ডা. এমডি আব্দুল হাকিম
এখন একটু একটু শীত পড়ছে। বিশেষ করে ভোর বেলা ঠান্ডা একটু বেশী পড়ে। এ সময় আপনার বাচ্চার ঠান্ডা লাগতে পারে। একটু সতর্ক হলেই এ সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব। খুব ছোট বাচ্চকে বুকের সাথে আগলে ধরুন। ওর খালি বুক আপনার খালি বুকে লাগিয়ে দুধ খাওয়ান।
দু’জনের উপর গরম কাপড় ঢেকে দিন। বাচ্চা প্রশ্রাব-পায়খানা করেছে কিনা খেয়াল করুন এবং টিস্যু বা গরম ভেজা নেকড়া দিয়ে পরিষ্কার করে দিন। ডায়াপারও পরাতে পারেন। তবে সেটি ৪-৫ ঘন্টার বেশী না রাখাই ভালো। একটু বড় বাচ্চাকে ভালো করে গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন।
শীতে শিশুর গোসল
জন্মের প্রথম তিন দিন শিশুকে গোসল না করানোই ভালো। কম ওজনের এবং অপরিণত শিশুর ক্ষেত্রে আরো দেরি করা ভালো- বিশেষ করে শীতের দিনে।
শিশুকে প্রতিদিন গোসল করানোর প্রয়োজন নাই। ২-৩ দিন পর পর গোসল করালেও চলে। শিশুকে খোলা জায়গায় গোসল না করানোই ভালো।
গোসল করাতে হবে বাথরুম, শোবার ঘর বা এমন জায়গায়-
যেখানে শিশুর শরীরে বাতাস না লাগে। গোসলের সময় ঠান্ডা বাতাস শিশুর শরীর থেকে তাপ টেনে নেয় এবং শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে ।
শিশুকে গোসলের আগে দুধ না খাওয়ানোই ভালো –
এতে গোসলের সময় বাচ্চা বমি করতে পারে।
যিনি শিশুকে গোসল দিবেন, তিনি গোসলের দেওয়ার আগে হাতের অলংকার খুলে ফেলবেন এবং ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন।
একটি গামলায় কুসুম গরম পানি নিতে হবে-যেনো শিশু চামড়ার সাথে সহনীয় তাপমাত্রার হয়।
শিশুকে গোসল করানোর আগে কবজি পর্যন্ত হাত ডুবিয়ে পানির উষ্ণতা পরীক্ষা করাতে হবে।
শিশুর গোসলের পানিতে ডেটল বা স্যাভলন মেশানো যাবে না। এতে শিশুর শরিরে লালচে দানা উঠতে পারে।
শিশুর দেহের ভাঁজগুলো যেমন-গলা,কানের পিছন,কুচকী,বগল, যৌনাঙ্গ ও নিতম্বের ভাঁজগুলো ভালোভাবে পরিস্কার করে দিতে হবে।
পায়খানা করে থাকলে গোসলের আগে পরিস্কার করে নিতে হবে-যাতে গামলার পানি অপরিস্কার না হয়।
বেশী ছোট শিশুর ক্ষেত্রে সাবান-শ্যাম্পু ব্যবহার না করাই ভালো এবং মাথায় পানি না দিয়ে মাথা মুছিয়ে দেয়া ভালো।
তবে বড় শিশুর ক্ষেত্রে বেবীসোপ বা কোমল সাবান ব্যবহার করা যাবে।
শিশুকে পানিতে ডুবানো যাবে না । গোসল যথাসম্ভব কম সময়ে শেষ করা ভালো।
মেয়ে শিশুদের স্ত্রী অংগে অনেক সময় সাদা ময়লা জমে। গোসলের আগে ঐ স্থানটা পানিতে ভেজানো পরিস্কার তুলা দিয়ে পরিস্কার করে দিতে হবে।
গোসলের পরপরই শুকনো পরিস্কার তোয়ালে দিয়ে শিশুকে জড়িয়ে সর্বত্র আলতো চাপ দিয়ে শিশুর শরীরের সব পানি ভালোভাবে মুছে নিতে হবে।
শরীরে পরিস্কার শুকনা কাপড়, মাথায় টুপি এবং হাতে-পায়ে মোজা পরাতে হবে।
গোসলের পরপরই শিশুর মাথা বা শরীরে লোশন, তেল বা পাউডার না লাগানই ভালো।
গোসলের পর শিশুকে বুকের দুধ দিতে হবে। এতে করে মায়ের বুকের গরম, দুধের গরমে সে গরম বোধ করবে এবং ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা কমে যাবে।