বরগুনার তালতলী উপজেলায় গত শুক্রবার রাতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষার্থী এক রাখাইন শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে তিন বখাটে যুবক। এতে বাধা দেওয়ায় ওই শিশু ও তার মাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তারা। ঘটনার পর দুজনকেই আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
একই দিন গোপালগঞ্জে ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে হিরু মোল্লা (৩২) নামের এক বাসচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অসুস্থ ওই শিশুকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আদিবাসী শিশুর পরিবার সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে তালতলীর একটি গ্রামে মং চুং ম্যান, লা ওয়ে মং ও অ উ চান নামের তিন রাখাইন যুবক মাতাল হয়ে কবিরাজপাড়া গ্রামে এসে শিশুটির ঘরে ঢোকে। একপর্যায়ে শিশুটিকে তারা ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় প্রচণ্ড মারধর করে শিশুটির কাপড়চোপড় ছিঁড়ে ফেলে তারা। শিশুটির চিৎকার শুনে তার মা এগিয়ে এলে বখাটে যুবকেরা তাঁকেও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়।
শিশুটির মা জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় তিন যুবক হঠাৎ ঘরে ঢুকে তাঁর মেয়ের ওপর হামলে পড়ে। এ সময় তিন যুবক মিলে মারধর করতে থাকলে শিশুটি চিৎকার শুনে তিনি ছুটে আসেন। তিনি মেয়েকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এলে তাঁর ওপরও হামলা চালায় যুবকেরা। প্রচণ্ড মারধরের কারণে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। প্রথমে এক গ্রাম্য চিকিৎসকের বাড়িতে দুজনের চিকিৎসা করানো হয়। শিশুটির অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতে দুজনকেই তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের পরামর্শ দিলে রাত একটার দিকে পুলিশ প্রহরায় দুজনকেই সেখানে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এখন তাঁর মেয়ের যে অবস্থা, তাতে কোনোক্রমেই মেয়েটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ইসমত আরা গতকাল শনিবার দুপুরে বলেন, ‘শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আতঙ্ক আর গুরুতর অসুস্থতার কারণে সে কথা বলতে পারছে না। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।’
তালতলী থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ মিয়া জানান, মা ও মেয়ে দুজনই চিকিৎসাধীন থাকায় এ ঘটনায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এদিকে গোপালগঞ্জে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই শিশুর মা বাদী হয়ে হিরু মোল্লাকে আসামি করে শুক্রবার রাতেই গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। শিশুটির মা বলেন, তারা এবং হিরু মোল্লা একই বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাঁর স্বামী ঢাকায় থাকেন। শুক্রবার বিকেলে পাশের বাজারে তিনি পেঁয়াজ কিনতে যান। এ সুযোগে তাঁর মেয়েকে হিরু মোল্লা ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে (হিরু) আটক করে পুলিশে দেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, শিশুটিকে চিকিৎসাসহ ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২ শিশু কে ধর্ষনের চেষ্টা! মা গুরুত্বর আহত
Facebook Comments