banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

কাবিননামায় নারীদের জন্য সুখবর

কাবিননামায় নারীদের জন্য সুখবর


নারীর  জন্য আইন 


বিয়ের কাবিননামার পাঁচ নম্বর কলাম থেকে কনের বেলায় ‘কুমারী’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘অবিবাহিতা’ যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এটাকে নারীদের জন্য সুখবর বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

কারণ এক্ষেত্রে ‘কুমারী’ শব্দটি ছিল নারীদের জন্য অসম্মানজনক বলে মনে করা হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশে মুসলমান নারী-পুরুষের বিয়ের নিবন্ধন ফরমের পাঁচ নম্বর কলাম থেকে কনের বেলায় ‘কুমারী’ শব্দ বাদ দেয়া ও চার নম্বর কলামে (ক) যুক্ত করে বরের ক্ষেত্রে ‘বিবাহিত’, ‘বিপত্নীক’ ও ‘তালাকপ্রাপ্ত কিনা’ শব্দগুলো সংযোজন করতে বলা হয়েছে।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামায় নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি করে রোববার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

কোর্ট রায় দিয়ে বলেছে, ‘কুমারী’ শব্দটা বাদ দিতে হবে। কারণ এটা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের ব্যপার। কাবিননামায় এর উল্লেখ থাকা মানে বৈষম্য সৃষ্টি করা। আদালত রায়ে একটি কলামও যোগ করে দিয়েছেন। যেখানে লিখতে হবে বর বিবাহিত কিনা, তালাকপ্রাপ্ত কিনা কিংবা বিপত্মীক কিনা।

কাবিননামার ফরমে পাকিস্তান আমলে তৈরি। স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের জায়গায় বাংলাদেশ বসানো ছাড়া আর কোনো সংশোধন করা হয়নি।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক আইনের ৯ ধারার ওই অনুচ্ছেদটি বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নারীপক্ষ এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ২০১৪ সালেল ৭ সেপ্টেম্বর রিট আবেদন করে।

আবেদনে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশন ফরমে (নিকাহনামায়) শুধু কনের বৈবাহিক অবস্থা ও তথ্য সন্নিবেশিত করার জন্য অনুচ্ছেদ রয়েছে।

তবে বরের বৈবাহিক অবস্থা-সম্পর্কিত কোনো কলাম নেই। এটা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক। সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিষয়টি বৈষম্যমূলক এবং সংবিধান পরিপন্থী।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রেজিস্ট্রেশন ফরমের (নিকাহনামা) পাঁচ নম্বর কলাম কেন বৈষম্যমূলক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না; তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।

ওই কলাম থেকে ‘কুমারী’ শব্দটি বিলোপ করে ফরমটি সংশোধন করা এবং বর সম্পর্কিত কোনো ক্রমিক ফরমে কেন উল্লেখ করা হবে না; তাও জানতে চাওয়া হয়।

জনপ্রশাসন সচিব, ধর্ম সচিব, প্রিন্টিং এবং প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচাকলসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এর মধ্যে রুল শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে মতামত দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বেলায়েত হোসেন।

গত ১৬ জুলাই মতামত দেয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফরমের ৫ নম্বার কলামে কলামে এই শব্দটি থাকা উচিত না। কারণ এই শব্দটি ব্যক্তির মর্যাদা ও গোপনীয়তাকে ক্ষুণ্ণ করে; যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

এছাড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক নয়। মুসলিম শরীয়তে এ ধরনের শর্ত নেই।

#যুগান্তর