banner

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 612 বার পঠিত

 

সিংড়ায় বৃদ্ধা মাকে বাড়িছাড়া করল ছেলে


নারী সংবাদ


‘বৃদ্ধা হওয়াটাই যেন সবচেয়ে বড় অপরাধ! আমার ঘর-সংসার, ছেলে-মেয়ে সব থাকার পরও আজ আমি বড় অসহায়। জায়গা-জমি সব লিখে দিয়েছি। ঘর-বাড়ি সব কিছু নিয়ে মুখে লাথি মেরে ফেলে দিল। পেটের ছেলে এই ভাবে মারবে মেনে নেয়া যায় না। আমার বাপ, মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন কেউই নেই। তাই বিচারের আশায় এই থানার সামনে সকাল থেকে বসে আছি।’ বলছিলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার কুষাবাড়ী গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা রহিমা বেওয়া।

নিতান্ত অসহায়ভাবে শুক্রবার সকাল থেকে নাটোরের সিংড়া থানার সামনে বসেছিলেন তিনি। শুক্রবার দুপুর ১২টায় থানার সামনে বসে থাকার সময় এই প্রতিবেদককে কাতর কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রহিমা বেওয়া।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কুষাবাড়ী গ্রামের মৃত হুসেন প্রামাণিকের স্ত্রী রহিমা বেওয়া প্রায় ১০ বছর পূর্বে তার স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হন। এরপর তিনি তার ৭ ছেলেমেয়ের পরিবারের সাথে জীবনযাপন করতে থাকেন।

সম্প্রতি মেজ ছেলে বেল্লাল হোসেনকে জমি-জমা ও ঘর-বাড়ি লিখে দেন। শুক্রবার সকাল ৭টায় ছেলের কাছে টাকা চাইলে মায়ের মুখে লাথি মেরে ফেলে দেয় ছেলে বেল্লাল হোসেন। গ্রাম্য প্রধানদের সামনেই বৃদ্ধা মাকে করা হয় উপর্যপরি মারপিট।

এদিকে থানার সামনে মাটিতে বসে একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা মহিলাকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিংড়া উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় বিষয়টি সিংড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলামকে অবগত করা হয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিংড়া উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধা মায়ের মুখে লাথি মেরে ফেলে দেয়া দুঃখজনক বিষয়। ওই বৃদ্ধা মহিলাকে সহযোগিতা করার জন্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা পাশে রয়েছেন।

সিংড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, কোনো ছেলে তার মায়ের মুখে লাথি মেরে ফেলে দেয়ার ঘটনাটি একটি অমানবিক বিষয়। ছেলে বেল্লাল হোসেনকে আটক করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

Facebook Comments