ধর্মতত্ত্ব নিয়ে প্রায় ২৯ বছর পড়াশোনার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতু কুন্ডু। রিতু কুন্ডু ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন আদ্রিতা জাহান রিতু।
তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন আরো ৪ বছর আগে। তবে বিষয়টি এত দিন আড়ালেই ছিল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভাইরাল হওয়া ভিডিওতেই
শান্তির এ ধর্মে তিনি দিক্ষিত হয়েছিলেন বছর চারেক আগে। তবে বিষয়টি এত দিন ওইভাবে জানাজানি হয়নি। নিজের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার কথা বর্ণনা করেন রিতু।
ভিডিওটিতে ওই শিক্ষিকা বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছরের বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা ও জ্ঞান-বুদ্ধির আলোকে আমি ইসলামের বিষয়ে এক মাসব্যাপী পড়াশোনা শুরু করি। ১৬ দিনের মধ্যেই আমি সত্য উপলব্ধি করি এবং ২০১৭ সালের মার্চে ইসলাম গ্রহণ করি। এই দীর্ঘ ২৯ বছর পর্যন্ত আমি নিজের পরিবার, সমাজ ও মানুষের আচার-ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করি। এ দীর্ঘ সময় অন্যান্য প্রধান সব ধর্মের গ্রন্থাবলি পাঠ করেছি। জাপানেও এ বিষয়ে পড়াশোনা করি। ২০১২ সালে এসে বুঝতে পারি, এগুলো মানুষ রচিত বই।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছর পর আমি পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ নিয়ে পড়ালেখা করি। এর পাশাপাশি আমি হাদিসও পাঠ করি। সামনে কোরআনের যে সূরা আর হাদিস পেয়েছি তাই মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। মহান আল্লাহর নির্দেশনার কারণ ও বিধিনিষেধ নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। কখনও এ বিষয়ে স্বপ্নও দেখেছি। তা হয়তো অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে।
খুব ছোট থেকেই হয়তো আল্লাহ আমাকে ইসলাম কবুলের জন্য তৈরি করেছিলেন। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ঘটনা, শিক্ষা, প্রতিবন্ধকতা আর সমাজের অসংগতি আমাকে ধীরে ধীরে ইসলামের পথে পরিচালিত করেছে। আমি যখন বুঝতে পারলাম, আমাকে নামাজ পড়তে হবে সেদিন থেকে টানা ১৪ মাস আমার নামাজ কাজা হয়নি। এরপর চাকরির কারণে দু-একবার কাজা হয়ে যায়। আমি যখন অনুভব করলাম, আমাকে পর্দা করতে হবে সেদিন থেকে আমি হিজাব পরা শুরু করি।
পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন বলেও জানান এ শিক্ষিকা।
নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন আদ্রিতা জাহান রিতু। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
২০১৩ সালে তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৭ সাল থেকে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে শিক্ষকতা করছেন।