banner

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 2808 বার পঠিত

 

সন্তানকে আদরের নাম ধরে ডাকুন

আকলিমা ফেরদৌস আখি


আমি সাধারণত প্যারেন্টিং বিষয়ে পড়াশুনা করতে ভয় পাই। কারণ কোন আর্টিকেল বা বই পড়লেই অনুশোচনা আর আত্মগ্লানিতে ভুগতে থাকি-যা কিছু লেখা আছে তার কিছুই তো করছি না, আমি বোধহয় আদর্শ মা হতে পারব না, আমার সন্তানরা মানুষের মত মানুষ হবে তো! অথবা এখানে যে ভাবে লেখা আছে সে রকম তো করে দেখলাম কোন কাজ হচ্ছে না ইত্যাদি ইত্যাদি।

আবার মনে মনে এ বলেও সান্তনা দিই যে,একেক সন্তান একেক রকম সবার ক্ষেত্রে একই সূত্র হয়ত কাজ করবে না।

ঠিক সময়ে না খাওয়া,গোসল না করতে চাওয়া,পড়তে না বসা,মোবাইল নিয়ে বসে থাকা এধরনের কমন সমস্যা গুলো আমার জানা মতে সব মায়েরই আছে।আমারও আছে।

রাগ করা ,শাসন করা ,হালকা পিটুনি ,আদর করে বলা কোন কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছিলো না ,তখন একদিন প্যারেন্টিং এর থিউরি অনুযায়ী (সন্তানদেরকে আদরের নাম ধরে ডাকুন) আমার মেয়েকে ডাকলাম ‌-”কইরে আমার মা কথা শোনা পাখি’!

দেখি এক ডাকেই মেয়ে হাজির, যেখানে অনেকবার ডাকলেও তার নিজের কাজ রেখে আসতে চায় না।
মেয়ে এসে বলল’- ‘আচ্ছা মা ,মা কথা শোনা পাখি কি?

আমি ওকে বললাম -মা কথা শোনা পাখি হলো সেই ছোট্টর মেয়ে যে সব সময় মায়ের কথা শোনে।’
ও খুশি হয়ে মাথা নাড়লো।
এরপরে যা হলো তা হলো, আমার মেয়ে আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলল: ‘মা ওই ম্যাজিক ওর্য়াডটা আবার বলতো’!

আমি আবার বললাম -‘কইরে আমার মা কথা শোনা পাখি!’

এবং সত্যিই এই ডাকটি জাদুকরী শব্দেই পরিণত হয়ে গেল আমার আর আমার মেয়ের ক্ষেত্রে।

এখন এই একটি ডাক দিয়ে সব করানো যাচ্ছে। যখনই আমি বলি : কইরে আমার মা কথা শোনা পাখি ” তখনই সাথে সাথে মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়,সময় মত খাওয়া, ঘুম, পড়া , মক্তবে যাওয়া সবই হয়ে যায়।

আলহামদুলিল্লাহ।

Facebook Comments