ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে থাকে মায়েরা। এর মধ্যে কিছু কিছু উপদেশ সন্তানের জন্য হয়ে থাকে চিরস্মরণীয়। মায়েদের পক্ষ থেকে সন্তানের পাওয়া এমন কিছু চিরন্তন উপদেশ জানার জন্য প্রশ্ন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্ন-উত্তর ভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘কিওরার’ কাছে। ওয়েবসাইটটির ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন এর উত্তর।
কিওরার এক ব্যবহারকারী সদ্য আইন ব্যবসা শুরু করা অ্যান্থনি জনসন জানিয়েছেন, তার মায়ের পক্ষ থেকে তার জন্য সেরা উপদেশ হচ্ছে, ‘সাধারণত্বের মধ্যেই অসাধারণদের অবস্থান।’ তার মা তাকে শিখিয়েছেন, একজন মানুষ নিজে তার নিজের কাছে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, অন্যরাও তার কাছে ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্থনি জানান, এ শিক্ষাটি শিশুদের জন্য খুবই মূল্যবান। এতে তারা অপরের সাথে সমঝোতা করে চলতে শেখে। অন্যের সাথে সবকিছু ভাগাভাগি করে এবং তাদের সাথে জীবন যাপন করতে শেখে।
শ্যানন হলম্যান নামের একজন জানিয়েছেন, তার মা-বাবা তাকে ছোটবেলা থেকেই জ্ঞানার্জন করতে শিখিয়েছেন। তার প্রতি তার মায়ের সেরা উপদেশ হচ্ছে, ‘যাও, সবকিছু অনুসন্ধান করে দেখো’। তিনি লিখেছেন, তিনি সৌভাগ্যবান যে এক সেট বিশ্বকোষ কেনার মতো যথেষ্ট অর্থ তার পরিবারের ছিল। এই বিশ্বকোষটি পড়ে তিনি বুঝতে পেরেছেন, পৃথিবীর সবকিছুই একজন মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব না। কিওরাতে তিনি লিখেছেন, ১৯৮৩ সালের ওই বিশ্বকোষটি তার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম ছিল না। এটি তাকে শিখিয়েছে, সব বিষয়ে প্রশ্ন করা সহজ, তবে সব প্রশ্নের উত্তর থাকে না।
স্টিফেন বার্দাবাস নামের আরেকজন জানিয়েছেন, তিনি যখন ছোট ছিলেন, তার মা তাকে উপদেশ দিতো, ‘যদি তুমি একজন ব্যক্তি ভালো কি মন্দ- তা খুঁজে বের করতে চাও তবে তুমি দেখবে তারা কেরানি, ওয়েটার অথবা সেবাদানের কাজে নিয়োজিত অন্য ব্যক্তি, যারা নিজের পক্ষে অন্যের সাথে বাদানুবাদ করতে পারে না তাদের সাথে কেমন আচরণ করে।’
বার্দাবাস তার মায়ের এ উপদেশের ব্যাপারে লিখেছেন, ‘তিনি শত ভাগ সঠিক ছিলেন। আর আমিও কখনো তার এ উপদেশ ভুলে যাইনি। এর মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষ চেনা যায়।’
চিত্রনাট্যকার কেন মিয়ামোতো লিখেছেন, তার পরিবারের সব সদস্য একে অপরকে খুবই ভালেবাসে। তাদের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং কখনো কখনো তারা বিতর্কেও লিপ্ত হয়। তবে এর মাঝেও তার পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি হচ্ছেন তার মা।
কয়েক বছর আগে মিয়ামোতো তার বাবা ও ভাইয়ের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়। এতে মিয়ামোতোই সঠিক অবস্থানে ছিলেন। এ সময় তার মা তাকে বলেন, ‘তুমি কি সঠিক অবস্থানে থাকতে চাও? নাকি, সবার সাথে সৌহার্দ্য বজায় রাখতে চাও?’ তখন তিনি বুঝতে পারলেন, সব সময় সঠিক থাকতে গেলে কোনো সম্পর্কই টিকে থাকতে পারে না। আর এটিই ছিল তার জীবনে মায়ের পক্ষ থেকে সেরা উপদেশ।