নারীর অগ্রগতির কথা বললেই হবে না, পাশাপাশি অগ্রগতির পথে যে বাধা আছে, সেগুলো চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সংবাদপত্র খুললেই ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতা দেখতে হচ্ছে!
সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারীর অধিকার আদায়ের জন্য নারীদের একত্রিত করে কাজ করে যাচ্ছে। একদিকে মহিলা পরিষদের কাজ যেমন উল্লেখ করার মতো, অন্যদিকে এটাও ঠিক যে আজ আমরা সংবাদপত্র খুললেই ধর্ষণসহ নারীর প্রতি বিভিন্ন প্রকার সহিংসতার চিত্র দেখতে পাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে নারী-পুরুষের সমতার জন্য আমরা লড়ে যাচ্ছি। যতদিন না এদেশে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা হবে, ততদিন এর জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।’
নরওয়ে রাষ্ট্রদূত মেরেতো লুনডেমো বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্নে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ যদিও অনেক কাজ করছে, তারপরও সহিংসতা প্রতিরোধে এদেশে আরো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে।’
সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ‘অগ্রসর বাংলাদেশের যে চিত্র আমরা দেখি তার কাজ শুরু হয়েছিল রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সময় থেকে। সুলতানার স্বপ্ন’র একটি অংশ আজ সফল হচ্ছে। নারী রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, নারী পাহাড়ে উঠছে আবার নারী পাথর ভাঙছে। কিন্তু অন্যদিকে দেখি, নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় আজ নারীরা আছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কাজ করছে, কিন্তু তারপরও নারী সহিংসতার শিকার। সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যদি আমরা কাজ না করি তাহলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ২০০৭ সাল থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নারীদের সম্মাননা দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ২৮ জন নারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এতে চলচ্চিত্রকার ২ জন, চ্যালেঞ্জিং পেশায় ৭ জন, তথ্য ও প্রযুক্তিতে ২ জন, সাংবাদিকতা পেশায় ৯ জন, নারী উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী ২ জন, খেলাধুলায় ২ জনকে সম্মাননা দেয়া হয়।
সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউএন উইমেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি তপতী সাহা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক চৈতালী ত্রিপুরা প্রমুখ।