banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

প্রোষিতভর্তৃকা-১

প্রোষিতভর্তৃকা-১


ফাতিমা মারিয়াম


ঘটনা-১
আমার আপন খালাতো বোনের কথা। প্রবাসী পাত্রের হাতে মেয়েকে তুলে দিয়ে পিতামাতা ভীষণ তৃপ্ত। বিয়ের কয়েকমাস পরে দুলাভাই তার কর্মস্থলে চলে গেলেন। এবার আপার কিছু সমস্যা শুরু হল। কিছুটা শারীরিক, কিছুটা মানসিক। চিকিৎসার জন্য ঢাকা আসলেন। ভাশুরের বাসায় উঠলেন। উনার বড় জা উনাকে ডাক্তার দেখালেন। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দিলেন। কোন রোগ ধরা পড়লোনা।
ডাক্তার বললেন, ‘উনার স্বামী যদি দেশে চলে আসেন তা হলে হয়তো উনি সুস্থ হয়ে যাবেন।’ কিন্তু এটা তো আর সম্ভব না। ফলে আপাও সুস্থ হলেননা। নিকটতম দূরতম সকল আত্মীয় স্বজন নিয়মিত তার খোঁজখবর নেয়া শুরু করলেন। সে দুঃশ্চিন্তা করে কি না এই বিষয়ে কেউ কোন প্রশ্ন করলে আপা সাফ জানিয়ে দিতেন – ‘আমি কোন দুঃশ্চিন্তা করিনা।’ এভাবে ২/৩ বছর কেটে গেল। দুলাভাই দেশে আসলেন। আপা পুরো সুস্থ। উনার কোন সমস্যা নেই।
এভাবে দুলাভাই দুই /তিন বছর পরপর দেশে আসতেন। বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। আপা তিন কন্যাসন্তানের জননী হয়েছেন। রোগটা রয়েই গেছে তবে তীব্রতা আগের চাইতে কম। আরও কয়েকবছর পর দুলাভাই স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসলেন। আপা সম্পূর্ণ সুস্থ।

ঘটনা-২
আমার গ্রামের এক বধুর কথা বলছি। উনি, উনার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি এই চারজন নিয়ে সংসার। উনার শ্বশুরের আরও ৩/৪টি ছেলে আছে। তারা প্রত্যেকে পৃথক সংসারে থাকে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। তারা সবাই তাদের শ্বশুরবাড়িতে আছে। জীবিকার প্রয়োজনে তার স্বামী একসময়ে প্রবাসী হতে বাধ্য হয়।
সন্তানাদি হয়নি, কমবয়সী মেয়ে। এই মেয়ের উপর যদি বাইরের শকুনের দৃষ্টি পড়ত সবাই আর দশটা ঘটনার মতই হয়ত মনে করত। কিন্তু এই বধূটি তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর (ঠিক কতদিন পরে তা আমি জানিনা) নিজ শ্বশুর দ্বারা ধর্ষিতা হয়েছে।
এই ঘটনাটি নিয়ে পুরো এলাকায় ঢিঢি পড়ে যায়। একপর্যায়ে ছেলের কানেও এই কথা যায় এবং ছেলে তার মাকে বলে বউকে যেন বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর সে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। সেই বউটি এখন কোথায় আছে, কেমন আছে, আদৌ বেঁচে আছে কিনা আমি জানিনা। গ্রামে খুব একটা যাওয়া হয়না। আমার বড়ফুফুর মুখে ঘটনাটা শুনেছিলাম।
চলবে…