banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

“আরাফাত দিবসের দোয়া “

“আরাফাত দিবসের দোয়া “


অন্যান্য


’দুআ অর্থ হলো ডাকা, আল্লাহকে ডাকা। ‘ইস্তিগফার’ অর্থ হলো মাফ চাওয়া। আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া। আর ‘ইনাবত ইলাল্লাহ’ অর্থ আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া। দুআ, ইস্তিগফার ও ইনাবাত ইলাল্লাহ মুমিনের প্রত্যাশা। ঈমানদারের সম্বল। মুমিন যখন সুখে থাকেন তখন আল্লাহকে ডাকেন, যখন কষ্ট থাকি তখনও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়না। সুখ ও শান্তি আল্লাহর তরফ থেকে আসে।

“তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দিব।” (আল-মুমিন:৬০)

আরাফাত অর্থ পরিচয়। হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়ার পুনঃপরিচয়ের ক্ষেত্র এবং উভয়ের ক্ষমাপ্রাপ্তির স্থান হবার মর্যাদা লাভের কারণেই এ স্থানটি ‘ময়দান-এ আরাফাত’ নামে পুণ্যস্থানরূপে খ্যাত।

হযরত ইবরাহীম (আঃ)সহ বহু নবী রসুল ও তাদের অনুসারীগণ এ ময়দানে এসে আল্লাহর নিকট কান্নাকাটি করেছেন। আল্লাহর পথের অনুসারী মানুষরা যুগ যুগ ধরে হজ্ব দিবসে নিজেদের গুণাহখাতা ও অপরাধসমূহের কথা স্মরণ করে এখানে আসছেন।

মহানবী (সাঃ) ঘোষণা করেছেন, কোনো লোক যথার্থ অর্থে হজ্ব পালন করার পর নিস্পাপ শিশুতুল্য হয়ে যায়। এমনকি ৪০ দিনের মধ্যে কেউ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে, সাক্ষাৎকারীর ছোট খাটো অপরাধসমূহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।

মেশকাত। মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘‘আরাফাতের দিন আল্লাহ তায়ালা সর্বনিম্ন আসমানে অবতরণ করেন এবং ফিরিস্তাদের নিকট নিজের বান্দাদের ব্যাপারে গর্ব করে বলেন,– দেখো, আমার বান্দাগণ ধূলী ধূসরিত হয়ে চতুর্দিক থেকে আমার কাছে আসছে। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি যে, তাদের আমি ক্ষমা করে দিলাম। অতঃপর ফিরিস্তারা বলবে, হে পরোয়ারদেগার! উমক ব্যক্তি যে বিলম্বে এসেছে? তখন আল্লাহ বলেন, আমি তাকেও মাফ করে দিলাম।’– (শরহে সুন্নাহ)

রাসুল (সা:) আরাফাতের দিন দু’হাত এমন ভাবে উঠালেন, যেভাবে একজন মিসকিন খাবার প্রার্থনা করে। অতঃপর দোয়া করলেন,

আল্লাহ ব্যতিত আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি এক, তার কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব ও সকল প্রশংসা তারই জন্য নিদিষ্ট। সব কল্যাণ তারই হাতে। তিনি সকল বিষয়ে শক্তিমান।

হে আল্লাহ! আমার অন্তরে আলো দান করুন, আমার কর্ণে আলো দিন, আমার দৃষ্টি শক্তিকে জ্যোতির্ময় করে দিন।

হে আল্লাহ! আমার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দিন এবং আমার কাজকে সহজ করে দিন।

হে আল্লাহ! আমি আমার অন্তরের কুমন্ত্রনা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, কর্মের বিভিন্নতা ও কবরের পরিক্ষা থেকেও।

হে আল্লাহ! আমি রাতে সংগঠিত অমঙল ও দিনের আলোয় সংগঠিত অকল্যান থেকেও আশ্রয় চাই। আর ঐসব অকল্যান থেকে আশ্রয় চাই যা বাতাসে বয়ে বেড়ায়, আর ঐসকল অনিষ্ট থেকে, যা কালের দুর্বিপাকে সংগঠিত হয়।

হে আল্লাহ! আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা। যেমনি ভাবে প্রশংসা আপনি করতে বলেছেন, আমরা যা বলছি তার চেয়েও উত্তম ভাবে।

হে আল্লাহ! আমার নামাজ, আমার কোরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবই আপনার জন্য নিবেদিত। আপনারই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন।

হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমার যাবতীয় সম্পদের অধিকর্তা।

হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি আমার কথা শুনছেন, আমার অবস্থা দেখছেন। আমার গোপন প্রকাশ্য সবই আপনি দেখেন। আমার কোনো কাজই আপনার নিকট অস্পষ্ট নয়।

আমি হতভাগা, নিঃস্ব, সাহায্যপ্রার্থী, আশ্রয় প্রার্থী, ভীত সন্ত্রস্ত্র, বঞ্চিত এবং গুনাহ ও অপরাধ স্বীকারকারী।

একজন মিসকীনের মতই আপনার দরবারে প্রার্থনা করছি। অপদস্ত ও অপরাধীর ন্যায় অনুনয় বিনয় করছি। ভীত পযুর্দস্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির ন্যায় আপনাকে ডাকছি। যার গর্দান আপনার সামনে অবনত। আপনার সন্তুষ্টির জন্যই যার নয়ন অশ্র প্রবাহিত করে। যার দেহ বিনয়াবনত রয়েছে। যার নাসিকা ধুলি মলিন হয়েছে।

হে আল্লাহ…….!!!

আপনার নিকট পেশ করা আমার এ দোয়া প্রত্যাখ্যান করে আমাকে হতভাগা করবেন না। আমার প্রতি দয়ালু ও মেহেরবান হোন।

হে আল্লাহ তুমি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করতে ভালোবাসো। আমাকে ক্ষমা করে দাও।