banner

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 409 বার পঠিত

 

হতাশা ভুলে বদলে দিন জীবনের পথ

জীবন সুন্দর। বেঁচে থাকতে ভালবাসি আমরা সবাই। তবু জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন সবকিছু অর্থহীন মনে হয়! ক্যারিয়ারের ব্যর্থতা মানসিকভাবে দূর্বল করে দিতে পারে আপনাকে। মনে হতে পারে আর কোন আশা নেই, আলো নেই। যখন আপনি ডুবে আছেন হতাশার অন্ধকারে তখনো পৃথিবীতে বিরাজ করছে সম্ভাবনা। তাই মুখ তুলে তাকান। জীবনকে সাজান আবার নতুন করে। অবলম্বন করুন এই কৌশলগুলো-

আগামীকাল বলে কিছু নেই, এমনভাবে ঘুমান 
আপনার শরীর একটি যন্ত্র। চমৎকার জটিল একটি যন্ত্র। আপনার কম্পিউটারটি যেমন সারাক্ষণ চালু রাখা যায় না, একে বিশ্রাম দিতে হয়, ঠিক তেমনি আপনার শরীরেরও প্রয়োজন বিশ্রামের। প্রতিরাতে নিজেকে নির্বিঘ্ন একটি ঘুম দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের সুন্দর ঘুম মস্তিষ্কে সারাদিনের জমে থাকা সকল টক্সিন দূর করে দেয়। এজন্যই প্রতিরাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম আপনাকে তৈরি করে পরেরদিনের জন্য, আপনার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যেও এটি খুব প্রয়োজন। প্রতিদিনের ঘুমের সময়ের সাথে আরও ৩০ মিনিট যোগ করুন। দেখবেন, আপনার কাজের গতি বেড়ে গেছে, কাজ করতে ভাল লাগছে, ফ্রেশ মস্তিষ্ক থেকে নতুন নতুন আইডিয়া আসছে।

মনোযোগ দিয়ে খাবার গ্রহণ করুন
খাওয়ার সময় শুধু খাওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া একটি অনুশীলনের বিষয়। বিশেষ করে তখন যখন আপনি এক হাতে খাবার গ্রহণ এবং অন্য হাতে ইমেইল বা ম্যাসেঞ্জারে উত্তর দিতে ব্যস্ত থাকেন। আপনি মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছেন মানে হল, আপনি প্রতিটি খাদ্য উপাদানের স্বাদ গ্রহণ করছেন। এতে আপনি কী গ্রহণ করছেন আর কী বাদ রয়ে গেল প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা থেকে সে বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে। গবেষণায় দেখা গেছে, মনোযোগ দিয়ে খাওয়া আপনার মন ভাল রাখে, স্ট্রেস কমায়, বাড়তি ওজন কমাতে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করে।

ক্যাফেইন ত্যাগ করুন
ক্যাফেইন সরাসরি আপনার নার্ভাস সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। এজন্যই কফি পান করলে আপনি তরতাজা অনুভব করেন, মস্তিষ্ক কাজ করছে বলে মনে হয়। কিন্তু আপনি যদি চরম হতাশাগ্রস্থ একজন মানুষ হোন এবং জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে এই সাময়িক সমাধান আপনার জন্য নয়। প্রাকৃতিক এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান গ্রহণ করুন। শরীরচর্চা করুন, ধ্যান করুন। সকালে এক মগ কফি আপনাকে যতটা সতেজতা দেবে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরি হবে।

 

কর্মমূখী হোন

মনকে আবার জাগ্রত করুন, ফিরিয়ে আনুন কাজে। আপনি যখন হতাশাগ্রস্থ তখন কাজ ছেড়ে দিয়ে ব্যার্থতার সময়গুলোকে মনে করার কোন মানে নেই। এরচেয়ে বরং কাজ করুন। যখন আপনার চাকরি হচ্ছে না বা ব্যবসায় আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না তখন এই সময়টাকে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজে লাগান। আবার নতুন করে নির্ধারণ করুন আপনার লক্ষ্য। ফোকাস করুন। সকাল শুরু করুন শরীরচর্চা দিয়ে। সফল মানুষেরা নিজেকে কর্মমূখী করেছেন সকাল থেকেই। ধীরে কাজ করা আপনার মস্তিষ্ককে ঝিমিয়ে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট বেশী কাজ করতে শুরু করুন।

 

নীরবতার শান্তিকে গ্রহণ করুন
মনকে শান্ত করতে আমরা কত কি না করি। আপনার নানান দিকে খরচ করা টাকা এবং সময় উভয়ই বেঁচে যাবে আপনি যদি শান্তির জন্য সঠিক পথটি বেছে নিতে পারেন। মনের ক্ষত দূর করা, শান্ত-পরিশুদ্ধ করা, আবারও উজ্জ্বীবিত করার চাবি আছে আপনারই হাতে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় মেডিটেশন করেন তারা খুজে পান নিজের মাঝেই শান্তি বা ইনার পিস। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট মেডিটেশন আপনার পুরো দিনটিকেই ঝরঝরে উজ্জ্বল করে দেবে। রাতে ভাল ঘুম হবে, কমে যাবে উদ্বিগ্নতা, হতাশা। মস্তিষ্ক কাজ করবে আরও চমৎকারভাবে।

স্বাস্থ্যকর ত্বকের রুটিন
ত্বক ভাল থাকলে মনও ভাল থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অনেক সময় প্রয়োজন। একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অন্তত ২১ দিন সময় লাগে। আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে চান তাহলে কষ্ট করে নির্দিষ্ট সময়টিতে ২১ দিন উঠুন। এরপর আর কষ্ট হবে না। এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে যাবে আপনার। একইভাবে শরীরের সুস্থতা, ত্বকের যত্ন পরিণত হতে পারে একটি অভ্যাসে। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করুন। ত্বকের ধরণ বুঝে মনোযোগের সাথে এর যত্ন নিন।

 

অহমের জন্য নয় আত্মার শান্তির জন্য কাজ করুন
কাজ সেটাই করুন যেটা করতে আপনার ভাল লাগে। কোন কাজ করে আপনি সফলতার শিরোপা জয় করতে পারবেন বা বিখ্যাত হবেন সেই তৃষ্ণা থেকে কাজ না করে আত্মার তুষ্টির জন্য কাজ করুন। আপনার কাজ যখন আপনার মনে যোগ করবে শান্তি, আনন্দ তখন আপনি এমনিই ভাল থাকবেন। সফল হওয়া মানেই কোটিপতি হওয়া নয়। আপনি তখনি সফল যখন আপনি সন্তুষ্ট।

মনের কথা শুনুন
আমরা অনেক সময় টের পাই না আমাদের কী প্রয়োজন, কিন্তু টের পায় আমাদের শরীর। খুব ঘুম পাচ্ছে? ছোট একটি ন্যাপ নিন। দৈনন্দিন জীবন অসহ্য লাগছে? কোথাও ঘুরে আসুন। যখনই মনে হচ্ছে কিছু ঠিক নেই, তখনই নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন কী চাই! জীবন হোক উপভোগের, টিকে থাকার লড়াই নয়।

জীবনের হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে জীবনকে দিন একটি নতুন শুরু। জেগে উঠুন। সবার আগে গুছিয়ে নিন আপনাকে। নিজেকে ভালোবেসে শুরু করুন আবার। গড়ে তুলুন সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী মানুষটিকে যাকে হারাতে পারবে না কেউ।

সূত্র: ব্রাইটসাইড

Facebook Comments