছিল। ঠিক তখনই এল করোনাকাল। শেষ মুহূর্তে কার্যাদেশটি বাতিল হয়ে যায়। সেই দুঃখ এখন অনেকখানি কেটেছে নতুন বড় কার্যাদেশ পাওয়ার পর।

টঙ্গী, বগুড়া ও নীলফামারীতে তিনটি কারখানা এবং ওই জেলাগুলোর বিভিন্ন গ্রামের ঘরে ঘরে নাজমার প্রতিষ্ঠানের চার হাজার নারী হস্তশিল্পী কাজ করেন। গত মে-জুন মাসে পুরোনো ও নতুন মিলিয়ে দেড় মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ পৌনে ১৩ কোটি টাকার অর্ডারের কাজ শুরু হয়েছে।

টঙ্গী, বগুড়া ও নীলফামারীতে তিনটি কারখানা এবং ওই জেলাগুলোর বিভিন্ন গ্রামের ঘরে ঘরে নাজমার প্রতিষ্ঠানের চার হাজার নারী হস্তশিল্পী কাজ করেন। গত মে-জুন মাসে পুরোনো ও নতুন মিলিয়ে দেড় মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ পৌনে ১৩ কোটি টাকার অর্ডারের কাজ শুরু হয়েছে।

আফসানা আসিফ হস্তশিল্পজাত পণ্যের উৎপাদক কারখানা এসিক্সের ব্যবসায়িক অংশীদার। ক্ষতি সামলে ওঠার আশা করছেন আফসানা। গত মাসে ফ্রান্সে পণ্য পাঠিয়েছেন। এখন জাপানের জন্য পোষা প্রাণীদের খাবার দেওয়ার পাত্র সরবরাহের কাজ করছেন।

মোহাম্মদ আবুল কালাম স্বায়ত্তশাসিত সরকারি সংস্থা জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) নির্বাহী পরিচালক। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁর সংস্থা করোনা দুর্যোগ কাটাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ই-বিপণন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। তাঁরা বহুমুখী পাটপণ্যের তথ্য প্রচার করবেন।

রপ্তানি করতে ৯ ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে হয়। চাহিদাটা দুই ধরনের কাগজপত্রে নামিয়ে আনা দরকার। প্রণোদনা আরও বেশি প্রয়োজন। সব উদ্যোক্তা যেন পেতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

চাই সরকারের সহযোগিতা

উদ্যোক্তারা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারে কাছে প্রণোদনা আর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগ চাইছেন। ‘কোভিড-১৯ মহামারিতে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তা এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মজীবী নারীদের অবস্থা’ জরিপ করেছে ব্র্যাক। এই শিরোনামের জরিপ প্রতিবেদনটি বেরিয়েছে গত ১৭ সেপ্টেম্বর। ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের উদ্যোগে অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ প্রোগ্রাম এই সমীক্ষাটি পরিচালনা করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার এই শ্রেণির শিল্প-ব্যবসার জন্য এক হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা সহায়তা ঘোষণা করেছে। তবে প্রচার না থাকায় এবং পাওয়ার পথ জটিল হওয়ায় এ উদ্যোক্তারা সেভাবে তার নাগাল পাচ্ছেন না। প্রণোদনার মাত্র ১০ শতাংশ ছাড় হয়েছে। আর ৭১ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা এ সম্পর্কে জানেনই না। বেশির ভাগ নারী উদ্যোক্তা ব্যবসার জন্য এনজিওগুলোর ক্ষুদ্রঋণের দ্বারস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন

স্মিতা চৌধুরী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মণিপুরি সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ব্রিন্তা। তিনি শুধু পাটের পণ্য বানান। গত বছর জাপানে তিন দফায় ৭০ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি করেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে শেষ চালান গিয়েছে ২৫ লাখ টাকার। গাজীপুরে ব্রিন্তার কারখানা। কর্মী হালিমা খাতুন বলেন, দুই মাস কাজ বন্ধ ছিল। জুন থেকে পাটের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বানানো শুরু করেছেন। এসিক্সের আফসানা বললেন, তিনি কর্মীদের বেতন বাবদ ৪ শতাংশ সুদে প্রণোদনার ১৫ লাখ টাকা পেয়েছেন। জানুয়ারি থেকে ঋণ পরিশোধের শর্ত রয়েছে।

বাংলাক্র্যাফটের সভাপতি গোলাম আহসান প্রথম আলোকে বলেন, এই সংকটের মধ্যেও বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা কাজ পেয়েছেন এবং করছেন। তবে এখন উৎপাদনের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। পণ্য পরিবহনেও ব্যাঘাত ঘটছে। এখন সরকারের মনোযোগ খুবই দরকার। গোলাম আহসান আরও বলেন, রপ্তানি করতে ৯ ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে হয়। চাহিদাটা দুই ধরনের কাগজপত্রে নামিয়ে আনা দরকার। প্রণোদনা আরও বেশি প্রয়োজন। সব উদ্যোক্তা যেন পেতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সৌজন্যে: প্রথম আলো

 

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পথে জেসিন্ডা

লাখ লাখ ভোটার নিউজিল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে ভোট দিচ্ছেন। ব্যাপক জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি। গত সেপ্টেম্বরে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ভোট এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নির্বাচনে লেবার পার্টির নেতা জেসিন্ডা আরডার্নের (৪০) মুখোমুখি হচ্ছেন ন্যাশনাল পার্টির প্রধান কলিন্স (৬১)। এটি নিউজিল্যান্ডের ৫৩তম পার্লামেন্ট নির্বাচন।

মতামত সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ের পথে। করোনাভাইরাস মহামারি সফল ব্যবস্থাপনা তাঁর পক্ষে কাজ করতে পারে। তবে এখন বড় প্রশ্ন হলো তিনি সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবেন কি না তা নিয়ে।

১৯৯৬ সালে মিক্সড মেম্বার প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেনটেশন (এমএমপি) নামে পরিচিত একটি সংসদীয় ব্যবস্থা চালু করার পর থেকে নিউজিল্যান্ডে কোনো দলই সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।

সাধারণ নির্বাচনের ভোট দেওয়ার পাশাপাশি দুটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গণভোটও দিচ্ছেন নিউজিল্যান্ডবাসী। অধিকাংশ বিশ্লেষক বলছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসছেন জেসিন্ডা। কিছু মতামত জরিপে দেখা গেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতাও পেতে পারেন তিনি। আজ শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটার পর ফলাফল জানা যাবে।

লেবার পার্টির পক্ষ থেকে কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনায় জেসিন্ডার সফলতায় দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখা হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী কলিন্স বলছেন, করোনা–পরবর্তী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি ভালো করতে পারবেন।

দেশটির নির্বাচন কমিশন বলেছে, গতকাল শুক্রবারই অর্ধেকের বেশি, অর্থাৎ ২০ লাখ ভোট দেওয়া হয়েছে। নিউজিল্যান্ডবাসী ইথেনাসিয়া ও গাঁজা বৈধ করতেও গণভোটে ভোট দিচ্ছেন।

৫০ লাখের বেশি জনসংখ্যার দেশ নিউজিল্যান্ডে মাস খানেকের বেশি সময় ধরে করোনায় গোষ্ঠী সংক্রমণের কোনো ঘটনা নেই। সেখানে লোকদের মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করতে হয় না।