banner

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 56 বার পঠিত

 

সায়েন্স ফিকশন: তৃতীয় মাধ্যাকর্ষণ

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে বসে ছিল তরুন বিজ্ঞানী ও গবেষক ড.সিনান। মাথার মধ্যে এক দারুণ চিন্তা ঘুরছিল। পৃথিবী, গ্রহ, তারা—এসব সবসময় তাকে আকর্ষণ করেছে। কিন্তু তার গবেষণার বিষয় ছিল নতুন কিছু। সে এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করতে চেয়েছিল, যা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পরিবর্তন ঘটাতে পারবে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তি কমানো যাবে, ফলে মহাকাশযান বা উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য কম শক্তির প্রয়োজন হবে।

যদিও এটা ছিল এক অসম্ভব স্বপ্ন তবুও ড. সিনান এবং তার দল কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন।
২০৩৫ সাল, যখন পৃথিবী ক্রমশ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছিল, তখন এই প্রযুক্তি অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মহাকাশ গবেষণায় বড় ধরনের অগ্রগতি না হলে মানুষ ভবিষ্যতে মহাকাশের রিসোর্স কাজে লাগাতে পারবে না।

ড.সিনানের চিন্তা ছিল পৃথিবীকে টেকসই, শক্তিশালী ও শক্তির দিক থেকে আরো স্বাধীন করা।
একদিন তার পরীক্ষামূলক যন্ত্রটির কাজ শেষ হয়ে যায়। এটি “নিউট্রো-এন” নামক একটি ডিভাইস, যা পৃথিবীর আকর্ষণ শক্তিকে স্থানিকভাবে সামান্য কমিয়ে দিতে সক্ষম। এটি পুরো পৃথিবীতে প্রয়োগের জন্য তৈরি হয়নি, কিন্তু একটি ছোট অঞ্চলে পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারবে।

তারা প্রথমে যন্ত্রটি শহরের ছোট্ট অঞ্চলে দিয়ে পরীক্ষা শুরু করে। যন্ত্রটি চালু করতেই ড.সিনান অনুভব করেন, পৃথিবীর আকর্ষণ কমে যাচ্ছে, আর কিছু সময় পর পুরো অঞ্চলটি হালকা হয়ে উঠছে। নীচের থেকে উপরের দিকে পাখির মতো ছোটো জিনিসগুলো ভেসে উঠতে শুরু করে, এটা ছিল এক অভূতপূর্ব দৃশ্য!

কিন্তু সমস্যা শুরু হয় কিছুদিন পর। যখন যন্ত্রটি কাজ করতে থাকে, তখন কিছু অদ্ভুত ফলাফল দেখা দেয়। অনেক কিছু হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করে। যন্ত্রের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কিছু অঞ্চলে গাছপালা ও পশু-পাখির চলাফেরা অসম্ভব হয়ে পড়ছিল,পৃথিবীর মৌলিক শর্তগুলো বদলে যাচ্ছিল।

এরপরে পৃথিবী ফের যখন তার সাধারণ নিয়মে ফিরছিল, তখন ড. সিনান বুঝতে পারছিল যে তিনি যা চেয়েছিলেন, তা সম্ভব হলেও
মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক নিয়মে অনেক জটিলতা নিয়ে আসবে।

এবার তাকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা—যন্ত্রটি পৃথিবীর অন্যান্য অংশে পরীক্ষা করবে কি না, অথবা তাকে ফের নতুন কোনো পথ খুঁজে বের করতে হবে।তার এই পরীক্ষামূলক গবেষণার কারনে পৃথিবী ছিল তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিয়ন্ত্রণের এক বিপজ্জনক যাত্রায়।

শেষমেশ; বিজ্ঞানী সিনান এবং তার দল সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা আরো উন্নত গবেষণা করবে এবং যন্ত্রটির ত্রুটি ঠিক করতে চেষ্টা করবে।
কিন্তু একথা পরিষ্কার, পৃথিবীর সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ অনেক বড়।

– আরওয়া আনাম

Facebook Comments