banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

সালতামামি ২০১৯ (নারী সংবাদ)

সালতামামি ২০১৯ (নারী সংবাদ)


নারী সংবাদ


সালটি শেষ হবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ২০১৯ সাল। সারা বিশ্বের নারীদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি বছর। দেশের রাজনীতি, খেলাধুলা, শিক্ষা, মানবাধিকার, ক্ষমতায়ন, সমাজসেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে নারীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এখনও রাখছেন।এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রেখেছেন নারীরা। আবার- ভালো খবরের পাশাপাশি দুশ্চিন্তা জাগানিয়া খারাপ খবরেরও কমতি ছিলো না বছরজুড়ে। খুন-ধর্ষণসহ বহু অপ্রত্যাশিত, বহু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে গেল বছরটিতে। তাই প্রাপ্তির হিসাবের চেয়ে অপ্রাপ্তির হিসাবও কম নয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নারী উপাচার্য গত ৩ নভেম্বর যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

ভারতের পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিষয়ে মার্স্টার্সে সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী রাবিহা আব্দুরেহিমকে হিজাবের কারণে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। সমাবর্তনে যোগ দিতে হলে হিজাব খুলে আসতে হবে, এমন শর্ত দেওয়ায় তিনি স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করে শুধু সার্টিফিকেট নিয়েই বাসায় চলে যান।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নারীদের ফ্রি ন্যাপকিন পাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন নারীদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে। জহিরন বেওয়া যার বয়স ৯২ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু মনের উদ্যমতা, সাহসিকতা, কর্মের দক্ষতা-সখ্যতা সাথে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউপির সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে।

বোরকা পরেই সাংবাদিক হিসেবে বিখ্যাত হচ্ছেন পাকিস্তানী দুজন সাহসী নারী সাবিহা ও লতিফা। তাদের ভাষায়, ‘আমাদের বোরকা জার্নালিস্ট নামের যে প্রকল্পটি মুসলিম মেয়ের জন্য চালু করেছি, তা প্রসারিত করতে আরো বেশি মেয়েরা এগিয়ে আসার প্রয়োজন।’ ফাতিমা কানাডার সংসদের বিরুদ্ধে প্রায় একাই লড়ে বিজয়ী হওয়া ঈমানোদ্দীপ্ত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কিশোরীর নাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন একে একে হিজাব ও নিকাব নিষিদ্ধ হচ্ছিল, তারই ধারাবাহিকতায় কানাডাতেও কয়েকমাস আগে প্রকাশ্যে নিকাব নিষিদ্ধ করে একটা আইন পাস হয়। যার নাম বিল-৬২। এর বিপক্ষে আইনী লড়াই করে জয়ী হন ফাতিমা।

ব্রিটিশ নির্বাচনে চার বাঙালি নারীর জয়
ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে এবার জয় পেয়েছেন চার বাঙালি নারী। তারা হলেন- টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী, রূপা হক ও আফসানা বেগম।

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে দারুণ সফল বছর ছিল ২০১৮। তবে সেই সাফল্যের রেশ ধরে ২০১৯-এর ডিসেম্বরে নেপালে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসের আর্চারি ডিসিপ্লিনে এবারই প্রথম ১০ টি ইভেন্টের সবগুলোতেই স্বর্ণ জিতেছে বাংলাদেশ! মেয়েদের কম্পাউন্ড এককে স্বর্ণ পদক জিতেছে বাংলাদেশের সোমা বিশ্বাস। দলগততেও স্বর্ণ জিতেন তিনি। এছাড়া ব্যক্তিগত নারী রিকার্ভে স্বর্ণ জেতেন ইতি খাতুন। কারাতেতে স্বর্ণ আসে হোমায়রা আক্তার প্রিয়া এবং অন্তরার হাত ধরে । আর ফ্যান্সিংয়ে স্বর্ণ জিতেন ফাতেমা মুজিব।

 

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে গণধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ, আটক ২

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে গণধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ, আটক ২


নারী সংবাদ


ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে তাকে গণধর্ষণের সহযোগিতা করেছেন বলে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন স্ত্রী। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রোববার রাতে ওই গৃহবধূ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় স্বামীসহ দুই অভিযুক্তকে আটকের পর আজ সোমবার দুপুরে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে স্বামী রতন মিয়ার সাথে ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসের পেছনে বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ খুঁজতে যান ওই গৃহবধূ। কোনো বাসায় কাজ না পেয়ে স্বামীর সাথে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে জাটিয়া ইউনিয়নের শিমুলতলী গিয়ে বাড়ি না ফিরে শিবপুর গ্রামের দরগায় গৃহবধূকে নিয়ে গান শুনতে যান রতন। গান শুনে রাত ১১টার দিকে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা রওয়ানা হন। দ্রত বাড়িতে যাওয়া যাবে- এ কথা বলে রাস্তা দিয়ে না গিয়ে ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর পর জাটিয়া ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাবু মিয়ার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে যান রতন। সেখানে গিয়ে স্ত্রীকে মারধর করে অপেক্ষমাণ লম্পটদের হাতে তুলে দেন তিনি। সেখানে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষিত হন ওই গৃহবধূ।

রোববার ভোরে সেখান থেকে পালিয়ে এসে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ থানায় হাজির হন। পরে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান শুরু করে। আটক করা হয় প্রধান অভিযুক্ত স্বামী রতনসহ সরিষা ইউনিয়নের লংগাইল গ্রামের আবদুস সোবহানের ছেলে নজরুল ইসলামকেও।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন বলেন, স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দেন স্বামী। গণধর্ষণের ঘটনার এমন খবর পেয়ে তার স্বামীসহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত

 

মনের খোরাক

মনের খোরাক


কানিজ ফাতিমা


প্রকৃতিতে আমার কোনো ক্লান্তি নাই, ঘন্টা কেন, দিনের পর দিন একই দৃশ্যে তাকিয়ে থেকেও চোখ ফেরেনা আমার। কেউ হয়ত ভাববে, কি দেখে এত চেয়ে চেয়ে ? নিরত দু’চোখ মেলে পথের ধারের বনফুল দেখি,ছোট্ট ডোবায় হাসের নিস্তব্দ ভেসে যাওয়া দেখি, আকাশের মেঘ দেখি- সাদা মেঘ, ধুসর মেঘ, ঘন মেঘ, তুলির ছোপ মেঘ আর চপলা মেঘ – ক্লান্তিরা কখন ক্লান্ত হয়ে ফিরে যায় আমার অক্লান্ত চেয়ে থাকা দেখে। সাদা কয়েকটা মেঘের টুকরায় এত দেখার কি আছে ? আমার আছে। একটা কালো পাখির লেজ দোলানো, গাছের ডালে মৃদু-মন্দ বাতাসে পলকা বরফের ঝুর ঝুর ঝরে পরা, শীতের বাতাসে শুকনো পাতার ফুরুত ফুরুত ওড়া, পথিকের হেটে যাওয়া, হাত নাড়ানো, স্কুলের সামনের গাছটার সোজা উপরের দিকে উঠতে উঠতে হতাঠ বেঁকে যাওয়া, গাড়ীর দরজা খুলে একজন মহিলার বের হয়ে আসা – এসব সাধারণ দৃশ্যেও আমার বিস্তর আগ্রহ। সিনেমা দেখে, গল্প করে, আড্ডা দিয়ে আমার বিনোদনের দরকার হয় না, চারপাশই আমার বিনোদনের উত্স। প্রকৃতির পানে নীরব চাহনীতেই মিশে থাকে আমার মনের খোরাক।
স্টাফ রুমের পুরো দেয়াল জুড়ে কাচের জানালাটা আমার খুব প্রিয়। অতি ব্যস্ত সিডিউলেও সুযোগ করে জানলার ধরে বসে একটু জিরিয়ে নেই। কলিগরা সবাই যখন গল্পে বা পেশাগত আলাপচারিতায় ব্যস্ত, আমি তখন হারিয়ে যাই আমার গোপন দৃষ্টির ভুবনে, পেছনের কিছুই টানেনা আর – জেগে থাকে শুধু সামনের দিগন্তে দু’চোখের তাপসী ধ্যান। দু’টো বাচ্চা নিয়ে এক মা বেরিয়ে এলো গাড়ী থেকে, মাঝারী ঠান্ডা, তাই ওদের কারো পায়েই ভারী বুট নেই, হালকা জুতো। ওরা হেটে আসছে আমার দিকে। মানুষের হাটাও যে কত বিচিত্র! – উলম্ব হাটা, ঝুলন্ত হাটা , ক্লান্ত হাটা, আত্মবিশ্বাসী হাটা, বিষন্ন হাটা, কৃত্রিম হাটা- আরো কত কী ! মহিলাটি আত্মবিশ্বাসী হাটা হাটছে, বাচ্চা দু’টোকে একটু আগলে নিয়ে। তার মুখ আমি দেখতে পাচ্ছিনা , কিন্তু এত দূর থেকেও তার বাচ্চা আগলে দৃঢ় হাটার ভঙ্গীতে তাকে অপূর্ব লাগছে। ওই যে পেছনের পার্কিং লট থেকে বেরিয়ে এলেন আরেক মহিলা। বয়স পূর্বের মহিলার মতই হবে বোধ করি, কিন্তু হাটছেন কিশোরী ছন্দে, জ্যাকেটের জীপার এর মধ্যখান থেকে বেরিয়ে এসে একটা সরু সাদা রেখা দুভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়ে দু’ কানে মিশেছে – আশংকা করি সে গাড়ী চালানোর সময়ও এ দু’টোকে কান থেকে নামায়নি। অদ্ভুত ভাবে হাটছে মহিলা। বরফ কিছুটা গলে গেলেও এখানে সেখানে স্তুপ স্নো এখনো রয়ে গেছে, আর তার নীচে লুকিয়ে থাকা ছোপ ছোপ বরফ জমে আছে কোথাও কোথাও। এর মাঝ দিয়ে মহিলাটা একে বেকে হাটছে, নতুন হাটতে শেখা বাচ্চদের মত – পার্থক্য শধু এইযে তার পুরোটাই কৃত্তিম, বাচ্চদের অকৃত্তিম টলমলে হাটা নয়। দোতলার জানালায় বসে দেখলাম পার্কিং লটের মাঝা মাঝি থেকে স্কুলের গেটে ঢোকা পর্যন্ত এতগুলো পদক্ষেপের একটিতেও মহিলার দৃঢ়তা ছিলনা একফোটা। ভাবছিলাম এই বয়সের এক মহিলা কেন বরফের পিচ্ছিল পথে হাটার জন্য বেছে নিয়েছেন সরু হিলের বুট, কেন তিনি নিজেই নিজের চলাকে করেছেন বিপজ্জনক, কেন তিনি তার নিজের কোমরে, মেরুদন্ডে সৃষ্টি করছেন অতিরিক্ত ক্ষতিকর চাপ? এবং সর্বপরি যে “সৌন্দর্য” বা “স্মার্ট নেস” এর জন্য তিনি এই কষ্ট ও বিপদকে মেনে নিয়েছেন সেটার লেশ মাত্রও তো দেখতে পাচ্ছিনা আমি তার ভীরু, আত্ববিশ্বাসহীন, অনেকটা ভাড়ীয় হাটায়। তারপরও কেনো তিনি এটাকেই মনে করছেন “ফ্যাশন”?
ফেসবুকে ঢাকার উঠতি বয়সের কিছু তরুনীদের ছবি দেখি টাইট জিন্সের প্যান্টে। এসব প্যান্ট তৈরী করা হয় শীতের দেশের জন্য। বাংলাদেশের গরম আবহাওয়ায় যে তাদের অনেক কষ্টে এই “ফ্যাশন” কে ধারণ করতে হচ্ছে তা বুঝতে কারো কষ্ট হবার কথা নয়। কষ্ট হোক তবু “স্মার্ট” তো হতে হবে।
আচ্ছা, স্মার্টনেসের সংগাটা কি? বরফের ওপর বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর উচু হিল? গরমে মোটা টাইট প্যান্ট? নাকি আবহাওয়া অনুযায়ী সঠিক পোশাক নির্ধারণের মত মগজের ক্ষমতা? কে বেশী স্মার্ট, যে টিভির বিজ্ঞাপন দেখে বরফের মধ্যেও হিল পরে ভাড়ীয় হাটা হাটে নাকি যে আবহাওয়া সম্পর্কে অবগত থাকে এবং নিজের মাথার ব্যাবহার করে সঠিক জুতা নির্ধারণ করার ক্ষমতা রাখে? যে হকার্সে গিয়ে টাইট জিন্স কিনে টেনে-টুনে শরীরে ঢুকায়, নাকি যে জানে যে গরম আবহাওয়ায় ঢিলা- ঢালা পোষাক আর হালকা মেকআপ বেশী উপযোগী? কে বেশী স্মার্ট, যে নিজের মাথার ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নেয়, নাকি যে নিজের চোখের মাথা খেয়ে মিডিয়ায় দেখানো অখ্যাদ্য কুখাদ্যকে বিশেষ “সুখাদ্য” হিসাবে চোখ বুজে গেলে?
সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান প্রাণী হয়েও আমরা কিভাবে নিজের মস্তিস্কের হালটা নিশ্চিন্তে ছেড়ে দিতে পারি মিডিয়ার ওপরে? আমরা যখন নিজের ভাবনা নিজে নাভেবে মিডিয়াকে ভাবিয়ে নিতে দেই তখনই মিডিয়ার প্রচারে মিথ্যা আর অসুন্দর গুলো আমাদের মস্তিস্ককোষে বাসা বাধে সুন্দর আর সত্য রূপে। ক্রমে ক্রমে আমরা মানুষেরা হারিয়ে ফেলি আমাদের দৃষ্টিশক্তি, ক্ষয়ে যায় আমাদের চিন্তাশক্তি- চরম অসুন্দর দৃশ্যগুলো রুপান্তরিত হর সুন্দরতমে; দৃষ্টিকটু হয়ে ওঠে আকর্ষনীয়, মিথ্যা রুপান্তরিত হয় একমাত্র সত্যে, চক্রান্ত মূর্ত হয় চেতনায়। অবশেষে সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান মানুষ হয়ে যায় বুদ্ধিহীন মিডিয়াধীন এক পরজীবীতে, এভাবেই হারিয়ে যায় তার স্বাধীনতা আর শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয়।

 

ধর্মীয় বিতর্কে আটকে গেল ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক’ স্থাপন

ধর্মীয় বিতর্কে আটকে গেল ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক’ স্থাপন


স্বাস্থ্যকথা


এতিম-বিপন্ন শিশুদের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু মায়ের বুকের দুধ সংরক্ষণের ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক’ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও ধর্মীয় প্রশ্নে বিরোধিতার মুখে আটকে গেছে। এতে আইনগত ও ধর্মীয় সমস্যা আছে মর্মে ‘মিল্ক ব্যাংক’ স্থাপনের বিরোধিতা করে এবং এ ব্যাপারে যথাযথ শর্তারোপ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) জনস্বার্থে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

নোটিশে ধর্ম মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, শিশু-মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইসিএমএইচ), নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্র (স্ক্যানো), নবজাতক আইসিইউ (এনআইসিইউ) এবং ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়েছে।

আইনজীবীর পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ‘‘ইসলাম ধর্মমতে, কোনো শিশু কোনো মহিলার দুধ পান করলে ওই মহিলা ওই শিশুর দুধমাতা হয়ে যায় এবং উক্ত মহিলার সন্তানরা উক্ত শিশুর ভাইবোন হিসেবে গণ্য হয়। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে উক্ত ‘মিল্ক ব্যাংক’ স্থাপনের ফলে একই মায়ের দুধ পানের কারণে ভবিষ্যতে ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যা চরমভাবে সামাজিক অরাজকতা সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, ভাই ও বোনের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ এবং তা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইন ‘মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) প্রয়োগ আইন, ১৯৩৭’ এর সরাসরি লঙ্ঘন।”

এ ব্যাপারে হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এই কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার পর সবার সম্মতি পেলে সম্ভব হলে এটা চালাব।

প্রসঙ্গত, হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের উদ্যোগটি ঢাকা জেলার মাতুয়াইলের শিশু-মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (আইসিএমএইচ) নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্র (স্ক্যানো) এবং নবজাতক আইসিইউ (এনআইসিইউ)-এর নিজস্ব উদ্যোগ। বেসরকারি আর্থিক সহায়তায় ব্যাংকটি স্থাপন করা হয়েছে। এটি গত ১ ডিসেম্বর চালু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে।

আইসিএমএইচ ক্যাঙারু মাদার কেয়ারে মা ছাড়া খালা, নানি বা অন্যদের সঙ্গে যে নবজাতকদের রাখা হচ্ছে, তারাও এই দুধ খেতে পারবে। স্ক্যানো ও এনআইসিইউতে থাকা অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া ও অসুস্থ নবজাতকদের সংরক্ষণ করে রাখা দুধ খাওয়ানো হবে। ৩৭ সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়া ২ হাজার গ্রামের কম ওজনের নবজাতকদের মা বা অন্য অভিভাবকদের ত্বকের সংস্পর্শে রেখে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাকে ক্যাঙারু মাদার কেয়ার বলে।

এ ছাড়া দত্তক নেওয়া সন্তানের অভিভাবকেরা এখান থেকে দুধ নিয়ে খাওয়াতে পারবেন। বিভিন্ন সময় স্বজনেরা নবজাতককে ফেলে দেন, এই স্বজন-পরিত্যক্ত নবজাতকদের বাঁচাতেও মিল্ক ব্যাংক কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। মায়েদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ ও বিতরণে কোনো ধরনের আর্থিক সুবিধা নেওয়া হবে না।

আইসিএমএইচ স্বায়ত্তশাসিত একটি প্রতিষ্ঠান। এর যাত্রা শুরু ১৯৯৮ সালে। সরকার, বিভিন্ন দেশি–বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা বা ব্যক্তির অনুদান এবং ইনস্টিটিউটের নিজস্ব অর্থ মিলিয়ে এটি পরিচালিত হচ্ছে। ইনস্টিটিউটটির দেওয়া তথ্য বলছে, গত বছর স্ক্যানো এবং এনআইসিইউতে ১ হাজার ৮৬৫ জন নবজাতক ভর্তি হয়। এর মধ্যে ৪৮৮ জনই ছিল গুরুতর অসুস্থ।

গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত মোট ২৫ জন মাতৃহীন নবজাতক ভর্তি ছিল। ৩৭ জনই ছিল দত্তক নেওয়া। এদের অধিকাংশই মারা যায়। বুকের দুধ খাওয়ানো সম্ভব হলে এদের অনেককেই বাঁচানো সম্ভব হতো।

সম্প্রতি আইসিএমএইচে গিয়ে দেখা যায়, ইনস্টিটিউটের দোতলায় হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের জন্য পাস্তুরাইজিং মেশিন, অত্যাধুনিক ফ্রিজসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। ব্যাংকের জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলছে। হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকে সংরক্ষিত মায়ের বুকের দুধ তিন মাস থেকে সর্বোচ্চ ১৮ মাস পর্যন্ত সম্পূর্ণ গুণগত মান বজায় রেখে ভালো থাকবে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে দুধের বিভিন্ন অংশ যেমন শর্করা, প্রোটিন ও চর্বি উপাদান আলাদা আলাদা করে প্রয়োজনমতো নবজাতককে খাওয়ানো সম্ভব হবে। আর ব্যাংক থেকে নেওয়া দুধ বাড়িতে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকবে।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা বলছেন, মিল্ক ব্যাংক স্থাপনের ফলে বাজারজাত করা মায়ের দুধের বিকল্প শিশুখাদ্যের ব্যবহার কমবে। নবজাতকদের বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। নবজাতকের মৃত্যুঝুঁকি ও অপুষ্টির হার কমানো সম্ভব হবে।

আইসিএমএইচের সহযোগী অধ্যাপক মজিবুর রহমান হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ব্যাংক চালু করার আগে তিনি নিজে স্পেন ও ভারতের দুটি হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক পরিদর্শন করে এসেছেন। তিনি বললেন, যে মায়েদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করা হবে, সেই মায়েদের মারাত্মক রোগ (হেপাটাইটিস বি এবং এইচআইভি) আছে কি না তা পরীক্ষা করে করে দুধ সংগ্রহ করা হবে, যাতে নবজাতক রোগের ঝুঁকিতে না পড়ে।

ইনস্টিটিউটের এনআইসিইউ এবং স্ক্যানোর ইনচার্জ এবং মিল্ক ব্যাংকের সমন্বয়ক মজিবুর রহমান জানান, সবচেয়ে বেশি (২১৬ টি) হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক রয়েছে ব্রাজিলে, যার মাধ্যমে ২৮ শতাংশ নবজাতকের মৃত্যু রোধ এবং ৭৩ শতাংশ শিশুর অপুষ্টি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি ভারতেও ব্যাংক স্থাপনের পর নবজাতকের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

আইসিএমএইচের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক এম এ মান্নান বললেন, বাংলাদেশে যেহেতু প্রথমবারের মতো এ ধরনের একটি ব্যাংকের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে, তাই বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। মায়ের বুকের দুধ সংগ্রহ এবং অন্য নবজাতকদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে যাতে ইসলামি শরিয়াহর কোনো লঙ্ঘন না হয়, সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। মুসলিম দেশের মধ্যে কুয়েতে প্রথম হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া ইরান, ইরাক, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানসহ অনেক মুসলিম দেশ হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। ওই দেশগুলো কীভাবে ব্যাংক পরিচালনা করছে, তার বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।

ব্যক্তি উদ্যোগ এবং বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর সহায়তায় মিল্ক ব্যাংকটি স্থাপনে এখন পর্যন্ত এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবে অধ্যাপক মান্নান বললেন, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য এ ধরনের ব্যাংক পরিচালনা ব্যয়বহুল হলেও সরকারের জন্য এ খরচ তেমন বেশি নয়। আর নবজাতকদের বাঁচাতে এ ব্যাংক যে ভূমিকা রাখবে, সে তুলনায় এ খরচ কিছুই না।

সুত্রঃ মেডিভয়েস রিপোর্ট

 

স্বাস্থ্যসেবার নৈতিকতা

স্বাস্থ্যসেবার নৈতিকতা


ফারাহ দিবা


স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত যে কোন কর্মীদের জন্য নৈতিকতার বিষয়গুলো অনেক ছোটখাট কাজের ভেতর দিয়ে অনেকে আমরা না জেনে বা না বুঝে ভংগ করে ফেলি। এটা অনেকটা স্বামী-স্ত্রী-র সর্ম্পকের মত নিয়ে থাকি। যেমন, আমরা বিয়ে করি, জানি যে বেশ কিছু র্শত মেনে চলার প্রতিজ্ঞা করে ঐ সর্ম্পকটি আমরা স্থাপন করতে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা ভাল করে সেগুলো জানার চেষ্টা করি না। সই করি র্শতগুলোতে কি আছে না জেনে। তবে অবশ্য্ই কেউ কেউ আছেন যারা পড়েন এবং সেগুলো মেনে চলেন। আমি শ্রদ্ধার সাথে তাদের কথা মনে করি। কিন্তু আমরা বেশীরভাগ্ই পড়ি না বা বিয়ের মুহূর্তের আনন্দানুভূতিতে, সময়ের অভাবে, “পরে সময় করে পড়বো”, “আরে এগুলোতো গতবাঁধা কথা, এ আবার পড়ার কি আছে?” ইত্যাদি ভাবনায় পড়া হয় না। কিন্তু তারপর আর ফিরে দেখা হয় না বা পড়াও হয় না, কি শর্ত আমি মেনে নিয়েছিলাম বা কি পালন করবো বলে আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। মনেও থাকে না যে এই ভুলে যাওয়া আর না মেনে চলা “প্রতিজ্ঞাভঙ্গের” সামিল। ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত যে কোন কর্মীর সাথে সেবাগ্রহীতার “সর্ম্পকের” মধ্যকার র্শতগুলো না মেনে চলা হচ্ছে “স্বাস্থ্যপেশাজীবির নৈতিকতার প্রতিজ্ঞাভঙ্গের” সামিল। যেমন, অনেক সময় আমরা খুব সহজভাবে ধরে নিই যে কোন রোগীর সাথে কাজে যে সফলতা হয়েছে তা রোগীর নাম, ধাম অপ্রকাশিত রেখে প্রকাশ করলে কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু অসুবিধা আছে, যদি না আমরা কিছু নৈতিকতার কিছু বিষয় পালন বা মেনে না নিয়ে এহেন কাজগুলো করি। নৈতিকতার র্শত হিসেবে রোগীর কাছ থেকে বেশ কিছু বিষয়ে অনুমতি নেবার কথা, যেমন, প্রথমত: যে তার নাম-পরিচয় গোপন করে তার সমস্যা ও সমাধানের বিষয়গুলো কি তা তুলে ধরতে পারি কিনা? দ্বিতীয়ত: আমি কোথায় তার কথা তুলে ধরতে চা্ই , আমার পেশার সহকর্মীদের কাছে, অন্যান্য সহসম্পর্কিত পেশার সহকর্মীদের সাথে, বৈজ্ঞানিক বা দৈনিক পত্র-পত্রিকায় বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে্ । তৃতীয়ত: আমার এ তথ্য সহভাগের উদ্দেশ্য কি? যেমন, এক্ই পেশার সহকর্মীদের সাথে সমস্যাটি বিশেষ ধরনের তাই তাদের সাথে নিজের অভিজ্ঞতা সহভাগ করলে অন্যান্য সম্ভাব্য সমধরনের সেবাগ্রহীতার উপকারে আসতে পারে; বা অন্যান্য সহসম্পর্কিত পেশার সহকর্মীদের সাথে সহভাগ করা কারণ, কিভাবে একটি বিশেষ সমস্যা বিবিধ ধরনের স্বাস্থ্যসেবার সমন্বয়ে সমাধান সম্ভব অথবা সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বা নিজের প্রচার বা প্রসারের মাধ্যমে আরও সেবাগ্রহীতার দৃষ্টি আর্কষণ। এগুলোর যে কোনটির প্রতি সেবাগ্রহীতার অনুমতি ব্যতিরেকে আমরা কোন সেবাগ্রহীতার নাম-ধাম প্রকাশ না করলেও আসলে কোন কথা প্রকাশ করতে পারি না। আর ছবি (স্থির চিত্র/চলচিত্র) ব্যবহার করে তো কোন ভাবেই নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, স্বাস্থ্যপেশাজীবির জীবনে নৈতিকতার বিষয়টি খুব নাজুক। তাই আমাদের উচিৎ নিজের পেশার নৈতিকতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেয়া এবং তা মেনে চলা। কার্যক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত ভেবে দেখা কোন “অসংগতিপূর্ণ অবস্থান” (conflict of interest) তৈরী হচ্ছে কিনা। হলে তা কি করলে প্রতিহত করা যাবে। অর্থাৎ পেশাদার হিসেবে করা প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতিগুলো মাঝে মাঝে পর্যালোচনা করে দেখা যাতে বুঝতে পারি পেশার সীমার ভিতর আছি কিনা এবং যা করার নয় তা করে ফেলছি কিনা। কারন স্বাস্থ্যসেবার প্রথম ও প্রধান শর্ত্ হলো সেবাগ্রহীতার প্রতি করা অঙ্গীকার মেনে চলা।

 

ভাপা পিঠা বানানো সহজ উপায়

ভাপা পিঠা বানানো সহজ উপায়


আরণ্যক শবনম


ডিসেম্ববের মাঝামাঝি শীত বাড়তে শুরু করেছে একটু একটু করে, সাথে সকালের মিষ্টি কুয়াশার রেশ। ঘুম ভাঙতেই যদি আপনার সামনে আম্মা ভাপা পিঠে নিয়ে হাজির হন, কেমন খুশি লাগবে বলুন তো?বাসার সবাইকে চমকে দিতে।

পিঠা তৈরি করতে যা লাগছে,

১/আতপ চালের গুড়া
২/পাঠালী গুড়
৩/নারকেল
৪/লবন

আর পিঠা তৈরিতে যে উপকরণ লাগছে,

১/মাঝারী সাইজের ভাতের হাড়ি কিংবা যেকোন পাতিল; সাথে ঐ মাপের ঢাকনা
২/কিছু নেটের ব্যাগ বা নেটের টুকরো।
৩/লবনের বাটি কিংবা স্টিলের গোল বাটি
এ পিঠার রেসিপি এজন্যই আরো সহজ যে আপনাকে আলাদা করে পিঠার সাজ, কিংবা আলাদা কিছু কিনতে হবে না।

চালের গুড়া: বাসায় আতপ চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়ে মেশিনে চাল গুড়া করিয়ে নিবেন, ভিজা চালের গুড়া সপ্তাহখানেক ভালো থাকে, রোদে শুকিয়ে রাখলে আরো কিছুদিন। পিঠার তৈরি জন্য একটা বড়ো বোল এ চালের গুঁড়া নিয়ে, সামান্য লবন নিতে হবে, এরপর অল্প অল্প করে পানি নিয়ে চালের গুড়াকে একটু ভিজিয়ে নিতে হবে, পানি খুবই সামান্য, তারপর, চালনি দিয়ে চেলে ঝরঝরে করে নিতে হবে। ভিজা চালের গুড়ায় খুব অল্প পানিই যথেষ্ট। ভাপা পিঠা যেহেতু ভাপে তৈরি হয়, সেহেতু চালের গুড়াকে হালকা ভিজিয়ে নিতে হয়।

নারিকেল ও গুড় : নারিকেল কুড়িয়ে নিতে হবে, হাত কোড়ানি ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে আসা নতুন গুড় বেশ নরম থাকে, সেগুলো পাতলা করে ঝুড়া করে নিতে হবে। ব্যস, পিঠার উপকরণ প্রায় প্রস্তুত।

এবার, আসল প্রস্তুতি যেটার জন্যই আসলে, অনেকে পিঠা বানাতে চান না, ঝামেলার মনে করেন, সেটা খুব সহজে
তৈরি করে নিতে পারেন। ভাতের হাড়ি কিংবা যেকোন ঢাকনাসহ হাড়ি (যেটাতে পর্যাপ্ত পানি নেওয়া যাবে বাষ্প পাওয়ার জন্য) হাড়ির মুখ নেটের টুকরো ডাবল ভাজ দিয়ে সুন্দর করে বেঁধে ফেলুন।
আমি হিটারে পানি গরম করে ঢেলে নিয়ে, চুলায় বসিয়ে নিয়েছি যাতে তাড়াতাড়ি ভাপটা পাওয়া যায়, গ্যাসও অপচয় কম হবে।

যথেষ্ট ভাপ উঠতে শুরু করলে, পিঠার পুড় ও চাল দিয়ে সাজিয়ে নিয়ে হবে। আমি টিফিন বক্সের ছোট বাটি ব্যবহার করেছি, প্রথমে কিছু চালের গুড়া নিয়ে নারকেল কিমা আর গুড় দিয়ে নিন, তারপর উপর অংশে আস্তে আস্তে চালের গুড়া দিয়ে ঢেকে দিন, গুড়া অল্প অল্প করে নিয়ে আলতো করে করতে হবে। একসাথে বেশী করে নিয়ে বেশী চেপে দিলে পিঠা তোলার সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। পিঠা সাজানো হয়ে গেলে বাকী নেট দিয়ে,আমি দু’টা ঝালি ভালো করে ধুয়ে নিয়েছি, সেটা দিয়ে পিঠা জড়িয়ে হাড়ির উপর আস্তে করে বসাতে হবে।এসময় চুলোর আঁচ কমিয়ে নিলে ভালো। এরপর বাতিতে আলতো টোকা দিলে বাতিটা তুলে নিয়ে অবশিষ্ট নেট ভালোভাবে জড়িয়ে ঢাকনা দিয়ে দিতে হবে। এরপর মিনিট খানেক পর অপেক্ষার পালা, পিঠার তুলবার সময় চুলোর আঁচ কমিয়ে নিয়ে হবে। পিঠার তোলার পর আস্তে আস্তে নেট ছাড়িয়ে নিন। এভাবে চালের গুড়া একটু ভিজিয়ে নিয়ে, প্রয়োজনমত পিঠা বানিয়ে নিন ঘরে বসেই।

 

হিজাব খুলতে বলায় স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান সেরা ছাত্রীর

হিজাব খুলতে বলায় স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান সেরা ছাত্রীর


নারী সংবাদ


ভারতের পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিষয়ে মার্স্টার্সে সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী রাবিহা আব্দুরেহিমকে হিজাবের কারণে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। সমাবর্তনে যোগ দিতে হলে হিজাব খুলে আসতে হবে, এমন শর্ত দেওয়ায় তিনি স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করে শুধু সার্টিফিকেট নিয়েই বাসায় চলে যান। খবর পার্সটুডের

গতকাল (সোমবার) এ ঘটনা ঘটেছে বলে আজ ভারতীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির জওহরলাল নেহরু অডিটরিয়ামে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ।

তার হাত থেকেই সাফল্যের পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন রাবিহা। কিন্তু সেই সময় অনুষ্ঠানে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি তাকে। কারণ সেই হিজাব।

রাবিহা গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি আসার কিছুক্ষণ আগেই তিনি অডিটরিয়ামে ঢুকতে যান। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা দেয়। বলা হয় হিজাব খুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে- তার প্রতিবাদেই আমি পদক নিতে অস্বীকার করি।

প্রেসিডেন্ট অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পর তাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয় বলে জানান এই সেরা ছাত্রী।

সুত্রঃ ডেইলি ক্যাম্পাস।

 

শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার সু-সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার সু-সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ


স্বাস্থ্য কথা


দশ বছর বয়সী রাইয়ান মাঠের এক কোনে বসে আছে। তার সমবয়সী বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকলেও খেলায় কোন মন নেই তার। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। কী যেন দেখছে। এরমধ্যে তার কয়েকজন বন্ধু তাকে খেলার জন্য ডাকতে আসলেও যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল রাইয়ানের বাবা আর মায়ের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া হয় তাদের মধ্যে। এমনকি মাঝে মাঝে মারধরও চলে। সবই হয় রাইয়ানের সামনে। এসব দেখে সে অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছে। সে এখন কারো সাথে কথা বলতে ভয় পায়। আর তাই এই অল্প বয়সেই এত উদাসীন থাকে রাইয়ান।
মাইশার বর্তমান অবস্থা ঠিক রাইয়ানের মত। পনের বছর বয়সী মাইশা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। কিন্তু কোনভাবেই সে পড়ায় মন বসাতে পারছে না। স্কুলের মডেল টেস্ট’র রেজাল্টও খুব ভালো করেনি। কিন্তু ক্লাস নাইন পর্যন্ত তার রোল নাম্বার এক থেকে তিনের মধ্যে ছিল সব সময়। সবার কাছেই খুব আদরের ছিল মাইশা। টেষ্টের রেজাল্টের পর স্কুলের ক্লাস টিচার তাকে একলা ডেকে নিয়ে তার কাছ থেকে জানতে চান- কেন এমন হচ্ছে? অনেকক্ষণ তার সাথে কথা বলার পর ক্লাস শিক্ষক জানতে পারেন, মাইশার বাবা-মায়ের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না গত কয়েক মাস ধরে। বাসায় প্রতিনিয়তই ঝগড়া লেগে থাকে। তাই সে মনযোগ দিতে পারছে না পড়াশোনায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত জরুরী। শিশুর বিকাশ নিয়ে অধিকাংশ বাবা-মা’ই এখন বেশ সচেতন। তাদের সার্বক্ষনিক চেষ্টা থাকে তাদের বাচ্চাদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মাদের নিজেদের মধ্যকার সমস্যা এত বেড়ে যায় যে, তারা আর বাচ্চাদের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন না। আর এই অমনোযোগীতার কারনেই অনেক বাচ্চা অবসাদে ভোগে, খারাপ পথে চলে যায়।
তাদের মতে বাচ্চাদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য্য। বাচ্চাদের বুঝাতে হবে যে, তারাই বাবা-মায়ের অমূল্য সম্পদ। অত্যন্ত যতœ দিয়ে তাদের বড় করে তুলতে হবে। জীবনের প্রতিটি নিয়ম-কানুন তাদের শেখাতে হবে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মুরাদ হোসেন মোল্লা বলেন, প্রায় সব বাচ্চাই দুষ্টুমি করে। কিন্তু অতিরিক্ত দুষ্টুমির জন্য বাচ্চাদের ভয় দেখালে বা তাদের মারধর করলে সমস্যার সমাধান হয় না। বরং এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। শিশুরা সব সময় একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকে। এবং এসব শিশুদের অত্মবিশ্বাষ কমে যায়। তাদেরকে বারবার করে বুঝাতে হবেÑ কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। শিশুর কথাও খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে।
তিনি বলেন, শিশুদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ বাড়িয়ে তুলতে হবে। তাদের সাথে সব সময় আলোচনা করতে হবে। তার চাহিদার কথা, তার ইচ্ছার কথা শুনতে হবে। পাশাপাশি শিশুর ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে। তাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
ডা. মুরাদ বলেন, অনেক বাবা-মা’ই সন্তানদের বাইরে খেলাধুলা করতে দিতে চান না। এটা সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অত্যন্ত বড় বাধা। শিশুরা খেলাধুলা করলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে। অন্য বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী হয়। এতে তার যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ে। শিশু মানসিকভাবেও সুস্থ থাকে।
এছাড়াও সন্তানদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও মনোযোগী হতে হবে। তাদেরকে এ বিষয়ে জ্ঞান দিতে হবে। নিজের বিছানা সব সময় পরিষ্কার রাখার শিক্ষা, বইপত্র গুছিয়ে রাখার শিক্ষা তাকে ছোটকাল থেকে দিতে হবে। এছাড়াও বাচ্চাদের সামনে বড়দের কথা বলার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সব ধরনের আলোচনা শিশুদের সামনে না করাই ভালো। কারণ এতে করে বাচ্চাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে শিশুদের সামনে বড়দের ঝগড়া-বিবাদ করা যাবে না। বিশেষ করে বাবা-মা’র মধ্যকার ঝগড়া বাচ্চাদের মনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরী করে। অনেক সময় বাচ্চারা অবসাদে ভুগতে থাকে।
সুত্রঃ বাসস।

 

এই মুহূর্তে কেউ নেই

এই মুহূর্তে কেউ নেই


ইশরাত জাহান রুবাইয়া


সাড়ে ৪ বছরের দীপ্তর শখ হয়েছে সুপারম্যান হবে। সুপারম্যান তার হিরো। কী সুন্দর করে সে উড়ে চলতে পারে, কার্টুনে দেখেছে দীপ্ত। সেও ওরকম করে উড়বে। ড্রয়ার থেকে মায়ের একটা বড় ওড়না বের করলো। ওড়নাটা দুইভাঁজ করে একপ্রান্ত পিঠের উপর দিয়ে গলার কাছে এনে বাঁধলো। পা টিপে টিপে মায়ের রুমে এসে দেখলো মা ঘুমাচ্ছে। এইতো সুযোগ একা একা ছাদে যাওয়ার। ছাদে গিয়েই সুপারম্যানের মত উড়াল দেবে সে।
শম্পার চোখদুটো তখন লেগে এসেছে কেবল। এমন সময় দরজা খোলার অাওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল। লাফ দিয়ে উঠে বসলো সে। বাসায়তো মা ছেলে ছাড়া এই মুহূর্তে কেউ নেই। দরজাটা খুললো কে তবে! দীপ্ত বাইরে যাচ্ছেনাতো একা একা! দৌড়ে এসে দেখে দীপ্ত সিড়ি দিয়ে উপরে উঠছে। সেও ছেলের পিছু নিল। শম্পা পৌঁছতে পৌঁছতে দীপ্ত ছাদের রেলিং এ উঠে দাঁড়িয়েছে। দুইহাত দুইপাশে ছড়িয়ে যেইনা একপা বাঁড়িয়েছে ওমনি দৌড়ে এসে ছেলেকে শক্ত করে ধরে ফেললো শম্পা। দীপ্তর সে কী কান্না! অনেক অনুরোধ করলো অন্তত একটা বার ওকে উড়তে দিতে। শম্পা কোনোভাবেই রাজী না। পাঁজাকোলা করে তাকে তুলে নিয়ে ঘরে ছুটলো সে। হাত পা ছুঁড়ে কান্না করতে করতে দীপ্ত বললো তুমি অামার পছন্দের কিচ্ছু করতে দাওনা! সুপারম্যান হতে দাওনা! তুমি অনেক অনেক পঁচা মা, তুমি ভালোনা!
.
.
দীপ্তকে ছাদ থেকে লাফ দিতে দেয়নি বলে শম্পা কি অাসলেই পঁচা মা হয়ে গেছে? একবাক্যে সবাই বলবে, কখনোই না! দীপ্ত জানেনা ১১তলা থেকে লাফ দিলে কী ঘটবে! কিন্তু শম্পা জানে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে তার কলিজার টুকরা বাচ্চাটা। দীপ্ত মনে করে সে লাফ দিলে সুপারম্যানের মত উড়ে যাবে। কিন্তু শম্পা জানে বাস্তবে কী ঘটবে। বাচ্চা যতই অনুনয় বিনয় করুক, যতই জেদ করুক, যতই তাকে পঁচা মা বলুক; সে দীপ্তকে এই শখ পূর্ণ করতে দেবেনা। কেন ই বা জেনে শুনে সন্তানকে অাগুনে ঝাঁপ দিতে দেবে সে?
.
অাসুন, এবার অন্য কিছু ভাবি।
অনেকসময় অামরা অাল্লাহর কাছে অনেক কিছু চাই। কোনটা তিনি দেন, কোনটা দেননা। হ্যাঁ কখনো এমন কিছু তিনি দেননা যেটা অামরা অনেক বেশি পছন্দ করি। তখন হতাশ হয়ে অামাদের অনেকই অাল্লাহর উপর অভিমান করে বসেন। এত চাইলাম, দিলেননা অাল্লাহ! কেন, কী হত দিলে? তাঁর ভান্ডারে তো কিছুর অভাব নেই! তাঁর পক্ষেতো অসম্ভব বলে কিছু নেই! তবুও কেন দিলেননা! কেন???
শত অভিযোগ অার অাক্ষেপে অভিমানে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নেই।
.
দৃষ্টি সীমাবদ্ধ অামাদের। ভবিষ্যত অামাদের অজানা। অামরা জানিনা জীবনপথে অামাদের সামনে কী অাছে। তিনি জানেন। সঅঅব জানেন। জেনেশুনে তিনি অামাদের সেসব অাব্দারগুলো পূর্ণ করেননা, যেগুলো পূর্ণ হলে অামরাই ক্ষতিগ্রস্ত হব। দীপ্তর মত অামাদের অভিমান হয়। অাক্ষেপ করি, অভিযোগ করি।
মা জন্ম দিয়েছেন বলে এত ভালোবাসেন, এত মমতাময়ী, সন্তানের কল্যাণলামী। অার যিনি সৃষ্টি করেছেন এত যত্নে তিনি কতটা কল্যাণকামী হতে পারেন? তিনি কতটা ভালোবাসেন বান্দাহকে? বান্দাহর ভালো-মন্দ, কল্যান-অকল্যান তাঁর মত ভালো অার কে বোঝে! কী করে তিনি সেই অাব্দারগুলো পূর্ণ করবেন যেগুলো বান্দাহর জন্য অকল্যানকর! যেগুলো পূর্ণ করলে বান্দা ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে! তাই তিনি সেই অাবদারগুলো পূর্ণ করেননা, কিন্তু খালি হাতেও ফিরিয়ে দেননা। কখনো সেসব বদলে দেন উত্তম কল্যানকর অন্যকিছুর দ্বারা। কখনো সেইসবের বদলে জমা করে রাখেন কিছু অভাবনীয় পুরষ্কার! এক অবশ্যম্ভাবী দিনে বান্দাহ তা প্রত্যক্ষ করে অাপ্লুত হবে। সিজদায় পড়ে যাবে। নতমস্তকে অান্তরিক স্বীকারোক্তি দেবে, অামার রব! নিঃসন্দেহে অাপনি মহীয়ান!
.
“তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দ সই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে তা অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। [সুরা বাকারা: ২১৬

 

শীতকাব্য

শীতকাব্য


ফাতিমা মারিয়াম


আসছে বুঝি শীতের কাঁপন?
হিম হিম হিম হাওয়া!
জমবে বুঝি এখন আবার
পিঠা পুলি খাওয়া?
.
টইটুম্বুর ভরবে আবার
খেজুর রসে হাড়ি,
ফিরনি হবে, পিঠা হবে
সবার বাড়ি বাড়ি।
.
ধোঁয়া ওঠা গরম গরম
নানান স্বাদের পিঠা,
হাপুস হুপুস খাবে সবাই
আহা! দারুণ মিঠা!
.
গরম জামা গায়ে দিয়ে
শীত কাঁপুনি যায়!
লেপের নিচে ভীষণ আরাম
সব শীত পালায়।
.
তোমার কাছে আছে দেখ
আরাম থরে থরে,
আছে কি তা ন্যুনতম
দুখী জনের ঘরে?
.
দাওনা তাদের একটুখানি
ফোটাও হাসি মুখে,
দুই জাহানে প্রভুর দয়ায়
থাকবে তুমি সুখে।

 

৩৯ স্ত্রী, ৯৪ সন্তান ও ৩৩ নাতি-নাতনী নিয়ে একত্রে থাকেন তিনি

৩৯ স্ত্রী, ৯৪ সন্তান ও ৩৩ নাতি-নাতনী নিয়ে একত্রে থাকেন তিনি


অন্যান্য সংবাদ


ভারতের মিজোরামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জিওনা। ১৯৪৫ সালে যখন তার মাত্র ১৭ বছর বয়স, তখন প্রথমবার বিয়ে হয় তার। তবে একটা বিয়ে করেই তিনি সন্তুষ্ট থাকতে পারেননি। এরপর বহুবার বিয়ে হয়েছে তার। এইভাবে মোট ৩৯ জন নারীকে বিয়ে করেন তিনি।

বিশ্বে এত জন স্ত্রী কারোর নেই। এক বছরে তিনি ১০টি বিয়ে করে রেকর্ড গড়েছেন। প্রত্যেক স্ত্রী এখনো তার সঙ্গেই থাকেন।

গত ১৩ মার্চ লন্ডন ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তাতে জানা যায়, পৃথিবীর সবথেকে বড় পরিবারের প্রধান হলেন জিওনা চানা । তার ৩৯ জন স্ত্রী, ৯৪ জন সন্তান, ১৪ জন পুত্রবধূ এবং ৩৩ জন নাতি-নাতনি রয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, জিওনার বাড়িটি তার সংসারের মতোই বিশাল বড়। তার বাড়িতে ১০০টি ঘর আছে সেখানে তিনি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকেন। তার ঘরের পাশাপাশি তার স্ত্রীদের ঘর। বিয়ের দিন অনুযায়ী তারা দূরে বা কাছে থাকে। অর্থাৎ যাকে শেষে বিয়ে করেছেন তিনি থাকেন সবথেকে কাছে আবার যাকে প্রথমে বিয়ে করেছেন, তিনি থাকেন সব থেকে দূরে । তবে সবার জিওনার ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি আছে।

জিওনার বাড়িতে তার সব ছেলেরাই নিজেদের স্ত্রী নিয়ে থাকেন। তার পরিবারে সবার আলাদা ঘর থাকলেও রান্নাঘর কিন্তু একটাই। অর্থাৎ ওই পরিবারের রান্না একসঙ্গেই হয়। খাবার জন্য তাদের প্রতিদিন ১০০ কেজি চাল আর ৭০ কেজির বেশি আলু রান্না হয়। আর মাংস রান্না হলে তো কথাই নেই। মোটামুটি ৬০ কেজি আলু এবং ৪০টি মুরগি লাগে গোটা পরিবারের। জিওনার ছেলেরা সবাই চাষের কাজ আর পশু পালন করে থাকেন ৷

পৃথিবীর সব থেকে বড় পরিবারের প্রধান হয়েও জিওনা এখানে থামতে চান না। বিশ্বের সবথেকে বড় পরিবারের কর্তা হয়ে তিনি গর্বিত। তিনি আরও বাড়াতে চান তার পরিবার। এদিকে পরিবারের ছোট ছোট সদস্যদের জন্যও তিনি স্কুল বানিয়েছেন সেখানে তার ছেলেমেয়ে এবং নাতি-নাতনিরা পড়াশোনা করেছে এবং করছে স্কুলটি সরকারের কিছু অনুদান পায়। আগেকার দিনের রাজা বাদশাদের মত জিওনাও তার এতগুলি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে সুখে-শান্তিতে একসঙ্গে বাস করছেন।

সুত্রঃ নিউজ১৮

 

দেশে গর্ভবতী মায়েদের এক-চতুর্থাংশ ডায়াবেটিক রোগী

দেশে গর্ভবতী মায়েদের এক-চতুর্থাংশ ডায়াবেটিক রোগী


স্বাস্থ্যকথা


পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী সুমাইয়া দ্বিতীয়বারের মত সন্তান-সম্ভবা। সন্তান ধারণের সাতাশ সপ্তাহের সময় জানা গেল তার ডায়াবেটিক। এ কথা শুনেই স্বামী আনসার আর সুমাইয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। সেই থেকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী একেবারে নিয়ম মাফিক চলার পর নির্দিষ্ট সময়ে এক কন্যা সন্তান হয় তার। প্রসবের সময়ও বেশকিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় সুমাইয়ার। ডায়াবেটিক বেড়ে যায়। তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে ডাক্তারদের জোর চেষ্টায় মা-মেয়ে দু’জনই সুস্থভাবে বাড়ি যায়।
কিন্তু সুমাইয়ার মত অন্য সবার শারীরিক অবস্থা একই না। এই যেমন রাবেয়া বেগম। তেত্রিশ বছর বয়সী রাবেয়া প্রথমবারের মত মা হতে চলেছেন। কনসিভের ছয় সপ্তাহের মধ্যে জানা যায় যে রাবেয়ার ডায়াবেটিক। তারপরও দুই সপ্তাহ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই শারীরিক অবস্থার অবনতির কারনে দ্রুত তাকে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরপরই এবরশন করাতে হয়।
সূত্র মতে দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা প্রায় এক কোটি। অধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আরও এক কোটি। গর্ভবতী মায়েদের প্রতি চার জনের একজনই ডায়াবেটিক রোগী।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হসপাতালের এন্ড্রোক্রিনিউলোজী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. ইমতিয়াজ মাহবুব বলেন, বিশৃঙ্খল এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন ডায়াবেটিস রোগের প্রধান কারন। এ বিষয়ে সরকারী এবং বেসরকারীভাবে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরী করতে হতে হবে যাতে করে এই নিরব ঘাতক মরণ ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষকেই বিশেষ করে শিশুকাল থেকে স্বাস্থ্যসম্মত এবং পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। আর এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বাবা-মা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে যাতে নতুন প্রজন্ম এ বিষয়ে জানতে পারে। দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই এ রোগ সম্পর্কে সচেতন নয়। তাই জন সচেতনতা তৈরী করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সোহেলুর রহমান বলেন, ডায়াবেটিসের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করতে ও রোগীদের দীর্ঘস্থায়ী ঝুঁকি কমাতে ডায়াবেটিস শিক্ষার কার্যক্রমের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এই শিক্ষা কার্যক্রম চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করবে। ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী ও সর্বঘাতী রোগকে মোকাবেলা করতে রোগীদেরকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা অবশ্যই দিতে হবে। যাদের এখনও ডায়াবেটিস হয়নি তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান, সঠিক, আর্দশিক জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকেই রক্ষা করা সম্ভব। এটাই হতে পারে রোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম পদ্বতি।
এত বিশাল সংখ্যক রোগীর যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য জনগণকে আরো সচেতন হতে হবে।
গত ১২ অক্টোবর ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ‘ডায়াবেটিক প্যাশেন্ট এডুকেশন’ শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগের ১ নম্বর ভবনের ৫ম তলায় ৫০৯নং কক্ষে এ ডায়াবেটিক রোগী ও রোগীদের পরিবারের সদস্যদের জন্য এ শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি শনিবার ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এই শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। আগামীতে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে ১ পর্যন্ত এই সেবা দেয়া হবে। ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের (এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ) উদ্যোগে কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সুত্রঃ বাসস।

 

‘শতরঞ্জিতে রঙিন কুড়িগ্রামের নারীরা’

‘শতরঞ্জিতে রঙিন কুড়িগ্রামের নারীরা’


ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা


কেউ ব্যস্ত শতরঞ্জি তৈরিতে, কেউবা আবার হাত পাখা। অনেকেই সেলাই করছেন কুশন। এমন দৃশ্য উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। যেখানে গৃহকর্ম শেষে অবসর সময় এসব হাতের কাজ করে পরিবারের খরচে অবদান রাখছেন নারীরা। আবার অনেকেই হয়েছেন স্বাবলম্বী। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ কাজেও সিদ্ধান্ত গ্রহণে মতামত দিচ্ছেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামের যেসব নারী হস্তশিল্পের এসব কাজ করছেন তাদের বেশির ভাগই বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা তালাকপ্রাপ্তা। হতদরিদ্র কর্মহীন নারীদের দিয়ে পাটের আঁশ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন এসব ব্যবহার্য পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। যা দেশের বিভিন্ন বড় শহরে পাঠানোর পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে।
এতে দেশের যেমন রাজস্ব আয় বাড়ছে তেমনই স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেছেন এসব কর্মহীন নারীরাও। এসব কাজে গ্রামীণ নারীদের সহযোগিতা দিচ্ছে ‘নারী’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা বারান্দায় সৃজনশীল হাতের ছোঁয়ায় পাটের আঁশ থেকে দৃষ্টিনন্দন শতরঞ্জি, কিচেন ম্যাট, ঝুড়ি, ব্যাগ, হাতপাখা, পাপোস, কুশন, টেবিল ম্যাট, কার্পেট, সিকা, শো-পিস, গহনাসহ ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করতে।

সোনালী আঁশ পাট আগের মতো উৎপাদন হয় না। এরপরও পাট দিয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে তৈরি হচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা পণ্য। উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৭শ’ নারীর কারুকাজ খচিত পণ্য তৈরি করছেন। তাদের তৈরি এসব পণ্য রফতানি হচ্ছে বিদেশেও।

জানা যায়, এসব কর্মহীন নারীদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে ২০১৪ সালে গড়ে তোলা হয় নারী অ্যাসোসিয়েট ফর রিভাইভার ইনিসিয়েটিভ নামে একটি সংগঠন। যা সংক্ষেপে ‘নারী’ নামেই পরিচিত।

উলিপুর-চিলমারী সড়কের রামদাস ধণিরাম পাড়ায় নারীদের নিয়ে কাজ শুরু প্রথমে ‘নারী-ই’। পরবর্তীতে নিজ উদ্যোগেও অনেকেই তৈরি করছেন সৌখিন এসব পণ্য।

নারী’র সংগঠক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নারীরা দৃষ্টিনন্দন পাটজাত পণ্য উৎপাদন করছেন। যা রুচিশীল মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে অল্পদিনেই। আমাদের এ উদ্যোগ পরিবারে স্বচ্ছলতার আনার পাশাপাশি হতদরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করেছে।
এ উদ্যোগের শুরুর কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, শুরুতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৩শ’ তাঁত কেনা হয়। ছোট কারখানাতেই কাজ শুরু হয়। আর এ উদ্যোগে আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় নারীদের মধ্যেও। প্রথমে স্বামী পরিত্যক্তা, তালাকপ্রাপ্তারা কাজ করলেও পরবর্তীতে গৃহবধূরাও যোগ দেন।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, প্রথমে আশপাশের বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, স্বামী পরিত্যক্তা ও হতদরিদ্র নারীদের সংগঠিত করে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করি। উদ্দেশ্য তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরানো।
‘এক পর্যায়ে নারীদের তৈরি পণ্য ডিসপ্লের জন্য একটি শো-রুম খোলা হয়। একই সঙ্গে প্রচারের জন্য জেলাশহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে মেলায়ও অংশ নিই। যা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে’ বলছিলেন এই সংগঠক।
তবে এ উদ্যোগের পেছনে কিছু কষ্টের কথাও জানালেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা নিজ উদ্যোগে চেষ্টা করছি। পুঁজির জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে গেলেও নারী হওয়ার কারণে ঋণ দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ঋণ না পেয়ে অবশেষে শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

পাটজাত পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন শেফালী আক্তার (২০)। তার স্বামী এক সন্তান রেখে চলে যায় সেই ছেলে হওয়ার পরপরই। এখন ছেলের বয়স ৬ বছর।
‘নারী’র কারখানায় পাটজাত পণ্য তৈরি করেন তিনি। প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। এ দিয়েই চলে সংসার। ছেলেকেও স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন।
তার ভাষ্য, গরিব মা-বাবার ঘরে জন্ম নেওয়ার পর অভাব অনটনে বড় হয়েছি। এর মাঝে ১৪ বছরেই বিয়ে হয়ে যায়। এর মাঝে কোলে আসে ছেলে। কিন্তু স্বামী আমাদের রেখে পালিয়ে যায়। এখনও তার খবর নেই।

‘গতবছর খোঁজ পাই ‘নারী’র। এখানে এেেস কাজ নিই। এখন নিজে চলি। কিছু টাকাও জমাই।এখন কেউ অবহেলা করে না,’ বলেন শেফালী।
তাদের মধ্যে সেলিনা বলেন, আগে খুব কষ্টে দিন কাটালেও কাজ পেয়ে সংসারে শান্তি এসেছে। স্বামী রিকশা চালায়। দুজনের আয়ের টাকায় ছেলে-মেয়েকে পড়াতে পারছি। নিজস্ব থাকার ঘর তৈরি করতে পারছি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলার সভাপতি রওশন আরা চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন হয়েছে। সরকার তৃণমূল পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি করছে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করছে। এরই সুফল ভোগ করছেন উলিপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের নারীরা।

‘নারী’র এ উদ্যোগে বেশ উৎফুল্ল কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে। নারীরাও বিভিন্ন কর্মকা-ে সম্পৃক্ত হয়ে পরিবারে সহযোগিতা করছে। ‘নারী’ যে উদ্যোগ নিয়েছে এতে আমাদেও সহযোগিতা থাকবে সব সময়।

সুত্রঃ বাসস।

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা – ১২

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা – ১২


আফরোজা হাসান


গাড়ি থেকেই শাবাব ও আরিফীকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো মাহাম। দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছে শাবাব ননস্টপ বকবক করছে আর আরিফী মুগ্ধ মনে শুনছে। হাসি পেলো মাহামের শাবাবের দিকে তাকিয়ে। শুধু মুখ না সারা শরীর কথা বলে এই মেয়ের। কিন্তু বোনের এই সদা চঞ্চল ভাবভঙ্গী খুব উপভোগ করে মাহাম। ঐ যে ছুট লাগিয়েছে শাবাব এদিকে। মনেহয় দেখতে পেয়েছে তাদেরকে।

গাড়ি নামতে না নামতেই খপ করে মাহামের হাত চেপে ধরে শাবাব বলল, এতক্ষণে আসার সময় হল আপনাদের? আধঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। তোর পছন্দের বোরিং স্ট্রোবরী ফ্লেবারের আইসক্রিম নিয়ে এসেছিলাম। গলে যাচ্ছিলো তাই আরিফী খেয়ে ফেলেছে। আমি তোর জন্য কিনেছি আর সে খেয়ে নিলো পেটুকের মতো। এখন গলা চাপা দিয়ে বের করতে ইচ্ছে করছে আইসক্রিম পেট থেকে।
হেসে ফেললো মাহাম। বলল, উফ…কি যে সব বলো না তুমি! আসলে আয়ানকে একটু বাইরে যেতে হয়েছিল তাই দেরি হয়ে গিয়েছে আমাদের আসতে।

শাবাব বলল, কিন্তু এখানে এসেছি কেন আমরা?

তা তো জানি না। আয়ান শুধু বলেছে সারপ্রাইজ আছে আমার জন্য।

ইশশ…ভাইয়া কত্ত রোমান্টিক। আর আরিফী?

মাহাম হেসে বলল, আরে আরিফী ভাইয়া নিজেই তো আপাদমস্তক সারপ্রাইজ তোমার জন্য। স্পেশাল আর কোন সারপ্রাইজ দেবার অবকাশ কোথায়?

বোনের কাঁধে আদরের ঘুষি লাগিয়ে শাবাব বলল, তোর সবচেয়ে বড় গুণ কি জানিস? ভুজুংভাজুং বলে মানুষকে পটিয়ে ফেলা।

আমি আমার গুড এন্ড ব্যাড উভয় কোয়ালিটি সম্পর্কেই জানি। এবং মনেকরি প্রত্যেকেরই তার গুড এন্ড ব্যাড উভয় কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত। আচ্ছা তুমি জানো তোমার গুড কোয়ালিটি কি?

শাবাব চিন্তিত কণ্ঠে বলল, নাতো। তুই জানিস?

বোনকে কথার ঝাঁপি খোলার সুযোগ না দিয়ে হেসে হাঁটতে শুরু করলো মাহাম। পাশে হাঁটতে হাঁটতে শাবাবের কথা চলতে থাকলো। আজকে আরিফী মিয়াকে লাট্টুর মতো ঘুরানোর প্ল্যান ছিল আমার বুঝেছিস। ইচ্ছে ছিল শপিং করতে করতে ফতুর করে দেবো। কিন্তু ভাইয়া ফোন করে এখানে আসতে বলে আমার সব প্ল্যান বানচাল করে দিয়েছে।
মাহাম হেসে বলল, কেন তুমি এত যন্ত্রণা করো বেচারা ভাইয়াকে বুঝি না!

আমিও বুঝি না তুই এত পতিপ্রাণা হয়ে থাকিস কেন? বিয়ের পর থেকে কত বদলে গিয়েছিস তুই সেটা কি জানিস ?

মাহাম হেসে বলল, হুম…জানি। শোনো জীবনকে স্বপ্নিল বানানোর জন্য মেয়েদেরকে তাদের অনেক পছন্দ, শখ, ভালোলাগা, মন্দলাগা স্বামীর ইচ্ছানুযায়ী বদলাতে হয়। আর এতে কল্যাণ উভয়েরই হয়।

তোর সব ওয়াজ শুধু মেয়েদের জন্য কেন বুঝি না! বিশেষ করে আমার জন্য।

কারণ আমি নিজে একটা মেয়ে। মেয়েদের মন মানসিকতা আমি বেশি বুঝি এবং মেয়েদের ক্ষমতাও আমি উপলব্ধি করতে পারি নিজেকে বিচার করে। আর তোমাকে বেশি বলি কারণ বোন আমি তোমার। জীবনের প্রতি মুহুর্তে প্রতি কদমে তোমাকে বোঝানো, শুধরে দেয়া আমার জন্য ফরজ।

শাবাব হেসে বলল, এজন্যই তো তোকে আমি এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমার কাছে পুরো পৃথিবী একদিকে আর তুই একা একদিকে।

সাথে সাথে মুখটা ভার করে ফেললো মাহাম। বলল, শাবাব প্রিয় বোন আমার আমি তোমার কথার বদলে একই কথা তোমাকে বলতে পারলাম না বলে খুবই দুঃখিত। কি করবো বলো আমার দুনিয়া যে আমি অন্য একজনকে বানিয়ে ফেলেছি।

দুই বোনই হেসে ফেললো একসাথে। অতঃপর একে অন্যের সাথে ভাবের আদান প্রদান করতে করতে সবার পেছন পেছন হাটতে লাগলো।

ভেতরে প্রবেশ করে যা দেখলো তাতে আয়ান আর আরিফী ছাড়া পরিবারের সবাই বেশ অবাক হলো। চোখ প্রশ্ন নিয়ে আয়ানের দিকে তাকালো মাহাম! সারপ্রাইজের কথা বলে সবাইকে চাইল্ড হোমে নিয়ে এসেছে কেন আয়ান? তাও আবার মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু সবাই। প্রথমে তো সবাইকে ঘুরিয়ে দেখলো সবকিছু আয়ান আর আরিফী মিলে। এরপর সবাইকে নিয়ে বাগানে এসে বসলো।

আয়ান সবাইকে জানালো তাদের এক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী মিলে মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এই স্কুলটি শুরু করেছিলো আরো ছয় বছর আগে। তাদের নিজেদের কোন সন্তান ছিল না তাই অসহায় এই শিশুগুলোর জন্য একটু আশ্রয় হতে চেয়েছিলেন। এটাকেই জীবনের মিশন হিসেবে নিয়েছিলেন দুজন। প্রথম থেকেই আয়ান ও আরিফী সাথে ছিল উনাদের। আয়ানের সাথে তাদের পরিচয় হয়েছিলো নিউজিল্যান্ডে আরো একযুগ আগে। ইউরোপিয়ান এই দম্পতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন পাঁচ বছর আগে। গত বছর এক এক্সিডেন্টে স্বামী-স্ত্রী দুজনই মারা গিয়েছে। এবং মৃত্যুর আগে স্কুলটার দায়িত্ব আয়ানকে দিয়ে গিয়েছেন উনারা দুজন।

গাড়িতে উঠার পর থেকেই সীটে হেলান দিয়ে বাইরের চুপ দিকে তাকিয়ে আছে মাহাম। অনেকক্ষণ পর আয়ান বলল, কি ভাবছো? সারপ্রাইজটা তোমাকে সত্যি সত্যিই খুব সারপ্রাইজড করে দিয়েছে তাই না?

আয়ানের দিকে ঘুরে তাকালো মাহাম। বলল, বাচ্চাগুলোর কথা ভাবছি। তোমাকে নিয়েও ভাবছি।

আমাকে নিয়ে? হাসলো আয়ান। আমাকে নিয়ে কি ভাবছো?

ভাবছি অনেক দায়িত্ব তোমার উপর। আমি পারবো তো তোমার যোগ্য সাথী হতে? তোমার সাথে কদমে কদম মিলিয়ে চলতে?

আয়ান হেসে বলল, আমি আরো কি ভাবছিলাম জানো? তুমি হয়তো ঘাবড়ে যাবে এসব দেখে। অথচ দেখো তুমি আমার সাথে কদমে কদম মিলিয়ে চলতে চাইছো! এটাই তো প্রমাণ করে আমাদের সফরটা খারাপ হবে না, ইনশাআল্লাহ। তাছাড়া…

তাছাড়া কি?

গাড়ি থেকে নামো।

অবাক দৃষ্টিতে মাহাম তাকালো আয়ানের দিকে। আয়ান সেই দৃষ্টির দিকে দৃষ্টিপাত না করে গাড়ি থেকে নেমে গেলো। ঘুরে এসে মাহামকেও ধরে বের করলো। পেছনে ঈশারা করে আয়ান বলল, ঐ দেখো বাস আসছে।

হ্যা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু তাতে কি?

আয়ান হেসে বলল, চলো নাইট বাসে করে ঘুরবো দুজন। দৌড়ে কখনো বাস ধরেছো? আমিও পাগল তোমার কাছে এই প্রশ্ন করছি? জাদুঘরে রাখার মত বোরিং লাইফ লিভ করো তুমি। চলো তোমাকে লাইফ লিভ করতে শেখাবো। বাসে উঠে যত ইচ্ছে তাকিয়ে থেকো আমার দিকে। বাস এসে যাচ্ছে চলো তাড়াতাড়ি। কামঅন।

হেসে ফেললো মাহাম। আয়ানের বাড়িয়ে ধরা হাত ধরে ছুটতে শুরু করলো সম্মুখ পানে……।

চলবে

পর্ব-১১

 

সোনারগাঁওয়ে নারী জামদানী কারিগরকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেফতার


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক নারী জামদানী শাড়ী কারিগরকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ অভিযুক্ত শাহিনকে গ্রেফতার করেছে।

আজ বুধবার সকালে ধর্ষিতা মামলা দায়ের করলে পুলিশ দুপুরে শাহিনকে সাদিপুর ইউনিয়নে ভারগাঁও চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। বিকেলে গ্রেফতারকৃত শাহিনকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠিয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে ভারগাঁও চৌধুরীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দুই সন্তানের জননী (৩৫) বসবাস করেন। তার স্বামী রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় একটি জামদানী কারখানায় কাজ করেন। তিনিও জামদানী কারিগর। তিনি জামদানী তৈরীর সুতার কাজ করেন। প্রতি সপ্তাহে দু’একদিন বাড়িতে আসেন তার স্বামী। এ সুযোগে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে ওই নারী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে যান। আগে থেকে উৎ পেতে থাকা সাদিপুর ইউনিয়নের ভারগাঁও চৌধুরীপাড়া এলাকার মৃত ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে শাহীন ওই নারীর মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এসময় ওই নারীর ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে শাহীন পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর ছয় দিন গ্রামবাসীর কাছে বিচার দাবি করে না পেয়ে বুধবার সকালে ধর্ষিতা বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় মামালা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহিনকে গ্রেফতার করে বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠায়।

সোনারগাঁও থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, ধর্ষণের অভিযোগে শাহিন নামের ধর্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

মামলা করে বিপাকে ধর্ষিতার বাবা!


নারী সংবাদ


ধর্ষকের নামে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন ধর্ষিতার বাবা। ধর্ষক আলেক মোল্লা তাকে মামলা তুরে নিতে হুমকি দিচ্ছে। কয়েকবার তার বাড়িতে হামলা করেছে। ধর্ষক আলেক মোল্লার বাড়ি যশোর সদর উপজেলার মথুরামপুর গ্রামে।

আজ বুধবার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৫ অক্টোবর প্রতিবেশি আলেক মোল্লা তার শিশু মেয়েকে পান খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজের কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুর চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এ প্রতিবাদে বিচার চেয়ে তিনি ৮ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর ধর্ষক গা ঢাকা দিয়েছে।

মামলা তুলে নিতে তাদের পক্ষে শিল্পীর জামাই বিজিবি সদস্য আরিফ হোসেন, এলাকার রানা, মিলন ইসলাম, আলম হোসেন ও নাহার বেগম তাকে ও তার পরিবারকে পক্ষের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। গত ৯ ডিসেম্বর আলেক ও তার লোকজন রবিউলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তিনি বিচার ও নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য বদর সিদ্দিকী, সাবেক ইউপি সদস্য আবু জাফর, গ্রামের আবু দাউদ সোনা, আবদুস সালাম, মমতাজুল করীম প্রমখ।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

বাবুদের শীতের পোশাক


ঘরকন্যা


শীত মানেই ছুটি। দিনের বেলাতেও অনেক ঠাণ্ডা টের পাবেন। রাতে কিন্তু তাপমাত্রা আরও নিম্নমুখী হচ্ছে দিন দিন। আর কদিন পরেই শীত আরও জেঁকে ধরবে। তাই শীতকে ভয় পেয়ে শিশুদের ঘরে আটকে রাখা না। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে বেছে নিতে হবে শীতের পোশাক। অনেকেরই আফসোস থাকে শীত এলে ফ্যাশনের বারোটা বেজে যায়। বাজবে না বারটা, আসুন দেখি শিশুদের পোশাক পাবো।

শিশুদের পোশাক পছন্দ করা  খুব কঠিন । যখন বাজারে নানান নামের কাপড় ছড়িয়ে আছে, মিকিমাউস ড্রেস, চিকেন উইন্টার ড্রেস, বেবি কটন উইন্টার ড্রেস, উলেন ড্রেস,  স্লেবি রেড রেবিট,  কটন বয় কোর্ট, বেবিদের ড্রেস গুলর দাম মার্কেট ভেদে ভিন্ন ভিন্ন। মোচাক ,নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স , যমুনা শপিং কমপ্লেক্স সহ ঢাকার আনাচে কানাচে শীতের কাপড় এখন বাজারে ছড়িয়ে গেছে।

সোয়েটার কালেকশনে পাশ্চাত্যের ঢঙে দেখা যায়। সোয়েটারগুলোর দাম পড়বে অনলাইনে দেখা গেল ৮০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা ভিতরে। আর স্টাইলিশ হুডিগুলো  ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যেই।’ কিন্তু নিউমার্কেট দাম অনেক কম দেখা যায়, ২৫০ থেকে ১০০০ অনেক সুন্দর সুন্দর শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।

অর্থাৎ শীতের পোশাকে ঢাকা পড়ে যায় ফ্যাশনেবল পোশাকটি। তাইতো এখন ফ্যাশন ডিজাইনাররা শীতের পোশাকটিই তৈরি করছেন ফ্যাশনেবল করে।

কোথায় পাবেন: নিত্য উপহার, বিশ্বরঙ, কে ক্রাফট, লা-রিভ, জেড অ্যান্ড জেড কালেকশন, আম্বার লাইফস্টাইল, সেইলর, এসটাসি, ক্যাটস আই, ওটু, টুয়েলভ, ওকোড, ইস্টওয়ে, ফ্রিল্যান্ডসহ প্রায় সব নামি ব্র্যান্ডেই মিলবে হালকা শীতের পোশাক। বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশান পিংক সিটি, নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, বঙ্গবাজার, মিরপুরের মার্কেটগুলোতে মিলবে শীতের পোশাক।

 

ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত

ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত


নারী সংবাদ


ফরিদপুরের চাঞ্চল্যকর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরী ফাতেমাকে ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামি ইয়াসিন শেখ পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তিন পুলিশ সদস্য।

রবিবার দিবাগত রাত দুইটার সময় শহরের পূর্বখাবাসপুরস্থ লঞ্চঘাট জোড়া ব্রিজের সামনে এ বন্ধুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসিন শেখ শহরের ওয়ারলেস পাড়ার মনি শেখের পুত্র।

তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, রাজেন্দ্র কলেজের মেলার মাঠের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে আসামির ছবি সংগ্রহ করে ইয়াছিনকে চিহিৃত করা হয়। এরপর জনগণের সহয়তায় তাকে আটক করা হয়।

রাতে অস্ত্র উদ্ধার করতে গেলে আসামির অন্যান্য সহযোগী ও পুলিশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গুলি বিনিময় হয়। আর এসময় গুলিবিদ্ধ হয় আসামি ইয়াছিন। আর এ ঘটনায় আহত হয় তিন পুলিশ সদস্য।

পরে ইয়াসিনকে উদ্ধার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ লাশের ময়নাতদন্তের জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ১৪ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোরী ফাতেমাকে বিকেল বেলা রাজেন্দ্র কলেজের মেলার মাঠ থেকে তুলে নিয়ে যায় ইয়াছিন নামে ওই ধর্ষক। পরের দিন পাশের টেলিগ্রাম অফিসের পাশ থেকে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা কিশোরী ফাতেমা নিখোঁজ হওয়ার ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। জেলা পুলিশের অফিসিয়াল পেইজে ১১ সেকেন্ড ও ১৯ সেকেন্ডের দু’টি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। একইসাথে প্রকাশিত ওই ফুটেজে চিহ্নিত সন্দেহভাজন খুনির পরিচয় সনাক্ত করে দিতে পারলে ব্যক্তিগতভাবে তাকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেয় মামলার তদন্তদকারী কর্মকর্তা।

ডিস্ট্রিস্ট পুলিশ, ফরিদপুর নামের ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত ওই সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে, শহরের রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ব্রান্ডিং মেলার মাঠ থেকে বাম হাত ধরে ফাতেমাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহভাজন ওই খুনি।

প্রথম ফুটেজটি গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটের। ১৯ সেকেন্ডের ওই ফুটেজে দেখা যায় সন্দেহভাজন ওই খুনি মেলার শিশু কর্ণারের দিকে একটি স্টলের পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে বাঁশের খুঁটির নিকট এসে উকিঝুঁকি দিচ্ছে। সেখানে তার গতিবিধিই ছিল সন্দেহজনক।

এরপরের ১১ সেকেন্ডের আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, ফাতেমার হাত ধরে মেলার বাইরে নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহভাজন ওই খুনি। ফুটেজে সনাক্ত ওই সন্দেহভাজন খুনির বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছর। তার পরনে অফ হোয়াইট রঙের কালো স্টেপের ফুলহাতা জামা ও একটি ফেড করা জিন্স প্যান্ট। আর ফাতেমার পরনে ছিল কামিজ ও কমলা রঙের একটি পায়জামা। এই পায়জামাটি পুলিশ ফাতেমার লাশের সাথে জব্দ করে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নিখোঁজ হন বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরী ফাতেমা বেগম (১৪)। এর পরেরদিন শুক্রবার সন্ধার একটু পর সাড়ে ৬টার দিকে রাজেন্দ্র কলেজের পাশে টেলিগ্রাম কার্যালয়ের চত্ত্বর থেকে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ফাতেমার মুখ থেতলানো ছিলো। রক্ত জমাট বাঁধা। বিবস্ত্র ফাতেমার গলায় ফাঁস দেওয়া ছিলো। ফাতেমাকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এখনো ফাতেমার লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ফাতেমার বাবার নাম এলাহি শরিফ। তিনি রিক্সা চালানোর পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের এটিএম বুথের গার্ড হিসেবে কাজ করেন। তিন মেয়ের মধ্যে ফাতেমা বড়। ফাতেমা জন্ম থেকেই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক)। ওই কিশোরী বাবার সাথে শহরের রাজেন্দ্র কলেজ সংলগ্ন এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো।

বুদ্ধি ও বাক প্রতিবন্ধী ফাতেমার এই নৃশংস হত্যাকান্ডের খবরে ফরিদপুরের জনমনে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই খুনিদের যেকোন মূল্যে খুঁজে বের করার জোর দাবি উঠে।

এ ঘটনায় ফরিদপুর সুইড ফিরোজার রহমান বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছাত্রী শিশু ফাতেমা হত্যার দৃষ্টান্তমুলক বিচারের বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করে। গতকাল রবিবার দুপুরে নিহত ফাতেমার সহপাঠী, শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে স্মারকলিপি দেয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার স্মারকলিপি গ্রহণ করে ফাতেমা হত্যার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দেন। বিকেলে একই দাবিতে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে প্রগতিশীল সংগঠন সমূহের ব্যানারে।

সুত্রঃ বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ।

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা – ১১

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা – ১১


আফরোজা হাসান


চোখ মুখ শক্ত করে রাগের ভান করলেন সাবিহা। আমি যা জানতে চাচ্ছি সেটার জবাব দে। কোথায় ছিলি এতক্ষণ?
মাহাম হেসে বলল, আমি তো ভাইয়া-ভাবীর সাথে ছিলাম। ভাইয়া যে সারাক্ষণ শুধু বাইরে বাইরে থাকে সেই বিচার করছিলাম আমি আর ভাবী মিলে। আমি তোমাকেই নিয়ে যেতে এসেছি বিচার সভায়।

কেন?

মাহাম হাসতে হাসতে বলল, ভাইয়াকে মারতে হবে। আমি তো বড় ভাইকে মারতে পারিনা আর ভাবী বলেছে মশা মেরে হাত নোংরা করতে চায় না। তাই তুমি চলো ভাইয়াকে মারবে।
হাসলেন সাবিহা। তোরা পারিসও সারাক্ষণ দুষ্টুমি করতে। কিন্তু আয়ান কোথায়?

সেও আছে বিচার সভায়। মুখের সামনে ফাইল ধরে হুমম… হুমম… করছে। এই ছেলের কথা বলতে কিসের এত কষ্ট আল্লাহ’ই জানেন। দশটা প্রশ্ন করলে নয়টার জবাব দেন হুম নয়তো উহু ধ্বনির প্রয়োগে।

আয়ানকে দরজায় এসে দাঁড়াতে দেখে দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করলো সাবিহার। বললেন, তোর জামাইয়ের মুখ দিয়ে বিষ ঝরে সারাক্ষণ। কথা বলে না তাই রক্ষা আমাদের। তুই যে কি দেখে পাগল হয়েছিল এই ভিলেন স্বভাবের ছেলের জন্য এখনো আমার বুঝে আসে না। ঐ যে বলতে না বলতে হাজির তোর ভিলেন।

মাহাম হেসে বলল, আচ্ছা তো শুনিয়ে শুনিয়ে বদনাম করা হচ্ছিলো!

তো? চোখ পাকালেন সাবিহা। আমি কি তোদেরকে ভয় পাই নাকি যে পেছনে কথা বলবো!

আয়ান রুমে ঢুকে হেসে বলল, পেছনে কথা বলা ঠিকও না মাদার ইন ল। এতে একদিকে যেমন গীবত করা হয় অন্যদিকে ব্যক্তির ভুল ধারণাকে শুধরানো সম্ভব হয়না।
সাবিহা বললেন, আচ্ছা তা কি ভুল বলেছি আমি শুনি?

ঐ যে বললেন আপনার মেয়ে আমার জন্য পাগল হয়েছিলো! জবাব দিল আয়ান।

এটা ভুল কথা?

হান্ড্রেড পার্সেন্ট ভুল কথা।

সঠিক কথাটা কি শুনি?

আয়ান হেসে বলল, সঠিক কথাটা হচ্ছে আমি পাগল হয়েছিলাম আপনার মেয়ের জন্য। এবং যতই দিন যাচ্ছে সেই পাগলামির পরিমাণ বেড়েই চলছে। কিন্তু আপনার মেয়ে আমাকে পাত্তাই দেয়না। সে তার মত থাকে।
হয়েছে তোদের এসব কথার ফাঁদে আমি পড়ছি না। বকবক কর তোরা আমি যাই। জামাই আর মেয়েকে একা থাকার সুযোগ দিয়ে চলে গেলেন সাবিহা।

আয়ান মাহামকে কাছে টেনে নিয়ে বলল, একটা ব্যাপার বলো তো এই যে তুমি এত নিরস, মুডি, একরোখা স্বভাবের একটি মেয়ে। তারপরও তোমাকে এত ভালোবাসি কেন আমি?

কারণ আমাকে ভালোবাসা ছাড়া তোমার জন্য আর কোন পথই খোলা রাখিনি আমি। হেসে জবাব দিলো মাহাম।
হাসলো কিন্তু মুখে কিছু বললো না আয়ান। মাহামকে আলতো করে বুকে টেনে নিলো। কখনো কখনো মাহামের বিষণ্ণতা আপাদমস্তক ডুবিয়ে দেয় তাকে! কিন্তু যখন মেঘের আড়াল থেকে সূর্যের মত বেড়িয়ে আসে মাহাম, স্বমহিমায় তার জীবনকে ভরিয়ে দেয় ভালোবাসাময় প্রশান্তিকর আলোতে। এই কিছুটা পাগলা, ভীষণ রকম খেয়ালী আর প্রচণ্ড কল্পনাবিলাসী মেয়েটা সত্যিই তাকে ভালোবাসা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা রাখেনি তার সামনে। মাহামকে দেখলে ওর কথা শুনলে মনেহয় দুনিয়ার কোন কিছুতেই ওর কোন আগ্রহ নেই। কিন্তু আয়ান জানে ঘাষের ডগায় শিশির বিন্দু থেকে নিয়ে শুরু করে মিটমিট করে জ্বলতে থাকা আকাশের তারা, রান্নাঘরের তেল-মশলা থেকে নিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা সবকিছুতেই মাহামের ব্যাপক আগ্রহ। জীবনসাথী হিসেবে মাহামকে পেতে চাইবার এটাও একটা জোড়াল কারণ ছিল।

কিছুটা ক্ষণ এভাবেই কেটে গেলো। নীরবতার ভেঙ্গে মাহাম বলল, আচ্ছা তুমি না বলেছিলে আমার জন্য বিশাল একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে? কোথায় আমার সারপ্রাইজ?

বলেছিলাম নাকি?

হুম…বলেছিলে তো!

আয়ান হেসে বলল, তাহলে তো দিতেই হয় সারপ্রাইজ। তবে সেজন্য তোমাকে আমার সাথে বাইরে যেতে হবে।

সারপ্রাইজকে ঘরে আনা সম্ভব না?

উহু…সাইজে সামান্য বড়। তোমাকেই যেতে হবে।

মামণি-বাবা আর মিহিরকে কি নিয়ে যাওয়া যাবে আমাদের সাথে?

মামণি-বাবা আর মিহিরকে নিয়ে গেলে কি তুমি খুশি হবে?
হ্যা।

আয়ান হেসে বলল, ঠিকআছে আমরা তাহলে মামণি-বাবা আর মিহিরকে নিয়েই যাবো। যাও সবাইকে রেডি হতে বলো তুমি। আমরা আধঘন্টা পর বেড়বো ইনশাআল্লাহ।

দরজার কাছে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো মাহাম। কিন্তু শাবাব আর আরিফী ভাইয়া যাবে না আমাদের সাথে? আয়ান হেসে বলল, ঠিকআছে আমি ফোন করে বলে দিচ্ছি বলে আরিফীকে নিয়ে আসবে শাবাবকেও। আয়ানকে বিশাল একটা হাসি উপহার দিয়ে বেড়িয়ে গেলো মাহাম।

চলবে…
পর্ব-১০

 

শীতকালে শিশুর যত্ন


শিশুর যন্ত


শীতে বেশি অসুস্থ্ হয় শিশুরা। বিরুপ এই সময়ে শিশুরা কী  ধরনের রোগে আক্রান্ত হয় এবং কীভাবে প্রতিকার পাওয়া যায় এসব প্রশ্ন নিয়ে কথা বলেছেন এ্যাপোলো হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ কামরুল হাসান।

শীতে শিশুদের কী কী রোগ দেখা যায়?

ডাক্তার: মূলত এ সময় শিশুরা নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠাণ্ডা, কাশি, সর্দি এবং এ্যাজমায় বেশি আক্রান্ত হয়। আর সঙ্গে সিজোনাল জ্বর তো রয়েছেই।

এসব রোগের লক্ষণ:

ডাক্তার: ঠাণ্ডা অনেক দিন স্থায়ী হওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব, বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস নেয়া।

কারা বেশি আক্রান্ত হয়:

ডাক্তার: সাধারণত আমাদের দেশের অপুষ্ট, কম ওজনের শিশুরাই এধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আর দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা সুষম খাদ্য এবং যত্নের অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভোগে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম থাকে।

কীভাবে সতর্ক হতে হবে?

ডাক্তার: শিশু অসুস্থ হলে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে এবং নিয়মিত খাবার খাওয়াতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন তার ঠাণ্ডা না লাগে। তাদের ধুলা বালি থেকেও দূরে রাখতে হবে। শিশু একটানা তিনদিনের বেশি অসুস্থ থাকলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেরাজিতাৎসা: নিউমোনিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে ১৫ দিনের চিকিৎসায়ই শিশু ভালো হয়ে যায়। আর ভাইরাস জনিত জ্বরও ৩ থেকে ৫ দিনেই সেরে যায়। শিশুকে জন্মের পর থেকে সবগুলো টিকা সময় মতো দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। টিকার পাশাপাশি ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর বিষয়েও তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সবগুলো টিকা নিয়মিত দিলে শিশু বিভিন্ন মারাত্বক রোগ থেকে রক্ষা পায় এবং তার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

সাধারণ সর্দি, কাশিকে অবহেলা না করারও পরামর্শ দেন তিনি। শীতের মধ্যে আগুন জ্বেলে তাপ নেওয়ার সময় প্রতিবছর বহু দুর্ঘটনা ঘটে এবং এতে অনেক শিশু মারাত্বক আহত হয়, সবাইকে এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করেন কামরুল হাসান।

প্রতিবেদক,অপরাজিতাবিডি ডটকম

 

শীতের সকালে দুধ-চিতই

শীতের সকালে দুধ-চিতই


ঘরকন্যা


শহুরে যান্ত্রিকতায় হয়তো ভুলেই বসে আছেন, কিংবা শীতের ছুটিতে গ্রামে যাওয়ার অপেক্ষায়। যারা আমার মতো দেশী পিঠা পছন্দ করেন,খুব সহজেই অল্প উপকরণে তৈরি করে ফেলতে পারেন সদ্য ঘরে বানানো দুধ-চিতই পিঠা তৈরি করে ফেলুন,

উপকরণঃ
আমাদের লাগবে টাটকা চালের গুঁড়া ২, ১/২ কাপ
চিনি আধা কাপ
লবণ স্বাদ মতো
এলাচ ৩ টি
তেজপাতা ২টি
নারিকেল অথবা বাদামকুচি ২ টেবিল-চামচ
পানি ১ কাপ
১ লিটার দুধ।

পদ্ধতিঃ
চালের গুঁড়ার সঙ্গে লবণ মিশিয়ে পানি দিয়ে গোলা তৈরি করে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে গোলা যেন ঘন বা পাতলা না হয়। গোলা ঠিক মতো না হলে পিঠায় ছিদ্র হবে না। সুবিধা মতো পাত্রে গোল আকারে চিতই বানাতে হবে। এবার ১ লিটার দুধে এলাচ, তেজপাতা আর চিনি দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। দুধ আধা লিটার হলে পিঠাগুলো এর মধ্যে ছেড়ে দিন। তারপর জ্বাল কমিয়ে দিন। আস্তে আস্তে পিঠায় দুধ ঢুকে নরম হয়ে ফুলে ফুলে উঠবে। এখন জ্বাল বন্ধ করে দিন।

পরিবেশনঃ
কয়েক ঘণ্টা রেখে দিন। পরিবেশনের আগে উপরে নারিকেল বা বাদাম ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা – ১০

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা – ১০


আফরোজা হাসান


ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে সামনে যা দেখলো তাতে সাথে সাথে আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো শাবাব। যা দেখেছে তা কি সত্যি? ভাবনায় পড়ে গেলো সে। একবার মনেহলো স্বপ্ন দেখছে কিন্তু জানামতে নিশ্ছিদ্র ঘুম তার। স্বপ্ন ঘুমের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করলেও বেশির ভাগ সময়ই ব্যর্থ মনে ফিরে যায়। আর দ্বিতীয় কারণ তার স্বপ্নরা একটু অন্যরকম হয়। স্বপ্নে কখনো সে পরী হয়ে ফুলবাগানে ঘোরে, কখনো পাখী হয়ে আকাশে উড়ে, কখনো বরফে স্কি করে বেড়ায়, কখনো ঘুরে বেড়ায় গভীর সমুদ্রের নীচে।

তারমানে এখন যা দেখছে তা স্বপ্ন হবার কোনই অবকাশ নেই। আরিফী সত্যিই তার সামনে বসে আছে। কিন্তু এইভাবে রুমে আসবে কেন সে? আজ কিছু না করলে এমন কাজ বারবার করার সাহস পেয়ে যাবে আরিফী। ন্যাড়া নাকি বেল তলায় একবারই যায়। কিন্তু সেজন্য ন্যাড়ার মাথায় বেল তো ফেলতে হবে। মগজের সার্চ মেশিনকে অন করে দিলো সে আরিফীর মাথায় ফেলার মত বেলের সন্ধানে।

চোখ খুলেই যে শাবাব আবার ঝট করে বন্ধ করে ফেলেছে সেটা মোটেই আরিফীর চোখ এড়িয়ে যায়নি। খুব ভালো মত চেনে শাবাবকে তাই নিশ্চিত যে দুষ্টুমি করার কোন প্ল্যান করছে এখন। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে বাড়ি মাথায় তোলাও অসম্ভব কিছু না শাবাবের জন্য। সুতরাং কিছু করার আগেই পথ বন্ধ করে দিতে হবে। শাবাব তোমার ঘুম কি ভেঙ্গেছে? জানতে চাইলো আরিফী। নাস্তা সেরে তোমাকে নিয়ে শপিংয়ে যাবো ভাবছিলাম।

ধীরে ধীরে চোখ খুললো শাবাব। আরিফীকে হাসিমুখে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে উঠে বসতে বসতে বলল, দাঁত দেখাচ্ছো কেন নতুন লাগিয়েছো নাকি?

স্বশব্দে হেসে ফেললো আরিফী। কি যে অদ্ভুত একটা মেয়ে তুমি সেটা কি জানো?

জানতে চাচ্ছি না। আমি যা জানতে চাচ্ছি তা হচ্ছে বিনা অনুমতিতে কেন তুমি আমার রুমে ঢুকেছো? এত বড় সাহস কোথায় পেলে?

আরিফী হেসে বলল, তুমি কি জানো কিছু কিছু মানুষের কাছে মনের অনুভূতিগুলো সবসময় এভেলেভেল থাকে।

সেটা আবার কেমন?

সেটা এমন যে কিছু কিছু মানুষ আমাদের মনের ঝিমিয়ে পড়া অনুভূতিতে প্রাণের পরশ জাগিয়ে যেতে পারে। যেমন ধরো ভালোবাসা, মায়া, মমতা, রাগ, শোক, বেদনা, ব্যর্থতা, সাহস ইত্যাদি সবই তো আসলে মনের ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতির নাম তাই না? তো কিছু কিছু মানুষ তাদের কথা, কাজ ও আচরণের দ্বারা এই অনুভূতিগুলোকে সতেজ করে তুলতে পারে। আমি আজ সকাল থেকে এমন দুইজন মানুষের দেখা পেয়েছি।

হাসি ফুটে উঠলো শাবাবের চেহারাতে। মাহাম কোথায়?

মাহাম অসুস্থ্য শরীর নিয়ে চাচীকে সাহায্য করছে নাস্তা বানাতে আর তুমি ঘুমচ্ছো! এটা কেমন কথা হলো?

আমাকে তো কেউ ডাকেনি। আচ্ছা আমি এখনই যাচ্ছি।

মুহুর্তেই শাবাবের চেহারা থেকে দুষ্টুমি উবে যেতে দেখলো আরিফী। সেখানে জায়গা করে নিলো বোনের জন্য মায়া-মমতা-ভালোবাসা ও কল্যাণকামীতা। শাবাবের হাসি-মজা-দুষ্টুমিকে তার কাছে যতটা পরিচিত, নীরবতা ঠিক ততটাই অপরিচিত। তবে শাবাবের যে জিনিসটা তার সবচেয়ে ভালো লাগে তা হচ্ছে ওর আবেগের মধ্যে কোন উপরি উপরি ভাব নেই। ওর অনুভুতিতে অগভীর বলে কিছু নেই। দুষ্টুমির ছলে প্রচুর জ্বালা যন্ত্রণা দেয় কিন্তু সম্পর্কের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধে কোন ঘাটতি নেই ওর মনে। বরঞ্চ শাবাবের চমৎকার কৌতুকবোধ তার মনে ভালোবাসা আর উষ্ণতাই জাগিয়ে যায় সবসময়। জানে না কেন কিন্তু শাবাবকে দেখলেই তার চার্লি চ্যাপলিনের কথা মনে পড়ে যায়। শাবাবের দুষ্টুমির পারফেক্ট বর্ণনা চার্লি চ্যাপলিনের সেই উন্মত্ত মজার হাসির সিনেমা গুলোই।

পরিবারের সবাই মিলে একসাথে নাস্তা করার মজাটাই আসলে অন্যরকম। এই মজা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে নারাজ জাহিদ সাহেব। যেখানেই থাকেন না তিনি পরিবারের একজন সদস্যও যদি সেখানে উপস্থিত থাকে খাবার টেবিলে একসাথে হতেই হবে। দুই মেয়ে আর মেয়ে জামাইরা, পুত্র-পুত্র বধূ-নাতি সবাইকে নিয়ে একসাথে বসে নাস্তা করতে গিয়ে বারবার আজ চোখ ভিজে যাচ্ছিলো ফাইয়াজ সাহেবের। সবার আড়ালে বারবার চশমা খুলে অশ্রু মুছে নেয়া কি কম মুশকিলের ব্যাপার! এই মুশকিল কাজটি করতে করতে নাস্তা সারতে হল আজ ফাইয়াজ সাহেবকে।

নাস্তার পর অনেক ক্ষণ মাহামকে শপিংয়ে যাবার জন্য রাজী করাতে চেষ্টা করলো শাবাব। একসময় বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। মামণিকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে শাবাব সুরে সুরে বলল, এখন বিদায় দাও মা ঘুরে আসি।

সাবিহা বললেন, কোথায় যাচ্ছিস?

হাসি হাসি পড়াতে ফাঁসি! একই সুরে শাবাব জবাব দিলো।
সাবিহা হেসে বললেন, আজ কার কপাল পুড়লো আবার?
শাবাব হেসে বলল, যার কপাল তিনমাস আগেই পুড়েছে তাকেই আজ নতুন করে পোড়াবো ঠিক করেছি। মামণি দোয়া করে দাও।

কিসের দোয়া?

কপাল পুড়িয়ে যাতে হনুমান বানিয়ে দিতে পারি সেই দোয়া।

কি যে সব তুই বলিস না শাবাব। সাবধানে যাস। আর এত জ্বালাস না ছেলেটাকে। মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন সাবিহা।

মাকে আদর করে দিয়ে হাসতে হাসতে বেড়িয়ে গেলো শাবাব। মাহাম নিশ্চয়ই একা ভেবে মেয়েদের ঘরে রওনা করলেন সাবিহা। ঘরে ঢুকে মাহামকে না দেখে বুকের মধ্যে কেঁপে উঠলো। কোথায় গেলো মাহাম? বাগানে তো দেখেননি ওকে! তাহলে? বীচে যায়নি তো আবার? কত বার করে বলেছেন একা একা ঘুরঘুর না করতে। একটা মেয়ে যদি তার কথা শুনতো। অস্থির চিত্তে মেয়ের খোঁজে বের হলেন সাবিহা।

মেয়ের খোঁজে তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বেড়োতে গিয়ে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা খেলেন সাবিহা। মাহাম রুমে ঢুকছিল আর তিনি ঝড়ের গতিতে বেড়োচ্ছিলেন যার ফলে এই সংঘর্ষ। মা-মেয়ে দুজনই কমবেশি ব্যথা পেলো। মাহাম বলল, মামণি তুমি ঠিক আছো তো? ব্যথা লাগেনি তো বেশি?

মাহামকে ধরে মাথায় পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে সাবিহা বললেন, তোর কোথাও লাগেনি তো মা? একটু দেখে কেন চলিস না বল তো! মেয়ের সামনে সাধারণত কখনোই দুর্বল হতে চায় না সাবিহা কিন্তু আজ কেন জানি ধরে রাখতে পারলো না নিজেকে। মাহামকে বুকে টেনে নিলো। চোখ বেয়ে ঝরঝর অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।

কিছু না বলে চুপ করে রইলো মাহাম। বুঝতে পারছে কোন কারণে আপসেট মামণি। নিজেকে কিছুটা সামলে নেবার সুযোগ দিলো মাকে। কিছুটা স্থির হয়ে মাহামকে নিয়ে বিছানাতে বসলেন সাবিহা। কোথায় ছিলি তুই? তোকে না বলেছি একা একা কোথাও না যেতে? তোকে রুমে না দেখে জানিস আমার কি অবস্থা হয়েছে? জবাব না দিয়ে আবার হাসছিস কেন ফাজিল মেয়ে?

মা’র মুখ থেকে একের পর এক প্রশ্ন বেড়োতে দেখে মাহাম হাসতে হাসতে বলল, আমার খুব শখ আল্লাহ যদি আমাকে বাবু দেন তাহলে যেন মেয়েই দেন। তোমার কান্ড কারখানা দেখে আমার খুব মেয়ের মা হতে ইচ্ছে করে। জানতে ইচ্ছে করে কি সেই অনুভূতি যা এতটা দুর্বল করে দেয় একজন মাকে!

চলবে

পর্ব-৯

 

কাফিরদের প্রতি(ছন্দে ছন্দে আল কুরআন)

কাফিরদের প্রতি(ছন্দে ছন্দে আল কুরআন)


ফাতিমা মারিয়াম


হে নবী! বলে দাও,
‘হে কাফেরগণ শোন,
তোমরা যাদের ইবাদাত করো,
আমি করি না তাদের ইবাদাত জেনো।
.
তোমরা তো করোনা তাঁর ইবাদাত
যাঁর ইবাদাত করি আমি।
আমিও করিনা তাদের ইবাদাত
যাদের উপাসনা কর তোমরা দিবা যামী।
.
তোমরা তো করোনা ইবাদাত তাঁর
ইবাদাত আমি করি যাঁর।
তোমাদের দ্বীন তোমাদের জন্য
আমার দ্বীন আছে আমার।’
সূরার অর্থ –
১) বলে দাও, হে কাফেররা!
২) আমি তাদের ইবাদাত করি না যাদের ইবাদাত তোমরা করো।
৩) আর না তোমরা তাঁর ইবাদাত করো যাঁর ইবাদাত আমি করি।
৪) আর না আমি তাদের ইবাদাত করবো যাদের ইবাদাত তোমরা করে আসছ।
৫) আর না তোমরা তাঁর ইবাদাত করবে যাঁর ইবাদাত আমি করি।
৬) তোমাদের দ্বীন তোমাদের জন্য এবং আমার দ্বীন আমার জন্য।
[আল কাফিরূন]

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা- ৯



আফরোজা হাসান


ফজরের নামাজের পর না কান পেতে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলো মাহাম কিন্তু বাতাস আজ কোন শব্দই নিয়ে এলো না তার কাছে। কিন্তু এমন তো হবার কথা ছিলো না! আজ তো এই বাড়ির আকাশে সূর্যোদয় হবার কথা ছিলো পবিত্র বাণীর সুরলিত স্বাগত ধ্বনিতে। আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর বাইরে বেড়িয়ে দেখবে কিনা ভাবছিল তখন রুমে ঢুকল মিসেস জাহিদ। মাহামকে বসে থাকতে দেখে হেসে বললেন, ওহ তুই জেগেই আছিস! আমার সাথে একটু চল তো মা নাস্তা বানাতে সাহায্য করবি। শাবাবকে ডাক।

মাহাম হেসে বলল, শাবাব ঘুমোচ্ছে ঘুমোক মামণি। চল আমি যাচ্ছি তোমার সাথে।

মা-মেয়ে গল্প করতে করতে নাস্তা বানানোতে মন দিলো। যদিও কখনো মুখে বলে না কিন্তু মেয়েরা যখন কাজে সাহায্য করতে আসে ভীষণ ভালো লাগে সাবিহার। কাজের ফাঁকে ফাঁকে নানা ধরণের গল্প করেন তখন মা-মেয়েরা মিলে। নিজের জীবনের জটিল কঠিন অভিজ্ঞতাগুলো ইতিবাচক হিসেবে শেয়ার করেন মেয়েদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য। এক মনে ছিটারুটি বানাচ্ছে মাহাম। মেয়ের চেহারার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করলেন সাবিহা। শুকিয়ে কালো হয়ে কেমন হয়ে গিয়েছে মাহামের চেহারা। নানা ধরণের শারীরিক অসুস্থতার কারণে দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে তার চাঁদের মত মেয়েটি।

মাহামের মাথায় হাত বুলিয়ে সাবিহা বললেন, তোকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে। তুই বরং গিয়ে বিশ্রাম কর। শাবাবকে পাঠিয়ে দে আমাকে সাহায্য করবে।

মাহাম হেসে বলল, আমি ঠিক আছি মামণি।

কিন্তু তোকে অসুস্থ্য দেখাচ্ছে। আমি নিশ্চিত তোর মাথা ব্যথা করছে।

হুম করছে। তবে যতটুকু ব্যথা করছে তা নিয়ে রান্না করতে পারবো। তাছাড়া বসে থাকলে ব্যথা বেশি করে। কাজে থাকলে মনেই থাকে না ব্যথার কথা। তারচেয়েও গুরুত্বপুর্ণ কথা হচ্ছে, ব্যথা-কষ্ট-দুঃখ-হতাশা-দুরাশা-নিরাশা তাদের জীবনের গতিকে থামিয়ে দেয় যারা অকর্মণ্য। কিন্তু আপনার মেয়ে দুনিয়াতে কাজ করতে এসেছে।

সাবিহা হেসে বললেন, আমার তো ধারণা শুধু পটপট আর ঝামেলা পাকাতে এসেছে।

আপনার ধারণার সংস্কার প্রয়োজন মাতাজ্বী।

মেয়ের কান ধরে ঝাঁকিয়ে সাবিহা বললেন, বেশি বেশি দুষ্টু হয়েছিস তোরা দুইটাই। দেখ তো তোর বাবা, আয়ান ওরা ফিরছে কিনা মসজিদ থেকে। তাহলে চা দিয়ে আয়।
মাহাম বলল, ও সবাই তাহলে নামাজ আদায় করতে মসজিদে গিয়েছিল! সেজন্যই তো বলি!

সেজন্যই তো কি? জানতে চাইলেন সাবিহা।
না কিছু না।

হাসলেন সাবিহা। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, এমনিতে তোকে দেখলে বোঝাই যায় না যে তুই এত দুষ্টুমি করতে পারিস। কি মনেহয় জানিস?

কি?

সুপার রসকষহীন মেয়ে। যার দুনিয়া বইয়ের মধ্যে শুরু হয়ে বইয়ের মধ্যেই শেষ। কিন্তু যখন আয়ান আশেপাশে থাকে একদম বদলে যাস তুই। তখন তোকে শাবাবের চেয়েও ফাজিল মনেহয়। এর রহস্য কি?

মাহাম হেসে বলল, রহস্য হচ্ছে আমার দুষ্টুমি, চঞ্চলতা, অস্থিরতা শুধু আয়ানের জন্য। আমার এইসব রূপ পৃথিবীর আর কাউকে দেখাতে চাই না আমি। মাহামের মধ্যে গুটিসুটি মেরে যে ছোট্ট মাহাম বসে আছে, সে নিজকে ছাড়া শুধু আয়ানের কাছেই বাঁধনহারা। এই রহস্য তোমাকে অন্য কোন দিন বলবো। যাই সবাইকে চা দিয়ে আসি।

বাবা ও ভাইয়াদের সবাইকে চা দিয়ে আয়ানের সন্ধানে বের হলো মাহাম। বারান্দায় এসে ফাইলপত্র নিয়ে আয়ানকে বসে থাকতে দেখে সামনে চা রাখলো। তারপর কিছুই না বলে মুখ ভার করে গিয়ে আয়ানের পাশে বসলো মাহাম। আয়ান হেসে বলল, আমার জানা মতে সুবেহ সাদিক তো অন্ধকারের সমাপ্তি ঘোষণা করে, আলোর পথে যাত্রা শুরুর র্বাতা বহন করে। তাহলে সুবাহ সাদিকের আগমনের পরেও আমার পৃথিবীর চেহারা আঁধারে ঢাকা কেন?

আমি কখন থেকে অপেক্ষা করছি তোমার তিলাওয়াত শোনার জন্য। অভিমানী কণ্ঠে বলল মাহাম।

আমিও তো সেই কখন থেকে অপেক্ষায় ছিলাম ঊষার লগ্নের। রাত্রির সুচীভেদ্য অন্ধকারকে ভেদ করতে যে হাজির হবে প্রথম আলোক রশ্মী হয়ে আমার ভুবনকে আলোকিত করতে।

হেসে ফেললো মাহাম! বলল, আমি তোমার তিলাওয়াত শুনবো।

অবশ্যই শুনবে। তার আগে বলো শরীর কেমন আজ? ঘুম কেমন হয়েছে?

আলহামদুলিল্লাহ্‌ অনেক ভালো ফিল করছি আজ। ঘুমও অনেক ভালো হয়েছে। এক ঘুমে রাত সাবাড়। তোমার কি অবস্থা?

হেসে, তোমার মত সাবাড় করতে পারিনি রাতকে। তবে টেনেটুনে কাভার করেছি।

মাহাম হেসে বলল, ঠিকআছে আমি এখন যাই। মামণিকে সাহায্য করছি নাস্তা বানাতে।

রান্নাঘরে যাবার আগে শাবাবকে ডাকার জন্য রুমে রওনা করলো মাহাম। দরজার কাছে আরিফীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মাহাম হেসে বলল, সাহস পাচ্ছো না ভেতরে ঢোকার?
সাহস দেখানোটা দুঃসাহস হয়ে যাবে কিনা সেটা ভাবছি। হেসে জবাব দিলো আরিফী।

কামঅন ভাইয়া এতটাও ভয়ংকর না আমার বোন। উপর দিয়েই একটু হৈচৈ করে।

তোর বোনকে দেখে আমি বিয়ের একটা সংজ্ঞা লিখেছি।
তাই? শোনাও দেখি তোমার সংজ্ঞা।

বিবাহ একটি যুদ্ধক্ষেত্র। স্বামী-স্ত্রী হচ্ছে যোদ্ধা। আর জিহ্বা হচ্ছে বহুরূপী গিরগিটি। যা কখনো হাতুড়ি হয়ে একে অন্যকে আঘাত করে, কখনো তরবারি হয়ে রক্তাক্ত করে, কখন বরষার জল হয়ে ভাসায় আনন্দধারায়, কখন কালবৈশাখী হয়ে মটমট করে ভাঙ্গে মনের কচি ডালপালা, কখন শ্রুতিমধুর শব্দ হয়ে দোলা দিয়ে যায় প্রাণে। যার মোহনীয় সুরে পাগল হয়ে মন গেয়ে ওঠে, প্রানো সখী রে ঐ শোন কদম্ব তলে বংশী বাজায় কে? ঠিক পরক্ষনেই ভেসে আসে সাবধানী বানী, বাঁশী শুনে আর কাজ নাই সে যে ডাকাতিয়া বাঁশী।

মুখে হাত চাপা দিয়ে হাসি আটকালো মাহাম। আরিফীকে রুমে ঢুকতে বলে হাসতে হাসতে চলে গেলো রান্নাঘরে।

পর্ব- ৮

 

উটে চড়ে হজ্জে

উটে চড়ে হজ্জে


কানিজ ফাতিমা


গফুর সাহেব বাসায় ডায়নিং টেবিল কেনেননি কারণ “ডায়নিং টেবিলে খাওয়া ‘বিদা ‘ত’। ”
-এনিয়ে তার কিশোর ছেলের সঙ্গে প্রায়ই উচ্চবাচ্চ হয়। কিন্তু সন্তানের কথায় তো আর ‘বিদা ‘ত’ করা যায় না। ওদিকে ছেলের যুক্তি, “তাহলে তো প্লেনে উঠে হজ্জে যাওয়াও ‘বিদা ‘ত’, কারণ রাসুল স: উটে চরে হজ্জে গিয়েছেন।”
মুন্শীপুর গ্রামে করিম মুন্সীর ছেলে বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে গ্রামের মসজিদ পাকা করার জন্য। মসজিদ পাকা হয়েছে এখন মাইক লাগানোর পালা। ওমনি গ্রামের মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত ” মাইকে আজান দেয়া বি’দাত, “রাসুলএর যুগে কি মাইকে আজান দেয়া হত? এটা ধর্মে নতুন, এটা বিদা ‘ত”- একপক্ষের যুক্তি। অন্য পক্ষ বলে, “আরে রাসুলের মসজিদে তো ফ্যান ছিল না, এটা ‘বিদা ‘ত’ না ?”
“রাসুল খালি চোখে চাদ দেখেছেন – দুরবীন দিয়ে দেখলে চলবে না, এটা ‘বিদা ‘ত”
“আচ্ছা ভাই চোখে চশমা থাকতে পারবে?”
“আমি নিজে চাদ দেখি নাই, টেলিভিশনে শুনেছি চাদ উঠেছে , রাসুল স: তো টিভিতে শুনে ঈদ করতেন না, এটাও কি বিদা ‘ত হবে ?”
” আরে ভাই কি করেন, কি করেন ?”
” ক্যান, নামাজের শেষে মুনাজাত করি। ”
” হায় ! হায় ! বিদা’ত করলেন তো; নামাজের পরে মোনাজাত তো বিদা’ত ! ”
এগুলো হলো আমাদের মত (আমিও included ) অতিভক্ত কমজ্ঞাতদের ‘বিদা’ত’ ভার্সন। এবার দেখা যাক এসময়ের বিশ্বসেরা ইসলামী স্কলার ইউসুফ আল কারজাভী ‘বিদা’ত” সম্পর্কে কি বলেন –
” কোনো নতুন জিনিস বা আবিস্কারের বিরুদ্ধে ইসলাম ‘বিদা’ত’ নামে অবস্থান গ্রহণ করে এরূপ ধারণা করা ভুল। কোনো নির্ভেজাল দ্বীনী বিশ্বাসে কিছু উদ্ভাবনই কেবল ‘বিদা’ত’ হতে পারে , যেমন ঈমান ও ইবাদতের শাখা প্রশাখা।”
[অর্থাত একমাত্র ঈমান/ বিশ্বাস ও ইবাদতের মধ্যে সংযোজন বি’দাত, অন্য সংযোজন বিদা’ত নয় ।]
ইউসুফ আল কারজাভী, ইসলামী আন্দোলন,আধুনিক যুগ, কৌশল ও কর্মসুচী , পৃষ্ঠা -১২৫
“It is wrong to think that Islam stands against anything new or invented classifying it under the name of ‘bid’ah’.In fact, a bid’ah is what is invented in matters of a purely religious nature, such as creed and worship and their branches; while the changing matters of life such as norms, traditions, customs and administrative, social, cultural and political practices are not be regarded at all as bid’ah. They fall under what the ulama call ‘al maslahah al mursalah’ (public interest) as explained by Imam Al Shatibi in his book ‘Al I’tisam’.” – Priorities of the Islamic Movement in the Coming Phase by Shaykh Yusuf Al-Qaradawi, Awakening Publication, April 2000; page: 158, 159.
কি বুঝলেন ?

 

প্রোষিতভর্তৃকা-২

প্রোষিতভর্তৃকা-২


ফাতিমা মারিয়াম


ঘটনা-৩
প্রায় একমাস আগের কথা। আমার এক চাচাত দেবরের মেয়েকে মালয়েশিয়া প্রবাসী এক দোজবরে পাত্রের কাছে বিয়ে দেয়া হয়েছে। মেয়ের বয়স মাত্র ১৫ বছর। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলের বাড়ীর যা অবস্থা শুনেছি, কোনভাবেই এই মেয়ের পরিবারে তাদের আত্মীয়তা করার কথা নয়। গতবছর তার প্রথম বউ একজনের সাথে পালিয়ে যায়। সে এবার দেশে এসে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে বিয়ে করেছে। তাদের যুক্তি হল যেহেতু গরীব ঘরের মেয়ে তাই এই মেয়ে তাদের কথামত চলবে। শুনেছি এ মাসের শেষের দিকে সে চলে যাবে। আবার ২/৩ বছর পর আসবে।

ঘটনা-৪
গতকাল সকালবেলা আমার ফুফাত ভাই ফোন করে উনার মেয়ের বিয়ের দাওয়াত দিলেন। মেয়েটি এবার এইচ.এস.সি. পরীক্ষা দিবে। আমি জানতে চাইলাম- ‘পাত্র কি করে, পড়াশোনা কতটুকু করেছে?’
ভাই জবাব দিলেন,’ বিদেশ থাকে, অবস্থা বেশ ভালো। আর পড়ালেখা তেমন একটা নাই।’ ছেলে এস.এস.সি পাশ কি না এটাও উনি স্পষ্টভাবে বলতে পারলেননা।
এক পর্যায়ে আমি জানতে চাইলাম- ‘বিয়ের পর কি মেয়েকে বিদেশে নিয়ে যাবে?’
উনি অবাক হয়ে বললেন,’ওকে নিবে কেন?’
এই হচ্ছে আমাদের অভিভাবকদের অবস্থা।

ঘটনা-৫
এবার আমার শোনা একটি ঘটনা। ভদ্রমহিলার বয়স খুব বেশী নয়। এক বা দুই সন্তানের জননী। ইনি চেষ্টা করেন ইসলামী জীবন বিধান মেনে চলতে। কিন্তু দীর্ঘদিন স্বামীর অনুপস্থিতির কারনেই হোক বা অন্য কোন কারনেই হোক তিনি একজনের সাথে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন।
অনেকেই মনে করেন ধার্মিক মেয়ে বিয়ে করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই ধার্মিক মেয়েটিকে একটি ইতিবাচক পরিবেশ দেয়াও যে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দায়িত্ব তা আমরা জানিনা। অথবা জানলেও মানিনা। শুধুমাত্র তাকওয়াসম্পন্ন স্ত্রী সন্ধান করলেই কি এসব সমস্যার সমাধান হবে? স্বামীকেও তাকওয়াসম্পন্ন হতে হবে এবং বউ যাতে তার প্রাপ্য সব অধিকার পায় তা-ও স্বামীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
এই নারীও যে ‘রক্ত মাংসের তৈরি’ এই বোধটুকু যদি তার স্বামীর থাকত তবে সে নিশ্চয়ই তার বউকে ছোট বাচ্চা সহ ঢাকায় একা একা ফ্ল্যাট ভাড়া করে রাখতনা। এই চরম ঘৃণিত কাজটি করার পর সেই মহিলাই বা কতটুকু ভালো আছে তা জানিনা। তবে এই ধরণের ঘটনা আমাদের সমাজে এখন খুব বেশী মাত্রায়ই ঘটছে।

 

প্রোষিতভর্তৃকা-১

প্রোষিতভর্তৃকা-১


ফাতিমা মারিয়াম


ঘটনা-১
আমার আপন খালাতো বোনের কথা। প্রবাসী পাত্রের হাতে মেয়েকে তুলে দিয়ে পিতামাতা ভীষণ তৃপ্ত। বিয়ের কয়েকমাস পরে দুলাভাই তার কর্মস্থলে চলে গেলেন। এবার আপার কিছু সমস্যা শুরু হল। কিছুটা শারীরিক, কিছুটা মানসিক। চিকিৎসার জন্য ঢাকা আসলেন। ভাশুরের বাসায় উঠলেন। উনার বড় জা উনাকে ডাক্তার দেখালেন। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দিলেন। কোন রোগ ধরা পড়লোনা।
ডাক্তার বললেন, ‘উনার স্বামী যদি দেশে চলে আসেন তা হলে হয়তো উনি সুস্থ হয়ে যাবেন।’ কিন্তু এটা তো আর সম্ভব না। ফলে আপাও সুস্থ হলেননা। নিকটতম দূরতম সকল আত্মীয় স্বজন নিয়মিত তার খোঁজখবর নেয়া শুরু করলেন। সে দুঃশ্চিন্তা করে কি না এই বিষয়ে কেউ কোন প্রশ্ন করলে আপা সাফ জানিয়ে দিতেন – ‘আমি কোন দুঃশ্চিন্তা করিনা।’ এভাবে ২/৩ বছর কেটে গেল। দুলাভাই দেশে আসলেন। আপা পুরো সুস্থ। উনার কোন সমস্যা নেই।
এভাবে দুলাভাই দুই /তিন বছর পরপর দেশে আসতেন। বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। আপা তিন কন্যাসন্তানের জননী হয়েছেন। রোগটা রয়েই গেছে তবে তীব্রতা আগের চাইতে কম। আরও কয়েকবছর পর দুলাভাই স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসলেন। আপা সম্পূর্ণ সুস্থ।

ঘটনা-২
আমার গ্রামের এক বধুর কথা বলছি। উনি, উনার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি এই চারজন নিয়ে সংসার। উনার শ্বশুরের আরও ৩/৪টি ছেলে আছে। তারা প্রত্যেকে পৃথক সংসারে থাকে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। তারা সবাই তাদের শ্বশুরবাড়িতে আছে। জীবিকার প্রয়োজনে তার স্বামী একসময়ে প্রবাসী হতে বাধ্য হয়।
সন্তানাদি হয়নি, কমবয়সী মেয়ে। এই মেয়ের উপর যদি বাইরের শকুনের দৃষ্টি পড়ত সবাই আর দশটা ঘটনার মতই হয়ত মনে করত। কিন্তু এই বধূটি তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর (ঠিক কতদিন পরে তা আমি জানিনা) নিজ শ্বশুর দ্বারা ধর্ষিতা হয়েছে।
এই ঘটনাটি নিয়ে পুরো এলাকায় ঢিঢি পড়ে যায়। একপর্যায়ে ছেলের কানেও এই কথা যায় এবং ছেলে তার মাকে বলে বউকে যেন বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর সে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। সেই বউটি এখন কোথায় আছে, কেমন আছে, আদৌ বেঁচে আছে কিনা আমি জানিনা। গ্রামে খুব একটা যাওয়া হয়না। আমার বড়ফুফুর মুখে ঘটনাটা শুনেছিলাম।
চলবে…

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা- ৮

 

দেশের সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেয়েরা ফ্রি ন্যাপকিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশের সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেয়েরা ফ্রি ন্যাপকিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


নারী সংবাদ


দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে নারীদের ফ্রি স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, টাকার অভাবে অনেক নারী-কিশোরী স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পারে না। এই সরকারি সেবাটি গ্রামে থাকা মা-বোনদের অনেক উপকার করবে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উদযাপন’ উপলক্ষে রাজধানীর পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের গ্রামাঞ্চলের মা ও মেয়ে শিশুদের জন্য অধিক মূল্য হবার কারণে ন্যাপকিন ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। এতে করে তাদের শরীরে ক্যানসারসহ নানাবিধ জটিল রোগ সৃষ্টি হয়। এ কারণে দেশের সর্বত্র এ বছর থেকেই সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থেকে আমাদের মা- বোনদের জন্য বিনামূল্যে এই স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান করা হবে।

নিরাপদ মাতৃত্ব ও শিশু মৃত্যু হার প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক আরো বলেন, এসডিজি অর্জনে ৩.৭.২ সূচকে কৈশোরকালিন মাতৃত্ব কমানোর ব্যাপারে জোর দেয়া হয়েছে। কারণ ১৪ বছর বা তার কম বয়সী কিশোরী মায়েদের মধ্যে গর্ভজনিত জটিলতার কারণে মৃত্যু ঝুঁকি ৫ গুণ বেশি। ২০ বছরের বেশি বয়সী মায়েদের তুলনায় ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী মায়েদের মৃত্যুহার দ্বিগুণের বেশি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে চার হাজার ৬২৮টি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। জনবলের অভাবে সবগুলো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা যাচ্ছে না। এ কারণে সরকার নতুন জনবল নিয়োগের কথা ভাবছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের জনবলের অভাব রয়েছে। এই সঙ্কট কেটে যাবে বলে আশা করছি। এটা হলে আমরা সবগুলো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ব্যবস্থা করব।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে সক্ষম দম্পতিদের উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে বিবাহিত কিশোরীদের সঠিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহার ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব সেবার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়েও জোর তিনি।

এই অনুষ্ঠান থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সারাদেশের ১৫০টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম।

উল্লেখ্য, ‘পরিবার পরিকল্পনা সেবা গ্রহণ করি, কৈশোরকালীন মাতৃত্ব রোধ করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার ৭ থেকে ১২ ডিসেম্বর সারাদেশে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ পালন করা হবে। এ উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে অত্যন্ত আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে সপ্তাহটি উদযাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে অ্যাডভোকেসি সভা, প্রেস ব্রিফিং, সেবা কেন্দ্র হতে বিশেষ সেবা প্রদান, অডিও ভিডিও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, টিভি চ্যানেলে স্ক্রলিং-এর মাধ্যমে বার্তা প্রচার, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ডকুমেন্টরি প্রচার ইত্যাদি। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতারে জিংগেলও প্রচারিত হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়া বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয়ভাবে সুবিধাজনক ভেন্যুতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

সুত্রঃ মেডিভয়েস রিপোর্ট।

 

বাংলাদেশের স্বর্ণালি এক দিন

বাংলাদেশের স্বর্ণালি এক দিন


নারী সংবাদ


মুহূর্তেই সাদতোবাদো ক্রীড়া কমপ্লেক্সের কারাতে ভেনু হয়ে উঠল এক টুকরো বাংলাদেশ। সতীর্থ কারাতে খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, কোচ সবাই যেন ঈদের আনন্দে মেতে উঠলেন। কোলাকুলি পর্ব যেন শেষ হতেই চায় না। এই মিলনমেলায় সবার চোখেই ছিল আনন্দ অশ্রু। একই দিনে পোডিয়ামে তিন তিনবার জাতীয় সঙ্গীত বাজলে কোনো বাংলাদেশী চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। শিহরণে মন প্রাণ উজাড় করে গাইতে ইচ্ছা করে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’ আর যাদের কারণে এমন একটি পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে তারা হলেন আল আমিন, মারজান আক্তার প্রিয়া ও হুমায়রা আক্তার অন্তরা। ১৩তম সাউথ এশিয়ান গেমসে কারাতে ডিসিপ্লিনে ভিন্ন ভিন্ন তিনটি ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয় করে সোনালি এক অধ্যায় রচনা করেছেন। এর আগের দিন তায়কোয়ানডোতে স্বর্ণ জিতেছিলেন দীপু চাকমা।
দশরথ থেকে সাতদোবাদো এক ঘণ্টার রাস্তা। সকালে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপেক্ষা করে যারা ভেনুতে গেছেন তাদেরকে ভাগ্যবানই বলা যায়। উশু, শুটিং, তায়কোয়ানডো, কারাতেসহ অনেক ডিসিপ্লিনের ভেনুই সেখানে। খবর পাওয়ামাত্রই হা পিত্তেশ করতে করতে ছুটে চলা। ফটোসাংবাদিকদের অনবরত ফ্লাশ। বুকে পতাকা জড়িয়ে হাসি মুখে তিন স্বর্ণজয়ী কারাতেকা আল আমিন, অন্তরা ও পিয়া। কাঠমান্ডুর ক্রীড়া কমপ্লেক্সে উপস্থিত বাংলাদেশীদের চোখে মুখে বিশেষ রকমের তৃপ্তি। একই দিনে তিনটি স্বর্ণ জয়ের ঘটনা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে খুবই বিরল। বিদেশের মাটিতে তিন স্বর্ণ জয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ গৌরবের। তিনজন স্বর্ণজয়ী ক্রীড়াবিদকে একসাথে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য অন্য ডিসিপ্লিনের কর্মকর্তা, সাবেক ক্রীড়াবিদরা ছুটে এসেছিলেন হন্যে হয়ে।
গেমসের তৃতীয় দিনেও সাফল্য এলো সাদতোবাদো কমপ্লেক্স থেকে। দ্বিতীয় দিনে এসেছিল তায়কোয়ানডো আর গতকাল কারাতে থেকে। কাঠমান্ডুর সকাল গড়িয়ে দুপুরের আগেই বাংলাদেশের আরো তিনটি স্বর্ণ যোগ করেছে কারাতে। কারাতে সেন্টারে বাংলাদেশের খুশির বন্যা। কোচ-কর্মকর্তা-কাভার করতে আসা সাংবাদিক সবাই আনন্দে মাতোয়ারা। মাত্র ঘণ্টা দু’য়ের ব্যবধানে তিন স্বর্ণ। এর চেয়ে আর আনন্দের উপলক্ষ কী হতে পারে। উপস্থিত ভিনদেশীদের আফসোসের মাত্রাটাও ছিল চোখে পড়ার মতো। হয়তো ভাবছিল ইস আমরা যদি জিততে পারতাম।
কাঠমান্ডুর ঠাণ্ডা সকালে বাংলাদেশের আড়মোড়া ভেঙেছে কুমিতে অনূর্ধ্ব ৬১ তে আল আমিনের স্বর্ণজয়ের মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানের জাফরকে ৭-৩ পয়েন্টে হারান। এর আগে সেমিফাইনালে হারান নেপালি রাজীব পোদাসানিকে। আল আমিনের স্বর্ণপদকের পরেই উল্লাসের উপলক্ষ তৈরি করেন মারজান আক্তার প্রিয়া। কুমি অনূর্ধ্ব ৫৫ কেজিতে পাকিস্তানের কাউসার সানাকে ৪-৩ পয়েন্টে হারান। কিছুক্ষণ পর কুমিতে অনূর্ধ্ব ৬১ কেজিতে হুমায়রা আক্তার অন্তরা নেপালের আনু গুরংকে ৫-২ পয়েন্টে হারিয়ে তৃতীয় স্বর্ণ জয় করেন।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

শীতকালে নবজাতক শিশুর যত্ন


শিশুর জন্য স্বাস্থ্যসেবা


ঋতু পরিবর্তনের ফলে শীতকালে শিশুরা খুব অল্পতেই অসুস্থ্য হয়ে পরতে পরে। এমনিতেই শিশুর যত্নে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয় আর শীতকালে শিশুর চাই বাড়তি যত্ন।

শিতে শিশুকে উপযুক্ত আরামদায়ক ও কিছু বাড়তি গরম কাপড় গায়ে দিতে দিবেন। তার মাথা, ঘাড়, হাত এবং পা ভালো ভাবে গরম কাপড়ে ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করুন। সাধারনত প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের চেয়ে শিশুদের এক লেয়ার বেশি কাপড় নিশ্চিত করুন। আর অবশ্যই শিশুদের জন্য কয়েক জোড়া শীতের কাপড় ব্যবহার করবেন এবং দুই থেকে তিন দিন অন্তর অন্তর তা পরিস্কার করে ধুয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিবেন।

শীতে শুধু ঠাণ্ডা লাগার কারণেই যে বাচ্চা অসুস্থ হবে তা নয় বরং শীতকালীন অসুখের মূল কারণ বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগজীবাণু যা সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশেষ করে শিশুদের সহজেই আক্রমণ করে। আর সেইসাথে থাকে প্রচুর ধুলোবালি যা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে নাক দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করলে গলায় কিংবা নাকে প্রদাহ, সর্দি, কাশি সহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। আর মাত্রাতিরিক্ত দূষিত ধোঁয়া এবং ধুলো শিশুদের নিউমোনিয়া কিংবা ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। ভালো ভাবে হাত না ধুলে এর মাধ্যমে অনেক রোগ ব্যাধি ছড়ায়। বিশেষ করে শিশুদের ভালো ভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। শীতে গরম পানিতে শিশুকে হাত ধুতে দিন, কারণ ঠান্ডা লাগার ভয়ে শিশু ভালো ভাবে হাত না ধুলে সর্দি, কাশি ও নিওমোনিয়ার জীবানুতে আক্রান্ত হবার ভয় থাকে।

শুষ্ক শীতের মৌসুমে শ্বাস প্রশ্বাস এর সাথে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি পানি বেড়িয়ে যায়। এটি একটি বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় আর এজন্য সর্বদা শিশুদের জলযোজিত রাখতে হবে। এই ঋতুতে বাচ্চাদের বেশি বেশি গরম পানিয় পান করতে দিন তাতে পানি শুন্যতা পূরণ হবে আর গরম পানি তাকে ঠান্ডা লাগা থেকে দূরে রাখবে। শীতে সবার ত্বকই শুস্ক ও রুক্ষ হয়ে যায় আর বিভিন্ন চর্ম রোগ আক্রমন করে। শীতে চাই ত্বকের পর্যাপ্ত ময়েশ্চারাইজার। শীতকালে আপনার বাচ্চা স্কুলে অন্যদের মাধ্যমে কিছু ছোঁয়াচে চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারে। শীতে শিশুর ত্বকের যত্ন নিতে বিশেষ খেয়াল রাখুন। নিয়মিত লোশন লাগান যেন ত্বক শুষ্ক হয়ে না যায়।

শীতকালের ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে শিশুকে সুরক্ষা দিতে খোলামেলা পরিবেশে খুব বেশি খেলাধুলা করতে না দেয়ায় ভালো বিশেষ করে শৈত প্রবাহের সময়। খুব বেশি ঠান্ডা আবহাওয়া শিশুদের অনেক ক্ষতি করে আর কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। আরও লক্ষ্য রাখবেন শিশু যেন মেঝেতে খালি পায়ে না হাঁটে। শিশুর জন্য বাসায় ব্যবহার উপযোগী জুতা কিনতে পারেন পাশাপাশি ঘরের মেঝেতেও মাদুর বা মোটা কাপড় বিছিয়ে দিতে পারেন। তাহলে মেঝেতে বসে খেলা করলেও ঠাণ্ডা লাগবে না।

শীতে আপনার নবজাতক শিশুর (১ থেকে ২৮দিন বয়সী শিশু) জন্যে আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। নবজাতক শিশুর যত্ন সম্পর্কে জানতে পড়ুন শীতে নবজাতকের যত্ন – করণীয় ও পরিচর্যা।

আপনার শিশুকে শীতকালে বেশি বেশি ফলমূল, শাকসবজি ও সুষম খাদ্য খাইয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করুন তাতে করে আপনার বাচ্চার শুধু শীতের রোগ না বরং অন্য সকল রোগের ঝুঁকিও কমে যাবে। এই মৌসুমে নানান রকমের রোগ বালাই থেকে দূরে থাকতে ছোট্ট সোনামণিদের খাওয়ান মৌসুমি ফল ও সবজি। মূল কথা বাচ্চার ভিটামিন প্রাকৃতিক ভাবেই পূরণ করুন। এছাড়া দৈনিক এক চামচ মধু খাওয়ান তাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে ও সর্দি-কাশি কিংবা ঠাণ্ডা লাগার ঝামেলা একদম কমে যাবে।

বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে শীত মৌসুম এলেও অভ্যাসবসত ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি পান, আইসক্রিম খাওয়া বা রাতের বেলায় ফ্যান ছেড়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণে টনসিল বা গলায় ব্যথা হয়। তাই তাদের এইসকল কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে।

শীত বলে পরিচ্ছন্নতায় অবহেলা না করে শিশুকে নিয়মিত গোসল করান। তবে দুপুর ১২ টার আগেই গোসলের পর্ব সেরে ফেলুন। গোসলের পর বাচ্চার মাথা ও শরীর ভালো করে মুছে তারপর জামা কাপড় পরাবেন। ত্বক ভালো রাখতে অবশ্যই বেবি লোশন বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন নইলে শীতের রুক্ষ বাতাস ত্বকের ক্ষতি করবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য শিশুর শরীর হালকা গরম পানি দিয়ে ধোয়ালেও মাথা ধোয়ানোর সময় অবশ্যই স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করতে হবে। বেবি-শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে সপ্তাহে দুই-এক দিন। তবে শিশুর চুলে খুশকি হলে তা ভালো হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ওর চুলে তেল দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শ্যাম্পু করার সময় শিশুর মাথা আলতোভাবে মাসাজ করতে হবে। জোরে মাসাজ করলে শিশুর ফলিকল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

সুত্রঃ ভোরের কাগজ।

 

সমুদ্রের টানে নদীর ছুটে চলা- ৭


আফরোজা হাসান


বিয়ে হয়ে গিয়েছে এখন একটু স্বভাব বদলাতে চেষ্টা কর! কয়েকদিন আগেও একবার তুমি এই কথাটা বলেছো শাবাবকে। সেদিন ছোট ফুপ্পি এসেও একগাদা লেকচার শুনিয়ে গেলো আমাদেরকে। এখন থেকে এভাবে চলবি, ঐভাবে বলবি, এটা করবি না, সেটা ভাববি না! ইত্যাদি ইতাদি! বিয়ে জিনিসটা তাহলে কি মামণি? জেলখানা? কয়েদি হয়ে ছোট্ট একটু পরিসরে বন্দি থাকা কি বিয়ের শর্ত?

মাহাম কি হয়েছে তোর? এভাবে কথা বলছিস কেন? বেশ অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন সাবিহা।

একটা মেয়ে যার চোখে হাজারো স্বপ্ন, মনে ফুল-পাখী-প্রজাপতি- রংয়ের ছড়াছড়ি। যার বাঁধনহারা মনটা মুক্ত বিহঙ্গের ডানা মত মেলে উড়তে চায়, খেলা করতে চায় মেঘেদের কোল ঘেঁসে, গাঁথথে চায় তারার মালা, ভিজতে চায় জোছনার শিশিরে! বিয়ে নামক শব্দটার মাঝে কি এতই জোর যে সব কেড়ে নেবে তার মন থেকে? এই একটা বন্ধনের কাছে বাঁধা পরে যাবে জীবনের সব স্বপ্ন? সব শখ? সব আনন্দ? কেন মামণি?

কি বলবেন বুঝতে না পেরে নির্বাক হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলেন সাবিহা। শাবাবও বোনের মুখে এমন কথা এরআগে কখনো শোনেনি তাই বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে রইলো। মা আর বোনের চেহারা দেখে হাসি ফুটে উঠলো মাহামের চেহারাতে। বলল, আমি ইনজেনারেল কথাগুলো বললাম মামণি। আমাদের দুজনের একজনের খালার বাড়িতে, অন্যজনের চাচার বাড়িতে বিয়ে হয়েছে। আমাদের পারিবারিক বন্ধন যেমন দৃঢ়, শরীয়তের বিধান ছাড়া অন্যসব ক্ষেত্রে প্রচণ্ড রকম মুক্তমনা আমরা সবাই। আমরা সবাই স্বাধীনতা প্রিয়, তাই কেউ কারো স্বাধীনতাতে হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু বেশির ভাগ মেয়েদের ক্ষেত্রেই তো এমন হয়না। নতুন এক ভুবনের পথ উন্মুক্ত হবার কথা যে বন্ধনের দ্বারা, সেই বন্ধনই তাকে আস্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলে। চোখের সামনে নোটিশ বোর্ড ঝুলিয়ে দেয় এটা করতে পারবে না, ওটা তোমাকে মানায় না, বিয়ে হয়ে গেছে তারমানে অনেক বড় হয়ে গিয়েছো তুমি। হাসি-আনন্দ-উল্লাস এখন অশোভন তোমার জন্য!

ব্যাপারটা আসলে ঠিক তা না! বললেন সাবিহা।

মাহাম বলল, ব্যাপারটা আসলে কি সেটাই আমি জানতে আগ্রহী মামণি। বিয়ে কেন একটা মেয়েকে তার বয়স অনুযায়ী চলতে বাঁধা দেবে? বিয়ে হয়েছে বলে কেন আমরা পারবো না সতেরো বছর বয়সি মেয়েদের মত ছুটে বেড়াতে? শরীয়তের কোথাও তো এমন কোন বিধান নেই যে বিয়ে মানেই দাদী আম্মা হয়ে যাওয়া।

এইসময় তো ফুমা ফুমা বলে চিৎকার করতে করতে মিহির ঢুকলো। মাহাম হেসে বলল, কি হয়েছে আমার সোনা বাবা? মাহামের হাত ধরে টানতে টানতে মিহির বলল, আয়ান বাডি এসেছে। চলো চলো তোমাকে ডাকছে। যেতে যেতে মাহাম বলল, আমাদের কথা কিন্তু শেষ হয়নি মামণি। এই ব্যাপারে আমি অবশ্যই তোমার সাথে কথা বলবো।

মাকে কনুই দিয়ে হালকা খোঁচা দিয়ে শাবাব বলল, আজকে তোমার খবর আছে মামণি! হিহিহি… তোমার মায়াবতী কন্যার কচ্ছপি কামড় থেকে আজ আর মুক্তি নাই তোমার! তবে যাই বলো মাহামের কথাগুলোতে যুক্তি আছে মামণি। আমার মাথায় কখনো এমন চিন্তা আসেনি কখনো সেটা ভাবছি!
আয়ানের না রাতে আসার কথা শুনলাম। শাবাবের কথা কানে তুললেন না সাবিহা।

ঠিকই শুনেছিলে। আসলে ভাইয়া ফোন করেছিলো কিছুক্ষণ আগে। আমি ফুলিয়ে ফাপিয়ে ভাব দিয়ে মাহামের অসুস্থতার কথা বলেছি। সেজন্য হয়তো চলে এসেছে মিটিং টিটিং ছেড়ে।

হেসে ফেললেন সাবিহা। শাবাবের কান ধরে ঝাঁকিয়ে বলল, তুই পারিসও দুষ্টুমি করতে। দেখ কিছু লাগবে কিনা আয়ানের। মাকে আদর করে দিয়ে হাসতে হাসতে বেড়িয়ে গেলো শাবাব।

চলবে…

 

এই কবিতার কোনো নাম নেই

এই কবিতার কোনো নাম নেই


সুমাইয়া তাসনিম


১.
বহুক্ষণ আগে নিস্তেজ হয়ে যাওয়া মৃতদেহটার
ফিনকি দিয়ে গড়িয়ে পড়া রক্তে প্রতিফলিত সূর্যটা
কেমন আশ্চর্য উজ্জ্বলতায় ঝিকমিকিয়ে উঠল!
সে রক্তে হাত ছুইয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম,
কৈশোরের মতই দারুণ উষ্ণ সে লাল!

এখানে একটা শুভ্র ফুলের বাগান ছিল।
সাদা বিনয় আর শুদ্ধতার প্রতীক।
এখানকার বাতাস ছিল সুবেহ সাদিকের
প্রথম পরিশুদ্ধ বাতাসের মতই শীতল।
এখন অবশ্য সে সফেদ স্নিগ্ধতা
ক্রমাগত ঢেকে গেছে লাল রক্তে।
লাল মানে ঔদ্ধত্য,
লালে যেন আহ্বান আছে বিপ্লবের!
বাতাস হয়ে উঠছে লু হাওয়ার মত অসহনীয় উষ্ণ।
বহুদূর-দূরান্ত থেকে রক্তের গন্ধ নিয়ে আসা এ বাতাস এসেছে,
মিসর, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, পূর্ব তুর্কিস্তান,
আরাকান, কাশ্মীর থেকে মিন্দানাও হয়ে।
সত্যের সুগন্ধি এত তীব্র কে জানতো!

সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া ছেলেটা তার
গোলাপের মত রক্তাভ ঠোঁটে প্রথম চুমু খেয়েছিল
একটা দু’নলা বন্দুকের হাতলে।
রক্তকমলের মত রাঙ্গা চোখজোড়া থেকে
ঠিকরে বেরিয়ে আসা আগুনের ফুলকিগুলো
শেষবারের মত তার গাল বেয়ে নেমে এসেছিল
কসম আর কিসাসের জন্যে।
কসম! পূর্বসূরীদের রক্ত সিঞ্চিত উর্বরতম মাটিতেই
এবার চাষ হবে যুগান্তরের শ্রেষ্ঠ বিপ্লব।

২.
তন্দ্রাতুর চোখে ঝিমোতে ঝিমোতে
সতচকিত হয়ে সামনে চাইলাম হঠাৎ,
আমি যেন কোথাও নাকারা বেজে উঠতে শুনলাম!
কোথাও কি নতুন করে শপথ হচ্ছে
বায়াত আর-রিজওয়ানের?