ফাতেমা শাহরিন
সন্তানদের লালনপালন করা অত্যন্ত কঠিন এবং একই সাথে আনন্দের কাজ। সুতরাং একথা না বললেই নয় যে, ভাল বাবা-মা হয়ে ওঠার বিষয়টি বিশাল পরিকল্পিত বিষয়।
ছোট্ট একটি ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখি আসুন, যা আমার ভাবনার দোর খুঁলতে সাহায্য করেছে।
“তখন আমার মেয়ে-দুটো অনেক ছোট। একটা বয়স থাকে না, বাচ্চারা কিউট করে অনেক অনেক অনেক কথা বলে। একদিন মেয়ে এসে বলে:
– বাপু তুমি কি করছো?
– লেখাপড়া করছি আম্মু।
– কেনো লেখাপড়া করছো?
– কারণ আমি ভালো বাবা হতে চাই।
– (হাসতে হাসতে) তুমি তো বাবা হয়েই গেছো।
– বাবা হতে লেখাপড়া করতে হয় না, তবে ভালো বাবা-মা হতে হলে কিছু পড়ালেখা করতে হয় আম্মু।
– ও, তুমি ভালো বাবা হতে চাও? তুমি তো ভালো বাবাই.. (মেয়ের হাসি চলতেই থাকে…)।” (শিবলী মেহদী)
অর্থাৎ সন্তানের বাবা-মা হতে হলে শিখতে হয়। পড়তে হয় ‘বই’। তা না হলে, মা-বাবা এবং বাচ্চা, উভয়ের জন্যই বিপদ। প্রথম মত, বাবা-মা একটি চলমান শিক্ষণীয় প্রক্রিয়া। সন্তান জন্মের পর আশেপাশে থেকে অনেক রকম উপদেশ আসে। আজকে সেই সব উপদেশগুল কতটুকু গ্রহণযোগ্য এবং কতটুকু ক্ষতির কারণ হতে পারে?
আসুন দেখি…
সন্তানের কান্না
সন্তান কান্নাকাটি করলে বাচ্চাকে কোলে নিতে নিষেধ করা হয়। বলা হয় কোলে নেওয়া হলে তার অভ্যাস খারাপ হয়ে যাবে। শৃঙ্খলা শেখানোর পদ্ধতি হিসেবে কান্না করতে দিতে বলা হয়। কিন্তু সবসময় এই উপদেশটি গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধারণাটি ভুল এতে বাচ্চার জেদ আর বেড়ে যায় বরং কোলে নিলে বাচ্চা দ্রুত ঠান্ডা হয়। (উপদেশ-১)
ব্যথা পেলে শাসন
বাচ্চা কোন নিষেধ কাজ যেমন-দৌড়ানো।ফলে আঘাত প্রাপ্ত হলে বাবা-মা উল্টো ধমক দিয়ে থাকেন। কখন কখন গায়ে হাত উঠান। এটা বাচ্চার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। (উপদেশ-২)
ঠাণ্ডার সময় সর্দি-কাঁশি বা জ্বর হয়
ঠান্ডার সময় শুধু নয় সব ঋতুতে সর্দি কাঁশি জ্বর হতে পারে। সব সময় বাবা-মার সচেতনতা দরকার। ঠান্ডার সময় জ্বর হবে এরূপ ধারণা ভুল। (উপদেশ -৩)
ফলের জুস বাচ্চার জন্য ভীষণ উপকারী
বাজারে বিক্রি হওয়া ফলের জুস গুলে প্রচুর সুগার থাকে। এছাড়া বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে আমসহ অন্যান্য ফলের ফ্লেভার মিশানো হয় যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। বেশি মাত্রায় জুস খেলে বাচ্চার দাঁতের ক্ষতি হয়। (উপদেশ -৪)
ভ্যাকসিন
বাচ্চাদের ভ্যাকসিন দেবার ক্ষেত্রে ভুল উপদেশ পেতে পারেন। কোন কোন মানুষের ধারণা ভ্যাকসিন ভীষণ ক্ষতিকর যা অটিজমসহ নানান প্রকারে রোগের জন্য দায়ী। এমনকি একাধিক ধারণা দিয়ে প্রমাণ করাতে চাইতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ ভুল নিশ্চিন্তে বাচ্চাকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিন। (উপদেশ -৫)
সহ-সম্পাদিকা(অপরাজিতা)
http://oporajitabd.com