যুক্তরাজ্যের একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ১৯৭৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও স্পষ্টভাষী স্বভাবের জন্য তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন লৌহমানবী নামে।
১৯২৫ সালের ১৩ অক্টোবর জন্ম নেওয়া থ্যাচারের বাবার নাম অ্যালফ্রেড রবার্টস। পেশায় দোকানদার হলেও স্থানীয় রাজনীতিতে বাবার সক্রিয়তার কারণে বেশ অল্প বয়স থেকেই রাজনীতিকে কাছ থেকে দেখেছেন থ্যাচার। ১৯৫১ সালে ১৯৫১ সালে তাঁর বিয়ে হয় ডেনিস থ্যাচারের সাথে। বিয়ের পরই তিনি আইন পড়া শুরু করেন। ১৯৫৩ সালে ব্যারিস্টারি পাশ করেন। ঐ বছরই তার জমজ সন্তান মার্ক এবং ক্যারলের জন্ম হয়। বিয়ের পর তাঁর নামের শেষে যুক্ত হয় থ্যাচার। এর আগ পর্যন্ত তিনি পরিচিত ছিলেন মার্গারেট হিলডা রবার্টস নামে। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও ভালো ছিলেন তিনি। অঙ্ফোর্ডের সামারভিল কলেজে রসায়নের ওপর পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৯৫৯ সালে রক্ষণশীল দল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মার্গারেট থ্যাচার। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক জীবনে আরেক ধাপ উন্নতি হয় তাঁর। অ্যাডওয়ার্ড হিথকে পরাজিত করায় দলের নেতৃত্ব আসে তাঁর হাতে।
এরপর ১৯৭৯ সালে প্রথম নারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস রচনা করেন থ্যাচার। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে পরপর তিনবার তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। বিংশ শতাব্দীতে দেশটিতে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও এ সময়টায় তিনি যে শুধু মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন এমন নয়। নানা নীতির কারণে বহু সমালোচনার শিকারও হতে হয় ব্রিটেনের এই একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রীকে। তবে যেসব কারণে মার্গারেট থ্যাচার চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন, এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপের বিভক্তি জয়, স্নায়ুযুদ্ধাবসান, ফকল্যান্ড যুদ্ধ ইত্যাদি।
তাঁর বিরুদ্ধে আনীত বড় অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, তাঁর সময়ে একদিকে ধনীরা যেমন আরো সম্পত্তির পাহাড় গড়েছে, অন্যদিকে গরিবরা হয়েছে আরো গরিব।২০০২ সালে ছোটখাটো একটি স্ট্রোক করার পর থেকে অনেকটা নিভৃত জীবনযাবন করে আসছিলেন,৮৭ বছর বয়সে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ২০১৩ সালের ৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন লৌহমানবীখ্যাত মার্গারেট থ্যাচার।