banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

বাদলা দিনে মনে পড়ে

বাদলা দিনে মনে পড়ে


ফাতিমা মারিয়াম


আজ ছোটবেলার কথা ভীষণ মনে পড়ছে।

সেই বৃষ্টির দিনগুলির কথা। ঐ যে, যেদিন সকাল থেকেই আকাশ মুখ কালো রাখত সেদিনের কথা। একসময় সেই গোমড়া মুখো আকাশ থেকে ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হত।

আহা! কী আনন্দ! টিনের চালে বৃষ্টির একটানা ঘুঙুর পায়ে রুমঝুম রুমঝুম নৃত্য।

আম্মার চোখ ফাঁকি দিয়ে বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দকে এখন আর কিছুর সাথেই তুলনা করতে পারিনা। মধ্যাহ্নভোজনের পর কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকতাম। হালকা হালকা শীতের একটা আমেজ থাকত। হয়ত অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টিতে ভেজার জন্যই এই শীত শীত ভাবটা আসত।

বিকেলবেলা বৃষ্টির পানি ভর্তি উঠানে পা ডুবিয়ে হাঁটতাম। আম্মার বকুনিতে কান ঝালাপালা। কিন্তু সেই বকুনিকে উপেক্ষা করেই সময়টুকু পার করতাম। আমি কাগজের নৌকা বানাতে পারতাম না! তাই সেই আনন্দ কখনো নিতে পারিনি। আশেপাশের বাসার অন্য বিচ্ছুগুলোকে দেখতাম কাগজের নৌকা বানিয়ে পানিতে ভাসাত। আমি শুধুই চেয়ে চেয়ে দেখতাম!

সন্ধ্যার আগে আম্মা কাঁঠালের বিচি বা শিমের বিচি ভেজে দিত। অথবা কখনো কখনো পিঁয়াজু। মাঝে মাঝে চাল ভেজে কাঁচামরিচ, পিয়াজ আর সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে দিত অথবা ঝালমুড়ি। সেই মজাদার খাদ্যের কাছে চিকেন ফ্রাই বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিছুইনা।

বর্ষাকালে রাতেও এই অবিরাম বর্ষণ চলত। বাজের শব্দে ভীষণ চমকে উঠতাম। দিনের চেয়ে রাতের বৃষ্টির শব্দ একটু রকম ছিল! কেমন একটা ভয়ভয় ভাব। একসময় বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে কানে সয়ে যেত। তারপর কখন যে ঘুম এসে যেত!

ছোটবেলার মজার ঘটনা লিখব বলে লেখাটা শুরু করেছিলাম। কিন্তু লিখতে লিখতে মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল! আসলে সবাই এক সময় ছোটবেলাকে খুব বেশি মাত্রায় ফিরে পেতে চায়, সুন্দর, স্বর্ণালী সেই সময়ে ফিরে যেতে চায়! কিন্তু তা তো আর সম্ভব না! জীবন তার আপন গতিতেই বয়ে যায়…যাবে।

‘ছেলেবেলার দিন ফেলে এসে
সবাই আমার মত বড় হয়ে যায়
জানিনা ক’জনে আমার মত
মিষ্টি সে পিছু ডাক শুনতে যে পায়………