banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

করোনা সংকটে গর্ভবতী মায়েদের বলছি…

করোনা সংকটে গর্ভবতী মায়েদের বলছি……….


ডা.ফাহমিদা শিরীন নীলা


দেশের এই সংকটকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি সংকটে আছি আমরা ডাক্তাররা, পেশাগত কারণে। কিন্তু সাধারন জনগণের মধ্যে বাচ্চা এবং বৃ্দ্ধের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি সংকটে আছেন আপনারা গর্ভবতীরা। গর্ভকালীন সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এই সময় যেকোন ভাইরাস সংক্রমনের আশঙ্কা সাধারনের চেয়ে ৫.৭ গুন বেশি। জটিল কোন প্রবলেম না থাকলে এক দু’মাস চেকআপ না করালে আপনার তেমন ক্ষতি হবে না। বরং চেকআপ করতে গিয়ে চেম্বার, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বা হাসপাতাল থেকে আপনি নিয়ে যেতে পারেন ভাইরাস।

চেকআপের ডেট আছে। কি করবেন?

অসুবিধা নেই। এটা আদালতের দেয়া ডেট না। না আসলে আপনাকে পুলিশ গিয়ে ধরে নিয়ে এসে জেলে পুরবে না।
তাহলে কি করবেন?
১)আগের প্রেসক্রিপশনের ওষুধগুলোই চালিয়ে যান।
২)বাসায় প্রেসার মাপা মেশিন থাকলে মাঝে মাঝে নিজেরাই প্রেসার চেক করুন ।
৩)বাচ্চার নড়াচড়া খেয়াল রাখুন।
৪)ওজন বাড়ছে কি না খেয়াল রাখুন। বাসায় ওজন মাপার মেশিন থাকলে প্রতি মাসে ওজন দেখে নিন।
৫)নতুন কেন সমস্যা দেখা দিলে বা কোন অসংগতি মনে হলে ফোনে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিন।
৬)সকল সামাজিকতাকে পাশ কাটিয়ে একা একা নিজের মত থাকুন। আপনার সঙ্গে তো একজন আছেই সবসময়। আপনার ভবিষ্যত সন্তানের সাথে কথা বলুন। তার সুরক্ষার জন্য নিজেকে আড়ালে রাখুন।
৭)প্রয়োজন ছাড়া কোনভাবেই ঘরের বাইরে যাবেন না।
৮)মাঝে মাঝে হাত-মুখ সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করুন। বারবার মুখে-চোখে হাত দিবেন না।
৯)বাইরে থেকে কেউ আসলে সে পরিচ্ছন্ন না হওয়া পর্যন্ত দুরত্ব রক্ষা করে চলুন।
১০)হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার নিজে মেনে চলুন। এবং বাসার সকলকে এটি মনে চলতে বাধ্য করুন।
১১)বাড়ীতে কারো সর্দি-কাশি হলে তাকে কিছুটা আলাদা করে রাখুন। কোনভাবেই তার কাছাকাছি যাবেন না। এমনকি আপনার বাচ্চা হলেও না। তাকে পরিবারের অন্য কোন সদস্যের কাছে দেখভালের জন্য রাখুন।
১২)আপনার সর্দি-কাশি হলে সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ফোনে আপনার ডাক্তারকে উপসর্গগুলো জানান। তাঁর পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ পথ্য খান।

কোভিড১৯ যেহেতু একটি নতুন সংক্রমন, এই সম্পর্কে জানি আমরা অল্পকিছুই। আমরা এখনও জানিনা, আপনি এই ভাইরাস আক্রান্ত হলে আপনার গর্ভস্থ সন্তানের কোন ক্ষতি হবে কি না বা সে এই সংক্রমন বহন করবে কি না! তবে অল্প কিছু গর্ভবতীর সময়ের পূর্বেই ডেলিভেরি হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। সেটির সঠিক কারন জানা যায়নি।

ডেলিভেরির সময় কি করবেন?

আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নির্দিষ্ট হাসপাতালে ডেলিভেরি করান। তবে সংক্রমন এড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
ডেলিভেরির সময় বা পরে আত্মীয়-স্বজনের ভিজিট প্রত্যাহার করুন। বাচ্চা দেখতে চাইলে ছবি তুলে অনলাইনে পাঠিয়ে দিন কিংবা সেটি সম্ভব না হলে সন্তানের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে তাদের অপেক্ষা করতে বলুন। বাচ্চা একটু দেরি করে দেখলে মহাভারত শুদ্ধ বা অশুদ্ধ কোনটাই হবে না। বরং এই মুহূর্তে আপনার এবং বাচ্চার শুদ্ধ থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াবেন কি না ?

ভাইরাসটি নতুনভাবে সনাক্ত হওয়ার কারণে এ সম্পর্কে আমরা জানিনা যে এটি বুকের দুধের মাধ্যমে সন্তানের শরীরে প্রবেশ করে কি না! তবে যেহেতু বুকের দুধ বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, আপনারা বুকের দুধ নিয়মমতোই খাওয়াবেন। তবে বাচ্চাকে স্পর্শ করার পূর্বে নিয়ম মেনে হাত পরিষ্কার করে নিবেন ।অযথা বাচ্চার চোখে-মুখে বা শরীরে হাত দিবেন না।

একটা বিষয় মনে রাখবেন, যেকোন নতুন রোগ বা সংক্রমন হলে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণালব্ধ ফল পেতে সময় লাগে। অল্প কিছু স্যাম্পল পরীক্ষা করে এমনিয়োটিক ফ্লুইড(বাচ্চার থলিতে থাকা পানি) এবং বুকের দুধের মধ্যে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। কিন্তু এই দুই মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায় না এটা নিশ্চিত করে বলতে আরও গবেষণা আবশ্যক, যা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। কাজেই আমরা সবটাকেই আমলে নিয়ে সাবধানে থাকবো।

ভাল থাকুন সন্তানধারী সকল মা এবং তাদের সন্তানেরা।

ডা.ফাহমিদা শিরীন নীলা
এমবিবিএস; এফসিপিএস(অবস্ এন্ড গাইনী), ফিগো ফেলো(ইটালী)
গাইনী বিশেষজ্ঞ
বগুড়া।
২১/০৩/২০২০ ইং।

 

তিরস্কারমূলক শব্দ যেভাবে জব্দ করে নারীকে

তিরস্কারমূলক শব্দ যেভাবে জব্দ করে নারীকে


নারী সংবাদ


বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা কতটা হয়?

আদালতে আড়াই মাসের শিশু, আইন বদলানোর আদেশ

‘দুটো বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো তাই নির্যাতন সহ্য করেই সংসার করে যাচ্ছি’
‘নিজের পরিবারই পক্ষে ছিল না’

তামান্না নুপুর নামে আরেকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়। বছরের পর বছর স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে তিন বছর আগে তিনি স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন।

এখন গাজীপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।

তামান্না নুপুর জানাচ্ছেন, বিয়ের পর থেকেই পাঁচ বছর ধরে তিনি স্বামীর পরিবারে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ছোটখাট বিষয়ে কিংবা কারণে-অকারণে তাকে মারধোর করা হতো।

সিগারেট দিয়ে একাধিকবার তার শরীরে ছ্যাকা দেয়ার ঘটনাও আছে।

“ওদের আসলে আমাকে ভালো লাগতো না কোন কারণে। এজন্যই অত্যাচারের অজুহাত খুঁজতো। বাসায় জানাইছি। তারা বলে, সহ্য করো।”

মিজ নুপুর বলছেন, “কতদিন আর সহ্য করবো? যখন মাত্রা ছাড়ায় গেলো, শশুরবাড়ির সবাই নির্যাতন করতে শুরু করলো তখন আর থাকতে পারলাম না। নিজের সিদ্ধান্তেই তালাক দেই। আমার নিজের পরিবার বলছে, তারা আমার দায়িত্ব নিতে পারবে না।”
পরিবার থেকে সাহস না পেয়ে স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেননি তামান্না নুপুর।
তামান্না নুপুর বলছেন, তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার বাবা-মা রাজি হননি।

“বাবা বললো, মামলা করে কী হবে? দরকার নাই। এখন পরিবার যদি হেল্প না করে, তাহলে আমার একার পক্ষে তো সম্ভব না। আমি তো থানা-পুলিশের ব্যাপার কিছুই বুঝি না।”

বাংলাদেশে পরিবারের মধ্যে বিশেষত: স্বামীর মাধ্যমে নারী নির্যাতনের যে চিত্র তা বেশ ভয়াবহ।

শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ বিভিন্ন ধরণের নির্যাতনের মধ্যেই দিনের পর দিন অনেকেই জীবন পার করলেও এ নিয়ে অভিযোগ বা প্রতিবাদের চিত্র খুব একটা দেখা যায় না।

এ নিয়ে সচেতনতাও কম। আবার নিজ পরিবারেও নির্যাতনের মুখে পড়েন অনেকে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নারী নির্যাতনের চিত্র নিয়ে যে জরিপ প্রকাশ করে সেখানে দেখা যায় বাংলাদেশে ৭২.৬ শতাংশ বিবাহিত নারীই কোন না কোনভাবে স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন।

এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের হার ৪৯.৬ শতাংশ।

জরিপে দেখা যাচ্ছে, যারা নির্যাতনের শিকার হয় তাদের ৭২.৭ শতাংশই নির্যাতনের ঘটনা বাইরের কাউকে বলেন না।

আর থানা-পুলিশ পর্যন্ত অভিযোগ পৌঁছান মাত্র ১.১ শতাংশ নির্যাতিত নারী।

অর্থাৎ বেশিরভাগই মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছেন। কিন্তু এরকম পরিস্থিতি কেন হলো?

সুত্রঃ বিবিসি।