নারী নির্যাতন: ভালোবেসে বিয়ে, অতঃপর পরকীয়া-নির্যাতন সত্ত্বেও কেন মানিয়ে চলা?
নারী সংবাদ
নিজ পরিবারেই নির্যাতনের শিকার হন নারীরা।আয়েশা আক্তার (ছদ্মনাম)। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নারী বিশ বছর আগে ভালোবেসে যাকে বিয়ে করেছিলেন, ১৫ বছর পর সেই ভালোবাসার মানুষেরই ভিন্ন এক রূপ আবিস্কার করেন তিনি।
মিসেস আক্তারের ভাষায়, তার ‘সুখের সংসার’ হঠাৎ করেই এলোমেলো হয়ে যায়। কারণ, তার স্বামী অফিসের এক নারী কলিগের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
“আমি হঠাৎ করেই দেখলাম প্রায় প্রতি সপ্তাহেই সে শুক্রবার-শনিবারে বাইরে থাকতে শুরু করেছে।”
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবারে অনেক রাত করে বাসায় ফিরছে। আগে কখনো সে এ রকম করেনি। সংসারে ঠিকমতো খরচ দিচ্ছে না। এরপরই আমি তার পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি আবিস্কার করি।”
“একদিন তার গাড়িতে আমি নতুন একটা মোবাইল খুঁজে পাই। সেই মোবাইল দিয়ে ও লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েটার সঙ্গে কথা বলতো। এমনকি ওরা ভায়াগ্রা ট্যাবলেট খেয়ে কিভাবে ফিজিক্যাল রিলেশন করেছে সেগুলোও চ্যাটিংয়ে আলোচনা করতো।”
মিসেস আক্তার বলছেন, তিনি যখন এর প্রতিবাদ করেছেন তখন থেকেই মূলতঃ তার উপর স্বামীর অত্যাচার শুরু হয়।
মারধর, গালাগালি, সংসারের খরচ বন্ধ করে দেয়াসহ নানারকম অত্যাচার হয়েছে তার উপর।
“সে পুরুষ মানুষ এবং অনেক টাকা বেতন পায়। আমি কিছুই না। সে জাস্ট এটাই বোঝায় আমাকে। এবং তার ভাবভঙ্গি হচ্ছে, আমি যা ইচ্ছা করবো, পারলে তুই কিছু করে দেখা।”
“আমি এসব কথা পরিবারকে বলেছি, ওদের পরিবারকেও বলেছি। ওরা বুঝিয়েছে, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। মামলা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সবাই নিষেধ করেছে। দুটো বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো তাই নির্যাতন সহ্য করেই এখনো সংসার করে যাচ্ছি।”
বাংলাদেশে স্বামীর ঘরে কিংবা নিজ পরিবারে নারীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এমন অবস্থা চললেও অনেকক্ষেত্রে নির্যাতিতরাই এর প্রতিবাদে খুব একটা আগ্রহ দেখান না।
কিন্তু বাংলাদেশে যেসব নারী এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চান, তারাও পরিবার কিংবা সমাজকে পাশে পাচ্ছেন না ঠিক মতো।
সুত্রঃ বিবিসি।