banner

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 292 বার পঠিত

 

ভ্রমণ করুন অপূর্ব হাইতি

হাইতি যেন এই পৃথিবীর বুকে ছোট্ট একটি স্বর্গ। এখানে টারকুইশ ঢেউয়েরা আছড়ে পড়ে সোনালী উপত্যকায়। মেঘ ছুঁয়ে যায় পর্বতের চূড়া। ঘন বনের সবুজ তার সাথে ঘটায় অপরূপ মিতালী। চোখ ধাঁধানো সূর্যাস্ত যে অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের অবতারণা করে তার তুলনা হয় না বিশ্বের আর কোনকিছুর সাথে। বিশ্রাম নিতে চান অথবা নিতে চান নতুনের চমকপ্রদ স্বাদ, কোনকিছুতেই আপনাকে হতাশ করবে না হাইতি। আসুন জেনে নিই হাইতির প্রধাণ আকর্ষণগুলো কী কী।

সিতাডেল লাফেরিয়্যা

দূর্গটির অবস্থান পাহাড়ের চূড়ায়। চারদিকে পাহাড়ের সবুজ, আকাশের মেঘ আর তার মাঝে প্রাচীন এই দূর্গটি এক মোহনীয় আবহের তৈরি করে। এটি নির্মাণের কারণ ছিল ফরাসী আগ্রাসন থেকে হাইতি অঞ্চলকে রক্ষা করা। হাইতির সেই সময়ের শক্তির পরিচায়ক দূর্গটি এখন হাজারো পর্যটকের আকর্ষণস্থলে পরিণত হয়েছে। রাতে দূর্গের আলোকসজ্জা ভিন্নভাবে আকর্ষণ করবে আপনাকে। এই দূর্গ ভ্রমণ একইসাথে আপনাকে ইতিহাস, রাজনীতি, প্রাচীন ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। সাথে দেবে প্রকৃতির অপার শান্তি।
বাসিন ব্লিউ
হাইতির জ্যাকমেল পাহাড়ের একটি জলপ্রপাতের নাম বাসিন ব্লিউ। প্রাকৃতিক দৃশ্যে পরিপূর্ণ অপূর্ব একটি ট্রেইল ধরে আপনি পৌছে যাবেন বাসিন ব্লিউতে। সেখানে কাটিয়ে আসতে পারেন চমৎকার একটি দিন। জলপ্রপাতের জলধারা তৈরি করেছে একটি একটি ছোট্ট পুকুর। টারকুইশ নীল রঙ সেই পুকুরের। তার মাঝে সাঁতার কাটা, ভেসে বেড়ানোসহ সবই করতে পারবেন আপনি। জায়গাটি খুবই নিরাপদ। তাই নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারবেন সবটুকু সৌন্দর্য্য, যেভাবে আপনি চান সেভাবেই।
ক্যাথেড্রাল নর্টে ডেম ডি কেপ হাইতিয়ান

ক্যাথলিক এই ক্যাথেড্রালটির অবস্থান কেপ হাইতিয়ানে। সুন্দর এবং শান্তিময় একটি জায়গা এটি। কলোনিয়ান শহরটি ঘুরে এসে বিশ্রাম নিতে পারেন এখানে। চার্চের সামনে ছোট্ট পার্কটিও প্রশান্তি দেবে আপনাকে। দালানটির সাদা দেয়াল যে বহু বছরের ইতিহাস তুলে ধরে। ঝকঝকে শান্তিময় চার্চটির নির্মাণশৈলীও প্রশংসার দাবি রাখে। ভেতরে এবং বাইরে উভয়দিকে চমৎকার কারুকার্য এবং সার্বিক কাঠামো যে কোন পর্যটককে বাধ্য করে একবার থমকে দাঁড়াতে।
লাবাদি
লাবাদি একটি বেসরকারি বন্দর। এর মালিক রয়াল ক্যারাবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ক্রুজ কোম্পানি। সানন্দে এক সপ্তাহের ট্যুর পরিকল্পনা করে  বেড়িয়ে আসতে পারেন এখানে। শুভ্র বালির বিচ, স্ফটিক স্বচ্ছ পানি এই এলাকাকে করেছে মনোমুগ্ধকর। সমুদ্রকে উপভোগ করার সমস্ত আয়োজনই রয়েছে এখানে। বিশ্রাম নিতে পারবেন, ঘুরে বেড়াতে পারবেন, শপিং করতে পারবেন স্থানীয় নানান দ্রব্যাদি। আর নীল সমুদ্রে সাঁতরে বেড়ানো, ডাইভিং, প্যারাগ্লাইডিং তো থাকছেই।
সান সৌচির প্রাসাদ

রাজা হেনরি ক্রিসটোফের প্রাসাদ ছিল এটি। কথিত আছে তিনি দাস থেকে রাজা হয়েছিলেন। ১৮৪২ সাথে ভূমিকম্পে প্রাসাদটি ধ্বংস হয়ে যায় কিছুটা। ঐতিহাসিক ভবনটি প্রাচীন সৌন্দর্য এবং জ্ঞানের ভান্ডার। একে প্রায়ই তুলনা করা হয় ফ্রান্সের ভার্সাইলিস প্রাসাদের সাথে। প্রাচীন এই ভবনটির বিস্তৃত সিঁড়ি শুরুতেই মুগ্ধ অভিভাদন জানাবে আপনাকে। এরপর এর বিশাল জানালা, অভ্যন্তরীণ সজ্জা, ভবনের সামনে বিস্তৃত বাগান সবকিছুই আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেবে রাজার রুচিবোধের সাথে। প্রাসদটির সামনেই রয়েছে বড় একটি ফোয়ারা। আর স্থির মূর্তিগুলো যেন প্রাসাদকে পাহারা দিতে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে।

 

হাইতির প্রধাণ আকর্ষণ এর সমুদ্র। পাহাড়, জলপ্রপাত সবকিছুই হাইতিকে দিয়েছে পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক অবয়ব। ইতিহাস যুক্ত হয়ে যেন পূর্ণতা পেয়েছে হাইতি। ছোট্ট দ্বীপটি তাই বছরের পর বছর আকর্ষণ করে চলেছে পর্যটকদের।

Facebook Comments