banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 822 বার পঠিত

 

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য : হাদিসের নির্দেশনা

হাদিসের নির্দেশনা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর হাদিসে কোরান মাজিদের এসব নির্দেশনর প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে। তা স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহারের প্রতিদান ও স্ত্রীদের প্রতি স্বামীদের সদয় ও সহানুভূতিশীল হওয়ার কথা বলে।

মানুষের সর্বোত্তম ধনভান্ডার
হজরত ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে মানুষের সর্বোত্তম ধনভান্ডার সম্পর্কে বলব না, যা সে মজুত করবে? তা হল একজন গুণবতী স্ত্রী, যখনই সে তার দিকে দৃষ্টিপাত করে সে তাকে সন্তুষ্ট করে, যখন সে তাকে কোন আদেশ করে সে তা পালন করে এবং সে স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে হেফাজত করে। (আবু দাউদ)

হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল, কোন মানুষের সর্বোৎকৃষ্ট বস্ত্ত কি? তিনি উত্তর করলেন, সর্বোত্তম বস্ত্ত হল এমন জিহবা যা আল্লাহর স্মরণে রত থাকে, একটি কৃতজ্ঞ অন্তর ও একজন বিশ্বস্ত স্ত্রী, যে তাকে তার বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। (আহমদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পৃথিবী পুরোটাই সামগ্রী এবং পৃথিবীর সর্বোত্তম সামগ্রী হল একজন পূণ্যবতী স্ত্রী। (মুসলিম)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটি বস্ত্ত যাকে দান করা হয়েছে তাকে এই পৃথিবীর ও পরবর্তী জীবনের জন্য সর্বোত্তম বস্ত্ত দান করা হয়েছে: কৃতজ্ঞ অন্তর, আল্লাহর স্মরণে রত জিহবা, বিপদে ধৈর্যশীল শরীর এবং এমন স্ত্রী যে নিজের ও তার (স্বামীর) সম্পদে বিশ্বাসঘাতকতা করে না। (বায়হাকি)

এই হাদিস অনুসারে, মুমিনের সর্বোত্তম সম্পদের একটি হল পূণ্যবতী স্ত্রী। ইসলাম নারীদের মর্যাদাকেই বৃদ্ধি করে নি, বরং তাদেরকে সর্বোত্তম সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যদি কোন পুরুষ একজন পূণ্যবতী স্ত্রী লাভ করে তবে যেন সে তার যত্ন নেয় এবং মূল্যবান সম্পদ হিসেবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে।

সদয় আচরণ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নারীদের সাথে সদয় আচরণ করবে। তাদেরকে একটি পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং পাঁজরের সবচেয়ে বাঁকা হাড় হল সবচেয়ে উপরের হাড়। যদি তুমি তাকে সোজা করতে চেষ্টা কর, তবে তুমি তাকে ভেঙে ফেলবে। আর যদি তুমি তাকে একা ছেড়ে দাও, তবে তা বাঁকাই থেকে যাবে। অতএব, নারীদেরকে তদনুসারে নসীহত করতে থাক। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় নারীদেরকে একটি পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যা তোমার জন্য কখনো সোজা হবে না। অতএব, তার বক্রতা সত্ত্বেও তাকে উপভোগ কর। যদি তুমি তাকে সোজা করতে যাও, তবে তাকে ভেঙে ফেলবে। আর তাকে ভেঙে ফেলা মানে হল তালাক প্রদান করা। (মুসলিম)

স্ত্রীকে অপছন্দ করার নিষেধাজ্ঞা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন পুরুষ যেন কোন মুসলিম নারীর বিরুদ্ধে ঘৃণা পোষণ না করে, যদিও সে তার মধ্যে একটি বিষয়কে অপছন্দ করে, সে তার মধ্যে অন্য এমন একটি গুণ খুঁজে পাবে যাতে সে সন্তুষ্ট হবে। (মুসলিম)

নারীদের অধিকার ও দায়িত্ব
হজরত আমর ইবনে আহওয়ায (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার কর। তারা তোমাদের বাড়িতে কয়েদীর মত। যদি তারা কোন গুরুতর অপরাধ করে তবে তোমরা তাদের বিছানা পৃথক করে দেবে এবং হালকা শাসন করতে পার। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। তোমাদের স্ত্রীদের কাছে তোমাদের অধিকার রয়েছে এবং তোমাদের উপর তাদের অধিকার রয়েছে। তোমাদের অধিকার হল যে, তারা এমন কাউকে তোমার বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি দেবে না যাকে তুমি অপছন্দ কর। আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার হল যে, তোমরা তাদের খাওয়া পরার সুব্যবস্থা করবে। (তিরমিযি)

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা তাদেরকে বিয়ে করেছ এবং আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তোমরা তাদের শরীরকে তোমাদের জন্য হালাল করেছ। তাদের উপর তোমাদের একটি অধিকার রয়েছে। তাহল, তারা তোমাদের বিছানায় অন্য কাউকে অনুমতি দিবে না। যদি তারা তা করে তবে তাদেরকে এমনভাবে প্রহার করবে, যাতে আহত না হয়। তোমাদের উপর তাদের খাওয়া পরার অধিকার রয়েছে, তোমাদের সামর্থ অনুসারে। (বুখারি, মুসলিম)

নারীদের মৌলিক অধিকার
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, একজন নারীর তার স্বামীর উপর কি অধিকার রয়েছে? তিনি বলেন, তাকে আহার করাও যেমনটি তুমি আহার কর। তাকে পরাও যেমনটি তুমি পরিধান কর। তার চেহারায় আঘাত করবে না। তাকে ভৎর্সনা করবে না এবং ঘরের ভেতরে ব্যতিত তোমাকে তার থেকে পৃথক করবে না। (আবু দাউদ, আহমদ, ইবনে মাজাহ)

আদর্শ স্বামী
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈমানের বিচারে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের অধিকারী এবং তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করে। (তিরমিযি)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

একাধিক স্ত্রীর সাথে সাম্যের আচরণ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন লোকের দুই স্ত্রী থাকবে এবং সে তাদের সাথে সমতার আচরণ করবে না সে কিয়ামতের দিন শরীরের এক অংশ ঝুলন্ত অবস্থায় আসবে। (আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযি)

পরিবারের উপর ব্যয় করার প্রতিদান
হজরত আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন মুসলমান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রতিদান পাওয়ার আশায় নিজের পরিবারের জন্য কোন কিছু ব্যয় করবে, তা তার আমলনামায় সদকা বা দান হিসেবে পরিগণিত হবে। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সর্বোত্তম দীনার (মুদ্রা) যা মানুষ ব্যয় করে তা হল, যে দীনার সে নিজের পরিবারের জন্য ব্যয় করে এবং যে দীনার সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যাওয়ার জন্য প্রাণী পালনে ব্যয় করে এবং যে দীনার সে ব্যয় করে তার বন্ধুদের উপর, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। (মুসলিম)

হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যা-ই তুমি ব্যয় কর তার প্রতিদান অবশ্যই রয়েছে। এমনকি তুমি যা তোমার স্ত্রীর মুখে দাও তারও। (বুখারি, মুসলিম)

এই হাদিসসমূহ মানুষকে তাদের স্ত্রীদের সাথে কেবল দয়া ও সহানুভূতির সাথে নয়, বরং উদারতার সাথেও আচরণ করতে অনুপ্রাণিত করে। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা নারীদের এমন সম্মানজনক মর্যাদা দান করে।

পরিবারের উপর ব্যয় না করার নিন্দা
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আচ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তির জন্যে পাপ হিসেবে ইহা যথেষ্ট যে, সে তার অধীনস্তদের উপর ন্যায্য ব্যয়ে ইতস্তত করবে। (আবু দাউদ, মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আচরণ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যা কিছু বলেছেন, তিনি নিজেও তার স্ত্রীদের প্রতি তেমনটি আচরণ করতেন। তিনি ছিলেন সবচেয়ে আদর্শ স্বামী। নিচে তাঁর স্ত্রীদের প্রতি ভালবাসা ও তাদের দেখাশুনা সংক্রান্ত কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হল:

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে ছিলেন। তিনি তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন এবং এতে তিনি (আয়েশা (রা.)) তাকে হারিয়ে দেন। পরবর্তীতে যখন তিনি ( আয়েশা (রা.)) কিছুটা ভারি হয়ে যান, তাঁর সাথে পুনরায় দৌড় প্রতিযোগিতা দেন এবং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হারিয়ে দেন। তখন তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, এটি পূর্বের প্রতিযোগিতার বদলা। (আবু দাউদ)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর শপথ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার কক্ষের দরজায় দাঁড়ানো দেখতে পেলাম। তখন হাবশীরা বর্শা নিয়ে খেলা করছিল। তিনি তাঁর চাদর দ্বারা আমাকে ঢেকে দিলেন, যাতে আমি খেলা দেখতে পারি। যতক্ষণ আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলাম ততক্ষণ তিনি আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, আমি আমার বান্ধবীদের সাথে পুতুল নিয়ে খেলা করছিলাম। যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন তারা আমার কাছ থেকে চলে গেল। তিনি তখন আমাকে তাদের কাছে ফেরত পাঠালেন এবং তারা পুনরায় আমার সাথে খেলা করতে লাগল। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তন করেন এবং তাকে পুতুল নিয়ে খেলা করতে দেখেন। তার একটি ঘোড়াও ছিল, যার ছিল দুটি ডানা। যখন তিনি এটি দেখলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এটির উপর এগুলি কি? আমি বললাম, ডানা। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, দুই ডানাবিশিষ্ট ঘোড়া! আমি বললাম, আপনি কি শুনেন নি যে, সুলায়মান আ. এর একটি ঘোড়া ছিল, যার অনেক ডানা ছিল? তা শুনে তিনি তিনি এতই হাসলেন যে, আমি তাঁর পেছনের দাঁত পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছিলাম। (আবু দাউদ)

আমাদের মনে রাখতে হবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল আল্লাহর একজন রাসূলই ছিলেন না, বরং মদীনার ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধানও ছিলেন। তাঁর ছিল একটি খুব ব্যস্ত জীবন। বস্ত্তত অধিকাংশ সময় তিনি নিজেকে ইবাদতে নিয়োজিত রাখতেন। এতদসত্ত্বেও তিনি তাঁর স্ত্রীদের সাথে সময় কাটাতেন, তাদের সঙ্গ দিতেন এবং তাদের সাথে আনন্দ বিনোদনে অংশ নিতেও সময় বের করেন। এজন্যে কোরান মাজিদ বলে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর জীবনে রয়েছে একটি উত্তম আদর্শ।’ (৩৩:২১) আমাদের উচিৎ, আমাদের পারিবারিক জীবনে তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ করা।

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য
হজরত আবু ওমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর ভয়ের পর একজন ঈমানদার পূণ্যবতী স্ত্রীর চেয়ে উত্তম কিছু পেতে পারে না। যদি সে তাকে কোন আদেশ করে তবে সে তা পালন করে, যদি সে তার দিকে তাকায় তবে সে তাকে তৃপ্ত করে, যদি সে তার থেকে কোন প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে, সে তা পূর্ণ করে এবং যদি সে অনুপস্থিত থাকে তবে সে তার আচরণ ও তার (স্বামীর) সম্পদকে হেফাজত করে। (ইবনে মাজাহ)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কোন নারী সর্বোত্তম? তিনি উত্তর করলেন, যে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, যখন সে তার দিকে দৃষ্টিপাত করে। আর আদেশ পালন করে, যখন সে আদেশ করে এবং তার অসন্তুষ্টির আশংকায় নিজের ব্যাপারে ও তার (স্বামীর) সম্পদের ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করা থেকে বিরত থাকে। (নাসায়ি)

স্বামীর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আমি কাউকে অন্যের প্রতি সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে আমি স্ত্রীদের আদেশ দিতাম তাদের তাদের স্বামীদের সেবা করতে। (তিরমিযি)

হজরত কায়স ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি হীরায় গেলাম এবং তাদেরকে (হীরাবাসীদেরকে) তাদের নেতাদের সিজদা করতে দেখলাম। আমি চিন্তা করলাম, সিজদা লাভের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চেয়ে আরো অধিক হকদার। তাই আমি তাঁকে বললাম, আমি হীরাবাসীদেরকে তাদের নেতাদের সিজদা করতে দেখেছি; অথচ আপনি সিজদা লাভের ব্যাপারে তাদের চেয়ে আরো অধিক বেশি হকদার। তিনি আমাকে বললেন, বল দেখি, যদি তুমি আমার কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম কর তবে কি তাতে সিজদা করবে? আমি উত্তর করলাম, না। অত:পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাকে সিজদা কর না। যদি আমি কাউকে অন্য কারো উদ্দেশ্যে সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে স্ত্রীদেরকে আদেশ দিতাম তাদের স্বামীদের সিজদা করতে। তা সেসব দায়িত্বের কারণে যা আল্লাহ তাআলা স্বামীদের প্রেক্ষিতে স্ত্রীদের উপর অর্পণ করেছেন। (আবু দাউদ, আহমাদ)

রোজা রাখতে স্বামীর অনুমতি
হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ব্যতিত রোজা রাখতে পারে না। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

হাদিসের ভাষ্যকারগণ বলেন, এ থেকে কেবল নফল রোজা উদ্দেশ্য। কোন স্বামীকেই আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে আদেশ প্রদানের অনুমতি দেয়া হয় নি। যদি সে তা করে তবে স্ত্রী তার আনুগত্য করবে না।

স্বামীর ডাকে সাড়া দেওয়া
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে, অথচ সে তা প্রত্যাখ্যান করে। আর স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রী যাপন করে, তখন ফেরেস্তারা সারা রাত্রী তার (স্ত্রীর) উপর অভিশাপ দিতে থাকে। ( বুখারি, মুসলিম)

হজরত তালাক ইবনে আলী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তার কামনা পূরনের জন্য আহবান করে, তখন সে যেন তার আহবানে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় ব্যস্ত থাকে। (তিরমিযি)

স্বামীর আহবান প্রত্যাখ্যান করার নিন্দা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঐ সত্ত্বার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে তা ফিরিয়ে দেয়, তখন যিনি জান্নাতে আছেন’ তার উপর অসন্তুষ্ট হয়, যতক্ষণ না তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট হয়। (বুখারি, মুসলিম)

যিনি জান্নাতে আছেন’ থেকে উদ্দেশ্য হলেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাআলা। স্বামীর প্রতি একজন স্ত্রীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল তার শারিরীক চাহিদা পূরণ করা। যেমনটি ইতোপূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। এই অধিকার আল্লাহ তাআলা প্রদান করেছেন। তাই যদি কোন নারী তার স্বামীর চাহিদা পূরণে সাড়া না দেয়, তবে সে যেন আল্লাহ তাআলারই আদেশ অমান্য করল এবং এর মাধ্যমে সে তার অসন্তুষ্টি লাভ করল। (বুখারি, মুসলিম)

স্বামীর সম্পদ যথাযথভাবে হেফাজতের প্রতিদান
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী তার স্বামীর উপার্জন থেকে আল্লাহর রাস্তায় দান করে, যদিও তার অনুমতি ব্যতিত হয়, স্বামী তার অর্ধেক সওয়াব লাভ করবে। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন স্ত্রী তার গৃহ থেকে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট না করে দান করে, তার জন্যে তার প্রতিদান রয়েছে। কারণ, সে দান করেছে। তাতে স্বামীরও প্রতিদান রয়েছে। কেননা, সে তা উপার্জন করেছে। কারও প্রতিদান এতে অন্যের প্রতিদানের চেয়ে কম হবে না। (বুখারি, মুসলিম)

যেহেতু, পুরুষরাই একটি মুসলিম পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি, তাই স্ত্রী তা থেকেই দান করে থাকে যা তার স্বামী উপার্জন করে। এ দানের জন্যে উভয়ে সমান প্রতিদান লাভ করবে।

স্বামীকে কষ্ট দেওয়ার নিন্দা
হজরত মু’আয ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী পৃথিবীতে তার স্বামীকে কষ্ট দেয় তখন জান্নাতে অবস্থানরত তার আনত নয়না স্ত্রীগণ (হুরগণ) তাকে লক্ষ করে বলে, তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক। তোমার কাছে সে কেবল একজন মেহমান মাত্র এবং সে অতি শীঘ্রই তোমাকে ছেড়ে আসবে এবং আমাদের সাথে যোগ দিবে। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

অবাধ্য স্ত্রীর ইবাদত গৃহিত হয় না
হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির ইবাদত কবুল হয় না; পলাতক গোলাম- যতক্ষণ না সে তার মালিকের কাছে ফিরে আসে। যে নারী রাত যাপন করে, অথচ স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট থাকে এবং এমন নেতা যাকে তার লোকেরা পছন্দ করে না। (তিরমিযি)

এই হাদিসটি স্ত্রীদেরকে তাদের স্বামীদের অনুগত হওয়া এবং যেসব কারণে স্বামীরা অসন্তুষ্ট হয় তা পরিহার করা সম্পর্কে আরেকটি সতর্কবাণী। যদি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে স্বামীকে অসন্তুষ্ট করে তবে তাদের ইবাদত ও প্রার্থনা কবুল হবে না। যদি স্বামী কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে স্ত্রীর উপর অসন্তুষ্ট হয়, তবে তখন সে অপরাধী সাব্যস্ত হবে না এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তার ইবাদতও প্রত্যাখ্যাত হবে না।

স্বামীকে সন্তুষ্ট করার প্রতিদান
হজরত উম্মে সালামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় যে স্ত্রী মৃত্যুবরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ( তিরমিযি)

একজন ঈমানদার স্বামী তার স্ত্রীর উপর তখনি সন্তুষ্ট হতে পারে যখন সে আল্লাহ তাআলার সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলবে এবং একটি পূণ্যময় জীবন যাপন করবে।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, রমজান শরীফের রোজা রাখবে, সতীত্ব রক্ষা করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আহমদ, তাবরানি)

উপরে যা বর্ণিত হয়েছে তা প্রধানত, স্বামী স্ত্রীর জাগতিক ও শারিরীক দায়িত্ব ও কর্তব্য সংক্রান্ত। ইসলাম মনে করে, একজন ব্যক্তির আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় প্রয়োজন শারিরীক প্রয়োজনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রকৃত ঈমানদার প্রথম থেকেই আল্লাহ তাআলার আদেশের আনুগত্যের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভ করতে সচেষ্ট থাকে। জাগতিক প্রয়োজন ও শারিরীক প্রশান্তি তার কাছে পরবর্তী মর্যাদা লাভ করে। কোরান মাজিদ বলে,

যে দুনিয়া চায় আমি সেখানে তাকে দ্রুত দিয়ে দেই, যা আমি চাই, যার জন্য চাই। তারপর তার জন্য নির্ধারণ করি জাহান্নাম, সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত, বিতাড়িত অবস্থায়। (বনি ইসরাইল, ১৭:১৮-১৯)

একজন প্রকৃত ঈমানদারের চুড়ান্ত সফলতা, তার ধর্মপরায়ন জীবন যাপনের মধ্যে নিহিত, যা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবে। কোরান মাজিদ বলে,

প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর অবশ্যই কিয়ামতের দিনে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী। (আলে ইমরান, ৩:১৮৫)

কোরান মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে, হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও। যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর ফেরেস্তাকুল, যারা আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন সে ব্যাপারে অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয়। (আত-তাহরীম, ৬৬:৬)

এ থেকে বুঝা যায় যে, একজন স্বামী ও তার স্ত্রীর মৌলিক দায়িত্ব হল, পরস্পরকে এমন একটি জীবন যাপনে সাহায্য করা, যা পরকালে তাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। যদি স্বামী তার স্ত্রীকে সর্বোত্তম বস্ত্ত সামগ্রী সরবরাহ করে, যার ফলে স্ত্রী তাকে সর্বোচ্চ ভালবাসা ও আনুগত্য প্রদান করে; কিন্তু উভয়ে পরস্পরকে আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা করে না তবে উভয়ে তাদের পারস্পরিক কর্তব্য পালনে ব্যর্থ বলে বিবেচিত হবে। নিম্নলিখিত হাদিসটি বিষয়টিকে আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলে,

তোমাদের প্রত্যেকেই জিম্মাদার এবং প্রত্যেককে তাদের অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সমাজপতি তার সমাজের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, স্বামী তার পরিবার সম্পর্কে দায়িত্বশীল এবং স্ত্রী তার স্বামীর ঘর ও সম্পদ সম্পর্কে দায়িত্বশীল। (বুখারি, মুসলিম)

হাদিসটি ইসলামে পারিবারিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব বর্ণনা করে। প্রথমত, স্বামী ও স্ত্রী তাদের পারিবারিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে সমান মর্যাদা রাখে। দ্বিতীয়ত, উভয়কেই কিয়ামতের দিন তাদের স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে কিনা। তৃতীয়ত, এই হাদিস সন্তানদের উপর মায়ের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করে। আর তা এজন্যে যে, ছেলেমেয়েরা তাদের মায়ের খুব কাছাকাছি থাকে। বলা বাহুল্য যে, স্ত্রীর প্রতি একজন স্বামীর এবং স্বামী ও সন্তানের প্রতি একজন স্ত্রীর মৌলিক দায়িত্ব হল, একটি ন্যায়নিষ্ঠ ও ধার্মিক জীবন যাপনে পরস্পরকে সহযোগিতা করা। নিম্নলিখিত হাদিসটি বিষয়টিকে আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলে:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা সেই স্বামীকে দয়া করুন যে রাতের বেলা ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে। অতঃপর সে তার স্ত্রীকেও নিদ্রা থেকে জাগিয়ে তোলে যাতে সেও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারে। যদি সে জাগ্রত না হয় তবে যেন মুখে পানির ছিটা দেয়। আল্লাহ তাআলা সেই স্ত্রীকেও রহম করুন যে রাতের বেলা জাগ্রত হয় এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে। অতঃপর সে তার স্বামীকে জাগিয়ে দেয় যাতে সেও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারে। যদি সে জাগ্রত না হয় তবে সে যেন তার চেহারায় পানির ছিটা দেয়। (নাসায়ি)

যখন কোন ব্যক্তি রাতের বেলা তার স্ত্রীকে জাগিয়ে দেয় এবং উভয়ে একত্রে দুরাকাত নামাজ আদায় করে, তাদের নাম আল্লাহ তাআলার স্মরণকারী পুরুষ ও নারীদের তালিকায় লেখা হয়। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

এই আলোচনা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইসলামে বিয়ে কেবল দুটি বিপরীত লিঙ্গের শারিরীক আকর্ষণ কিংবা স্বামী স্ত্রীর জাগতিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে হয় না। বরং, তা স্বামী- স্ত্রী থেকে জাগতিক, বস্ত্তগত, শারিরীক ও আধ্যাত্মিক প্রয়োজন ভাগাভাগি ও চাহিদা পূরণ করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে। এজন্যে ইসলামে বিয়ে একটি খুব সংরক্ষিত ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান। তাই ভগ্ন পরিবার, একক মাতৃপরিবার কিংবা একক পিতৃপরিবারের ঘটনা মুসলিম সমাজে নেই বললেই চলে।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

Facebook Comments