banner

মঙ্গলবার, ১৭ Jun ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 527 বার পঠিত

 

‘বাচ্চাদের প্রশ্ন করা’—আফরোজা হাসান

গতকাল আমাদের ভলান্টিয়ার টিচারদের আলোচনার বিষয় ছিল বাচ্চাদের প্রশ্ন করা। প্রতিটা ক্লাসেই আমাদের প্রত্যেকজন টিচারকে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় বাচ্চাদের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে।

সারাক্ষণ প্রশ্ন করতেই থাকে বাচ্চারা। পড়া বিষয়ক প্রশ্ন, সাধারণ প্রশ্ন, মাঝে মাঝে গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্নও। আসলে বাচ্চাদের স্বভাবই হচ্ছে তারা প্রশ্ন করতে ভালোবাসে। অবশ্য প্রশ্ন করাটা খুব ভালো এতে বাচ্চাদের চিন্তাশক্তি প্রসারিত হয়।

সমস্যা হচ্ছে বেশির ভাগ অভিভাবক বাচ্চাদের প্রশ্নের জবাব ঠিকমতো দেন না। আগে আমার ধারণা ছিল যে আমরা বাঙ্গালী বাবা-মায়েরাই মনেহয় বাচ্চাদের বেশি প্রশ্ন শুনলে বিরক্ত হই বা ঠিকমতো জবাব দেই না। কিন্তু বাচ্চাদের সাথে কথা বলার পর থেকে বুঝলাম যে সব দেশী বাবা-মায়েদের অবস্থাই প্রায় একই রকম। অথচ প্রশ্ন করা আর এর জবাব দেয়ার মাধ্যমে বাচ্চাদেরকে অনেক দরকারি বিষয় খুব সহজেই শিখিয়ে ফেলা যায়।

বাবা-মাদের কখনোই উচিত নয় বাচ্চাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকা। বরং বাচ্চারা যাতে বেশি বেশি প্রশ্ন করতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত। স্কুলে যেমন আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নপত্র আছে বাচ্চাদের জন্য। প্রশ্নপত্র গুলো এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে জবাব দিতে গিয়ে বাচ্চারা আত্মসমালোচনা করা শিখতে পারে….হতে পারে অমুখাপেক্ষী ও দায়িত্বশীল। প্রতিটা প্রশ্নের জবাব দিতে বাচ্চাদেরকে আমরা সাহায্য করি এটা ঠিক কিন্তু যখন ওদের চিন্তা আর পথ খুঁজে পায় না সামনে বাড়ার শুধু তখন।

পরিবার বিষয়ক প্রশ্নপত্রে যেমন আছে, তুমি কি তোমার বাবা-মাকে ভালোবাসো? কেন বাসো? তোমার বাবা-মা কি তোমাকে ভালোবাসে? কিভাবে বুঝলে যে তারা তোমাকে ভালোবাসে? বাবা-মার কোন জিনিসটা তোমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে এবং কেন ভালো লাগে? কোন জিনিসটা সবচেয়ে অপছন্দ করো এবং কেন করো অপছন্দ? তুমি কি তোমার ভাইবোনকে হিংসা করো? কি কি কারণে হিংসা করো? ভাইবোনের কোন জিনিসটা সবচেয়ে পছন্দ আর কোনটা সবচেয়ে অপছন্দ এবং কেন? ইত্যাদি এই ধরণের আরো কিছু প্রশ্ন।

এই প্রশ্নগুলো বাচ্চাদেরকে সাহায্য করে নিজেকে বুঝতে, জানতে ও চিনতে। কেন, কি কারণে বা কিসের জন্য একটা জিনিস পছন্দ বা অপছন্দ সেই ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়ে যায় মনে। কারণ ছাড়া কোন কিছু করা যাবে না বা ঠিক না এটা বদ্ধমূল হয়ে যায় বাচ্চাদের মনে। যা তাদের চিন্তাকে যুক্তির পথে পরিচালিত হতে সহায়তা করে। তাই বাচ্চাদেরকে বেশি বেশি প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করতে হবে এবং তারা যাতে নিজের চিন্তাকে কাজে লাগাতে পারে সেই পথ প্রসন্ন করতে হবে।

Facebook Comments