banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

করোনায় আক্রান্ত মা কি সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারবেন?

করোনায় আক্রান্ত মা কি সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারবেন?


স্বাস্থ্যকথা


প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধে নামতে হয়েছে চীনকে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক নিয়েও গবেষণা করেছে দেশটি। সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে গর্ভবতী নারীদের ওপর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেছে চীন। এসব গবেষণার পর চীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে গর্ভবতী কোনো নারী করোনায় আক্রান্ত হলেও তার গর্ভ সুরক্ষিত। চীনে এ বিষয়ে ঠিক কী ধরনের পরীক্ষা হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।

দেশটির উহান প্রদেশে সর্বপ্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এই আক্রমণের প্রভাব থেকে বাঁচতে কী উপায় বের করা যায় তা নিয়েও চীনই প্রথম থেকে লাগাতার গবেষণা করে। সেই গবেষণার ফল তারা প্রকাশও করেছে একাধিক জার্নালে। সম্প্রতি আমরাও যেহেতু এই ভাইরাসের কবলে পড়েছি, সে জন্য মরণব্যাধি এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সেসব জার্নালই প্রধান ভরসা।

মোটামুটি তিন থেকে চাররকমের পরীক্ষা চীনে করা হয়। গর্ভবতী নারীদের থেকে তার ভ্রূণে অনবরত যে খাদ্যরস বাহিত হচ্ছে সেই রসের পরীক্ষা করে, শিশুর জন্মের পর তার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে, শিশু ও তার মায়ের মধ্যে সংযোগকারী নাড়ির থেকে রক্ত নিয়ে এবং গর্ভে ভ্রূণ যেখানে থাকে তার চারপাশে একরকম জলীয় পদার্থ থাকে। এই সব কিছু পরীক্ষা করে দেখা গেছে করোনা আক্রান্ত কোনো মায়ের শরীর থেকে গর্ভস্থ ভ্রূণ বা শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করতে পারেনি।

এরপর খুব স্বাভাবিকভাবেই এরপর প্রশ্ন ওঠে জন্মের পর ওই শিশু কি তার মায়ের কাছে থাকবে? তার মায়ের দুধ খেতে পারবে? জবাব দিতে গিয়ে ডাক্তারদের কিছু অংশ মায়ের দ্রুত আরোগ্য এবং শিশুর সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে বলেছেন, শিশু এবং তার মাকে অন্তত ১৪ দিন আইসোলেশনে রাখতেই হবে। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসকই এর বিরুদ্ধে। তারা জানিয়েছেন, শিশু তার মায়ের কাছ থেকে জন্মের পর ১৪ থেকে ১৫ দিন আলাদা হয়ে থাকলে তাদের সারা জীবনের সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হবে না। তাতে দু-জনেরই ক্ষতি।

অধিকাংশ চিকিৎসকই জোর দিয়ে বলছেন, শিশুকে মা তার বুকের দুধ খাওয়াবেন। তবে শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে ভালোভাবে নিজের হাত স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে নিবেন। আর দুধ খাওয়ানোর আগে স্তন অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

এরপর মুখে মাস্ক পরে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বুকের দুধ বের করে তা সন্তানকে দিবেন। তাতে কোনও ক্ষতি নেই। তবে সন্তানসম্ভবা নারীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবেন। প্রত্যেকেই এমন সময় চিন্তায় থাকেন। তাতে এমন একটা পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা হওয়ারই কথা। যদি নিজের সন্দেহ হয়, সামান্য কাশি জ্বর হয় তবে নিজেই নিজেকে পরিবারের আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে রাখুন। ১৫ পর দেখুন কেমন আছেন।

বর্তমানে আমাদের দেশে এখন ঋতু পরিবর্তনের সময়। এই সময় স্বাভাবিক নিয়মেই জ্বর হয়ে থাকে। তবু ভয় না পেয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন যা কিনা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা বারবার বলে আসছেন। তবে নির্দিষ্ট সময়ের পরও জ্বর না কমলে লালা পরীক্ষা করান। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে আর দুশ্চিন্তার কিছু থাকবে না। আর যদি পজিটিভ হয় তবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করুন।

সুত্রঃ অধিকার।