banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

শিশুর যত্নে প্যারেন্টিং


প্যারেন্টিং


বাসায় বাবা বা মা কেউ যদি কাঁচের জিনিস ভেঙ্গে ফেলে রাগ প্রকাশ করেন। তাহলে তা বাচ্চাও শিখে ফেলে। সুতরাং বাবা মা যা করে তা বাচ্চারাও শেখে। তাই প্রতিটি কাজই সতর্কতার সাথে বাচ্চাদের সামনে করতে হবে। আসুন দেখি কিছু কৌশল:

কথা বলবে কম

মন দিয়ে সত্যিকার অর্থ্যেই সন্তানকে বুঝতে চান। কথা শুনুন। আপনি সৎভাবেই তাকে বুঝতে চেষ্টা করুন। এমনকি নিজেকে আপনার সঙ্গে মেলে নাও নেয়, তবুই আপনি মহমর্মিতা দিয়ে শুনবেন। আপনি তার হৃদয়কে বুঝতে পারবেন, আপনি তার ক্ষতটা বুঝতে পারবেন।

ভুল করলে মাফ করা

বাচ্চারা যখন ভুল করলে মাফ করে দেওয়া। ভবিষ্যৎ এটা নিয়ে খোটা না দেওয়া। আমরা মূল্যায়ন করি (ইভালুয়েশন)। আমরা কারও কথা শুনে তার সঙ্গে একমত হই, নয়তো দ্বিমত পোষণ করি। একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।

তৈরি করতে হবে ভালবাসাময় শান্তি পূর্ণ পরিবেশ

ছেলে বা মেয়ের সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা বলতে গেলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আছে কিনা খেয়াল করুণ, সেই ছেলে বা মেয়েটি কি আপনার সঙ্গে খোলামনে নিজেকে প্রকাশ করতে পারছে? সে মুখ দিয়ে যা বলছে তার উপর ভিত্তি করেই আপনি তাকে মূল্যায়ন করছেন, নাকি ভালোবেসে বুঝার চেষ্টা করছেন।

শর্তহীন ভাবে ভালবাসো

“ভালোবাসা’ অভ্যাসটি খুবই কার্যকরী এবং ক্ষমতাশালী। আপনার সন্তান মানুষের সঙ্গে সমস্যায় পড়লে একা সমাধান করা শিখুক, মতের অমিল হলে নিজের মত প্রকাশ করুক, সকল প্রকার সমস্যা মোকাবেলা করা শিখুক, এমন অসংখ্য বিষয় আছে যেগুলো আপনার সন্তান দক্ষতার সঙ্গে সমাধান করতে পারবে। তাহলে শর্তহীন ভালোবাসুন।

সাহায্য  করতে উৎসাহ দিন

বাসায় ছোটখাটো কাজে সাহায্য করা একত্রে। প্রত্যেক বাচ্চার কোন না কোন দক্ষতা আছে তা কাজে লাগিয়ে ঘরের কাজ করতে দিন। প্রশংসা করুন ঘরের কাজে সহযোগিতা করলে। ভালোভাবে কাজটা বুঝিয়ে।

 

টিপস দাম্পত্য কাউন্সেলিং

 


দাম্পত্য


দাম্পত্য জীবনে সুন্দর সম্পর্ক নিজে থেকেই তৈরি হয় না, সেটি তৈরি করতে হয়। তাই আপনাকেও সেটি তৈরি করতে হবে। কর্মক্ষেত্রেই যদি আপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা নিঃশেষ করে ফেলেন, তাহলে আপনার দাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ক্ষমা করুন
সুন্দর বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা প্রয়োজন। এমনটি করতে পারলে, আপনি আপনার ত্যাগের চেয়ে ভোগই বেশি করতে পারবেন। ক্ষমা কোন সাময়িক গুণ নয়; বরং ক্ষমা একটি চলমান প্রক্রিয়ার নাম।

কঠিন সময়ে পাশে থাকুন

দাম্পত্য জীবনের কঠিন সময়গুলো আপনাকে একজন ভালো মানুষ করে তুলবে। বিয়ে অনেকটা রকেট উৎক্ষেপণের মতো। যখন তাতে মাধ্যাকর্ষণ টান পূর্ণ থাকে, তখন ফ্লাইট চলতে খুব সামান্য জ্বালানীর প্রয়োজন হয়।

কৃতজ্ঞতা বোধ প্রকাশ করুন

দাম্পত্য জীবনে সাফল্য পেতে হলে, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতা বোধকে নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না।

সঙ্গীকে প্রশ্ন করুন

বাস্তবতার খাতিরে মাঝে মাঝে নীরবতা পালন করা একটি অসাধারন উপায়। আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছে আপনার সর্বোত্তম প্রশ্নগুলোর একটি হতে পারে, “আমি কীভাবে তোমাকে আরও বেশি ভালোবাসতে পারি?”

যৌক্তিক অনুমান

যৌক্তিক অনুমানের ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে অনুমানকে যাচাই করা। মনে রাখবেন অহেতুক অনুমান করা থেকে বিরত থাকুন তাহলে দাম্পত্য জীবনকে চিরসবুজ করে রাখা যায়।

সুত্র: ছবি ও তথ্য ইন্টারনেট। অনুবাদ অংশ।

 

মাতৃগর্ভে যমজ শিশুর মারামারি!


অন্যান্য


দুই ছোট্ট সদস্য, দেখতে অবিকল এক, বাড়িতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে৷ কে না চায় বলুন তো? যমজ সন্তান পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম৷ বড় হলেও দু’জনের মধ্যে কখনো ঝগড়া আবার কখনো ভাব৷ এই দেখতে দেখতে বেশ সময় কেটে যায়৷ ভাইবোনেদের খুনসুটি ছাড়া আর কি-ই বা আছে? এত কাণ্ড তো নয় ঘটবে পৃথিবীতে আসার পর৷ কিন্তু জন্ম নেয়ার আগে অর্থাৎ গর্ভস্থ অবস্থায় ঝগড়াঝাটি কিংবা মারামারি করছে তারা, এটা শুনেছেন কখনো? শোনেননি তো৷ না শুনলেও, এটাই সত্যি৷ কারণ আলট্রাসাউন্ড রিপোর্টেই ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য৷ পরিষ্কার দেখা গেছে যমজ দুই সন্তান পেটের ভিতরে বক্সিং করছে৷ ওই ভিডিওটি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল৷ তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা৷ অবাক হয়ে মা-দাদিরা একটাই প্রশ্ন করছেন, এ-ও সম্ভব?

বছর আঠাশের মিস্টার তাও বর্তমানে দুই মেয়ে চেরি ও স্ট্রবেরির বাবা৷ সদ্যই তার স্ত্রীর চার মাসের সন্তানসম্ভবা অবস্থার অবাক করা এক কাহিনী নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়৷ চীনের ইয়ানচুয়ান প্রদেশের একটি হাসপাতালে তার স্ত্রীর আলট্রাসাউন্ড হচ্ছিল৷ অধীর আগ্রহে স্ক্রিনের দিকে চোখ রেখেছিলেন হবু মা-বাবা৷ বাচ্চাদের অবস্থা জানতে নজর রেখেছিলেন চিকিৎসকও৷ আর সেই সময়ে অবাক করা মুহূর্তের সাক্ষী রইলেন সবাই৷ ভিডিওতে তারা দেখলেন পেটের ভিতরে বক্সিং করছে দু’জনে৷ একজন থামছে তো আরেকজন শুরু করছে৷ কেউই হার মানার পাত্রী নয়৷ ফুটফুটে কন্যাসন্তানদের জন্মের পরই এই ভিডিও সোশ্যাল সাইটে আপলোড করেন ওই চিকিৎসক৷ তারপর যদিও তা ভাইরাল হতে বেশি সময় নেয়নি৷ চীনা একটি দৈনিকেও প্রকাশিত হয়েছে এমন আশ্চর্য ঘটনার কথা৷

এই ভিডিও যে-ই দেখছেন সেই অবাক হয়েছেন৷ অনেকেই বলছেন, জন্মের আগে এমন বক্সিং করলেও, দুই বোনের নাকি দারুণ ভাবও হবে৷ আবার নেটিজেনদের একাংশ তো গর্ভস্থ ওই দুই সন্তানের মধ্যে কে বড় আর কে ছোট, তাও ওই আলট্রাসাউন্ড রিপোর্ট দেখেই নির্ধারণ করতে শুরু করেছেন৷ তাদের দাবি, যে বক্সিংয়ে জিতে গিয়েছে সেই বড়৷ চেরি-স্ট্রবেরিকে নিয়ে বেজায় খুশি তাদের বাবা-মা৷

তাও দম্পতির দাবি, বক্সিং করতে যেমন দেখা গেছে৷ তেমনই আবার জানুয়ারির আলট্রাসাউন্ড রিপোর্টে দু’জনকে জড়িয়ে থাকার ছবিও দেখেছেন বাবা-মা৷ জন্মানোর পর যদিও চেরি-স্ট্রবেরির বেজায় ভাব৷ কান্না, খিদে, ঘুম-সবই নাকি এখন একসঙ্গে করতেই বেশি ভালোবাসে দুই খুদে৷ সুত্র: নয়া দিগন্ত। ছবিসুত্র: চেরি ও স্ট্রবেরি – সংগৃহীত।

 

রাস্তার ধারের মজাদার কাঁচা আম ভর্তা


ঘরকন্যা


বাজারে এখন কাঁচা আম প্রচুর দেখা যায়। আর কাঁচা আমের ভর্তা এখন রাস্তায় পাওয়া যায়! ঘরেরও মজাদার কাঁচা আমের ভর্তা বানানো যায়।
আসুন দেখি কিভাবে?

উপকরণঃ
কাঁচা আম ৩ টি,
লেবুর চাল ২টি
কাসুন্দি বাটা ২ টেবিল চামচ,
শুকনা মরিচ গুড়া ১/২ টি,
কাঁচা মরিচ ১/৩ টি,
লবণ পরিমাণ মত,
বিট লবণ পরিমাণ মত,
চিনি পরিমাণ মত,
সরিষার তেল ১ টেবিল চামচ,

কাঁচা আম ভর্তা বানানোর প্রনালীঃ
আমগুলো খোসা ফেলে ধুয়ে নিন। এবার আম গুলোকে পাতলা স্লাইস করে কেটে
কাসুন্দি দিয়ে রাখুন। পরে লবন দিয়ে কচলে ধুয়ে ফেলতে হবে বা ৫/১০ মিনিট লবন মেখে রেখে দিতে পারেন মজা লাগবে। আমগুলো র পানি চেপে ফেলে সব উপকরণ লবণ, গুড়া মরিচ, কাঁচা মরিচ এবং সরিষা বাটা, এবং চিনি দিয়ে মাখি। টক, ঝাল, মিষ্টি কাঁচা আম ভর্তা।

 

পুরনো ডায়রী


কানিজ ফাতিমা


সকালে হিথ্রো থেকে সরাসরি স্টার্টফোর্ড এ এলাম। পিকাডিলীতে সেন্ট্রাল লাইন ধরে স্টার্টফোর্ডএ পৌছুলাম। দুপুরে রেস্ট নিয়ে বিকালের শেষে বের হলাম এক ভাইয়ের বাসার উদ্দেশ্য, অলগেট ইস্টে।

ক’বছর আগে দেখা লন্ডন যেন একইরকম আছে; ঢাকার মত দ্রুত চেহারা বদলে যায়নি। ২৫ নম্বর বাস ধরে যেতে হবে অলগেটে। পিট পিট বৃষ্টি হচ্ছে , সাথে লন্ডনের বিখ্যাত বা কুখ্যাত বাতাস ঠান্ডাকে আরো কয়েকগুনে কষ্টকর করে তুলেছে। বাস স্টপেজে দাড়িয়ে আছি- আমার সালোয়ার কামিজের উপর গলা তোলা ফুলহাতা সোয়েটার, তার ওপর জিন্সের ওভার কোট, মাথা স্কার্ফে ভালো করে মোড়ানো – তারপরও মনে হচ্ছে ঠান্ডা বাতাস নাক দিয়ে ঢুকে রক্ত হিম করে দিচ্ছে। টেম্পারেচর কত হবে? জানিনা। তবে আরামদায়ক নয় নিশ্চিত। সামনে থেকে একটা মেয়ে যাচ্ছে – পরনে ফুল হাতা টপস, শর্ট স্কার্ট আর দু’পায়ে কালো ফিনফিনে মুজা। প্রায় পুরো পা দু’টোই মোজার ভেতরেও দেখা যাচ্ছে।

এত ঠান্ডায় এত পাতলা মোজা ? আমি উত্সুক হলাম। তবে কি আমার সহ্য শক্তি কম? বোঝার জন্য দাড়িয়ে দাড়িয়ে অন্য সবার পোশাকও লক্ষ্য করাতে শুরু করলাম। এক জোড়া তরুণ তরুনী আসছে। ছেলেটা জ্যাকেট, জিন্সের প্যান্ট ,পায়ে কেডস আর মাথায় হ্যাট পরেছে। মনে হলো তার পোশাকের পুরুত্ব আর আমার পোশাকের পুরুত্ব কাছাকাছি , পরিধিও প্রায় সমান। পাশের মেয়েটি স্লীভ লেস (হাত হীন) আটসাট একটা মাত্র গেঞ্জি পরেছে যা শুরু হয়েছে বুকের মাঝামাঝি থেকে – অর্থাত গলা , কাধ আর অর্ধেক বুক উন্মুক্ত- শীতে আমার শরীরে কাপুনী লাগলো যেন।

বাস এসে গেছে- বাসে উঠে আবারও পর্যবেক্ষণ শুরু করলাম। একটা কালো মেয়ে আমার সামনে – উপরের পাতলা জামাটা নাভীর দুই ইঞ্চি উপরে শেষ হয়েছে আর জিন্সের প্যান্টটা শুরু হয়েছে কোমরের দুই ইঞ্চি নীচে। উত্সুক দৃষ্টি আরো প্রশস্ত করলাম – মাথা ঘুরিয়ে আমার শেষ বিকেলের সব সহযাত্রীকে দেখার চেষ্টা করছি। প্রায় প্রতিটা মেয়েরই পোশাকের অবস্থা একই রকম- হয় পা জোড়া খোলা নয়তো কাধ আর বুকের উপরের অংশ।অন্যদিকে প্রায় প্রতিটা ছেলেই টিশার্টএর উপরে জ্যাকেট পরেছে, নীচে ফুলপ্যান্ট আর কেডস বা জুতা। এই আবহাওয়াকে আমি যেভাবে নিয়েছি লন্ডনের তরুণ ছেলেরাও সেভাবে নিয়েছে। কিন্তু মেয়েরা নিজের প্রায় অর্ধেক শরীর উন্মুক্ত রেখেছে আর ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে।

আমি আর ছেলেরা আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক পড়েছি – নিজেদের সুবিধা আর আরাম খুঁজে নিয়েছি। মেয়েগুলো কেন কষ্ট করছে? মেয়ে গুলো কি ফ্যাশনের কাছে অসহায় ? ঠান্ডায় নিজের শরীর-মন যা চাইছে সেটুকু করার স্বাধীনতা থেকেও বঞ্চিত?

কে স্বাধীন? আমি নাকি ওই মেয়েরা – যারা বাধ্য হচ্ছে এই ঠান্ডার মধ্যেও পরুষের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য নিজেদের শরীর খোলা রাখছে? ওদের পরাধীনতা কার কাছে, কিসের কাছে?

 

অন্তরে জাগাই জ্ঞানো পিপাসা……২


আফরোজা হাসান


রাহমা বলল, আর তোর রেজাল্ট আমাকে খুব বেশি বিমর্ষ করে। প্রতিবার এভাবে টেনেটুনে কোন মতে পাশ করলে হবে? কেন তুই মন দিয়ে একটু পড়াশোনা করিস না বল তো? আমাদের পুরো ফ্যামেলিতে তোর মত এত্তো খারাপ রেজাল্ট আর কেউ করেনি কোনদিন।

সাহিলের হাস্যেজ্জল চেহারাটি সাথে সাথে আঁধারে ঢেকে গেলো। ভাইয়ের চেহারার এই পরিবর্তন রাহমা চোখ এড়িয়ে গেলো না। সাহিল ঘুরে চলে যাচ্ছিলো রাহমা টেনে ধরে বলল, সরি ভাইয়া আমি তোকে কষ্ট দেবার জন্য এমন বলিনি।

সাহিল অভিমানী কন্ঠে বলল, আমার আসলে এই পরিবারে জন্মগ্রহণ করাটাই ঠিক হয়নি।

ছিঃ সাহিল এটা কি ধরণের কথা? তুই জানিস এমন কথা বললে আল্লাহ নারাজ হন?

ক্ষোভের স্বরে সাহিল বলল, তোমরা সবাই মিলে আমাকে বাধ্য করেছো এমন বলতে। যেখানেই যাই সবাই সারাক্ষণ বিভিন্ন ভাবে আকার ইঙ্গিতে একথাই মনে করিয়ে দেবার চেষ্টায় করে আমাকে। আমি পরিবারের সম্মান নষ্ট করে দিচ্ছি। বাইরে সারাক্ষণই বড় ভাইয়াদের আর তোমাদের বোনদের গুনগান শুনতে হয় আমাকে।

কিন্তু শুধুমাত্র জ্ঞানার্জন কেন করা উচিত সেই বিষয়ে বোঝানো ছাড়া আমরা কি তোকে কখনো অন্য কিছু বলেছি?

কিন্তু মানুষ তো বলে। আর একথা তো আসলেই সত্যই। তোমরা দেশে বিদেশে যে যেখানেই পড়াশোনা করেছো সেরা স্টুডেন্ট এর খেতাব অর্জন করে নিয়ে এসেছো। বড় ভাইয়ার রুমে ঢুকে মুগ্ধ হয়ে যাই সেলফে রাখা নানা ধরণের মেডেল, গোল্ড মেডেল আর ট্রফি দেখে। কিন্তু আমার নিজের কোন অর্জনই তো নেই। আমি তো কোনদিন দৌড় প্রতিযোগিতাতেও ফাস্ট, সেকেন্ড না থার্ড হতে পারিনি। আমাদের উইনারে ভরা পরিবারে আমিই একমাত্র লুজার।

হেসে ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো রাহমা। আচ্ছা সত্যি করে বল তো তোর ক্ষোভটা আসলে কোথায়? আমরা উইনার এটাতে নাকি তুই লুজার সেটাতে?

আমার নিজের উপরই বিরক্ত আমি। কিন্তু আপা আমি কি করবো চেষ্টা করো করছি কিন্তু কেন জানি না মনোযোগ ধরেই রাখতে পারি না বেশীক্ষণ পড়ার ব্যাপারে।

এর কারণ তুই পড়তে হবে বা পড়া উচিত এই বোধ থেকে পড়াশোনা করিস। প্রয়োজন উপলব্ধি করে ভালোবাসা থেকে জ্ঞানার্জন করতে চাস না। কোন কিছু আমাদেরকে তখনই আকর্ষণ করে যখন সেই জিনিসটা মধ্যে আমরা ভালোলাগা, আনন্দ ইত্যাদি খুঁজে পাই। যেমন ধর তুই ফেসবুকে যে আনন্দটা খুঁজে পাচ্ছিস সেটা হয়তো বইয়ের ভেতর পাচ্ছিস না। তাই বই নিয়ে বসলেও তোর মন পড়ে থাকছে ফেসবুকে। ফলে যেই একটু দেখে আসি কি করছে বন্ধুরা, একটু দুষ্টুমি করে রিলাক্স হয়ে আসি। ইত্যাদি ভাবনা থেকে বার বার বই বন্ধ করে একটু উঁকি দেখতে গিয়ে হাতছাড়া করে ফেলিস সময়।

লজ্জা মেশানো হাসি দিয়ে সাহিল বলল, আসলেই তো এমন করি আমি। ভাবি বেড়িয়ে যাব একটু দেখেই কিন্তু কিভাবে সে সময় পার হয়ে যায় টেরই পাই না।

নিজের সমস্যা কোথায় এটা বুঝতে পারাটা কিন্তু অনেক বড় একটা বিষয়। সমস্যা বুঝতে পারা মানে সমাধানের পথে চলার পথ তোর জন্য তৈরি। তুই এখন যা পড়তে বোস। এগজাম শেষ হলে আমি তোকে সাহায্য করবো ইনশাআল্লাহ।

কোন ব্যাপারে সাহায্য করবে আপা?

রাহমা হেসে বলল, তোর অন্তরে জ্ঞানের পিপাসা জাগানোর ব্যাপারে।

সাহিলও হাসলো। আপার সাথে কথা বলার পর অনেক হালকা লাগছে মনের ভেতরটা। নিশ্চয়ই এখন পড়া মাথায় ঢুকবে এই আশা নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ালো।
(চলবে)

 

অন্তরে জাগাই জ্ঞানো পিপাসা……১


আফরোজা হাসান


অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই ফিজিক্সের বাংলা কি মনে করতে পারছে না সাহিল। এক সময় হতাশ হয়ে আশা ছেড়ে দিয়ে বইয়ের দিকে তাকিয়েই আঁতকে উঠলো। ইয়া আল্লাহ! একি দেখছে?! সব দেখি সাদা! সেকি বইয়ের বদলে খাতা খুলে বসেছে নাকি? চোখ বন্ধ করে মাথাটাকে ডানে-বামে, উপরে-নীচে বার কয়েক ঝাঁকি দিয়ে তাকানোর পর দেখলো অক্ষর ফুটতে শুরু করেছে বইয়ে কিন্তু সবই ঝাপসা। কেমন যেন মাথা ঘুরতে শুরু করলো সাহিলের। সবসময় পরীক্ষার আগের দিন এমন হয় তার। মনেহয় কিছুই বোঝে না, কিছুই জানে। আগে যা পড়েছিল সেসবও মাথার ভেতর থেকে একদম হাওয়া হয়ে যায়। রিলাক্স হওয়া উচিত আসলে আমার ভাবলো সাহিল। বই বন্ধ করে ভাইবারে ঢুকে কিছুক্ষণ বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি করলো। ঠিক করেছিল পরীক্ষার শেষ হবার আগে ফেসবুকে যাবে না। কিন্তু অটল থাকতে পারলো না। গত দু’দিন ঢোকেনি লগিন করতেই দেখলো ইনবক্সে দশ বারো জনের ম্যাসেজ। জাস্ট একটু ঘুরে দেখেই চলে যাবে এই নিয়্যাতে ঢুকলেও কিভাবে যে পনে দুইঘন্টা পেড়িয়ে গেলো টেরই পেলো না। ঢুকেছিল রিলাক্স হতে কিন্তু ঘড়ির দিকে তাকিয়ে যখন দেখলো রাত এগারোটা বাজে। চোখের সামনে আবারো সব ধোঁয়া ধোঁয়া লাগতে লাগলো। এখনো ছয়টা চ্যাপ্টার রিভাইস দেয়া বাকি তার!

ধূর, কেন যে ঢুকতে গিয়েছিল এই সময় ফেসবুকে? নিজেই নিজেকে ধিক্কার দিলো সাহিল। নিজের সেল্ফ কন্ট্রোল পাওয়ার আরো বাড়ানো দরকার ফিল করলো। এমন না যে সে পড়তে চায় না বা পড়ার প্রতি আকর্ষণ ফিল করে না। জ্ঞানার্জন করতে হবে এটা নিয়ে কোনই দ্বিমত নেই সাহিলের। তার সমস্যা শুধু একটাই মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না বেশিক্ষণ। পড়তে বসলে কিছুক্ষণ পরই শুধু মনেহয় যাই একটু দেখে আসি কি করছে বন্ধুরা ফেসবুকে। এভাবে করেই সময়গুলো যে কিভাবে কেটে যায় টেরই পায় না। টের পায় পরীক্ষার আগের দিন। তখন এমন চোখে মুখে আঁধার দেখে। নিজের উপরই মেজাজ খারাপ হতে শুরু করলো। এখন চেষ্টা করলেও পড়া হবে না। বই বন্ধ করে রুম থেকে বেড়িয়ে এলো সাহিল। ক্ষুধার সামান্য নড়াচড়া অনুভব করছে পেটের মধ্যে। খাবারের সন্ধানে রান্নাঘরে রওনা দিলো। ফ্রীজ খুলেই মন ভালো হয়ে গেলো। বিকেলেই অবশ্য ঘ্রান পেয়েছিল লেয়ার পুডিংয়ের। তার সবচেয়ে পছন্দের মিষ্টি খাবার এটা। প্লেটে বড় বড় দু পিস পুডিং নিয়ে রান্নাঘর থেকে বের হতেই ল্যাপটপ হাতে বিরক্ত মুখে রুম থেকে বড় আপাকে বেড়িয়ে আসতে দেখলো সাহিল। বোনের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল, তোমার বেয়াদ্দব লেপুকে কি আবারো বোবায় ধরেছে আপা?

ছোট ভাইয়ের প্রশ্ন শুনে হেসে ফেললো রাহমা। বলল, কবে দেখবি এইটারে ধরে একটা আছাড় দিয়ে ভেঙে গুড়া গুড়া করে দেব আমি।

সাহিল হাসতে হাসতে বলল, তোমাকে কষ্ট করে আছাড় দেয়া লাগবে না আপা। তুমি এভাবে তোমার লেপুকে হাতে করে দু’চারদিন ঘরের এদিক সেদিক ঘোরো। দেখবে ও নিজ থেকেই জাম্প দিয়ে পড়ে গিয়েছে তোমার হাত থেকে।

কপট রাগ দেখিয়ে রাহমা বলল, বেশি ফাজলামো শিখেছিল তাই না? ধোলাই খেতে না চাইলে সামনে থেকে যা। এই দাঁড়া তোর এগজামের প্রিপারেশনের কি অবস্থা সেটা বলে যা?

আপা তোমাকে হান্ডেড পার্সেন্ট গ্যারান্টি দিচ্ছি পাশ করবো ইনশাআল্লাহ।

তুই কি শুধু পাশ করার জন্য পড়িস নাকি?

আপারে দুঃখের কথা কি বলবো। আমি পড়তে তো জ্ঞানার্জন করার জন্যই চাই। কিন্তু শেষ মেষ শুধু কোন মতে পাশ করাটাকেই বিশাল বড় অর্জন মনেহয়।

চিন্তা ও কর্মের ভারসাম্য না থাকলে এমনই হয়। যা তুই সামনে থেকে আমার। এমনিতেই নানান যন্ত্রণায় আছি। ফাঁকিবাজ টাইপ বাচ্চাকাচ্চা আশেপাশে থাকলে সেই সমস্যা আরো ঘনীভূত হবে।

সাহিল হেসে বলল, আপা তুমি সমস্যা মোকাবিলা করো কিভাবে?

সমস্যা দিয়ে।

সাহিল অবাক হয়ে বলল, মানে?

মানে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার কথা শুনিসনি? আমি তেমন সমস্যা দিয়ে সমস্যার মোকাবিলা করি। পরে তোকে বুঝিয়ে বলবো। এখন তুই যা তো। আচ্ছা শোন আমাদের কম্পু বিশেষজ্ঞ কোথায় বলতে পারবি?

সাহিল হেসে বলল, ভাইয়া না তোমাকে নতুন ল্যাপটপ এনে দিলো। তারপরও এটা ব্যবহার করার দরকার কি?

রাহমা বলল, সেটা তুই বুঝবি না। চার বছর ধরে সুখে দুঃখে আমার সাথে সাথে থেকেছে। আমার কত অত্যাচার সহ্য করেছে রাত-দিন। শুধুমাত্র মাঝে মাঝে শব্দ বন্ধ হয়ে যায় বলে আমি মুহুর্তেই তাকে বিদায় করে নতুন একটাকে কোলে তুলে নেবো? বিপদেই বন্ধুর পরিচয়। আমি তাই ততক্ষণ পর্যন্ত ওকে আমার জীবন থেকে বের করে ফেলে দেবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না ওকে সুস্থ্য করার শেষ চেষ্টাটাও ব্যর্থ হয়ে যাবে।

সাহিল হাসতে হাসতে বলল, তুমি তো এমন ভাবে বলছো যেন এটা কোন যন্ত্র না বরং মানুষ।

আজ যন্ত্রের সাথে এমন নির্দয় হতে পারলে, কাল মানুষের সাথেও যে হয়ে যাবো না সেই গ্যারান্টি কে দেবে? তাই আজ যন্ত্রের সাথে দরদী হবার চেষ্টা করছি। যাতে ভবিষ্যতে মানুষের ব্যাপারেও হতে পারি।

সাহিল হেসে বলল, তোমার কথা আমাকে খুব মুগ্ধ করে আপা।

(চলবে)

 

ডা. ফাতেমা “৬ হাজার শিশুর সফল হার্ট সার্জারি”


স্বাস্থ্যকথা


বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নুরুন নাহার ফাতেমা। যিনি নবজাতক শিশুর হৃদরোগ, হৃৎপিণ্ড এবং রক্তবাহক সম্পর্কিত রোগ নিয়ে ককাজ করেন। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম শিশু হৃদরোগ সার্জারি হিসেবে পথপ্রদর্শক।

সফলতার সঙ্গে প্রায় ৬ হাজার হৃদরোগ শিশুর চিকিৎসা করেছেন। এ বছর চিকিৎসাক্ষেত্রে অবদান রাখায় দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ পেয়েছেন।

মানুষের ভালোবাসা তার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। শিশুর জন্মগত হৃদরোগ সারিয়ে তোলার পর যে আনন্দ পান, তা সব আনন্দের চেয়ে বহুগুণ বড়।

বিনামূল্যে শিশুদের চিকিৎসা করবেন। ডা. ফাতেমা শিশু চিকিৎসার আরেক প্রতিকৃত অধ্যাপক ডা. এমআর খানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন ‘চাইল্ড হার্ট ট্রাস্ট বাংলাদেশ’।

ডা. ফাতেমা স্বপ্ন দেখেন রোজ। দেশের মাটিতে শিশুদের চিকিৎসায় একটি বিশেষায়িত জাতীয় কার্ডিয়াক হাসপাতাল তৈরি করার। যেখানে এসব রোগীর যথাযথ চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে। যেখানে অসচ্ছল মা-বাবার সন্তানরা বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে পারবে।

 

নাড়া দিলো যে মৃত্যু (শোক আর ভালোবাসায় রাফির বিদায়)


নারী সংবাদ


নুসরাত জাহান রাফি চলে গেছেন। শোক আর ভালোবাসায় তাকে চিরবিদায় জানিয়েছেন তার স্বজনেরা। মৃত্যু এসে তার অগ্নিদগ্ধ শরীরের সব যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়েছে। কিন্তু এই মৃত্যু নাড়া দিয়ে গেছে গোটা দেশকে। ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে সমাজের সর্বস্তরে।

নুসরাতের জীবনটাই ছিল প্রতিবাদের। যখন বখাটেরা তাকে উত্ত্যক্ত করত, তখনো সে প্রতিবাদ করেছে। আবার যখন তারই শিক্ষক তাকে লাঞ্ছিত করেছে তখনো সে প্রতিবাদ করেছে। যখন দুর্বৃত্তরা তার প্রায় পুরো শরীর আগুনে ঝলসে দিয়েছে, তখন মৃত্যু শয্যায় সে প্রতিবাদ করে বলেছে আমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাবো…। নুসরাত তা-ই করেছে। তার মৃত্যুই এখন শ্রেষ্ঠ প্রতিবাদ। গতকাল তাকে তার দাদীর কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

রাফি গতকাল ভালোবাসায় চিরবিদায় নিয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে বহনকারী ফ্রিজারভ্যান গতকাল বিকেল ৫টায় পৌর শহরের উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মৌলভী বাড়িতে পৌঁছে। ওই বাড়ির মাওলানা এ কে এম মূসার একমাত্র মেয়ে রাফি। তাকে বহনকারী গাড়ি যখন কাশ্মিরবাজার সড়ক হয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। দুপুর থেকে সেখানে হাজার হাজার নারী-পুরুষ জড়ো হয়। ভিড় ছিল গণমাধ্যমকর্মীদেরও। সবার চোখেমুখে শোকের পাশাপাশি ছিল ক্ষোভও। উৎসুক মানুষের ভিড় সামলাতে পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়। একপর্যায়ে লাশ গাড়িতে রেখেই শেষবারের মতো বাবা এ কে এম মূসা, মা শিরীন আকতার, ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানসহ নিকটাত্মীয়দের দেখানো হয়। পরে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। নামাজে জানাজা পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বি কম, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিফটন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, রাফির বাবা এ কে এম মুসা, ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। বক্তারা রাফি হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

রাফির বাবা এ কে এম মূসার ইমামতিতে হাজার হাজার মুসল্লি নামাজে জানাজায় অংশ নেন। পরে ভূঁইয়া বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাদীর কবরের পাশেই দাফন করা হয়।

পপি ও জোবায়েরের ৫ দিনের রিমান্ড : রাফি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন গ্রেফতার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার শ্যালিকার মেয়ে উম্মে সুলতানা পপি ও এজাহারভুক্ত আসামি জোবায়ের আহম্মেদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফউদ্দিন আহমেদ এ আদেশ দেন।

ফেনী কোর্ট পুলিশের ওসি মো: গোলাম জিলানি এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, এ মামলায় গ্রেফতার সাতজনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এর মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার সাত দিন এবং বাকি ছয়জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে পপিকে মঙ্গলবার সকালে আটক করেছে পুলিশ। রাফির দেয়া জবানবন্দী অনুযায়ী শম্পা হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে এ পপিকে। তার সহপাঠীদের মধ্যে শম্পা নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তদন্তকারী সূত্রের সন্দেহ হয়তো ঘটনার সময় অন্য কেউ ‘শম্পা’ ছদ্দনাম ব্যবহার করেছে।
আসামিদের আইনি সহায়তা দেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে অব্যাহতি : মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় (পরবর্তীতে নিহত) গ্রেফতারকৃতদের আইনি সহায়তা দেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সদর উপজেলা সভাপতি করিম উল্লাহ বি কম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সদর উপজেলার কাজিরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগকে সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের দায় ও সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির খুনিদের আইনি সহযোগিতা দেয়ায় স্বীয় দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তদস্থলে আবদুর রৌফকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। সোহাগ ওই ইউনিয়ন পরিষদেরও চেয়ারম্যান।

ফেনী কলেজছাত্র সংসদের মানববন্ধন :

সোনাগাজী (ফেনী) সংবাদদাতা জানান, নুসরাত জাহান রাফির নামাজে জানাজায় অংশ নিতে আত্মীয়স্বজন বন্ধু-বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশীসহ সোনাগাজীর সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল। কান্না আর চাপা ক্ষোভ নিয়ে তারা বলছিল সবই আছে নেই শুধু আমাদের রাফি। বাঁচতে দিলো না পাষণ্ডরা আমাদের রাফিকে। সন্ধ্যা ৬টায় হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে সোনাগাজী মডেল ছাবের পাইলট হাইস্কুল মাঠে রাফির নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। নামাজে জানাজা শেষে রাফিকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাদীর কবরের পাশে দাফন করা হয়। (নয়াদিগন্ত)

 

গা ঘেঁসে দাঁড়াবেন না



শামছুন নাহার মলি


সময়টা ২০১০ বা ২০১১ এর দিকে।বলে রাখি ঢাকায় ৬/৭ বছর থেকেও আমার বাসে ওঠার অভিজ্ঞতা খুব বেশি না।ভার্সিটির ক্লাস শেষে কলা বাগান থেকে রংধনু বাসে করে মিরহাজীরবাগ ভাইয়ার বাসায় ফেরার পথের ঘটনা।বাসে সব সময় মহিলা সিটে বসার চেষ্টা করতাম।কিছু লোকাল বাসে সিট না থাকলে উঠতাম ও না।

সেদিন আমি মহিলা সিটে বসা।সামনের সিটে দুজন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে।তাদের সাইডে দাঁড়ানো ৫৫/৬০ বয়সী একজন দাড়ী ওয়ালা পান্জাবী পরা মুরুব্বী।ব্রেক করার কারণে পাশের মেয়েটার গায়ে মুরব্বী টার একটু ধাক্কা লেগে যায়।আর যায় কোথায়।মেয়ে দুটোর মুখে যা আসে সব বলা হয়ে যাচ্ছে।তখন মুরুব্বী টা বল্লো দেখো মা ব্রেক করার কারনে এই ধাক্কাটা লেগেছে।এটার জন্য দুঃখীত।আমি তোমার বাপ বয়সী।মেয়ে দুইটা বলে উঠলো মুখে দাড়ী রাখছেন,পান্জাবী,পরছেন চুল দাড়ী পাকছে তাও লুচ্চামী যায়নি না?মেয়ে দেখলে গায়ের উপর এসে পড়তে মন চায় না?

এবার আমি ২য় সারির জানলার পাশের সিট থেকে বের হয়ে ঐ মেয়েদের সামনে গেলাম।বল্লাম উনাকে দেখে মনে হয় আপনার যে উনি ইভ টিজার?বাবার মত একজন কে এত নোংরা কথা বলতে বিবেকে বাধছেনা?নাকি উনার দাড়ী পান্জাবী দেখে রাগ টা বেশি দেখাচ্ছেন?
মুরুব্বী টা কাঁপতেছিলো অপমানে কথা বলতে পারছিলেন না মেয়েদের কথায়।একজন লোক উনার জায়গা দিলেন বসার।মেয়েরা আর কথা বাড়ায়নি।

আরেকবার মগবাজার থেকে আমি আর ফাতিমা ফিরছিলাম।আমি মীরহাজিরবাগ যাবো আর ফাতিমা যাবে জিগাতলা।পরে ফাতিমা বলছিলো সেদিন বাসে সিট না পাওয়ায় তাকে দাঁড়ীয়ে যেতে হয়েছিলো।একজন লোক তার জন্য যথেষ্ট জায়গা রেখে এমন ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো যেন কারো ধাক্কা ওর গায়ে না লাগে।আলহামদুলিল্লাহ্‌।

এখন দেশে টিশার্টে লেখা “গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না”
এই প্রতিবাদ টা কিন্তু সব মানুষের জন্য না।ভীড়ে দাঁড়ালে ধাক্কা লাগবেই।দেশের মানুষ বাস চড়বেই।এই ধাক্কাটা কারা দেন,গা ঘেঁষে কারা দাঁড়ান?নিশ্চয় সবাই না?যারা দৃষ্টিই অবনমিত করেন গা ঘেঁষে দাঁড়ানো তাদের আদর্শে যায় না।বার্তাটা অবশ্যই তাদের জন্য না।যারা গা ঘেঁষে দাঁড়ায় তাদের আতে ঘা লাগার কথা ছিলো।ঢালাও ভাবে সবার না।

টি শার্টে কেন এই বার্তা লেখা,বোরখায় কেন লেখা না আমি এ বিতর্কে যাবোনা।কারণ পরিসংখানে দেখা গেছে ৭০/৮০% মেয়েই নাকি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে।বাসে কিংবা লেগুনায়।হোক সে
বোরখা পরিহিত কিংবা টিশার্ট পরা।

শুধু বাসে না,আজ মেয়েরা ভীড়ের মধ্যেও যেতে পারে না,না গিয়েও উপায় থাকেনা।এই ধাক্কা বন্ধের কথা ভাবুন,এগিয়ে আসুন মেয়েদের সম্মান ও নিরাপত্তা কিভাবে দেওয়া যায়।কারা মেয়েদের সাথে এমন করে তাদের কে পাকড়াও করুন পারলে।

নীলক্ষেতে বই কিনতে যেতে হতো প্রায়ই।অসম্ভব ভীড় ঠেলে যেতে হতো।আমি বোরখা পরিহিতা,ব্যাগটা সামনে জড়িয়ে ধরে হাটতাম সব সময় নিজেকে সেইভ করার জন্য।আলহামদুলিল্লাহ্‌ আজ পর্যন্ত একটা মোবাইল বা টাকা পয়সা হারায়নি এবং কোন খারাপ পরিস্থিতি তে পড়তে হয়নি আমার।

নারীদের অযথা হয়রানী করার মানসিকতার সকল পশুদের কলিজায় এই প্রতিবাদ পৌছে যাক “মেয়েদের গায়ে ঘেঁষে দাঁড়াবেন না”।
আর সকল নিঃষ্পাপ ভাইয়েরা পারলে নিজের মা বোনের কাছ থেকে নরপশুদের ধাক্কা খাওয়া বা গা ঘেষে দাঁড়ানোর গল্পটা শুনুন।তারপর কি পদক্ষেপ নিবেন ভাবুন।কারণ কদিন পর আপনাদের কন্যারাও বাইরে যাবে।

#গাঘেঁসেদাঁড়াবেননা

 

The Dream of Life (অনুবাদ) – শেষ পর্ব


মুল: ইয়াসমিন মোজাহেদ
অনুবাদ: রাহনুমা সিদ্দিকা


আর দ্বিতীয়দল যাদের লক্ষ্য ছিলো অনন্ত জীবন, তাদের কাছে ভালো মন্দের স্বরূপ এই যে, যা কিছু আমাদের স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা পেতে সাহায্য করে, আমাদের তাঁর নিকটে নিয়ে যায় তা-ই হলো ভালো আর যা আমাদের স্রষ্টা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় তা-ই হলো মন্দ।

তারা জানে যে তাদের পালনকর্তা বলেছেন, “আমি এদের বিভিন্ন প্রকার লোককে পরীক্ষা করার জন্যে পার্থিবজীবনের সৌন্দর্য স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, আপনি সেই সব বস্তুর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না। আপনার পালনকর্তার দেয়া রিযিক উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী।” (কুর’আন ২০:১৩১)

একজন বিশ্বাসী ব্যক্তি মনে করেন, অর্থ, খ্যাতি, সম্পদ, সৌন্দর্য তা যে আরাধ্য বস্তুই হোক না কেন, তা যদি আমায় স্রষ্টার কাছে নিয়ে যায় তাহলে তাকে আমি ‘ভালো’ বলে চিহ্নিত করবো, অন্যথায় তা মন্দ। খ্যাতি/যশ কিংবা সম্পদের ক্ষতি, অসুস্থতা, চাকুরি হারানো ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদগুলোও যদি কোনভাবে আমাকে স্রষ্টার সন্তুষ্টি পেতে সাহায্য তাহলে তা-ই আমার জন্য মঙ্গলময়!

“তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।” (Qur’an 2:216)

এই-ই হলো আমাদের সহজ-সরল বিশ্বাস, ভালো লোকের জীবনেই ভালো ঘটনাগুলো ঘটে, আর মন্দের ক্ষেত্রে মন্দগুলোই!
নির্ভর করছে আপনি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন,তার ওপর! একজন বিশ্বাসীর? নাকি একজন অবিশ্বাসীর? অথবা, একজন সংশয়বাদীর?

মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “মুমিনদের ব্যাপারটি কী আশ্চর্যজনক! কারণ, সর্বাবস্থায়ই তার জন্য মঙ্গলময়। আর এটা মুমিন ছাড়া আর কারোর পক্ষেই সম্ভবপর নয়। তার জীবনে সুখময় কিছু ঘটলে সে আল্লাহ্ তাআলার কৃতজ্ঞতা আদায় করে যা তার জন্য কল্যাণকর। তেমনিভাবে তার জীবনে দুঃখকর কোন কিছু ঘটলে সে তাও ধৈর্যের সাথে মেনে নেয় যা তার জন্য অবশ্যই কল্যাণকর।”

(সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৯৯)

সুবহান’আল্লাহ! মুমিন জীবনই আমাদের নিয়ে যেতে পারে চুড়ান্ত কল্যাণের পথে।

এই ক্ষণিক জীবনটা আসলে একটা বিভ্রম ছাড়া আর কি! তারপরেও কি এই পার্থিব প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চাওয়া-পাওয়াগুলো আমাদের আলোড়িত করবে? যেদিন আমরা সেই অনন্ত জগতে প্রবেশ করবো সেদিনই কেবল পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পারবো ‘জীবনটা আসলে একটা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু ছিলো না’।

 

The Dream of Life (অনুবাদ)- ১ম পর্ব


মুল: ইয়াসমিন মোজাহেদ
অনুবাদ: রাহনুমা সিদ্দিকা


আচ্ছা, মন্দ জিনিষগুলো কেন ভালো মানুষদের জীবনে ঘটে? কোথায় থাকে ঈশ্বর যখন নিষ্পাপ শিশুটা না খেতে পেয়ে মারা যায়, অপরাধী মানুষগুলো স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়? কোথায় থাকেন তিনি? কীভাবে সেই প্রেমময়, সর্বশক্তিমান প্রভুকে স্বীকার করবো আমি? আমার কষ্ট… আমার হতাশা… ব্যর্থতা, দুর্ভাগ্য কেন দিলেন তিনি? Why do we suffer? ঈশ্বর নিশ্চয়ই ন্যায়-পরায়ণ, তাহলে কেন ভালো লোকের জীবনে শুধু ভালো ঘটনা ঘটে না? আর মন্দলোকের জীবনে মন্দ?

আপনার মনে কখনো কি এ প্রশ্নগুলো উদিত হয়েছে?

বহু মানুষের জীবনে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর তাদের নিয়ে যায় বিশ্বাসের পথে… অথবা বিশ্বাস থেকে দূরে, স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস, জীবনের উদ্দেশ্যে বিশ্বাস, জীবনে শেষ গন্তব্যের প্রতি বিশ্বাস, অথবা বিশ্বাসহীনতা।

একজন বিশ্বাসী বলবেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই! আসলে ভালো লোকের জীবনেই ভালো ঘটনাগুলো ঘটে, আর মন্দের ক্ষেত্রে মন্দগুলোই!”

কেন? কারণ ঈশ্বর আমাদের রব তিনি সর্বজ্ঞাত, সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী, তিনি পরিপূর্ণ সত্তা,তিনি সর্বাপেক্ষা ন্যায়পরায়ণ ও প্রেমময়।

আসুন আগে বুঝে নি-ই, “ভালো লোকের জীবনেই ভালো ঘটনাগুলো ঘটে, আর মন্দের ক্ষেত্রে মন্দগুলোই!” বলতে আমরা কী বুঝাতে চাইছি। আর ভালো – মন্দ বলতেই বা আমরা কী বুঝাতে চাই। আপনারা অনেকেই হয়তো আমার সাথে একমত হবেন যে, অভীষ্ট কোন লক্ষ্য অর্জনে সফলতা…এটা ভালো, আর অন্যদিকে ব্যর্থতাটা হলো মন্দ।

ধরুন, যদি আমার লক্ষ্য হয় ওজন বাড়ানো কারণ আমি ভীষণভাবে ক্ষীণকায়, ওজন বৃদ্ধি তাহলে মঙ্গল। অপরদিকে যদি এমন হয় যে আমার লক্ষ্য হলো ওজন কমানো কারণ আমি স্থুলকায়, ওজন বৃদ্ধি তাহলে মন্দ। আমরা কী দেখি, একই ঘটনাকে একসময় আমি বলবো, ভালো আরেকসময় বলবো মন্দ, নির্ভর করছে আমার লক্ষ্যের ওপর!! তাহলে, আমার দৃষ্টিকোন থেকে ভালো কী সেটা নির্ভর করবে আমার ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যগুলো বা লক্ষ্যের ওপর, এটা চিরকালীন সত্য। একারণেই চূড়ান্ত মঙ্গল নির্ভর করে আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য এর ওপর।

আমার জীবনের লক্ষ্য কী?

ছোট্ট একটা প্রশ্ন, কিন্তু আপনি উত্তর দিন, দেখুন আমরা জেনে যাবো আপনি কে। কারণ এর উত্তরটা বেঁচে থাকা সম্পর্কে আপনার ধারণা প্রকাশ করে দেবে। পুরো পৃথিবীতে জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে দু’ধরণের চিন্তাধারা আছে।

একদল মনে করেন যে, বেঁচে থাকার কারণ হলো আমাদের প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম দিয়ে পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালোভাবে দিন কাটানো। আরেকদল মনে করেন, উঁহু, জীবন শুধুই একটা সেতু/সাঁকো ছাড়া আর কিছুই না! আর এমন একটা সেতু যার স্থায়ীত্ব কাল ক্ষণকালের, তারা মনে করেন এটাই স্রষ্টার infinite Reality, যা কিছু হচ্ছে তাঁর নির্দেশেই হচ্ছে, এপার থেকে ওপারে যাওয়ার সাঁকোকে চিরকালীন আবাস ভাবতে চান না তারা।

প্রথমদলের জন্য, এই জীবনই *Everything*, এটাই শুরু এটাই শেষ , তারা মনে করেন, সমস্ত চেষ্টা-সংগ্রাম-ভালোলাগা-ভালোবাসা-অনুভূতি একে ঘিরেই আবর্তিত হওয়া উচিত। আর দ্বিতীয়দলের কাছে *this life tends towards zero*!! কেন?? আচ্ছা, অসীমের তুলনার সবচেয়ে বড় সংখ্যাটাও কি একেবারে তুচ্ছ নয়? কিচ্ছু না!

তাই তাদের কাছে জীবনের উদ্দেশ্য হলো, যেমনটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন, ” আমি জ্বীন ও মানব জাতিকে এছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য সৃষ্টি করি নি যে *তারা কেবল আমার দাসত্ব করবে*।” (ক্বুর’আন ৫১:৫৬) এখানে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাই অন্য কোন উদ্দেশ্যের কথা নাকচ করে দিয়েছেন। তার মানে ত এই-ই দাঁড়ায় যে, একজন বিশ্বাসী হিসেবে আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হবে সেই সত্তাকে জানা, ভালোবাসা ও তাঁর নিকটাবর্তী হওয়া। এই জন্যেই আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছিলো। এই বিশ্বাসটাই নির্ধারণ করে দেবে আমার জীবনের নানা অভিজ্ঞতা ও আশপাশের ঘটনাগুলো সম্পর্কে আমি কীভাবে ভাববো।

আসুন, আমরা এখন আবার সেই ভালো মন্দের সংজ্ঞার দিকে ফিরে তাকাই। সেই যে বলেছিলাম, সামগ্রিক ভাবে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্থাৎ কাম্য কিছু পেতে সমর্থ হওয়াকেই আমরা বলতে পারি ভালো। আর আপেক্ষিকভাবে তাহলে নিশ্চয়ই বলা যায় কারো লক্ষ্য যদি হয় এই পার্থিব জীবন , তাহলে তার জন্য অর্থ উপার্জন, খ্যাতি, সম্পদ, সৌন্দর্য … ইত্যাদি হলো ‘ভালো’ বা ‘মঙ্গল’ এর উদাহরণ, আর এগুলোর ক্ষয় হলো ‘মন্দ’। এই ধারণা যারা পোষণ করেন তাদের মতে, একজন নিরপরাধ ব্যক্তি যদি তার কোন পার্থিব সম্পদের ক্ষতি (তা হতে পারে দারিদ্র, স্বাস্থ্যের ক্ষতি, বিকলাঙ্গতা, প্রতিবন্ধিত্ব…) প্রত্যক্ষ করেন, এই-ই হলো ‘ভালো লোকের জীবনে মন্দ জিনিষ ঘটা’।

আর দ্বিতীয়দল যাদের লক্ষ্য ছিলো অনন্ত জীবন, তাদের কাছে ভালো মন্দের স্বরূপ এই যে, যা কিছু আমাদের স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা পেতে সাহায্য করে, আমাদের তাঁর নিকটে নিয়ে যায় তা-ই হলো ভালো আর যা আমাদের স্রষ্টা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় তা-ই হলো মন্দ।

চলবে…

 

পাঁকা পেঁপের মজাদার হালুয়া

 


ঘরকন্যা


মিষ্টি পাকা পেপেতে প্রচুর ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে। তবে আমাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ এই পাকা পেপে অপছন্দ করেন। পাকা পেপের হালুয়া খুব মজাদার। পাকা পেপের হালুয়া অনেক টেস্টি যে যারা পাকা পেপে খান না তারাও পছন্দ করবেন।

পাকা পেপের হালুয়া বানাতে উপকরণ সমুহ

পাকা পেপে ২ কাপ
চিনি ৪ টেবিল চামচ
আস্ত এলাচ ১টি থেকে ২টি, আস্ত কাজু বাদাম, কিসমিস,
ঘি ২ টেবিল চামচ
ডিম ২ টি
পাউডার দুধ হাফ কাপ

হালুয়া যে পদ্ধতিতে বানাবেন

প্রথমে পাকা পেপে ছিলে নিয়ে গ্রেট করে নিতে হবে। আপনি চাইলে এটি ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করেও নিতে পারেন। চুলোয় দিন। ফ্রাইং প্যানে অল্প একটু ঘি নিতে হবে। এর মধ্যে কাজু বাদাম, প্সতা বাদাম, চিনা বাদাম ও কাঠ বাদাম, কিশমিশ গুলোও দিয়ে দিতে হবে। মাঝে ডিম আর পাউডার দুধ দিবেন।
এরপর আপনি হালুয়ার মধ্যে ছোট ছোট বাদামের টুকরা দিতে পারেন। বড় কড়াতে বাকি ঘি টুকু দিয়ে দিতে হবে। ঘি গরম হয়ে গেলে এর মধ্যে গ্রেট করা কিংবা ব্লেন্ড করা পাকা পেপে দিয়ে দিতে হবে। এই সময়ে পরিমাণ মত চিনি দিয়ে দিতে হবে। লাল হওয়ার আগ পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
খুব সুন্দর একটি ঘ্রাণ ছড়াবে।

নেমে কাজু বাদাম দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

নারী গার্মেন্টকর্মীকে গলা কেটে হত্যা


নারী সংবাদ


ময়মনসিংহের ভালুকায় তানিয়া আক্তার (১৬) নামে এক গার্মেন্টকর্মীকে রাতের ডিউটি শেষে সকালে বাসায় যাওয়ায় পথে ছুরিকাঘাতে গলা কেটে খুন করেছে এক বখাটে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার জামিরদিয়া এসএমসি ফ্যাক্টরীর সামনে। পুলিশ ঘাতককে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে তানিয়া আক্তার বোনদের নিয়ে উপজেলার হবিরবাড়ি এলাকার আমতলীতে জনৈক জহুরার বাসা ভাড়ায় থেকে রিদিশা গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীতে চাকরী করে আসছিলেন।

শনিবার সকালে তিনি রাতের ডিউটি শেষে বাসায় যাওয়ার পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর এসএমসি ফ্যাক্টরীর সামনে শাহিদ (২২) নামে এক বখাটে তাকে ছুরিকাঘাতে গলা কেটে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘাতক শাহিদকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘাতক শাহিদ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের জনাব আলীর ছেলে বলে পুলিশ জানায়।

নিহতের বড় বোন কাকলী আক্তার জানান, তানিয়াসহ তারা তিন বোন একই বাসায় ভাড়ায় থেকে গার্মেন্টে চাকুরি করছেন। প্রতিদিনকার মতো শুক্রবার রাতে সে ফ্যাক্টরিতে যায়। সকালে লোকমুখে জানতে পারি রাতের ডিউটি শেষে তানিয়া বাসায় আসার পথে কেউ তাকে খুন করে ফেলে গেছে।

লাশ উদ্ধারকারী ভালুকা মডেল থানার এসআই ফিরোজ জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার ও ঘাতককে আটক করা হয়েছে। তবে কি কারণে তানিয়াকে খুন করা হয়েছে তা এই মুহুর্তে ঘাতকের কাছ থেকে স্পষ্ট করে জানা যাচ্ছেনা। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (শনিবার বেলা ১২ টা) থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিলো। সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিচ্ছেদে গেলেন অ্যামাজনের বেজোস ও তার স্ত্রী ম্যাকেনজি


দাম্পত্য


বিশ্বের অন্যতম অনলাইন রিটেইল প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ডটকম প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও তার স্ত্রী ম্যাকেনজি বৃহস্পতিবার ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিচ্ছেদ চুক্তি চূড়ান্ত করেছেন। খবর এএফপি’র।
অ্যামাজনে জেফ বেজোসের ১৬.৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বিচ্ছেদ চুক্তি অনুযায়ী এর ৭৫ ভাগ শেয়ার থাকবে বেজোসের নামে এবং বাকি শেয়ার পাবেন ম্যাকেনজি। ম্যাকেনজির এই শেয়ারের মূল্য দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৬শ’ কোটি ডলার। এর পাশাপাশি অ্যামাজন স্টকের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বেজোসের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার সার্বিক ক্ষমতা পাবেন ম্যাকেনজি।
এছাড়া ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় এবং বিশ্বের সেরা ধনী বেজোসের মহাকাশ ভ্রমণ বিষয়ক কোম্পানি ব্লু অরিজিনে ম্যাকেনজির যে শেয়ার রয়েছে তিনি তা ত্যাগ করবেন।
৫৫ বছর বয়সী জেফ বেজোস ও ৪৮ বছর বয়সী ম্যাকেনজি ১৯৯৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির চার সন্তান রয়েছে।
জেফ বেজোস ২৫ বছর আগে ১৯৯৪ সালে তাদের সিয়াটল গ্যারেজে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপরের ইতিহাস হচ্ছে তাদেরকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে অনলাইনে ব্যবসায় বিশাল একটি প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি ২৩ হাজার ২৮০ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে।
সাবেক টিভি উপস্থাপিকা লরা সানচেজের সঙ্গে বেজোসের গোপন সম্পর্ক প্রকাশের পরে এই বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা চূড়ান্ত হলো।
উল্লেখ্য, ম্যাকেনজি এবারই প্রথম দু’জনের মধ্যে বিচ্ছেদের বিষয়টি নিজের টুইটারে ঘোষণা করলেন। এতে তিনি লিখেছেন জেফ বেজোসের সঙ্গে বিচ্ছেদের ইতি ঘটানোর সব প্রক্রিয়া শেষ করে এনেছি। পারস্পরিক সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। (বাসস ডেস্ক)

 

শিশুদের কুরআন শিক্ষা


কানিজ ফাতিমা


সচরাচর মুসলমানেরা তাদের শিশুদের ছোটবেলা থেকেই শুধু জাহান্নামের আগুনের ভয় দেখান, কিন্তু আল্লাহর ভালোবাসা, দয়া এবং সমবেদনা অথবা জান্নাতের সৌন্দর্যের কথা সেভাবে তুলে ধরেননা । আমরা শিশুদেরকে ভয় যতটা জোর দিয়ে দেখাই যে তারা যদি আল্লাহর অমান্য করে, মা-বাবার কথা নাশুনে , বা পাপ কাজে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের দোজখের আগুনে জ্বালানো হবে; ততটা তাদেরকে আশাবাদ দেই না যে তারা যদি সৎ কাজ করে, আল্লাহ ও মা-বাবাকে মান্য করে এবং কোনো ভালো কাজ করে তবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। আমরা সবসময় তাদেরকে ভয় দেখাই, জাহন্নামের হুমকি দেই অথচ খুব কমই তাদেরকে সাহস যোগাই অথবা ভালো আচরণের জন্য আল্লাহ’র ভালোবাসার কথা, পুরুষ্কারের কথা উল্লেখ করি। এমন পরিবেশে, শিশুরা আতঙ্কগ্রস্ত ও ভীতু হিসাবে বেড়ে উঠে। ফলে তাদের মধ্যে নেতীবাচক মানসিকতা জন্মায় এবং আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দেয় এবং তদেপেক্ষাও খারাপ যে তারা তাদের বিশ্বাসের প্রতি নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে।

শিক্ষকরা সাধারণত: কুরআনের শেষ অধ্যায় থেকে (ত্রিশ পারা) শিশুদের পড়ানো শুরু করে। এই অধ্যায় ছোট ছোট সূরা সম্বলিত যেগুলো ওহী আসার প্রাথমিক পর্যায়ে মক্কায় নাযিল হয়। মূলত কুরাইশ গোত্রের বিপথগামী, অহংকারী এবং অত্যাচারী পৌত্তলিক নেতাদের (আবু জেহেল, আবু লাহাব) উদ্দেশ্যে এই সূরা গুলো নাযিল হয়েছিলো। তাছাড়া যারা মুসলমানদের অত্যাচার করছিলো, মুসলমানদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে হত্যা করেছিলো, নবীজী (সাঃ)কে হত্যার পরিকল্পনা করছিলো এবং বিশ্বাসীদের ধ্বংস করতে যুদ্ধ বাধিয়ে ছিলো-কুরআন নাযিলের সূচনার অধ্যায়গুলো মুলত তাদের উদ্দেশ্যেই। এই সূরা গুলো এসব অত্যাচারীদের তাদের হুশ/জ্ঞান ফিরিয়ে আনার জন্য ছিলো। এদিকে আয়াতের দৃঢ় কথাগুলো তাদের কানে বজ্রধ্বনি হিসাবে কাজ করতো কারণ আয়াতগুলো ভয়ানক সতর্কবার্তা সম্বলিত ছিলো। যেমন নিচের আয়াতগুলো-

“আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে” (সূরা লাহাব, ১)

“প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ” (সূরা হুমাজাহ, ১)

“আপনার কাছে আচ্ছন্নকারী কেয়ামতের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি? অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে লাঞ্ছিত, ক্লিষ্ট, ক্লান্ত। তারা জ্বলন্ত আগুনে পতিত হবে। তাদেরকে ফুটন্ত নহর থেকে পান করানো হবে। কন্টকপূর্ণ ঝাড় ব্যতীত তাদের জন্যে কোন খাদ্য নেই” (সূরা গাসিয়া, ১-৬)

“যারা মাপে কম করে, তাদের জন্যে দুর্ভোগ (সূরা মুতাফফিফিন, ১)

“বলুন, হে কাফেরকূল” (সূরা কাফিরুন, ১)

“যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে” (সূরা যিলযাল, ১)

এটা খুবই দুঃখজনক যে এসব কঠিন বার্তা কোমলমতি শিশুদের উদ্দ্যেশে নাযিল না হলেও এগুলোই শিশুদের সর্বপ্রথম শিখানো হয়। হ্যা, প্রথমেই এ সূরাগুলো শিখানোর একটা কারণ হচ্ছে এগুলো ছোট এবং সহজে মুখস্ত করা যায়। তবুও শিশুদের এ বয়সে জাহান্নাম ও শাস্তির ভয় দেখানোর বদলে আমাদের উচিত তাদেরকে আল্লাহর ভালোবাসা, মা-বাবার দয়া এবং জান্নাতের সৌন্দর্য প্রভৃতি বিষয়ে বুঝানো।এর ফলে শিশুকাল থেকে তাদের মনে নিরাপত্তার অনুভুতি, ভালোবাসা, দয়া, কোমলতা, মহত্ত্ববোধ, উদারতা এবং সহানুভুতি প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যগুলো ধীরে ধীরে প্রবেশ করবে। আল্লাহর ভালোবাসা, দয়া, মমতা, ক্ষমাশীলতা, ধৈর্যশীলতা এবং উদারতা ইত্যাদি আল্লাহর সুন্দর গুণাবলীগুলোর শিক্ষার মধ্য দিয়েই শিশুদের প্রথম পাঠ শুরু করা উচিত। প্রথমে তাদের মনে এই বিশ্বাস দিতে হবে যে তারা ভালো এবং আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন। এরপর তাদেরকে শেখাতে হবে যে তাদেরও উচিত আল্লাহকে ভালবাসা। শিক্ষার ক্রমটি এমন হতে হবে যে , প্রথমত তাদের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা সম্পর্কে তাদের অবগত করা, তারপরে তাদেরকে আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে সেই বাধ্যবাধকতা শেখানো।

এরপর যখন সন্তান কিছুটা বড় হবে এবং বুঝতে শিখবে, তখন মা-বাবা ধীরে ধীরে তাদেরকে খারাপ কাজের জন্য জাহান্নামের শাস্তির কথা বলতে শুরু করবেন। যেসব সূরাগুলো বড় বড় গুনাহের জন্য শাস্তির আগাম সতর্ক বার্তা দেয়- সেসব সূরাগুলো এসময় শুরু করা উচিত, যাতে তারা এসব থেকে ভয়ে সন্ত্রস্ত না হয়ে বরং শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।এটা তাদের শৈশবের শেষ পর্যায় কিংবা টিনেজ (১৩-১৯) বয়সের দিকে হতে পারে যখন তারা কিছুটা বড় হয়েছে এবং কিছুটা জটিল বিষয়গুলো ও কর্মের ফলাফল বুঝতে সক্ষম।

কুরআনের শিক্ষা দেবার সময় আমদের সচেতন থাকতে হবে যে আমরা শিশুর দর্শন ও মানসিকতাকে কিভাবে তৈরী করছি। এটা আবশ্যক যে, শিশুদের বেড়ে উঠার সাথে সাথে বাবা- মাকে সচেতনতার সাথে তাদের বয়সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সুরা বা আয়াত নির্ধারণ করতে হবে।রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বেশির ভাগ সাহাবী তাদের প্রপ্তবয়সে (শিশু বয়সে নয়) কুরআনের সাথে পরিচিত হন। সেই বয়সে কুরআন তাদের ওপর অভূত প্রভাব ফেলেছিলো। কুরআন তাদের চরিত্রকে আরো বেশী মজবুত ও সাহসী করেছিল এবং তাদেরকে উচ্চতর নৈতিকতার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলো। শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষাবিদ, সামাজিক বিজ্ঞানী ও কুরআন বিশেষজ্ঞরা মিলে কুরআন শিক্ষার একটা ক্রম ঠিক করা জরুরী যাতে অভিভাবকরা কিভাবে সন্তানদের বয়স অনুযায়ী তাদেরকে আয়াত বা সুরা শিক্ষা দিবেন সেটা জানতে পারেন। এটা অনস্বীকার্য যে ব্যক্তিজীবনে কুরআনের সবগুলো আয়াতেরই শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।তবে প্রশ্ন হলো কোন ক্রম বা ধারায় এটা শেখা বেশী কার্যকর? কোন আয়াত বা সুরাগুলিকে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে এবং কোন বয়সে কোন আয়াতের শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজন? ৩৭টি ছোট সূরা আছে বলেই প্রথমেই সম্পূর্ণ ৩০ পারা দিয়ে শুরু করা নিঃসন্দেহে উপযুক্ত নয়। তাছাড়া কেবলমাত্র মুখস্ত করার ক্ষেত্রে সহজতার ভিত্তিতে সূরা বিবেচনা করা সঠিক পন্থা নয়। – Translation Parent-Child Relations.

———

” শিক্ষাবিদ, সামাজিক বিজ্ঞানী ও কুরআন বিশেষজ্ঞরা মিলে কুরআন শিক্ষার একটা ক্রম ঠিক করা জরুরী যাতে অভিভাবকরা কিভাবে সন্তানদের বয়স অনুযায়ী তাদেরকে আয়াত বা সুরা শিক্ষা দিবেন সেটা জানতে পারেন।” – কেউ কি আছেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টটি হাতে নেয়ার ?

 

শিশুর প্রতি যত্ন


প্যারেন্টিং


চড়-থাপ্পর মারবেন না
শাস্তি বলতে আমরা বুঝি বাচ্চাকে চড় মারার বিষয়টি। খেয়াল রাখবেন বাচ্চার গায়ে হাত তুলছেন যে কারণটির জন্য তা তার স্বভাবে স্থায়ী করে দিচ্ছেন কিনা অজান্তে। মার সাধারণ শরীরে লাগে এবং মানুষ ভুলে যায় সময়ের সাথে সাথে। তবে এর মানসিক প্রভাবটি থেকে যায় দীর্ঘ দিন।

খারাপ কাজে শাস্তি
অন্যায় করলে শাস্তি দেওয়া। বাচ্চা একদিন দেরি করে বাসায় এসেছে তাকে প্রচুর শাস্তি দিলেন কিন্তু আরেকদিন দেরি করে আসায় আর শাস্তি দিলেন না ফলে তার কাছে ভুল মেসেজ চলে যায়। তাই শাস্তি দিন বিষয়টি আপনি বুঝে।

শুয়ে খাওনো নিষেধ 
ছোটবেলায় বাচ্চা খেয়ে না চাইলে শুয়ে অনেক সময় মা খাওয়ান। এই অভ্যাসটি আপনার মাঝে থাকলে ছেড়ে দিন। বাচ্চাকে টেবিলে বসিয়ে খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

হাসাহাসি & ছুটাছুটি করুন
সময় পেলে বাচ্চার সাথে খেলুন। দৌড়াদৌড়ি করুন। আদর করুন। বাচ্চাকে জড়িয়ে রাখুন আপনার ভালোবাসার চাদরে।

শিশুদের সরি বলুন
বাচ্চারা ভুল করলে বড়রা চান তাদের সরি বলা হোক। আপনাকে দেখে ও শেখে। সুতরাং আপনি ভুল করলে বাচ্চাকে সরি বলুন। তারাও আপনাকে দেখেই শিখবে।

গোপনীয়তা বজায় রাখুন
খেয়াল রাখবেন আপনি অন্যের কাছে আপনার দূর্বলতা প্রকাশ করতে চান না। তেমনি বাচ্চাও তার দুর্বলতা অন্যের সামনে বলে দেওয়া হলে তার অপমানে লাগে। সুতরাং নিজের পাশাপাশি বাচ্চাদের দুর্বলতা যত সামান্য হোক গোপনীয়তা বজায় রাখুন।

নতুন কাজ শিখানো
নতুন মূল্যবোধ, নতুন খেলা, নতুন জায়গার সাথে পরিচয় করে দিন বাচ্চার সাথে। আপনি তাদের সাথে শিখুন নতুন কিছু।

 

মানুষ কাকে ভালবাসে?


কানিজ ফাতিমা


আমার ছোট ভাই বিয়ের কথা ভাবছে। খুশীর খবর। কিন্তু একটা ব্যাপার আমাকে ভাবাচ্ছে। আর তাহলো, সে কি আসলেই বিয়ের জন্য প্রস্তুত? কেমন প্রস্তুতি নিয়ে আমি ভাবছি? টাকা পয়সা ? বিয়ের খরচ?এগুলো অবশ্যই ভাবার বিষয়। কিন্তু এগুলোর সমাধান করা তেমন কঠিন হবে না। আমি ভাবছি, পারিবারিক বা দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে তার যথেষ্ট জানা আছে কিনা। অনেককে বলতে শুনি বিয়ে হলে সবাই ঠিক হয়ে যায়। আমার অভিজ্ঞতা তা বলে না। মানুষ প্রাকৃতিক নিয়মে কিছু জ্ঞান পায় কিন্তু জীবন চলার পথে বেশীর ভাগ জ্ঞান ও যোগ্যতা (Knowledge and skill) মানুষকে অর্জন করতে হয়। যেমন প্রাকৃতিক নিয়মে মানুষ রাগ করতে শেখে কিন্তু রাগ কে ম্যানেজ করার যোগ্যতা তাকে শিখতে হয় ও অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। জীবন সঙ্গী পাবার আগ্রহ মানুষের প্রাকৃতিক কিন্তু সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও জীবন চলার জ্ঞান ও যোগ্যতা প্রাকৃতিক নিয়মে আসেনা; এটা শিখতে হয়। আমাদের দেশের ছেলে মেয়েরা এটা কোথা থেকে শিখবে ? আমাদের দেশ কেন, পৃথিবীর কথাও কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর উপরে পড়ানো হয় বলে আমার জানা নেই। উন্নত বিশ্বে এর উপরে চার্চ, মসজিদ বা সামাজিক কিছু প্রতিষ্ঠানে কাউন্সেলিং কোর্স করানো হয়। আমাদের দেশে এমন কিছু নেই। উন্নত বিশ্বে এর উপরে অনেক বই পাওয়া যায় আমাদের দেশে এমন গবেষণা মূলক বই নেই বললেই চলে। আর দু/একটা থাকলেও তা পরার প্রয়োজন মানুষ খুব একটা বোধ করে না . তাহলে এ জ্ঞান ও যোগ্যতা তারা কোথা থেকে পাবে। বাবা-মা বা পরিবারের অন্যদের দাম্পত্য জীবন তারা দেখে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দাম্পত্য জীবন নিয়ে তাদের সঙ্গে কেউই আলোচনা করে না। ফলে এ জ্ঞান তাদের অজানাই রয়ে যায়। নাটক সিনেমা থেকে যা তারা জানে তাই তাদের সম্বল আর আমাদের নাটক সিনেমায় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই বিয়েই হয় শেষ দৃশ্য। অর্থাত বিয়ে হলো তো সব সমস্যার শেষ – এর পর তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো। এত সামান্য জ্ঞান (তার কিছুটা আবার অবাস্তব) এর উপর নির্ভর করে তারা একটি ভারসাম্যপূর্ণ দাম্পত্য জীবন যাপন করবে এটা আমার ঠিক ভরসা হয় না। কাজেই আমি ঠিক করলাম আমি আমার ভাইকে আগে থেকেই আমার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান শেয়ার করব যেহেতু আমি দেশের বাইরে সেহেতু আমি মাঝে মেঝে তাকে ইমেইল করব যা হয়ত তার প্রয়োজন কিছুটা পূরণ করবে আমি পাঠকদের সাথে সেই ইমেইল গুলোই শেয়ার করছি।

Dear…..,

আসসালামু আলাইকুম

তোমার অবসর সময়ে এ লেখাগুলো পড়ো। এগুলো মুছে ফেলনা , save করে রেখো পরবর্তী জীবনের জন্য। যখনি কোনো পারিবারিক সমস্যায় পড়বে এগুলো কাজে আসবে। সবার আগে মনে রেখো বিয়ে কোনো ” romantic saga” নয়। এটা প্রচন্ড বাস্তবধর্মী একটা অধ্যায় যাতে রোমান্স কিছুটা বাড়তি সৌন্দর্য দান করে (marriage is not a “romantic saga”- it is very much realistic with a touch of romance, like dressings on salad).

আমাদের চারপাশে আমরা তিন ধরনের মানুষ দেখতে পাই –

এক , কিছু মানুষ যারা অন্যদের জীবন থেকে শিক্ষা নেয়। এরা নিজেদের জীবনের অনেক সমসা এড়িয়ে যেতে পারে;

দুই , কিছু মানুষ (অন্যের জীবন থেক শিক্ষা নেয়না তবে ) নিজের জীবন থেকে শিক্ষা নেয়, এরা কিসু সমস্যায় পরে তবে কিছু সমস্যা এড়িয়ে যেতে পারে;

তিন, কিছু মানুষ নিজের জীবনের শিক্ষাও কিছুদিন পর ভুলে যায় , এরা বার বার একই গর্তে পরে

আমি আশা করি তুমি প্রথম ধরনের মত হবে – তাই তোমার জন্য কিছু তথ্য।

মানুষ কাকে ভালবাসে? কৈশোরে মনে হত দেখতে সুন্দর আর চৌকষ এমন কাউকে – কারণ সিনেমা নাটকের সব নায়ক নায়িকাই দেখতে ওই সিনেমায় অভিনয়কারী অন্য সবার থেকে বেশী সুন্দর। না, ঠিক না। তাহলে মানুষ কাকে ভালবাসে ? মনে হলো মানুষ তাকেই ভালবাসে যার জীবন দৃষ্টিভঙ্গী তার নিজের জীবন দৃষ্টিভঙ্গীর মত। অনেকটা সত্যি, কিন্তু দু’জন একই দৃষ্টিভঙ্গীতে বিশ্বাসী মানুসের বিয়ের কয়েক বছর পর আর ভালবাসা খুঁজে পাওয়া যায় না এমন উদহরণ চারপাশে ভরা। আবার খোজা শুরু হলো – মানুষ কাকে ভালবাসে? ভাবলাম মানুষ তাকে ভালবাসে যে তার জন্য ত্যাগ স্বীকার করে। মারাত্বক ভুল প্রমানিত হলো। কারণ যার জন্য ত্যাগ করা হচ্ছে সে হয়ত বুঝতেই পারছে না যে আরেকজন তার জন্য কতটা ত্যাগ করছে,উল্টো এটা অনেক সময় তার চাহিদাকে বাড়িয়ে দেয় , expectation level অনেক উপরে উঠে যায়, ত্যাগকারীর হতাশা বেড়ে যায় , ভালবাসার কাটা উপরে ওঠার বদলে নীচে নামতে থাকে। তাহলে মানুষ কাকে ভালবাসে ? এখন মনে হচ্ছে মানুষ তাকেই ভালবাসে যে তাকে ভালো অনুভব (feel) করায় (who makes me feel good).

-আমি অসুস্থ হলে যে আমার জন্য তা করে যাতে আমি ভালো feel করি তাকে আমি ভালবাসি

-যে সামাজিক পরিবেশে আমার সঙ্গে সেভাবে কথা বলে যাতে আমি ভালো feel করি তাকে আমি ভালবাসি

-যে সেই ভাবে dress-up করে যাতে আমি ভালো feel করি তাকে আমি ভালবাসি

-যে ঘরে মেহমান আনার সময় ভাবে এসময় এই মেহমান আসলে আমি ভালো feel করব কিনা তাকে আমি ভালবাসি

-কথাও বেড়াতে যাবার আগে যে ভাবে এসময় এজায়গায় আমি ভালো feel করব কিনা তাকে আমি ভালবাসি

-যে অন্যকে সময় দেয়ার ( time commitment করার) আগে ভাবে আমি কেমন feel করব তাকে আমি ভালবাসি

-আমি কাজ থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসলে কাউকে ফোন বা skype করার সময় যে ভাবে আমি কেমন feel করব তাকে আমি ভালবাসি

-কেউ কোনো occasion এ ভাবে কোন gift টা হাতে করে নিয়ে আসলে আমার ভালো লাগবে তাকে আমি ভালবাসি

-খাবার কিনতে গেলে যে ভাবে কোন খাবারটা কিনলে আমি ভালো feel করব তাকে আমি ভালবাসি

-তার আত্মীয় বা বন্ধুরা আমাকে অপমান বা উপেক্ষা করার চেষ্টা করলে যে বুঝতে পারে আমি কেমন feel করব তাকে আমি ভালবাসি

-যে আমার আত্মীয় বা বন্ধুদের সঙ্গে সেভাবে কথা বলে যাতে আমি ভালো feel করব তাকে আমি ভালবাসি

-যে আমার কাছাকাছি থাকলে আমি নিশ্চিন্ত feel করি তাকে আমি ভালবাসি।

কেউ যদি আমার ভালবাসা চায় তবে তাকে এভাবেই তা পেতে হবে। আমি যদি কারো ভালবাসা চাই তবে আমার জন্যও এই একটাই রাস্তা।

 

একটু বুকে টেনে নাও না মা…


আফরোজা হাসান


মার সাথে রাস্তায় সিগন্যাল পার হচ্ছিলো ছয় বছর বয়সি বাচ্চাটা। হাতে ধরা ছিল দুটা বই। ছোট মানুষ তাই কৌতূহলী চোখে বিভিন্ন দিকে তাকাতে তাকাতে হাঁটছিল। হঠাৎ হাত থেকে বইগুলো পরে গেলো। ঘাবড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির দিকে, আর অসহায় চোখে মায়ের দিকে তাকালো বাচ্চাটি। মা বাচ্চাটিকে উঠিয়ে হিড়হিড় করে টেনে রাস্তা পার করেই ধমকে বললেন, কত বার বলেছি তোমাকে রাস্তা পার হবার সময় সাবধানে চলতে। যদি গাড়ি চলা শুরু করতো? আর যদি কখনো এমন করো দেখো তোমাকে কি করি। বাচ্চাকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতে দেখে মা’টি কাঁধ ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললেন, তাকিয়ে থাকতে হবে না, যাও হাঁটো।

কয়েকটি বাচ্চা মিলে ছুটোছুটি খেলছিল আর মায়েরা পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। খুব জোরে ছুটতে দেখে একজন মা বার বার তার ছেলেকে সাবধান করছিলেন। কিছুক্ষণ পর সেই ছেলেটিই পড়ে গেলো। মা ছুটে গিয়ে বাচ্চাকে টেনে উঠিয়ে গালে এক চড় দিয়ে বললেন, বলেছিলাম না তোমাকে এভাবে না ছুটতে? খুব ভালো হয়েছে। একদম উচিত শিক্ষা হয়েছে তোমার। আর কখনো হবে আমার অবাধ্য? বাচ্চাটির চোখ দিয়ে ঝরঝর অশ্রু নেমে এলো তখন।

উপরের ঘটনা দুটি আমার চোখে দেখা। ঘরে বাইরে সব জায়গাতেই শিশুরা এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল বা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। কিছু কিছু বাবা-মার আচরণ তখন উপরের ঘটনার মতো হয়ে থাকে। যে সময় বুকে জড়িয়ে ধরে আশ্বস্ত করার দরকার, সেই সময় এমন নিষ্ঠুর আচরণ করা হয় বাচ্চাদের সাথে। আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করেছি পিঠাপিঠি ভাই-বোনরা কোনকিছু নিয়ে ঝগড়া বা মারামারি করলে বাবা-মা বেশির ভাগ সময় ছোটজনকে সাপোর্ট করেন। ভুল ছোটজনের থাকলেও বকা বড়জনকেই খেতে হয় বা মাফ বড়জনকেই চাইতে হয়।

এই সমস্ত ঘটনা বা আচরণ একটা শিশুর মনোজগতে কি ধরণের প্রভাব ফেলে তা আমরা চিন্তাও করে দেখি না। বাবা-মা যে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় এই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে বাচ্চাটা ধীরে ধীরে। যে কোন বিপদ, কষ্ট কিংবা ব্যর্থতায় বাবা-মার কাছে ছুটে আসতে পারে না কিংবা বলা যায় আসার সাহস পায় না। কারণ তার মনের আকাশে গুড়গুড় করে নিরাশার মেঘ। অনিচ্ছাকৃত অন্যায় বা ভুলের জন্য বাচ্চাদের সাথে কখনোই এমন আচরণ করা ঠিক না। এরফলে বাবা-মা আর বাচ্চাদের মধ্যে যে অদৃশ্য দেয়াল তৈরি হয়, পরবর্তিতে এই দেয়ালের কারণেই বাচ্চারা নিজেদের দোষ-ভুল ইত্যাদি গোপন করতে শেখে আর কমে যায় তাদেরকে সংশোধনের সুযোগ।

আমার ছেলেটা যখন এই ধরণের অনিচ্ছাকৃত ভুল বা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে, তখন ওর ভীত চোখের দিকে তাকালে আমি অনুভব করি ভয়-অপরাধবোধ সবকিছু মিলিয়ে সে বলতে পারছে না যে, আমাকে একটু বুকে টেনে নাও না মা…..!!! কিন্তু আমি তো মা তাই বুঝি, সব মায়েরাই বুঝতে পারেন। কারণ সৃষ্টিকর্তা এই ক্ষমতা দিয়ে দেন একটি মেয়েকে যখন সে মা হয়। নেতিবাচক পরিস্থিতি গুলোতে আমরা যেন আমাদের বাচ্চাদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হতে পারি, কারণ তখনই একটি শিশুর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় মায়ের মমতার আশ্রয়ের।