নারী সংবাদ
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পয়সা গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে নববধূ মিনারা আক্তার রুমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘাতক স্বামী ইলিয়াছ খান তার বসতঘরে রুমাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে বলে অভিযোগ গৃহবধূর পরিবারের। এদিকে ঘটনার পরপরই গৃহবধূর লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফেলে রেখেই স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়িসহ বাড়ির লোকজন আত্মগোপনে চলে গেছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় গৃহবধূর ভাই মিজানুর রহমান তালুকদার লৌহজং থানায় অভিযোগ দাখিল করে। গতকাল বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগে জানা যায, এক বছর আগে উপজেলার খিদিরপাড়া গ্রামের মৃত সুরুজ তালুকদারের মেয়ে মিনারা আক্তার রুমাকে বিয়ে করে পয়সা গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে ইলিয়াছ খান। বিয়ের সময় ভাই মিজানুর রহমান সাধ্যমতো দাবি পূরণ করলেও যৌতুকের টাকার দাবিতে রুমাকে নির্যাতন শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুরে মোবাইলে রুমা টাকার জন্য ইলিয়াছ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কথা জানালে কষ্ট হলেও টাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন মিজানুর। এর মধ্যে সন্ধ্যার আগে রুমা অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার খবর পেয়ে লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তার নিথর দেহ পড়ে থাকাতে দেখেন মিজানুর। এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই রুমার মৃত্যু হয়েছে।
রুমার পরিবারের অভিযোগ, গত এক বছরে রুমাকে তার স্বামী ইলিয়াছসহ সবাই মিলে একাধিকবার নির্যাতন করেছে। এ নিয়ে সর্বশেষ পারিবারিক সালিশ বৈঠকে রুমার ছোট ভাই বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর পর দাবি করা টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও যৌতুকলোভী ইলিয়াছ রুমাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে অসুস্থ হওয়ার কথা বলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রুমার মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে স্বামী ইলিয়াছ খান, শ্বশুর আলাউদ্দিন ও শাশুড়ি আনোয়ারা বেগমসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা-ঢাকা দেয়।
লৌহজং থানার ওসি মো. মনির হোসেন জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করতে বুধবার সকালে মুন্সীগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর ভাই মিজানুর রহমান তালুকদারের দাখিল করা অভিযোগ মামলায় নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
সুত্রঃ সমকাল।