banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

নারীর কর্মক্ষেত্রে আইনি সুরক্ষায় বাংলাদেশ ১৭১তম

কর্মক্ষেত্রে নারীর আইনি সুরক্ষায় দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে ১৯০ দেশের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১৭১তম, যা গতবছর ছিল ১৬৯তম। এবার বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ৪৯ দশমিক ৪।

বিশ্বব্যাংকের ‘নারী, ব্যবসা ও আইন-২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে ২০১৭ সালের জুন থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নারীর চলাচলের স্বাধীনতায় বাংলাদেশের স্কোর ১০০, কর্মক্ষেত্রে ৫০, কাজ করার জন্য বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে ২৫, ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ৭৫, সম্পত্তির অধিকারে ৪০, বিয়ে করা ৬০, সন্তান নেয়া ২০ এবং পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে স্কোর ২৫।
মোট আটটি নির্দেশকের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক প্রত্যেক দেশের স্কোর নির্ণয় করেছে। এতে শূন্য থেকে ১০০-এর মধ্যে স্কোরিং দেয়া হয়েছে। নির্দেশকগুলো হলো- নারীর চলাচলের স্বাধীনতা, চাকরি শুরু করা, কাজের প্রাপ্তি, বিয়ে হওয়া, বাচ্চা থাকা, ব্যবসা পরিচালনা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পেনশন প্রাপ্তি। এসব নির্দেশকের ক্ষেত্রে একটি দেশের আইন নারীকে কতটুকু সুরক্ষা দেয়, তা বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় উঠে এসেছে

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারত (১১৭তম), দেশটির স্কোর ৭৪ দশমিক ৪। এরপর মালদ্বীপের অবস্থান ১১৮ (স্কোর ৭৩.৮), নেপাল ১১৯ (স্কোর ৭৩.৮), ভুটান ১২৫ (স্কোর ৭১.৯), শ্রীলঙ্কা ১৩৭ (স্কোর ৬৮.১), পাকিস্তান ১৭২ (স্কোর ৪৯.৪) এবং আফগানিস্তান ১৮৩ (স্কোর ৩৮.১)।
সর্বোচ্চ ১০০ স্কোর নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে আছে ৮টি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে- কানাডা, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, সুইডেন, ফিনল্যান্ড এবং এস্তোনিয়া।

১৩৮ বছরে প্রথম নারী নির্বাহী পেল জাপান কেন্দ্রীয় ব্যাংক

জাপান কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এই প্রথম একজন নারী নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হল। সোমবার (১১ মে) জাপানের অর্থমন্ত্রী তারো আসো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্বাহী পরিচালক হিসেবে টোকিকো শিমিজুর নাম ঘোষণা করেন। ৫৫ বছর বয়েসি এ ব্যাংকার বর্তমানে ব্যাংকটির নাগোয়া ব্রাঞ্চে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।

১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক অব জাপান সম্প্রতি নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু রদবদলের উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে ছয় সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে শিমিজু নিয়োগ পেলেন। ব্যাংকের ১৩৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম- পরিচালনা পর্ষদে নারী নিয়োগের ঘটনা এটিই প্রথম।

উল্লেখ্য, জাপান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪৭ শতাংশ কর্মী নারী হলেও তাদের মাত্র ১৩ শতাংশ উচ্চপদস্থ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে আছেন। এছাড়াও আইনগত ব্যাপার, পারিশ্রমিক প্রক্রিয়া ও ব্যাংক নোট সংক্রান্ত বিভাগের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে ২০ শতাংশ নারী কর্মরত রয়েছেন।

জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকৌশল বিদ্যায় ডিগ্রি নিয়ে ১৯৮৭ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগ দেন শিমিজু। ব্যাংকটির আর্থিক বাজার বিভাগ ও বৈদেশিক মুদ্রা কার্যক্রম বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ব্যাংকের ইউরোপীয় বিভাগের সাধারণ ব্যবস্থাপক হিসেবে লন্ডনে দায়িত্ব পালন করেন শিমিজু।

গত কয়েক দশক ধরে উচ্চ শিক্ষিত নারীর সংখ্যা বাড়ায় জাপানের পুরুষ প্রভাবিত পরিচালনা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। তবে ৭০ বছরের পুরনো ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকে যেমন গত বছর একজন নারী গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হয়, জাপানের এ ব্যাংকটিতে এখনও এরকম সর্বোচ্চ পদে কোন নারী নিয়োগ পাননি।

জাপানে মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ নারী হলেও দেশটি লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে। ২০১৮ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের এক হিসাব অনুযায়ী, লৈঙ্গিক বৈষম্য হ্রাসের সূচকে ১৫৩টি দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ১২১। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির মতে, লৈঙ্গিক বৈষম্য নিরসনে জি-৭ এর মত প্রভাবশালী কমিটিতেও জাপানের অবস্থান তলানিতে।

তবে দেশে নারীর ক্ষমতায়ণ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ‘উওমেনোমিক্স’ নামের এক নীতি গ্রহণ করেন। এর মাধ্যমে শ্রমজীবী নারীদের ক্ষমতায়ণ করার কাজে নজর দেয় জাপান কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একজন নারীর নিয়োগ, সেই নীতিরই অংশ।

 

‘যে রাত হাজার মাসের চেয়েও সেরা!’

‘যে রাত হাজার মাসের চেয়েও সেরা!’


সাজেদা হোমায়রা


রমজান মাসের প্রতিটি রাত ও দিনের সবগুলো মুহূর্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি নিয়ামত! এসময় আল্লাহর বিশেষ দৃষ্টি থাকে তাঁর বান্দাদের প্রতি।

পুরো রমজান মাসই সওয়ার অর্জনের মাস। আর এ মাসের শেষ দশকেই রয়েছে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এক রাত! এ রাতেই নাজিল হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কুরআন। এ রাতের মর্যাদা ‘সূরা কদর’ এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।

“তুমি কি জানো? কদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উওম।” – সূরা কদরঃ২-৩

এ রাতে অসংখ্য ফেরেশতা কূল জিবরাঈল আ. এর নেতৃত্বে পৃথিবীতে নেমে আসে। আর ইবাদতকারীর উপর রহমত, বরকত, মাগফিরাত বর্ষণ করতে থাকে। এটি এমন একটি রাত যে রাতে তাকদীরের ফায়সালা করা হয়। এ রাতে ভাগ্যের ভাঙ্গা গড়া চলে। এ রাতে সফলতা, ব্যর্থতা, রিযিক সহ সবকিছুর ভাগ্যে নির্ধারিত হয়। শুধুমাত্র দুয়াই পারে এই ভাগ্য নির্ধারণে পরিবর্তন আনতে।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেছেনঃ “যদি কেউ ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে কিয়ামুল লাইল/তাহাজ্জুদে অতিবাহিত করে তবে আল্লাহ তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।
সুবহানাল্লাহ!

রমজানের শেষ দশকের কোন রাতটি লাইলাতুল কদরের রাত, সে সম্পর্কে রাসূল সা. নির্দিষ্ট করে বলেননি। আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেনঃ “তোমরা শবে কদর অনুসন্ধান করো রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতসমূহে।” তাই রাসূল সা. এর কথা অনুযায়ী শবে কদর রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখেই খুঁজতে হবে।
আমরা বেশিরভাগই শুধুমাত্র ২৭ রমজানের রাতকে শবে কদর ভেবে বাকী অন্য রাতগুলোয় ইবাদতের ব্যাপারে উদাসীন থাকি। আমাদের উচিত রমজানের শেষ দশদিনের প্রতিটি বেজোড় রাতই সমান গুরুত্ব দিয়ে ইবাদত করা। তাহলে আর শবে কদর মিস হবার সম্ভাবনা থাকে না।

কদরের রাতে নির্ধারিত কোনো বিশেষ পদ্বতির নামাজ অথবা কোনো নির্দিষ্ট আমল করা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

এ রাতগুলোতে বেশি বেশি ভালো কাজ করতে হবে।
এ রাতে আমরা যা যা করতে পারি….
১. বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া
২. কুরআন তেলাওয়াত, কুরআনের অনুবাদ ও তাফসীর পড়া।
৩. আল্লাহর জিকির করা।
৪. তাওবা ও ইসতিগফার করা
৫. অনেক অনেক দুয়া করা
৬. দান সাদকাহ করা

এছাড়াও যে কোনো সৎ কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করতে পারি। এ রাতের সৎ কাজ হাজার মাসের সৎকাজের চেয়ে বেশি ভালো! এ রাতে আমরা আল্লাহর কাছে দুয়া ও আমলের মাধ্যমে আমাদের তাকদীর পরিবর্তন করে নিতে পারি….সুযোগ করে নিতে পারি জান্নাতে যাওয়ার!

এ রাতের জন্য রাসূল সা. হযরত আয়েশা রা. কে বিশেষ একটি দুয়া শিক্ষা দিয়েছেন। সেই দুয়াটি আমরা বেশি বেশি করে পড়বো।

“আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফুআন্নি।”
অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল! ক্ষমা করাকে আপনি পছন্দ করেন। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।”

আয়েশা রা. বলেন, “রমজানের শেষ দশদিন যখন শুরু হতো, রাসূল সা. কোমর বেঁধে নিতেন। একেবারেই বিছানায় যেতেন না। নিজে জাগতেন এবং পরিবারকেও জাগাতেন।”

হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এ রাতে আমরাও ইবাদতে মশগুল হই….সিজদায় নুঁয়ে থাকি প্রভুর প্রতি! সঙ্গোপনে নিজেকে সঁপে দেই পরম দয়াময়ের কাছে!

শুধু ২৭ এর রাত নয়, ইবাদাতে কাটাই শেষ দশকের প্রতিটি রাত…
নিশ্চয়ই আমরা খুঁজে পাবো শবে কদর!

সাজেদা হোমায়রা