banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

কি ভাবে মা ডাক্তার হয়ে উঠেন?

কি ভাবে মা ডাক্তার হয়ে উঠেন?


ডা. মারুফ রায়হান খান


একবার গাইনির এক ম্যাডামের সাথে অপারেশান করছিলাম। অপারেশানের মাঝে তার ছোট্ট মেয়েটার ফোন৷ তখন ৩টা কী সাড়ে ৩টা বাজে। ফোন করে বাচ্চাটার কী কান্নাকাটি৷ আম্মু তুমি এখনই চলে এসো, প্লিইইইইজ চলে এসো…ম্যাডামের হঠাত করে চেহারায় কালো মেঘ। ৫টার আগে কোনোভাবেই তার বেরুনো সম্ভব না। খুব কষ্টে বলছিলেন, আসার সময় মেয়েটা টেনে ধরে রাখে; যেতে দেবে না তো দেবেই না। অনেক কষ্টে কাজের লোকের কাছে রেখে আসেন৷ সারাক্ষণ মন উচাটন করে। কিন্তু এতো পপুলার গাইনোকোলজিস্ট, দম ফেলার ফুরসত কোথায়? ফোনেও তো খোঁজ বেশি নেবার সময় পান না।

আমার এক আপুর বাচ্চা খুবই ছোট। তাকে প্রতিদিন সাড়ে ৬টায় বাসা থেকে বের হতে হয়৷ আপু যখন বের হন তখন তার বাবা নাতিকে বারান্দায় নিয়ে যান। আর এই ফাঁকে আপু তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে যান৷ ছেলে দেখলে যে তুমুল কান্নাকাটি শুরু করবে আর যেতে দেবে না৷ মাঝেমাঝে দেখতাম সবসময় হাসিখুশি সেই আপুর মুখ থমথমে। ঐ তো বাচ্চার জ্বর…রেখে এসেছেন।

সামনে পরীক্ষা। পোস্টগ্র‍্যাড এন্ট্রি পরীক্ষা এক অবিশ্বাস্য কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। রাত-দিন পড়তে হয়। পড়লেও যে চান্স হবে তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। উনার ছেলেটা তখন সদ্যই হাঁটে, কথা বলে। উনি দরজা বন্ধ করে পড়েন। ছেলে ডাকে–মা মা আর দরজায় নরম হাতের আলতো শব্দ করে। চোখে পানি নিয়েও তিনি দরজা খোলেন না। একবার কোলে উঠলে আর তো নামবে না। পড়াও হবে না। সারাজীবন ভালো ছাত্রীর তকমা পাওয়া মানুষটাকে এই নিষ্ঠুরতাটুকু দেখাতেই হচ্ছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হতে।

“মেয়েকে কার কাছে রেখে এসেছো এখন?” স্যারের সহানুভূতিমাখা এই প্রশ্ন শোনার সাথে সাথে আপু হাউমাউ করে কেঁদে দিলেন। বললেন কাজের মেয়ের কাছে। হাজব্যান্ড দেশের বাইরে থাকেন। পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েশান কোর্সের মধ্যবর্তী একটা বড় পরীক্ষায় মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেসের জন্যে মেয়ের যত্ন না নেয়ার দরুণ তার মেয়েটির ওজন কয়েক কেজি কমে গিয়েছিল। আবার এদিকে সারাক্ষণ মেয়ের যত্ন নিতে গেলে, সময় দিতে গেলে পড়াশোনায় পিছিয়ে যেতে হয় অনেকটা। এ কোন অকূল পাথার! এ কোন নির্মম পরীক্ষা! “তুমি ভীষণভাবে পড়তে চাইছো কিন্তু পড়তে পারছো না এটা অনেক কষ্টের এক অনুভূতি!” কখনও কখনও এই ছোট্ট বাচ্চাটাই দুর্ব্যবহারের শিকার হয় এই মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেসের জন্যে। অথচ এই মা তো তার সন্তানকে কম ভালোবাসেন না। তার সারাটা দিনের চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু ঐ ছোট্ট আদুরে নিষ্পাপ সত্ত্বাটিই তো।

এটা তো মাত্র কয়েকটা গল্প। এমন গল্প শত শত। নাহ। তারও অনেক বেশি। এই গল্পগুলো প্রায় সবারই। ঘোর অমাবস্যার দীর্ঘশ্বাসের গল্প। অকল্পনীয় স্যাক্রিফাইসের গল্প।

আপনাকে যে নারী চিকিৎসকটি চিকিৎসা করেন, সে আর ৮/১০ জন মানুষের মতো না। জগতে যদি বিস্ময়কর সত্ত্বা থেকে থাকেন তবে তারা হচ্ছেন এই নারী চিকিৎসকরা। মাথায় হাজারও দায়িত্বের বোঝা আর হৃদয়ে অজস্র কষ্টের আঁকিবুঁকি নিয়েই তারা আপনাকে যতোটা সম্ভব মা/বাবা সম্বোধন করে হাসিমুখে চিকিৎসা দিয়ে যান৷ মনে রেখেন, যে মমতার হাত আপনার কপাল ছোঁয়, সেই মুহূর্তে তার সন্তানের কপাল হাহাকার করে। পরিবারের অন্যরা বঞ্চিত হয়৷ আপনি যদি এই তাকে শ্রদ্ধা না করতে পারেন, আপনি জগতনীতির কাঠগড়ায় অসভ্য প্রাণী বলেই বিবেচিত হবেন সম্ভবত।

 

পিরিয়ড নিয়ে কোন ট্যাবু নেই আমার

পিরিয়ড নিয়ে কোন ট্যাবু নেই আমার


মিম্’মি রহমান


আজ হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে আমি রীতিমত সারপ্রাইজড হয়ে গেছি। সরস্বতী পূজার জন্য স্কুল বন্ধ ছিল আহ্ নাফের। তাই সে বাসায় ছিল। ডিউটির ফাঁকে দু’বার কথা বলেছি তার সাথে। একবার নাস্তা খাচ্ছিল জানালো। আরেকবার নীচে ব্যাডমিন্টন খেলতে যাচ্ছে বলে গেল।

গত রাত থেকে শরীর একটু খারাপ ছিল আমার। প্রতি মাসে শরীরের এই যন্ত্রণা সব মেয়েকেই ভোগ করতে হয়। ডিউটি শেষে ক্লান্ত শরীরে মনে বাসায় ঢুকেই হা হয়ে গেলাম আমি। আমার ছোট্ট রাজপুত্র পুরো বাসার ক্লিনিং করে রেখেছে !!! সে ময়লা বেলচাতে তুলতে পারে না বলে এক জায়গায় জমিয়ে রেখেছে। আর আমি যখন বাসায় ঢুকি তখন সে ডিস ক্লিনিং করছিল কিচেনে। আমি বললাম বাকিটুকু আমি করছি বাবা।তোমাকে আর করতে হবে না। শাওয়ার নিয়ে আস। আমি লান্চ দিচ্ছি টেবিলে।

সে বলল না মা আমি ডিস আর কিচেন ক্লিন করে শাওয়ার নিব। তারপর নামাজ পড়ে খাব। তুমি ফ্রেস হয়ে নাও। আর আজ কিন্তু বিকেলে আমাকে যখন দুধ দিবে তুমিও আমার সাথে এক কাপ খাবে। পিরিয়ডের সময় তো অনেক দুর্বল হয় শরীর। আয়রন লস হয়। কলাও খাবে। তুমি রেষ্ট কর মা।

আমার চোখে লিটারারি পানি চলে আসছিল ঐ মুহুর্তে। চুলে হাত বুলিয়ে বললাম তুই এতকিছু কিভাবে জানলি ?

—বায়োলজিতে হিউম্যান বডি চ্যাপ্টার পড়ে। তারপর গুগল করে বোঝার চেষ্টা করেছি। অনেক পেইনফুল এই পিরিয়ড। মা হবার জন্য কত কষ্ট করতে হয় তাই না মা ? তারপর টুক করে একটা “থ্যাঙ্কু মা” বলে ডিস ক্লিন করতে থাকলো আমার পোটলা গম্ভীর শান্ত বাচ্চাটা।

লুকিয়ে ছবি তুলেছি তার।

পিরিয়ড নিয়ে কোন ট্যাবু নেই আমার। এটা একটা স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন। আমার ছেলে যখন ক্লাশ থ্রিতে পড়ত তখন টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখে জানতে চেয়েছিল প্যাড কি ? তখন ওকে ওর বয়সের উপযুক্ত শব্দ দিয়ে গল্প আকারে জানিয়েছিলাম প্যাড এবং পিরিয়ড সম্পর্কে।

আপনার মেয়ে সন্তানকে তো বটেই ছেলে সন্তানের কৈশোরে তাকেও জানিয়ে দিন ছেলে মেয়ের শারীরিক মানসিক স্বাভাবিক পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে। দেখবেন ছেলে সন্তানটা ইভ টিজার না বরং মেয়েদেরকে সম্মানের, ভালোবাসার চোখে দেখতে শিখবে। মায়ের থেকে বড় শিক্ষক একজন মানব শিশুর জীবনে আর কেউ হতে পারে না।

একজন রেপিস্ট, একজন ইভ টিজার, একজন মার্ডারারের কেইস হিস্ট্রি স্টাডি করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানা যায় তার শৈশব, কৈশোর, পারিবারিক পরিবেশে অপরাধ বান্ধব ছিল। তাই শুধু জন্মদান নয়, আসুন সন্তানকে একটু একটু করে একতাল মাংস পিন্ড থেকে মানুষ পুরুষ হিসেবে গড়ে তুলি।

#মিম্ মি

 

Sexual অ্যাবিউজ নিয়ে সচেতন হই

Sexual অ্যাবিউজ নিয়ে সচেতন হই


ফাতেমা শাহরিন


আমার কিছু গন্ধ মনে আসলেই বমি আসে, কিছু স্বাদ জ্বিহ্বায় লেগেছিল ভাবলেই গা গুলিয়ে যায়, আর কিছু স্পর্শ কথা কল্পনা করলে আমি ঘুমাতেই পারি না ম্যাম, কিছু মূহূর্ত আবছা অস্পষ্ট অশরীরি কিছু মানুষের মুখ। উফ, আমার মরে যেতে ইচ্ছে করে। এই স্মৃতি গুলো ঘুমাতে দেয় না৷ দুঃস্বপ্ন হানা দেয়। ঘুরে বেড়ায় ব্যস্ত মনের আনাচে কানাচে। বিশ্বাস করুন আমার এই বিষয় নিয়ে একদম কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আমি এস এস সিতে A+ পেয়েছি, এইস এস সি A+। সব খানে গোল্ডেন প্লাস। আর এখন সবচেয়ে ভালো সাবজেক্ট নিয়ে, সবচেয়ে ভালো পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ছি ম্যাম। আমি তো সব কিছু জয় করে এসেছি ম্যাম। এখন কেন ফ্লাসব্যাক আটকাতে পারছি না? কেন ছোট কালের সেই পিশাচ আমার চেহারায় ভেসে বেড়াচ্ছে? জানেন, আমি দুই দিন অজান্তে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকি। জ্ঞান ফিরে আমার কিছুই মনে থাকে না। আমি কি আমার সমস্ত স্মৃতি হারিয়ে ফেলছি? আমি কি আর কখনও স্বাভাবিক হবো না।

“ম্যাম আমি আর পারছি না”।

অবসরের মূহূর্তে হঠাৎ কে যেনো মনের দরজায় চিৎকার দিচ্ছে। আর আমি বেকুল হয়ে সমাধানের করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছি। একূল পেলে অকুল পাই না, নীল দরিয়ার হাবডুবু খাই প্রায়স। কিন্তু মন তাকে কিছুতেই হারাতে চায় না, পিছু ধাওয়া করে। কাউন্সেলিং শুরু করেছি ছয় মাস হলো। কেস গুলো আমার মনে এতো খেলা করে। আমি আমার মতো জ্ঞান খুঁজি। জীবনের ব্যাস্ততা তাকে ফিরিয়ে আনে বাস্তবতায়। কখনো স্মৃতির সাথে চলে লুকোচুরি খেলা।

সত্যি হলো উপরের ঘটনাটি।

কিন্তু সৈকতে বসে মিষ্টি রোদ আমি গায়ে লাগাই ইচ্ছে করে। হয় তা বাস্তবে, নয়ত ইমাজারি রিল্যাক্সজেশন করে। একটু হাওয়ার পরশ, এক পশলা বৃষ্টি পটে আঁকা ছবির মত কারো প্রশান্তিকর হাসি, এটাই প্রাপ্তি আমার। একটা ঘন্টা পর যখন কেউ বলে আপু / ম্যাম / ম্যাডাম “খুব ভালো লাগছে”। “এখন অতো অস্বস্ত্বির লাগছে না”। “আমি এখন দৈনন্দিন কাজ একটু করতে পারছি, আগে তো একদমই পারতাম না”। ” আমার মনে হচ্ছে আমি এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো”।

গল্প গুলো টাকা দিয়ে পরিমাপ করা যায় না। ডাক্তারের কাছে মানুষ টাকা ঢালতে যায় যদিওবা মুখে বলে। বাস্তবে যায় নিজের জন্য। একান্ত নিজের কল্যাণের জন্য যায়৷ আর বাংলাদেশে সাইকোলজির আবির্ভাব তো খুবই রহস্যজনক কল্প কাহিনী দিয়ে সাজানো মোড়ক। অনেকে হুমায়ন আহমেদের গল্প পড়ে পড়ে কাউন্সেলিং সম্পর্কে জ্ঞান খুঁজে পাই ঠিক কল্প কাহিনী থেকে সঠিক জ্ঞান জানতে হলে পড়তে হবে আমাদের।

আসলে মানসিক সুস্থতার সংজ্ঞা জানতে পারলেই আমরা কাউন্সেলিং কি তা জানতে পারবো সহজে। আসো একটি তাত্ত্বিক জ্ঞান শুনি যদিও ভালো লাগে না।

মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক তেমন গুরুত্ব যেমন শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা। কখনো কখনো শারীরিক সুস্থতার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য। কেন? কারণ মন খারাপ এতো ভয়ানক এক একটি অনুভূতি যা আমাদের আচরণে পরিবর্তন আনে৷ আগে পড়াশুনা করতে ভালো লাগতো এখন আর কোন কাজই করতে ভালো লাগে না। কখন কান্না পায়। কখন কখন দুনিয়া থেকে সারা জীবনের জন্য চলে যেতে ইচ্ছে করে। সামাজিক পরিপক্কতা অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবী কিছুই ভালো লাগে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মতে মানসিক স্বাস্থ্য হ’ল:..সুস্থতার এমন একটি রাষ্ট্র। যেখানে ব্যক্তি নিজেই তার জীবনের রাষ্ট্র প্রধান। তার নিজস্ব দক্ষতা, উপলব্ধি করতে পারে। জীবনের স্বাভাবিক চাপ বা পরীক্ষার সাথে লড়াই করে সমাধান করতে পারে। দৈনন্দিন পড়াশুনা, ঘরের, অফিসের এবং ফলপ্রসূভাবে কাজ শেষ করতে পারে এবং তার সম্প্রদায়ের জন্য অবদানও রাখতে সক্ষম হয়।” মানসিক স্বাস্থ্য কেবলমাত্র মানসিক ব্যাধি না থাকা তা কিন্তু নয় আমাদের হাসিখুশি স্বাভাবিক জীবন দীর্ঘ দিন ধরে চলতে না পারলেই আমরা মানসিকভাবে অসুস্থ হতেই পারি। জ্বর হলে যেমন লজ্জার কিছু নেই৷ মন খারাপ হয়ে তা একা একা সামলাতে না পারলে তা প্রকাশ করতে লজ্জার কিছু নাই বরং জহির স্যার বলেন, ‘যারা প্রচুর কথা বলে, মনে কষ্ট ধরে রাখে না তাদের মানসিক কষ্ট কমে যায় দ্রুত।’

আর সকল ধরনের অ্যাবিউজ বন্ধ করার একমাত্র মহা ঔষধ হলো, ” বলে দেওয়া ” লুকিয়ে না রেখে প্রকাশ করা। এমনই এক স্মৃতির পিছু ধাওয়া করছিলো গত বিশ বছর আগের একটা সন্ধ্যার কথা। আমার স্মৃতির শেলফগুলোতে থরে থরে সাজানো অজস্র ভালো স্মৃতি আছে। তবে অ্যাবিউজ হবার ঘটনা আছে। এটা ভেবে কষ্ট পেয়ে আটকে যাবার কোন কারণ নেই আমি দাড়াতে পারবো না৷ ইনশা আল্লাহ কাউন্সেলিং আপনাকে সাহায্য করবে বের হয়ে আসতে।

নিজের নেইঃ

অনেক সময় নিজের কাছে কোন উপায় থাকে না কিভাবে এই কষ্ট থেকে বের হয়ে আসবো তখন অন্যের জ্ঞানের উপর বিশ্বাস রাখতে হয়। অন্যের আলো নিয়ে নিজেকে উদ্ভাসিত করতে লজ্জার কিছু নেই। কাউন্সেলিং এর সেশনগুলো একেকটার একেক স্বাদ, একেক গন্ধ, একেক মর্ম – ভালো লাগায় ভরপুর অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে আপনি হয়ত আপনাকে চেনেন বলে জানেন? আসলে নিজেকে নতুন করে চিনতে এবং নিজের ভিতর থাকা, অদম্য ক্ষমতা দেখে আপনি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন। তখন নিজের নেই মনে করে মন খারাপ হবে না।

 

বর্তমান সময়ের একটি বড় চ্যালেঞ্জ

বর্তমান সময়ের একটি বড় চ্যালেঞ্জ


কানিজ ফাতিমা


গবেষকরা মনে করছেন আমাদের শিশু-কিশোররা মানসিক দিক থেকে ধীরে ধীরে এক চ্যালেন্জিং পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। গত ১৫ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শিশু- কিশোরদের মানসিক সমস্যা (childhood mental illness) এর সংখ্যা এতটাই উর্ধমুখী যে তা প্রায় মহামারী এর রূপ নেবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে –
• প্রতি পাঁচ জনে এক জন শিশু-কিশোর মানসিক সমস্যায় ভুগছে ;

• ADHD ( Attention Deficit Hyperactivity Disorder) অতিরিক্ত অস্থিরতা চঞ্চলতার সমস্যা বেড়েছে শতকরা ৪৩ ভাগ

• কিশোর বিষন্নতা (adolescent depression ) এর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় শতকরা ৩৭ ভাগ

• ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশু- কিশোরদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে ২০০%

এসব সমস্যার কারণ হিসাবে যেকয়টি বিষয়টি গবেষকরা দায়ী করছেন তা হলো-

শিশু কিশোররা ছোট বয়েসেই অতিরিক্ত উম্মাদনা সৃষ্টিকারী (over-stimulated and over-gifted with material objects) জিনিস পত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে- যা তাদের স্বাভাবিক শৈশব থেকে বঞ্চিত করছে এবং সঠিক মানসিক বিকাশকে নষ্ট করছে।

বাবা- মায়ের সঙ্গে ( অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে) আবেগ ঘন সম্পর্ক এর অভাব (Emotionally available parents)

অতিরিক্ত চর্বি ও চিনিযুক্ত অস্বাস্থকর খাবার

স্থবির জীবন, শারিরীক কসরতের ওখেলাধুলার অভাব

প্রয়োজনীয় ঘুমের অভাব, বেশী রাত জেগে থাকা

বয়স অনুযায়ী দায়িত্ব ভার না নেয়া

সৃজনশীল খেলাধুলার বদলে মেধা ও শরীরের জন্য নিষ্ক্রিয় খেলনা নিয়ে খেলা

শিশু- কিশোরদের অধিকার সম্পর্কে অধিক সচেতনতা, কিন্তু এর বিপরীতে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে বোধের অভাব। নিজের সব চাওয়াকে অধিকার মনে করা , পাওয়া নিয়ে কৃতজ্ঞ না হওয়া।

এই সমস্যাগুলোর প্রথম ও প্রধান সমাধান হলো-

বাবা-মায়েদের সন্তানদের সঙ্গে একটিভ সময় কাটানো। নিজেদের ব্যস্ততা কমিয়ে, টেকনোলজির অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে সরিয়ে এনে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করা , আনন্দ করা , আলোচনা করা ও আবেগঘন সময় কাটানো।
এই একটি সমাধান উপরের অনেকগুলো সমস্যা অবসানের মূল চাবিকাঠি।

 

আত্মীয়ের চুমু খেয়ে মৃতপ্রায় নবজাতক

আত্মীয়ের চুমু খেয়ে মৃতপ্রায় নবজাতক


স্বাস্থ্যকথা


নবজাতকের সঙ্গে প্রথম দেখায় অনেকেই চুমু খান। আদরের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই এই চুমু দেন নবজাতকের স্বজনরা। তবে এমন চুমুতেই প্রায় মৃতপ্রায় অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক শহরে জন্ম নেয়া শিশু রোমান ড্রান্সফিল্ড । খবর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারের।

জানা গেছে, ডানিয়েল্লা-ম্যাথু দম্পতির সন্তান রোমান ড্রান্সফিল্ড গত বছর ফেব্রুয়ারিতে জন্ডিস নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন । জন্মের পাঁচ দিনের মধ্যেই তার শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এই উপসর্গে প্রায় মৃতপ্রায় অবস্থায় চলে যায় শিশুটি। প্রায় তিন সপ্তাহ এন্টি-ভাইরাস ওষুধ দেয়ার পর সুস্থ হন রোমান ড্রান্সফিল্ড। পরে ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সন্দেহ প্রকাশ করেন, চুমু খাওয়ার কারণেই এই সমস্যা হয়েছিল রোমানের।

এ নিয়ে রোমান ড্রান্সফিল্ডের মা ডানিয়েল্লা বলেন, যখন সে জন্মায় তখন পরিবারের সদস্যরা আসতেন এবং তাকে দেখে চুমু দিতেন। একদিন আমরা রোমানের মুখে ফুসকুড়ি দেখতে পারি। পরে ডাক্তার জানায় এই ভাইরাসে মারা যেতে পারেন রোমান। ডানিয়েল্লা জানান, ওই ঘটনার পর থেকে তিনি এখনো তার সন্তানকে চুমু দেননি।

এদিকে ওই ঘটনার পর এখনো নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সেই দুঃসহ স্মৃতি মনে করিয়ে সবাইকে নবজাতকদের চুমু খাওয়া থেকে বিরত থাকার উৎসাহ দেন ডানিয়েল্লা-ম্যাথু দম্পতি।

সুত্রঃ ইত্তেফাক/এআর

 

ধর্ষণের ক্ষেত্রে খেয়াল করে দায়ী করুন

ধর্ষণের ক্ষেত্রে খেয়াল করে দায়ী করুন


জান্নাতুন নুর দিশা


ফেসবুকে একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। চারজন মেয়ে হিজাব পরে নেচেগেয়ে একটা গান করছেন, “আমরা হিজাবি লেডি, আমরা হিজাব করি” এরকম শিরোনামে। সাথে দুজন ছেলেও তালে তালে গাইছেন। গানের স্টাইল অনেকটাই পশ্চিমা।
এভাবে নেচে-গেয়ে কুশ্রী ভঙ্গিতে হিজাব পরায় দাওয়াত দেয়ার এরকম বাজে একটা ভিডিও হাজার হাজার শেয়ার হচ্ছে। হিজাব পোশাকটাকে প্রকারান্তরে হাসির খোরাক বানানোতে এদের সহযোগিতাই করছেন এটা ভাইরাল করে।

আরো একটা নিউজ কয়েকদিনে বেশ অনেকের টাইমলাইনে দেখলাম। আমেরিকায় এক বাঙালি নারী এক আমেরিকান নারীকে বিয়ে করেছেন। বিয়ে করেছেন গত জুন মাসে। সমকামী বিয়ে আমেরিকায় কোনো গুরত্বপূর্ণ বিষয় না৷ বাঙালি মেয়েটি আমেরিকাতেই বড় হয়েছেন। বাংলাদেশী মিডিয়া এসব নিউজ পেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে নিউজ করে, মানুষজনও দলে দলে গালাগালি করে শেয়ার দিয়ে এসব অপ্রয়োজনীয় খবর ভাইরাল করে।

আরো একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এক মহিলা ময়মনসিংহের শশী লজের সামনের ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে জোর দাবি জানাচ্ছেন ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার। মহিলা সেখানে বলছেন এই রকম বস্ত্রহীন নারী ভাস্কর্য দেশে এভাবে উন্মুক্ত থাকলে তো নারীরা ধর্ষণ হবেই! এই কথায় আবার দলে দলে লোক একমত পোষণ করে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে ভাইরাল করেছেন।

নারী সংক্রান্ত এরকম কিছু অপ্রয়োজনীয় বিষয় ভাইরাল করে আপনারা কী পান তা তো জানি না। কিন্তু যে ভয়ংকর নিউজটি আমি একটু আগে নিজ টাইমলাইনে শেয়ার করলাম সেটা হলো গাজীপুরে এক নারীকে তার বান্ধবীর সহায়তায় ঘুমের ঔষধ খাইয়ে চার বখাটে ছেলে ধর্ষণ করে হাসতে হাসতে তার পাশবিক বর্ণনা দিয়ে ভিডিও আপলোড দিয়েছে। সেখানে তারা এও জানিয়েছে হেসে হেসেই যে তারা জানে তাদের পরদিন জেলে থাকতে হতে পারে কিংবা এলাকাছাড়া হতে পারে। এতে তারা মোটেও উদ্বিগ্ন নয় বরং আনন্দিতই মনে হচ্ছিলো। ধর্ষকদের এত উৎফুল্ল এত আনন্দে এত নির্ভয়ে থাকার রহস্য কী? রহস্য হলো এই ধর্ষণে তো তাদের আপনারা দায়ী করবেন না, দায়ী করবেন হিজাব পরা না পরাকে, দায়ী করবেন আমেরিকার কোনো সমকামী বিয়েকে, দায়ী করবেন একটি বস্ত্রহীন মাটির ভাস্কর্যকে। যাদের আপনারা নিয়ম করে ভাইরাল করেন। কিন্তু ভাইরাল করেন না ধর্ষককে। ধর্ষকের নারকীয় চেহারা আপনারা খুব দ্রুত ভুলে যেতে ভালোবাসেন!

 

‘প্যারেন্টিং’ কোন শর্টকাট পদ্ধতি নেই

‘প্যারেন্টিং’ কোন শর্টকাট পদ্ধতি নেই


ফাতিমা কানিজ


পারেন্টিং এর কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। বাচ্চাকে প্রচুর সময় দেয়া এবং তাকে নিয়ে বিরামহীন পরিকল্পনা করাই নিশ্চিত করবে আপনি কতটা ভালোভাবে বাচ্চাকে মানুষ করছেন। মনে রাখবেন, আপনার সঙ্গে আপনার বাচ্চার সম্পর্ক অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে তার সঠিক বেড়ে ওঠার জন্য বেশী জরুরী ৷ আজ ব্যস্ততার অজুহাতে যা অবহেলা করবেন কাল হয়ত তা আপনার হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে যাবে। কথায় আছে – সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়। সময়ে এক ফোঁড়ে আজ যা সম্ভব হবে অসময়ে দশ ফোঁড় দিয়েও পরে হয়তো তা আর সম্ভব হবে না।

বাচ্চাদের সঙ্গে সময়দানের ক্ষেত্রে আর একটি ভুল ধারণা হলো আমাদের সমাজে অনেকে মনে করেন মায়েরাই বাচ্চাদের সময় দেবে, বাবাদের ততটা সময় দেবার দরকার নেই; মা পর্যাপ্ত সময় দিলে বাবাদের না দিলেও চলে। প্রকৃত ব্যাপারটা তা নয়। প্রাকৃতিকভাবে বাচ্চা যেহেতু মায়েদের সঙ্গে বেশী সম্পর্কযুক্ত (যেমন গর্ভধারণ, স্তন্যদান) সেহেতু স্বাভাবিক ভাবেই সন্তানরা মায়েদের সঙ্গে বেশী সময় পার করে থাকে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বাবাদের সময় দেয়া শুধু সন্তানদের শাসন আর আদেশ উপদেশে সীমাবদ্ধ থাকবে। বাবা ও মা দু’জনকেই বাচ্চাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। বাবা আর্থিক রোজগারের কারণে বাইরে হয়তো বেশী সময় দিতে বাধ্য হন কিন্তু তারপরও রুটিন করে বাবাকে বাচ্চার জন্য নিয়মিত সময় বের করে নিতে হবে। বাচ্চাদের জীবনে প্রথম পুরুষ রোল মডেল হিসেবে বাবার ভূমিকা অনেক। বিশেষ করে ছেলে বাচ্চাদের জন্য তাদের বাবারা তাদের পরবর্তী জীবনের এক বড় আদর্শ।

সন্তানদের সময় দেয়ার ক্ষেত্রে অনেকসময় আবার বিপরীত একটা ভুলধারণাও তৈরী হয়। অনেকে মানে করেন সন্তানকে সময় দেবার মানে হলো আর কাউকে কোনো সময় দেয়া যাবেই না, কেবলমাত্র সন্তানদের নিয়েই পরে থাকতে হবে। আপনার বাবা বা মায়ের অসুখ করেছে – আপনার সন্তানদের লেখাপড়ার চাপ রয়েছে বলে আপনি বাবা-মাকে সময় দেবেন না, দেখতে যাবেননা, তাদের সেবা করবেন না – এটাকে সন্তানকে সময় দেয়া বলে না। বরং এটা সন্তানের সামনে ভুল একটা উদাহরণ পেশ করা। সন্তানকে সময় দিতে গিয়ে আপনার পরিবার-পরিজন; আত্মীয়-স্বজনদের প্রয়োজনীয় সময় না দিলে সন্তানরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে বড় হয়। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন ব্যালান্স খুবই জুরুরী।

আবার কখনো কখনো দেখা যায় সন্তাদের সময় দেবার অজুহাতে নিজের স্পাউজকে তার দিকের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় সন্তানদের প্রয়োজনকে কৌশলে সমানে এনে স্পাউজকে এই যোগাযোগে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। এধরণের কাজ আপনার সন্তানদের জন্য কখনোই মঙ্গল বয়ে আনবে না। বরং সন্তানদের সঙ্গে আপনার নিজের সময় দেবার সাথে সাথে তাদেরকে আপনার দিকের আত্মীয় ও আপনার স্পাউজের দিকের আত্মীয়দের সঙ্গে ভালো যোগাযোগের ও সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ করে দিন।

 

চুলের যত্নে কিছু জানি

চুলের যত্নে কিছু টিপস


ঘরকন্যা


(১) গোসলের আগে চুল আঁচড়িয়ে নিবেন। চুল সবসময় নিচ থেকে আচড়াবেন। তাহলে খুব সহজে চুলে জট থাকলে খুলে যাবে। চুল নষ্ট হবে কম।
আর চুলের জট খোলার জন্য সবসময় মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করবেন।

(২) সপ্তাহে ৩ দিন চুলে Shampoo করবেন।
চুলে বেশি Shampoo করলে চুলের Natural Oil নষ্ট হয়ে গিয়ে চুল Dry হয়ে যায়। চুলে Shampoo করার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ক) চুল আগে ভিজিয়ে নিতে হবে।

খ) যতটুকু Shampoo চুলে দিবেন তা একটা বাটিতে নিবেন। তার মধ্যে একটু পানি মিক্স করে পাতলা করে নিবেন। তাহলে লাগাতে সুবিধা হবে। আর চুল যখন ধুবেন তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হবে।

গ) চুলে Shampoo লাগানোর সময় মাথার তালুতে ভালোভাবে লাগাবেন। তারপর চুলের নিচের দিকে লাগাবেন। খুব যত্ন করে আলতো হাতে লাগাবেন।

ঘ) চুল ধোয়ার পর Conditionar লাগাবেন। শুধু চুলের নিচের দিকে লাগাবেন। উপরে লাগানো জরুরি নয়। ৫/১০ মিনিট থেকে চুল ভালো করে ধুয়ে নিবেন।

(৩) গোসল শেষে চুল টাওয়েল বা গামছা দিয়ে শক্ত করে বেধে রাখবেন না। চুলে গামছা বা টাওয়েল দিয়ে বাড়ি দিয়ে পানি ঝরানোর চেষ্টা করবেন না। এতে চুলের আগা ফেটে যায়।

(৪) ভেজা চুল আঁচড়াবেন না।

(৫) চুলে অতিরিক্ত তেল দিবেন না। চুলের গোড়ায় তেল লাগিয়ে অবশ্যই চুলে Massage করবেন।

(৬) রাতে ঘুমানোর আগে চুল আঁচড়িয়ে হালকা কারে বেনি করে ঘুমাবেন।

(৭) খুশকি থাকলে সপ্তাহে ২ বার খুশকির Pack টা লাগাবেন।

(৮) সপ্তাহে ৩/৪ বার পছন্দের Hair প্যাক লাগাতে পারেন।

(৯) Shampoo করার পর Last মগ এর পানি লেবু/চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুতে পারেন চুল সিল্কি হবে।

(১০) গোসলের পর চুলে Last মগ এর পানি ৬/৭ টা পেয়ারা পাতা Shiddo পানি দিয়ে চুল ধুতে পারেন। এতে চুল পড়া অনেক কমে যাবে।

(১১) বেশি করে পানি খাবেন। আর সপ্তাহে ২ বার চিরনি ধুবেন।
কমেন্ট না করলে পরবর্তী টিপস পাবেন না এই বলে দিলাম।

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

 

মায়ের সাথে অভিমান করে স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা

মায়ের সাথে অভিমান করে স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা


অন্যান্য


কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে এক স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত আটটার দিকে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ ওই ছাত্রের ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। নিহতের নাম সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য (১৩)। সে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পুর্ব ফুলমতি গ্রামের সমরেন্দ্রনাথ কেষ্ট ভট্টাচার্যের ছেলে এবং বালারহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, পড়াশুনার ব্যাপারে শাসন করায় মায়ের সাথে অভিমান করে নিজের ঘরে শাড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দেয় সিদ্ধার্থ। পরে তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ বালারহাট বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফুলবাড়ী থানার ওসি রাজীব কুমার রায় জানান,পরিবারের সদস্যদের দেয়া সংবাদের ভিত্তিতে আমরা ঘটনাস্থলে যায়। ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় ওই ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। ধারণা করা হচ্ছে পড়াশুনার ব্যাপারে শাসন করায় অভিমানে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য শনিবার সকালে লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

ছয় মাসে ৪০০ শিশু ধর্ষণের শিকার, ১৬ জনের মৃত্যু, এক তৃতীয়াংশ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক দ্বারা

ছয় মাসে ৪০০ শিশু ধর্ষণের শিকার, ১৬ জনের মৃত্যু, এক তৃতীয়াংশ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক দ্বারা


নারী সংবাদ


এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত  এই ৬ মাসে সারাদেশে ৩ শ ৯৯ জন শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে । এর মধ্যে ৮ জন ছেলে শিশু । ধর্ষণের পরে ১ জন ছেলে শিশুসহ মারা গেছে ১৬ টি শিশু।

রোববার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য তুলে ধরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)।

সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম সম্প্রতি দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের প্রতি চলমান সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 শাহীন আনাম পাড়ায় পাড়ায় কমিটি গঠন করে এই ধর্ষণ প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে অভিভাবক, শিশু সংগঠন, মানবাধিকার সংস্থা, স্কুল-কলেজ এবং পাড়ার তরুণদের সম্মিলিতভাবে এই অপরাধ ঠেকাতে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করেন তিনি ।

ছয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ৪০৮ টি সংবাদ বিশ্লেষণ করে  এই পরিসংখ্যান তুলে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন জানায়, ৬ মাসে সারাদেশে ৩ শ ৯৯ জন শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে । এর মধ্যে ৮ জন ছেলে শিশু । ধর্ষণের পরে ১ জন ছেলে শিশুসহ মারা গেছে ১৬ টি শিশু। এদের মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছিল ৪৪ জনের উপর ।

এমজেএফ এর তথ্য অনুযায়ী, ছয় মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ৪৯ টি শিশু । যৌন হয়রানির ঘটনায় আহত হয়েছে ৪৭ জন মেয়ে শিশু ও ২ জন ছেলে শিশু।

এমজেএফ মনে করে বিচারহীনতার কারণে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা অসহনীয় অবস্থায়  পোঁছেছে। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় শিশুর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলেও মনে করেন সংগঠনির নির্বাহী পরিচালক।

যদিও (এমজেএফ) সামগ্রিকভাবে সার্ভে করে দেখেছে, কিন্তু আমাদের করা নিউজ আর অনলাইনে প্রকাশিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যার রিপোর্ট অনুসারে প্রায় এক তৃতীয়াংশ ধর্ষণ ও খুন হয়েছে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক দ্বারা।

সুত্রঃ স্বদেশ_বাংলা

 

মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ

মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ


শামসুদ্দীন ইলিয়াস


গত ২৪.১১.২০১৯ তারিখে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়ার রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত মহামান্য হাইকোর্ট বেঞ্চ কর্তৃক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইকলজিসট নিয়োগ সংক্রান্ত রুল জারী করেছেন। বাংলাদেশে মনোবিজ্ঞান শিক্ষা, মনোবিজ্ঞান গবেষণা এবং মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির একজন সদস্য এবং মনোবিজ্ঞান বিষয়ের একজন শিক্ষক হিসাবে নিম্নরূপ বক্তব্য প্রদান করছিঃ
বাংলাদেশের কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মনোবিজ্ঞান বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত পঠিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ থেকে প্রতি বছর হাজার খানেক শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে মনোবিজ্ঞানিক সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তবে, যুগোপযোগী সরকারি নীতিমালার অপর্যাপ্ততার কারণে মনোবিজ্ঞানে ডিগ্রিধারী এসব যুবক-যুবতীরা জাতিকে কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছে না। স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা যেমন-শিক্ষা মনোবিজ্ঞান, কাউন্সেলিং মনোবিজ্ঞান, স্কুল মনোবিজ্ঞান, বিকাশ মনোবিজ্ঞান, সমাজ মনোবিজ্ঞান, শিল্প ও সাংগঠনিক মনোবিজ্ঞান, পরিবেশ মনোবিজ্ঞান, স্বাস্থ্য মনোবিজ্ঞান, অপরাধ মনোবিজ্ঞান, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান, ভোক্তা মনোবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় অধ্যায়ন করে থাকে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আবার একটি, দুটি, বা তিনটি বিষয়ের ওপর বিস্তারিতভাবে অধ্যায়ন করে। মনোবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে যে কোন শিক্ষার্থীই মনোবিজ্ঞানী হিসাবে যে কোন প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানের সক্ষমতা অর্জন করে থাকে। তাই, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ধরন, সক্ষমতা, মানসিক স্বাস্থ্য, শিক্ষার পরিবেশ, পাঠদান পদ্ধতি, শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রমের মূল্যায়ন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক, অভিভাবকদের উপদেশনা ও নির্দেশনা প্রদানসহ শিক্ষার্থী ও শিক্ষালয়ের সাথে সম্পর্কিত সকল বিষয়ে মনোবিজ্ঞান সম্মত সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী যে কোন ব্যক্তিই যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে, শিক্ষা মনোবিজ্ঞান, কাউন্সেলিং মনোবিজ্ঞান, স্কুল মনোবিজ্ঞান, বিকাশ মনোবিজ্ঞান ও শিক্ষার্থী মূল্যায়ন মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী ব্যক্তিবর্গ এক্ষেত্রে অধিকতর যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহ (বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এবং অটিস্টিক) ব্যতীত সাধারণ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন এবং স্বাভাবিক আচরণ সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা অধ্যায়ন করে থাকে। স্বাভাবিক শিক্ষার্থীরা কোন মানসিক রোগী নয়। শিক্ষার্থীদের পাঠে অমনোযোগ, স্কুল ভীতি, পরীক্ষা ভীতি, মানসিক চাপ, উদ্বেগ, ব্যক্তিগত এবং পরিবারকেন্দ্রিক সমস্যাসমূহ দূরীকরণের ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী যে কোন ব্যক্তিই প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে সক্ষম। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বা চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞানের অনেকগুলি শাখার মধ্যে একটি শাখা মাত্র। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বা চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ব্যক্তিবর্গ মূলত মানসিক রোগগ্রস্থ ব্যক্তিদের রোগ নিরাময় বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে থাকে; তবে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরাও সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও কাউন্সেলিং সেবা প্রদানে সক্ষম। অতএব, সারা দেশের লক্ষ লক্ষ সাধারণ ও স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদেরকে মানসিক রোগী মনে করলে তা শুধু তাদেরকে অবমূল্যায়নই করা হবে না, এটা তাদেরকে অসম্মান ও হেয় করারও শামিল বিধায় এটা যেমন সমর্থনযোগ্য নয়; ঠিক তেমনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শুধুমাত্র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্‌ট নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাবনাও বাস্তবতার নিরিখে গ্রহণযোগ্য নয় এবং সেটা দেশীয় প্রয়োজন এবং শিক্ষার্থীদের মন-সামাজিক অবস্থার সাথেও মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়; তা যথাযথও হবে না। বরং সময়ের প্রত্যাশিত দাবী অনুযায়ী শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দেশের সার্বিক মঙ্গলের স্বার্থেই অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) এবং যে কোন শাখায় (প্রধানত শিক্ষা মনোবিজ্ঞান, কাউন্সেলিং মনোবিজ্ঞান, স্কুল মনোবিজ্ঞান, বিকাশ মনোবিজ্ঞান ও শিক্ষার্থী মূল্যায়ন মনোবিজ্ঞানে) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী সাইকোলজিস্টদেরকে নিয়োগ দেয়া জরুরী।

 

জেদ, প্রতিশোধ পরায়ণতা ও প্যারেন্টিং

জেদ, প্রতিশোধ পরায়ণতা ও প্যারেন্টিং


কানিজ ফাতিমা


জেদি ও প্রতিশোধ পরায়ণ ব্যক্তিরা ভালো বাবা-মায়ের ভূমিকা পালন করতে পারে না। সাধারণত দেখা যায় জেদি ও প্রতিশোধ পরায়ণ ব্যক্তিরা নিজেদের সন্তানদেরকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে অনেকটা সময় ও শ্রম ব্যবহার করেন। ফলে জীবনের প্রথমভাগে এই সন্তানরা লেখাপড়ায় সাধারণত এগিয়ে থাকে। ধীরে ধীরে তারা নিজেদের মধ্যেও এই জেদ ও প্রতিদ্বন্ধীতা আয়ত্ব করে নেয়। এই জেদ তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার একধরণের (নেগেটিভ) মোটিভেশন হিসাবে কাজ করে। নিজেদের কাজিন এবং সহপাঠিদের সঙ্গে মনে মনে তারা তীব্র প্রতিদ্বন্ধীতা অনুভব করে ও লেখাপড়ায় এগিয়ে থাকতে চায় – ফলে অনেক ক্ষেত্রে তারা অন্যদের থেকে এগিয়েও থাকে। আর এই সুফলকে জেদি বাবা-মায়েরা নিজেদের সফলতা হিসাবে নেন ও আত্মতৃপ্তি পান।
কিন্তু তারা জানেননা যে তারা তাদের সন্তানদের কত বড় ক্ষতি করে ফেলছেন। এটা অনেকটা এমন পেসক্রিপশন করার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে যেখানে ঔষধে রোগীর আপাত একটা উপকার হবে কিন্তু ভবিষ্যতে জীবন হুমকির মুখে ফেলবে। এধরণের বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের দু’টো বড় ক্ষতি করেন। অনেকটা বলতে গেলে তারা ছোট একটা পাওনার জন্য অনেক বড় আর মূল্যবান দু’টো জিনিসকে বিসর্জন দেন। এটা সত্যি যে তাদের ভালোবাসা আর ত্যাগে কোনো কমতি থাকে না – কিন্তু নিজেদের জেদ আর ইগো তাদের অজান্তেই সন্তানদের থেকেও তাদের জন্য বড় হয়ে দাঁড়ায়। নিজের সন্তানদের ক্ষতি করেও তারা নিজেদের ভেতরের এই মানসিক রোগকে বিসর্জন দিতে পারেন না। সন্তানদের সারা জীবনের জন্য ক্ষতি করে ফেলেন –
এক্ষত্রে যে দু’ইটা বিশাল ক্ষতি সন্তানদের হয় তাহলো –
১. সন্তানরাও এই একই মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পরে এবং কঠিন মানসিক কষ্টের শৃঙ্খলে আজীবনের জন্য বন্দী হয়ে যায়। আপনাকে যদি বলা হয় – আপনি কি চান আপনার সন্তানের দেহে ক্যান্সার হোক? আল্লাহ মাফ করুন, কোনো বাবা -মা স্বপ্নেও একথা ভাবতে পারেনা। অথচ অবলীলায় জেদী-অহংকারী বাবা-মায়েরা নিজের মনের ক্যান্সার নিজের মন থেকে সন্তানদের মনে পুঁতে দেন, তাতে পানি- আলো-বাতাস দিয়ে অতিযত্নে বড় করে তোলেন শুধু মাত্র সন্তানদের ক্যারিয়ার গড়ে দেবার নাম করে। জেদ, হিংসা আর প্রতিশোধ পরায়ণতা হলো মনের ক্যান্সার। এটি একটা যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি – যা মানুষকে সারাক্ষন যন্ত্রনা দেয়। নিজে ক্যারিয়ারে সফলতা পেলেও শান্তি মেলে না, ভেতরে থাকা জেদ, হিংসা আর প্রতিশোধ পরায়ণতা আগুনের মতো ভেতর পোড়াতেই থাকে। কাজেই সচেতন হোন – আপনার জেদ ও হিংসা যেন আপনার প্যারেন্টিং এর অন্তরায় না হয়। তাতে আপনি যত ভালো প্যারেন্টিংই করুননা কেন আপনি আপনার সন্তানকে সারা জীবনের জন্য অশান্তির এক আগুনে ফেলে দিলেন। মনের এক ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত করে দিলেন।
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শুশুড়বাড়ীর মানুষের সঙ্গে হওয়া জেদ আর কাজিনদের মধ্যে তৈরী হওয়া প্রতিদ্বন্ধীতা এই রোগের উৎস – আর এর বলি আপনার নিজের সন্তান। হয়তো কারো কোনো কাজে আপনি কষ্ট পেয়েছেন, বা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে অমনি আপনার জেদ সেটাকে বড় করে ফেলবে, সেখান থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা – অন্যকে একহাত দেখিয়ে দেবার মানসিকতা, তারপর শত্রুতা, আর অবশেষে প্রতিশোধপরায়ণতা আর মানসিক অশান্তি। এই শৃঙ্খলে মন একবারবন্দী হয়ে পড়লে, তা থেকে মুক্তি কঠিন। কারণ প্রতিদ্বন্ধী বদলাবে, শত্রু বদলাতে থাকবে, কিন্তু মানসিক চক্র চলতেই থাকবে মৃত্যু অবধি।
২. দ্বিতীয় যে ক্ষতিটা আপনি আপনার সন্তানের করেন তাহলো আপনি নিশ্চিত করে দেন যে আপনার সন্তান তার পারিবারিক জীবনে কোনোভাবেই সুখী হবে না। আপনি যে জেদ, হিংসা আর প্রতিশোধের বীজ আপনার সন্তানের মনে ঢুকিয়ে দিয়েছেন তা ডাল -পালা মেলবই। ইসলামের মানবতার অংশটা যারা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারে একমাত্র তারাই এই বিষকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে, যা সুলভ না। এমনকি ইসলামের অনুশাসন পালনকারী মানুষদের মধ্যেও ইসলামের এই অংশটি আসতে অনেক সময় লাগে, অনেক ক্ষেত্রে আবার কখনোই আসেনা। কাজেই মূলত আপনি আপনার সন্তানের এমন এক রোগের কারণ যার ঔষধ অতিশয় দুর্লভ।
এই রোগটি আপনার সন্তানের ভেতর ধীরে ধীরে তার নিজের স্পাউজের প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বীতা মূলক মানসিকতা তৈরী করবে, সবসময় সে তার স্পাউজকে সন্দেহ করবে এবং সেটা গিয়ে পড়বে তার শশুড়বাড়ির মানুষদের ওপরে। সবকিছুকেই সে প্রতিযোগীতা হিসাবে নেবে – সবশেষে সে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে পড়বে। সে সচেতনভাবে তাদের ক্ষতি হয় এমন আচরণে জড়িয়ে পড়বে যা তার সঙ্গে তার স্পাউজের সম্পর্ককে কোনোভাবেই মধুর আর শান্তিপূর্ণ করবে না। একসময় সে তার নিজের সন্তানকেও এই দ্বন্ধে ব্যবহার করবে তার নিজের জেদ আর প্রতিশোধের নেশায় – আর এভাবে শুরু হবে পরবর্তী চক্রের।
কাজেই প্যারেন্টিংএ সচেতন হন – আপনার ভেতরের জেদ, হিংসা, প্রতিশোধপরায়ণতা থাকলে তা কমিয়ে আনুন। এগুলো অনেক পুরানো রোগ তাই কমিয়ে আনা সহজ কথা না। কিন্তু এগুলো আপনার সন্তানের থেকে বড় নয়, তাই নিজের সন্তানের জীবনের সুখের কথা চিন্তা করে নিজেকে পরিবর্তন করুন।
অনেককে দেখেছি স্বামীর উপর জেদ করে সেই প্রতিশোধ নেবার জন্য সন্তানকে ব্যবহার করে, আবার অনেককে দেখেছি স্কুলের শিক্ষকদের ওপর জেদ করে তার প্রতিশোধের জন্য নিজের সন্তানকে ব্যবহার করে – এভাবে দ্বন্ধে সন্তানকে ব্যবহার করে ছোট কোনো সফলতা পেলেও পাওয়া যেতে পারে, প্রতিশোধ নিতে পেরে কিছুটা মানসিক সুখ হয়তো তাৎক্ষণিক পাওয়া যায় কিন্তু এই বোকামীর ফলে নিজের ও নিজের সন্তানের জন্য যে বিশাল ক্ষতি হয়ে যায় তা কি আর পূরণ হয় ?

 

‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার’ তুমিও কি আক্রান্ত হতে পরো!

‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার’ তুমিও কি আক্রান্ত হতে পরো!


ডাঃ মারুফ রায়হান চৌধুরী


একবার ভাবুন তো, প্রতি ২ মিনিটে বিশ্বের একজন করে নারী মারা যাচ্ছেন যে রোগে তা কতোটা ভয়ঙ্কর! প্রতিবছর সে রোগে মারা যাচ্ছে ১ লক্ষ নারী! সারা পৃথিবীতে প্রতিবছরই নতুন করে ৫ লাখ নারী আক্রান্ত হচ্ছেন।

জরায়ুমুখের ক্যান্সারের কথাই বলছিলাম। সারাবিশ্ব জুড়ে নারীদের সবচেয়ে বেশি হওয়া ৩টি ক্যান্সারের মধ্যে একটি এই জরায়ুমুখের ক্যান্সার।

তবে এ ভয়ঙ্কর ক্যান্সারটি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এর বেশ ভালো চিকিৎসা আছে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব; আরও এক-তৃতীয়াংশ চিকিৎসায় ভালো হয়।

এখন আসা যাক জরায়ুমুখের ক্যান্সার কাদের বেশি হয় 

– যাদের একধিক যৌনসঙ্গী থাকে।
– কম বয়সে যাদের যৌনমিলন ঘটে।
– কম বয়সে যাদের প্রথম গর্ভধারণ হয়।
– যাদের ঘনঘন বাচ্চা হয়।
– অপরিচ্ছন্ন যৌনাঙ্গ।
– দরিদ্রশ্রেণী।
– কিছু ইনফেকশান, যেমন : Human Papilloma virus – 16, 18, 31, 33, HIV, Chlamydia ইত্যাদি।
– জন্মনিরোধকারী পিল যারা খান।
– যাদের ধূমপান করার অভ্যেস আছে।
– যার স্বামীর আগের স্ত্রী জরায়ুমুখের ক্যান্সারে মারা গিয়েছে।

জরায়ুমুখে ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ 

– নিয়মিত মাসিকের মাঝে অনিয়মিত রক্ত ভাঙা।
– স্থায়ীভাবে মাসিক বন্ধ হয়ে যাবার পরেও রক্ত যাওয়া।
– দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব।
– যৌনমিলনের পর রক্তপাত হওয়া।
– যদি ক্যান্সার ইতোমধ্যে সামনে বা পেছনে অর্থাৎ মূত্রথলি বা মলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে তবে প্রস্রাব বা পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে।

এসব লক্ষণ দেখা দিলে যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।

জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে চাইলে 

– যেসব নারীর বয়স ২০-৪০ বছর এবং ২০ বছরের নিচে যারা যৌনমিলনে অভ্যস্ত তাদেরকে প্রতি ৩ বছরে একবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পেলভিস বা শ্রোণিদেশ পরীক্ষা করানো এবং VIA আর Pap test করাতে হয়।

– বর্তমানে আমাদের দেশেও জরায়মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে ভ্যাক্সিন বা টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ভ্যাকসিন নিয়ম মোতাবেক নেয়া প্রয়োজন।

– সর্বশেষে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে সমাজের সর্বস্তরে গণসচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।

(বি. দ্র. ইউনাইটেড স্টেটস কংগ্রেস জানুয়ারি মাসকে জরায়ুমুখ স্বাস্থ্য সচেতনতা মাস হিসেবে মনোনীত করে। চলছে সে মাস। নিজে সচেতন হই, অন্যদের সচেতন করি।)

 

প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র গ্রেফতার

প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র গ্রেফতার


নারী সংবাদ


বুধবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার পুলিশকে জানায় স্বজনরা। সেদিনই ভুক্তভোগী শিশুকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি)।

বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির জানান, ধর্ষণের শিকার শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ধর্ষণে অভিযুক্ত শিশুটি পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। এ ঘটনায় শিশুটির মা মামলা করেছেন। ওসিসিতে শিশুটির চিকিৎসা ও ধর্ষণ প্রমাণে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শিশুটির মায়ের অভিযোগ, বুধবার বিকেলে তিনি ও তার স্বামী দু’জনই কাজের জন্য বাসার বাইরে ছিলেন। তাদের মেয়ে বাসায় একা ছিল। এ সুযোগে তাদের ভাড়াবাসার মালিকের নাতি শিশুটিকে ধর্ষণ করে। রাতে বাসায় ফিরে তিনি ঘটনা জানতে পারেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে বাসার মালিকের কাছে গেলে তিনি হুমকি-ধমকি দিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়া থেকে তাদের বিরত রাখেন। শিশুটিকে হাসপাতালেও নিতে দেননি। তবে বৃহস্পতিবার সে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিতে বাধ্য হন তারা। ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য তাদের শাসিয়ে দেয়া হয় বলেও দাবি করেন তিনি।

সুত্রঃ সময়টিভি নিউজ।

 

মেয়েদের ওড়না ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা

মেয়েদের ওড়না ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা


নারী সংবাদ


রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের ড্রেসকোড পরিবর্তন করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। আগে মেয়েদের ড্রেসকোডে মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও নতুন প্রণীত ড্রেসকোডে সেখানে স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে ছেলেদের মাথায় টুপি ব্যবহারকেও অঘোষিতভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। শুধু শিক্ষার্থীই নয়, শিক্ষকদের মধ্যেও আগে যারা পাঞ্জাবী পড়ে স্কুলে আসতেন তাদেরকে এখন পাঞ্জাবী পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। তবে কেউ পাঞ্জাবী পড়লেও পাঞ্জাবীর উপরে আলাদাভাবে কটি পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন তারা ড্রেসকোডে কোনো পরিবর্তন আনেননি। মেয়েদের ওড়না বা স্কার্ফ ব্যবহার এবং ছেলেদের টুপি ব্যবহারকে পুরোপুরি নিষেধও করা হয়নি। তবে এই ড্রেসগুলোকে শুধু ঐচ্ছিক করা হয়েছে মাত্র।

মঙ্গলবার দুপুরে মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান ফটকে গিয়ে দেখা গেলো স্কুলের বালক শাখার ছুটি হয়েছে। দলে দলে বের হয়ে আসছে ছেলেরা। তবে অনেক শিক্ষার্থীর মাথায় টুপি নেই। আগে যেখানে প্রায় প্রতিটি বালকের মাথায় টুপি ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকতো মঙ্গলবারের চিত্র ছিল সম্পুর্ণ বিপরীত। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্তে ড্রেসকোডে পরিবর্তন এনে ছেলেদের টুপি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার অভিযোগ করেছেন অনেক অভিভাবক। প্রথম সারির দাবিদার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিলে প্রধান শাখা ছাড়াও মুগদা ও বনশ্রীতেও আরো দু’টি শাখা রয়েছে।

দুপুর দুইটার একটু আগে মূল স্কুল ভবনের ভেতরের মাঠে গিয়ে দেখা গেল বেশ কিছু মেয়ে স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে মাঠে খেলাধুলা করছে। অনেকে আবার স্কাউটিং এর অনুশীলন করছে। অনেক মেয়েরা মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে সেই খেলা দেখছে। কিন্তু কোনো একজন শিক্ষার্থীর শরীরে বড় ওড়না বা স্কার্ফ পরিহিত নেই। দু’একজনের সাথে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চাইলে তারা স্কুলের ড্রেসের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হলো না।

স্কুলের বাইরে রাস্তার পাশের একটি বইয়ের দোকানের বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানালেন, আগে বালক বা বালিকা শাখার যে কোনো শিফটের ছুটি হলে স্কুলের বাইরে অন্যরকম একটি দৃশ্যের অবতারণা হতো। যে কেউ স্কুলের ড্রেস দেখলেই সহজে বুঝতে পারতো আইডিয়াল স্কুল ছুটি হয়েছে। কিন্তু এখন দেখুন, অনেক ছেলেদের মাথাতেই টুপি দেখা যায় না। একই ভাবে তিনি জানালেন, নতুন ড্রেসকোড দেয়ার পর মেয়েদের মাথায়ও এখন আর আগের সেই স্কার্ফও দেখা যায় না।

পেশায় আইনজীবী এম এস রহমান নামের এক অভিভাবক নয়া দিগন্তের প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে স্কুলে গিয়ে আমরা শিক্ষকদের কাছে সরাসরি কোনো অভিযোগ করতে পারি না। এই স্কুলের মূল শাখায় (মতিঝিলে) আমার ছেলে ও মেয়ে পড়ালেখা করছে। আগের ড্রেসকোড পরিবর্তন করায় আমি ব্যক্তিগতভাবে মর্মাহত হয়েছি। ইসলামী ভাবধারায় ভবিষ্যতে সন্তানদের গড়ে তোলার আশা নিয়ে এখানে সন্তানদের ভর্তি করেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে, স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সেই আশাও পূরণ হবে না।

রেশনা নামের এক মা অভিযোগ করেন আমার মেয়ে আগে যেখানে নিয়মিত গায়ে ওড়না জড়িয়ে আর মাথায় স্কার্ফ বেঁধে স্কুলে আসতো এখন সে শুধু একটি সাধারণ ওড়না ক্রস আকারে শরীরে দিয়ে স্কুলে আসছে। কোনো কোনো শিক্ষক নাকি আমার মেয়েকে আগের ড্রেস পড়ে স্কুলে আসতে নিষেধ করেছেন।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের দিবা শাখার এক শিক্ষক জানান, সম্প্রতি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় ড্রেস কোড পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটিতে সরকারের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি ছিলেন। তার নাম আবু হেনা মোর্শেদ জামান। সরকারের কোনো কর্মকর্তা যখন স্কুল কমিটিতে কোনো সিদ্ধান্ত দেন তখন অন্যান্য সদস্যদের ওই সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয়। নতুন ড্রেসকোডের ক্ষেত্রেও সরকারি ওই কর্মকর্তার মতামতকেই প্রাধান্য দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, শিক্ষকদের ড্রেসের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষক এখন থেকে আর পাঞ্জাবী পড়ে স্কুলে আসতে পারবেন না। পাঞ্জাবী পড়লেও এর উপরে বাধ্যতামূলকভাবে আলাদা কটি পড়তে হবে। শিক্ষকদের জুতা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আলাদা কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ড্রেসকোডের বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম মঙ্গলবার দুপুর দুইটায় তার অফিসে নয়া দিগন্তের এই প্রতিবেদককে বলেন, স্কুলের ড্রেসকোড নিয়ে বাইরে যেভাবে প্রচার হচ্ছে বিষয়টি আসলে সেই রকম না। ড্রেস আগে যা ছিল তাই আছে। তবে মেয়েরা আগে মাথায় আলগা মতো একটি ওড়না ব্যবহার করতো । এখন সেটিকে ভালভাবে পড়তে বলা হয়েছে। তবে একথা ঠিক যে, এই ওড়না বা হিজাব পড়াটাকে আমরা ঐচ্ছিক করেছি। চাইলে কেউ এই হিজাব ভালমতো পড়বে আর কেউ না চাইলে না পড়বে।

আগে তো’ মেয়েদের বড় ওড়না ব্যবহার আবশ্যিক ছিল, তাহলে এখন কেন এটাকে ঐচ্ছিক করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না; বিষয়টি এরকম নয়। একথা ঠিক যে, আগে মেয়েরা একটি বড় ওড়না ব্যবহার করতো কিন্তু সব মেয়েই কিন্তু ভেতরে ক্রস আকারে ডেসের সাথে মিল রেখে বেল্ট দিয়ে একটি ওড়না ব্যবহার করতো। এখন উপরের বড় ওড়নাটাকেই ঐচ্ছিক করা হয়েছে। ওই বড় ওড়নাটা অনেকে সুন্দর করে পড়ে স্কুলে আসতো না। তাই আমরা বলেছি সুন্দর করে ওড়না পড়তে হবে। যেনতেন বা অগোছালোভাবে ওই ওড়না পড়া যাবে না। কাজেই ওড়নাতো একটি আছেই। আর যে কথাটি বলা হচ্ছে ওড়না নেই এটা আসলে সঠিক না।

ছেলেদের টুপির বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে অন্য ধর্মের বাচ্চারা পড়াশোনা করে। মুসলিম ছাড়া অন্য কাউকেতো টুপি পড়তে বাধ্য করা যায় না। তাই আমরা টুপি ব্যবহারকে ড্রেসে কোডে ঐচ্ছিক করেছি।

শিক্ষকদের পায়জামা আর পাঞ্জাবী পড়ার বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষকদের আমরা স্মাট হিসেবে দেখতে চাই। কেউ পাঞ্জাবী পড়ে স্কুলে আসতে চাইলে আমরা বলেছি শুধু পাঞ্জাবী পড়ে স্কুলে আসা যাবে না। পাঞ্জাবীর উপরে অবশ্যই আলাদা একটি কপি পড়তে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের জুতা ব্যবহারের বিষয়ে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

নারীদের বাইরে কাজ করা নিয়ে কিছু কথা

নারীদের বাইরে কাজ করা নিয়ে কিছু কথা


ফাতেমা জাহান লুবনা


নারীদের বাইরে একেবারেই কাজ না করার পক্ষপাতী যারা তারাই আবার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময় গার্লস স্কুল – কলেজ খুঁজি, নারী শিক্ষক খুঁজি, স্ত্রীলোকের জন্য মহিলা ডাক্তার খুঁজি …কীভাবে সম্ভব? বিয়ের পর সংসার ও সন্তান সামলে সম্ভব হলে একজন শিক্ষিতা নারী ডাক্তারি, শিক্ষকতা বা অন্য যে কোন ধরণের হালাল পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন পর্দা করে। এটা নিষেধ হতে পারে এমন ক্ষেত্রে যখন সন্তানদের দেখাশোনার মত বিশ্বস্ত কেউ না থাকেন বা যদি কাজের বুয়ার কাছেই শিশুকে ফেলে চলে যেতে হয় যখন সেই কাজের বুয়া সম্পর্কেও সন্দেহ থেকে থাকে অথবা জরুরী কিছু সমস্যা থাকলে। অনেক শিক্ষিত নারী আছেন যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী অথচ বাইরে কাজের অবসর ও সুযোগ থাকা সত্তেও ঘরে বসে সময় অতিবাহিত করছেন । এক এলাকায় সব নারীই সমানভাবে শিক্ষিত নয়। ভালো নারী শিক্ষিকা না পাওয়ার ফলে নারীদের চল্লিশ পার্সেন্ট কোটা অনেক সময় খালি থেকে যায় অথবা অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন নারীদের/ কখনও কখনও পুরুষদের দিয়ে সেই কোটা পূরণ করা হয়।

ডিজিটাল এই যুগে ঘরে বসে থাকলেই কি নারীরা নিরাপদ যখন সবার হাতে হাতেই আছে মোবাইল ফোন যাতে সারাবিশ্বের যে কারো সাথে যখন খুশি কথা বলা যেতে পারে অথবা বিচরণ করা যেতে পারে নিষিদ্ধ জগতে? আসলে এটা অভিরুচির ব্যাপার আর প্রয়োজনে নারীদের বাইরে বের হবার পারমিশন কিন্তু স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাই দিয়েছেন আর সেটা কীভাবে তাও জানিয়ে দিয়েছেন। তাই বাড়াবাড়ি করা অনুত্তম।

চাকরির ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সবার জন্যই বয়সের বিধিনিষেধ দূর করে দিলে একজন নারী বিয়ের পর সংসার ও সন্তান সামলে সম্ভব হলে পরবর্তীতে চাকরিতে যোগদান করতে পারেন। এতে রাষ্ট্রীয়, পারিবারিক এবং সামাজিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। যুক্তরাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ও চাকরির ক্ষেত্রে লক্ষ্য করলেও এর সুফলগুলো অনুধাবন করা যায়।এখানে অবসরের আগের বছরেও কেউ যোগ্যতা থাকলে সরকারি চাকরির সুযোগ পেয়ে থাকেন। অনেকে ভাবতে পারেন এতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে। আসলে এই ধারণা ঠিক নয় কারণ এতে এত তাড়াহুড়ো করে চাকরির ট্রেন ধরার ঊর্ধ্বগতি কমে আসবে , নারীরা সংসার ও পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনে যথাযথ সময় ও সুযোগ পাবে আর পরবর্তীতে ইচ্ছা থাকলে চাকরিও করতে পারবে আর পুরুষরাও চাকরি করার সময় আছে জেনে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে মনোযোগী হবে কারণ ব্যবসা মানেই নতুন এক জগৎ আর কিছু রিস্ক তো বটেই তবে উদ্যোক্তা যদি সঠিকভাবে এগুতে পারেন তবে সাফল্য একদিন আসে।

অনেকে নারীদের চাকরিক্ষেত্রে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে এটিকে শুধুই টাকার সাথে সম্পৃক্ত করে ফেলেন। মানে যাদের টাকা নেই তারা চাকরি করেন বা আরেকটু বাড়িয়ে বললে টাকার প্রতি যাদের অনেক লোভ তারাই (শুধুমাত্র নারীদের ক্ষেত্রে বলা হয়) চাকরি করেন। টাকার প্রয়োজন থাকতে পারে আর গ্রহণযোগ্য প্রয়োজন থাকলে সেটাকে সম্মান করতে হবে। কিন্তু নারীদের জবটাকে শুধুমাত্র টাকার সাথে সম্পৃক্ত করে না রাখাই উত্তম। কারণ অনেক সময় নারীদের অংশগ্রহণে সমাজে কল্যাণের জোয়ার আসতে পারে। ধরুন এক এলাকায় এক নারী ডাক্তার হবার পর তার পরিবার তাকে চাকরিতে বাধা প্রদান করল বা তিনি নিজেও চিন্তা করলেন যে চাকরি করবেন না অথচ তার মাঝে যে জ্ঞান রয়েছে তা তো গ্রামের অন্য কারো মাঝে নাই অপরদিকে ঐ গ্রামের অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে বা প্রচণ্ড অসুস্থতায় কাতরাচ্ছ। এক্ষেত্রে জ্ঞানের অবচয়ের দরুণ ঐ পরিবারকে বা নারীকে যদি আল্লাহ্ বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেন তবে? ভাবতে হবে বিষয়গুলো নিয়ে।

নিজের জ্ঞান ও শ্রম দিয়ে যদি কারো উপকার করা যায় তবে দুনিয়ার জীবন যেমন সবার জন্য সুন্দর হয়ে ওঠে তেমনই পারলৌকিক জীবনেও কল্যাণী ব্যক্তিগুলো সাধারণ মানুষের চেয়ে অগ্রবর্তী হবেন তিনি নারী পুরুষ যেই হোন না কেন। তাই নিজেকে নিয়োজিত করুন কল্যাণকর কাজে টাকা কম বেশি যাই আসুক বা একেবারে নাই আসুক এতে কিছু যায় আসে না। অনেকের ব্যাংক ভর্তি টাকা থাকে কিন্তু মনে শান্তি থাকে না তাই অর্থই সবকিছু নয়। নিজেকে যোগ্য করুন কল্যাণকর কাজের জন্য আর সেটা সমাজের কল্যাণে বিতরণ করাকে নিজের উপর দায়িত্ব মনে করুন। যেমন এই মুহূর্তে আমার এই লেখাটি বাহ্যত আনপেইড জব যেটা করতে আমি ভালোবাসি। আপনিও লিখতে পারেন কোন কল্যাণকর গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ যাতে নির্দেশনা আছে; আছে উদ্দীপনা মানুষের জন্য উত্তম কাজের। নিজের জ্ঞানকে শুধুই নিজের মাঝে আবদ্ধ রাখবেন না; ছড়িয়ে দিন সর্বত্র কারণ জ্ঞানই আলো আর শ্রম হলো আর বহিঃপ্রকাশ। আর একটা কথা অবশ্যই মনে রাখবেন নিয়্যাতকে উত্তম কাজের জন্য উত্তম করে নেবেন তাহলে কেউ আপনার পারিশ্রমিক দেক না দেক আপনার প্রতিপালক বহুগুণ পুরস্কার প্রদান করবেন ……………….এবং তাতে অবশ্যই আপনি খুশি হয়ে যাবেন।

 

উত্তরটা জানাবেন কেউ ?

উত্তরটা জানাবেন কেউ ?


জিয়াউল হক


বই আমাদের অনেকেরই প্রিয়। জ্ঞান বিজ্ঞান আর সভ্যতার বিকাশ নির্ভর করে এর উপরেই! মানবসভ্যতা বিকাশে বইয়ের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। বইয়ের প্রচলন কবে, কিভাবে হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়, তবে ইতিহাস ঘেঁটে মোটামুটি একটা চিত্র পাই।

কাদামাটির ট্যাবলেট বানিয়ে ( মাত্র কিছুদিন আগেও আমাদের দেশে ‘শ্লেট’ বানিয়ে লেখা হতো ) তাতে লেখা হতো, এভাবেই বইয়ের প্রচলন ঘটেছে সর্বপ্রথম মেসোপটোমিয়া তথা আজকের ইরাকে খৃষ্টপূর্ব তিন হাজার বৎসর আগে। প্রাচীন বাগাদাদে আসিরীয় সম্রাটের রাজকীয় লাইব্রেরিতে এরকম বাইশ হাজার বই পাওয়া গেছে যেগুলো খৃষ্টপূর্ব ৭ম শতাব্দীতে লিখিত হয়েছিল।

মিশরে খৃষ্টপূর্ব আড়াই হাজার বৎসর আগে মন্ড থেকে প্যাপিরাসে (Papyrus) লেখার প্রচলন শুরু হয়। মিশরের তৃতীয় ‘রামেসিস’ এর (খৃস্টপূর্ব দুই হাজার বৎসর সময়কাল ) শাসনকালের বর্ণনা নিয়ে ৪০ মিটার লম্বা একটা ‘বই’ পাওয়া গেছে মিশরীয় পিারামিডে। এই প্যাপিরাস (Papyrus) থেকেই আধুনিক ‘পেপার’ শব্দটির উদ্ভব।

একই সময় পাখির পালক এবং জীব জন্তুর হাড়েও লেখা হতো। প্রাচীন চীনে এরকম প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যে কাঠের খন্ডের উপরে মোম লাগিয়ে তার উপরে লেখার প্রচলন ছিল, এটা অবশ্য অনেকটা প্রাচীন শ্লেট-এর অনুরুপ।

খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে রোমে জীব জানোয়ারের চামড়াকে ব্যবহার করে পার্চমেন্ট উদ্ভাবন করা হলে বই তৈরিতে তা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। চীনে খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে সর্বপ্রথম মন্ড থেকে কাগজ উৎপাদন করে। আর সে থেকে কাগজই বই প্রস্তুতের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠে।

সপ্তম শতাব্দীর প্রথমভাগে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের আনাচে কানাচে। ইসলামের প্রথম নির্দেশই হলো; ‘পড়’ অর্থাৎ জ্ঞানচর্চা ও বিস্তার করা। ফলে অচিরেই জ্ঞানচর্চায় এক অসাধারণ মাত্রা যুক্ত হয় আর এর অনিবার্যতায় বই রচনা, প্রকাশ ও প্রচারে বিপ্লব সূচিত হয়।
ইউরোপে খৃষ্টধর্ম প্রচারে বাইবেল রচনা ও প্রকাশের ধারাবাহিকতায় বই প্রকাশ ও প্রচার গতীময়তা পায়। পঞ্চদশ শতাব্দীতে জার্মানিতে প্রিন্টিং মেশিন উদ্ভাবন হলে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয়।

পিউ রিসার্চ সেন্টার ‘ডেটা অন আমেরিকান রিডিং হ্যবিটস’ শিরোনামে একটা গবেষণাপত্র ও জরিপ প্রকাশ করেছে ২০১৫ সালে। সে বৎসর শতকরা ৭২ জন আমরিকান বৎসরে একটা বই পড়েছে। এই ধারা গত পাঁচ বসরই পড়তির দিকে। পুরো বৎসরে অন্তত একটা বই পড়েছেন এমন আমেরিকান নাগরিকের হার ২০১১ সালে ছিল ৭৯ জন। ২০১৫ সালে; ৭২ জন।

জরিপে অংশ নেয়া বেশির ভাগ মানুষই বৎসরে ৪ টা বই পড়েছেন। পুরুষের তুলনায় নারীদের মধ্যে বই পড়ার হার বেশি। শতকরা ৭৭ জন নারী বৎসরে অন্তত একটা বই পড়েছেন। পুরুষদের মধ্যে এই হার শতকরা ৬৭ জন।

একজন নারী গড়ে বৎসরে ১৪টা বই পড়েছেন আর পুরুষ; ৯টি। বুড়ো আমেরিকানরা বই পড়ে কম। ১৮ বৎসর থেকে ২৯ বৎসরের নারী পুরুষরাই বই পড়ে বেশি। আমেরিকায় বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানী ও প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারগণ সাধারণ আমেরিকান জনগণের তুলনায় অনেক বেশি পড়েন। বড় বড় অফিস ও প্রতিষ্ঠানের (সিইও) কর্ণধারগণ মাসে চার পাঁচটি বই পড়েন।

কোনো দেশের জনসংখ্যার মাথাপিছু বই প্রকাশে সবচেয়ে এগিয়ে যুক্তরাজ্য; ২০১৪ সালে মাথাপিছু ২০ টি বই প্রকাশ করেছে (সুত্র- International Publishers Association )। দ্বিতীয় স্থানে তাইওয়ান (১৮টি), তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্লোভেনিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯ টি!

চল্লিশ হাজার বর্গমাইল আয়তনের ছোট্ট রাষ্ট্র আইসল্যান্ড; জনসংখ্যা মাত্র তিনলক্ষের কিছু বেশি, এখানে প্রতি দশ জন নাগরিকের মধ্যে একজনই লেখক! লেখকরাই সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছল ও সম্মানিত।

২০১৩ সালের পরিসংখ্যান; বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে চীনে; চার লক্ষ চল্লিশ হাজার (৪৪০০০০টি), এরপরে যুক্তরাষ্ট্র ৩০৪৯১২টি, তৃতীয় যুক্তরাজ্য ১৮৪০০০ টি। ভারত পঞ্চম স্থানে; ৯০০০০ টি।

উক্ত তালিকায় ১২৩টি দেশের মধ্যে প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে অষ্টম স্থানে ইরান (৭২৮৭১), দশম তুরস্ক (৫০৭৫২) আঠারোতম ইন্দোনেশিয়া (২৪০০০), তেইশতম মালয়েশিয়া (১৭৯২৩), আটত্রিশতম মিশর (৯০২২), উনপঞ্চাশতম সউদি আরব (৩৯০০), পঞ্চাশতম পাকিস্থান (৩৮১১), একান্নতম লেবানন (৩৬৮৬) রয়েছে। (উইকিপিডিয়া/ ইউনেস্কো)

বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাচ্ছেন? দু:খিত, ১২৩টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। কেন নেই? উত্তরটা জানাবেন কেউ ?

 

স্মৃতির ক্যানভাসে সুখ

স্মৃতির ক্যানভাসে সুখ


আফরোজা হাসান


জীবন প্রতিনিয়ত করে চলছে ছোট গল্পের রচনা
স্মৃতির ক্যানভাসে আঁকছে সুখ-স্বপ্নের আল্পনা

আনন্দের ভিড়ে কিছু গল্প জুড়ে বেদনা
হতাশার আঁধারে ঢাকা কিছু গল্পের সম্ভাবনা

কিছু গল্প হাসায়, কিছু দিয়ে যায় কান্না
কষ্টের গুঞ্জনে কিছু গল্পে মিলে সুখের বাহানা

মাঝ দরিয়ায় কিছু গল্প খায় হাবুডুবু
উদ্ভাসিত হয় স্বমহিমায় যে গল্পটা ছিল নিভু নিভু

কিছু গল্প করে নিশ্চুপে প্রস্থান
কিছু শুনিয়ে যায় অক্লান্ত আশার গান

কোন কোন গল্প নিঃশব্দে দেয় প্রেরণা
কিছু গল্প জাগিয়ে যায় ঘুমন্ত চেতনা

কিছু গল্প সুখের তরে নিরন্তর সাধনার
কিছু গল্প শুধুই আন্তরিক ভক্তি ও আরাধনার

কিছু গল্প জুড়ে ক্ষত
কিছু গল্পে যুক্তিতর্ক, ভিন্ন মত

কোন কোন গল্প বয়ান করে নিরাশা
কিছু গল্প দিয়ে যায় গন্তব্যের দিশা

কিছু গল্প অসম্পূর্ণ, আধা
কিছু গল্প শুধুই গোলকধাঁধা

কিছু গল্প সুন্দর, সুবাসিত
কিছু গল্প কদার্যতায় প্রভাবিত

কিছু গল্প জুড়ে মিথ্যা-ছলনা, আত্নঅহংকার
কিছু গল্প উন্মুক্ত করে রুদ্ধ মনের দ্বার

জীবনের আঁকেবাঁকে শত সহস্র গল্পের বীজ
কিছু ফুলে, কিছু ফলে, কিছু আগাছায় রচিত হয় কাহিনী নিজ নিজ…

রচয়িতা- আফরোজা হাসান

 

ঢামেক ওসিসিতে থাকা ১৩ জনই ধর্ষণের শিকার

ঢামেক ওসিসিতে থাকা ১৩ জনই ধর্ষণের শিকার


নারী সংবাদ


ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে বেড রয়েছে আটটি। সোমবার ( ১৩ জানুয়ারি) সেখানে ভিকটিম ভর্তি আছেন ১৩ জন। তারা সবাই ধর্ষণের শিকার। এর মধ্যে যেমন ২৫ বছরের নারী রয়েছেন, তেমনি আছেন ১০ বছর বয়সের শিশুও। বেড কম থাকায় ওসিসির ভেতরে একেক বেডে দুই থেকে তিনজন করেও রাখা হচ্ছে।

ওসিসিতে দায়িত্ব পালনকারী সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওসিসিতে আগে শারীরিক নির্যাতন, যৌন হয়রানির শিকার নারীরা এলেও গত কয়েক বছরে ধর্ষণ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। যে পরিমাণ ধর্ষণের শিকার নারী এখানে আসে তাতে করে পুরো দেশের চিত্রটা তাদের কাছে পরিষ্কার। আর ওসিসিতে আসা নারীর মধ্যে ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী নারীর সংখ্যাই শতকরা ৫০ শতাংশ।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকেই ধর্ষণের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। শুধুমাত্র ঢামেক হাসপাতালে যে চিত্র পাওয়া যায় তাতে সারাদেশের অবস্থা যে কতটা ভয়াবহ তা আঁচ করা যাচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালে এক হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। যা কিনা ২০১৮ সালে ছিল ৭৩২ জন, ২০১৭ সালে ছিল ৮১৮ জন। অন্যদিকে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন জানায়, ২০১৯ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯০২ শিশু, ২০১৮ সালে যে সংখ্যা ছিল ৩৫৬। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের চাইল্ড প্রোটেকশন কো-অর্ডিনেটর রাফিজা শাহীন জানান, গত বছরে ৯০২ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে সাত থেকে ১২ বছরের শিশু ছিল ৩৯ শতাংশ আর ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছিল ৪৮ শতাংশ।

২০১৮ সালের তুলনায় গত বছর বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ৭৬.০১ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)।

শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গতবছর এক হাজার পাঁচটি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৭৬ দশমিক ০১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে প্রতিমাসে গড়ে ৮৪ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার

সংগঠনটি জানায়, ২০১৮ সালের তুলনায় গত বছর ধর্ষণের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩৩ জনের বয়স ছিল এক থেকে ছয় বছরের মধ্যে। ঢাকা জেলায় ধর্ষণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে।

২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১৫টি জাতীয় দৈনিক থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। বিএসএএফের তথ্যানুযায়ী, ভুক্তভোগী শিশুদের মধ্যে ৭৫ জন তাদের শিক্ষক এবং ১৪১ জন প্রতিবেশীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

সোমবার ঢামেকের ওসিসিতে সরেজমিনে দেখা যায়, রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে নরসিংদীতে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়। সোমবার সকালে শিশুটিকে তার স্বজনরা ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসেন। তারা জানান, রবিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাসার পাশের এক দোকানে কলা কিনতে গেলে দোকানি মেয়েটির হাত পা বেঁধে ধর্ষণ করে। মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে এবং পরে ওসিসিতে নিয়ে আসেন।

এদিকে, সোমবারই সাভার থেকে এসেছে ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের এক শিশু। সকাল ১১টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ৯ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর এলাকাতে ধর্ষণের শিকার হয় ১৩ বছরের কিশোরী, পরদিন তাকে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। একইদিন রাতে ভাটারা এলাকাতে ধর্ষণের শিকার হয় ১২ বছরের এক শিশু।

এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে এই মুহূর্তে ভর্তি আছেন ১৩ জন, যার মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৪ থেকে ৬ বছরের শিশুও রয়েছে। বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি রয়েছেন ধর্ষণের শিকার দুই কিশোরী, তাদের বয়স ১৪ এবং ১৭। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি আছেন দুইজন যাদের বয়স ১৬ এবং ২০। তারাও ধর্ষণের শিকার।

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এই মুহূর্তে ওসিসিতে কেউ ভর্তি নেই। তবে চলতি বছরের শুরু থেকেই ধর্ষণের শিকার বেশ কিছু শিশু ভর্তি ছিল। যাদের মধ্যে এক শিশুর বয়স ছিল ৪। ওই কর্মকর্তা বলেন, এই ওসিসিতে ধর্ষণের শিকার হয়ে আসা নারীর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি থাকে। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি থেকে জানা যায়, সেখানে ধর্ষণের শিকার ১০ বছরের এক কিশোরী ভর্তি আছে।

ঢামেকের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা.বিলকিস বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকেই ধর্ষণের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ নারী এবং শিশু। সেখানে নারী এবং শিশুরাই যদি এভাবে নির্যাতিত হয় তাহলে দেশের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, দেশে আইন আছে। কিন্তু নানা কারণেই ধর্ষণ বন্ধ করা যাচ্ছে না। আর ধর্ষণের শিকার নারীদের মধ্যে চার মাসের শিশুও এসেছে এখানে। শিশু-কিশোরীই বেশি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণত আত্মীয়-স্বজন, পাশের দোকানদার, ঘরের পাশে থাকা রিকশাচালকদের দ্বারা এই ধর্ষণগুলো বেশি হচ্ছে। আর শিশুদের যেহেতু প্রতিরোধক্ষমতা নেই,তাদেরকে সহজেই অনেক কিছু বোঝানো যায়, ভয় দেখানো যায় তাই এই সংখ্যাটা বেশি। আর ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহার,পরিবারের বন্ধন কমে যাওয়াও ধর্মীয় অনুশাসন না থাকা এবং সমাজের অবক্ষয়ের কথা উল্লেখ করেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন,সাম্প্রতিক সময়ে নারী শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং ধর্ষণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। সামাজিক অস্থিরতা এবং মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এটা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন,বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে রোল মডেল হলেও ধর্ষণের এই ঘটনা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

শিশুরা হচ্ছে সবচাইতে দুর্বল গোষ্ঠী,আর তারা যেহেতু দুর্বল, তাই তারা সহজ টার্গেট এবং সহজ শিকার,তাদেরকে সহজেই প্রলোভনে ফেলা যায়— মন্তব্য করে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মা-বাবার ব্যস্ততা ও পরিবারের বড়দের অন্য কাজে বেশি ডাইভারসিটি বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের প্রতি নিরাপত্তাবোধের জায়গা এবং তাদেরকে নিরাপদ রাখার জায়গাগুলো অনেক শিথিল হয়ে যাচ্ছে।

তবে সমাজের পিছিয়ে পড়া এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে কেন জানালে তিনি বলেন, কারণ এই শিশুদের সহজে প্রলোভিত করা যায়। তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাটাও নাজুক থাকে।

সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন।

 

আমি কখনো ভালো মা হতে পারিনি 

আমি কখনো ভালো মা হতে পারিনি


নুর এ নাজনিন শামলিন


আমি কখনো ভালো মা হতে পারিনি, অন্য সব আদর্শ মায়েদের মতো জোর করে খুব সকালে বাচ্চাদের ঘুম থেকে টেনে তুলে স্কুলে পাঠায় নি। বরং উল্টো মনে হতো ঘুমিয়ে থাক, কিসের এত পড়ালেখা। অফিস যাওয়ার সময় খুব সংগোপনে রেডি হতাম যাতে ওদের ঘুম না ভাঙ্গে। আহারে ঘুমিয়ে থাক আমার সোনা বাচ্চা দুইটা, সারা জীবন ই তো পড়ে আছে কি হবে এত পড়ালেখা করে?ওরা যাতে আরাম করে ঘুমাতে পারে তাই আমি খুঁজে খুঁজে ডে শিফটের স্কুলগুলিতে ওদেরকে ভর্তি করেছি।

আমি ভালো মা হতে পারিনি কারণ আমি কোনদিন ওদের নিজ হাতেই স্কুলের ড্রেস পড়িয়ে আদর করে সঙ্গে করে স্কুলে নিতে পারেনি, সে সময় আমি থাকতাম অফিসে । প্রথম দু একদিন হয়তো স্কুলে বসিয়ে দিয়ে আমি চলে আসতাম।নূহা আমার মেয়ে, ছোটবেলা থেকেই সবকিছু যেন একটু বেশীই বুঝতো।ও যখন আমার হাতটা ছেড়ে দিত কেমন পিছন ফিরে তাকাতে তাকাতে স্কুলে ঢুকতো, কারণ ও জানতো অন্য সব মায়ের মতন ওর মা ওর জন্য স্কুলে বসে থাকবে না। অর্ণব আমার ছেলে, দুচোখ জলে টলটল করত আর কি আকুতি নিয়েই না বলত, আম্মু তুমি অফিস যেও না, আমার সাথে থাকো, ওর আকুতি আমার মন ছুঁয়ে যেত। মাঝে মাঝে চোখ মুছতে মুছতে অফিসে যেতাম।

আমি ভালো মা হতে পারিনি, অন্য সব মায়েদের মতো হোম ওয়ার্ক না করার জন্য কোন দিন বকা দেই নি। পড়া করতে না চাইলে বই খাতা বন্ধ করে দিয়ে বলেছি আর পড়তে হবে না অনেক হয়েছে। কোনদিন বাসার টিচারদের পিছনে লাগেনি,কত দিন কত ঘন্টা পড়িয়েছে তার হিসাব করিনি, বরং রিকোয়েস্ট করছি স্যার আমার বাচ্চাটা পড়তে না চাইলে জোর করবেন না, ও যাতে আনন্দ নিয়ে পড়ে, আপনি আপনার মত করে পড়াবেন। হ্যাঁ, আমি আমার মতো করে ওদের পরিয়েছি। আমার ছেলেটা খুবই ফাঁকিবাজ টাইপের। হুজুর আসলে প্রায়ই আমি দেখতাম হুজুরকে নিয়ে মোবাইলে গেম খেলছে মহানন্দে। হুজুর কে কখনো কিছু বলতে পারতাম না, মনে হতো থাকনা আমার বাচ্চাটা কি আনন্দ নিয়ে না খেলছে!!

আমি ভালো মা হতে পারিনি, পারিনি আমার বাচ্চাদের কোন একটি আনন্দের মুহূর্তে ওদের পাশে থেকে বুকে জড়িয়ে ধরতে। আমার মেয়েটার যখন ফাইভে, এইটে বৃত্তির রেজাল্ট হয়, আমি হয়ত অফিসে অনলাইনে ওর রোল নাম্বার খুঁজছি, আমার মেয়েটা তখন বৃত্তি পাওয়ার আনন্দে একা একাই স্কুলের মাঠে ঘুরছে, কোন এক মায়ের কাছ থেকে মোবাইল চেয়ে ও আমাকে ফোন দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আর বলছে জানো মা আমি না ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি , মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে আমিও কাঁদচ্ছি গভীর আনন্দে কিন্তু ভালোবেসে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারিনি, পারিনি ওর ফুলা ফুলা গালে চুমু খেতে।

নূহার অভিমান ভরা কথা “আমি কোনোদিন কোনো ভালো রেজাল্টের পর তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারি নাই আম্মু, অপেক্ষা করতে হয়েছে কখন তুমি বাড়ি ফিরবে।” ভাবলাম এবার ক্ষ্যান্ত দেই।বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ, ওদের একটু সময় দেই। এই ভেবে চাকরি ছাড়া। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, ঠিক সেই সময় ধরা পড়ে আম্মার ক্যান্সার। আমি ছুটলাম আম্মার কাছে। আম্মার কাছ থেকে শুধু নিয়েছি কখনো কিছু দিতে পারি নাই। ভাবলাম এইতো সময় আমার সর্বোচ্চ দিয়ে আম্মার সেবা করব। নূহার ইন্টারমিডিয়েট, অর্নবের ক্লাস এইট খুব ইম্পর্টেন্ট সময়। আমি ভালো মা হতে পারি নাই কিন্তু আমার সন্তানরা, ওরা যেন আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত। ওরা আমাকে অভয় দিলো, “আম্মু নান ভাই কে সময় দাও।” এমনও সময় গেছে ওদের এক গ্লাস হরলিক্স পর্যন্ত বানায় দিতে পারি নাই, ওদের পরীক্ষার সেন্টারে পর্যন্ত যেতে পারি নাই। আম্মার কেমো, অসুস্থ আম্মাকে নিয়ে দিনরাত আমি হসপিটালে, ওরা আমাকে নিরাশ করে নাই। নূহা ৯৩ পারসেন্ট মার্কস পেয়ে এইচএসসিতে গোল্ডেন আর অর্ণব ক্লাস এইটে বৃত্তি পেয়ে চমকে দিল আমাকে। আমি ভয়ে ছিলাম নূহা মেডিকেলে চান্স পাবে তো? নূহা বলল, ” আল্লাহ ভরসা’ ।ওর নান ভাইয়ের খুব ইচ্ছা ছিল নূহা ডাক্তার হবে। আম্মা মারা যাওয়ার কিছুদিন আগেই নূহার রেজাল্ট হল। নূহা ওর নান ভাই এর ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছিল, ও চান্স পেলো ঢাকায়।

আমি ভালো মা হতে পারি নাই আর এই জন্যই হয়তো ওরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ওরা নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে। ওরা প্রতিনিয়তই দেখেছে ওদের মা আর দশটা মায়ের মত না কি প্রচণ্ড পরিশ্রম ই না করতে পারে। অসম্ভব প্রাণশক্তিতে ভরা ওদের মা একজন স্বাবলম্বী নারী। আমার মেয়েটাও চায় ওর মায়ের মত প্রচন্ড আত্ম বিশ্বাসী, স্বাবলম্বী হতে। আমি ভালো মা হতে পারিনি কিন্তু ওদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিতে পেরেছি, কিভাবে আকাশ ছুঁতে হয় সে স্বপ্ন দেখাতে শিখিয়েছে আর সবশেষে ভালো বন্ধু হতে পেরেছি।

 

১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণ

১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণ


নারী সংবাদ


গত বৃহস্পতিবার ৯ তারিখ রাতঘর ধর্ষণ করে চারজন নরপশু ১১ বছরের এক শিশুকে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর ভাটারায়। ধর্ষণের পর বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে গতকাল ১০-ই জানুয়ারি, শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন পরিবার। এর একদিন আগে থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভাটারা এলাকাতে পরিবারের সঙ্গেই থাক তো শিশুটি। কিন্তু ৯ জানুয়ারি মানে বৃহস্পতিবার তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। কে বা কারা বাচ্চাটি বাসা থেকে বের হলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে রাতভর ধর্ষণ করেন। জানা যাচ্ছে, চারজন দুর্বৃত্ত ছিলো। যাদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

ছোলমাইদ এলাকার একটি সড়ক থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় তাকে পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়। এরপর লোক লজ্জার ভয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে নিতে চায়নি। কিন্তু শারিরীক অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় পরে শুক্রবারে রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে।

শিশুটির বড় বোন জানান, ‘প্রথমে লোক লজ্জায় ও ভয়ের কারণে বিষয়টি কাউকে জানাতে চাইনি। পরে পরিবারের সম্মতিক্রমে শুক্রবার রাতে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাই। এখন সেখানেই ভর্তি রয়েছে।’

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটি বাসা থেকে বের হলে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর শুক্রবার ভোরে বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

 

ময়মনসিংহে মাদরাসাছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ

ময়মনসিংহে মাদরাসাছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ


নারী সংবাদ


ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় এক মাদরাসা ছাত্রীকে (১৪) দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে তাদের আটক করা হয়।

বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুক্তাগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।

তিনি বলেন, মুক্তাগাছার এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ধর্ষণের শিকার মাদরাসা ছাত্রী জানায়, মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে বোরকা কিনতে মুক্তাগাছায় যাই। বোরকা কেনার পর বাড়িতে ফেরার জন্য সিএনজি খোঁজার সময় পূর্বপরিচিত ওবাইদুলের সঙ্গে দেখা হয়। সে আমাকে বলে আমিও যাব, তাই তার সঙ্গে সিএনজিতে উঠি। ওই সময় সিএনজিতে কালো বোরকা পরা আরও একজন ছিল। সিএনজি ভিন্নপথে চলতে শুরু করলে আমি চিৎকার করি। এ সময় বোরকা খুলে এক যুবক আমার মাথায় পিস্তল ধরে বলে চিৎকার করলে মেরে ফেলব। এরপ আমাকে বোররচর ইউনিয়নে নির্জন এক বাড়িতে নিয়ে যায় তারা।

সেখানে শাকিল, ওবাইদুল, নাঈম আমাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরদিন বুধবার সকালে ওই তিনজন আমাকে একটি গাড়িতে তুলে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি মা-বাবাকে জানালে আমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, বোরকা কিনতে মুক্তাগাছায় গেলে শাকিল, ওবাইদুল ও নাঈম নামে তিন যুবক ওই কিশোরীকে তুলে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। দুজনকে আটকের বিষয়টি সদর থানা থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।

সুত্রঃ যুগান্তর।

 

নিজের প্রতি যত্ন নিন

নিজের প্রতি যত্ন নিন


মিথিলা ফেরদৌস


একবার এক ভাইয়া বলেছিলো,”যেদিন তোমার জামাই তোমার নামে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিবে, সেদিন বুঝবা,তোমার চেহারা খারাপ হয়ে গেছে। সে তোমাকে নিয়ে এখন নিশ্চিন্ত।”

সেদিন, আমার জামাই হঠাৎ ঘোষণা দিলো, সে কিছুদিন পরে তার সমস্ত সম্পত্তি আমার নামে লিখে দিবে। হঠাৎ হকচকায় উঠি। তারমানে চেহারার কি এতই দুরাবস্থা এখন আমার? আরেক বিপদ, আলতাফের সম্পত্তি বলতে কিছু পুরান সার্ট, প্যান্ট, জুতা, শেভিং কিটস, শাওয়ার জেল এইসব আলতু ফালতু জিনিস ছাড়া আর তেমন কিছু তো নাই।এইসব দিয়া আমি করবো কি? তারমানে কি? আমি কি আম ছালা দুইটাই হারাচ্ছি?!! ব্যাপার ক্লিয়ার হওয়ার জন্যে, জিগাইলাম-

♥তোমার সম্পত্তি মানে?

♦তিন বছর পর,ফ্লাটের জন্যে লোন পাবো,সেইটা তোমার নামে লিখে দিবো।

♥ মানে কি?লোনের গ্রান্টার কে?

♦ তুমি, আবার কে?

♥আজব,আমার সম্পত্তির দরকার নাই,আমার লোনের বাড়ির দরকার নাই।মাফ চাই।ভাড়া বাড়ি আমার ভীষন পছন্দ।

প্রতি মধ্য বয়সি মহিলারা, এই এক সমস্যায় ভোগে।

সংসার, চাকরী, বাচ্চা, ক্যারিয়ার, বাড়ি,
গাড়ি, ব্যাংক ব্যালান্স করতে গিয়ে নিজের প্রতি যত্ন নিতেই ভুলে যায়। অথচ এই সময় একটা মেয়ে সৌন্দর্য পরিপুর্নতা পায়। এর ফলে সে কিছু ক্রাইসিসে ভোগে। সে দিনে দিনে ইন্সিকিউরড হয়ে পরে, তাছাড়া জীবনটাকে পুর্নভাবে ইনজয় করতে পারেনা।
এখন অবশ্য ফেসবুক হয়ে, একটা সুবিধা হয়েছে, অনেকেই সাইজা গুইজা কিছু ছবি আপলোডায়, তাতে কিছু কমেন্ট থাকে এমন, excellent, very nice, beautiful, অসাধারণ, খুব সুন্দর ইত্যাদি। সত্য হোক, মিথ্যা হোক শুনতে কিন্তু ভালোই লাগে। আমি অবশ্য এই গ্রুপে পরি। ফেসবুকে ছবি আপলোড ছাড়া, চুলটাও আচড়াতেও ইচ্ছা করেনা।রুপচর্চাতো দুরে কথা। খুব কম সংখ্যক আছে, যারা রুপচর্চা, পরচর্চা, পার্টি-ফাংশন নিয়া বিজি, এদের জামাইরা ভীষণ কর্মঠ । এরা হইলো রাজকপালী গ্রুপের।

একইভাবে প্রতি মধ্যবয়সি পুরুষদের বেশিরভাগ ছোটে বাচ্চার ভবিষৎ ভেবে।কিছু বিপথে যায়, তারা আবার নিজের চেহারার ব্যাপারে অতি যত্নশীল (এদের বউরা সাধারণত অতিশয় কর্মঠ হয়, ফলে এদের সংসারের প্রতি তেমন কোন দায়িত্ব থাকেনা), কিছু পথ বিপথ কোন পথেই থাকেনা। আকাম্মা গ্রুপের মানুষ এরা।

মানুষের জীবনের মুল্যবান সময়টুকু টাকার পিছনে ঘুরে নষ্ট করার কোন মানে নাই। বুড়া বয়সে ঔষধপত্রের খরচ ছাড়া এই টাকা কোন কাজেই দিবে না। আর ছেলে মেয়েকে তার নিজের ভবিষ্যৎ ভাবতে দিন। যাকে যত কম ভাবতে দিবেন, সে ততই অপদার্থ হবে। তবে তার শৈশব কৈশোরের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাও নিশ্চিত করা জরুরী। তার সাথে নিজের জীবনকেও ইনজয় করার ও দরকার। তাই ঠিক যতটুকু দরকার ততটুকুই ছুটুন, তার বাইরে না।

© মিথিলা ফেরদৌস

 

“মেয়ে” তুমি মন জিতে নিলে

“মেয়ে” তুমি মন জিতে নিলে


নাজমুল হুদা নাজ


দুপুর আনুমানিক ২.৩০ হবে। রাস্তার পাশের চেনা দোকানে চা খাচ্ছি। একটি মেয়ে, বয়স ২৩ কি ২৪ হবে, ইতস্তত করতে করতে দোকানে ঢুকলো। হাতে একটা স্বচ্ছ ফাইল। ভিতরে কিছু মার্কশিট, সার্টিফিকেট এসব দেখা যাচ্ছে! সারা শরীরে প্রসাধনের বিন্দুমাত্র চিহ্ন না থাকলেও ঘাম আর রোদমাখা মুখটা বেশ মায়াময়। দোকানদারের সাথে মেয়েটার কিছু কথোপকথনের ছিটেফোঁটা….

মেয়ে- ভাই, এখানে ভাত বা রুটি কিছু পাওয়া যাবে?

দোকানী- হ্যাঁ, ভাত পাবেন, বলুন কি কি খাবেন? ডাল, ডিম, সব্জি, রুই মাছ, পাবদা মাছ, বয়লার মুরগীর মাংস।

মেয়ে- এমনি শুধু ডাল আর ভাত কত ভাই?

দোকানী – ভাত, ডাল, সবজি ৩৫ টাকা।

মেয়ে – আমার সবজি চাই না, আমায় শুধু ভাত আর ডাল দিন!

৩০ টাকায় হয়ে যাবে তো?

দোকানী – আচ্ছা বসুন দিচ্ছি!

এরপর একটা ফোন আসে মেয়েটার মোবাইলে।

মেয়ে – ” হ্যাঁ মা বলো!

হ্যাঁ ! হ্যাঁ ব্যাংকে ইন্টারভিউ ভালো দিয়েছি! হ্যাঁ খেয়েছি। ভাত মাছ। তুমি ওষুধগুলো খেয়েছ?….. হ্যাঁ আমি ৫ টার ট্রেনটা ধরবো… আচ্ছা ভাইকে টিউশান থেকে ফেরার সময় স্টেশনে দাঁড়াতে বলবে……আচ্ছা রাখো।”

ফোনটা রেখে কয়েকটা সেকেন্ড বাইরের দিকে আনমনে তাকিয়ে থাকলো….. হয়তো অসুস্থ মা.. স্কুল পড়ুয়া ছোট ভাইয়ের সুদিন এনে দেওয়ার সাজানো দিনের ছবিগুলো চোখে ভিড় করছিলো…

দেখে কি রকম যেন একটা শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা ভাব চলে এলো… একটা অজানা অচেনা মেয়ের জন্য.. কি যেন বলে এই বয়সটাকে… বালিকার চেয়ে বড়.. যুবতীর চেয়ে ছোট।

নারী স্বাধীনতা কি- ওর কাছ থেকে একবার শুনতে খুব ইচ্ছে করছিলো, মনে মনে শুভকামনা জানালাম..

এই চাকরির আকালের যুগে হে বালিকা তুমি যে বাইরে এসে আগুন রোদের তলায়.. শক্ত মাটিতে নেমে এসেছ যুদ্ধের জন্য, এখানেই তুমি যুদ্ধটা অর্ধেক জিতেছো.. আর বাকী অর্ধেক নিজের চাকরির টাকায় সত্যি সত্যি মাছ ভাত খাওয়ার পর জিতবে…. এ পর্যন্ত ঘটনাটা হয়তো সাধারণ ছিলো.. যদিও “মেয়ে” তুমি মন জিতে নিলে..

কিন্তু ঘটনাটা আরও বাকী….

দোকানী ভাতের থালাটা সাজিয়ে মেয়েটির সামনে রেখে বললো,
আপা আমি ভুল করে সব্জিটা দিয়ে ফেলেছি, আপনি খেয়ে নিন প্লিজ!!

ওই তিরিশ টাকাই দিয়েন।

মেয়ে -কিন্তু আমি তো শুধু ডালভাতই….

দোকানী – আমি একদম ভুলে সব্জিটা দিয়ে ফেলেছি.. আপনি প্লিজ খেয়ে নিন.. তিরিশ টাকায় নেবো আমি…আমার ভুল.. আপনি না খেলে এতোটা খাবার নষ্ট হবে আমার..

ওদের মতো আমিও ভেবেছিলাম নিছকই ভুল…

বিল দেয়ার সময় দোকানদোর কে জিজ্ঞাসা করলাম, ভাই সত্যিই কি ভুল করে সবজিটা দিয়েছেন?
দোকানদার কানের কাছে এসে বললো, “শুধু ব্যবসায় লাভ খুঁজলে হবে ভাই! এরকম ভুলগুলো করার সুযোগও খুঁজতে হবে:) ওর খুব খিদে পেয়েছে। দেশের বাড়িতে আমারও বোনটার বয়স এরকমই” বলে আবার নির্লিপ্ত মুখে চা, সিগারেট, ভাত, তরকারির রাজ্যে হারিয়ে যায়।

আমি খুঁজে পেলাম না, কার জন্য বেশী ভালো লাগা উচিৎ! মেয়েটা নাকি দোকানদার!!

হয়তো একটা কথা বলা যেতে পারে,
যে যুদ্ধ জিনিসটা বোঝে, সেই যোদ্ধার ঘাম, ক্ষুধার মূল্য দিতে জানে।

 

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি’ বললে ধর্ষক আমাকে মেরে ফেলবে

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি’ বললে ধর্ষক আমাকে মেরে ফেলবে


তামান্না সেতু


একটা সাক্ষাৎকারে মেয়েটা বলেছে, “সে আমাকে জিজ্ঞেস করছিল আমি কি করি, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি এটা বলিনি, আমার মনে হয়েছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি’ বললে সে আমাকে মেরে ফেলবে”!

ক্রিমিনাল সাইকোলজিস্টরা এই লাইনটি নিয়ে ভাবুন। ঠিক কী কারনে নারীর উপর হিংস্রতা বাড়ছে গবেষণা করুন। একটি মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এটি তাকে হত্যার, ধর্ষণের কারণ হতে পারে এই ভাবনা আসছে কোথা থেকে ভাবুন।

এসব এক দিনে হয়নি। এই একজন ধর্ষককে ধরে শাস্তি দিয়েও এই ঘটনা থেকে কিন্তু মুক্তি নেই। এই হিংস্রতার খোরাক রোজ যোগান দেয়া হয়! বারবার বলা হয়, ‘মাইয়া মানুষ ক্যান বাড়ির থিকা বাইর হবে? তারা কেন কলেজ ভার্সিটিতে পড়বে? কেন চাকরী করবে? একা একা চলাফেরা করবে? এইসব তো পাপ! এরা পাপী’!

ধর্ষকের বিচার চান, বিচার করুন। কিন্তু তারপর তৃপ্তিতে ঘুমিয়ে যেয়েন না। তাদের সাইকোলজিটা বুঝুন। ওটার খোরাক আসে কোত্থেকে খুঁজুন। সেই জায়গাটা বন্ধ না করে কিচ্ছু হবে না।

সেই সাহসী মেয়েটাকে আমার শত কোটি সালাম যে মার খেয়ে, রেইপড হয়ে, জ্ঞান হারিয়ে আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। তখনো সেখানে ওই লোক উপস্থিত থাকার পরও সমস্ত শক্তি নিয়ে পালিয়ে এসেছে, গাড়ি করে ক্যাম্পাসে এসেছে এবং পুরো ঘটনা চেপে না যেয়ে পুলিশই জানিয়েছে।

ওর যা যা করার ছিল সব করেছে। আমি দোয়া করি আমাদের রাষ্ট্র যেন মেয়েটির সমান সাহসী হয়ে ওঠে। যতো দ্রুত সম্ভব লোকটি ধরা পরুক। সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। কিন্তু……. প্লিজ ক্রিমিনালের ক্রাইম করার সাইকোলজিটা পড়ুন। ভাবুন। ভেবে বের করুন….

আরো একবার মেয়েটার দেয়া স্টেটমেন্টের এই অংশটুকু পড়ুন, “সে আমাকে জিজ্ঞেস করছিল আমি কি করি, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি এটা বলিনি, আমার মনে হয়েছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি’ বললে সে আমাকে মেরে ফেলবে”!!!!!

—তামান্না সেতু

 

মনের আড্ডায় ‘শিশু’


স্বাস্থ্যকথা


বড়দের মতো মনের যন্ত তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শিশুদের। শিশুদের বেড়ে ওঠা সুস্থ স্বাভাবিক হবার জন্য মনের যত্নের কোন বিকল্প নেই।

তারই ধারাবাহিকতায় Mind-Blowing Psychological Team এর আয়োজনে এবং Save The Future Foundation, Mirpur Branch এর সহায়তায় “মনের আড্ডা উইথ কিডস” অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা কিভাবে নিজেদেরকে যৌন হয়রানি মত বিষয়গুলো থেকে রক্ষা করবে, কিভাবে নিজেদের শারিরিক যত্নের পাশাপাশি মনের যত্ন নিতে পারে, সেই সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, এবং আরো অনেক অনেক সাইকোলজিকাল গেমের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে খেলার চলে আনন্দ দেওয়ার মাধ্যমে শিশুদেরকে শেখানোর চেষ্টা করিছি কিভাবে সমাজের বোঝা নয়, কিভাবে নিজের মনকে ভালো রেখে সমাজের সম্পদে পরিণত হতে হয়, এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা কিভাবে সীমিত সুযোগ ভোগ করেও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।

এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে কাজ করে পুরো টিম।

Mind-Blowing Psychological Team এর পক্ষ থেকে বলা হয়, “সবাইকে ধন্যবাদ যারা এই প্রোগ্রাম আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। আশা করি আপনাদের সকলের ভালবাসায় আমরা আগামী দিনগুলোতে মানসিক স্বাস্থ সেবা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবো।”

Mind-Blowing একটি অলাভজনক মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান কারি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। আপনি চাইলে আমাদের সাথে এড হতে পারেন। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য।

 

একটি বিপ্লব হতে পারে

একটি বিপ্লব হতে পারে


আফরোজা হাসান


একটি বিপ্লব হতে পারে নিজেদের গড়ার জন্য
সুসংবদ্ধ আন্দোলন জীবনকে করতে পারে পূর্ণ

ব্যক্তি সমাজ পরিবার জাতি দল নির্বিশেষে
তুলে ধরবে হাল আরেকবার গভীর বিশ্বাসে

হবে সবাই কল্ল্যাণকামী পরস্পরের তরে
ঝড়ের মোকাবিলায় দেবে না হাত ছেড়ে

মনের আশা জাগানিয়া স্বত্বার আহ্বানে দিয়ে সাড়া
আরেকটিবার সংঘবদ্ধ হই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি যারা

হিংসা বিদ্বেষ রূপী ঘুণপোকার বন্ধ করে রসদ
পুষ্পিত ভালোবাসা রুপে বিলিয়ে দেই দরদ

সত্য ও সুন্দরের স্বপ্নে একে অপরের হাত ধরে
দুর্গম পথ পেরিয়ে চলো পৌঁছে যাই প্রশান্তির নীড়ে

যত মতপার্থক্য বিভেদ ভুলি আখিরাতের কল্যাণে
জ্বালাই মশাল প্রতিটি প্রাণে আলোক নগরী নির্মাণে……

আফরোজা হাসান

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা-১৩

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা-১৩


আফরোজা হাসান


মাতৃত্বের গুণাবলী মেয়েরা মনেহয় জন্মের সময়ই সাথে করে নিয়ে আসে। তাই তো ছোট্ট একটা বাচ্চা মেয়েকেও দেখা যায় পরম মমতায় আদর-যত্ন করছে তার খেলনা পুতুলটাকে। শাবাবের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ভাবনাটা মনে এলো আরিফীর। শাবাবের মত অস্থির সদাচঞ্চল একটা মেয়ে হঠাৎ কেমন বদলে গিয়েছে গত কয়েকদিনে। গত দুই সপ্তাহের প্রতিটা দিন মাহাম ও শাবাব চাইল্ড হোমে এসেছে। সারাদিন বাচ্চাদের সাথে সময় কাটিয়ে রাতে বাসায় গিয়েছে। স্বাভাবিক বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো আর এই স্পেশ্যাল বাচ্চাগুলোর সাথে সময় কাটানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য। কিন্তু নিজেদের আদর-ভালোবাসা-মমতার চাদরে জড়িয়ে মাহাম ও শাবাব ঠিকই বাচ্চাদের মনে স্থান করে নিয়েছে।

শাবাব তো আরিফীকে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে দেশে ফিরে পরীক্ষা শেষ হলেই আবার চলে আসবে এখানে। এই বাচ্চাগুলোর সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চায় সে। আরিফী শাবাবকে এত সিরিয়াস হতে কোনদিন দেখেনি। অবশ্য শাবাব সিরিয়াস হতে পারে এই ধারণাই ছিল না তার। একটা বাচ্চাকে হেঁটে হেঁটে ঘুম পারাচ্ছে শাবাব। চেহারা দেখে মনেহচ্ছে গভীর কোন চিন্তায় মগ্ন। এগিয়ে গেলো আরিফী। শাবাবের কাঁধে হাত রেখে বলল, ঘুমিয়ে গিয়েছে শুইয়ে দাও। বাচ্চাটাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে এলো দু’জন। এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন তোমাকে? জানতে চাইলো আরিফী।

শাবাব জবাব দিলো, নিজের সন্তান হলে মেয়েরা খুব স্বার্থপর টাইপ হয়ে যায় সেটা কি তুমি জানো?

হুম…শুনেছি। কিছু অবশ্য দেখেছিও।

আমিও এমনটা হতে দেখেছি। আমাদের এক ক্লাস ফ্রেন্ডের বোন বাচ্চা হবার সময় মারা গিয়েছিলো। এরপর বোনের স্বামীর সাথে ওর বিয়ে হয়েছে। অনেক আদর করতো বোনের বাচ্চাটিকে। কিন্তু নিজে কনসিভ করার পর বাচ্চাটিকে ওর নানীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। কারণ বাচ্চার খেয়াল রাখতে গেলে নিজের শরীরের যত্ন নিতে পারবে না ঠিকমত। যদি ঐ বাচ্চাটি ওর নিজের হতো তাহলে কি এই কাজ করতো? কখনোই না। আমি তাই ঠিক করেছি আমরা কখনই বাবু নেবো না।

হাসি চাপলো আরিফী। এর সাথে আমাদের বাবু নেবার কি সম্পর্ক? জানতে চাইলো।

শাবাব বলল, নিজের বাবু হলে আমিও যদি স্বার্থপর হয়ে যাই তাহলে? তখন যদি আর আমার এই বাবুগুলোর কাছে আসতে ইচ্ছে না করে?

তুমি এভাবে চিন্তা করছো কেন শাবাব?

কারণ এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। মাতৃত্ব মেয়েদের সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গা। মেয়েদের কাছে তাই নিজের সন্তান সবচেয়ে বেশি স্পেশ্যাল। নিজের সন্তানকে দুনিয়ার সব দুঃখ-কষ্ট থেকে আগলে রাখতে চায় সবসময়।

এই ব্যাপারে আমি তোমার সাথে একমত না হয়ে পারছি না। শুধু দুঃখ-কষ্ট কেন কিছু কিছু মা আছেন যারা তাদের কন্যাদের তাদের স্বামীদের কাছ থেকেও আগলে রাখেন।
শাবাব চোখ বড় বড় করে বলল, খবরদার আমার মামণিকে মিন করে কিছু বলবে না।

আরিফী হেসে বলল, না বলে কোন উপায় আছে? চাচী যেভাবে তোমাদের দুবোনকে পাহাড়া দেন, অবিবাহিত মেয়েদেরকেও এভাবে পাহাড়া দেয় কিনা কোন মা সন্দেহ। সুতরাং চাইলেও আমরা কখনো বাবু নিতে পারবো কিনা সেটা একমাত্র আল্লাহ জানেন। কেননা শ্বাশুড়ি আম্মা তো সীসা ঢালা প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের মাঝে। আমি লেখক হলে ‘শ্বাশুড়ি যখন ভিলেন’ শিরোনামে একটা গল্প লিখে ফেলতাম।

আরিফীকে মেরে শাবাব বলল, অনেক খারাপ কথা বলা শিখেছো তুমি। আমার মামণি যা করে ঠিকই করে। এমন খারাপ ছেলের কাছে আসতে দেবে কেন আমাকে? যাও বসবোই না তোমার কাছে। শাবাব উঠে হাঁটতে শুরু করলে। আরিফীও হাসতে হাসতে পিছু নিলো।

চলবে…
পর্ব-১২

 

বান্ধবীর কনভোকেশন আমার অনুভূতি


বান্ধবীর কনভোকেশন আমার অনুভূতি


মিথিলা ফেরদৌস


শিরিন আমার গেন্দা কালের বান্ধবী।ছোটবেলা থেকেই কি যে মিষ্টি ছিল!পড়াশুনায়ও খুব ভাল ছিল।আর সারাক্ষন হাসতেই থাকতো,পুরা ক্লাস জুড়ে ওর বান্ধবী।কিন্তু কবে যে ও প্রেমে পড়লো,কবে যে বিয়ে হয়েছিল!কিছুই জানতে পারিনি।এস এস সি এর পর ওর সাথে আর যোগাযোগ হয় নাই।

ফেসবুকের কল্যানে ওর সাথে যোগাযোগ হয় আবার।মজার ব্যাপার তখন জানতে পারি শিরিনের মেয়ে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে পড়ছে।যেখানে আমার ছেলে এখনও প্রাইমারির গন্ডি পেড়োয় নাই।

হাসিখুশি শিরিন আগের মতই হাসে।আগের মতই সুন্দরী বরং আগের চেয়েও বেশি সুন্দর। তিন ছেলে মেয়ের কচি মুখের মা।

কিছুদিন আগে শিরিনের মেয়ে ডাক্তার হয়েছে,ইন্টার্নী করছে,মেয়ের বিয়ের দাওয়াতও পেলাম।

কয়দিন আগে শিরিনের ফেসবুকে একটা ছবি দেখে মন ভরে উঠে।ওর মেয়ের কনভোকেশন,মেয়ে ছুটি নিয়ে মায়ের জন্যে কনভোকেশনের গাউন নিয়ে গেছে।কারণ তার মায়ের একটা ইচ্ছে ছিল,কনভোকেশনের গাউন পরে ছবি উঠানো।

আগেই বলেছি,শিরিন ভাল ছাত্রী ছিল,অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিসিএস ভাইভা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে এসেছে।এরপর বাচ্চাদের নিয়ে, সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছিল।ওর বাকি দুইজন ছেলে মেয়েও খুব ভাল স্টুডেন্টস।মানে একজন সার্থক মা শিরিন।

শিরিনকে নিয়ে এই লেখার একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে।আমদের জীবনের একটা সময় আসে,যখন আমরা বুঝি বাচ্চাদের গড়ে তোলাই সবচেয়ে বেশি জরুরী।অনেক উচ্চশিক্ষিত মা’ই তাদের ক্যারিয়ার স্যাক্রিফাইস করেন বাচ্চাদের জন্যে।শিরিনের মত এমন অসংখ্য মায়েদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।

আমার বন্ধু লিস্টে এমন আরেকজন জুনিয়র বন্ধু আছে।নাফিসা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।সেও বাচ্চাদের নিয়ে,সংসারে সময় দিয়ে খুব সুখি।শিক্ষা মানেই সবসময় চাকরি করা না।

একজন সুশিক্ষিত মা’ই পারে একজন সন্তানদের জীবন সুন্দর ভাবে গড়ে দিতে।অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অবশ্যই দরকার।কিন্তু একটা নির্দিষ্ট পরিমানের বেশি অর্থের খুব একটা দরকার হয় না,যদি সন্তানদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়।তাদের জন্যে সঞ্চয়ের দরকার হয় না।যাদের সন্তান মানুষের মত মানুষ হয় না,তাদের জন্যেই প্রচুর অর্থের প্রয়োজন,সেইসব বাবা মায়েরাই চুরি করে।

যাইহোক এখানে প্রশ্ন আসবে,মেয়েদের কেন ক্যারিয়ার স্যাক্রিফাইস করতে হবে?!উত্তর যারা বোঝার তারা ঠিকই বুঝবে।তবে,এই যে আমি এত বড় বড় কথা বলছি,আমি নিজেও এমনটাই ভাবতাম,এত কষ্ট করে পড়েছি কি সংসার করার জন্যে?তবে ক্যারিয়ারিস্ট মেয়েদেরও অনেককেই দেখেছি,সুন্দর করে সংসার করতে,বাচ্চা মানুষ করতে দেখেছি।যাইহোক,যে মেয়েরা ক্যারিয়ার স্যাক্রিফাইস করে বা ক্যারিয়ারের সাথে থেকেও সুন্দর করে বাচ্চাকে গড়ে তুলছেন সবার জন্যে আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা সবসময়।

©মিথিলা ফেরদৌস

 

কুড়িগ্রামে চটের বস্তা গায়ে দিয়ে এক বৃদ্ধার শীত নিবারণের ছবি ভাইরাল,

কুড়িগ্রামে চটের বস্তা গায়ে দিয়ে এক বৃদ্ধার শীত নিবারণের ছবি ভাইরাল,


নারী সংবাদ


মো. আখতারুজ্জামান : আমরা শীতকে উপভোগ করার জন্য নানা পরিকল্পনা করে থাকি। আবার অনেকেই এই শীতেই নিদারুণ কষ্টও করে। সেই কষ্টের দৃশ্য মোবাইল ফোনে তুলে সোশাল মিডিয়া দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নে।
নাজমুল কুড়িগ্রাম নামের একজন তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন। পরে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যানকে ওই বৃদ্ধার বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেন।
নাজমুল তার স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘ছবিটা ১৯৭৪ সালের মহাদুর্ভিক্ষের সময়ের নয়; ২০১৯ সালের আজকের। যখন আমাদের মাথাপিছু আয় ১৯০৯ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কুড়িগ্রামের ১০০ জনে ৭১ জন মানুষ যে দরিদ্র তা বোঝাতে এই ছবিটাই যথেষ্ট বলে মনে করি। আমাদের রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের মহিধর এলাকায় শীতবস্ত্র দিতে গিয়ে চটের বস্তা গায়ে দিয়ে শীত নিবারনের এই চিত্রটা ধারণ করেছে এক ছোট ভাই। খোঁজ নিলে দেখা যাবে টাকার অভাবে হয়তো তার বয়ষ্ক ভাতা হয় নাই, স্বামী মারা গেলেও বিধবা ভাতা হয়তো এই “মা” পাননা কারণ ঘুষের ওই টাকা তার নাই। খড় বা সিন্ডার বেড়া দিয়ে বানানো ঘরটার গঠন দেখলেই বুঝা যায় কতোটা অসহ্য যন্ত্রণায় এতোদিন ছিলেন তিনি। সামান্য একটা কম্বলও জোগাড় হয়নি।
ধন্যবাদ কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়ন মানব কল্যাণ সংগঠনকে এ বৃদ্ধ মায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমরা গরিবরাই নিজেদের কষ্টের টাকায় এসব অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে থাকবো, ইনশাআল্লাহ।’ পোস্ট দেয়ার কয়েক ঘন্টা পরে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার যোবায়ের হোসেন ছিনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অসহায় সেই বিধবার বয়ষ্ক ভাতা আছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেন। না থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়াসহ পরিবারের সার্বিক ব্যাপারে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

সুত্রঃ আমাদের সময়।

 

মুখে ভর দিয়ে লিখেই পিইসিতে জিপিএ ৫ পেল লিতুন জিরা

মুখে ভর দিয়ে লিখেই পিইসিতে জিপিএ ৫ পেল লিতুন জিরা


নারী সংবাদ


দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

লিতুন জিরা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শেকপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

লিতুন জিরা পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চায় না। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে আরও ১০ জন মানুষের মতো আত্মনির্ভরশীল হতে চায় জন্ম থেকে দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেয়া লিতুন জিরা। মুখ দিয়ে লিখেই মেধার সাক্ষর রেখেছে এই শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানান, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইল চেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে প্রখর মেধাবী এ-প্লাস পেয়ে লিতুন জিরা মেধার সাক্ষর রাখল। বর্তমানে হুইল চেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

মেধাবী এ শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনি গত ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজও কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় খুব কষ্টে তাদের সংসার চলে।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা চিন্তা ছিল তাদের। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোছল সবকিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারো দৃষ্টি কাড়বে।

এ সময় কথা হয় লিতুনের সঙ্গে। তার একটাই ইচ্ছা, পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চাই।

তবে, কিছুদিন আগে মারা যাওয়া দাদুর জন্য খুব মন খারাপ লিতুন জিরা। দাদু বেঁচে থাকলে তিনি খুব খুশি হতেন বলে জানাল লিতুন জিরা।

লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, তার ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এককথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো লিতুন।

সুত্রঃ যুগান্তর।