যাদের বোন নেই, তাদের অনেকেই নিজেকে হতভাগ্য মনে করেন। শাসন আর স্নেহের এক আশ্চর্য মিশ্রণ রয়েছে এই সম্পর্কের ভেতরে। বড় একজন বোন থাকলে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতেই পারেন, হাজার দুষ্টুমির পর মা-বাবার বকুনি থেকে সেই আপনাকে বাঁচাবে। যার কাছে প্রশ্রয় মেলে, নির্ভরশীলতা মেলে, মনের লুকানো হাজারটা কথা বলার একটু ফুসরত মেলে, সেই আমাদের বোন।
অনেকের একটি ধারণা রয়েছে, বন্ধু সবসময় বাইরের কেউ হয়। আসলে ব্যাপারটি ঠিক নয়। বন্ধু যদি কেউ হয়, তবে তা হতে পারে সবার আগে পরিবারেই। বন্ধু হতে পারে এক বোন আরেক বোনের। এবং তা হয়ও। সবসময় কাছাকাছি থাকা হয় বলে হয়তো বোঝা যায় না। কিন্তু সারাদিনের অজস্র গল্প আপনি বোনটির সঙ্গেই ভাগাভাগি করতে পারছেন, রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পেয়ে জেগে উঠেছেন আর পরক্ষণেই আপনার মনে পড়লো, আমার বোন তো আমার পাশেই রয়েছে- এই নির্ভরতা, এই ভালোবাসার সম্পর্কটিই বোনের সম্পর্ক।
একত্রে থাকা হয় বলে মাঝে মাঝে হয়তো তুচ্ছ কারণেই ঝগড়া বেধে যায়। লিপস্টিকের দখলদারিত্ব নিয়ে ঝগড়া, সেখান থেকে হয়তো কথা বলা আর মুখ দেখাদেখিই বন্ধ! এই ঝগড়াও মধুর, এই স্মৃতিই আনন্দের। পরবর্তীতে যখন একজন আরেকজনকে ছেড়ে দূরে থাকবেন, তখন টুকটাক স্মৃতিই আপনাকে হাসাবে-কাঁদাবে।
কাউকে ভালো লেগেছে বা কারো প্রেমে পড়েছেন? সর্বনাশ! মা জানলে নিশ্চয়ই রক্ষা নেই। এক্ষেত্রেও আপনার ভরসা আপনার বোনই। কাকে ভালো লেগেছে, কেন ভালো লেগেছে সবটাই এক নিঃশ্বাসে যার কাছে বলে ফেলতে পারবেন, তার নাম বোন। এক্ষেত্রে বোনের কাছ থেকে সাহায্য কিংবা কানমলা যেকোনো একটা অবশ্যই আপনি পাবেন।
আমাদের রক্তের বন্ধনগুলো আত্মার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়েই পৃথিবীতে আসে। তাই বোন নামের মধুর বন্ধনটি বন্ধুত্বের মায়ায় জড়িয়ে আরো দৃঢ় করতে পারেন। অবশ্য আলাদা করে বন্ধুত্ব তৈরির দরকারও পড়ে না। কারণ বোন তো জন্ম থেকেই বন্ধু!