banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইন পর্ব-১

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইন পর্ব-১


নারীর জন্য আইন


নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়।

নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সংঘটিত কয়েকটি অপরাধ চিহ্নিত করে তার দ্রুত বিচার ও শাস্তি বিধান নিশ্চিত করার জন্য এই সব আইন। সাধারণভাবে সংঘটিত কয়েকটি অপরাধের মধ্যে অন্যতম হলো দহনকারী পদার্থ দ্বারা কোনো নারী বা শিশুকে আহত বা মৃত্যু ঘটানো। দহনকারী পদার্থের মধ্যে এসিড নিক্ষেপের অপরাধও অর্ন্তভূক্ত। বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে নির্যাতন মানবাধিকারের সর্বাধিক লঙ্ঘন। এই নির্যাতন সূক্ষ্ম এবং প্রকট উভয় ধরনেরই হতে পারে। বাংলাদেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়া বিশাল।

সংজ্ঞা

বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকলে,

এই আইন,

(ক) “অপরাধ” অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ

(খ) “অপহরণ” অর্থ বলপ্রয়োগ বা প্রলুব্ধ করিয়া বা ফুসলাইয়া বা ভুল বুঝাইয়া বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন স্থান হইতে কোন ব্যক্তিকে অন্যত্র যাইতে বাধ্য করা

(গ) “আটক” অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্থানে আটকাইয়া রাখা

(ঘ) “ট্রাইব্যুনাল” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইব্যুনাল

(ঙ) “ধর্ষণ” অর্থ ধারা ৯ এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 375 এ সংজ্ঞায়িত ærape”

(চ) “নবজাতক শিশু” অর্থ অনূর্ধ্ব চল্লিশ দিন বয়সের কোন শিশু

(ছ) “নারী” অর্থ যে কোন বয়সের নারী

(জ) “মুক্তিপণ” অর্থ আর্থিক সুবিধা বা অন্য যে কোন প্রকারের সুবিধা

(ঝ) “ফৌজদারী কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);

(ঞ) “যৌতুক” অর্থ-

(অ) কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে বিবাহের কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ; অথবা

(আ) কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ;

(ট) “শিশু” অর্থ অনধিক ষোল বত্সর বয়সের কোন ব্যক্তি;

(ঠ) “হাইকোর্ট বিভাগ” অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট এর হাইকোর্ট বিভাগ৷

নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে নির্যাতন উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি সাংঘাতিক বড় সমস্যা যার শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া আগামী প্রজন্ম ও সাধারণভাবে সমাজের ওপর পড়ছে। বাংলাদেশে মানব নিরাপত্তার উদাহরণ রচনার ক্ষেত্রে এই সহিংসতা ও নির্যাতনের অবসান ঘটানো একান্ত আবশ্যক।

সুত্রঃ http://bdlaws.minlaw.gov.bd

 

জুস পান করে মারা যাওয়া সুস্মিতার বোনের আবেগঘন স্ট্যাটাস

নারী সংবাদ

হকারের নিকট থেকে কেনা জুস পান করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া মেধাবী কলেজ শিক্ষার্থী সুস্মিতা হোম চৌধুরী মন্টির মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার বোন সুমনা বাসু। ‘বোধনের আগেই বিসর্জন’ শিরোনামে সুম্মিতাকে নিয়ে বোন সুমনা বাসুর দেয়া আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।

‘মৃত্যু নয় হত্যা- বিচার চাই’ লিখে সুম্মিতার মৃত্যুর বিচার দাবি করে ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন অসংখ্য মানুষ। প্রথম শ্রেণি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রথম হওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী সুস্মিতার এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। আবার অনেকেই ময়মনসিংহ ব্রিজের মোড়কে চুরি-ছিনতাইমুক্ত করার দাবিতেও প্রতিবাদ করছেন।

অপরদিকে সুস্মিতার বাবা কাঞ্চন কুমার হোম শনিবার সকালে মেয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি আকুতি করে বলেন, তার মেয়ের মতো আর কোনো মেয়ের যেন এভাবে মৃত্যু না হয়।

সুস্মিতা হোম চৌধুরী মন্টির জন্য শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য কেনা নতুন কাপড়ও শেষকৃত্যানুষ্ঠানে বিসর্জন দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তার বোন সুমনা বসু ‘বোধনের আগেই বিসর্জন’ শিরোনামে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘যাকে নিয়ে আজ লিখতে বসেছি কোনোদিন কল্পনাও করতে পারিনি ওকে নিয়ে এভাবে লিখবো। কতো মজা করলাম বোনরা মিলে রুমার বিয়েতে এটাই শেষ মজা ছিল? সেদিনও বাসায় আসলি এটাই কি শেষ দেখা ছিল? কত গল্প করলাম ভাবলাম পূজায় বাড়ি যাব। দেখা হবে। কিন্তু কাজটা ঠিক হলো না মন্টি। বোধনের আগেই বিসর্জন।’

উল্লেখ্য, হকারের কাছ থেকে কেনা জুস পান করে মৃত্যুবরণ করেন মুমিনুন্নেছা সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি)। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের ডৌহাখলা গ্রামের কাঞ্চন কুমার হোম চৌধূরীর কন্যা। ১৩দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সুস্মিতা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

পারিবারিক সূত্র ও সাবেক ইউপি সদস্য নিতাই কুমার চন্দ জানান, সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি) গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বোনের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ ব্রীজের মোড়ে দুই শিশু হকারের নিকট থেকে একটি কোম্পানির জুস কেনেন। কিন্তু জুসটি তখন না খেয়ে বোতলটি ব্যাগে রেখে দেন পরে খাবেন কিংবা তার ছোট ভাগ্নেকে দেবেন বলে। কিন্তু ঢাকায় গিয়ে জুসের কথা ভুলে যান তিনি। জুসটি ভাগ্নেকে আর খাওয়ানো হলো না।

এরপর গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে ব্যাগের কাপড় সরাতে গিয়ে জুসের বোতলটি চোখে পড়ে। এরপর তিনি মাকে বলেন, আজ রাতে ভাত খাব না, শুধু একটু দুধ আর এই জুস খেয়ে নেব। তার মা আর জোর না করলে জুস খেয়েই ঘুমাতে যান তিনি। পরদিন সকালে আর ঘুম ভাঙেনি সুম্মিতার। যে মেয়েটি প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, কিন্তু সেদিন সকাল ১০টায়ও ঘুম না ভাঙায় পরিবারের লোকজন জোর করে তার ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে কোনোরকমে ঘুম ভাঙলেও তিনি আর মাথা তুলে বসতে পারছিলেন না।

এরপর স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চারদিন চিকিৎসা শেষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে আসার পর সেদিন রাত থেকেই আবারো ডায়রিয়া শুরু হয় সুস্মিতার। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে পুনরায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপর টানা ৮দিন চিকিৎসার পর সুম্মিতার অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার বিকেলে ডাক্তর তাকে ঢাকায় রেফার করেন। ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সুম্মিতাকে নিয়ে ত্রিশাল থেকে পুনরায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসেন তারা। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সুস্মিতা আর বেঁচে নেই।

নিহত সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি) মুমিনুন্নেছা সরকারি কলেজ থেকে গণিতে অনার্স ও সদ্য মাস্টার্স পরীক্ষায় দুটোতেই প্রথম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।