সব পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখার কৌশল কী?
ইসরাত
প্রথম কৌশল হলো, মাথা যে গরম হতে পারে এটা মাথায় না রাখা। সব পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখা আসলে উচিত না। যখন আপনার কাউকে বোঝানো দরকার যে আপনি তার উপর রেগে আছেন কারন সে এমন কিছু করেছে যাতে আপনার রাগ হওয়া উচিত তখন কিন্তু খানিকটা রাগ আপনাকে দেখাতেই হবে। আপনার রাগ দেখানোটা যুক্তিযুক্ত কিনা তা নিরপেক্ষ হয়ে আগে বিবেচনা করুন।
ধুম করে রাগ হওয়াটা খুব খারাপ অভ্যাস। কাছের মানুষগুলোও আস্তে আস্তে দুরে চলে যায়। তারা কিন্তু দুরে যেতে চায়না তারপরেও বাধ্য হয়। হয়তো একই বাড়িতেই বাস করে একই ছাদের নিচে তবুও তাদের অন্তরে থাকে এক জীবনের ব্যবধান।
এবার কাজের কথা বলি, ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারা এবং সব রকম পরিস্থিতি সামলে নেয়াটা একটা বিশেষ গুন। এটা এমন একটি গুন যা চেষ্টা করে অর্জন করা যায়। আমরা কি কারো কাছে ছোট হতে চাই কখনো? চাইনা। যেকোনো অবস্থায় আপনি প্রথমেই চিন্তা করবেন, এখন আমার কি করা উচিত। ধরে নিন আপনি ঠিক এমন অবস্থায় পরলেন…
আপনি লকডাউনের মধ্যে ঘরে আটকে আছেন। অনেক কাজ জমে আছে, সেগুলো কবে শেষ করবেন, কতোদিন এভাবে চলবে, বাসার মানুষগুলো এমন কেন করছে, ছোট ভাইবোন দুটো এতো কেন বিরক্ত করছে। সব মিলিয়ে আপনি এমনিতেই যথেষ্ট বিরক্ত তার উপর আপনার ছোট বোনটা আপনার সাথে খুব বাজে ভাবে বেয়াদবি করে বসলো। আপনার ইচ্ছে করলো একটা চড় মেরে সবগুলো দাঁত ফেলে দিতে। কিন্তু আপনাকে কয়েকটি দিক ভাবতে হবে…
১. আপনি কোষে তাকে একটা চড় মারতে পারেন।
২. আপনি হেসে ফেলতে পারেন, তাহলে হয়তো উদারতা দেখানো হবে।
৩. আপনি আপনার মাকে গিয়ে বিচার দিতে পারেন। শাসন যা করার মা-ই করুন।
৪. আপনি তাকে বলতে পারেন ” আমরা পরে কথা বলি, এখন সঠিক সময় না।”
এখন আপনি ভেবে দেখবেন এই ৪টির মধ্যে কোন পদ্ধতিটা ভালো। আর আমি সাহায্য করছি এটা জানিয়ে যে কোনটি কেমন হবে।
১. আপনি যদি এখন চড় মারেন তাহলে আপনার বোন আরো বাজে আচরণ দিয়ে আপনাকে অসম্মান করতে পারে, কারন মেয়েটার আজকে কেন যেন মন বা মেজাজটা ভালো নেই। তাই এটা বাদ দেয়া খুবই জরুরী।
২. হেসে ফেলবেন তো সর্বনাশ। আপনার বোন আহ্লাদী স্বভাবের না হলেও আপনার হাসিতে প্রশ্রয় পেয়ে এই মেজাজ প্রতিদিন দেখাবে এবং তখন মহা সর্বনাশ।
৩. মা কে বিচার দিলেতো আপনিও ছোটবোনের বয়সে নেমে গেলেন। বড় ভাই হিসেবে নিজের জায়গাটা তো ঠিক রাখতে হবে।
৪.এটা উত্তম। আপনি যখন বলবেন ” আমরা পরে কথা বলি” তখন আপনার বোন আর কিছু বলার সাহস পাবেনা এবং সে কিছুটা লজ্জা এবং সংকোচবোধ করবে। তাছাড়া আপনারা দু’জনই মাথা ঠান্ডা রেখে চিন্তা করার সময় পাবেন। এতে আপনার বোন অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইতে আসবে আর আপনিও “আর যেন এমন না হয়” বলে ক্ষমা করে দেবেন।
আসলে কে কিভাবে পরিস্থিতি সামলাবে তা নির্ভর করে তার ব্যাক্তিত্বের ধরন কেমন তার উপর। সারাজীবন ধরে প্রতি মুহূর্তে এতোশত পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন তা কিন্তু আপনাকেই সামলাতে হবে। একটি উদাহরণ দিলাম কিছুটা হয়তো বোঝাতে পারবো সেই আশায়।
ইসরাত, প্রাক্তন জে.এস. কলেজ।
সুত্রঃ কোরা।