banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 660 বার পঠিত

 

মানুষের সুচিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসেবা

মানুষের সুচিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসেবা


ডাঃ সাকলায়েন রাসেল


ইন্টার্নিশিপের সময় ২ বছর করায় তীব্র প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন…চিকিৎসক ও হবু চিকিৎসকরা! সম্ভাব্য আন্দোলনের দাবানল মেডিকেলে মেডিকেলে।

২ বছর ইন্টার্নিশিপের বিষয়ে আমি একটি প্রশ্ন রেখেছিলাম…এতে প্রায় ১২ শ চিকিৎসক, হবু চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন!

মাত্র ২ জন…দুই বছরের পক্ষে মত দিলেও বাকী সবাই এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন!

উল্লেখ্য, বর্তমানে MBBS পাশ করতে মোট ৬ বছর সময় লাগে। এরমধ্যে ৫ বছর একাডেমিক সময়, ১ বছর ইন্টার্নিশিপ।
২০১৯ সালের প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী ৫ বছর একাডেমিক, ২ বছর ইন্টার্নিশিপ।
ইন্টার্নিশিপের ২ বছরের মধ্যে আবার ১ বছর গ্রামে থাকতে হবে।

শুরুতেই জানিয়ে রাখি উক্ত নিয়ম শুরু থেকেই কার্যকর আছে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেলে। যারা প্রবক্তা বহুল আলোচিত
ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী।
এখানে তাই ইন্টার্ন সময় দেড় বছর।
১ বছর নিজ মেডিকেলে, ৬ মাস বাইরে।
এটা নিয়ে সেখানকার ডাক্তাররাও শুরু থেকেই প্রতিবাদী। কিন্তু প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস কেউ করেন না।

যারা ২ বছর করার পক্ষে তাদের মত হলঃ
১. এতে নবীন চিকিৎসকরা অধিক দক্ষ হবেন।
২. গ্রামের মানুষ সুচিকিৎসা পাবেন।
৩. উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এটা করা হচ্ছে।

কিন্তু যারা বিপক্ষে তারা এটা মানতে নারাজ।
তাদের যুক্তি হলঃ
১. এতে করে শিক্ষাজীবন অহেতুক বৃদ্ধি পাবে। সাধারণ মানুষ চিকিৎসক হতে নিরুৎসাহিত হবেন।
২. ইন্টার্ন ডাক্তাররা গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তারা সুপারভাইজড ট্রেইনিং করতে পারবেন মাত্র।
৩. গ্রামে পর্যাপ্ত কনসালটেন্ট নেই। সেক্ষেত্রে ইন্টার্ন ডাক্তারদের ট্রেইনিং কে দিবে, তারা রোগীর চিকিৎসাই বা কিভাবে করবে?
৪. উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে চাইলে MBBS এর সময় কমানো উচিত।
ইন্ডিয়ায় এমবিবিএস সাড়ে ৫ বছর, দুনিয়ার কোথাও এবিবিএস পাশ করতে ৭ বছর লাগেনা।
৫. অনেকে ডাক্তার বেকার আছে। গ্রামের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাই এসব ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হোক।
৬. গ্রামে পর্যাপ্ত জনবল, অবকাঠামো না থাকায়, নিরাপত্তা সমস্যা মনে করছেন অনেকে, বিশেষ করে নারী নবীন চিকিৎসকরা।
৭. বাংলাদেশের মেডিকেল গুলোতে অনেক বিদেশী স্টুডেন্ট পড়ালেখা করছেন। তাদের মাধ্যমে মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। ৭ বছর হলে তারা নিরুৎসাহিত হবেন। তারা কখনোই গ্রামে যেতে চাইবেন না।
৮. ইন্টার্ন নিয়োগ দিয়ে গ্রামের মানুষের চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর কথা বলা তাই স্রেফ ধোঁকাবাজি মনে করছেন কেউ।
৯. মেডিকেলে একবারে পাশ করার হার খুব বেশি না। তাই ফেল করলে তাদের শিক্ষাজীবন আরো বিলম্বিত হবে।
১০. এমবিবিএস পাশ করতেই যদি ৭ থেকে ১০ বছর লেগে যায় তবে পোস্ট গ্রাজুয়েট শুরু করবে কখন।

এসব দিক বিবেচনায় ইন্টার্নিশিপ সময় ২ বছর করার বিরোধিতা করছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় আন্দোলনসহ আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষেও তারা।
কারণ, এখন যারা মেডিকেলে পড়ছেন তাদের প্রজ্ঞাপনে ১ বছর ইন্টার্নির কথা বলা ছিল।
হঠাৎ করে ২ বছরের আইন করলে তা আগামী ৬ বছর পর করতে হবে। কারণ নতুন ব্যাচ মেডিকেলে ভর্তি হলে তারা আগে থেকেই জানবে ইন্টার্নশিপ ২ বছর।

খসড়া নীতিমালা চুড়ান্ত করার আগে তাই এসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত বলে করছেন সচেতন মহল।

Facebook Comments