banner

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 20 বার পঠিত

 

বিয়েতে সম্মতিমূলক সম্পর্ক

এটা সত্যি! বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কের শিকার অনেক নারীই হচ্ছেন। এটা ভয়াবহ ধরনের পারিবারিক সহিংসতা। এর ফলে অনেক নারী প্রচণ্ড ট্রমায় পড়ে যান। তবে এটা কি আইন দিয়ে থামানো যাবে?
বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কে মামলার সুযোগ থাকলে আরও অনেক মিথ্যা মামলার সুযোগ হয়ে যায়। বরং এর মোকাবেলায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতনতাই বেশি জরুরি।
বিয়ে একজন নারী ও একজন পুরুষের দৈহিক, মানসিক, সামাজিক চাহিদাপূরণের সিভিল কন্ট্রাক্ট। বিয়ের মাধ্যমে তারা একে অপরকে শারীরিকভাবে অন্তরঙ্গ হবার সম্মতি প্রদান করে। শারীরিক সম্পর্ক সম্পাদনের জন্য হাজবেন্ড ও ওয়াইফ উভয়েরই সম্মতি থাকাটা জরুরি। একজনের সম্মতি আছে, অন্যজনের নেই- এমন হলে হবে না।
বিয়ে এমন একটা জিনিস যেখানে স্বামী বা স্ত্রী কারোই একে অপরের কোনো ক্ষতি করার অধিকার নেই। ইসলামিক দিক থেকে, বিয়ের চুক্তির মাধ্যমেই স্বামী, স্ত্রী একে অপরকে শারীরিকভাবে উপভোগ করার অধিকার দেয়। তাই স্ত্রীর দিক থেকে দায়িত্ব হলো, তার স্বামীর আহবানে সাড়া দেয়া যদি না তার কোনো শারীরিক বা মানসিক এক্সকিউজ থাকে। আর যদি কোনো এক্সকিউজ থাকে, তাহলে স্বামীরও দায়িত্ব তাকে জোরপূর্বক ইন্টিমেসিতে বাধ্য না করা। যদি এই বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, একজনের কষ্ট হচ্ছে তারপরও সেটাকে উপেক্ষা করে আরেকজন তা আদায় করে নিচ্ছেন। তাহলে এটা জুলুমের পর্যায়েই চলে যায় এবং ইসলাম সেটাকে কোনোভাবেই অনুমতি দেয়নি। ইসলাম যে কোনো প্রকার জুলুমকেই হারাম করেছে। সুতরাং ইসলামে বিয়ে পরবর্তী এই জোরাজোরিকে রেইপ বলা যায় না বরং তা হবে একজনের প্রতি আরেকজনের জুলুম।
ফিজিক্যালি আল্লাহ ছেলেদের এবং মেয়েদের আলাদা করে বানিয়েছেন। ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট ছাড়া সরাসরি ফিজিক্যাল ইনভলভমেন্টের কথা অনেক মেয়েই মেনে নিতে পারে না। প্রোপার ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্টের অভাবে অনেক মেয়েরাই ইন্টিমেসির ব্যাপারে ইন্টারেস্টেড থাকেন না। আবার অনেক মেয়েরা হাজব্যান্ডের ডিমান্ড ফলো করাটাকে একটা ডিউটি হিসেবে পালন করে। যতই টায়ার্ড বা স্ট্রেসড থাকুক না কেন, তাদের মাঝে ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট থাকুক বা না থাকুক। এ দুটি অবস্থার কোনোটিই কাম্য নয়। বরং ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট গড়ে তোলার দিকে যত্নবান হওয়াই বেশি প্রয়োজন। স্ত্রীর সাথে ফিজিক্যাল রিলেশনের ক্ষেত্রে তার মানসিক ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করা এবং তার সম্মতি নেওয়া একজন স্বামীর অবশ্যই দায়িত্ব। আর এটা ধর্মীয় ও মানবিক উভয় দিক থেকেই।
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, প্রাপ্তবয়স্ক দুইজন পুরুষ ও নারীর অবশ্যই সম্মতির ভিত্তিতেই বিয়ে হওয়া উচিত। এবং পুরুষ ও নারী উভয়ের উচিত নিজেদের বৈবাহিক সম্পর্কের যথাযথ সম্মান করা। অ-সম্মতিমূলক যৌন সম্পর্ক দু’জনের জীবনেই নেগেটিভ প্রভাব ফেলবে। কারণ যে কোনো বিষয়ে জোর খাটানো তো সহিংসতাই!

-ড. সাজেদা হোমায়রা

Facebook Comments