banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

‘মৃগীরোগ’

‘মৃগীরোগ’


ডা. মারুফ রায়হান খান


আজ ইন্টারন্যাশনাল এপিলেপ্সি ডে। এপিলেপ্সি আমাদের দেশে মৃগীরোগ নামে পরিচিত।

সারা পৃথিবী জুড়েই সবেচেয়ে বেশি যে স্নায়ুরোগটি দেখা যায় তা হচ্ছে এপিলেপ্সি বা মৃগীরোগ। পৃথিবীতে প্রায় ৫০ মিলিয়ন এপিলেপ্সির রোগী আছে, যার মধ্যে ৪০ মিলিয়ন রোগীই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।

এপিলেপ্সি কী?

খুব সহজ ভাষায় বোঝাতে গেলে, বারবার খিঁচুনি হবার প্রবণতা যেখানে কোনো ধরনের প্ররোচনা থাকে না–তাকেই এপিলেপ্সি বলে।

এটি সাধারণত ২০ বছরের আগে কিংবা ৬০ বছর বয়সের পর শুরু হয়।

কী কী কারণকে দায়ী করা হয় এ রোগের পেছনে?

১. অনেকক্ষেত্রেই কোনো কারণ জানা যায় না।

২. শিশু মায়ের গর্ভে থাকার সময় কিছু জীবাণু দিয়ে যদি আক্রান্ত হয়ে থাকে, যেমন : TORCH, HIV।

৩. জন্মগতভাবে মস্তিষ্কের গঠনে যদি ত্রুটি থাকে।

৪. হাইপোক্সিক ইশকেমিক এনকেফালোপ্যাথি (সাধারণত নবজাতক জন্মের পর দেরি করে কাঁদলে এ সমস্যা হয়ে থাকে)।

৫. মস্তিষ্ক বা মস্তিষ্কের আবরণে কোনো ইনফেকশান, যেমন : মেনিনজাইটিস।

৬. মস্তিষ্কে কোনো আঘাত।

৭. মস্তিষ্কে কোনো টিউমার।

৮. কিছু ক্রোমোজোমাল ডিজঅর্ডার ইত্যাদি।

কী কী বিষয় মৃগীরোগের এ খিঁচুনিকে ত্বরান্বিত করতে পারে?

১. কম ঘুম হওয়া

২. যারা মৃগীরোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা যদি ওষুধ না খান

৩. মদ্যপান (বিশেষ করে মদ্যপান ছাড়ার সময়)

৪. শারীরিক এবং মানসিক অবসাদ

৫. ঝিকিমিকি আলোর সংস্পর্শে যেমন : টেলিভিশন এবং কম্পিউটার স্ক্রিন

৬. উচ্চ শব্দ, মিউজিক, পড়া, গরম পানিতে গোসল ইত্যাদিও অনেকের ক্ষেত্রে খিঁচুনির উদ্রেক করতে পারে।

কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়?

১. ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাম : এটি অনেকটা ইসিজি পরীক্ষার মতো, তবে এটি মস্তিষ্কের। কখনও কখনও এটা দিয়ে এপিলেপ্সি রোগ নির্ণয় করা যায়। তবে যদি এ পরীক্ষা নরমাল আসে তার মানে এই না যে তার এপিলেপ্সি থাকার সম্ভাবনা নেই।

২. কিছু কিছু ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের এম.আর.আই করতে হতে পারে।

কীভাবে চিকিৎসা করা হয়?

মৃগী রোগের নির্দিষ্ট ও উপযুক্ত ওষুধ দেওয়া হয়, যা এন্টিএপিলেপ্টিক ড্রাগ নামে পরিচিত।

কতোদিন ওষুধ খেয়ে যেতে হবে?

যদি রোগী খিঁচুনি-বিহীন কমপক্ষে দুই বছর পার করে, মৃগীরোগের ওষুধ ধীরে ধীরে পরবর্তী ৬-১২ সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ করা যায়।

জীবনযাত্রায় কী কী পরিবর্তন আনতে হয়?

১. উজ্জ্বল এবং ঝলকানো আলো পরিহার করতে হবে। যেমন : টিভি, ভিডিও গেইমস।

২. আগুন থেকে দূরে থাকতে হবে।

৩. পানিতে ঝাঁপ দেওয়া বা সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকা উচিত।

৪. গাছে চড়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

এ রোগের ভবিষ্যত কেমন?

১. ৭০% রোগীর ক্ষেত্রেই খিঁচুনি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

২. ৫-১০% রোগীর ক্ষেত্রে খিঁচুনি বারবার হতে পারে এবং অনিয়ন্ত্রিত থাকতে পারে। ৩. ৩০% রোগীর ক্ষেত্রে রোগের শুরু থেকেই “চিকিৎসা করা/নিয়ন্ত্রণ করা” বেশ কঠিন বলে বিবেচিত হয়

 

বিবেক


ফাতিমা মারিয়াম


দশম বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে লিমা রফিকের কাছ থেকে দশ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উপহার পেয়েছে। বেশ খুশি লিমা। আত্মীয় স্বজন যেখানে যা আছে সবাইকে ফোন করে তার এই আনন্দের কথা জানাচ্ছে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বা বান্ধবীদের বাসায় গিয়ে দেখিয়ে এসেছে।

এবার বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে কোন অনুষ্ঠান করেনি। তাই এত কষ্ট করে মানুষের কাছে গিয়ে আনন্দ প্রকাশ করা লাগছে। এত আনন্দের মাঝেও মনে মনে রফিকের প্রতি এই ব্যাপারে কিছুটা রাগ রয়ে গেছে। হাঁদারামটা যদি এবার একটা অনুষ্ঠান করতে রাজি হত তবে আর জনে জনে গিয়ে আনন্দের খবরটা প্রচার করা লাগত না। এখন আর কী করা? এই মধুর কষ্টটুকু ভোগ করতেই হচ্ছে।

বউ খুশী; তাই রফিকও ভীষণ আনন্দিত! কিছু নগদ টাকা পকেট থেকে চলে গিয়েছে বটে! তবে এটা পুষিয়ে নিতে তার বেশি সময় লাগবে না। একজন অসৎ কর্মকর্তার কাছে এই কয়টা টাকা কিছুই না।

সকাল দশটার দিকে অফিসের কাজে ব্যস্ত রফিক। গ্রাম থেকে ছোটবোন শরিফা ফোন করে বলল যে তার স্বামী এক্সিডেন্ট করেছে। চিকিৎসা খরচের জন্য কিছু টাকা প্রয়োজন। রফিক সাফ বলে দিয়েছে,’এখন আমার হাতে টাকা নেই, কিছু দিতে পারব না।’

আবার অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল রফিক।