ব্যাংক খাতে এমনিতেই নারী কর্মী কম। তার মধ্যে করোনার সময়ে গত ছয় মাসে সেই সংখ্যা আরও কমে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ৪০২ জন নারী ব্যাংকার কমে গেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, করোনার কারণে নিয়োগ বন্ধ। এর মধ্যে অনেকে অবসরে গেছেন। আবার কোনো কোনো ব্যাংকে ‘স্বেচ্ছায় পদত্যাগ’ হয়েছে। আবার করোনার এ সময়ে অনেকে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন। এর ফলে বছরের প্রথম ছয় মাসে নারী ব্যাংকারের সংখ্যা কমে গেছে। আবার করোনার কারণে খুব শিগগির নতুন নিয়োগও হবে না। তাই ব্যাংকে নারী কর্মী শিগগির বৃদ্ধির পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন না ব্যাংকাররা।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লৈঙ্গিক সমতাভিত্তিক সূচক পর্যালোচনা করে জানুয়ারি-জুনভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখান থেকেই নারী কর্মী কমে যাওয়ার তথ্য মিলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুনে ব্যাংক খাতে কর্মীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮৭৫। এর মধ্যে নারী কর্মকর্তা ছিলেন ২৫ হাজার ৭৭১ ও পুরুষ কর্মকর্তা ১ লাখ ৪৪ হাজার ১০৪ জন। গত ডিসেম্বর ব্যাংক কর্মী বেড়ে হয় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৩০ জন। এর মধ্যে নারী কর্মী ২৮ হাজার ৪৮০ জন ও পুরুষ কর্মী ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫০ জন। আর জুন শেষে ব্যাংকে মোট কর্মী ছিল ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫১০ জন। এর মধ্যে নারী কর্মী ২৮ হাজার ৭৮ ও পুরুষ ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৩২ জন।
গত ডিসেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকে নারী কর্মী ছিল ১৭ হাজার ৭৯১ জন, জুনে তা কমে হয়েছে ১৭ হাজার ৬০৩ জন। বিদেশি ব্যাংকে নারী কর্মী ১ হাজার ৯৪ থেকে কমে হয়েছে ৯৭৮ জন। সব মিলিয়ে গত ৬ মাসে নারী কর্মী কমেছে ৪০২ জন।
জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান প্রথম আলোকে বলেন, কেন এত নারী কর্মী কমে গেল, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকগুলোতে ৩০ বছরের বেশি বয়সের নারী কর্মী প্রায় ২১ শতাংশ হলেও পঞ্চাশোর্ধ্ব কর্মী মাত্র ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। ২৯টি ব্যাংক নারী কর্মকর্তাদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন সুবিধা দিচ্ছে। ৪৪ ব্যাংক লৈঙ্গিক হয়রানি রোধে নীতিমালা করেছে।