নিজ অধিকার আদায়ে এখনো লড়ছেন নারী। তবে কাচের দেয়াল ভাঙতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ক্ষমতাধর নারীর একজন হয়ে উঠেছেন। তাঁদের গল্পই এখানে তুলে ধরা হলো:
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
২০০৫ সালে জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর হন ম্যার্কেল (৬২)। ২০১৩ সালে তিনি তৃতীয় বা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হন। বলা যেতে পারে, ইউরোপের অর্থনীতির হাল ধরেন ম্যার্কেল। ইউরোপের আর্থিক ও বাণিজ্যিক সংকটের সময় তাঁর মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। অভিবাসন সমস্যায়ও জোরালো ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট করেছেন ম্যার্কেল। ২০১৫ সালে ফোর্বস সাময়িকী ম্যার্কেলকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী নির্বাচিত করে।
থেরেসা মে
মার্গারেট থ্যাচারের পর যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে (৫৯)। গত ১৩ জুলাই ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করার পর ক্ষমতায় আসেন থেরেসা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে যুক্তরাজ্যবাসী ভোট দেওয়ার পর থেরেসা মে ক্ষমতায় আসেন। ২০১০ সালের মে মাস থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকার পক্ষে তিনি ব্যাপক প্রচার চালান।
হিলারি ক্লিনটন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম মনোনীত নারী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন (৬৮)। মার্কিন মুলুকে সব আলোচনা এখন তাঁকে ঘিরে। ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির ফার্স্ট লেডি ছিলেন। এরপর নিউইয়র্কের স্টেট সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অং সান সু চি
মিয়ানমারে গণতন্ত্রের প্রতীক নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু চি (৭১)। সামরিক জান্তা সরকারের সাংবিধানিক বাধা থাকার কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। বছরের পর বছর গৃহবন্দী থাকার পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন। বন্ধুর হাতে তুলে দেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার। সু চি এখন দেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অ্যালেন জনসন সারলিফ
লাইবেরিয়ার লৌহমানবী বলে পরিচিতি পেয়েছেন অ্যালেন জনসন সারলিফ (৭৭)। ২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে আফ্রিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। নোবেল শান্তি পুরস্কারও পান। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ। সাবেক আন্তর্জাতিক কর্মী। ২০১১ সালে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।
মিশেল ব্যাশলে
লাতিন আমেরিকার ক্ষমতাধর নারী চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেল ব্যাশলে (৬৪)। তিনি বিরোধী দলের সাবেক নেতা। অগাস্তো পিনোশের শাসনামলে ব্যাশলের ওপর অত্যাচার চলে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চিলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্যাশলে। এর আগে তিনি প্রথম নারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।
ক্রিশ্চিন লেগার্দে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্রিশ্চিন লেগার্দে (৬০)। ২০১১ সালে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি একজন সাবেক আইনজীবী। লেগার্দে ফ্রান্সের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জ্যানেট ইয়েলেন
২০১৩ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন ইয়েলেন (৬৯)। ওই সময় এই পদে প্রধানত পুরুষেরাই থাকত। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রধান অর্থনীতিবিদও ছিলেন।
ইরিনা বোকোভা
২০০৯ সালে বুলগেরিয়ার বোকোভা (৬৪) ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। নারীর সম-অধিকার আন্দোলনে বোকোভার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব পদে মনোনীত ব্যক্তিদের তালিকায়ও ছিলেন তিনি।
মার্গারেট চ্যান
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান (৬৮) বার্ড ফ্লু ও সার্স মহামারির সময় হংকংয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন ভালো চিকিৎসক। জাতিসংঘে নারীস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সুত্রঃ প্রথম আলো