সন্তানকে যা কখনো বলবেন না পর্ব -২
কানিজ ফাতিমা
আপনি এত কষ্ট করার পর কি সন্তানের ক্ষতি চান? যদি না চান , তাহলে আর একটু ধৈর্য্য বাড়ান৷ আপনার যত কষ্টই হোক কখনই আপনার সন্তানকে এটা বলবেন না যে-তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না …
তোমার মত ছেলে/মেয়ে আমার দরকার নাই ..
কখনই তার সঙ্গে ওর সমবয়সী কারো তুলনা করবেন না ৷ যদি কাউকে মডেল হিসাবে সামনে রাখতে চান তাহলে মহত মানুষদের ছোট বেলার গল্প বলতে পারেন বা তার থেকে বড় কারো কথা বলতে পারেন ৷ বড়দের অনুকরণ করতে বাচ্চারা পসন্দ করে কিন্তু সমবয়সী কাউকে না ৷অন্যের কাছে তার নামে কখনও অভিযোগ করবেন না , অন্তত তখন করবেননা যখন সে তা শুনতে পায় ৷ এতে বাচ্চারা মনে করে মা (বা বাবা ) তার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে না ..তার বদনাম করে …৷ এতে তার মন খারাপ হয় এবং তার self esteem কমে যায় ৷ তবে এর মানে এই না যে আপনি বাচ্চার সমস্যা নিয়ে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করবেন না ৷ বাচ্চাদের সমস্যা গোপন না রেখে অভিজ্ঞ কারো সাথে এ নিয়ে আলোচনা করলে সুফল পাওয়া যায় ৷ তবে এক্ষত্রে যা মনে রাখতে হবে তাহলো এটা বাচ্চার সামনে কখনই করা যাবে না ৷ এমনকি তাকে পাশের ঘরে রেখেও না – অনেক সময় মনে হয় তারা শুনছে না বা খেলা নিয়ে ব্যস্ত আছে …কিন্তু আসলে তারা শোনে৷ তার সম্পর্কে negative কোনো কথার একটি শব্দ ও যদি তার কানে যায় তাহলে সে আপনার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে , মনে করবে ” মা মনে হয় সব সময়েই আমার নামে এসব কথা বলে…” ৷ তাছাড়া বাচ্চারা তার সম্পর্কে বাবা- মার মন্তব্য শুনতে খুবই আগ্রহী ৷ আপনি তার সম্পর্কে কিছু বলতে শুরু করলেই সে কান খাড়া করে তা শুনে , কিন্তু ভান করে যে সে আপনার কথায় একেবারেই মনোযোগ দিচ্ছে না ৷ কাজেই তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলুন ” তাহমিদ অনেক চেষ্টা করে …সে আগের চেয়ে উন্নতি করছে …আর একটু চেষ্টা করলে সে অনেক ভালো করবে …” ৷ নিজের সম্পর্কে এ রকম মন্তব্য শুনলে বাচ্চারা তাদের চেষ্টা বাড়িয়ে দিবে এবং আপনার সঙ্গে তার সম্পর্ক সদৃঢ় হবে ৷মনে রাখবেন আপনার সঙ্গে আপনার বাচ্চার সম্পর্ক অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে তার সঠিক Development এর জন্য বেশী জরুরী ৷
শেষ কথা -এ কথা গুলো বলা যত সহজ করা তত সহজ না ৷ আসলেই এটা কঠিন একটি কাজ …একটু চিন্তা করুন – আপনি কি চাচ্ছেন ? সন্তান মানুষ করতে…এটা স্বাভাবিক একটি চাওয়া কিন্তু ছোট চাওয়া না ৷ পৃথিবীর সবথেকে কঠিন কাজটি আপনি করছেন- Human Resource Development ৷ পৃথিবীর সবথেকে উন্নত জীব কে গড়ছেন আপনি ৷ এটা অন্য যে কোনো কাজের চেয়ে Challenging৷ কাজেই অন্য যেকোনো কাজের চেয়ে বেশী ধৈর্য ও বুধিমত্তা প্রয়োজন ৷ এবং সেটা আপনাকেই করতে হবে -কারণ আপনার সন্তানের ভালো চান আপনি ৷