নারী সংবাদ
নারীঘটিত অপকর্মের প্রতিবাদ করায় ও যৌতুকের দাবিকৃত ২০ লাখ টাকা না দেওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ষষ্টি গ্রামের তিন সন্তানের জননী শিউলী আক্তার নেহাকে মারধর ও খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। শিউলী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে ষষ্টি গ্রামের খেরু শিকদারের ছেলে আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে শিউলি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিউলীকে নির্যাতন করে আসছিল স্বামী ও তার পরিবার। গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে স্বামী ও স্বামীর পরিবারের অন্যরা মিলে শিউলীকে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে শিউলীর দু’হাতে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয় তারা।
এ ছাড়া স্বামীর নারীঘটিত নানা বিষয়ের প্রতিবাদ করার কারণে তাকে মারধর করে আসছিল কুদ্দুস। তিন সন্তানের ভরণ-পোষণও ঠিকমতো দিচ্ছে না বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন শিউলী।
শিউলী জানান, ঘটনার দিন তার স্বামী ও তার দুই ভাই, শাশুড়ি, ভাইয়ের স্ত্রীসহ ৭ জন তার ওপর হামলা চালায়। স্বামীর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক হিসেবে টাকাগুলো তার বাবার বাড়ি থেকে আনতে চাপ প্রয়োগ করে। যৌতুকের টাকা দিতে পারবে না বলার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বেদম প্রহারের পাশাপাশি গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এতে তার হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে তার বাবার বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
শিউলীর বোন নাসরিন আক্তার জানান, নির্যাতনের পর শিউলীকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ডাক্তারের পরামর্শে মানিকগঞ্জ থেকে সোমবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন বোনের স্বামী ও তার পরিবার তাদের হুমকি দিচ্ছে। তারা এখন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন বলে জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, ওই রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশে খুন্তি আগুনে পুড়িয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তলপেট ও শরীরে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
হরিরামপুর থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, শনিবার এ বিষয়ে মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
যৌতুক ও স্বামীর অপকর্মের প্রতিবাদ
মানিকগঞ্জে গৃহবধূকে মারধর, খুন্তির ছ্যাঁকা সুত্রঃ সমকাল