মোঃ দেলোয়ার হোসেন
পাত্রপক্ষ ও কন্যাপক্ষের মধ্যে ঘটকালির কাজটি সারলেন আমার দূরসম্পর্কের এক মুরুব্বি দুলাভাই l মুরুব্বি বললাম এই কারণে যে , দুলাভাইয়ের বড়ো ছেলে আমার চেয়েও বয়সে কিছুদিনের বড়ো ! কথাবার্তা মোটামুটি পাকাপাকি হবার পরেও দুলাভাই কন্যাপক্ষের কানে আমার বিষয়ে অতিরিক্ত একটি বিশেষণ লাগিয়ে দিলেন, “ ছেলে সারাদিন মাথায় টুপী পরে থাকে!” কন্যার পিতা জানতে চাইলেন….
: ছেলে কি মাদ্রাসা লাইনে লেখাপড়া করেছে ?
: না , জেনারেল লাইনে পড়েছে !
: ছেলের মাথায় কি টাক আছে?
: না তা নয় !
: তাহলে?
: ছেলে কিছুটা “হুজুর” টাইপের !
: আলহামদুলিল্লাহ ! ভালো খবর ! তাহলে ছেলে মেয়ে উভয়ের দেখা সাক্ষাৎ ও সম্মতিক্রমে কথাবার্তা ফাইনাল হয়ে যাক !
একদিন শুভ ক্ষনে আমাদের বিয়ের সানাই বাজলো ! মধ্যবিত্তের সাদামাঠা বিয়ে ! মনের মধ্যে একরাশ আনন্দ অনুভূতি নিয়ে বিয়ে শেষে বৌ সহ বাড়ি ফিরলাম !
কয়েকদিন পর যাওয়া হলো বৌকে নিয়ে শশুর বাড়ি ! যথারীতি গিন্নীর কামরাই এখন রূপান্তর হলো আমাদের দুজনের ঘুমঘর হিসেবে ! মাঝারি সাইজের রুম ! খাট ড্রেসিংটেবিল , বসার জন্য দুটি চেয়ার আর একটি স্টিলের আলমারি l পরদিন সকাল বেলা আবিষ্কার করলাম , স্টিলের আলমারির উপরে সুন্দর করে কাপড়ে মোড়ানো একটি চারকোনা সাইজের বস্তু ! গিন্নী কে জিজ্ঞাসা করলাম ……
: আলমারির উপর কাপড়ে মোড়ানো বস্তুটি কি ?
: হারমোনিয়াম !
: কে বাজায় ?
: এখন কেউ বাজায় না ! শখ করে কিনে রেখে দেওয়া হয়েছে !
: তুমি বাজাতে পারো নাকি ?
: একটু একটু পারি !
: আমাকে একটু বাজিয়ে শোনাও তো ! গানও গাইতে পারো নাকি ?
: অল্প অল্প পারি !
: বাহ ! বেশতো ! চলো তবে হয়ে যাক একটা “সংগীত সকাল !”
: আমার লজ্জা লাগছে ! বাসায় যখন কেউ থাকবেনা তখন শোনাবো !
: বেশ ! তবে সেই কথায় রইলো !
টুকটাক প্রশ্ন করে জানতে পারলাম , গিন্নী বাসায় একজন মহিলা উস্তাদ রেখে হারমোনিয়াম বাজানো ও গান শিখতো ! নিতান্তই শখের বশে শেখা ! প্রশিক্ষণ প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকার সময় বিয়ে হয়ে গেলো ! সেই সাথে ইতি ঘটলো সংগীত সাধনার ! ঢাকা শহরে তাঁর জন্ম , পড়াশোনা ও বেড়ে উঠার সুবাদে খুব সহজেই সে এই ধরণের সুযোগ করে নিতে পেরেছিলো !
অন্যদিকে আমার জন্ম ও বেড়ে উঠা পল্লীগ্রামে ! তবে ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিল দুর্বার আকর্ষণ ! রেডিও, টেপরেকর্ডার নিয়মিত শোনা হতো ! আর বিশেষ করে বয়াতীদের পালাগানের ছিলাম পাগল ভক্ত ! গ্রামে উৎসব উপলক্ষে মাঝে মাঝে আয়োজন করা হতো বিখ্যাত গাতকদের নিয়ে সারারাত ব্যাপী গানের আসর ! তাঁদের ইনস্ট্যান্ট বানানো ছন্দ ও অন্তমিল দিয়ে , কখনো কবিতা আবার কখনো গানের মাধ্যমে সব শ্রেণীর শ্রোতাদেরকে গভীর রাত পর্যন্ত মোহাবিষ্ট করে রাখতো! আমি তন্ময় হয়ে শুনতাম আর ভাবতাম, এভাবে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গেয়ে গেয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারলে মন্দ হতো না !
যাই হউক, সেদিন বিকেলেই সুযোগ হাতের নাগালে, বাসার মুরুব্বিরা কি একটা কাজে সবাই বাইরে! আর দুয়েকজন পিচ্চিপাচ্চা, ওরা হিসেবের মধ্যে পড়েনা ! গিন্নীর রুমের দরজা বন্ধ করে আয়োজন করা হলো “ একক সংগীত বিকাল”! শ্রোতা আমি একাই ! শিল্পীকে উৎসাহ দিয়ে বললাম ,
: শুরু করো ! শ্রোতা হিসেবে আমি একাই তিনশো !
: প্রথম কোন গানটা শুনতে চাও?
: যেটা জীবনে প্রথম শিখিছিলে, সেটা দিয়েই শুরু করো !
: আচ্ছা ! ঠিক আছে !
মাত্র কয়েকদিন হলো বিয়ে হয়েছে ! এখনো কথা বলার মধ্যেও জড়তা কাটেনি ! চলাফেরায় কেমন একটা লাজরাঙ্গা ভাব ! গিন্নি গাওয়া শুরু করলো আর আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লিখা সেই বিখ্যাত গানটি …
“ফুলে ফুলে ঢ’লে ঢ’লে বহে কি’বা মৃদু বায় ।।
তটিণী-র হিল্লোল তুলে কল্লোলে চলিয়া যায় ।
পিক কি’বা কুঞ্জে কুঞ্জে ।।
কুউহু কুউহু কুউহু গায়,
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায় ।”
আমি তন্ময় হয়ে শুনছি ! মোটামোটি মিষ্টি গানের গলা ! গানের সাথে সুর মিলিয়ে বাজছে হারমোনিয়াম ! গান শেষ হওয়ার পর বললাম….
“ অসাধারণ গেয়েছো তুমি ! আমি মুগ্ধ !”
আমার কথা শুনে আনন্দে তাঁর চোখে পানি এসে গেলো ! ধরা গলায় বললো ,
: তোমার পছন্দ হয়েছে ?
: খুব পছন্দ হয়েছে ! আরও একটা শোনাও !
সে আবার গান ধরলো ! এবার নজরুল গীতি ! কিন্তু আগের মতো সাবলীল ভাবে আর গাইতে পারছে না ! আবেগে গলা বসে যাচ্ছে ! চোখ থেকে নেমে আসছে আনন্দ অশ্রুধারা ! আমি মিটিমিটি হাসছি ! বললাম…
: থাম! আর কষ্ট করে গাইতে হবে না ! যা গেয়েছো , মনের ভিতর বসে গেছে ! সারা জীবন মনে রাখার জন্য যথেষ্ট !
: এখন থেকে আমি শুধু তোমার জন্যই গাইবো ! আমার গান তোমার ভালো লেগেছে এটাই আমার পরম পাওয়া ! আমার গান শেখা সার্থক হলো ! দোআ করো , আমি যেন কথা রাখতে পারি !মাথায় হাত বুলিয়ে অন্তর থেকে দোআ করে দিলাম !
হঠাৎ মাথায় একটা খেয়াল উদয় হলো ! আরে! আমিতো অনেক দিন থেকে মনের ভিতর সযতনে লালিত ইচ্ছা এখনই পূরণ করতে পারি ! সাহস করে বলেই ফেললাম গিন্নীকে …
: এখন আমি একটা গান গাইতে চাই, তুমি আমার গানের সাথে সুর মিলিয়ে হারমোনিয়াম বাজাবে !
: বলো কি ? তুমিও গাইতে পারো নাকি ?
: যেমন পারি তেমনি গাইবো ! অডিশন তো দিচ্ছি না ! শুনে শুনে অনেক গান আমার মুখস্ত করা আছে !
গিন্নীর পরিচিত গানের মধ্যে থেকেই একটা গাইতে শুরু করলাম ! গলায় তেমন জোর পাচ্ছিলাম না ! মনে হচ্ছে গলার ভিতরটা ছোট হয়ে আসছে ! হারমোনিয়াম সুর মতোই বাজছে, কিন্তু গানের সুর পিছলে চলে যাচ্ছে অন্যদিকে!আমিও নাছোড় বান্দার মতো দাঁতমুখ খিঁচে সুরকে টেনে আনার চেষ্টা করছি হারমোনিয়ামের দিকে !
গিন্নী বেশীক্ষন নিজেকে স্থির রাখতে পারলোনা ! হাসি চাপতে না পেরে হারমোনিয়াম রেখেই দিলো দৌড় ! এক দৌড়ে ঘরের বাইরে! আর আমি শরমে বিছানার উপর চ্যাগায়ে পরে রইলাম আধা ঘণ্ট, আধা বেহুশের মতো!সেটাই ছিল হারমোনিয়ামের সুরের সাথে আমার গান গাওয়ার প্রথম ও শেষ অপচেষ্টা !
বেশ কয়েক বছর পরের কথা ! জীবিকার প্রয়োজনে দেশের বাইরে চলে আসা হলো ! কিছুদিন পর গিন্নিও চলে আসলো আমার কাছে ! গিন্নীর সাধের হারমোনিয়াম অতিরিক্ত ওজনের কারণে সাথে আনা গেলো না! তাঁর খুব মন খারাপ হলো ! এতদিনের প্রিয় জিনিস রেখে আসতে হচ্ছে ! আমি সান্তনা দিয়ে বললাম “ মন খারাপ করোনা ! তোমাকে একটা সুন্দর দেখে পিয়ানো কিনে দেবো!” আর মনে মনে ভাবলাম , এইবার আমার সংগীত সাধনা ঠেকায় কে? বাসায় পিয়ানো থাকলে গিন্নীর কাছ থেকেই বাজানো শিখতে পারবো ! এরপর নিজের গানে নিজেই বাজাবো !
গিন্নী আসার পর আবার নতুন করে শুরু হলো আমাদের টুনাটুনির সংসার ! হাইস্পিড ইন্টারনেটের কল্যানে সারা দুনিয়ার গানের গ্যাং চলে আসলো হাতের মুঠোয়! আমার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ ! গিন্নী সারাদিন বাসায় থাকার ফলে You tube দেখে নিত্য নতুন গানের খবর মাথার ভিতর টুকে রাখে ! রাতে আমি বাসায় ফিরলে শুরু হয় সংগীতের সংবাদ প্রবাহ ! কান ঝালাপালা অবস্থা!
এর কিছুদিন পর আমাদের সংসারে নতুন অতিথি আগমনের বার্তায় দুজনের মনেই আনন্দের জোয়ার বইতে লাগলো ! ডাক্তার পরীক্ষা করে বললেন , সে কন্যা সন্তানের মা হতে চলেছে ! খুশিতে তখন আমার আবার আধপাগল অবস্থা ! আমি পরামর্শ দিলাম…
:You Tube এ খালি গানবাজনা আর নাচানাচি দেখোনা ! কন্যা তো পেটের ভিতরেই লাফালাফি শুরু করবে ! অনেক সুন্দর সুন্দর ইসলামিক আলোচনা আছে ! বাদ্যবাজনা ও অশ্লীলতামুক্ত সংগীত আছে ! মাঝে মাঝে ওগুলোও দেখো!
: আমি দেখি একটু একটু ! তুমি যখন বলছো আরো সময় নিয়ে দেখবো !
: তোমার জন্য একটি পিয়ানো কিনে আনি ?
: আর কিছুদিন যাক ! এই মুহূর্তে এসব ভালো লাগবে না !
: সব সময় হাসি খুশি থেকো !বাচ্চাও হাসতে হাসতে দুনিয়ায় চলে আসবে !
সেই বছরের রমজান মাস চলে আসলো ! তখনও আমাদের কন্যার পৃথিবীতে আসার সময় হয়নি ! পবিত্র রমজানের রোজার শুরুতে গিন্নী সদর্পে ঘোষণা দিলো ,
: এই মাসে আমরা কোনো গানবাজনা ও নাচানাচির অনুষ্ঠান দেখবোনা ! ওয়াজ মাহফিল ও হামদ-নাত শুনবো ! বেশীবেশী কোরআন তিলাওয়াত করবো ! অনাগত সন্তানের জন্য এটা হবে শান্তি ও রহমত স্বরূপ!
: আলহামদুলিল্লাহ ! অতি উত্তম প্রস্তাব !আমি আছি তোমার সাথে !
দুই সদস্য বিশিষ্ট সংসদে পূর্ণ ভোটে বিলটি পাশ হয়ে গেলো ! আর আমরা দুজন নিয়মিত তাফসীর মাহফিল, ইসলামিক গানের অনুষ্ঠান দেখা শুরু করলাম ! আমার চেয়ে গিন্নী অধিক সময় নিয়ে দেখার কারণে , সে এসব অনুষ্ঠানের ভক্ত শ্রোতায় পরিণত হলো এবং ঈদের পরেও সেই ধরণের অনুষ্ঠান উপভোগ করা পুরু দমে চলতে থাকলো ! আর আমার পিয়ানো কিনার ও বাজানো শিখার স্বপ্ন ধীরে ধীরে মাঠে মারা যাওয়ার উপক্রম হলো !
একসময় ঘর আলো করে আমাদের সন্তান পৃথিবীর বুকে পা রাখলো এবং দেখতে দেখতে পার হলো একটি বছর ! এখন মধুর সুরে বাবা,মা, দাদা , নানা , মামা শব্দগুলি স্পষ্ট উচ্চারণ করে ! আরও বিচিত্র চিৎকার ও চেঁচামেচিতে সারাদিন ঘরবাড়ি মুখরিত করে রাখে, যার বেশীরভাগ শব্দই বুঝা যায় না ! মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে সেও এই বয়সেই ইসলামী সংগীতের ভক্তে পরিণত হলো ! ভক্ত বললাম এই কারণে যে , খাওয়ার সময় ইসলামী গান না শুনলে সে খেতে চায়না!কান্নার সময় তাঁর কানের কাছে এই ধরণের গানের কলি গাইলে , সাথে সাথে কান্না বন্ধ করে দেয় ! এমনকি ঘুম পাড়ানোর সময়ও তাঁর কানের কাছে মিনমিন করে গাইতে হয় !
এই দেশে বাচ্চা জন্মের পর হতে চারবছর বয়স পর্যন্ত একজন “ চাইল্ড কেয়ার “ নার্স নিয়মিত রুটিন মাফিক বাচ্চাকে দেখাশুনা করেন ও স্বাস্থ্য, বৃদ্ধি , টিকা , খাবারদাবার , মানসিক বিকাশ ইত্যাদির বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকেন ! এখন যেহেতু বাচ্চা কথা বলা শুরু করেছে , তাই নার্স পরামর্শ দিলো বেবি কে মিউজিক্যাল টাইপ কোনো খেলনা কিনে দিতে ! আমি ভাবলাম এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না ! গিন্নিকে বললাম…
: নার্স বলেছে , বাচ্চাকে পিয়ানো টাইপ খেলনা কিনে দিতে !
: তাহলে তো কিনতেই হবে ! ছোটোখাটো ও হালকা দেখে একটা নিয়ে আসো !
আমি বেছে বেছে মাঝারি টাইপ একটা কিনে ফেললাম ! বাচ্চা সেটা দুই হাতে তুলতে পারেনা ! তাতে কি? দুই হাতে অনবরত টিপে বিভিন্ন ধরণের সুর বাঁজিয়ে কান তছনছ করে দেয় ! এরমাঝে একদিন গিন্নীকে বলেই ফেললাম আমার পিয়ানো শিখার ইচ্ছার কথা ! গিন্নী বললো…
: দেখ , আমি আর এসব বাজাতে চাই না ! আমি চাইনা তুমিও এসব শিখো !
: কেন ?
: আমি কয়দিন আগে এক হুজুরের ওয়াজে শুনেছি , অনর্থক গানবাজনায় মেতে থাকলে পাপ হয় ! গানের সাথে যদি বাদ্যবাজনা ও পর্দাহীন মহিলাদের ভিডিও থাকে তবে পাপের পরিমান আরও বেড়ে যায় ! এসো আমরা এসব পরিত্যাগ করি ! ভালো কিছু শুনি ও দেখি !
: সেইটা আবার কেমন ?
: ঐ সমস্ত গান আমরা শুনতে পারি, যাতে আল্লাহর তাওহীদের কথা আছে অথবা রাসূলের সা. মহব্বত ও তার শামায়েল আছে অথবা যাতে চরিত্রকে দৃঢ় করতে উদ্ধুদ্ধ করা হয়।
: আর ?
: সেই সমস্ত গান, কবিতা ও শুনা যেতে পারে, যা শুনে মুসলিমদের একে অন্যের প্রতি মহব্বত ও সুসম্পর্ক সৃষ্টি হয় !
: আর ?
: সেই সব গীত বা সংগীতও উপভোগ করা যেতে পারে, যাতে ইসলামের মৌলিক নীতি বা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । অথবা এই জাতীয় অন্যান্য কথা বা আলোচনা শোনা যেতে পারে যা সমাজকে আহবান করে দ্বীনি আমলের দিকে কিংবা উত্তম চরিত্র গঠনের দিকে !
: তুমি তো দেখি পুরা মহিলা হুজুর হয়ে গেছ !
: এসব মানতে পারলে , আমরা দুনিয়াতে পাপমুক্ত থাকবো এবং আখেরাতেও লাভবান হবো ! চলো আমরা নিয়ত করি মেনে চলার ! দুজনে একসাথে চেষ্টা করলে আশাকরি পারবো ইন্শাআল্লাহ !
: ইন্শাআল্লাহ ! নিয়ত করলাম !
এরপর আমরা খুব বেছে বেছে অনুষ্ঠান দেখি ও গান শুনি ! আর পিয়ানো টা শুধু ব্যবহার হতে থাকলো বাচ্চার খেলনা হিসেবেই ! আমাদের এক ছোট্ট কন্যা, ইচ্ছামতো পিয়ানোর কি বোর্ড চেপে পোঁ পোঁ আওয়াজ তুলে ! আর মনের সুখে গলা দিয়ে আওয়াজ করে , আয়ি-আয়ি- আয়ি -আ-আ-আ ! আমি আর গিন্নী তাঁর কান্ড দেখে মনের সুখে হাসি !
আর হাঁ ! গিন্নি যে আমাকে কথা দিয়েছিলো , সে , আমি ছাড়া আর কারো সামনে গান গাইবে না , সে এখন পর্যন্ত সেকথা রেখেছে ! তারপর থেকে, সে আর কারো সামনে গান গায়নি ! এমনকি তার ভাইবোন অথবা কোনো বান্ধবীর সামনেও না !